Mr_Arrogant_2 ? #The_Gangstar_Lover,Part_1

0
3424

#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangstar_Lover,Part_1
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida

হাতে একটা ব্রিফকেস নিয়ে দ্রুত গতিতে হাঁটছে ইমন। ব্রিফকেস ভরা টাকার বান্ডিল দিয়ে। এতো টাকা হাতে থাকা সত্ত্বেও বুক কাঁপছে আর ঘাম ছুটছে ওর। যেই কোন মূল্যে আজকের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে তাকে নাহলে ওর বিশ্বাস ঘাতকতার জন্য দুনিয়া ছাড়া করে দেওয়া হবে ওকে।

নিজের আস্তানা থেকে বেরিয়ে গাড়ির দিকে এগোচ্ছে ইমন। হঠাৎ গাড়ির দিকে চোখ যেতেই পা থেমে গেল ওর কলিজা যেন বেরিয়ে আসবে এখুনি। ভয়ে ঢোক গিলে চোখ দুটো বড় বড় করে সামনে তাকিয়ে আছে ও।

গাড়ির উপর বসে এক পা ঝুলিয়ে আরেক পা মোড়া দিয়ে বসে বন্দুকের ট্রিগারে আঙ্গুল ঢুকিয়ে ঘুরাচ্ছে রওশন রায়জাদা ইন্টারনেশনাল মাফিয়া অ্যান্ড দা গ্যাংস্টার অফ ডার্ক ওয়ার্ল্ড। পরনে কালো লং কোট কলার উঠানো আর মুখে বাঁকা হাসি।

রওশনকে দেখেই বুক কাঁপছে ইমনের।‌ ইমন এক কদম দু কদম করে পিছিয়ে যেতে নিলেই রওশনের কথা শুনে থমকে যায়।

রওশনঃ কি ভেবেছিলি ইমন? আমার পিঠে ছুরি ঢুকিয়ে, আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে রেহাই পেয়ে যাবি তুই? উমম তুই হয়তো ভুলে যাচ্ছিস রওশনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া এতো সহজ না। ( গান ঘুরাতে ঘুরাতে শান্ত কন্ঠে)

হঠাৎ চারো দিক থেকে গার্ড বেরিয়ে ইমনকে ঘিরে ফেলে। ইমন ব্রিফকেস টা ফেলেই রওশনের সামনে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলতে শুরু করে।

ইমনঃ ব বস ক্ষমা করে দিন প্লিজ আর এমন ভুল হবে না কথা দিচ্ছি। এবারের মতো মাফ করে দিন আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি টাকার মোহে পরে গিয়েছিলাম। এতো টাকার লোভ সামলাতে পারিনি তাই এমন ভুল করে ফেলেছি আর এমন হবে না বস।

রওশনঃ আমার কাছে সবকিছুর ক্ষমা আছে কিন্তু বিশ্বাস ঘাতকতার ক্ষমা নেই। তোকে বিশ্বাস করেছিলাম আর তুই আমার পিঠে ছুরি ঢুকিয়ে আমার শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়েছিস। তোরা ভাবলি রওশন কিছু আন্দাজ করতে পারবে না! কিন্তু তোরা ভুল ছিলি,, তোদের সব প্লান প্রথম থেকেই আমার জানা ছিল আমি চুপ ছিলাম কারন আমি দেখতে চেয়েছিলাম পানি কতদূর গড়ায়।

তুই যাদের সাহায্য করেছিস আমাকে বরবাদ করতে আজ তারা নিজেই বরবাদ হয়ে গেছে।

একটা গার্ড ফোন বের করে ভিডিও দেখায় ইমনকে। দেশের কিছু ডেঞ্জারাস স্মাগলার দের ধরেছে পুলিশ। কালকে তাদের কোর্টে হাজির করে শাস্তি দেওয়া হবে।

রিপোর্ট টা দেখেই গলা শুকিয়ে গেছে ইমনের। যাদের সাথে হাত মিলিয়ে রওশনকে বরবাদ করতে চাইলো আজ তারাই হাজতে তাহলে এখন ওকে কে বাঁচাবে?

ইমনঃ ব বস আমি……

ইমন আর কিছু বলতে নিলেই ওর কপাল ছুঁইয়ে একটা বুলেট বেরিয়ে যায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ইমন। রওশনের গান থেকে ধোঁয়া উঠছে।

রওশনঃ আই হেইট চিটারস্। ( রক্ত চক্ষু নিয়ে)

এই বেঈমানের লাশ পাশের কোনো নালায় ফেলে দিস।

গার্ডরা মাথা নাড়ালো। রওশন গাড়ি থেকে নেমে নিজের চুল গুলো ঝাঁকিয়ে বাম হাত দিয়ে পিছনে নিয়ে হাঁটা ধরলো ওর গাড়ির দিকে।

[ ইনি হচ্ছেন ইন্টারনেশনাল মাফিয়া রওশন রায়জাদা। দেখতে যেমন মারাত্মক সুন্দর তেমনি তার কাজও মারাত্মক ভয়ঙ্কর। ইমন রওশনের গ্যাং এ ছিল কিন্তু টাকার লোভে অন্য দলের সাথে হাত মিলিয়ে রওশনকে বরবাদ করতে চেয়েছিল। রওশন লাইফে দু’টো জিনিসকে ঘৃনা করে “ মিথ্যা আর বেঈমানি”। ফ্যামিলি বলতে আপন কেউ নেই যারা আছে তারা আপন হয়েও পর। বাকিটা গল্পে‌ জানতে পারবেন। ]

???

চারোদিকে নিভু নিভু আলো। সবাই সবার মতো করে ব্যস্ত। হঠাৎ কেউ সামনে চলে আসলো সুবহার। চোখ দুটো মাস্ক দিয়ে ঢাকা তাও মাস্কের আড়ালে গাঢ় বাদামী চোখ দুটো স্পষ্ট দেখতে পারছে ও। চোখ দু’টো তে অদ্ভুত নেশা দেখতে পারছে সুবহা। সুবহা কিছু বলতে যাবে তার আগেই সামনের মানুষটিকে ওর কোমড় জড়িয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে নিল আর সুবহার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিল।

ঘুমের মধ্যেই চিৎকার করে উঠে বসে সুবহা।‌জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ও। টেবিল‌ থেকে পানির গ্লাস তুলে পুরো গ্লাস খালি করে দিল ও। তাও স্বাভাবিক হতে পারছে না ও।

সুবহাঃ এই ভয়ঙ্কর স্মৃতি কি কখনই আমার পিছ ছাড়বে না? কোন কুক্ষাত দিনে ওই পার্টিতে গিয়েছিলাম আমি। সব নষ্টের মূল ওই পার্টি। এই তিন মাসে শান্তির ঘুম নসিব হচ্ছে না আমার। চোখ বন্ধ করতেই ওই দৃশ্য টা ভেসে উঠে। একবার জাস্ট একবার ওই লোকটাকে পাই নিজের হাতে গুলি করবো। ( রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)

হঠাৎ দরজার দিকে তাকাতেই সুবহার রাগ উধাও হয়ে গেল। একটা সাদা পশমের ছোট পাপ্পি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সুবহার দিকে তাকিয়ে আছে।

সুবহাঃ কাম টাইসেল,,, ( হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

সুবহার ডাক পেতেই টাইসেল আওয়াজ করতে করতে সুবহার কোলে উঠে বসলো। সুবহা টাইসেলের শরীরে হাত বুলাতে বুলাতে বলতে শুরু করে।

সুবহাঃ তুই তো চিনিস তাকে,, সেই তো তোকে পাঠিয়েছে।আমাকেও নিয়ে চল না তার কাছে। আমি জানতে চাই কে সে ? ওই লোকটা কি চায় আমার কাছ থেকে? ( আনমনে)

টাইসেল সুবহার হাত নিয়ে খেলা করছে। সুবহার চোখ যায় টাইসেলের গলার দিকে। একটা চেইন পরানো গলায় ওর আর চেইনে লিখা “ টাইসেল”। দেখতেই বুঝা যাচ্ছে কেউ খুব শখ করে রেখেছে নামটা।

[ একদিন দরজা খুলতেই দরজার সামনে একটা ফোমের বক্সে টাইসেলকে দেখেছিল ও। কেউ ওর দরজার বাইরে রেখে গেছে ওকে। সুবহা পাপ্পিটাকে কোলে নিয়ে আদর করছিল তখনই একটা চিট দেখতে পেল ও। চিটে লিখা ছিল।

My one heart for my other heart. আমি জানি যতটুকু যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে আমি একে রেখেছি তত টুকু কেয়ার আর ভালোবাসা তুমিও ওকে দিবে।

Take care Love
Love u……..❤️ ]

সুবহা টাইসেলের শরীরে হাত বুলাতে বুলাতে কথা গুলো ভাবছিল।

সুবহাঃ Today is shower day tycel চল তোকে গোসল করিয়ে দেই তারপর আমি রেডি হয়ে অফিসে যাবো।

টাইসেল সুবহার কোল থেকে নেমে দৌড় দিল। সুবহাও টাইসেলকে ধরার জন্য ওর পিছু দৌড়াচ্ছে। অবশেষে টাইসেলকে ধরে ফেলে ও।

সুবহাঃ ছিঃ কত নোংরা তুই টাইসেল। গোসলের নাম শুনতেই দৌড় দিলি। আই’ম সিউর তোর আগের ফ্রেন্ডও এমন নোংরা তাই তোকেও এমন বানিয়েছে। কিন্তু ভুলিস না তুই এখন সুবহার সাথে থাকিস আর সুবহার নোংরামি পছন্দ না। বুঝেছিসস??

টাইসেল ছুটাছুটি করছে নামার জন্য। সুবহা টাইসেলকে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।

???

সুবহা আর টাইসেলের কান্ড দেখে ল্যাপটপের সামনে বসে একজন হাসছে। এতক্ষন ল্যাপটপে সিসি ফুটেজের সাহায্যে সুবহাকে দেখছিল সে।

ল্যাপটপ টা অফ করে দিয়ে জানালার সামনে চলে আসলো সে। আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে গাইতে শুরু করল,,,

“জানে এই মন জানে তুমি যে আমার
তোমার ই স্বপ্নে আমার রোজ পারাপার x2

ভালোবাসার খামে চিঠি লিখে তোমার নামে
পাঠিয়ে দিলাম আমি পড়ে নাও এবার
জানে এই মন জানে তুমি যে আমার
তোমার ই স্বপ্নে আমার রোজ পারাপার

ইচ্ছে গুলো আমার তোমাকে খুঁজে ফিরে
চাই শুধু তোমাকে হাজারো মুখের ভিড়ে
তুমি তো আমারই জানুক এ গ্ৰহ তারা
থামবে না কখনো প্রেমের এ স্রোতধারা

বলো না তোমার কাছে কি এমন জাদু আছে?
ছুটে আসি এই আমি কেন বার বার?

জানে এই মন জানে তুমি যে আমার
তোমার ই স্বপ্নে আমার রোজ পারাপার।”

অজানাঃ আমার ভালোবাসার স্পর্শ চাইলেও ভুলতে পারবে না সুবহা কারন আমি তোমাকে ভুলতে দিব না। তোমার ইচ্ছে তোমার ভালোবাসা শুধু আমার জন্য। জাগতে থাকলেও তোমার খেয়ালে আমি থাকবো আর ঘুমিয়ে পড়লে তোমার স্বপ্নেও শুধু আমার পারাপার হবে শুধু আমার।

তুমি দূরে থেকেও আমার কাছে আছো আর আমি কাছে থেকেও তোমার দূরে। আমাদের ভালোবাসার পথ এতো সহজ হবে না সুবহা। তোমায় নিজেকে প্রিপেইর করতে হবে কারন ভবিষ্যতে যা হবে তা তোমার কল্পনার ও বাইরে।

???

রাগে টেবিলের সব ফেলে দিচ্ছে আদনান। আজ আবারও রওশনের কাছে হেরে গেল ও। কিছুতেই নিজের হার মেনে নিতে পারছে না ও।

বাড়ির সার্ভেন্ট রা সবাই ভয় পেয়ে আভির নাম্বারে কল করেছে। আভি দ্রুত বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়।

বাড়িতে এসেই দ্রুত ওর বাবার স্টাডি রুমে ছুটে গেল আভি।

আভিঃ Dad r u ok… ( রুমে প্রবেশ করে)

আদনানঃ No I’m not okay Avii আমি ঠিক নেই। ( মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পরল। )

আভিঃ কেন কি হয়েছে ড্যাড আমাকে বলো?

আদনানঃ আজ আবারও ওই রওশন জিতে গেল। আমার কত বড় লস হয়ে গেছে এবার তোমার কোন আইডিয়া নেই। ইমনকেও হয়তো মেরে ফেলেছে এতক্ষনে ও। আর বাকি গুলো জেলে আছে। কি করবো আমি কি করব??( রেগে চিল্লিয়ে )

আভিঃ শান্ত হও তুমি ড্যাড। ওই রওশন এবার জিতে গিয়েছে তো কি হয়েছে আমরা আবারো জাল ফেলব আর এবার ঠিকই রওশন সেই জালে আটকা পরবে। ( শান্তনা দিয়ে)

আদনানঃ তুমি কি কিছু প্লান করেছো আভি?

আভিঃ অনেক কিছু প্লান করেছি ড্যাড। এবার রওশন আমাদের ফাঁদ থেকে রক্ষা পাবে না। ওর বরবাদি নিশ্চিত এবার।

আদনানঃ আমি জানতাম আভি তুমি আমার প্রতিশোধ ওর থেকে নিবেই। এক তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করি না আমি। U r the best son in the world.

আভি আদনানকে জড়িয়ে ধরলো। ওর চোখ দুটো অটোমেটিক্যালি লাল হয়ে গেছে। চোখ মুখ শক্ত করে রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বললো ও।

আভিঃ And u r the best Dad in the world. ডোন্ট ওয়ারি ড্যাড আমি আছি তো তোমার পাশে কেউ তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ( বাঁকা হেসে)

[ আভি রায়জাদা দেখতে যেমন স্টাইলিশ আর ভয়ঙ্কর সুন্দর কাজও তেমন ভয়ঙ্কর সুন্দর। আভি একজন সিবিআই অফিসার। এই পর্যন্ত প্রায় অনেক মেডেল পেয়েছে ও নিজের কাজের জন্য। এই কাজের পাশাপাশি একটা ফ্যাশন হাউজ আছে আভির। আভির হিডেন ট্যালেন্ট হচ্ছে মেয়েদের পটাতে ও দুই সেকেন্ড সময়ও নেয় না। কিন্তু আজও এক জনের জন্য একটা গার্লফ্রেন্ড ও টিকে নি বেচারার ]

???

সুবহা টাইসেলকে গোসল করিয়ে খাবার খাইয়ে দিল তারপর অফিসের জন্য রেডি হয়ে গেল। সুবহা বের হওয়ার জন্য দরজা খুলতেই দরজার বাইরে একটা ঝুড়ি দেখতে পেল। এটা দেখে সুবহা একটুও অবাক হয় নি কারন এই তিন মাসে একটা দিন বাদ যায়নি যখন সে অজানা এই গিফট পাঠায় নি।

সুবহা ঝুড়ি টা তুলে আবার ঘরে প্রবেশ করে। সোফায় নিয়ে বসতেই টাইসেল দৌড়ে সোফায় উঠে আসলো।

ঝুড়িতে প্রতিদিনের মতো একটা অর্কিডের তোরা চকলেট আর একটা কার্ড। সুবহা সব রেখে কার্ড টা তুলল,,,

I wish it had been you
Who taught me how to
Love and be loved
It always
Should have been you……

সুবহাঃ এই লোকটা কি পাগলল।( কার্ডটা ফেলে দিয়ে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে)

সুবহা আর কিছু না ভেবে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

To be continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here