#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love,Part_11,12
#Writer_Sanjana_Shabnsm_Fahmida
#Part_11
,
,
,
,
রিসেপশনে জিজ্ঞেস করার পর রওশন জানতে পারে সুবহা সকাল সকাল ফিরে গিয়েছে। অয়নকে দিয়ে ইনফরমেশন নেওয়ার পর অয়ন বলল সুবহা হোটেল থেকে ডাইরেক্ট ওর NGO তে গিয়েছে। রওশন দেরি না করে গাড়ি নিয়ে সুবহার NGO এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়।
রওশন সামনের সুপার মার্কেট থেকে বাচ্চাদের জন্য চকলেট আর কিছু টয়েজ নিয়ে নেয়। NGO তে পৌঁছেই রওশন ওর গাড়ি পার্ক করে ওয়াচম্যান কে দিয়ে সব জিনিস ভিতরে পাঠায়। NGO এর কেয়ার টেকার থেকে রওশন জানতে পারলো যে সুবহা পেছনের লনে বাচ্চাদের সাথে খেলা করছে।
? In Garden ?
কানামাছি খেলছে সুবহা বাচ্চাদের সাথে। ওর চোখ কাপড় দিয়ে বাঁধা আর বাচ্চারা আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সবার চেহারায় হাঁসি সুবহা বাচ্চাদের ধরার চেষ্টা করতেই তারা সরে যাচ্ছে।
রওশন বাগানে এসে দেখে সুবহা বাচ্চাদের সাথে খেলা করছে। সুবহার চোখে পট্টি বাঁধা ঠোঁটে হাসি আর চুল গুলো এলোমেলো ভাবে উড়ছে। রওশন ধীর পায়ে এগিয়ে আসল সুবহার দিকে। রওশন কে দেখে বাচ্চা গুলো দুষ্টু হেসে দূরে সরে দাঁড়ায়।
রওশন সুবহার কাছে আসতেই সুবহা ওকে জড়িয়ে ধরে লাফিয়ে উঠে।
সুবহাঃ ইয়েহহ আমি জিতে গিয়েছি। ( খুশি হয়ে)
সব বাচ্চারা হেসে দেয় সুবহার কান্ডে। রওশনও মুচকি মুচকি হাসছে।
হঠাৎ সুবহা বুঝতে পারল যাকে ও জড়িয়ে ধরেছে সে কোন বাচ্চা না কারন কোন বাচ্চার শরীর এতোটা শক্ত হয় না আর না এতোটা লম্বা বাচ্চা NGO তে আছে।
সুবহা নিজের চোখের পট্টি খুলে রওশন কে দেখে 880 ভোল্টের শক খায়। এক ঝটকায় ও রওশন থেকে দূরে সরে দাঁড়ায়।
সুবহাঃ আ আপনি আমি ভাবলাম ওরা হবে। ( মাথা নিচু করে)
রওশন কিছু বলতে যেয়েও বাচ্চাদের দেখে থেমে যায়; তারপর সুবহাকে ক্রস করে বাচ্চাদের কাছে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে ওদের বলে।
রওশনঃ হাই আ’ম রওশন তোমাদের সুবহা আপির ফ্রেন্ড।
বাচ্চা গুলো রওশনের কথায় নিজেদের জড়তা কাটিয়ে তাদের নাম বলতে শুরু করে,,,
গোলুঃ আপনি সুবহা আপির ফ্রেন্ড তার মানে আমাদের ও?
রওশনঃ ইয়েস। ( গাল টেনে দিয়ে)
মুনাঃ আপনি খেলবেন আমাদের সাথে?
সুবহা ইশারা করে বাচ্চাদের না বলছে তাও তারা কথা শুনছে না। রওশন সুবহার দিকে তাকাতেই দেখে সুবহা ইশারা করে বাচ্চাদের না বলছে। রওশন সুবহার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকতেই সুবহা যেন ভয়ে জমে যায়। রওশন মুনার গাল টেনে বললো।
রওশনঃ অবভিয়াসলি খেলবো। কিন্তু তোমাদের সুবহা আপিরও খেলতে হবে আমাদের সাথে।
তিন্নিঃ আপি তো খেলবেই তাইনা আপিইই।
সুবহা জোর করে হাসার চেষ্টা করে মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বলল।
রওশনঃ ওকে দ্যান আমিও খেলবো।
সবাই ইয়েহ বলে রওশনকে জড়িয়ে ধরে রওশন টাল সামলাতে না পেরে সবাইকে নিয়ে পরে যায়। সুবহা আর বাকি বাচ্চারা ভয়ে শেষ যদি রওশন এখন রেগে কিছু করে বসে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে রওশন হেসে দিল ওর সাথে বাকি বাচ্চারাও।
গোলু রওশনের চোখে পট্টি বেঁধে দিয়ে খেলা শুরু করল। রওশন বাচ্চাদের সাথে নিজেও বাচ্চা হয়ে গেছে।
সুবহা খেলা বাদ দিয়ে শুধু রওশনকে দেখছে। খুব গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ও রওশনকে। রওশনের এই রুপটা সম্পুর্ণ ভিন্ন সুবহার কাছে। যাকে কখনো ও মুচকি হাসতেও দেখে নি কিছু দিন যাবত তার কত রুপ ওর সামনে আসছে। বাচ্চাদের সাথে যেন রওশনও বাচ্চা হয়ে গেছে।
কালো রঙের সুটে আবৃত এক লোক দূর থেকে রওশন আর সুবহার ছবি তুলছে। তোলা শেষে ছবি গুলো লোকটি কারো নাম্বারে পাঠিয়ে দিয়ে ওখান থেকে সরে গেল।
সারাদিন রওশন বাচ্চাদের সাথে খেলা করে তাদের সবাইকে গিফট গুলো দিয়ে সুবহাকে নিয়ে বেরিয়ে যায়।
রওশন হাসি মুখে ড্রাইভ করছে আজ ওর লাইফের বেস্ট ডে ছিল ভাবছে রওশন। সুবহা মুগ্ধ চোখে দেখছে রওশনকে। মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ওর।
সুবহাঃ একটা প্রশ্ন ছিল রওশন।
রওশনঃ আমি জানি তুমি কি প্রশ্ন করবে। এটাই না যে আমি কেন বাচ্চা গুলোর সাথে এতো ফ্রেন্ডলি হয়ে টাইম স্পেন্ড করলাম?
সুবহাঃ হ্যাঁ।
রওশন একটা গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে সুবহাকে বলতে শুরু করে।
রওশনঃ আমি ওদের যায়গায় নিজেকে দেখেছি সুবহা! ইউ নো হোয়াট ছোট বেলা থেকেই একা বড় হয়েছি। মম ড্যাড এর ডেথ্ এর পর নিজেই নিজেকে সামলাতে শিখেছি আমি। ওই বাচ্চা গুলো আর আমার মধ্যে তেমন একটা তফাৎ নেই। ওরাও অনাথ আর আমিও অনাথ। পার্থক্য একটাই ওদের সামলানোর জন্য তুমি আছো কিন্তু আমার কেউ ছিল না। কারো সাহায্য ছাড়া নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি আমি।
অনেক স্ট্রাগল করেছি তার ফল স্বরূপ আমি এখন বাংলাদেশের ওয়েল নোন ফেসের মধ্যে একজন।
কথা গুলো বলে রওশন গাড়ি ব্রেক করলো। সুবহার দিকে তাকতেই দেখল সুবহা অদ্ভুত দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এই দৃষ্টিতে কিছু অনুভূতি কিছু গভীর আবেগ অনুভব করছে রওশন।
রওশনঃ তোমার বাসা এসে পরেছে।
রওশনের কথায় ঘোর কাটে সুবহার। গ্লাসের বাইরে তাকাতেই দেখলো ওর বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়েছে রওশন। সুবহার মুখটা মলিন হয়ে গেল। মনে হচ্ছে আজ খুব দ্রুত সময় পেরিয়ে গেছে। আর কিছু মুহূর্ত রওশনের সাথে কাঁটাতে ইচ্ছে করছে। ওকে জানতে ইচ্ছে করছে ওর অব্যক্ত কথা গুলো শুনতে ইচ্ছে করছে।
রওশনঃ আজ কি গাড়িতেই থাকার ইরাদা আছে নাকি?
সুবহাঃ আব নাহ তো। গুড নাইট। ( মুখ মলিন করে)
সুবহা বেরিয়ে যেতে নিলেই রওশন ওর হাত ধরে আটকায়। সুবহা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো রওশনের দিকে। রওশন সুবহার দিকে এগিয়ে আসে কিছুটা।
রওশনকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতেই সুবহার চোখ বড় বড় হয়ে গেল আর হার্টবিট ও ফাস্ট হয়ে গেল। সুবহা ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে হঠাৎ কপালে ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই সুবহা চোখ মেলে তাকালো। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সুবহা রওশনের দিকে।
রওশনঃ নাও গো,,, ( ড্রাইভিং সিটের সামনে তাকিয়ে)
সুবহা এক ঝটকায় গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পায়ে নিজের বাড়িতে ঢুকে যায়। রওশন মুচকি হাসছে সুবহার কাজে।
রওশনের ফোন বাজতেই ওর চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায়।
রওশনঃ হ্যালো। ( রিসিভ করে)
,
,
রওশনঃ গুড জব ওর খাতিরদারি করো আমি আসছি। ( বাঁকা হেসে)
রওশন সুবহার বাড়ির দিকে এক পলক তাকিয়ে ড্রাইভিং শুরু করল।
? After Some Time ?
একটা লোককে চেয়ারে বসিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। লোকটির পুরো শরীর ভয়ে কাঁপছে কারন সামনেই অপজিট চেয়ারে রওশন বসে আছে। রওশনের হাতে রিভলবার। রিভলবার টা নিজের কপালে ঠেকিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে সামনে বসে থাকা লোকটির দিকে তাকিয়ে আছে রওশন।
লোকটিঃ ব বস আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ আর এরকম ভুল হবে না। ( ভয়ার্ত প্লাস কান্না জড়িত কণ্ঠে)
রওশন সোজা হয়ে ঝুঁকে বসে লোকটির দিকে তারপর কিছুটা শান্ত স্বরে বলতে শুরু করে।
রওশনঃ তুই যেটা করেছিস সেটা কি আদৌ ক্ষমার যোগ্য?
লোকটিঃ ভ ভুল হয়ে গেছে বস। টাকার লোভে অন্ধ হয়ে এমনটা করে ফেলেছি।
কথাটা বলার সাথে সাথে রওশন লোকটির হাতে গুলি করে দেয়। লোকটি চিৎকার করে উঠে। পাশের সব লোকেরা ভয়ে কেঁপে উঠে আর অয়নতো ঘেমে একাকার বারবার রুমাল দিয়ে নিজের কপাল মুচছে।
রওশনঃ সব ভুলের ক্ষমা আছে কিন্তু বেঈমানির কোন ক্ষমা নেই রওশনের কাছে। তুই আমার লোক হয়ে টাকার লোভে আমার শত্রুর সাথে হাত মিলিয়েছিস আর ভাবছিস আমি তোকে ক্ষমা করে দিব; ইম্পসিবল।
যারা পিঠ পিছে প্রহার করে তাদের থেকে ভয়ঙ্কর শত্রু দ্বিতীয় হয় না। তোকে এখন ক্ষমা করে দিলে তুই আবার আমাকে পেছন দিয়ে আঘাত করবি আর তা রওশন মেনে নিবে না। ( রাগান্বিত ভাবে )
কথা গুলো বলেই রওশন লোকটির বুকে গুলি করে তার বুক ঝাঁঝরা করে ফেলে। রিভলবার থেকে ধোঁয়া উঠছে এই ধোঁয়া হয়তো রওশনের রাগ কে ঠান্ডা করছে।
রওশনঃ শাহিন !
শাহিনঃ জ জ্বি স্যার!!
রওশনঃ এর লাশ এমন জায়গায় ফেলে আসো যেখানে শকুনেরা এর দেহ চিরে চিরে খেতে পারে।
শাহিনঃ জ্বি।
রওশন নিজের চেক বুকে বড় অঙ্কের টাকা লিখে অয়নের হাতে দিয়ে বলে।
রওশনঃ এটা এই বেঈমানের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিও। তাদের যেন কোন কিছুর সমস্যা না হয়।
অয়নঃ জ্বি স্যার।
রওশন বেরিয়ে গেল গোডাউন থেকে। অয়ন চেকের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলতে শুরু করে।
অয়নঃ স্যারের নিয়ম আমি কিছুই বুঝি না। একদিক দিয়ে মারে আরেকদিক দিয়ে সাহায্য করে।
To be continued…..
হাও ওয়াজ দ্যা ঝাটকা গাইজ।? রওশনের আরো কত রুপ দেখা বাকি আছে আপনাদের।??
#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_12
,
,
,
,
রওশন বেরিয়ে গেল গোডাউন থেকে। অয়ন চেকের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলতে শুরু করে।
অয়নঃ স্যারের নিয়ম আমি কিছুই বুঝি না। একদিক দিয়ে মারে আরেকদিক দিয়ে সাহায্য করে।
? The Next Day ?
সুবহা অফিসের জন্য বেরিয়ে নিজের গাড়িতে উঠতে নেয় হঠাৎ পেছন থেকে কেউ ওর মুখে রুমাল ধরে আর সুবহা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
কিছুক্ষন পর সুবহার জ্ঞান ফিরে। সুবহা চোখ মেলতেই নিজেকে বেডে আবিষ্কার করল। সুবহা এক ঝটকায় উঠে যায় বেড থেকে। আশেপাশে তাকিয়ে জায়গাটা চেনার চেষ্টা করছে সুবহা।
সুবহাঃ এটা কার বাসা আর আমি এখানে আসলাম কিভাবে? ( মনে করার চেষ্টা করে)
হঠাৎ সুবহার খেয়াল হলো কেউ ওকে পেছন দিয়ে রুমাল শুকিয়ে দেয় এর পর কি হয় ওর মনে নেই।
দরজা খোলার আওয়াজে সুবহা সেদিকে ফিরল। দরজা খুলে কেউ প্রবেশ করছে রুমে। লোকটিকে দেখে সুবহা কিছুটা অবাক হল ওর আর বুঝতে বাকি রইল না এটা কার কাজ।
আভিঃ গুড মর্নিং বেবি। ( রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
সুবহাঃ আমাকে এভাবে এখানে আনার মানে কি আভি ?( রেগে)
আভিঃ কুল বেবি এতো হাইপার কেন হচ্ছো। সিট বসে কথা বলি,,,( শান্ত ভাবে)
সুবহাঃ তোমার সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাধে। আমি এক মুহুর্ত ও এখানে থাকবো না।
সুবহা রেগে আভিকে ক্রস করে যেতে নিলেই আভি সুবহার হাত টেনে ওকে বেডে ফেলে দেয় তারপর ওর উপর আধশোয়া হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে শুরু করে।
আভিঃ সিরিসলি! আমার সাথে কথা বলতে রুচিতে বাধে তোমার? এখন আমাকে ভালো লাগে না তাই না? ওওও ভালো লাগবেই বা কি করে এখন তো তোমার নতুন আশিক ওই রওশন ওকে ভালো লাগে। আমাকে এখন দেখতেও বিরক্ত লাগবে তোমার কাছে।
সুবহা আভিকে সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু আভি এক ইঞ্চি ও নরছে না বরং সুবহার হাত বেডের সাথে শক্ত করে ধরে আবার বলতে শুরু করে।
আভিঃ মানছি আমি ভূল করেছি কিন্তু ভুলটা এতো বড়ও ছিল না যতটা তুমি রিয়েক্ট করছ। তোমার হাত ধরলেও তুমি আনকমফরটেবল ফিল করো আর যদি বিয়ের আগে তোমার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতাম গড নোস তুমি কি করতে। তোমার ইচ্ছে কে প্রায়রিটি দিয়ে আমি সব সময় তোমার থেকে ডিস্টেন্স রেখেছি। কিন্তু তুমি সামান্য বিষয় নিয়ে বিয়েটাই ভেঙে দিলে হোয়াই।এসব বিষয় আজকাল কমন সুবহা। বিয়ের আগে সবারই কম বেশি আ্যফের থাকে, অনেকেই এমন করে তাহলে আমার বেলাতে তুমি এতো রিয়েক্ট করছ কেন?( রেগে )
সুবহা আভিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে উঠে দাঁড়ালো তারপর চিল্লিয়ে বলতে শুরু করল।
সুবহাঃ হুম করে কিন্তু তোমার মত ক্যারেক্টারলেস ছেলেরা। ভদ্র ফেমিলির ছেলেরা এমন হয় না।
আভি উঠে সুবহার হাত শক্ত করে ধরে সুবহা ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে।
আভিঃ আমি ক্যারেক্টারলেস অভদ্র?? তাহলে ভদ্র কে ওই রওশন তোমার নতুন আশিক??
সুবহাঃ মুখ সামলে কথা বলো আভি।
আভিঃ বাহ রওশনের জন্য এতো মায়া যে ওর বিরুদ্ধে কিছু শুনতেও পারো না গুড। কি এমন জাদু করল রওশন যা এতো বছরে আমি করতে পারি নি বলো না?
সুবহাঃ আভি লাগছে আমার ছাড়ো। ( হাত ঝাড়া দিয়ে)
আভিঃ আজকের পর থেকে তোমার চিন্তা ভাবনা সব আমায় ঘিরে হবে। তোমার উপর শুধু আমার অধিকার সুবহা আর এই অধিকার আজ আমি আদায় করেই ছাড়বো।
সুবহাঃ ম মানে?
আভিঃ মানে টা খুবই সিম্পল,, আজকে আমাদের বিয়ে। আজকের পর থেকে তুমি সুবহা আভি রায়জাদা হয়ে যাবে বেবি। আমাদের মাঝে কোন তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ হবে না,,, নাহ কোন রিশা আর না কোন রওশন।
সুবহাঃ কখনোই না,, আমি তোমাকে বিয়ে করবো না। আমার হাত ছাড়ো আমি বাসায় যাবো।
আভিঃ আমি জানতাম সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না তাই আঙ্গুল আমি আগে থেকেই বাঁকা করে রেখেছি।
আভি নিজের ফোন বের করে একটা ভিডিও ফুটেজ দেওখায় সুবহাকে। সুবহা ছো মেরে ফোনটা নিয়ে ভিডিওটা দেখে,,,
গোলুকে একটা চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়েছে আর ও কান্না করছে আর সুবহা কে ডাকছে। অনাথ আশ্রমে গোলুর প্রতি সুবহা সবচেয়ে বেশি দূর্বল আর এই দূর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে আভি।
সুবহাঃ আভি ও বাচ্চা মানুষ ওকে এভাবে বেঁধে রেখেছে কেন? ও ভয় পাচ্ছে কান্না করছে দেখ। প্লিজ তোমার মানুষদের বল ওকে ছেড়ে দিতে। ( কান্না করে দিয়ে)
আভি সুবহার হাত থেকে ছো মেরে ফোনটা নিয়ে নিজের পকেটে রেখে বলতে শুরু করে।
আভিঃ অবভিয়াসলি বেবি আমি আমার লোকদের বলবো গোলু বাবুকে সহি সালামত আবার চাইন্ড কেয়ার হোমে পৌঁছে দিতে কিন্তু তার জন্য তো তোমাকে আমার কথা মানতে হবে।
সুবহাঃ তুমি যা বলবে যেভাবে বলবে আমি করব বাট প্লিজ ওর কোন ক্ষতি করো না আভি।
আভিঃ গুড গার্ল। এখন এই কান্না অফ করে আমার সাথে নিচে চল। নিচে কাজী সাহেব অপেক্ষা করছেন আমাদের বিয়ে পরানোর জন্য। ( ডেভিল স্মাইল দিয়ে)
সুবহা আভির দিকে ঘৃণা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে শুরু করল।
সুবহাঃ আর কত নিচে নামবে আভি। আমার তো ভাবতেও ঘৃনা করে যে আমি তোমার মত একজনকে নিজের জীবন সঙ্গী হিসেবে চুজ করেছিলাম।
আভিঃ যতটা নিচে নামলে তোমাকে পাব ততটা নিচে নামতে আমি রাজি। ( একবার বিয়েটা হয়ে গেলে রওশন কিচ্ছু করতে পারবে না কিচ্ছু না… মনে মনে)
সুবহাঃ আই জাস্ট হেইট ইউ কখনো ক্ষমা করবো না তোমাকে।
আভিঃ স্টপ ইউর ড্রামা সুবহা অনেক বলেছো তুমি আর অনেক শুনেছি আমি। আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
আভি সুবহার হাত শক্ত করে ধরে ওকে নিয়ে নিচে নেমে আসে।
কাজির সামনে বসে আছে সুবহা আর আভি। আশে পাশে আভির চেলাপেলারা গার্ড দিয়ে আছে। আভির ঠোঁটে বিশ্ব জয় করা হাসি। সুবহা ভেবে পাচ্ছে না কিভাবে এই পরিস্থিতি থেকে বেরোবে ও।
কাজি সাহেব আভির দিকে কাগজ এগিয়ে দিতেই আভি দ্রুত সাইন করে দেয়। আভি কাগজটা সুবহার দিকে এগিয়ে দেয়। সুবহা কাঁপা কাঁপা হাতে কলম ধরে কিন্তু কিছুতেই সাইন করতে পারছে না ও। হাত কাঁপছে সাথে মনে হচ্ছে হৃদ স্পন্দনের গতিও বেড়ে যাচ্ছে ওর।
আভিঃ সাইন করো সুবহা। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
সুবহা করুন চোখে আভির দিকে তাকালো। আভি সুবহার হাত শক্ত করে ধরে নিজেই সাইন করাতে নেয়।
হঠাৎ গুলির শব্দে সবার আত্মা কেঁপে উঠলো। আভি আর সুবহা সহ সবাই ভয় পেয়ে যায় হঠাৎ এমন শব্দে। অনেক গুলো কালো সুট পরা লোক হাতে গান নিয়ে ঢুকে পরে তারপর আভির চেলা গুলোর উপর গান পয়েন্ট করে দাঁড়ায়। আভি আর সুবহা কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে।
আভিঃ হোয়াট দ্যা হ্যাল্ কে তোমরা আর এখানে কি চাই?( চিল্লিয়ে )
রওশনঃ নিজের আমানত,,,
আভি আর সুবহা শকড্ হয়ে পেছনে ফিরল। সুবহা যেন প্রান ফিরে পেল রওশনকে দেখে। সব ভয় নিমিষেই দূর হয়ে গেল ওর। সুবহার ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠল। রওশন কালো ফুল সুট পরে আছে। হাতে গান একদম মাফিয়া লুক।
আভিঃ ভ ভাই তুমি? ( ভয়ে ভয়ে)
রওশনঃ হুম তোর বিয়েতে আমাকে দাওয়াত দিলি না এটা কেমন কথা আভি। ( এগিয়ে এসে )
আভিঃ না মানে আমি আসলে। ( আমতা আমতা করে)
রওশন গিয়ে আভির আভির অপজিটে পায়ের উপর পা তুলে বসে পরল।
রওশনঃ আচ্ছা বাদ দে কাজি সাহেব আপনি বিয়ে পরানো শুরু করেন।
নিমিষেই সুবহার মুখ মলিন হয়ে গেল।এটা কি বলছে রওশন? ও ভেবেছিল রওশন হয়তো ওকে বাঁচাতে এসেছে কিন্তু এখানে তো উল্টা রওশন ওদের বিয়ে দিতে চাইছে। এটা আশা করে নি ও রওশনের থেকে।
আভি তো মহা খুশি হয়ে বসে পরলো। কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করলেন। আভির নাম নিতেই রওশন বলে উঠে।
রওশনঃ আপনি বরের নাম ভূল বললেন কাজি সাহেব। বরের নাম আভি রায়জাদা না রওশন রায়জাদা হবে।
আভি আর সুবহা রওশনের কথায় চমকে যায়। আভি রেগে উঠে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করে।
আভিঃ এটা কোন ধরনের কথা ভাই।
আভি দাঁড়াতেই একজন গার্ড ওর মাথায় বন্দুক তাক করে দেয়।
রওশন কাজি সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে।
রওশনঃ আপনি কি বিয়ে পড়াবেন নাকি আপনাকেও ডোজ দেওয়া লাগবে।
কাজি ভয়ে দ্রুত বিয়ে পড়িনো শুরু করে। সব কিছু সুবহার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কি হচ্ছে এসব? ও শুধু অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে।
কাজি রওশনকে কবুল বলতে বললে রওশন সুবহার দিকে তাকিয়ে কবুল বলে ফেলে। আভি কিছু করতেও পারছে না সইতেও পারছে না। ওর বিয়ের আসরে ওকেই গান পয়েন্ট করে রওশন ওর হবু বউ কে বিয়ে করে ফেলছে বেচারার কি ভাগ্য।
কাজি সুবহাকে কবুল বলতে বললে সুবহা ভাবনায় পরে যায় কি বলবে ও। সুবহাকে চুপ থাকতে দেখে রওশন কড়া গলায় বলে উঠে।
রওশনঃ তুমি কবুল বলবে নাকি আভির সাথে তোমার বিয়ে পরানোর ব্যবস্থা করব।
রওশনের কথায় সুবহা চোখ বড় বড় করে আভির দিকে তাকায় তারপর এক নিঃশ্বাসে তিন কবুল বলে ফেলে।
সুবহাঃ এই ক্যারেক্টারলেস আভির থেকে #Mr_Arrogant রওশন রায়জাদা অনেক ভালো। ( মনে মনে)
কাগজে সাইন করে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায় রওশন আর সুবহার। রওশন দাঁড়িয়ে অয়নকে ইশারা করলো তারপর অয়ন একটা ছানার বক্স এনে রওশনের হাতে দিল। রওশন এক টুকরো মিঠাই বের আভির সামনে গেল। আভি রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে।
রওশনঃ তুই তো আমাদের কংগ্ৰেট্স করবি না তাই ভাবলাম আমিই করি। আজকে থেকে তুই ভাবি পেয়ে গেলি সেই খুশিতে মুখ মিঠা কর।( মিঠাই এগিয়ে দিয়ে)
আভি নিজের মুখ ঘুরিয়ে নিল।
রওশনঃ ওও স্যরি লিটল ব্রো আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম তোর মিঠাই পছন্দ না। যাক আমিই মুখ মিঠা করি,, ( বলেই মিঠাই টুকু খেয়ে নিল)
আভি কাছে রওশনের বাঁকা হাসি গায়ে এসিড পরার মত লাগছে। আভি রওশনের হাত থেকে মিঠাই বক্সটা দূরে ছিটকে ফালায়।
রওশনঃ এটা কি করলি আভি তোর ভাবিতো এখনো মুখ মিঠা করল না।
আভি রাগে ফুঁসছে,,, রওশন সুবহার হাত ধরে নিজের কাছে টেনে আনে তারপর ওকে বল,,,
রওশনঃ জান তোমার ছানা অনেক পছন্দ তাইনা কিন্তু দেখ তোমার প্রান প্রিয় দেবর তো সব ফেলে দিল এখন তোমার মুখ মিঠা আমি কি দিয়ে করাই বলো? ( ভাবার এক্টিং করে)
সুবহা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। ও একবার রওশনের দিকে আরেকবার আভির দিকে তাকিয়ে ঢোঁক গিলছে।
রওশন কিছুক্ষন ভেবে আচমকা বলে উঠে।
রওশনঃ বয়েজ সবাই নিজের চোখ বন্ধ করো। রওশনের গার্ডস্ রা চোখ বন্ধ করে ফেলে। রওশন কাজি সাহেবের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে,,,
রওশনঃ আপনাকে কি আলাদা ভাবে নিমন্ত্রণ দিয়ে বলতে হবে।( হাতের গানটা ঘুরিয়ে)
কাজি ভয়ে দ্রুত নিজের চোখ ঢেকে ফেলে। সুবহা আর আভি বোঝার চেষ্টা করছে রওশন কি করতে চাইছে। আচমকা রওশন সুবহার কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের কাছে এনে ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।
সুবহা তো ফুল শকড্ আর আভির তো চোখ বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।
রওশন সুবহাকে ছেড়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে আভিকে বলে।
রওশনঃ এখন থেকে ও তোর ভাবি তাই ওকে সম্মান দিয়ে চলবি। বড় ভাবি মায়ের সমান তাই আশা করব তুই তোর ভাবিকে অন্য চোখে দেখার চেষ্টা করবি না আর যদি করিসও তুই জানিস রওশন কি করতে পারে। নাও শি ইজ মিসেস সুবহা রওশন রায়জাদা। ( সুবহার দিকে তাকিয়ে)
রওশন সুবহা হাত ধরে বেরিয়ে যায়। সুবহা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে। কি করল এই মাত্র রওশন। লজ্জা বলতে আদৌ ওর কিছু আছে।
রওশন গাড়ির ডোর খুলে দেয় কিন্তু সুবহা না ঢুকে রওশনের দিকেই তাকিয়ে আছে। রওশন সুবহার চোখের দিকে তাকিয়ে একটু ঝুঁকে বলে,,
রওশনঃ সুবহা ডু ইউ ওয়ান্ট মোর,,,
সুবহা চোখ বড় করে এক ঝটকায় গাড়িতে উঠৈ বসে। শরীর কাঁপছে বেচারির এমনিতেই ভয়ে তার উপর রওশন আরো ভয় দেখাচ্ছে।
সুবহা বসে পরতেই রওশন বাঁকা হেসে ওর পাশে বসে পরল। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিল।
এইদিকে,,,
রওশন আর সুবহা যাওয়ার পর আভি পুরো বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করেছে।
আভিঃ ছাড়বো না আমি তোকে রওশন আই উইল ডিস্ট্রয় ইউউউ,,,, আভির জিনিসে হাত দেওয়ার ফল খুব শীঘ্রই তুই পাবি। ( রেগে চিৎকার করে)
To be continued….
ঝাটকা নাম্বার 2 ? কেমন লাগলো সবার। রওশনের মাফিয়া লুক কার কেমন লাগলো ?