Mr_Arrogant_2? #The_Gangster_Lover,23,24

0
1841

#Mr_Arrogant_2?
#The_Gangster_Lover,23,24
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_23

চারদিন পর,,,??

ঘটনার চার দিন পার হয়ে গিয়েছে। সেদিনের পর সুবহা আর রায়জাদা মেনশনে ফিরে যায় নি। নিজের বাড়ি চলে এসেছে ও। নিজেকে চার দেয়ালের মাঝে আটকে নিয়েছে সুবহা। আভি অগনিত বার এসেছে সুবহার কাছে ওর একটাই প্রশ্ন রওশন কোথায়? কি হয়েছিল সেদিন? কিন্তু সুবহা‌ নিজের মৌনতা ভাঙে নি।

আভি রেগে সুবহাকে পুলিশের ভয় ও দেখিয়েছে কিন্তু তাও সুবহা নিশ্চুপ। আভি প্রতিবার হতাশ হয়ে ফিরে গিয়েছে।

কিচেনে কফি বানাচ্ছে সুবহা। হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে। সুবহা গিয়ে দরজা খুলতেই অবাক হয়ে যায়। ওর চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায় রাগে।

একজন লোক দরজায় পিঠ করে দাঁড়িয়ে আছে।

সুবহাঃ আপনি?

সুবহার কথায় ফিরে তাকায় সে। শানের চেহারা দেখতেই সুবহার মনে বিচ্ছিরি অনুভব হয়। শান দেশের সবচেয়ে বড় অবৈধ ব্যবসায়ী আর স্মাগলার। আজ অবদি কেউ ওর পরিচয় জানতে পারে নি বলতে গেলে ও সব সময় নিজেকে আড়াল করে রেখেছে যেন কেউ ওকে ধরতে না পারে। ও যেন ধরা না পরে তাই বছরে বছরে প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজের চেহারা বদলায় ও তার জন্য পুলিশও কনফিউজড হয়ে যায়। রওশনকে শেষ করার জন্য স্কটল্যান্ড থেকে বিডিতে এসেছে ও। নতুন পরিচয় নতুন চেহারা শুধু সুবহার সামনে নিজের আসল পরিচয় তুলে ধরেছে ও কারন সুবহাকে দিয়ে নিজের কার্যসিদ্ধি ওর মূল লক্ষ্য।

শানঃ ভিতরে আসতে বলবে না মিসেস সুবহা রওশন রায়জাদা উপ্স স্যরি মিসেস হওয়ার আগেই তো নিজের মিস্টারকে মেরে ফেলেছেন আপনি তাও নিজের হাতে তাই মিস অবদিই সীমিত থাকুক,,,( শয়তানি হেসে)

সুবহাঃ কেন এসেছেন এখানে আর কি চাই আপনার? আপনি যা বলেছিলেন আমিতো তা পূরণ করেছিই তাহলে কেন এসেছেন আবার?( রেগে )

শানঃ তোমার জন্য! তোমাকে একটা প্রপোজাল দিয়েছিলাম সুবহা।

সুবহাঃ আমি সেটা রিজেক্ট ও করে দিয়েছি,,,( দাঁতে দাঁত চেপে)

শানঃ ভুলে যেও না রওশন এখন আর নেই তাই ভালোই ভালোই বলছি রাজি হয়ে যাও রানি করে রাখবো আর যদি আমি জোড় করি তাহলে দাসি হওয়ারও যোগ্য থাকবে না।( শয়তানি হেসে)

সুবহাঃ কে কিসের যোগ্য থাকবে না তা সময় বলবে। ( অদ্ভুত হেসে)

শানঃ আজ রাতে আমার ফ্লাইট সব সময়ের মতো এবারো নিজের কাজ শেষ করে চলে যাব কেউ বুঝতেও পারবে না। তোমাকে তো নিজের সাথে নিবই বি রেডি,,,( বলেই চলে গেল)

সুবহা এতক্ষন কতটা ভয়ে ছিল তা ও ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। শান যেতেই দরজাটা ধপ করে বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে শুরু করে ও। ভয়ে হাত পা কাঁপছে সুবহার। দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ফেলে তারপর টেবিল থেকে পানির গ্লাস তুলে পুরো গ্লাস খালি করে দিলো।

চার দিন আগের কথা মনে পরতেই গাঁয়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে ওর।

?Flashback?

সুবহার জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে অচেনা কোথাও আবিষ্কার করে ও। ধরফরিয়ে উঠে বসে সুবহা। আশেপাশে তাকাতেই সোফায় চোখ গেল ওর। অচেনা একজন বসে আছে সোফায়।

সুবহাঃ কে আপনি? কেন এনেছেন এখানে আমাকে?

রিশা একটা ওয়াইনের গ্লাস হাতে নিয়ে লোকটার হাতে দেয়। লোকটি দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করে।

শানঃ আমি শান ডার্ক ওয়ার্ল্ড এর সবচেয়ে খুনি মাফিয়া।

শান নামটা শুনেই কিছুটা অবাক হয় ও। কারন এই নামের কখনো কারো কথা রওশনের কাছ থেকে শুনে নি ও।

সুবহাঃ কেন এনেছেন আমাকে এখানে কি চাই আপনাদের?

শান উঠে সুবহার সামনে আসে তারপর ওর চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে বলতে শুরু করে।

শানঃ তোমাকে আমার একটা কাজ করতে হবে। এই কাজটা শুধু সেই করতে পারবে রওশনের খুব কাছের। যাকে রওশন‌ চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে যার কাছে যেতে রওশন ওর অস্ত্র ওর গার্ড কাউকে অ্যালাউ করে না।

সুবহাঃ মানে কি আপনার?

শানঃ আমি চাই তুমি রওশনকে মেরে ফেলো।( সোজা ভাবে)

সুবহা কথাটা শুনে কয়েক কদম পিছিয়ে গেল।

সুবহাঃ অসম্ভব! আপনি বুঝতে পারছেন কি বলছেন। ভালোই ভালোই বলছি আমাকে যেতে দিন নাহলে রওশন আপনার কি অবস্থা করবে তা আপনার কল্পনার বাইরে।

সুবহা যেতে নিলেই রিশা ওর হাত ধরে আটকে ওর গালে চর বসিয়ে দেয়। সুবহা ছিটকে পরে ফ্লোরে।

রিশাঃ এই মেয়েটা অনেক ঘাড়ত্যাড়া। তখন এতো বানিয়ে বললাম রওশনের নামে তাও আমার কথায় বিশ্বাস না করে রওশনের কাছে যেতে নিয়েছিল এজন্য মুখে স্প্রে মেরে অজ্ঞান করেছি।

শানঃ শান্ত হও রিশা লেট মি হ্যান্ডেল হার। ( সুবহার কাছে এগিয়ে গিয়ে)

শানকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে সুবহা গালে হাত রেখে ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যায়।

শানঃ নিজের জীবনের চিন্তা নেই তোমার জানি কিন্তু নিজের চাইল্ড কেয়ার হোমের ছোট ছোট বাচ্চাদের চিন্তা তো আছে?

সুবহাঃ ক কি বলতে চাইছেন আপনি?( ভয়ে ভয়ে)

শানঃ আমি খারাপ অনেক খারাপ সুবহা। আমার এক ইশারায় সেই ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা গুলোর নিঃশ্বাস পলকের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে জানো?

সুবহার কান্না আসছে রওশনের নাম নিচ্ছে ও মনে মনে।

শানঃ ভাবার জন্য বিশ মিনিট সময় দিলাম তোমায় ভাবো,,,( ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)

শান রিশাকে ইশারা করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

বিশ মিনিট পর,,,??

শান রুমে ফিরে আসে। সুবহা ঠাই বসে আছে একই জায়গায় তবে ওর মুখে আগের মতো সেই ভয়টা নেই তা হয়তো খেয়াল করে নি শান।

শানঃ কি ভাবলে?

সুবহা চুপ করে আছে। শান এবার নিজের ফোন বের করে সুবহাকে দেখালো। অনেক গুলো লোক অর্ফানএজের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।

শানঃ আমার এক ইশারায় সব শেষ হয়ে যেতে পারে সুবহা,,,

সুবহা এক ধ্যানে ভিডিও টার দিকে তাকিয়ে আছে।

শানঃ ঠিক আছে আমি আমার লোকদের বলছি…

সুবহাঃ আমি রাজী,,,

সুবহার কথায় কিছুটা অবাক হয় শান। এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে সুবহা রাজী হলো? কোন ঘাপলা নেই তো?

শানঃ ওকে ফাইন যাও তাহলে। কিন্তু মনে রেখো আমার লোকেরা সর্বক্ষণ তোমার উপর নজর রাখবে ডোন্ট ট্রাই টু চিটেট অন মি,,,

সুবহা কিছু না বলে ধীর পায়ে বেরিয়ে আসে বাড়ি থেকে। তারপরের ঘটনা সবার জানা।

বর্তমানে,,,??

সুবহা দেয়াল ঘেঁষে বসে আছে। নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে ও। নিজের হাতের মেহেদির দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে ও।

সুবহাঃ সব ঠিক হয়ে যাবে আই নো দ্যাট।

শান নিজের মনের সুখে ড্রাইভ করছে। ওর সবচেয়ে বড় শত্রু শেষ ভাবতেই আনন্দে মন ভরে যাচ্ছে ওর। হঠাৎ একটা গাড়ি খুব জোরে শানের গাড়িকে টক্কর দেয় আর ওর গাড়ি গিয়ে গাছের সাথে বারি খায়। গাড়ির দরজা ভেঙে শান রোডে পরে যায়। সামনের গাড়িটি ঠিক শানের বরবার দাঁড়ানো। শান কোন রকমে নিজের হাত ধরে উঠে দাঁড়ায়। প্রচুর ব্যথা পেয়েছে ও মাথায় হাতে আঘাত লেগেছে।

শান সরে দাঁড়ানোর শক্তি টুকু ও পাচ্ছে না। গাড়িটি ফুল স্পীডে ওর সামনে ছুটে আসে শান ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে কিন্তু গাড়িটি ঠিক ওর ছুঁইছুঁই হয়ে ব্রেক কষে।

শান চোখ খুলে তাকায়। সামনে তাকাতেই ওর চোখ ছানাবড়া।

গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে আসে রওশন। রওশনকে দেখে আত্মা যেন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম শানের।

শানঃ তুই বেঁচে আছিস? কিন্তু কিভাবে?( ঘাবড়ে)

রওশনঃ ম্যাজিক!

শানঃ আমি নিজে দেখেছি সুবহা তোকে মেরে ফেলেছিল তাহলে কিভাবে ফিরে আসলি তুই?

রওশনঃ তুই কি ভেবেছিস আমি তোর ফাঁদে পা দিয়েছি নো ওয়ে শান ভুল ধারণা তোর। ফাঁদে পা তুই দিয়েছিস তাও আমার। ( বাঁকা হেসে)

শানের মাথায় কিছু ঢুকছে না। কিভাবে কি হলো ? সব তো ওর প্লান মোতাবেক হয়েছিল তাহলে…..

শান নিজের খোঁড়ানো পা দিয়ে পালানোর জন্য ছুটতেই রওশন ওর পথ আটকায়।

রওশনঃ আরে ল্যাংড়া আমের বংশধর এতো তাড়া কিসের? তোর বহুরুপ চেহারা দেখে আই’ম স্পিচলেস। সাপও এতো চামড়া বদলায় না তুই যতটা চেহারা বদলিয়েছিস। এবার অনেক হয়েছে ইট্স টাইম টু স্টপ। ( শানের মাথায় গান তাক করে)

রওশনঃ যেখানে আমার মতো এতো কুল হিরো আছে সেখানে তোর মতো খোঁড়া ভিলেনের থাকাটা বেমানান লাগে। ইট্স লাইক দুধে মাছি পরা টাইপ। ( ব্যাঙ্গো ভাবে )

শানঃ তুই আবারো আমার সাথে চালাকি করেছিস ধোঁকা দিয়েছিস আমায় ছাড়বো না তোকে। ( রেগে )

রওশনঃ তুই বাঁচলে তো আমাকে ছাড়বি। আর হা ধোঁকাবাজদের ধোঁকা দিয়েই হাতে করতে হয়।

শানঃ তুই এমনটা করতে পারিস না রওশন,,,

রওশনঃ Nothing is impossible for Rowshan Rayzada u bloody…….

বলেই ট্রিগারে চাপ দিয়ে দিল রওশন। গুলি সোজা শানের মাথার ওপারে।

রওশন নিজের হাত ঝাড়তে ঝাড়তে ফোন বের করে কল করলো।

রওশনঃ আভি এখানকার ময়লাটা সাফ করিয়ে দে আর বাকিটা তুই হ্যান্ডেল কর আমি অনেক টায়ার্ড হয়ে গিয়েছি রেস্ট প্রয়োজন। ( হামি দিয়ে)

কথা গুলো বলেই কল কেটে দিল ও তারপর শানের দিকে এক পলক তাকিয়ে শার্টে ঝুলিয়ে থাকা সানগ্লাস টা খুলে চোখে পরে নিল। নিজের গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিল ও।

এইদিকে,,,,??

সুবহা নিজের রুমে দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায় হঠাৎ কারো গুনগুন করে গান গাওয়ার শব্দ পায় ও। কন্ঠটা খুব পরিচিত। সুবহা এক প্রকার দৌড়ে রুমে আসে। কিন্তু রুমে কেউ নেই। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরে ওকে। সুবহা যেন নিজের শ্বাস ফিরে পেয়েছে। মানুষটি ওর ঘাড়ে নিজের নাক ঘষতে ঘষতে গাইতে শুরু করে,,,

“তেরে দার পার সানাম চালে আয়ে
তু না আয়া তো হাম চালে আয়ে।”

সুবহা সাথে সাথে ঘুরে মানুষটিকে জড়িয়ে ধরে তারপর তার বুকে গভীর ভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,,,

সুবহাঃ রওশননন!

To be continued…….

এখন বলো যারা গতকাল আমাকে মার্ডার করার কথা বলছিলে তাদের কি করবো আমি?। আমার তারা মতো চোখ গুলো তাদের চাঁদের মতো মুখ খানা দেখতে চায়?

#Mr_Arrogant_2?
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_24
.
.
.
.
সুবহা নিজের রুমে দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায় হঠাৎ কারো গুনগুন করে গান গাওয়ার শব্দ পায় ও। কন্ঠটা খুব পরিচিত। সুবহা এক প্রকার দৌড়ে রুমে আসে। কিন্তু রুমে কেউ নেই। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরে ওকে। সুবহা যেন নিজের শ্বাস ফিরে পেয়েছে। মানুষটি ওর ঘাড়ে নিজের নাক ঘষতে ঘষতে গাইতে শুরু করে,,,

“তেরে দার পার সানাম চালে আয়ে
তু না আয়া তো হাম চালে আয়ে।”

সুবহা সাথে সাথে ঘুরে মানুষটিকে জড়িয়ে ধরে তারপর তার বুকে গভীর ভাবে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,,,

সুবহাঃ রওশননন!

রওশন সুবহাকে দু হাত দিয়ে আগলে নেয় তারপর ওর মাথায় চুমু দিয়ে বলে।

রওশনঃ আর কে হবে রওশন ছাড়া?

সুবহা রওশনের বুক থেকে মাথা তুলে ওর চোখের দিকে তাকায়। সুবহার চোখে পানি টলটল করছে একটু হলেই বুঝি গড়িয়ে পরবে। চোখের পানি গড়িয়ে নিচে পরার আগেই রওশন সেটা নিজের হাতের তালুতে নিয়ে নেয়।

রওশনঃ চোখের পানিকে মুক্তার সাথে তুলনা করা হয় সুবহা তাই এতো মূল্যবান জিনিস তুমি সামান্য কারণে ওয়েস্ট করতে পারো না,,,

সুবহাঃ আ আমি অনেক ভ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম রওশন,,,( কাঁপা কাঁপা গলায়)

রওশনঃ ভয়ের কিছু নেই সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।

সুবহা রওশনের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলে আবার।

রওশনঃ সুবহা!

সুবহাঃ হুম

রওশনঃ আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে,,,( হামি দিয়ে)

সুবহা অবাক চোখে তাকায় রওশনের দিকে তারপর বলে।

সুবহাঃ এমন সিচুয়েশনেও তোমার ঘুম পাচ্ছে?( কিছুটা রেগে )

রওশনঃ তিন দিন ঠিক মতো একটু রেস্ট করি নি ঘুম পাওয়াটা স্বাভাবিক,,,( ব্যাঙ্গো ভাবে )

সুবহা ভাবছে রওশন তো ঠিকই বলছে এই তিন দিন অনেক কঠিন ভাবে কেটেছে ওর।

সুবহার ভাবনার মাঝেই রওশন আচমকা ওকে কোলে তুলে নেয়।

সুবহাঃ আরেহ কোলে নিলে কেন?

রওশনঃ তোমাকে বুকে নিয়ে ঘুমাবো তাই,,

রওশন সুবহানকে শুইয়ে দিয়ে ওর পাশে শুয়ে পরে তারপর ওকে নিজের বুকে টেনে নেয়।

সুবহাঃ রও…

রওশনঃ হুঁশ…. ঘুমাও আমি জানি তুমিও ঠিক মতো ঘুমাও নি সো নো মোর ওয়ার্ড,,,( কঠিন গলায়)

রওশনের কথায় সুবহা চুপ করে যায়। রওশন সুবহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ধীরে ধীরে গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় সুবহা।

রওশন ঘুমায় নি ওর চোখ এখনো খোলা। সেদিনের ঘটনা সব একে একে চোখে ভাসছে ওর।

?Flashback?

শান রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই সুবহা চিন্তায় পরে যায়। কি করবে ও কিছুই বুঝতে পারছে না।

হঠাৎ সুবহা সামনের টেবিলে একটা ফোন দেখতে পায় ফোনটা রিশার। সুবহা দ্রুত উঠে অ্যামারজেন্সি কল থেকে রওশনকে কল করে।

রওশন অপরিচিত নাম্বার দেখে কিছুটা দেরিতে রিসিভ করে। রিসিভ করতেই সুবহার কন্ঠ শুনতে পায় ও।

সুবহাঃ র রওশন।( কেঁদে কেঁদে)

রওশনঃ সুবহা কি হয়েছে তোমার আর এটা কার নাম্বার?( ঘাবড়ে গিয়ে)

সুবহা রওশনকে শানের বলা সব কথা বলতে শুরু করে। শানের নাম শুনতেই রওশন খানিকটা অবাক হয়। যাকে খুঁজতে খুঁজতে ওরা হয়রান সে নিজে ওদের কাছে এসে ধরা দিয়েছে। বিষয়টা একটা সুযোগের মতো লাগছে রওশনের কাছে। শানকে হয়তো এবার ধরতে পারবে ওরা।

রওশনঃ শান যেটা বলেছে সেটাই করবে তুমি,,,

সুবহাঃ রওশন কি বলছো তুমি?( ঘাবড়ে গিয়ে)

রওশনঃ আগে আমার পুরো কথাটা শুনো সুবহা।

রওশন সুবহাকে সব বুঝিয়ে বলে কিভাবে কি করবে। রওশন চাইলে সুবহাকে ছাড়িয়ে আনতে পারতো কিন্তু ওর মাথায় অন্য কিছু ঘুরছে। শত হোক মাফিয়া বলে কথা সব কাজে ভেজাল না করলে এদের ভালো লাগে না।

সুবহা রওশনকে যেখান থেকে ফেলেছিল সেখানে জলাশয় ছিল নিচে। তাই রওশন সাঁতরে উঠতে পেরেছে। কিন্তু উপর থেকে পরার সময় পায়ে আঘাত পায় ও তার জন্য তিন দিন হসপিটালাইজ্ড হতে হয় ওকে।

আভি আর পুলিশ ফোর্স শানের বিষয়ে সব প্রুফ কালেক্ট করে আর আজ শানের পালানোর আগেই রওশন ওকে পরপার পাঠিয়ে দেয়।

বর্তমানে,,,??

সব কিছু ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রওশন। সুবহার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে সব পেইন যেন ভুলে যায় ও। সুবহার গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই সুবহা গুটিগুটি মেরে রওশনের বুকে লেপ্টে যায়। রওশন মুচকি হেসে সুবহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে ফেলে।

এইদিকে,,,??

?In Headquarter?

রিশা একটা চেয়ারে বসে আছে ওর বরাবর টেবিলের উপর আভি বসে পরে ওহি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখছে আভি কি করতে চাইছে।

রিশাকে থ্যারাপি দেওয়া হয়েছে একটা লেডি পুলিশ কে দিয়ে বেচারির অবস্থা খারাপ এখন।

আভিঃ উফ্ রিশা বেবি তোমার গালের এই অবস্থা কে করলো,,,( আহত কন্ঠে)

রিশাঃ আমি কিছু করিনি সব শান করেছে আভি। আমাকে যেতে দাও প্লিজ,,,

আভিঃ আহ্‌ বেইবি ডোন্ট প্যানিক আমি আছি তো। তুমি তোমার সব ক্রাইম স্বীকার করে নাও সব ঠিক হয়ে যাবে।

রিশাঃ আমি কিছু জানি না,,,

আভিঃ ভালো কথার মানুষ না তুমি। এতো ভালোবেসে বললাম অথচ নিজের মুখ খুলছো না। তোমার জন্য স্পেশাল থ্যারাপিই ঠিক আছে।

রিশাঃ ম মানে?

আভি গুনগুন করতে করতে বেরিয়ে গেল ও যেতেই একটা মোটা লেডি অফিসার হাতে স্টিক নিয়ে প্রবেশ করলো। রিশার আর বুঝতে বাকি রইল না আভি কি মিন করছিল।

আভি বেরিয়ে এসে দেখলো ওহি রিশার অবস্থা দেখে হাসছে। আভি বুঝতে পারছে সেদিন আভি রিশার সাথে কথা বলছিল বিধায় ওহি ওর উপর রাগ।

আভি গিয়ে ওহির সামনে দাঁড়ায়।

আভিঃ এতো হাসি কিসের?

ওহিঃ কই নাতো এমনিই,,,

আভিঃ চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দেই।

ওহি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল। আভি ড্রাইভ করছে আর ওহি জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে।

ওহিদের বাড়ির বাইরে গাড়ি থামাতেই ওহি নেমে পরে আর আভি চলে যায়। বাড়ির ছাদ থেকে ওদের দেখে মুচকি হাসছে অর্নব ওর মাথায় অন্য কিছু ঘুরছে।

অর্নবঃ আভি বাবুজি তোমার জন্য সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে একটু অপেক্ষা শুধু।

???

সুবহার ঘুম ভাঙতেই দেখে রওশন মিররের সামনে দাঁড়িয়ে চুল সেট করছে। সুবহাকে উঠে যেতে দেখেই রওশন মুখে হাসি টেনে ওর কাছে যায় তারপর ওর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,,,

রওশনঃ ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও বাসায় যাবো।

সুবহাঃ এখন?

রওশনঃ হুম গো,,,

সুবহা মুচকি হেসে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল। এই ফাঁকে রওশন কাউকে কল করলো।

রওশনঃ সব রেডি?

অপরপাশে,,,,,,

রওশনঃ ওকে,,,

কল কেটে দিল। সুবহা বেরিয়ে আসতেই রওশন ওকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই সুবহা অবাক। পুরো বাড়ি আগের মতোই সাজানো যেমনটা চার দিন আগে ছিল।

সুবহাকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে রওশন হালকা হাসলো। রওশন বেরিয়ে সুবহাকে বের করলো তারপর ভিতরে প্রবেশ করল।

সুবহাঃ সব তো‌ আগের মতো সাজানো রওশন,,( অবাক হয়ে)

রওশনঃ হুম কারন বিয়ের জন্য ডেকোরেশন হয়েছিল বিয়ের আগে কিছুই সরবে না।

সুবহা অবাক চোখে তাকায় রওশনের দিকে। ওর চোখে প্রশ্ন স্পষ্ট।

রওশনঃ এঙ্গেজমেন্ট কমপ্লিট, হলদি মেহেদী কমপ্লিট এখন ব্যাস বিয়েটা বাকি আর সেটা আজকেই হবে।

সুবহাঃ বিয়ে তাও আজকে?( অবাক হয়ে) আপনি আমাকে এবারো কিছু জানান নি রওশন এটা ঠিক না। ( গাল ফুলিয়ে)

রওশনঃ আরেহ এতে জানানোর কি আছে? তোমার বুঝা উচিত ছিল সেদিন বিয়ে হয়নি তাই আজকে হবে,,,( কথা ঘুরিয়ে)

সুবহা রাগে ফুঁসছে রওশনের দিকে তাকিয়ে আর রওশন এদিক ওদিক তাকিয়ে ওর দৃষ্টি অ্যাভয়েড করছে‌।

সুবহা কিছু না বলে হনহন করে নিজের রুমে চলে গেল। রওশন এবার হাফ ছেড়ে বাঁচলো। ও যত বড় গ্যাংস্টারই হোক না কেন সুবহার রাগের সামনে ওর সাহস হাওয়া হয়ে যায়।

রাতে,,,??

পুরো বাড়ি মেহমান গমগম করছে। একটা স্টেজ করা হয়েছে সেটার দু দিকে বর বধুর বসার জায়গা। মাঝ দিয়ে নেটের পর্দা টানানো।

রওশন গোল্ডেন কালার শেরওয়ানি পরেছে মাথায় পাগড়ি পুরো বরের লুক। আভি রেড কালার শেরওয়ানি পরেছে আর মাথায় পাগড়ি। টাইসেল ও কম যাচ্ছে না ওকেও গোল্ডেন কালার টি শার্ট পরানো হয়েছে রওশনের পাশেই বসে আছে ও।

ওহি সুবহাকে নিয়ে নিচে আসছে। গোল্ডেন আর ক্রিস্টাল কাজ করা লেহেঙ্গা হাত ভরা চুড়ি আর গা ভর্তি গয়না। সব মিলিয়ে অসাধারণ লাগছে ওকে।

আভি ওহির দিকে তাকাতেই হা হয়ে যায়। সাদা রঙের লেহেঙ্গায় অসাধারণ লাগছে ওকে।

সুবহাকে রওশনের বরাবর বসানো হয়েছে। কাজী বিয়ে পরানো শুরু করে। সবার আগে রওশনকে কবুল বলতে বলা হয় রওশন এক সেকেন্ড দেরি না করে তিন কবুল বলে ফেলে। সবাই হাসছে ওর কাজে। সুবহাকে কবুল বলতে বলা হলে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রেখে একটা গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে কবুল বলে।

কাজীঃ আলহামদুলিল্লাহ বিয়ে সম্পন্ন হলো।

অর্নবঃ আরেকটা বিয়ে এখনো বাকি কাজী সাহেব।

আভিঃ আপনিও বিয়ে করবেন নাকি? স্যার যতই হোক বয়সের দিকে একটু লক্ষ্য রাখুন। ( বোকার মতো)

আভির কথায় সবাই মুখ টিপে হাসছে অর্নব চোখ গরম করে তাকায় ওর দিকে।

অর্নবঃ আমি নিজের না আমার মেয়ে ওহির কথা বলছি আভি। ( দাঁতে দাঁত চেপে)

ওহির নাম শুনে আভির মুখের রং পাল্টে গেল ও অবাক চোখে তাকায় ওহির দিকে।

আভিঃ ওহির বিয়ে! কার সাথে?( কাঁপা কাঁপা গলায়)

অর্নবঃ তোমার সাথে। ( স্ট্রেইট ভাবে)

আভিঃ কিহ!( দাঁড়িয়ে গিয়ে)

ওহির মনে তো লাড্ডু ফুটছে ও আগে থেকেই এ বিষয়ে জানতো।

অর্নবঃ আপনি বিয়ে পরানো শুরু করেন কাজী সাহেব।

আভিঃ এটা কেমন কথা আমার বিয়ে তাও আমাকে না জানিয়ে। করবো না আমি বিয়ে।

অর্নবঃ তুমি বাচ্চা মানুষ তাই তোমাকে জানানো দরকার মনে করি নি বড়দের নির্ণয় যথেষ্ট তোমার জন্য।

আভিঃ আমি বাচ্চা? তাহলে বিয়ে দিচ্ছেন কেন? আর কোন বড়দের কথা বলছেন?

রওশনঃ আমি ডিসিশন নিয়েছি এ বিষয়ে আভি। অ্যাজ ইউর গার্জেন।

আভিঃ ভাই তুই? করবো না বিয়ে আমি। আপনার চুরেল মেয়েকে তো কখনোই না,,,

আভি চলে যেতে নিলেই অর্নবের গার্ডরা ওর উপর গান তাক করে দাঁড়ায়।

অর্নবঃ এখান থেকে এক হলে ওহির ডোলি উঠবে অথবা তোমার লাশ। ( ভয় দেখিয়ে)

আভি ভয়ে ভয়ে রওশনের দিকে তাকায়। রওশন দু হাত তুলে বলে ” আমার কিছু করার নেই।”

আভিঃ ভাই নেহি দুশমান হ্যায় তু??

আভি মুখ গোমড়া করে বসে পরে কাজী বিয়ে পরানো শুরু করে। আভি বাইরে দিয়ে রাগ দেখালেও আজকে অর্নবের গালে চুমু দিতে ইচ্ছে করছে ওর আজ প্রথম বার হিটলার কাজের কাজ করেছে।

To be continued……..??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here