Mr_Arrogant_2? #The_Gangster_Lover,Part_19,20

0
1496

#Mr_Arrogant_2?
#The_Gangster_Lover,Part_19,20
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_19

???
রওশনঃ আভি কোথায় সুবহা?

সুবহা মাথা নিচু করে আছে। সুবহাকে চুপ থাকতে দেখে রওশন কিছুটা রেগে যায়।

রওশনঃ কিছু জিজ্ঞেস করছি তোমাকে? ( ধমকের স্বরে)

রওশনের ধমকে কেঁপে উঠে সুবহা। তারপর নিজের হাত ডলতে ডলতে সব বলতে শুরু করে।

রওশন সব শুনে যেন স্থির থাকতে পারছে না মনে অজানা ভয় কাজ করতে শুরু করেছে ওর।

রওশনঃ তুমি ওকে যেতে দিলে কেন? বিষয়টা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা বুঝতে পারছো তোমারা?

সুবহাঃ আমি ওকে বলেছিলাম কিন্তু ও শোনে নি রওশন। আমি ওকে থামানোর চেষ্টা করেছি বিশ্বাস করো।

রওশনঃ এখানে কথা বিশ্বাস এর না সুবহা। ওকে যে বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য আমি এতো কিছু করলাম আজ আমার জন্যই ও সেই বিপদের মুখে চলে গেল। ( ঘাবড়ে আছে রওশন।)

কোথায় গিয়েছে ও? ওর কিছু হলে নিজেকে ক্ষমা করতে করতে আমি। আই হ্যাভ টু ফাইন্ড হিম,,,,

রওশন কোর্টের বাইরে আসতেই হঠাৎ পেছন থেকে কেউ ওকে ডেকে উঠে। রওশন আর সুবহা চমকে যায়।

আভিঃ আমিতো এখানে তুই আমাকে কোথায় খুঁজতে যাচ্ছিস?

রওশনঃ আভি!

রওশন দ্রুত গিয়ে আভিকে জড়িয়ে ধরলো।

রওশনঃ তুই ঠিক আছিস? আর তোর ঘড়ি,,,

রওশন আভির হাত তুলতেই দেখে ঘড়ি নেই।

আভিঃ রিলেক্স ব্রো ঠিক আছি আমি। আর যেখানে ওই সামান্য বম ওয়ালা ঘড়ির বিষয়! ওটা হ্যান্ডেল করা তো আমার বাম হাতের খেল (ডান হাত উঠিয়ে )

রওশনঃ এটা ডান হাত!

আভিঃ ওও ওই একই কথা। হাত না কথার‌ ফিলিংয়ে খেয়াল দে। ( বাম হাত তুলে)

রওশনঃ চাপা ছাড়া বন্ধ কর আর সত্যটা বল আমায় কিভাবে করেছিস?

আভিঃ বলছি তো। তিন মিনিট সময় ছিল জীপ নিয়ে ডাইরেক্ট পাহাড়ের নিচের জলাশয়ের কাছে চলে যাই। তারপর ব্রেক থেকে পা সরিয়ে হাত থেকে ঘড়ি খুলে ফেলে পানিতে ছুরে মারি। জীপ সহ নিচে পরে যাই কিন্তু ঘড়ি কিছুটা দূরে পরেছিল তারপর উপর পানি থাকায় পানির গভীরে বিস্ফোরণ হয়েছে। ( হাফ ছেড়ে)

রওশনঃ তুই এতো ব্রিলিয়ান্ট হলি কবে থেকে?

আভিঃ আমি জন্ম থেকেই ব্রিলিয়ান্ট ব্রো ব্যাস তোরাই আমার ট্যালেন্ট বুঝতে পারিস না। ( ভাব নিয়ে)

রওশনঃ টু মাচ চাপা!

আভিঃ আচ্ছা বিগবি তোর মনে হচ্ছে না একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা এখনো বাকি আছে?( ভ্রু নাচিয়ে)

রওশন বাঁকা হাসলো আভির কথা শুনে। রওশন সুবহার সামনে গিয়ে ওকে বলে।

রওশনঃ সুবহা তুমি টাইসু কে নিয়ে বাসায় চলে যাও আমরা একটা অসম্পূর্ণ কাজ সম্পুর্ণ করে আসছি।

সুবহাঃ কি কাজ রওশন?( অবাক হয়ে)

রওশনঃ এসে বলবো এখন যাও। ( সুবহার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে)

আভিঃ এটা পাবলিক প্লেস ব্রো কুছ তো শারাম কার!

আভির কথায় সুবহার অনেক লজ্জা করছে। কিন্তু রওশন ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ওকে বলে।

রওশনঃ তোর শরম লাগলে তুই চোখ বন্ধ করে রাখ! কাবাবে হাড্ডি হোস না।

আভিঃ ভালো কথার দাম নেই। ( মুখ বাঁকিয়ে)

সুবহা মাথা নিচু করে কোন রকমে আভিকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। টাইসেল ওদের দিকে তাকিয়ে এখনো বসে আছে। এটা দেখে আভি বলল।

আভিঃ আপনাকে কি আলাদা ভাবে ইনভিটেশন দিয়ে বলা লাগবে? সুবহার বডিগার্ড ওর সাথে যান।

টাইসেল দৌড়। রওশন আভির দিকে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে বলে।

রওশনঃ তুই টাইসেলের সাথে এভাবে কথা বললি কেন?

আভিঃ তো কি করবো? বিভিষনের বাচ্চা টাইসেল। ওই তো সুবহাকে হেল্প করেছে তোর সত্য জানতে। ওকে বাড়ি পৌঁছে এমন পিটানি দিব না!

রওশনঃ তুই তো ট্রেইনিং দিয়েছিস তোকে আগে পিটানো দরকার।

আভিঃ ঠিকই তো!( মনে মনে) থাক পিটানো ক্যান্সেল।

রওশন হেসে দেয় ওর কথায়। আভি বেচারা চুপসে গেছে।

গার্ড গাড়ি নিয়ে আসতেই ওরা বেরিয়ে যায় ওদের উদ্দেশ্যে।

???

আদনান আরামসে নিজের ড্রইং রুমের সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে। আজ ওর কাছে সিলেব্রেশনের দিন। এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করেছে ও। রওশনের সাথে আভিও শেষ এখন আর কেউ ওর রাস্তায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না।

হঠাৎ বাইরে গন্ডগোল এর শব্দ পেয়ে চমকে দাঁড়ায় ও।

আদনানঃ বাইরে আবার কি হলো?

আদনান বাইরে বের হতে নিলেই রওশন দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ওর পথ আটকায়।

রওশনকে দেখে চমকে যায় আদনান।

রওশনঃ এতো তাড়াহুড়ো করে কোথায় যাচ্ছেন চাচাজান?

আদনানঃ ত তুমি এখানে কিভাবে?

রওশনঃ ম্যাজিক! বলেছিলাম না আমি বেঁচে গেলে আপনি বাঁচবেন না! এখন নিজেকে কিভাবে প্রটেক্ট করবেন?

আদনান ভয় পেয়ে পিছন দিকে যেতে নিলেই আভি এসে দাঁড়ায় সেখানে। আদনান আরেক দফা শক্ড।

আভিঃ এতো তাড়া কিসের আব্বুজান? নিজের ছেলেকে জীবিত দেখে খুশি হলে না?

আদনানঃ ত তোমরা আমাকে এভাবে হ্যারেস করতে পারো না। আমি পুলিশকে কল করবো বের হও আমার বাসা থেকে।

রওশনঃ পুলিশ তো আপনার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। কিরে আভি তুই পুলিশ না?

আভিঃ আমাকে দেখে কি পুলিশ মনে হয় না?( ফোনে নিজেকে দেখে )

আদনানঃ তোমরা কি ভাবো নিজেকে হ্যাঁ। এতো দিন তোমরা শত্রু হওয়ার নাটক করছিলে সব জানা আছে আমার। আর কি ভেবেছো আমার বাড়িতে ঢুকে আমাকে মেরে ফেলবে? ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। দেশে আইন বলতেও কিছু আছে। তোমরা আমাকে কিছু করলে আইন তোমাদের ছেড়ে দিবে না।

আভিঃ ঠিকই তো বলছে এখন কি করা যায় বিগবি?

রওশন একটা গান বের করে আদনানের সামনে ধরলো।

আদনানঃ এটাতো আমার গান,,,( অবাক হয়ে)

রওশনঃ আজকের ব্রেকিং নিউজ,, আদনান রায়জাদা তার বড় ভাইয়ের ছেলেকে মারার চেষ্টা করলেন,,, অ্যাটেম্প টু মারডার! ( আদনানের চার পাশ ঘুরতে ঘুরতে)

আদনানঃ আমি কখন তোকে মারার চেষ্টা করলাম?(চমকে)

রওশন পলকের মধ্যে গানটা দিয়ে নিজের বাহুতে শুট করে দিল।

রওশনের হাত থেকে থেকে রক্ত ঝড়ছে ব্যথা হচ্ছে কিন্তু সেটা ওর জন্য কষ্টের লাগছে না।

আভিঃ রওশন রায়জাদাকে মারার চেষ্টায় সিবিআই অফিসার আভি রায়জাদার হাতে ইনকাউন্টার হলো আদনান রায়জাদার।

আদনানঃ এগুলো তোমাদের প্লান সব বুঝি আমি। ইউ চিটারস্। ( রেগে )

আভিঃ একজন ভালো বাবা একজন ভালো হাজবেন্ড তো আপনি কখনো ছিলেনই না। এখন একজন ভালো মানুষ হতে পেরেছেন কিনা সেটা উপরওয়ালা নির্ণয় করবে। আমাদের জীবন থেকে বিদায় হওয়ার জন্য তৈরি হন। আল্লাহ হাফেজ। ( গান তাক করে)

আদনানঃ আমি তোমার বাবা হই আভি। ডোন্ট ডু দিস।

আভি চোখ বন্ধ করে ট্রিগারে চাপ দিতে নেয় কিন্তু তার আগেই শ্যুট করার আওয়াজ হয়ে যায়। আভি চমকে তাকাতেই দেখে অর্নব দাঁড়িয়ে আছে আর আদনান নিচে পরে আছে। অর্নব শুট করেছে আদনানকে।

আভিঃ আপনি কেন শ্যুট করলেন?

অর্নবঃ সেটা আমি এক্সপ্লেইন করছি একটু অপেক্ষা করো। এনাকে নিয়ে যাও।( অন্য অফিসারকে অর্ডার দিয়ে। অফিসার নিয়ে গেল আদনানের বডি।)

আভিঃ এখন বলেন।

অর্নবঃ কারন তুমি এখন আর সিবিআই অফিসার না আভি। আমার অর্ডার অমান্য করার অপরাধে আমি তোমাকে রাস্টিগেট করেছি। তাই আমাদের কোন মিশনে তুমি কাজ করতে পারবে না এখন থেকে।

রওশনঃ হোয়াট!

আভিঃ সত্যিই ( খুশি হয়ে) যাক ভালোই হলো হিটলারের সাথে আর কাজ করতে হবে না। আমি তো অডিশন দিব নিউ মুভির। আই’ম সিউর আমার অ্যাক্টিং আর গুড লুক দেখে প্রডিউসার আমাকে নিউ মুভিতে লন্জ করবেই। ও মাই গডডডডসস আগামী তে বেস্ট অ্যাক্টার এর অ্যাওয়ার্ড আমার হবে। ( মনে মনে এসব ভাবছে আর কল্পনার সাঁতার কাটছে আভি)

রওশনঃ কিন্তু স্যার আপনি দেখেছেন কিভাবে আভি নিজের লাইফ রিস্কে রেখে কত বড় কাজ করেছে। ওর সাথে এমনটা করতে পারেন না আপনি।

আভিঃ অফ যা ভাই আর পাম দিস না। যা হয় ভালোর জন্য হয়। ( রওশনের কানে কানে)

রওশন চোখ গরম করে তাকায় আভির দিকে।

অর্নবঃ হুম এর কারনে আভির জন্য একটা ইনাম ডিসাইড করেছি আমি।

আভিঃ কি ইনাম? লাইক কোন নিউ ব্যাচ বা সম্মাননা! ওগুলো অনেক আছে আমার লাগবে না আর। ?

অর্নবঃ নাহ অন্য কিছু।

রওশনঃ কি সেটা তো বলেন।

অর্নবঃ আমি পুরস্কার হিসেবে আভিকে আবার সিবিআই জয়েন করার পার্মিশন দিচ্ছি।

আভিঃ দিল টুট গায়া অর সাপ্না ভি ??

রওশনঃ থ্যাংক ইউ স্যার। আমি জানতাম আপনি কখনো ভুল কিছু করবেন না ওর সাথে।

অর্নবঃ হুম কিন্তু এখন তোমার হসপিটাল যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আভি ওকে নিয়ে আসো আমি বাইরে অপেক্ষা করছি।

To be continued……….??

যারা আভি আভি করছিল তাদের কেমন লাগলো আভির স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া।? বিচারা সংসার সেট হওয়ার আগেই ডিভোর্স হয়ে গেল।?

#Mr_Arrogant_2?
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_20
.
.
.
.
ডক্টর রওশনের হাতে ব্যান্ডেজ করে চলে গেল।

আভিঃ ব্যাথা করছে ব্রো?

রওশনঃ নাহ,,( হাত সোজা করে)

আভিঃ রিয়েলি! দেখি তো,,,

আভি রওশনের ব্যান্ডেজে জোরে চাপ দিয়ে দিতেই রওশন চিল্লিয়ে উঠে।

রওশনঃ আহহ! আভিইই,,( রেগে )

আভিঃ হিহি তুই বললি ব্যথা করছে না তাই চেক করলাম আরকি,,,

রওশনঃ জীবনেও সুধরাবি না তুই,,

?At Home?

সুবহা আর ওহি বসে আছে। অর্নবের থেকে সব শুনে আভিকে দেখার জন্য চলে আসে ওহি।

সুবহাঃ আমার টেনশন হচ্ছে ওহি ওরা কোথায় গেল হঠাৎ?

ওহিঃ ডোন্ট ওয়ারি সুবহা পাপা আছে ওখানে সব ঠিক হবে।

কলিং বেল বাজতেই সুবহা দ্রুত উঠে দরজা খুলে। রওশনকে দেখতেই আঁতকে উঠে ও।

সুবহাঃ এটা কিভাবে হলো রওশন? আল্লাহ কত বড় আঘাত,,,( রওশনের হাত আলতো করে ধরে কাঁদো কাঁদো ভাবে)

রওশনঃ আহা সুবহা কিছুই হয়নি জাস্ট একটু ব্যথা পেয়েছি।

সুবহাঃ এটা একটু ব্যথা?( কান্না করে দিয়ে )

রওশনঃ কাঁদছো কেন সুবহা আমি ঠিক আছি দেখ। সহি সালামত তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ( সুবহার চোখের পানি মুছে দিয়ে) ডোন্ট ক্রাই,,,

সুবহা রওশনের বুকে মাথা রেখে ওর হাতের আঘাতের দিকে তাকিয়ে আছে। রওশন ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ওকে সামলাচ্ছে।

আভিঃ উঁহু উঁহু ভিতরে প্রবেশ করতে দিবে নাকি এখানেই সব রোমান্স করে ফেলবে।

আভির কথায় সুবহা লজ্জা পেয়ে সরে দাঁড়ায়। রওশন চোখ গরম করে তাকায় আভির দিকে। আভি কিছুটা ভনিতা স্বরে বলল।

আভিঃ পারেই তো শুধু চোখ গরম করতে। ( বলেই ভিতরে ঢুকে পরল)

আভি রওশন ভিতরে প্রবেশ করতেই ওহিকে দেখতে পায়। ওহি আভিকে দেখে দাঁড়িয়ে যায় ওর চোখ ছলছল করছে। আভির মুখ থেকে হাসি গায়েব হয়ে যায় ওহিকে দেখে।

রওশনঃ ওহি তুমি এখানে?

ওহিঃ আভ আসলে আপনাকে দেখতে এসেছিলাম ভাইয়া।

রওশনঃ আমি ঠিক আছি ডোন্ট ওয়ারি।

টাইসেল দূরে দাঁড়িয়ে আছে বেচারা চুপসে গেছে পুরো। আভি টাইসেলকে দেখেই ওর দিকে চোখ গরম করে তাকায় টাইসেল দৌড়ে সুবহার পাশে চলে যায়।

রওশনঃ আভিই বেচারাকে ভয় দেখাচ্ছিস কেন?

আভিঃ এটাও একটা ট্রেইনিং তুমি বুঝবা না।

রওশনঃ সব বুঝি আমি। টাইসু ভয় পাবি না ওকে বেশি বারাবারি করলে একদম কামড় বসিয়ে দিবি। ( টাইসেলকে বলল )

টাইসেল এবার বসে আভির দিকে তাকিয়ে জিহ্বা বের করে হাসছে।

আভিঃ কি শিখাচ্ছিস ওকে ভাই!( ভয়ে ভয়ে)

রওশনঃ এটাও একটা ট্রেইনিং,,,

আভিঃ সুবহা! তোমার রওশনকে নিয়ে যাও তো প্লিজ। হাতে ব্যথা পেয়ে মাথা নষ্ট হয়ে গেছে ওর।

রওশনঃ কি বললি তুই?( রেগে )

আভিঃ বললাম যে ডক্টর বলেছে ভাইকে ফ্রেশ করিয়ে দিতে নাহলে ইনফ্যাকশন হয়ে যাবে। নিয়ে যাও সুবহা,,,

রওশনঃ ডক্টর কখন বলল?

সুবহাঃ রওশন তুমি আমাকে আগে বলো নি কেন? চলো আমার সাথে এখনি,,,( রওশনের হাত ধরে টেনে)

রওশনঃ কিন্তু!

সুবহাঃ কোন কিন্তু নয়।

রওশনকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সুবহা ওকে উপরে নিয়ে চলে গেল।

আভি নিজের রুমে চলে যেতে নিলেই ওহির কথায় দাঁড়িয়ে যায়।

ওহিঃ আভি আমার কিছু বলার ছিল!( নিচু স্বরে)

আভিঃ বলো,,

ওহিঃ আসলে আভি আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে!( হাত ডলছে)

আভিঃ তুমি কিছু বলার আগে আমি কিছু বলি?

ওহি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো আভির দিকে।

আভিঃ ফার্স্ট অফ অল থ্যাংক ইউ কারন তোমার হেল্পের কারনেই আমি ভাইকে সেফ করতে পেরেছি। ‌ অ্যান্ড সেকেন্ড অফ অল আমি জানি তুমি হয়তো আমার কাছ থেকে ক্ষমা চাইবে অথবা বলবে তুমি এখনো আমায় ভালোবাসো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছো অ্যান অল,,

কিন্তু আমি তোমাকে বলতে চাই ওহি,,,( ওহির সামনে দাঁড়িয়ে) তুমি বয়সে অনেক ছোট আমার থেকে তাই হয়তো বাচ্চামো করে ফেলেছো আমার কোন অভিযোগ নেই তোমার প্রতি। আমি তোমার সাথে যেমন বিহেভ করেছি হয়তো এটা আমার পাওনা ছিল। তাই সব কিছু ভুলে নতুন করে নিজেদের লাইফটা সাজানো ঠিক হবে। তুমি তোমার পথে আর আমি আমার। তুমি চাইলে আমি তোমার ফ্রেন্ড হতে পারি কিন্তু ভালোবাসার মানুষ না।

ওহিঃ কিন্তু আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আভি। ( কাঁদো কাঁদো ভাবে)

আভিঃ ওটাকে ভালোবাসা বলে না ওহি ভালোলাগা হবে। You can call it infatuation. আমার প্রতি তোমার যে অনুভূতি সেটা শুধু মাত্র একটা মোহ। কিন্তু ভালোবাসা! সেটা বোঝার ক্ষমতা এখনো তোমার হয়নি। আগে ভালোবাসার মানে উপলব্ধি করো তারপর কাউকে ভালোবাসি বলো। আই প্রমিস যেদিন আমি তোমার চোখে সত্যিই কারো জন্য ভালোবাসা জিনিসটা দেখতে পারবো যে কোন মূল্যে তাকে তোমার করে দিব। কিন্তু টিল দ্যান নিজের মনকে বুঝতে শিখ।

ওহি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে আভির দিকে। এই মুহূর্তে নিজেকে স্টুডেন্ট আর আভিকে ম্যাথের টিচার লাগছে ওর কাছে। মোহ আর ভালোবাসার হিসাব দেখাচ্ছে আভি কিন্তু ওহির মাথায় কিছুই ঢুকছে না। ঢুকবেই বা কিভাবে ওতো ম্যাথে কাঁচা।

আভিঃ এখন বাসায় যাও টেক রেস্ট।

ওহি বোকার মতো মাথা নাড়ালো। আভি টাইসেলের দিকে তাকিয়ে ওকে বলল,,,

আভিঃ টাইসু উপরে আয় কাম,,,

আভি উপরে চলে গেল ওর পেছনে টাইসুও দৌড়। ওহি বেচারি ম্যাথ মিলাতে মিলাতে চলে গেল।

এইদিকে,,,??

রওশনঃ তুমি আভির কথায় বিশ্বাস করছো সুবহা! ডক্টর এমন কিছুই বলে নি মিথ্যা বলছে ও।

সুবহাঃ মিথ্যা আভি না তুমি বলছো ছিঃ এমন নোংরা অবস্থায় থাকতে বুঝি তোমার অনেক ভালো লাগছে। এখন বুঝেছি টাইসেল এমন কেন গোসলের নাম শুনতেই দৌড় বাহ্ তোমার থেকেই শিখেছে। ( রেগে )

রওশনঃ তুমি আমাকে ইনডাইরেক্টলি নোংরা বলে অপমান করছো?( অবাক হয়ে) আমি আর টাইসু মোটেও নোংরা না।

সুবহাঃ সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি তোমরা কেমন।

রওশনঃ আভি তোমাকে আমায় ফ্রেশ করাতে বলেছে তাই না! চলো আজকে তুমিই আমাকে ফ্রেশ করাবে।

রওশন সুবহার হাত ধরে টেনে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল।

রওশনঃ নাও শার্ট খুলে দাও আমার। ( হাত ছড়িয়ে দিয়ে)

সুবহাঃ আমি?( অবাক হয়ে)

রওশনঃ একটু আগে তো তুমি নিজেই দায়িত্ব নিলে,,,এখন বলছো আমি!

সুবহাঃ আমিতো মুখ হাত ধুইয়ে দেওয়ার কথা বলছিলাম। ( ঘাবড়ে গিয়ে) আভি আমাকে ফাঁসিয়ে দিল!- মনে মনে।

রওশনঃ এটাই এতক্ষন বলছিলাম শুনো নি।এখন কাঁপছো কেন দায়িত্ব পালন করো।

সুবহাঃ আমি আভিকে পাঠাচ্ছি,,,

সুবহা চলে যেতে নিলেই রওশন ডান হাত দিয়ে ওর হাত ধরে টেনে ওকে নিজের সামনে দাঁড় করায়।

রওশনঃ নিজে থেকে ধরা যখন দিয়েছো এখন আর পালাতে দিব না,,,( বাঁকা হেসে)। এখন হেল্প করো আমায়।

সুবহা অসহায় দৃষ্টিতে রওশনের দিকে তাকিয়ে ওর শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করে। শার্ট খুলতে নিলেই রওশন কুকিয়ে উঠে ব্যথায়।

রওশনঃ লাগছে,,,

সুবহাঃ স্যরি স্যরি,,,

সুবহা সাবধানতার সাথে রওশনের শার্ট খুলে দেয়। শার্ট খুলতেই রওশন বাথ টাবে বসে পরে।

রওশনঃ নাও এখন নিজের হাতে গোসল করিয়ে দিয়ে তোমার নোংরা মাফিয়াকে ক্লিন মাফিয়া বানিয়ে দাও।

সুবহাঃ আমি?( অসহায় ভাবে)

রওশনঃ এখানে তো অন্য কেউ নেই তাহলে!

সুবহা আলতো পায়ে রওশনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তারপর হ্যান্ড শাওয়ার নিয়ে রওশনের গায়ে পানি ছেঁড়ে দেয়।

সুবহার হাত কাঁপছে ও তাকাতে পারছে না রওশনের দিকে।

সুবহাঃ কি বেহায়া লোক। ( মনে মনে )

রওশনঃ তোমার জন্য হাজার বার বেহায়া হতে রাজি।

কথাটা বলেই সুবহার হাত টেনে নিজের উপর ফেলল। আচমকা এমন হওয়ায় সুবহা টাল সামলাতে না পেরে রওশনের উপর পরে‌। রওশনের খালি বুকে মাথা বারি খায় ওর। রওশন সুবহার মাথা হালকা করে নিজের বুকে চেপে ধরে বলে,,,

রওশনঃ আমার হার্টবিট শুনতে পারছো সুবহা?

সুবহা মনোযোগ সহকারে রওশনের বুকে কান পেতে ওর হার্টবিট শুনছে।

রওশনঃ এটা প্রতিনিয়ত একজনের নামই নেই এক জনের জন্যই বিট করে আর সেটা হচ্ছে,,,

সুবহাঃ সুবহা!( রওশনের বুক থেকে মাথা তুলে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল )

রওশনঃ হা সুবহা,,,( সুবহার চুল কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে)

সুবহা লজ্জা মাথা হাসি দিয়ে নিজের চোখ নামিয়ে নেয়।

রওশন সুবহার চুলের পেছনে হাত ডুবিয়ে দিয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে নেয়। সুবহা চোখ বন্ধ করে আছে ওর নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।

রওশন সুবহার ফেস দেখে মুচকি হাসছে। আলতো করে ওর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল রওশন। সুবহা চোখ খুলে রওশনের দিকে তাকায়। রওশনের নেশাক্ত চাহনি ওর দিকেই। রওশন আলতো করে সুবহার ঠোঁট স্পর্শ করে ওর গালে হাত রেখে বলতে শুরু করে।

রওশনঃ খুব শিঘ্রই তোমাকে নিজের করে নিব সুবহা। এখন আর কাউকে আমাদের মাঝে আসতে দিব না আমি‌। সব ঠিক আছে, তুমি আমি আমাদের আশেপাশে সব কিছু ঠিক আছে। কোন বিপদ নেই এখন। সব বিপদ দূর করে তোমাকে নিজের করে পেয়ে গিয়েছি আমি এখন আর দূরে যেতে দিব না।

রওশন সুবহাকে জড়িয়ে ধরে ওর মাথায় চুমু দিয়ে বলল।

রওশনঃ I love you Subha,,,

সুবহাঃ I love you too my #Mr_Arrogant ( মুচকি হেসে)

রওশনঃ সুবহা!

সুবহাঃ হুম।

রওশনঃ তুমি যে এভাবে আমার বুকে মাথা রেখে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছো পরে আমি উল্টা পাল্টা কিছু করে বসলে আমাকে খারাপ ভেবে ফেলো না আবার।( মজা করে)

রওশনের কথা শুনে সুবহা চোখ বড় বড় করে এক ঝটকায় উঠে দাঁড়ায়। রওশন জোরে জোরে হেসে দেয় সুবহার কাজে।

সুবহাঃ তুমি আসলেই একটা BBN. ( রেগে )

রওশনঃ BBN মানে?( টাস্কি খেয়ে)

সুবহাঃ বেসরম বেহায়া নির্লজ্জ। ( বলেই দৌড়)

রওশনঃ কিহ! এতো বড় কথা!

আভি নিজের বেডে বসে আছে ওর মুখে বিষন্নতা স্পষ্ট। টাইসু ওর বরাবর বসে আভির দিকেই তাকিয়ে আছে। ধীর পায়ে বেডের উপর উঠে আভির গা ঘেঁষে বসে পরল টাইসেল। আভি আড়ি চোখে তাকায় টাইসেলের দিকে।

আভিঃ বিভিষনের বাচ্চা টাইসেল কথা বলবি না আমার সাথে।

টাইসেল কিছু না বলে দৌড়ে নেমে গেল তারপর একটা লাল বল মুখে করে এনে আভির হাতে দিল।

বলটায় টাইসেল আর আভির ছবি স্কেচ করা। আভি বলটা স্পেশালি টাইসেলের জন্য বানিয়ে এনেছিল। বলটা হাতে নিতেই আভির মুখে হাসি ফুটে উঠে।

আভিঃ তুই আমাকে রাগ করে থাকতে দিবি না?

নিচে নেমে টাইসেলের গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে।

এইদিকে,,,,??

রওশন আর আভির ছবি টেবিলে রাখা। সামনেই একজন লোক বসে আছে তার হাতে একটা ছুরি। লোকটি ছুরি দিয়ে ওদের ছবিতে ক্রস করতে করতে বলে।

>>> ভেবেছো সব বিপদ শেষ তাই না? হ্যাপি ফ্যামিলি হয়ে থাকবে? ইম্পসিবল! আমি থাকতে কখনো তোদের মুখে হাসি ফুটতে দিব না। যেভাবে আমাকে বরবাদ করেছিস সেভাবে আমিও তোদের বরবাদ করে দিব। গেট রেডি রওশন রায়জাদা অনেক কিছু আনএক্সপেক্টেড ঘটতে চলেছে তোর জীবনে,,, ( শয়তানি হেসে)

To be continued………??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here