#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love,Part_15,16
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_15
.
.
.
.
সুবহা কল কেটে পিছনে ফিরতেই রওশনকে দেখে ভয় পেয়ে যায়। রওশন সুবহার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
সুবহাঃ সব শুনে ফেলল না তো। ( মনে মনে)
রওশনঃ তুমি আমাকে দেখে এমন ভূত দেখার মত চমকে উঠলে কেন সুবহা? ইজ এভরিথিং ওকে?
সুবহাঃ হঠাৎ ভূতের মত সামনে চলে আসলে কে না ভয় পেয়ে চমকাবে। কিন্তু ভালো হয়েছে কিছু শুনে নি। ( মনে মনে)
সুবহাকে অন্যমনস্ক দেখে রওশন সুবহার কাঁধ ঝাঁকিয়ে আবার বলল,,,
রওশনঃ আর ইউ ওকে সুবহা?
সুবহাঃ হ হ্যাঁ আমি ঠিক আছি কি হবে আমার। ( হাসার চেষ্টা করে)
সুবহার হাসি স্বাভাবিক লাগছে না রওশনের কাছে ও বুঝতে পারছে যে নিশ্চয়ই সুবহা ওর থেকে কিছু লুকাচ্ছে। আফটার অল মাফিয়ার ব্রেইন এতো সহজে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব না।
রওশন ভ্রু কুঁচকে সুবহার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলে।
রওশনঃ তুমি কি কিছু লুকাচ্ছো সুবহা,,( লো ভয়েজে)
রওশনকে এগিয়ে আসতে দেখে সুবহার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে সুবহা পেছনের দিকে পিছাতে পিছাতে বলে।
সুবহাঃ ন না রওশন আ আমি কিছু ল লুকাচ্ছি নাতো।( কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
সুবহার যেতে যেতে ডেস্কের সাথে লেগে যায়। রওশন সুবহার একদম কাছে ঘেষে দাঁড়িয়েছে। সুবহা ডান সাইড কেটে সরে যেতে নিলেই রওশন নিজের হাত সেখানে রেখে আটকে দেয়। অপজিট সাইডেও হাত দিয়ে আটকে দেয় রওশন সুবহা যেন ফাঁকি দিতে না পারে। সুবহা অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো রওশনের দিকে। রওশন বাঁকা হেসে সুবহার দিকে একটু ঝুঁকে বলল,,,
রওশনঃ এখন কোথায় পালাবেন মিসেস রওশন রায়জাদা?( বাঁকা হেসে )
সুবহা তো ভয়ে জমে গেছে। রওশন কাছে আসলে বেচারি এমনিতেই ভয়ে ফ্রিজড্ হয়ে যায় আর এখন তো রওশন পুরো গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে।
সুবহাঃ রওশন একটু সরে দাঁড়ান না প্লিজ।( কাঁদো কাঁদো ভাবে)
রওশনঃ কেন?( ভ্রু কুঁচকে)
সুবহাঃ আ আমার দম আটকে আসে আর,,,
রওশনঃ আর ?
সুবহাঃ আর কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভুতি হয় প্লিজ( কিউট করে)
সুবহার মুখে অনুভূতি শব্দটা শুনে রওশন হালকা হাসলো। রওশন সুবহার আরেকটু কাছে গিয়ে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে লো ভয়েজে বলে,,,
রওশনঃ অনূভুতি টার নাম কি আপনি জানেন? কেমন অনুভূতি এটা? ( বলেই সুবহার কানে ঠোঁট ছোঁয়ালো )
রওশনের স্পর্শে সুবহা কেঁপে উঠে। সুবহা নিজের হাত দিয়ে শক্ত করে রওশনের হাত ধরে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে।
সুবহা অনেক জোরে রওশনের হাত ধরে আছে ওর নখ ডেবে গেছে রওশনের হাতে।
রওশন চোখ বন্ধ করে সুবহাকে ফিল করছে। নিজের ব্যথার দিকে ওর কোন খেয়ালই নেই।
রওশন সুবহার ঘাড়ে নিজের নাক ঘষে মুখ উঠিয়ে সুবহার দিকে তাকায়। সুবহাকে বন্ধ চোখে আরো মায়াবী লাগছে। সুবহার প্রতিটা নিঃশ্বাস রওশন গুনতে পারছে। রওশন সুবহার বন্ধ চোখে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই সুবহা আরো জোরে রওশনের হাত খামছে ধরে। রওশন হালকা হাসলো সুবহার কাজে।
রওশন সুবহার ঠোঁটের কাছাকাছি যেতেই হঠাৎ কেউ ডোর নক করে উঠলো। রওশন বিরক্ত হয়ে বলল,,
রওশনঃ হু’স দিস?
সুবহা সুযোগ পেয়েই রওশনের কাছ থেকে দশ হাত দূরে লাফ দিয়ে সরে যায়। বেচারি আর একটু হলে হয়তো দম আটকে মরে যেত।
রওশন সুবহার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে নিজের কোট ঝাড়া দিয়ে বলল,,,
রওশনঃ কাম ,,,
একটা গার্ড ভিতরে ঢুকে বলল।
গার্ডঃ স্যার বাড়ি যাবেন না?
রওশনঃ হুম ড্রাইভার কে বলো গাড়ি বের করতে।
গার্ডঃ ওকে।
গার্ড চলে যেতেই রওশন সুবহার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বলল।
রওশনঃ বাড়িতে যাবে নাকি আজকে অফিসেই থাকার ইরাদা আছে। অবভিয়াসলি এখানে থাকলেও কোন প্রবলেম নেই কজ আমার কেবিনে জয়েন্ট রুম আছে। ( চোখ মেরে)
সুবহা চোখ বড় বড় করে তাকায় রওশনের দিকে। ওর মুখ অটোমেটিক্যালি হা হয়ে গেছে। কি অসভ্য মার্কা কথা বলছে নিশ্চিত মনে হয় মাথা গেছে এই রায়জাদার।
রওশনঃ জাস্ট কিডিং সুবহা ডোন্ট বি সিরিয়াস। ( হেসে)
সুবহা হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
সুবহাঃ এমন ভাবে কেউ মজা করে যেন সিরিয়াস ভাবে বলছে। বাচ্চিকি জান লেগা ক্যায়া। ( মনে মনে)
রওশনঃ ও হ্যালো মিস ভাবনা আবার কোন ভাবনায় ডুব দিলেন।
সুবহাঃ আমার নাম ভাবনা না সুবহা। ( নাক ফুলিয়ে)
রওশনঃ ওও আমিতো ভূলেই গিয়েছিলাম। কি করবো বলো তুমি যেভাবে ভাবনায় ডুব দিয়ে থাকো তাই ভাবলাম হয়তো নিজের নাম চেঞ্জ করার প্রস্তুতি নিচ্ছো।
সুবহাঃ এখন আপনার দেড়ি হয় না।( আড়ি চোখে বলল )
রওশনঃ অবভিয়াসলি হচ্ছে বাট কি করবো লেডিস ফার্স্ট।
সুবহা রওশনের দিকে তাকিয়ে হনহন করে কেবিন থেকে বেরি গেল। রওশন হালকা হেসে সুবহার পিছু বেড়িয়ে গেল।
গাড়িতে সুবহা রওশনের সাথে একটা কথাও বলেনি। রওশন জিজ্ঞেস করেছে অফিসের বিষয়ে টুকটাক কথা সুবহা শুধু এক কথায় উত্তর দিয়েছে।
এইদিকে,,,
আভি দেয়ালে টানানো সুবহার ছবির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আভিঃ তুমি আমার জেদ সুবহা। তুমি এমন একটা মেয়ে যাকে পাবার জন্য আভি রায়জাদা বিয়ে করতেও পিছপা হয়নি। শুধু মাত্র রওশনের থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তোমাকে ভালোবেসেছি। কিন্তু এখন তোমাকে পাওয়া আমার জেদ আমার নেশা হয়ে গেছে। যে আভির পেছনে মেয়েরা লাইন ধরে থাকে সে আভিকে তুমি ইগনোর করতে,,,তোমার এই একটা দিক তোমার প্রতি আমাকে আরো বেশি আকর্ষণ করেছে। তোমাকে আমার চাই সুবহা যে কোন মূল্যে আই ওয়ান্ট ইউ।
রওশন সবসময় আমার থেকে এগিয়ে থেকেছে কিন্তু এবার আমি তাকে হারিয়ে দিব। তোমাকে ওর থেকে দূরে সরিয়ে দিব। এবার রওশন হারবে আর আভি জিতবে।( শয়তানি হাসি দিয়ে)
? At Home ?
সুবহা ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে বসতেই ন্যান্সি খাবার সার্ভ করে দিতে শুরু করে। সুবহা বারবার সিঁড়ির দিকে তাকাচ্ছে দেখছে রওশন আসে কিনা।
সুবহাঃ রওশন স্যার খাবেন না?
ন্যান্সিঃ স্যার বলেছেন উনি আজকে ডিনার করবেন না ম্যাম।
সুবহাঃ ডিনার করবে না মানে কি না খেয়ে ঘুমাবে।
ন্যান্সিঃ আই ডোন্ট নো ম্যাম।
সুবহাঃ তুমি এগুলো ট্রেতে তুলে দাও আমি উপরে নিয়ে যাচ্ছি।
ন্যান্সিঃ ওকে ম্যাম।
ন্যান্সি খাবার ট্রেতে তুলে দিতেই সুবহা সেগুলো নিয়ে রওশনের রুমে চলে যায়।
রওশনের রুমে ঢুকতেই সুবহা দেখলো রওশন হাতে ব্যান্ডেজ করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।
রওশন সুবহাকে হঠাৎ নিজের রুমে ট্রে হাতে ঢুকতে দেখে অবাক হয়।
রওশন কিছু বলার আগেই সুবহা দ্রুত রুমে ঢুকে খাবার ট্রে টেবিলে রেখে রওশনের পাশে বসে ওর হাত টেনে ধরে। হাতে নখের আঁচড় দাগ কেটে আছে একটু একটু রক্তও জমাট বেঁধে আছে।
সুবহাঃ এগুলো কিভাবে হলো রওশন?( অবাক হয়ে)
রওশনঃ একটা জঙ্গলি বিল্লিকে কিস করতে গিয়ে আঁচড় গুলো লেগেছে।
রওশনের কথায় সুবহার মনে পরল ও তখন রওশনের হাত ধরেছিল তার মানে রওশন ওকে জঙ্গলি বিল্লি বলেছে। সুবহা রওশনের দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে বলল,,
সুবহাঃ হোয়াট ডু ইউ মিন আমি জঙ্গলি বিল্লি।
রওশনঃ আমিকি তোমার নাম ভেঙে বলেছি যে তুমি।( চোখ কুঁচকে)
সুবহাঃ ডাইরেক্টলি না বলেন ইনডাইরেক্টলি তো আমাকেই মিন করে বলছেন। ( রেগে)
রওশনঃ তুমি যদি কথাটা নিজের উপর নাও…ইট্স ইউর ফল্ট…নট মাই।
সুবহা আর কথা না বাড়িয়ে রওশনের হাতে স্যাভলন লাগিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারন ও জানে রওশনের সাথে কথায় ও পেরে উঠবে না। রওশন মুচকি হেসে সুবহাকে দেখছে। সুবহা এমন ভাবে ওকে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে যেন ব্যথাটা রওশন না ও পাচ্ছে।
রওশন সুবহার চোখে ওর জন্য সেই পেইনটা আজকে দেখতে পারছে যেটা ওর চোখে আছে সুবহার জন্য। রওশন সুবহার সামনে এসে পরা চুল গুলো ওর কানের পেছনে গুঁজে দিল। সুবহা রওশনের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই রওশন বলল।
রওশনঃ আব চুল গুলো তোমাকে ডিস্টার্ব করছিল তাই গুঁজে দিলাম।
সুবহা মুচকি হেসে দিল রওশনের কথায়। এই হাসিটা সোজা রওশনের বুকে গিয়ে লাগলো। মানুষের মুচকি হাসি মারাত্মক হয় কারন এই হাসির মধ্যে হাজারো অনুভূতি অনুভব করা যায়।
রওশনের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে সুবহা খাবার ট্রে নিয়ে রওশনের পাশে বসে।
রওশনঃ তুমি খেয়ে নাও আমি জুস খেয়ে ঘুমিয়ে পরবো।
সুবহা কিছু না বলেই রওশনের মুখে খাবার তুলে দিল। রওশন হা হয়ে গেছে সুবহার কাজে।
সুবহাঃ ব্যথা যেহেতু আমি দিয়েছি সেহেতু আপনার খেয়াল রাখাও আমার দায়িত্বের মধ্যে পরে।
রওশন কিছু বলল না চুপচাপ সুবহার হাতে খেয়ে নিল। হঠাৎ রওশন সুবহার হাত ধরে ওকে থামিয়ে ইশারায় বললো ওকে খেতে।
সুবহা নিজেও খেয়ে নিল। তারপর হাত ধুয়ে ট্রে গুছিয়ে নিল।
সুবহাঃ গুড নাইট মিস্টার রওশন। ( মুচকি হেসে)
রওশনঃ গুড মিসেস রওশন।( হালকা হেসে)
সুবহা রওশনের কথায় মুচকি হেসে ট্রে নিয়ে বেরিয়ে যায়।
সুবহা চলে যেতেই রওশনের ফোন বেজে উঠল। রওশন গম্ভীর মুখে ফোন রিসিভ করল।
রওশনঃ হ্যালো,,
,
,
রওশনঃ ওকে ফ্লাইট এর টিকিট বুক করো আমরা কালকেই রওয়ানা দিব।
কথা বলেই রওশন কল কেটে দিল। ওর চেহারার চিন্তার ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
To be continued….
#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_16
.
.
সুবহা চলে যেতেই রওশনের ফোন বেজে উঠল। রওশন গম্ভীর মুখে ফোন রিসিভ করল।
রওশনঃ হ্যালো,,
,
,
রওশনঃ ওকে ফ্লাইট এর টিকিট বুক করো আমরা কালকেই রওয়ানা দিব।
কথা বলেই রওশন কল কেটে দিল। ওর চেহারার চিন্তার ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
রওশন কিছুক্ষণ নিজের রুমে পায়চারি করে সুবহার রুমের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়। সুবহার রুমের দরজা নক করার জন্য টাচ করতেই দরজা খুলে গেল। সুবহা দরজা লক করে ঘুমায়নি শুধু আবজিয়ে রেখেছিল।
রওশন সুবহার রুমে প্রবেশ করে। অন্ধকার রুমে শুধু নীল শেডের লাইট জ্বলছে। সুবহা ঘুমিয়ে আছে বেডে নীল শেডের আলোতে সুবহার ঘুমন্ত মুখটা একদম অন্যরকম লাগছে রওশন এর কাছে। রওশন আলতো পায়ে সুবহার পাশে গিয়ে বসে পরে।
আধশোয়া হয়ে সুবহার দিকে হালকা ঝুঁকে ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে আছে রওশন।
রওশনঃ আই লাভ ইউ সুবহা,,, সেই প্রথম দিন থেকেই ভালবাসি তোমাকে। তুমি সেই প্রথম মেয়ে যার জন্য আমার মত হার্টলেস পারসন ও ভালোবাসা টাকে উপলব্ধি করতে পেরেছে।
তোমাকে আমি সারা জীবন এর জন্য আমার পাশে চাই। কিন্তু ভয় হয় জানো? যদি আমার সত্য জেনে তুমি আমাকে ভুল বুঝো দূরে সরিয়ে দাও নিজের থেকে। আগে তো দূর থেকেই ভালোবেসেছি কিন্তু এখন তোমাকে কাছে পেয়ে কাছ থেকে ভালোবাসতে চাই। প্রতিটি সকাল তোমার হাসি মুখ দেখে শুরু করতে চাই প্রতিটা রাত তোমাকে বুকে জড়িয়ে পার করতে চাই। কিন্তু তুমি তো আমাকে ভালোই বাসোনা। I have no place in your heart. ( তাচ্ছিল্য হেসে) তোমার হৃদয়ে আমি থাকি বা না থাকি সুবহা আমার হৃদয়ে শুধু তুমিই থাকবে। You r always in my heart my mind and my soul.
রওশন সুবহার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে উঠে যেতে নিলেই সুবহা ঘুমের ঘোরে রওশনের বুকে মাথা রেখে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে। রওশন আচমকা এমন হওয়ায় কিছু বুঝে উঠতে পারল না। সুবহা এমন ভাবে রওশনকে জড়িয়ে ধরেছে যে রওশন ছাড়ানোর চেষ্টা করলেই হয়তো ওর ঘুম ভেঙ্গে যাবে।
রওশন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। যদি সুবহা জেগে যায় আর রওশনকে ওর রুমে এভাবে ওর পাশে দেখে উল্টা পাল্টা কিছু ভাবে।
রওশন কিছু একটা ভেবে সুবহার দিকে ঝুঁকে ওর কানে হালকা ফুঁ দেয় সুবহা সুরসুরি অনুভব করে একটু নড়ে উঠলো সাথে সাথে রওশন সুবহার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
সুবহা অপর পাশ ফিরে আবার ঘুম দেয়। রওশন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। আলতো পায়ে সুবহার রুম থেকে বেরিয়ে দরজা চাপিয়ে নিজের রুমে চলে আসলো রওশন।
? In Morning ?
সুবহা ঘুম থেকে উঠতে বসে ঘড়ির দিকে তাকায়। আটটা বাজে এখন। হঠাৎ সুবহার নাকে একটা তীব্র পারফিউম এর ঘ্রান আসলো। এটা তখনি ও পায় যখন রওশন ওর আশে পাশে থাকে।
সুবহা রুমে ভালো ভাবে চোখ বুলিয়ে দেখলো কিন্তু রওশন তো নেই আর দরজাও লাগানো।
সুবহাঃ রওশন কি এখানে এসেছিল? নাহ উনি আসবেন কেন? আমিও না অলওয়েজ বেশি ভাবি। রওশন এখানে কিভাবে আসবে আর কেনই বা আসবে? উনি তো নিজের রুমে ঘুমাচ্ছেন। ( নিজের মাথায় হালকা চড় মেরে)
সুবহা উঠে ফ্রেস হতে চলে যায়। ফ্রেস হয়ে এসে নিচে ডাইনিং এ চলে আসে সুবহা।
রওশন আজকে আগে থেকেই ডাইনিং এ বসে আছে। একটা সাদা শার্ট পরেছে রওশন আর শার্টের উপরের দু’টো বোতাম খোলা তার উপর চুল গুলো ও এলোমেলো আর ভেজা হয়তো মাত্র শাওয়ার নিয়েছে আর ভালো ভাবে চুল ও মুছে নি। সুবহা রওশনের দিকে হা হয়ে তাকিয়ে নামতে নিলেই হোঁচট খায় সাথে সাথে রেলিং ধরে ফেলে ও।
সুবহা নিজের বুকে থুতু দিয়ে নিজেই নিজেকে বলে।
সুবহাঃ কেয়ারফুলি সুবহা,,, এখনি তো ক্রাশ বাঁশে রুপান্তরিত হতো। তুই সিঁড়ি থেকে পরে ইন্না লিল্লাহ হতি আর রওশন তোর জায়গায় অন্য একটা চুরেলকে বিয়ে করে আলতো। ( ঢোঁক গিলে)
সুবহা হঠাৎ নিজের কল্পনায় ডুব দেয়।
“ সুবহা মরে গেছে আর রওশন একটা মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে এনেছে। তারপর মেয়ে টিকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছে ওর কেয়ার করছে যেমনটা সুবহার করত। হঠাৎ সুবহার চোখে ভাসে রওশন মেয়েটিকে কিস করতে যাচ্ছে। ”
সুবহা সাথে সাথে নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে। বেচারি ভয় পেয়ে গেছে যদি সত্যি এমন হয়।
সুবহাঃ না না আমি এটা কি ভাবছি? আমার ওয়ান এন্ড অনলি হাজবেন্ড কে আমি কারো সাথে শেয়ার করব না হুহ। মরে গেলেও ভূত হয়ে ওর আশেপাশে ঘুরঘুর করব।
রওশন কিছু একটা কাজ করছে মনোযোগ সহকারে ফোনে। কথা গুলো মনে মনে ভেবে সুবহা রওশনের পাশের চেয়ারে বসে পরে।
সুবহাঃ গুড মর্নিং,,
সুবহার কন্ঠ শুনে রওশন চোখ তুলে ওর দিকে তাকালো তারপর মিষ্টি হেসে বলল।
রওশনঃ গুড মর্নিং।
ন্যান্সি খাবার এনে টেবিলে রেখে দিল। ন্যান্সি রওশনকে খাবার সার্ভ করে দিতে নিলেই সুবহা ওকে থামিয়ে দেয়।
সুবহাঃ ওয়েইটটট আমি সার্ভ করছি তুমি যাও।
রওশন আর ন্যান্সি দুজনেই অবাক চোখে তাকালো সুবহার দিকে। হঠাৎ সুবহার এমন করার কারন বুঝতে পারছে না ও।
ন্যান্সি রওশনের দিকে তাকাতেই রওশন মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল। ন্যান্সি চলে যেতেই সুবহা দাঁড়িয়ে রওশনের প্লেটে খাবার সার্ভ করে দিতে শুরু করলো। খাবার সার্ভ করা শেষে সুবহা বসে পরল। রওশন আড়চোখে সুবহার দিকে এক পলক তাকিয়ে খাবার খেতে শুরু করল।
রওশনঃ সুবহা আমি অয়নকে দিয়ে কিছু জিনিস আনিয়েছি। অয়ন সেগুলো আনলে তুমি তোমার লাগেজে প্যাক করে নিও। আর হ্যাঁ তোমার তো পাসপোর্ট আছে সেটাও রেডি রেখো।( খেতে খেতে)
সুবহা রওশনের কথা বুঝে উঠতে পারছে না। হঠাৎ লাগেজ কেন প্যাক করবে আর পাসপোর্ট দিয়েই বা কি হবে।
সুবহাঃ কিন্তু কেন আমরা কোথাও যাচ্ছি?
রওশনঃ হুম স্কটল্যান্ড,, আজকে রাতের ফ্লাইট। সো সব গুছিয়ে নিও।
সুবহা নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ওর ড্রিম সিটি স্কটল্যান্ড সেখানে যেতে পারবে কখনো ভাবেও নি ও। সুবহা আগে খুশি হবে নাকি অবাক হবে বুঝতে পারছে না।
সুবহাঃ হঠাৎ স্কটল্যান্ড এর প্লান কেন?( অবাক হয়ে)
রওশনঃ বিয়ের পর সবাই হানিমুনে যায় তাই ভাবলাম তোমাকেও হানিমুনে নিয়ে যাচ্ছি। ( দুষ্টু হেসে)
সুবহার মুখ হা হয়ে গেছে। ও অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে। সুবহার এমন ফেস দেখে রওশনের অনেক মজা লাগছে ও সুবহাকে আরেকটু ভয় দেখানোর জন্য সুবহার দিকে একটু ঝুঁকে লো ভয়েজে বলতে শুরু করে।
রওশনঃ দেখো সুবহা এখানে আমাদের ডিস্টার্ব করার জন্য ন্যান্সি আছে বাড়ির সার্ভেন্ট আছে আর সবচেয়ে বড় কথা আভি আছে। কিন্তু ওখানে কেউ থাকবে না only u and me and our privecy ( চোখ মেরে)
রওশনের কথা শুনে সুবহার হাত থেকে টোস্ট টা পরে গেল প্লেটে। একটা ঢোক গিলে কাঁদো কাঁদো ভাবে তাকালো ও রওশনের দিকে। সুবহা এমন ভাবে তাকিয়েছে যেন এখনই কেঁদে দিবে।
সুবহার এমন ফেস দেখে রওশন নিজের হাসি আর কন্ট্রোল করতে পারলো না। টেবিল ছেড়ে উঠে হাসতে শুরু করল রওশন। রওশন কে এভাবে হাসতে দেখে সুবহা বোঁকা বনে গেলো।
রওশনঃ সিরিয়াসলি সুবহা তুমি ভাবলে আমি সত্যি এমন কিছু প্লান করেছি। ( হাসতে হাসতে) আরেহ I was just kidding yaar.
রওশন নিজের হাসি কন্ট্রোল করে আবার চেয়ারে বসে পরল। তারপর সুবহার টেবিলে রাখা হাতের উপর হাত রেখে বলতে শুরু করল।
রওশনঃ ডোন্ট ওয়ারি সুবহা আমি ওরকম কিছু ভাবছি না আর না প্লান করছি u can trust me. একটা জরুরী প্রজেক্ট কমপ্লিট করতে যেতে হচ্ছে সেখানে। প্রজেক্ট টা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত কিন্তু আমি তোমাকে এখানে একা রেখে যেতে পারব না তাই তোমাকে সাথে আসতে বলছি। আই নো আমাকে এক্সেপ্ট করতে হয়তো তোমার সময় লাগবে আর আমি সেই সময় টুকু তোমাকে দিয়েছি। টেক ইউর টাইম।
রওশনের কথায় সুবহার মনে একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে। রওশন সুবহার চোখে চোখ রেখে কথা গুলো বলছে আর সুবহা রওশনের চোখের গভীরতায় যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলছে।
রওশনঃ আমি আসছি তুমি তৈরি হয়ে থেকো। বাই,,,
রওশন উঠে চেয়ারের হ্যান্ডেল থেকে নিজের কোট নিয়ে গায়ে জড়াতে জড়াতে বেরিয়ে যায়।
সুবহা ব্লাশিং হয়ে রওশনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ বাদে অয়ন অনেক গুলো প্যাকেট দিয়ে যায় সুবহাকে। সুবহা প্যাকেট গুলো খুলে খুলে দেখছে। জ্যাকেট জিন্স টপস্ শীতের সব প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র আছে এখানে। এই সিজনে স্কটল্যান্ডে ঠান্ডা পরে তাই এই ড্রেস গুলো পাঠিয়েছে রওশন। সুবহা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সব গুলো ট্রাই করে দেখছে আর ব্লাশিং হচ্ছে।
To be continued…..