#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover,14,15
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_14
.
.
.
.
পার্কের একটা বেঞ্চে বসে আছে আভি। বৃষ্টির বেগ বেড়ে গিয়েছে আরও।
আভিঃ আই হেইট ইউ আদনান রায়জাদা জাস্ট হেইটট ইউউ। ( মুখ শক্ত করে)
হাত দিয়ে মুখ গুঁজে বসে আছে ও। হঠাৎ আভি অনুভব করলো ওর উপর বৃষ্টির পানি পরছে না কিন্তু বৃষ্টি তো হচ্ছে।
আভি মাথা তুলে তাকাতেই দেখলো ওহি ওর মাথার উপর ছাতা ধরে আছে যার জন্য ও ভিজছে না।
আভিঃ তুমি! এই সময় এখানে কি করছো?
ওহিঃ অবভিয়াসলি আমি! আমি ছাড়া আর কে হবে? আর তুমি এখানে তাই আমিও এখানে চলে এলাম। ( আভির পাশে বসে)
আভিঃ লুক ওহি আমার এখন তোমার সাথে ঝগড়া করার একদম মুড নেই প্লিজ লিভ মি অ্যালন,,,
ওহিঃ আমি জানি না আভি তুমি কোন কারনে আপসেট কিন্তু এটুকু জানি তোমার ফেসে হাসি মানায় বিষন্নতা না।
সামনে যতই বিপদ হোক না কেন আমাদের নিজেকে স্ট্রং রাখতে হয় কারন আমরা যদি ভেঙে পরি তাহলে স্ট্রাগল করে বেঁচে থাকতে পারব না।
তোমাকে কখনো আমি আপসেট দেখিনি কিন্তু আজ যখন তোমার চোখে পানি দেখলাম সহ্য হয়নি তাই চলে এলাম। আই নো তুমি আমাকে বলবে না এর কারন তবুও আমি তোমার পাশে থাকবো কারন ভালোবাসি তোমায়। কখনো একা ছাড়বো না।
আভি ওহির কথা গুলো শুনছে অবাক হয়ে ওর মনে অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে ওহির জন্য। সব সময় যখন ও আপসেট থাকত রওশন ওর পাশে থাকতো অন্য কাউকে নিজের পাশে পায়নি ও কিন্তু আজ ওহি আছে ওর পাশে।
আভিঃ কখনো একা ছাড়বে না? ( অবাক হয়ে)
ওহিঃ তিন সত্যি,,,( মুচকি হেসে)। এখন উঠো নাহলে জ্বর বেঁধে ফেলবে তখন আমাকেই রাত জেগে তোমার সেবা করতে হবে।( মজা করে)
ওহির কথায় আভি হেসে দেয়। ওহি আভির হাত ধরে টেনে উঠায়।
এক ছাতার নিচে পাশাপাশি হাঁটছে ওরা। ওহি বকবক করেই যাচ্ছে আর আভি! আভি তো ওহিকে দেখতে ব্যাস্ত। অন্য সময় হলে ওহির বকবকে ওর মাথা নষ্ট হয়ে যেত কিন্তু আজ তেমনটা হচ্ছে না আজ অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করছে ওর মাঝে। ভালোই লাগছে কারও পাশাপাশি হাঁটতে আড়চোখে তাকে দেখতে।
???
নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর রুমে পায়চারি করছে সুবহা। নিজের গালে হাত দিতেই রওশনের কাজের কথা মনে পরে যায় আর লজ্জায় লাল হয়ে যায় ওর গাল।
সুবহাঃ উফফ আমি এখানে ওই মাফিয়ার বিরুদ্ধে প্রুফ নিতে এসেছি ওর প্রেমে পরতে নাআআ,,,( নিজে নিজে বলছে)
কিন্তু একটা জিনিস মাথায় ঢুকছে না আভি স্যার আর রওশনের মাঝে কি কানেকশন। ওদের দেখে তো মনেই হবে না যে ওরা শত্রু। তাহলে কি আমি কোথাও ভুল?
আর আভি স্যারের কথা অনুযায়ী রওশন খারাপ কিন্তু আমি ওনার মাঝে কোন খারাপি তো দেখছিই না। উনি নিজের লাইফ রিস্কে রেখে সবাইকে বাঁচালেন। যদি উনি খারাপ হতেন তাহলে উল্টা সেই ট্যাররিস্টদের সাহায্য করতেন তাদের বিরোধ না।
কিছু একটা আছে যা আমার অজানা। আজকের মধ্যে সব প্রমাণ জোগাড় করতে হবে আমায়।
রাত তিনটা,,,??
দরজা হালকা ফাঁক করে উঁকি দিয়ে দেখলো রওশনের রুম অন্ধকার আর ব্লুয়ার লাইট অন। পুরো রুম নিলচে কালো দেখা যাচ্ছে। সুবহা আলতো পায়ে রওশনের রুমে প্রবেশ করলো। রওশন এক হাতে বালিশ জড়িয়ে কাত হয়ে শুয়ে আছে আর তার পাশে টাইসেল ঘুমিয়ে আছে। টাইসেলকে দেখেই সুবহার মনে হিংসা জেগে যায়। রওশনকে পেয়ে ওকেই ভুলে গিয়েছে স্বার্থপর টাইসেল।
সুবহাঃ টাইসেল বাচ্চু কালকে দেখবো তোমাকে। আগে আমার পিছু পিছু ঘুরতে আর এখন রওশনকে পেয়ে আমাকেই ভুলে গিয়েছো হুহ,,,, দেখে নিব তোকে আগে এই অ্যারোগেন্ট মাফিয়ার বিরুদ্ধে প্রুফ খুঁজি।
সুবহা খুব সাবধানে রুমের ড্রয়ার খুলে খুঁজতে শুরু করে কিন্তু কিছু পায় না।
সুবহাঃ কি খুঁজতে হবে সেটাই তো জানি না আন্দাজে শুধু নাড়াচাড়া করছি। আল্লাহ রওশন যেন জেগে না যায়।( মনে মনে )
হঠাৎ কিছুর শব্দ শুনতে পেয়ে রওশন নরে চরে উঠে। রওশনকে নরতে দেখে সুবহা ঘাবড়ে যায়।
সুবহাঃ রওশন জেগে গেলে আমি শেষ। ( মনে মনে )
রওশন পাশ ফিরে আবার শুয়ে পরে। সুবহা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
সুবহাঃ পালা সুবহা পালা এখান থেকে।( বলেই দৌড় রুম থেকে)
সুবহা বেড়িয়ে যেতেই রওশন চোখ খুলে দরজার দিকে তাকায় তারপর নিজে নিজে বলে।
রওশনঃ এই মেয়ে কখনো বদলাবে না রাতের বেলায়ও জাসুসি! কালকে মজা বুঝাবো তোমাকে সুবহা বেবি।
সুবহা নিজের রুমে এসে শুয়ে পরলো। মনে হচ্ছে বাঘের গুহা থেকে বেঁচে ফিরেছে ও।
In Morning,,,,,??
সুবহা আর রওশন বরাবর বসে আছে ডাইনিং এ। আজকে বাইরে যায়নি রওশন কারন মাথার ইন্জুরি ঠিক হয়নি। সুবহা ভয়ে ভয়ে মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছে।
রওশনঃ জানো সুবহা রাতে আমার রুমে চোর ঢুকেছিল,,,
কথাটা শোনার সাথে সাথে সুবহার বিষম লেগে যায় আর কাঁশতে শুরু করে ও।
রওশন দ্রুত উঠে সুবহাকে পানি খাইয়ে দিয়ে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
রওশনঃ ঠিক আছো তুমি? কেয়ারফুলি সুবহা,,,( রেগে )
সুবহাঃ আ আমি ঠিক আছি,,,
রওশনঃ চোরের নাম শুনতেই তোমার বিষম লাগলো কেন?( নিজের চেয়ারে বসতে বসতে)
সুবহাঃ ক কই নাতো। খাবারে ঝাল বেশি তাই বিষম লেগেছে। ( নিজেকে সামলে)
রওশনঃ ওহ,,( মুচকি হাসছে রওশন)
সুবহাঃ আপনি বুঝলেন কিভাবে যে চোরই এসেছিল?
রওশনঃ আমি রওশন সুবহা! উড়ন্ত পাখির পাখা গুনে ফেলতে পারি আমার চোখ থেকে কিছু লুকায় না আর এ তো সামান্য চোর।
রওশনের কথা শুনে সুবহার ভয় আরও তীব্র হয়ে ওঠে। তাহলে কি রওশন বুঝে গিয়েছে যে রাতে ও রওশনের রুমে গিয়েছিল। ঘামতে শুরু করেছে ও।
রওশনঃ ন্যান্সি?( ডেকে)
ন্যান্সিঃ জি স্যার,,,
রওশনঃ সব সার্ভেন্ট দের বলো ড্রইং রুমে হাজির হতে ।
ন্যান্সিঃ এখুনি বলছি।
সুবহাঃ সবাইকে ডেকে পাঠালেন কেন?
রওশনঃ চোর ধরতে।
সব সার্ভেন্ট মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে এক লাইনে। রওশন তাদের সামনে দাঁড়িয়ে কিছুটা কড়া গলায় বলল,,
রওশনঃ কালকে রাতে আমার রুমে কে প্রবেশ করেছিল?
সবাই চুপ করে আছে।
রওশনঃ আজকে রাত পর্যন্ত সময় দিচ্ছি যেই হয় না কেন নিজ থেকে যেন সারেন্ডার করে কারন আমি যদি তাকে খুঁজে বের করি তাহলে তার অবস্থা কি হবে তা তোমাদের অজানা নয়।
সুবহা পুরো ঘেমে গিয়েছে। সবাই নিজেদের দিকে চাওয়াচাওয়ি করছে কারন কেউ যায়নি তাহলে অপরাধী কে?
রওশনঃ আমি ফিরে এসে তাকে যেন নিজের সামনে পাই। ( বাঁকা হেসে আড়চোখে সুবহার দিকে তাকিয়ে)
রওশন চলে গেল। সুবহা নিজের রুমে এসে পায়চারি করছে কি করবে ও।
সুবহাঃ পালিয়ে যাব? যদি ধরা পরে যাই?( নখ কামড়াতে কামড়াতে)
সুবহা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। হঠাৎ টাইসেল দৌড়ে সুবহার সামনে আসে তারপর চেঁচামেচি করতে শুরু করে।
সুবহাঃ টাইসেল ডিস্টার্ব করিস না এমনিতেই অনেক প্যারায় আছি।
টাইসেল দৌড়ে চলে গেল আবার। মুখে কিছু নিয়ে সুবহার কাছে ফিরে আসলো ও।
সুবহাঃ এটা কি টাইসু?
সুবহা টাইসেলের মুখ থেকে জিনিসটা নিল।
সুবহাঃ রওশনের ছবি! এটা দিয়ে কি হবে?
টাইসেল কিছু বলছে কিন্তু সুবহা বুঝতে পারছে না। ও ছবি দিয়ে কি করবে? টাইসেল আবারও গিয়ে মুখে করে একটা নীল রঙের মার্কার নিয়ে আসলো।
সুবহা ছবি আর মার্কার হাতে বসে আছে। টাইসেল কি বলছে ওর মাথায় ঢুকছে না। আভি আর রওশন খুব সহজে টাইসেলের কথা বুঝে যায় কিন্তু সুবহা পারে না।
হঠাৎ সুবহার মাথায় খটকা লাগে টাইসেল কি বলতে চাইছে।
সুবহা মার্কার দিয়ে রওশনের ছবিতে আঁকতে শুরু করল। যেমনটা মাস্ক পরলে হয় তেমনটা। চোখ থেকে নাক অবদি একটা মাস্ক আকলো সুবহা।
ছবিটার দিকে তাকাতেই অবাক ও। কারন এখন রওশনকে পুরো সাদিকের মতো লাগছে। সেম চোখ সেম ঠোঁট সেম চাহনি। সুবহার হাত কাঁপছে।
সুবহাঃ এটা কিভাবে সম্ভব?( ঘাবড়ে)
সুবহা দ্রুত রওশনের রুমে চলে যায়। ফাইল খুঁজছে ও যেটাতে রওশনের নাম লিখা থাকবে। টেবিলের উপরেই একটা বুক পরেছিল সুবহা সেটা তুলে নেয় তারপর নাম দেখার জন্য খুলে।
সুবহার চোখ কপালে।
সুবহাঃ রওশন সাদিক রায়জাদা!
সুবহা ধপ করে বিছানায় বসে পরলো।
সুবহাঃ তার মানে এই তিনজন একই ব্যক্তি? রায়জাদা অর্থাৎ আভি স্যারের ভাই আর রায়জাদা ইন্ডাস্ট্রিজ এর সিইও। আর সেদিন যে লোকটা পার্টিতে ছিল সেও রওশন।( অবাক হয়ে)
আভি স্যার কেন মিথ্যা বললো কেন পাঠালো আমাকে এখানে? আর রওশন কেন এতো দিন আড়াল রেখেছে নিজেকে?
সেদিন পার্টিতে আর কেউ নয় বরং রওশন ছিল আর আমি তাকে খুঁজে মরছিলিম। উনি আমার পাশে ছিলেন আর আমি তাকে চিন্তে পারি নি।
আমার নিজের সব প্রশ্নের চাই।
সুবহা দ্রুত পায়ে নিচে নেমে আসে বাইরে যেতে নিলেই গার্ড ওকে আটকিয়ে দেয়।
গার্ডঃ আপনি একা বের হতে পারবেন না ম্যাম।
সুবহাঃ আমার যাওয়াটা জরুরি।
গার্ডঃ আমরা আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি কোথায় যাবেন আপনি?
সুবহাঃ অফিসার আভি রায়জাদার অ্যাপার্টমেন্টে।
গার্ডঃ গাড়িতে উঠেন।
সুবহা গাড়িতে উঠে বসে। রাগে ওর শরীর জ্বলছে আভিকে সামনে পেলে হয়তো ওর চুলই ছিঁড়ে ফেলত এতোক্ষণে।
To be continued………….??
#Mr_Arrogant_2
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_15
.
.
.
.
সুবহা গাড়িতে উঠে বসে। রাগে ওর শরীর জ্বলছে আভিকে সামনে পেলে হয়তো ওর চুলই ছিঁড়ে ফেলত এতোক্ষণে।
আভি নিজের রুমে বসে আছে। ওহির কথা বারবার মনে পরছে ওর। ওহির ফেস চোখে ভাসছে ইচ্ছে করছে সারাক্ষণ বসে ওর আনলিমিটেড বকবক শুনতে।
আভিঃ Is it love? যদি এটা ভালোবাসা হয় তাহলে আমি কি ওই ওহি চুরেলের প্রেমে পরেছি? ওহ গড আভি তুই আর মেয়ে পেলি না প্রেমে পরার জন্য?( ব্লাশিং হয়ে) কিন্তু একটা কথা না বললে নয় ও আসলেই অনেক কিউট,,( নিজের চুল নেড়ে)
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজে কল্পনায় ব্যঘাত ঘটে ওর।
আভিঃ কে আসলো আবার?
আভি উঠে দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলতেই সুবহাকে দেখে টাস্কি খায় ও। সুবহার চেহারা রাগে লাল গিয়েছে।
আভিঃ গড! আমি আমার কি করলাম? ( মনে মনে)। হাই সুবহা,,,( হাসি দিয়ে)
সুবহাঃ আপনার হাই আপনি আপনার পকেটে রাখেন,,,( রেগে )
আভিঃ ওকে রাখলাম পকেটে। কিন্তু হয়েছে টা কি?
সুবহা হনহন করে ভিতরে প্রবেশ করল তারপর ব্যাগ থেকে বই টা আর রওশনের মার্কার দিয়ে আঁকা ছবি টা বের করে আভির উপর ছুড়ে মারল।
আভিঃ আরেহহহ,,( সরে দাঁড়ালো)
সুবহাঃ এসব কি?
আভি বইটা খুলে একটা হাসি দিয়ে বলল,,,
আভিঃ আরেহ এটা তো শেক্সপিয়ারের রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট বুক। এতো টুকু জানার জন্য তুমি এতো দূর এসেছো সুবহা? পড়ে নিলেই তো পারতে।
আভির কথা গুলো শুনে সুবহা যেন আরো তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে।
সুবহাঃ বইয়ের কভারে কি নাম সেটা দেখেন। ( ধমক দিয়ে )
আভিঃ বাহ্ কি সুন্দর হ্যান্ডরাইটিংয়ে নাম লিখা রওশন সাদিক রায়জাদা,,,( বলেই চুপ করে গেল )
আভিঃ ওহ নো,,,
সুবহা নিচে থেকে রওশনের ছবিটা তুলে আভির সামনে ধরলো,,,
সুবহাঃ আপনারা দু’জন ভাই হন? এতো দিন দু’জনে মিলে আমাকে বোকা বানিয়েছেন?( রেগে)
রওশনের বাড়িতে যাওয়া ওর বিরুদ্ধে প্রুফ খোঁজার মিশন সব মিথ্যা ছিল তাই না?
আভিঃ আসলে সুবহা হয়েছে কি আব বলছি তোমায়,,
সুবহাঃ অবভিয়াসলি শুনতেই তো এসেছি। আপনার ভাই আড়াল থেকে এতো মাস আমাকে জ্বালিয়ে এসেছে তারপর হুট করে আপনি মিথ্যা বলে আমাকে তার কাছে যেতে বাধ্য করেন। সব মিথ্যা ছিল,,, আমি ভালো ছিলাম নিজের মতো করে নিজের লাইফ টাকে গুছিয়ে নিয়েছিলাম তাহলে কেন করলেন এমন হা কেন আমার লাইফ টাকে এতো কমপ্লিকেটেড করলেন। আমার লাইফটা কে হ্যাল্ বানিয়ে দিয়েছে আপনার ভাই।
আভিঃ জাস্ট স্টপ ইটট এয়ার। ( চিল্লিয়ে ) অনেক বলেছো তুমি। আমার ভাই তোমার লাইফটাকে হ্যাল বানিয়েছে সেটা তুমি দেখলে কিন্তু ওর কারনেই আজ তুমি কতটা উঁচুতে উঠেছো সেটা বুঝো নি?
একবার ব্রেইন খাটিয়ে ভাবো সুবহা। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি দ্যা রায়জাদা ইন্ডাস্ট্রিজে হাজারো ক্যান্ডিডেট অ্যাপ্লাই করেছিল হাজারো মানুষ ইন্টারভিউ দিয়েছিল কিন্তু তাদের রেখে কেন কোম্পানির ওউনার তোমাকে নিজ থেকে অফার করবে জয়েন হতে। তাও এতো বড় পদে। প্রতি মাসে তোমার অ্যানজিও তে লাখো টাকা ইনভেস্ট কেন করবে? ভাবো সুবহা থিঙ্ক,,,,
সুবহা ভাবতে শুরু করছে। আসলেই ওর থেকে যোগ্য কাউকে জব না দিয়ে ওকেই কেন দিল রওশন?
আভিঃ কারন একটাই ভালোবাসে ও তোমাকে।
সুবহা অবাক হয়ে যায় আভির কথায়।
আভিঃ হা সুবহা ভাই ভালোবাসে তোমায় আর আমি মিথ্যা এজন্য বলেছি যেন তুমি আমার কথায় রাজি হও। সত্যিটা বলতে পারতাম কিন্তু ভাই নিষেধ করেছিল। ভাই তো জানতো ও না যে আমি এমন কিছু একটা করবো। উনি এসবের মাঝে নেই যা করার আমিই করেছি তাই অযথা ওকে দোষ দিবে না প্লিজ।
সুবহাঃ তাহলে এতো দিন উনি নিজেকে আমার থেকে আড়াল কেন দেখেছেন? যদি আমাকে ভালোইবাসতেন তাহলে কখনো বলেন নি কেন?
আভিঃ ভাই তোমাকে বিপদে ফেলতে চাননি। ভাই ডিসাইড করেছিল যখন সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে সব বিপদ সেড়ে যাবে তখন তোমাকে নিজের মনের কথা বলবে।
সুবহাঃ কোন বিপদ?
আভিঃ আছে এমন একজন সুবহা যে পদে পদে ভাইয়ের ক্ষতি করতে চায়। আমি আর ভাই মিলে তার বিরুদ্ধেই কাজ করছি। আর ভাইয়ের সম্পর্কে আমি তোমাকে যা যা বলেছি সব মিথ্যা। হা ভাই একজন মাফিয়া কিন্তু উনি কারও ক্ষতি করার জন্য মাফিয়া হননি। অন্ধকার জগতে প্রবেশ করে সেই অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা নিকৃষ্ট মানুষ রুপি কিটদের ধ্বংস করতে ও মাফিয়া দলে প্রবেশ করেছে দ্যাট্স ইট।
প্লিজ সুবহা ওকে খারাপ ভেবে দূরে ঠেলে দিও না অনেক বেশি সাফার করেছে ও আর ওকে কষ্ট দিও না। রওশন সত্যি তোমাকে অনেক ভালবাসে ওর মতো কেউ তোমাকে ভালোবাসবে না কেউই না।
সুবহা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না ওর মাথা কাজ করতে বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ ওকে আড়াল থেকে এতোটা ভালোবাসতে পারে তা ওর কল্পনার বাইরে।
সুবহাঃ I… I’ve to go…….
সুবহা বেরিয়ে যায় ফ্লাট থেকে। আভি শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সুবহার যাওয়ার দিকে।
আভিঃ ভাইকে জানাতে হবে সুবহা সব জেনে গিয়েছে,,,,( ফোন বের করে)
সুবহা গাড়িতে উঠে বসে। সব কিছু ঘোলাটে লাগছে ওর কাছে। যেদিন থেকে প্রথম রওশন নামক ধাঁধা ওর জীবনে প্রবেশ করেছিল সেদিনের কথা মনে পড়ে যায় ওর।
Flashback,,,,
রায়জাদা ইন্ডাস্ট্রিজে জব হয়েছে সুবহার। অফিসের পক্ষ থেকে একটা পার্টি অর্গিনাইজ করা হয়েছে। অফিসের সব স্টাফরা থাকবে। পার্টির থিম হচ্ছে মাস্ক। সবাই পার্টিতে মাস্ক পরে থাকবে।
সুবহা ব্লাক কালার গাউন পরে রেডি হয়েছে পার্টির জন্য। ফেসে একটা প্রিন্সেস মাস্ক যা নাক অবদি ঢেকে আছে।
পার্টিতে এসে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে ও। আভি স্পেশালি সবার সাথে ওকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
সুবহার মনে হচ্ছে কেউ আড়াল থেকে ওকে দেখছে কিন্তু আশেপাশে খুঁজেও তেমন কাউকে দেখছে না ও। সবাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত।
ব্লাক উইথ ডার্ক ব্লু শেডের লাইট জ্বলছে। সবাই কাপল ডান্স করছে সুবহা এক কর্নারে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে সবাইকে দেখছে।
হঠাৎ ভীরের মাঝে কাওকে দেখতে পায় ও। তার ক্ষীণ দৃষ্টি তার উপরেই স্থির।
পলকের মধ্যেই লোকটি আড়াল হয়ে গেল। সুবহা ভীরের মাঝে তাকে খুঁজছে। হঠাৎ কে যেন সুবহার হাত ধরে নিজের কাছে টেনে নেয়। আচমকা এমন হওয়ায় সুবহা ঘাবড়ে যায়। সামনে তাকাতেই দেখে একটা ক্যাট মাস্ক পরা লোক দাঁড়ানো।
লোকটি সফ্ট ভয়েজে বলল সুবহাকে,,,
>>> May I have a dance with you miss?
ভয়েজটা যেন সুবহার হৃদয়ে লাগলো। না করতে পারল না ও সামনের মানুষটিকে। নিজের অজান্তেই ওর হাত লোকটির কাঁধে চলে গেল।
লোকটি একহাত সুবহার কোমড় জড়িয়ে অন্যহাতে ওর হাত নিজের হাতের ভাজে নিয়ে নেয়।
“বেখেয়ালি মনে ভেবেছি গোপনে
বেখেয়ালি মনে ভিজেছি দু’জনে……X2
আদরের চাদরে নেব তোকে মুড়ে
বৃষ্টি চাস বারো মাস? ভিজি আয়!
বেখেয়ালি মনে ভেবেছি গোপনে
বেখেয়ালি মনে ভিজেছি দু’জনে……
আলোর ওই দেশে সাত রং মেশে
সেই রঙে তোকে রাঙাবো
রাত্রি গড়িয়ে বুকে জড়িয়ে
তোর ভোরের ই ঘুম ভাঙাবো
আদরের চাদরে নেব তোকে মুড়ে
বৃষ্টি চাস বারো মাস? ভিজি আয়!”
সুবহাকে ঘুরিয়ে আবার নিজের কাছে আনলো।
প্রেমের অন্তরা লিখছি মন গড়া
তোকে সুরে সুরে ভেবে যাই
মনের ছবিটায় শেষের কবিতায়
তোকে বারে বারে খুঁজে পাই
আদরের চাদরে নেব তোকে মুড়ে
বৃষ্টি চাস বারো মাস? ভিজি আয়!
সুবহা এক ধ্যানে মাস্কের আড়ালের গাঢ় বাদামী চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে আছে। অদ্ভুত নেশা চোখ দুটোতে। আশেপাশে কে আছে কি হচ্ছে কোন কিছুতেই খেয়াল নেই সুবহার।
গানের প্রতিটা লিরিক্সের সাথে লোকটির গোলাপী ঠোঁট নড়ছে মনে হচ্ছে গানটা সে’ই গাচ্ছে।
ধীরে ধীরে লোকটি সুবহার আরো কাছে চলে আসে। আচমকা সুবহার ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয় সে। সুবহা বুঝতে পারছে না ওর সাথে কি হচ্ছে। যখন বুঝতে পারলো নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা শুরু করল কিন্তু ছাড়াতে পারছে না।
লোকটির স্পর্শ আরো গভীর হচ্ছে। সবাই নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত তার উপর অন্ধকার এজন্য ওদের দিকে কারও চোখ যাচ্ছে না। সুবহা নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে।
হঠাৎ ও অনুভব করে সে স্পর্শ টি এখন আর পাচ্ছে না ও। সুবহা চোখ খুলে অবাক হয়ে যায় কারন লোকটি এখন আর ওর সামনে নেই। সুবহা নিজের আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে থাকে কিন্তু কোথাও নেই সে।
সুবহাঃ ক কে ছিল?( ঘাবড়ে)
এই ঘটনার পরের দিন থেকেই সুবহার সাথে আজব আজব ঘটনা ঘটতে শুরু হয়। প্রতিদিন সকালে ওর জন্য গিফট ফুল পাঠানো। আননোন নাম্বার দেখে ম্যাসেজ। সুবহা ভেবে পায় না কে করছে এমন আর কেনই বা ওর সামনে ধরা দিচ্ছে না।
In Present,,,,,,
হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় নিজের কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসে সুবহা।
ড্রাইভারঃ ম্যাম পৌঁছে গিয়েছি,,,
সুবহা বাইরে তাকিয়ে দেখে রায়জাদা মেনশন পৌঁছে গিয়েছে। সুবহা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়ি থেকে নেমে যায়।
To be continued……..