#Mr_Arrogant
#The_Addiction_Love,Part_27,28
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_27
.
.
হঠাৎ একটা ট্রাক এসে রওশনের গাড়িকে ধাক্কা মেরে খাদে ফেলে দেয়। রওশনের হাত থেকে ফোনটা ছিটকে পরে যায়।
হঠাৎ এমন বিকট শব্দে সুবহার আত্মা কেঁপে উঠে ও কাঁপা কাঁপা কন্ঠে রওশনের নাম নেয়,,,
সুবহাঃ র রওশনননন,,,
সুবহার দম আটকে আসছে মনে হচ্ছে এই বুঝি নিঃশ্বাস টা বন্ধ হয়ে যাবে। রওশনের গাড়ি সোজা খাদে পরে যায় তারপর ব্লাস্ট হয়ে আগুন ধরে যায়।
গাড়ি খাদে পরার সাথে সাথেই রওশন লাফ দেয় আর একটা গাছের ডাল ধরে ঝুলে যায়। গাড়ির বিধ্বস্ত অবস্থা দেখছে ও উপর থেকে।
রওশনঃ আমি ফিরছি সুবহা তোমার রওশন ফিরছে। তোমার মুখে ভালোবাসি শব্দটা শুনেছি এখন মৃত্যু আসলেও তার সাথে লড়াই করে তোমার কাছে ফিরব আমি। ( জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে)
রওশন গাছের ডালটা ধরে অনেক কষ্টে উপরে উঠে আসে। নিজের শার্ট টা ঝাড়তে ঝাড়তে হাঁটছে ও হঠাৎ কেউ ওর সামনে বন্দুক তাক করে;রওশন থেমে যায়।
রওশনঃ আপনিইই??
আদনানঃ জানতাম তোমাকে মারা এতো সহজ হবে না তাছাড়া তোমাকে নিজের হাতে মারতে চাই আমি ভালোই হলো বেঁচে গেলে খাদ থেকে।
রওশনঃ তার মানে এই এক্সিডেন্ট আপনি করিয়েছেন। ওহ ভুলেই তো গিয়েছিলাম আপনি ছাড়া কার এতো বড় সাহস হবে যে রওশনের গায়ে হাত দিবে। কিন্তু আফসোস চাচাজান আপনার এই ইচ্ছা পুরন হলো না।
আদনানঃ তুমি কি ভাবলে রওশন এই খাদ থেকে বেঁচে গেছ তাই আমার ফেলানো জাল থেকেও বেঁচে যাবে? No my son তোমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা আমার হাতের মুঠোয় এখন,,,( শয়তানি হেসে)
রওশনঃ মানে?
আদনানঃ তোমার সুবহা( শয়তানি হেসে)
রওশনঃ আমার সু্বহার কোন ক্ষতি হলে মেরে ফেলব তোকে,,,
রওশন রেগে আদনানের দিকে এগোতেই অনেক গুলো লোক এসে রওশনের উপর গান তাক করে।
আদনানঃ সুবহাকে বাঁচাতে হলে তোকে আমার সাথে যেতে হবে।
???
আভিকে চেয়ারে বেঁধে রেখে রুম বাইরে দিয়ে লক করে বেরিয়ে যায় গার্ডরা। আভির শত চেঁচিয়ে ও লাভ হয় নি।
আভিঃ আমি আসলেই স্টুপিড,,,কেন বুঝতে পারলাম না যে ভাই তো আমাকে এতো ভালবাসে সে কেন আমার সাথে এমন করবে। নিজের রাগ জেদের কারনে ভাই আর সুবহার জীবনে কত বিপদ সৃষ্টি করেছি shame on me…. Please help me god আমাকে বের হতে হবে এখান থেকে যে কোন মূল্যে। ভাই আর সুবহার লাইফ বিপদে। ( ছুটার চেষ্টা করে)
হঠাৎ আভি কিছুর শব্দ শুনতে পেল বারান্দায়। বারান্দার দিকে তাকাতেই ওর চোখ কপালে। ওহি কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বারান্দা দিয়ে ওর রুমে ঢুকছে,,,
আভিঃ তুমিইইইইই( অবাক হয়ে)
ওহি দ্রুত এসে আভির মুখ চেপে ধরল। তারপর বলল,,
ওহিঃ আরেহহ আস্তে তোমার বাবার পালিত কুকুররা শুনে ফেললে তোমার সাথে আমাকেও বেঁধে রাখবে।
আভি ইশারায় বলল ওর মুখ থেকে হাত সরাতে।
ওহিঃ ওহ স্যরি বেবি,,( হাত সরিয়ে)
আভিঃ তুমি এখানে কেন এসেছো? জানো এখানে চারো দিকে কত বিপদ,,,
ওহিঃ আসব না তো কি করব আমার ছেলের হবু আব্বুকে এভাবে একা বিপদে ফেলে রাখব?( আদুরে কন্ঠে)
ওহির কথা শুনে আভির ইচ্ছা করছে নিজের মাথা দেয়ালে বারি দিতে কিন্তু এই মুহূর্তে নিজের ইচ্ছাটাকে দমন করে ও বলল,,,
আভিঃ তুমি এখানে কিভাবে আসলে আর বুঝলে কিভাবে আমি বিপদে?
ওহিঃ বাহ্রে আমার দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র জামাই এর খবর কি আমি রাখব না। তুমি কে কোথায় থাকো কি করো এসব খবর নিতে আমার মিনিট সময় ও লাগে নি জাননন,,
আমার পাপার একজন স্পাই তোমার ড্যাডের গার্ডদের দলে আছে। সেই আমাদের খবরটা দিয়েছে। আর এটা শোনা মাত্রই আমি ছুটে এলাম তোমার কাছে।( মিষ্টি হেসে)
আভিঃ তোমার পাপা কে?
ওহিঃ Well-known Mafiya leader Arnab Khan.( প্রাউড ফিল করে)
আভিঃ তুমি অর্নব খানের মেয়ে?
ওহিঃ ইয়াপ বেবিইই,, আচ্ছা বাকি কথা পরে ও হতে পারে আগে আমাদের এখান থেকে বের হতে হবে।( আভির বাঁধন খুলতে খুলতে)
আভিঃ তাড়াতাড়ি করো,,,
ওহিঃ করছি তো,,, নাও হয়ে গেছে,,,
ওহি দাঁড়িয়ে যায়। আভি দড়ি সরিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
আভিঃ ওহি আমাদের দ্রুত রওশন ভাই আর সুবহার কাছে যেতে হবে ওরা বিপদে আছে,,,
আভি ওহির হাত ধরে বারান্দায় চলে আসল। বারান্দায় দড়ি ঝুলানো দেখেই বুঝা যাচ্ছে ওহি এটা বেঁয়েই উপরে এসেছে। আভি ওহির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,,,
আভিঃ এটা মেয়ে না আর কিছু মনে ভয় বলতে কিছু নেই। হবেই বা কি করে মাফিয়ার মেয়ে বলে কথা।
আভি আর ওহি দু’জনে নিচে নেমে যায় রোপ বেঁয়ে।
???
আভি আর ওহি রওশনের বাড়িতে ঢুকেই শকড্। পুরো বাড়ি তছনছ আর গার্ড রা আহত অবস্থায় পরে আছে এখানে ওখানে।
আভিঃ আমরা দেড়ি করে ফেললাম ওরা নিয়ে গেছে সুবহাকে,,,( মাথায় হাত রেখে)
ওহিঃ ডোন্ট ওয়ারি আভি আমার পাপা তোমার হেল্প অবশ্যই করবে তুমি চলো আমার সাথে।
???
নিজের একটা গোপন ডেরায় নিয়ে এসেছে আদনান রওশনকে। চারোদিকে গার্ড আর সবার হাতেই বন্দুক। রওশন একা কখনই পেরে উঠবে না এতো গুলোর সাথে।
রওশনঃ আপনার কথা মতো আমি এসেছি আপনার সাথে এখন বলেন আমার সুবহা কোথায়য়?( রেগে)
আদনানঃ নিয়ে আসো ওকে,,,( গার্ড কে বলল )
একটা গার্ড সুবহার হাত টেনে নিয়ে আসল রওশনের সামনে।
রওশনঃ সুবহাআআ ( সফ্ট ভয়েজে)
সুবহাঃ রওশন!! আপনি ঠিক আছেন।( স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে)
সুবহা রওশনকে দেখেই ওর কাছে আসার জন্য চেষ্টা করল কিন্তু গার্ডটা ওর হাত অনেক শক্ত করে ধরে আছে।
রওশন রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে গার্ডটার ধরা হাতের দিকে। ওর ইচ্ছে করছে এখনি ওই গার্ডের হাত মুচরে ভেঙে ফেলতে।
রওশনঃ ওকে কেন আটকিয়ে রেখেছেন আপনার সব বোঝাপড়া আমার সাথে ওকে ছেড়ে দিন।
আদনানঃ বোঝাপড়া তো আছে রওশন। এই মেয়ের জন্য তুমি আমাকে ছোট করেছো আমার গ্যাং ফেলে নিজের আলাদা মাফিয়া টিম তৈরি করেছো একে তো আমি কখনোই ছাড়বো না
তুমি যেহেতু আমার সাথে কাজ করবেই না তাহলে তোমাকে বাঁচিয়ে রেখে আমার লাভ নেই। সবার আগে তোমাকে শেষ করবো তারপর এই ফসাদের মূল এই মেয়েকে নিজের দাসি বানিয়ে রাখবো।
রওশন রেগে আদনানের কলার চেপে ধরে,,,
রওশনঃ তোর সাহস কি করে হয় ওকে নিয়ে এমন বাজে চিন্তা করার। ওর ক্ষতি করার চিন্তা মাথায় আনলে এখানেই শেষ করে দিব তোকে।
আদনানের গার্ডরা ছুটে এসে রওশনকে সরায়। আদনান নিজের কলার ঠিক করে করে রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে,,,
আদনানঃ রশি জ্বলে গেছে কিন্তু বল যায়নি। আমার ডেরায় থেকে আমার উপরেই প্রহার করার সাহস কোথায় পেলি তুই? আজকে তোকে আর বাঁচিয়ে রাখব না।
আদনান বন্দুক উঠিয়ে রওশনের উপর গুলি করতে নিলেই কোথা থেকে একটা গুলি এসে আদনানের হাতে লাগে আর বন্দুক পরে যায়।
রওশন সুবহা আর বাকিরা অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে আভি দাঁড়িয়ে আছে দরজায় ওর পাশে ওহি আর অনেক গুলো গার্ড।
রওশনঃ আভি?(অবাক হয়ে)
আদনানঃ আভি তুমি তোমার ড্যাডের উপর গুলি চালালে?
আভিঃ আপনি কি আদৌ আমার বাবা হওয়ার যোগ্য মি.আদনান? যে লোক আমার মাকে খুন করতে এক মুহুর্ত ভাবে নি তাকে খুন করতেও আমি এক মুহুর্ত ভাববো না। ( রক্ত চোখে)
আদনানঃ রিয়েলি? ঠিক আছে তুমি যখন আমাকে বাবা হিসেবে মানই না তাহলে আমি কেন তোমাকে ছেলে ভেবে ছেড়ে দিব। আজ ওদের সাথে তোমার চ্যাপ্টার ও শেষ করবো আমি। একটাও যেন না বাঁচে।( গার্ডদের বলল )
গার্ডরা আভিকে মারার জন্য এগিয়ে যায়। রওশন সুযোগ বুঝে সামনের গার্ডের হাতে লাথি দিয়ে গান টা ফেলে দেয়।
আদনানের সব লোকেরা আভি আর রওশনের উপর হামলা করছে। ওহির সাথে আসা লোকেরাও ফাইট করছে।
ওহি সুযোগ বুঝে সুবহার কাছে গিয়ে যে গার্ড টা সুবহার হাত ধরে ছিল তার মাথায় রড দিয়ে বারি দিয়ে দেয়। সুবহা ভয় পেয়ে দূরে সরে যায়।
ওহিঃ আরেহহ ভাবি ভয়ের কিছু নেই আমি আপনার একমাত্র দেবরের একমাত্র বউ। কিছু হতে দিব না আপনাকে। ( ভাব নিয়ে)
সুবহা ওহির কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারল না। ও অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ওহির দিকে।
সুবহাঃ আভি বিয়ে করল কবে? এই মেয়ে কি বলছে?( মনে মনে)
রওশনঃ আভি তুই এখানে কেন আসলি আর ওসব কথা কিভাবে জানলি?( লোকদের মারতে মারতে)
আভিঃ আমি সব জেনে গেছি ভাই। আই’ম স্যরি আমি তোমাকে ভুল বুঝেছি। আমার জন্য তুমি এতো কিছু করলে আর আমি কিনা,,,
রওশনঃ ভুল তোর ছিল না আভি আমি তোর আর আমার দেয়ালটা নিজেই তৈরি করেছিলাম। তোর অবুঝ মনে আঘাত দিয়ে ছিলাম। ক্ষমা করে দে আমাকে।
আভিঃ আগে তুমি আমাকে ক্ষমা করো,,,
(ওরা মারপিট করছে আর একজন আরেকজনের কাছে ক্ষমা চাইছে?)
হঠাৎ গুলির শব্দে থেকে যায় ওরা। আদনান বন্দুক হাতে রওশনের দিকে তাক করে আছে।
আদনানঃ সব ফসাদের মূল তুই রওশন। আমার ছেলেকে আমার থেকে দূর করে দিলি। আজকে তোকে মেরেই আমি মরবো।
আদনান গুলি চালিয়ে দেয়,,,,
সুবহাঃ রওশনননন
সবাই শকড্ হয়ে যায়,,,
আদনান নিজের পেটে হাত দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে।
রওশন নিজের পাশে তাকিয়ে দেখে আভির হাতের বন্দুক থেকে ধোঁয়া উঠছে। আভি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে। ওর চোখের কোণে পানি অথচ ঠোঁটে হাসি।
আভিঃ আমার মমের মৃত্যুর প্রতিশোধ এটা আদনান রায়জাদা। আমার কোন আফসোস নেই তোকে মেরে আজ হয়তো আমার মমের রুহ্ কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।
আভি ধপ করে ফ্লোরে বসে পরল। রওশন দৌড়ে আভিকে সামলালো। আভি বাচ্চাদের মতো কান্না করছে আর বলছে,,,
আভিঃ ও খুনি ভাই আমার মমের খুনি। আজ আমিও খুনিও হয়ে গেলাম নিজের বাবার খুনি। কিন্তু আমার আফসোস নেই ওর বাবা হওয়ার যোগ্যতা ছিল না। ওর জন্য আমি আমার মায়ের আদর থেকে বঞ্ছিত হয়েছি। আই হেইট হিমমম ভাইই,,,
রওশন আভিকে বুকে জড়িয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু আভি পাগলামি করেই যাচ্ছে। সুবহার চোখে পানি চলে এসেছে আভির জন্য আর ওহিতো কান্নাই করছে।
To be continued….
#Mr_Arrogant ?
#The_Addiction_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_28
.
.
.
.
সোফার এক পাশে বসে আছে রওশন আর ওর ঠিক বরাবর সোফায় বসে আছে অর্নব খান। সুবহা আর ওহি পাশের সোফায় বসে আছে আর আভি দাঁড়িয়ে আছে। রওশন বুঝতে পারছে না অর্নব খান কি বলতে চাইছে।
(এখন ওরা খান মেনশনে আছে। আদনান কে মারার পর অর্নব খান ওখানে পৌঁছায়। রওশনকে বুঝিয়ে খান মেনশনে নিয়ে আসে ও )
রওশনঃ আমাদের এখানে আনানোর কারন কি মি খান?
অর্ণব খান মুখ গম্ভীর করে একবার ওহির দিকে তাকিয়ে রওশনের দিকে তাকালেন তারপর বলতে শুরু করলেন,,,
অর্নব খানঃ আমার মেয়ে ওহি আভিকে ভালোবাসে রওশন আই হোপ তোমার এতে কোন আপত্তি নেই।
অর্নবের ক্লিয়ার কাট কথা শুনে হচকিয়ে যায় রওশন আর আভির মুখ তো হা হয়ে গেছে। কেমন বাবা; মেয়ে বলল আর বাপ কি সুন্দর করে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে তাও এতো ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে।
রওশন আভির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো আর আভি মাথা নাড়িয়ে ইশারায় না বুঝালো। রওশন এবার ওহির দিকে তাকালো। ওহির চেহারায় মিষ্টি হাসি লেগে আছে। ওহি অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে। রওশন আভির ফেস দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে বিষয়টা। অর্নব খানের সাথে রওশনের কোন শত্রুতা নেই বরং সব সময় অর্নব রওশনের সাহায্য করেছে যা আজও হলো। অর্নব খানকে মানা করার কোন কারনই দেখছে না ও।
রওশন মুখে হাসি ফুটিয়ে দাঁড়িয়ে যায় তারপর বলতে শুরু করে,,,
রওশনঃ অবশ্যই আমার কোন আপত্তি নেই এতে মি. খান।
অর্নব খান রওশনের কথায় খুশি হয়ে দাঁড়িয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলেন।
অর্নব খানঃ আমি জানতাম রওশন তুমি আমাকে নিরাশ করবে না। আমি সব সময় তোমার মতো একজন ছেলে চেয়েছিলাম কিন্তু আফসোস আমার কোন ছেলে নেই। বাট যেহেতু আভি তোমারই ভাই নিশ্চয়ই ওর মধ্যেও তোমার গুন বিদ্যমান আছে। এখন আর আমার কোন দুঃখ নেই।
আভিঃ আপনার কোন দুঃখ থাকবে কি করে আব্বাজান আপনি তো আপনার মেয়ে নামক টর্নেডো কে আমার ঘাড়ে ঝুলিয়ে দিচ্ছেন এখন সব দুঃখ আমার ঘরের দরজায় কড়া নাড়বে। ভাই আমাকে কেন বলিকা বকরা বানাচ্ছিস? ( মনে মনে)
একটা সার্ভেন্ট মিষ্টি নিয়ে আসলো। অর্নব খান রওশনকে মিষ্টি খাইয়ে দিল তারপর আভিকে খাইয়ে দিল। আভি চাপা হেসে খেয়ে নিল।
অর্নবঃ আমার মেয়ের চয়েজ আছে বলতে হবে একদম প্রিন্স খুঁজেছে নিজের জন্য। ( খুশি হয়ে)
আভি অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে আর রওশন মুখ টিপে হাসছে। ওহি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে আছে। সব কিছু যেন সুবহার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। সুবহা আলতো পায়ে রওশনের কাছে এসে ওকে জিজ্ঞেস করলো,,,
সুবহাঃ রওশন আপনার মনে হয়না আপনি সব কিছুতে একটু তাড়া করছেন। আই মিন আভির ডিসিশন না নিয়ে কিভাবে বিয়ে ঠিক করলেন? ওর ফেসের দিকে একবার তাকান বেচারা চুপসে গিয়েছে। ( ফিসফিসিয়ে)
রওশন সুবহার কথায় মুচকি হেসে একটা মিষ্টি তুলে সুবহার মুখে পুরে দেয় তারপর বলে,,,
রওশনঃ বাড়ি পৌঁছে তোমাকে সব বুঝিয়ে দিব মাই লাভ এখন মুখ মিঠা করো।
সুবহা মুখ চেপে ধরে রেখেছে কারন এতো বড় মিষ্টি ও খেতে পারছে না। রাগি ফেস নিয়ে তাকিয়ে আছে ও রওশনের দিকে। হাসি পাচ্ছে রওশনের সুবহার লুক দেখে।
রওশনঃ মি. খান এখন আমাদের যাওয়া উচিত। আজকে এমনিতেই কত জঞ্জাল গেল সবার উপর দিয়ে। বাড়ি গিয়ে সব প্রিপারেশন শুরু করতে হবে।
অর্ণবঃ অবভিয়াসলি রওশন। আমি বিয়ের প্রিপারেশন শুরু করে দিচ্ছি তুমিও ঠান্ডা মাথায় সব দেখে নিও।
রওশনঃ জি,,, চল আভি,,
রওশন সুবহার হাত ধরে বেরিয়ে আসে। আভি রাগি ফেস করে ওহির দিকে তাকালো আর ওহি আভিকে ফ্লাইং কিস ছুরে দিল। আভি রাগে দুঃখে বড়বড় পা ফেলে বেরিয়ে যায়।
?In Rayzada Mansion ?
আভিঃ নাআআ কখনো না আমি ওই হাফ মেন্টাল মেয়েকে বিয়ে করবো না।
রওশনঃ এসব কি ধরনের কথা আভি। মেয়েটা তোকে ভালোবাসে, আর অর্নব খান আমাদের সাহায্য করেছে আমি ওনাকে কথা দিয়ে ফেলেছি তুই কি চাস আমার জবান ঝুটা হোক?
আভিঃ আমি সেটা বলছি না ভাই কিন্তু( বলতে গিয়েও পারছে না)
রওশনঃ কিন্তু কি?
আভিঃ রিশা!
রিশার কথা শুনে রওশন আর সুবহা একে অপরের মুখের দিকে তাকালো।
সুবহাঃ রিশা কি আভি?
আভিঃ রিশার সাথে আমার পাস্ট জড়িত আছে সুবহা তুমি জানো,,, আমি নিজের প্রতিশোধে এতো অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম যে নিজেকেই অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছি। তোমার সাথেও তো অন্যায় করেছি আমি। ( অসহায় চোখে)
আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ। আমি জানি আমি অনেক ভুল করেছি বাট ট্রাস্ট মি আমি কখনো তোমাকে খারাপ নজরে দেখিনি আমি চেয়েছি তোমাকে কিন্তু শুধু ভাইয়ের থেকে প্রতিশোধ নিতে। আমি যখন জানতে পারি ভাই তোমাকে ভালোবাসে আর কোন এক কারনে তোমার থেকে দূরে থাকছে তখন আমি তোমার লাইফে প্রবেশ করি। ভাইকে দেখিয়ে তোমার সাথে এঙ্গেজমেন্ট করি।
কিন্তু রিশা!! ওর ফাঁদে পা দিয়ে ফেলি আমি আর সেদিন হোটেলে যাই কিন্তু ভাগ্যক্রমে ওখানে রেট পরে যায় আর তুমি সব জেনে যাও। ( মাথা নিচু করে)
আই’ম স্যরি ফর এভরিথিং। ( রওশন আর সুবহাকে বলল )
সুবহাঃ আই নো আভি তুমি কখনো আমার খারাপ চাও নি। তোমার মাঝে আমি সব সময় একজন ভালো বন্ধু দেখেছি। তুমি সবসময় আমাকে সাপোর্ট করেছো। আর বিশ্বাস করো তোমার প্রতি আমার কোন আক্ষেপ নেই।
আভিঃ তুমি সত্যি বলছো সুবহা?
সুবহাঃ হুমম
রওশন আভির কাঁধে হাত রেখে ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে,,,
রওশনঃ তোর সেন্টিমেন্টাল কথার টপিক শেষ হলে এখন মেইন পয়েন্টে আসা যাক?
আভিঃ নোওও ভাই প্লিজ আমার লাইফ হেল হয়ে যাবে।( অসহায় ভাবে)
রওশনঃ তুই নিজের ভুলের শাস্তি চেয়েছিলি তাইনা? যা শাস্তি দিব মানবি তো?
আভিঃ ভাই তুমি আমাকে শাস্তি দিবে?( কাঁদো কাঁদো ভাবে) আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যা বলবে আমি করব যা শাস্তি দিবে মেনে নিব। বলো কি শাস্তি?( মুখ ফুলিয়ে)
রওশনঃ তোর শাস্তি হলো তোকে সারা জীবন ওহির অত্যাচার সহ্য করতে হবে। এইটুকুই।( হাসি দিয়ে)
আভিঃ তুমি আমার ভাই নামের কলঙ্ক। নিজের ভাইকে একটা চুরেলের সাথে কিভাবে বেঁধে দিতে পারো তুমি।একটু মায়া হয়না আমার প্রতি?( আহত চোখে)
আভির এক্সপ্রেশন দেখে রওশন আর সুবহা হেসে দেয়। আভি ওদের দিকে তাকিয়ে রাগ দেখিয়ে বেরিয়ে যায়।
আভিঃ থাকবো না এখানে কেউ আমাকে ভালোবাসে না।
রওশনঃ আরেহ কোথায় যাচ্ছিস?
আভিঃ নিজের রুমে। কি ভেবেছো চলে যাব? কখনো না এখন থেকে এখানেই থাকবো আগের মতো। আমার রুমটার অবস্থা দেখে আসি আগে। ( উপরে যেতে যেতে)
রওশনঃ পাগল,,,
সুবহা দুই ভাইয়ের কান্ড দেখে হাসছে। ও নিজের কল্পনায় ও ভাবে নি যে আভি আর রওশনের সম্পর্ক এমনও হতে পারে। ওদের বন্ডিং এতো ক্লোজ তা সুবহার কল্পনার বাইরে ছিল।
রওশন সুবহার দিকে তাকিয়ে দেখে সুবহা ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। রওশন বাঁকা হেসে সুবহার কাছে এগিয়ে যায়। রওশনের এমন চাহনিতে সুবহা অপ্রস্তুত হয়ে পরে। ও পিছিয়ে যেতে নিলেই রওশন ওর কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে নেয় তারপর ওর কপালের চুল গুলো কানের পেছনে গুজতে গুজতে বলে,,,
রওশনঃ আচ্ছা সুবহা তখন যেন কি বলছিলে তুমি?
সুবহা রওশনের কাজে ফ্রিজ্ড হয়ে গেছে। নিজেকে সামলে ও কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,,,
সুবহাঃ ক কখন কি বললাম?
রওশনঃ ওইযে ফোনে,,, আই আই কি যেন ছিল মনে আসছে না। ( ভুলে যাওয়ার ভান ধরে)
সুবহা কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। তখন কিভাবে কথা গুলো বলে ফেলেছিল ওর হুস নেই। এখন বলতে গিয়েও পারছে না গলায় আঁটকে আসছে কথা।
রওশনঃ বলো?
সুবহাঃ আ আমি বলছিলাম যে আ আমার কিছু জানার আছে আপনার কাছ থেকে। ( এক দমে বলল )
রওশন কপাল কুঁচকে বলল,,
রওশনঃ না এটা না ওটা,,,
সুবহাঃ কোনটা? ( অসহায় ভাবে)
রওশনঃ ওইযে আই লাভ ইউ রওশন;এটা,,,( লো ভয়েজে)
সুবহা এমনিতেই কাঁপছিল আর এখন রওশনের কথা শুনে আরো কাঁপতে শুরু করেছে। রওশন সুবহার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ এই চোখে সত্যিই ওর জন্য কিছু একটা দেখতে পারছে ও। রওশনের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল।
নিজের মুখ বাড়িয়ে সুবহার চোখের পাতায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল রওশন। সুবহা রওশনকে এগোতে দেখেই চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে। রওশনের শার্টের হাতা খামছে ধরে আছে ও।
রওশন মুচকি হেসে সুবহার আরেক চোখে ঠোঁট ছোঁয়ালো। সুবহার ঠোঁটের দিকে এগোতেই হঠাৎ কারো পায়ের শব্দে ও সরে যায় সুবহার কাছ থেকে।
ন্যান্সিঃ স্যার ম্যাম ডাইনিং টেবিলে সব রেডি করে দিয়েছি আপনারা এখন আসবেন?
রওশনঃ হুম আভি কে ডেকে আনো,,
ন্যান্সিঃ জি
সুবহা অন্য সাইড ফিরে ব্লাশিং হচ্ছে। আর রওশনের হেভি পরিমাণ রাগ লাগছে। প্রতিবার কেউ না কেউ ওর রোমান্স এর বারোটা বাজিয়ে দেয়।
সুবহাঃ আমিও আসছি তোমার সাথে চলো,,,( ন্যান্সি কে বলল )
রওশনঃ তুমি গিয়ে কি করবে। ( দাঁতে দাঁত চেপে)
সুবহাঃ খাবার সার্ভ করবো। ( হেসে)
রওশন বুঝতে পারছে সুবহা পালানোর জন্য এমনটা করছে।
রওশনঃ ওকে সুবহা বেবি পালাতে চাইছো নো ওয়ারি। দেখি কত দূর পালাতে পারো তুমি আমার থেকে। ( মনে মনে )
রওশন সুবহা আর আভি ডাইনিং এ খাবার খাচ্ছে। হঠাৎ আভির ফোনে একটা ম্যাসেজ অসলো। আভি ম্যাসেজ টা দেখেই বিষম খেলো। ওহি ম্যাসেজ পাঠিয়েছে,,,
“ Can’t wait for tomorrow my love. কালকে এঙ্গেজমেন্ট তারপর হলুদ তারপর বিয়ে। আর মাত্র তিন দিন আমাকে ছাড়া একটু কষ্ট করে থাকো ওকে বেবি। লাভ ইউ গুড নাইট।”?
অনেক গুলো কিস স্টিকার পাঠিয়েছে। আর ইমোজির তো অভাব নেই।
এমন উদ্ভট ম্যাসেজ দেখে আভির গলায় খাবার আটকে গেছে। ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয় ও।
সুবহা আড়চোখে বারবার রওশনকে দেখছে। আজকে আর কোন মতে রওশনকে ফেস করতে পারবে না সুবহা। সবার আগে তাড়াতাড়ি খেয়ে সুবহা রুমে চলে যায়। রওশন মুচকি হাসছে কারন ও জানে সুবহা পালাতে চাইছে।
রওশন আর আভিও খাবার শেষ করে রুমে চলে যায়।
রওশন রুমে আসতেই দেখে সুবহা ফ্রেশ হয়ে বেডে ঘুমিয়ে আছে। রওশন ওয়াশরুমে চলে যায় তারপর ফ্রেশ হয়ে গিয়ে সুবহার পাশে বসে পরে। সুবহা ঘুমিয়ে পরেছে। আজকে সারাদিন অনেক ধকল গিয়েছে ওদের উপর দিয়ে ক্লান্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক।
রওশন সুবহার পাশে শুয়ে ওকে বুকে জড়িয়ে নেয়। সারাদিনের ঘটনা সব চোখে ভাসছে ওর।
আভি শুয়ে শুয়ে ওহির ম্যাসেজ পড়ছে আর আনমনে হাসছে। আসলেই মেয়েটা ওর জন্য পাগল। এক বারের দেখায় কেউ কারও জন্য এতোটা কিভাবে পাগল হতে পারে ভেবে পাচ্ছে না আভি।
To be continued….