#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love,Part_13,14
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_13
.
.
সুবহা বসে পরতেই রওশন বাঁকা হেসে ওর পাশে বসে পরল। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিল।
সুবহা বার বার আড়চোখে রওশনের দিকে তাকাচ্ছে। আজকের ঘটনা টা সম্পূর্ণ মাথার উপর দিয়ে গেল ওর। মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সুবহার কিন্তু প্রশ্ন গুলোর জবাব চাওয়ার সাহস হচ্ছে না।
হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় ধ্যান ভাঙল সুবহার। সামনে তাকিয়ে দেখে গাড়ি চাইল্ড কেয়ার হোমের সামনে থেমেছে। সুবহা অবাক চোখে তাকালো রওশনের দিকে।
রওশনঃ নামো,,,
সুবহা বাধ্য মেয়ের মত নেমে গেল। রওশনও গাড়ি থেকে নেমে সুবহার হাত ধরে হাঁটা শুরু করল। হোমের ভিতরে প্রবেশ করতেই সুবহার চোখ যায় ড্রইং রুমের সোফার দিকে। গোলু বাকি বাচ্চাদের সাথে মিলে সোফায় বসে টিভি। গোলুকে দেখেই সুবহার চোখে পানি চলে আসলো। দৌড়ে গোলুর কাছে গিয়ে ওর সামনে হাঁটু ভাঁজ করে বসে ওকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করল।
সুবহাঃ গোলু বাবু তুমি ঠিক আছো তো?
গোলুঃ হুম আপিই আ’ম অলরাইট ডোন্ট ক্রাই ( সুবহার চোখ মুছে দিয়ে)
সুবহাঃ কিন্তু তুমি এখানে আসলে কিভাবে তোমাকে তো ওরা?
হঠাৎ গোলুর চোখ রওশনের দিকে যেতেই ও লাফ দিয়ে উঠে রওশনের কাছে চলে যায়।
গোলুঃ আরেহহ সুপার ম্যান তুমি?
রওশনঃ তোমার সুবহা আপি তোমার জন্য টেনশন করছিল তাই ওকে নিয়ে আসলাম।( হাঁটু গেড়ে বসে)
গোলু রওশনের হাত ধরে সুবহার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে।
গোলুঃ জানো আপি যখন ওই পঁচা আঙ্কেল গুলো আমাকে ধরে রেখেছিল ভাইয়ানা সুপার ম্যান এর মত এন্ট্রি নিয়ে তাদের ইচ্ছে মত ধোলাই দিয়ে আমাকে নিয়ে আসেন। একদম যেমন টিভিতে সুপার হিরো রা বেবিদের রেস্কিউ করে ঠিক সেভাবে।
সুবহা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রওশের দিকে। ওর চোখে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পাচ্ছে।
রওশনঃ গোলু যাও গিয়ে এখন ঘুমিয়ে পর গুড বয়েজ রা বেশি রাত জেগে টিভি দেখে না গোও,,,
গোলুঃ ওকেইই গুড নাইট সুপার ম্যান ভাইয়া গুড নাইট আপি,,,
গোলু ভিতরে ঢুকে গেল। সুবহা এসে রওশনের সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে নিলেই রওশন বলে উঠে,,,
রওশনঃ জানি তুমি কি বলতে চাও,,এটাই না যে কেন আমি তোমাকে বিয়ে করলাম আর কেনই বা গোলুকে প্রটেক্ট করলাম?
দেখ সুবহা গোলুর জায়গায় অন্য কোন বাচ্চা থাকলে আমি তাকেও প্রটেক্ট করতাম আর গোলু তো অনেক স্পেশাল তাই ওকে প্রটেক্ট তো করতেই হতো।
আর আমি জানি হঠাৎ বিয়েটা হওয়ায় তুমি শকে আছো। হয়তো বিয়েটা মন থেকে মানোও না। কিন্তু এ বিয়ে তুমি মানো কি বা না মানো আই ডোন্ট কেয়ার। যত দিন আভির চ্যাপ্টার শেষ না হচ্ছে তোমার সব দায়িত্ব আমার। যেহেতু ও আমার ভাই ওর ভূল গুলো সুধরে নেওয়া আমার কর্তব্য। আমি আভিকে চিনি ও তোমাকে পাবার জন্য নিচ থেকে নিচে নামতে দ্বিধা বোধ করবে না। ওর পাগলামো তুমি দেখো নি এখনো তাই তোমাকে ওর থেকে সেফ রাখার জন্য বিয়েটা করেছি। আর হ্যাঁ চিন্তার কোন কারন নেই আমি কখনো কোন প্রকার অধিকার নিয়ে তোমার কাছে আসার চেষ্টা করব না। তুমি আগে যেভাবে নিজের লাইফে স্বাধীন ভাবে চলেছো এখনো সেভাবেই চলবে। পার্থক্য শুধু একটাই যে তখন তুমি মিস সুবহা এহমাদ ছিলে বাট নাও ইউ আর মিসেস সুবহা রওশন রায়জাদা। তোমার নামের সাথে আমার নাম যোগ হয়ে গিয়েছে তাই তোমাকে আমার বানানো কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
আর যদি কখনো তুমি এই বিয়ে থেকে মুক্তি চাও ডোন্ট ওয়ারি আমি তোমাকে আটকাবো না। কারন আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো না আর যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে একসাথে পথ চলাও অসম্ভব হয়ে পড়ে।
আমি গাড়িতে অপেক্ষা করছি কাম ফাস্ট। কথাটা বলেই রওশন চলে গেল। সুবহা নির্বাক হয়ে রওশনের কথা গুলো শুনলো। সব প্রশ্নের উত্তর পেলেও নতুন আরেকটা প্রশ্ন মনে উদয় হয়ে গেল ওর “ সত্যিই কি শুধু দায়িত্ব রক্ষার্থে সুবহাকে বিয়ে করেছে রওশন? সুবহার প্রতি কি ওর মনে কোন ধরনের ফিলিংস নেই?”
সুবহা কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রওশনের পাশে গিয়ে বসে পরল। গাড়ি সোজা রায়জাদা মেনশন এর সামনে থামলো।
আজ বাড়িতে বাড়িতে প্রবেশ করতেই অন্য রকম অনুভুতি হচ্ছে সুবহার। আরো একবার এসেছিল কিন্তু তখন এই অনুভূতি টা হয়নি।
রওশনঃ উপরের ডান পাশের রুমটা তোমার। গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।
সুবহা চলে গেল রওশনও নিজের রুমে চলে আসলো। রওশনের পাশের রুমটাই ও সুবহাকে দিয়েছে ও যেন সুবহাকে নিজের চোখে চোখে রাখতে পারে।
সুবহা রুমে এসে পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে। রুমটা একদম রওশনের রুমের মত। হঠাৎ সুবহার খেয়াল হলো ওতো সাথে করে কিছু আনে নি তাহলে চেঞ্জ করবে কিভাবে। সুবহা কিছু একটা ভেবে কাবার্ড খুলতেই হা হয়ে যায়। পুরো কাবার্ড ভর্তি ড্রেসে। সব সুবহার মাপের হওয়ায় সুবহা আরো অবাক হলো। সুবহা একটা কুর্তি সেট নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল।
?
রওশন নিজের রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে আর ভাবছে,,,
রওশনঃ এটা কি আমি ঠিক করলাম? সুবহাকে নিজের জীবনের সাথে জড়ানো টাকি উচিত হয়েছে আমার? যেখানে আমার জীবনই অনিশ্চিত সেখানে আমি ওকে নিজের জীবনের সাথে জড়িয়ে ফেলেছি। ওকে প্রটেক্ট করতে গিয়ে আবার বিপদে ফেলে দিলাম না তো? আমার চারো পাশে শত্রু ভড়া যদি তারা সুবহার কোন ক্ষতি করে দেয়?? নোও নোও আমি এরকম কিছু হতেদিব না।সুবহার উপর আচর ও পরতে দিব না আমি। নিজের জীবন দিয়ে হলেও ওকে প্রটেক্ট করবো। ( নিজে নিজে বলছে)
?
সুবহা ফ্রেশ হয়ে বেরোতেই দেখলো ন্যান্সি খাবার নিয়ে এসেছে।
ন্যান্সিঃ ম্যাম স্যার বলেছে খেয়ে নিতে।
সুবহাঃ উনি খেয়েছে?
ন্যান্সিঃ নাহ
সুবহাঃ আচ্ছা তুমি যাও,,,
ন্যান্সি চলে গেল। সুবহা খাবারের ট্রে টা হাতে নিয়ে রওশনের রুমে আসলো। হাতে ট্রে থাকায় নক না করেই ঢুকে পরলো ও।
রওশন রুমে নেই ওয়াশরুম থেকে পানির আওয়াজ আসছে তার মানে রওশন শাওয়ার নিচ্ছে। সুবহা ট্রে টা টি টেবিলে রেখে বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে পরল। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখছে সুবহা। হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে সে দিকে তাকালো ও। রওশন টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে। শার্ট পরেনি যার কারনে শরীরে বিন্দু বিন্দু পানির ফোঁটা জমে আছে। সুবহা রওশনের দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। ( সুবহার বর ও তাকিয়ে থাকুক আপনারা চোখ বন্ধ করে নিন ?)
হঠাৎ রওশনের কথায় ঘোর কাটে ওর।
রওশনঃ তুমি এখানে?( ভ্রু কুঁচকে)
সুবহাঃ আব খাবার নিয়ে এসেছিলাম,, একা খেতে ভালো লাগে না তাই ভাবলাম আপনার সাথে বসে খাবো।
রওশনঃ ওকে তুমি সার্ভ করো। ( শার্ট পরতে পরতে)
সুবহা প্লেটে খাবার সার্ভ করছে আর আড়চোখে রওশনকে দেখছে। ভেজা এলোমেলো চুল চেহারায় ফোঁটা ফোঁটা পানি, মাত্র গোসল করার কারনে ঠোঁট টা আরো গোলাপী দেখা যাচ্ছে একদম হিরোর মত।
রওশন সুবহার পাশে বসে খাওয়া শুরু করে,,, ওর চোখও বারবার সুবহার দিকেই যাচ্ছে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও। হলুদ রঙের কুর্তি ভেজা চুলে একদম পরী লাগছে ওর চোখে সুবহাকে।
( যাকে ভালোবাসি সব রুপেই তাকে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে আমাদের। তাই কেউ নেগেটিভলি নিবেন না)
রওশন খেয়াল করল সুবহার ঠোঁটের পাশে খাবার লেগে গেছে। রওশন নিজের হাত বাড়িয়ে বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে সুবহার ঠোঁটের পাশে লেগে থাকা খাবারটা সাফ করে দিল। আর এইদিকে রওশনের ছোঁয়ায় সুবহার তো হার্ট অ্যাটাক করার উপক্রম। সুবহা চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়। রওশন সুবহার চোখ বন্ধ করাতে হালকা হেসে দেয় তারপর উঠে যায় ওর পাশ থেকে। রওশনের উঠে যাওয়ার আভাস পেতেই সুবহা ওর চোখ খুলে। রওশন সোফায় ল্যাপটপ নিয়ে বসে পরেছে। সুবহা জোরে জোরে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিয়ে খাবার গুছিয়ে ট্রে হাতে নিয়ে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।
সুবহা চলে যেতেই রওশন চোখ তুলে তাকায় ওর যাওয়ার দিকে। রওশন মুচকি হেসে বৃদ্ধা আঙ্গুল টা নিজের ঠোঁটে ছুঁইয়ে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
সুবহা নিজের রুমে এসে শুয়ে পরে। সারাদিনের ধকলে চোখ লেগে যায় ওর।
? In Morning ?
সুবহা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় চলে যায়। সেখানে অনেক ধরনের গাছের টব রাখা। সুবহা গাছ গুলোতে পানি দিচ্ছে এমন সময় ন্যান্সি আসে রুমে।
ন্যান্সিঃ ম্যাম স্যার বলেছে আপনাকে রেডি হতে অফিসের জন্য।
সুবহাঃ ওকে।
সুবহা রেডি হয়ে নিচে নামতেই ওর চোখ যায় রওশনের উপর। রওশন কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। হোয়াইট শার্ট ব্লু জিন্স হাতে ঘড়ি আর চুল গুলো স্পাইপ করা একদম ফর্মাল লুক। সুবহা রওশনের দিকে ঘোরলাগা দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে নিচে নামছে। হঠাৎ পা বেজে পরে যেতে নিলেই কেউ ধরে ফেলে ওকে।
সুবহখ ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। হালকা করে চোখ খুলতেই সুবহা দেখতে পেল রওশন ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।
রওশন সুবহাকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে ধমকের স্বরে বলল।
রওশনঃ আল্লাহ চোখ দিয়েছে সেটা ব্যবহার করতে শিখ। বারবার পরে গেলে বারবার ধরার জন্য আমি থাকবো না।
থাকবো না কথাটা সুবহার বুকে গিয়ে লাগে। কেন বলল থাকবো না? সুবহা তো চায় রওশন সারাজীবন ওর পাশে থাকুক। সুবহা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে।
রওশন সুবহার দৃষ্টি দেখে নিজেই বোকা বনে গেলো। এইটুকু কথাতে এতো ইমোশনাল হওয়ার কি আছে ভাবছে রওশন।
রওশনঃ একটা চোখের পানির ফোঁটা যদি নিচে পরেছে তো দেখে নিও আমি কি করি।( কড়া গলায়)
রওশনের কথায় সুবহা ভয় পেয়ে দ্রুত চোখ মুছে নিল।
রওশনঃ গুড গার্ল এখন চলো লেট হচ্ছে।
রওশন সুবহার হাত ধরে গাড়িতে গিয়ে বসল। ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিল। রওশন এখনো সুবহার হাত ধরে বসে আছে সামনের দিকে তাকিয়ে। সুবহা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করল না কারন ও চায় না রওশনের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়াতে।
কিছুক্ষণ বাদে অফিসের গেট দিয়ে গাড়ি প্রবেশ করল।সুবহা বাইরে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল কারন এটা তো ওর অফিস না যেখানে ও জব করে এটা রায়জাদা ইন্ডাস্ট্রিজ।
সুবহা রওশনকে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস ও পাচ্ছে না যদি রওশন আবার ঝাড়ি দেয়।
রওশন সুবহাকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করল। ওরা দুজন প্রবেশ করতেই অফিসের সব স্টাফরা দাঁড়িয়ে মর্নিং উইশ করে। অনেকেই সুবহাকে রওশনের সাথে দেখে অবাক হচ্ছে।
রওশন সুবহার কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের সাথে দাঁড় করিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য বলতে শুরু করে।
রওশনঃ আপনাদের নিউ এমডি মিসেস সুবহা রওশন রায়জাদা। আশা করি সবাই ইনার পরিচয় বুঝতে পেরেছেন।
সুবহা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে। ও ভেবে পাচ্ছে না কি বলবে। কালকে থেকেই বেচারি শকের উপর শক খাচ্ছে। না জানে ভবিষ্যতে আর কি কি
অপেক্ষা করছে ওর জন্য।
To be continued….
আভি রওশনের আপন ভাইনা আর না সৎ ভাই? গল্পটা প্রথম থেকে পড়লেই ওদের রিলেশন টা বুঝতে পারবেন।
#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_14
.
.
.
.
রওশন সুবহার কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের সাথে দাঁড় করিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য বলতে শুরু করে।
রওশনঃ আপনাদের নিউ এমডি মিসেস সুবহা রওশন রায়জাদা। আশা করি সবাই ইনার পরিচয় বুঝতে পেরেছেন।
সুবহা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে। ও ভেবে পাচ্ছে না কি বলবে। কালকে থেকেই বেচারি শকের উপর শক খাচ্ছে। না জানে ভবিষ্যতে আর কি কি
অপেক্ষা করছে ওর জন্য।
সব স্টাফরা সুবহাকে কংরেচুলেট করছে। নিজের অজান্তেই সুবহার মনে এক ভালো লাগা সৃষ্টি হচ্ছে। কখনো ভাবে নি সুবহা যে রওশন সবার মাঝে দাঁড়িয়ে নিজের নামে ওকে পরিচয় দিবে।
রওশন সুবহার হাত ধরে একটা কেবিনে নিয়ে যায়। কেবিনটা রওশনের কেবিনের সাথে জয়েন করা মাঝ বরাবর একটা থাই সিস্টেম। সুবহার কেবিন থেকে রওশনের কেবিনের ভিতরটা দেখা যায় না কিন্তু রওশনের কেবিন থেকে সুবহার কেবিনের ভিতরটা স্পষ্ট দেখা যাবে।
সুবহাঃ রওশন আপনি আমার জন্য এতো কিছু কেন করছেন?( অবাক চোখে)
রওশনঃ বিকজ ইউ আর মাই ওয়াইফ আর তোমার ভালো খারাপ সবটা দেখার দায়িত্ব আমার। তাছাড়া রওশন রায়জাদার কোন কিছুর কমতি নেই যে তার স্ত্রী অন্য কারো অফিসে অন্য কারো আন্ডারে জব করবে। তোমাকে আগেই বলে দিয়েছিলাম যে এখন তোমার নামের সাথে আমার নাম যোগ হয়েছে তাই তোমাকে অবভিয়াসলি আমার বানানো কিছু নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে। ধরে নাও এটা সেই নিয়মের আওতায় পরে।
( সোজা ভাবে উত্তর দিল )
সুবহা হা হয়ে রওশনের কথা শুনছে। লোকটা এতো ক্লিয়ার কাট ভাবে কথা বলে যেন সব প্রশ্নের উত্তর আগে থেকেই তৈরি করে এসেছে।
রওশনঃ আমি তোমার এসিস্ট্যান্ট কে পাঠিয়ে দিব ও তোমাকে সব বুঝিয়ে বলবে।
সুবহাঃ আপনি কোথাও যাবেন?
রওশনঃ হুম একটা দরকারি কাজ আছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ফিরে আসবো টেক কেয়ার অফ ইউরসেল্ফ।
রওশন চলে গেল। সুবহা রওশনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবতে শুরু করে।
সুবহাঃ আপনি যত টুকু বিশ্বাস আমাকে করছেন আমি কি আদৌ সেই বিশ্বাসের যোগ্য রওশন? আপনি আমার থেকেও হাজার গুণ বেশি ভালো মেয়ে ডিজার্ভ করেন নিজের লাইফে তাহলে আমিই কেন? আপনার পাশে দাঁড়ানোর আপনার নামের সাথে নিজের নাম লিখার যোগ্যতা আমার নেই। ভয় হয় যদি কখনো আমার কোন ভূলের কারনে আপনার নাম নষ্ট হয় তখন আমি কি করবো। ( মনে মনে) যাই হোক আমি নিজেকে আপনার যোগ্য করে তুলব। আই প্রমিস আমার কারনে কখনো আপনার উপর কেউ আঙ্গুল তুলার সুযোগ পাবে না।
হঠাৎ দরজায় কড়া নড়ায় সুবহার ধ্যান ভাঙে। একটা মেয়ে কেবিনে প্রবেশ করল,,
মেয়েটিঃ মে আই কাম ইন ম্যাম?
সুবহাঃ সিউর,,
মেয়েটিঃ আমি রাত্রি আপনার পিএ। স্যার বলেছিল আপনাকে অফিসের সব ডিটেইল বুঝিয়ে দিতে।( হাসি মুখে )
রাত্রি সুবহাকে অফিসের সব ডিটেইলস বুঝিয়ে দিচ্ছে। আর সুবহা খুব মনযোগ সহকারে কাজ গুলো বুঝে নিচ্ছে। রওশন ওকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছে সেই দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করে নিজেকে রওশনের যোগ্য দেখাতে হবে ওকে।
? In Godown ?
একটা টেবিলে মুখোমুখি হয়ে বসে আছে দুজন লোক।
লোক দুটোর দু সাইডে অনেক গুলো গার্ড দাঁড়িয়ে আছে আর সবার হাতেই বন্দুক। দেখতেই বুঝা যাচ্ছে এরা গ্যাংস্টার টাইপ লোক।
প্রথম লোকটি একটা ব্রিফকেস বের করে টেবিলে রাখলো।
১ম লোকঃ আমার কথা মত সব ইনফরমেশন আমি এটাতে নিয়ে এসেছি এখন তুমি তোমার কথা অনুযায়ী আমার পেমেন্ট দিয়ে দাও।
২য় লোকঃ ভেরি গুড,, আমি জানতাম তুমি মিনিস্টার কে ফাঁকি দিয়ে আমাকে এই ইনফরমেশন গুলো এনে দিতে পারবে।আ’ম গ্ল্যাড কি আমি আমার কাজের জন্য সঠিক মানুষ কে চুজ করেছি। তুমি তোমার কথা রাখলে।
১ম লোকঃ নাও ইট্স ইউর টার্ন নিজের কথা রাখো। যে কোন মুহুর্তে পুলিশ এখানে হামলা করতে পারে। ( আশেপাশে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
২য় লোকটি হাত বাড়িয়ে ব্রিফকেস টা নিতে নিলেই কোথা থেকে রওশন এসে তার হাত ধরে ফেলে। সবাই চমকে গিয়ে ওর দিকে তাকায়।
পুরো গোডাউনে ইতিমধ্যে রওশনের লোক ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে।
রওশনঃ এতো তাড়া কিসের ইলিয়াস উপ্স স্যরি দ্যা টেরোরিস্ট ইলিয়াস আলী। ( বাঁকা হেসে)
ইলিয়াসের একজন লোক রওশনের উপর গান তাক করতেই রওশন অন্য হাত দিয়ে নিজের গান বের করে গার্ডটার কপাল বরাবর শুট করে দেয়।
রওশনঃ যখন আমি কথা বলি অন্য কারো হস্তক্ষেপ পছন্দ করি না। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
রওশনের সব লোকেরা মিলে ইলিয়াস আর আজমিরের ( ১ম লোকটি )সব গার্ডের ঘিরে ফেলে।
সবাই ভয়ে কাঁপছে কারন রওশন নামক জম তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
ইলিয়াসঃ ত তোমাকে আমি ডাবল পেমেন্ট করবো রওশন হাত মিলিয়ে নাও আমাদের সাথে। দুজন মিলে এই দেশে রাজত্ব করব। ( কাঁপা কন্ঠে)
ইলিয়াসের কথা শুনে হাসিতে ফেটে পরে রওশন। নিজের হাসি কন্ট্রোল করে ওর চোখ গরম ইলিয়াসের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে।
রওশনঃ তুই আমাকে ডাবল পেমেন্ট করবি সিরিয়াসলি,,, ( হেসে )। তোর মত হাজারো টেরোরিস্ট কে কিনে নিজের গোলাম বানিয়ে রাখতে পারবে এই রওশন রায়জাদা।
তোদের মত মানুষদের জন্য আমাদের দেশের ধ্বংস হচ্ছে। তোদের মত টেরোরিস্ট রা জন সাধারনের জীবনকে নরক করে দিচ্ছিস।
কি লাভ হয় তোদের হ্যাঁ? নিজের দেশের সাথে দেশদ্রোহীতা করে। নিজের দেশের সাথে বেইমানি করে। ( রেগে হুঙ্কার দিয়ে)
রওশনের হুঙ্কারে ইলিয়াস আর আজমির কেঁপে উঠে।
ইলিয়াসঃ আমরা আমাদের কাজ করছি এতে যদি সমস্ত দেশ ধ্বংস ও হয়ে যায় তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।
কথাটা বলার সাথে সাথেই ইলিয়াসের হাতে গুলি চালিয়ে দেয় রওশন। ইলিয়াস চিৎকার করে নিচে পরে যায়।
রওশনঃ তোদের মত টেরোরিস্ট কে দুনিয়া থেকে বহিষ্কার করতেই আমার মত মাফিয়াদের জন্ম হয়। তোরা বেঁচে থাকলে দেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না। তাই তোদের মত নরপশু দের এই পৃথিবী থেকে বিতাড়িত করতে হবেই। ( কথা গুলো বলেই রওশন ইলিয়াসের বুকে গুলি করে ওর বুক ঝাঁঝরা করে দেয়। ইলিয়াসের রক্তের ছিটা রওশনের চেহারা আর শার্টে পরেছে। রওশনকে এতো হিংস্র দেখা যাচ্ছে হয়তো এই রুপ সুবহা দেখলে ও তৎক্ষণাৎ ইন্না লিল্লাহ হয়ে যেত )
আজমির ভয়ে কাঁপছে না জানি রওশন এখন ওর সাথে কি করবে।
ইলিয়াসকে ডিঙিয়ে রওশন আজমিরের বরাবর বসলো। টেবিলের উপর গানটা ঘুরাচ্ছে রওশন আর তা দেখে আজমিরের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
রওশনঃ এখন বল তোর কি ব্যবস্থা করা যায়। তুইতো এর থেকেও বড় বেইমান তাহলে তোর পরিনতি এর থেকেও ভয়ঙ্কর হওয়া উচিত তাইনা?
আজমির এবার ভয়ে কেঁদে দেয়। আজমির ভয়ার্ত কন্ঠে আকুতি স্বরে রওশনের পায়ের কাছে বসে বলতে শুরু করল।
আজমিরঃ আ আমাকে ক্ষমা করে দাও রওশন। আমি আর এমনটা কখনো করব না। ভূল হয়ে গেছে আমার।
রওশন আজমিরের বুকে লাথি মেরে ওকে দূরে ছিটকে ফালায়। তারপর নিজে দাঁড়িয়ে ওকে বলতে শুরু করল।
রওশনঃ আমার কাছে ক্ষমা বলতে কোন শব্দ নেই। ভুল যেহেতু করেছিস শাস্তি তো পেতে হবেই। অয়ননন,,,
অয়ন হুড়মুড় খেয়ে রওশনের সামনে আসলো।
অয়নঃ জ জ্বি বস,,,
রওশনঃ একে নিয়ে যাও যখন আমি বলব একে নিয়ে হাজির হবে।
অয়নঃ জ্বি,,
অয়ন আজমিরকে সরিয়ে নিয়ে গেল ওখান থেকে। রওশনের এক গার্ড এসে ওকে বলে,,,
গার্ডঃ বস মিনিস্টার এসেছেন,,
রওশনঃ ওনাকে নিয়ে এসো,,( বাঁকা হেসে)
গার্ড গিয়ে মিনিস্টার কে নিয়ে আসে ভিতরে। ইলিয়াসের লাশের দিকে চোখ যেতেই মিনিস্টারের গলা শুকিয়ে গেল। ভয়ে ভয়ে ও রওশনের সামনে দাঁড়ালো। রওশন ব্রিফকেস টা মিনিস্টার এর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,,
রওশনঃ এই নিন আপনার আমানত। আর হ্যাঁ নেক্সট টাইম সাবধানতার সাথে কাজ করবেন কারন আপনার একটা ভূলের মাসুল সমস্ত দেশকে দিতে হবে।
মিনিস্টার রওশনের কথায় কিছুটা লজ্জিত হলেন।
মিনিস্টারঃ আমি ভাবতে পারিনি আমার নিজের শালক ( বউ এর ভাই ) আমার সাথে বেইমানি করবে। আমার ড্রয়ার থেকে দেশের গোপন তথ্য চুরি করে একজন টেরোরিস্ট এর কাছে বিক্রি করে দিবে। ( লজ্জিত কন্ঠে)
রওশনঃ হুম যেহেতু বিশ্বাস ঘাতক আপনার নিজের আত্মীয় তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার ও তো আপনার।( বাঁকা হেসে)
মিনিস্টারঃ ম মানে?
রওশনঃ অয়ন নিয়ে আসো ওকে,,,
অয়ন আজমিরকে নিয়ে আসলো। আজমির মিনিস্টার কে দেখে বলতে শুরু করল।
আজমিরঃ দুলাভাই আমাকে বাঁচান প্লিজ এরকম ভুল আর হবে না ক্ষমা করে দেন।( কান্না করে)
রওশনঃ নিজের গান বের করে শুট করেন ওকে।
রওশনের কথায় আজমির আর মিনিস্টার দুজনেই চমকে যায়।
মিনিস্টারঃ আমি পারব না রওশন,,( কাঁপা কন্ঠে)
রওশন নিজের গান বের করে মিনিস্টার এর মাথায় তাক করে বলল,,
রওশনঃ আপনাকে পারতে হবে শুট হিম নাহলে আমি আপনাকে শুট করবো।
মিনিস্টার ভয়ে ভয়ে নিজের গান বের করে আজমিরের দিকে তাক করল।
রওশনঃ শুটটটটট,,,
মিনিস্টার ভয়ে শুট করে ফেলল আর আজমিরের দেহ পরে গেল নিচে।
রওশনঃ গুড জব মিনিস্টার। নিজেকে স্ট্রং করুন কারন আপনি দেশের জন্য কাজ করছেন। দেশের শত্রু মানে আপনার শত্রু। দেশের আগে কিছুনা না নিজে আর না নিজের পরিবার।( কড়া গলায়) চলো অয়ন,,,
রওশন নিজের গার্ডদের নিয়ে বেরিয়ে গেল। মিনিস্টার আজমিরের লাশের পাশে বসে ওকে ডাকতে শুরু করল।
[ যারা বুঝতে পারেন নি তাদের বুঝিয়ে বলছি বিষয়টা। মিনিস্টার এর শালক ওর থেকে দেশের গোপন তথ্য চুরি করে ইলিয়াস নামক জঙ্গি কে বিক্রি করতে এসেছিল। রওশন খবরটা পেয়ে এখানে চলে আসে। আর বাকিটা আপনারা পড়লেন উপরে ]
এইদিকে,,,,
সুবহা কাজ করছে এমন সময় ওর ফোন বেজে উঠল। সুবহা নাম্বার না দেখেই কল রিসিভ করে ফেলল।
সুবহাঃ হ্যালো,,
আভিঃ কেমন আছো সুবহা ?( নরম স্বরে)
আভির কন্ঠ শুনে সুবহা বিরক্ত হয়ে কল কেটে দিতে নিলেই আভি বলে উঠে,,,
আভিঃ সুবহা প্লিজ বেবি কল কাটবে না আমার শুনো প্লিজজ,,
সুবহাঃ কেন ফোন করেছ সেটা বলো? ( বিরক্ত হয়ে)
আভিঃ সুবহা আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ। ফিরে এসো আমার কাছে আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি প্লিজজজ। রওশন তোমার যোগ্য না ওকে ছেড়ে দাও সুবহা। ও একজন ক্রিমিনাল খুনি,,
সুবহাঃ জাস্ট শাট আপ আভি। তোমার সাহস কি করে হয় আমার হাজব্যান্ড এর নামে এসব বলার। নেক্সট টাইম আমাকে কল করার দুঃসাহস করবে না।
সুবহা রেগে কল কেটে দিল। আভি রাগের চোটে নিজের ফোন ছুরে মারলো ফ্লোরে।
আভিঃ তোকে ছাড়বো না আমি রওশন। তোর সামনে সুবহাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো আমি। ( রেগে)
সুবহা কল কেটে পিছনে ফিরতেই রওশনকে দেখে ভয় পেয়ে যায়।
To be continued….