#Mr_Devil
#Part_17,18,19
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_17
◆◆◆◆◆◆পরের দিন◆◆◆◆◆◆
আলমারির সব জামা কাপড় বিছানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছে রশ্নি
সবার মতো তারো একই সমস্যা
আলমারি ভর্তি জামা কাপড় কিন্তু পার্টিতে পরে যাওয়ার মতো কিছুই পাচ্ছে না
রশ্নি: ধুর ভাল্লাগে না?? আমার তো পড়ার মতো কিছুই নেই তাহলে এখন কি করবো?
সালার নাহিদটাও বাসায় নেই নাহলে ওকে বলতাম ড্রেস চুস করে দেওয়ার জন্য
তখনই ওর চোখ গেল টেবিলে থাকা ওর হ্যান্ড ব্যাগটার দিকে
ওটার চেইন খোলা থাকায় ব্যাগটার ভিতর থেকে একটা প্যাকেট বেরিয়ে আছে
যেটা দেখেই রশ্নির মনে পড়ে গেলো যে আজ ইয়াশ ওকে একটা প্যাকেট দিয়েছিল যেটা ও সানার জন্য খুলে দেখতে পারেনি
রশ্নি ব্যাগ থেকে প্যাকেটটা বের করলো
তারপর প্যাকেটটা খুললো
প্যাকেটটা খোলার পর ওর চোখ যেন কপালে
রশ্নি: এত এক্সপেন্সিভ গাউন ??
কিন্তু স্যার এটা আমাকে দিলো কেন
নাকি ভুল করে আমার কাছে চলে এসেছে
রশ্নির চোখ গেল প্যাকেটের ভিতরে থাকা একটা চিটের দিকে
ও তারাটি চিট টা খুলে দেখল সেখানে লিখা:–
.
??✏️
বেশি কনফিউজড হয়ে লাভ নেই
ওই ড্রেসটা আমিই পাঠিয়েছি আর তোমার জন্যই পাঠিয়েছি
আর আমি চাই আজকের পার্টিতে তুমি আমার পাঠানো গাউনটাই পরে এসো আর নয়তো তোমার কপালে শনি আছে
See you soon sweetheart❤️
It’s your Mr_Devil?
??✏️
রশ্নি: উরিম্মা এইটা গিফ্ট ছিল নাকি থ্রেট
কিন্তু আমিও কম না হুহ
পড়বো না ওই ডেভিলের দেওয়া জামা
কিন্তু না পড়লে যদি আবার আমার সাথে কিছু,,,,,,,,
না না বেশি বাড়াবাড়ি না করে স্যারের দেওয়া ড্রেসটাই পরে নেই
রশ্নি ড্রেসটা সামনে ধরলো
রশ্নি: এত এক্সপেন্সিভ গাউন ??
হোয়াইট স্টোন দিয়ে ডিজাইন করা গ্রে কালারের স্টাইলিশ গাউনটা
দেখেই বোঝা যাচ্ছে কোনো নামি দামি ডিজাইনার দিয়ে স্পেশাল কারো জন্য ড্রেসটা বানানো
কিন্তু ইয়াশ কেনই বা রশ্নির জন্য এত দামি জামা কিনতে গেল
এগুলো ভাবতেই রশ্নির মাথা গোল্লায় যাচ্ছে
.
—০—–আধা ঘন্টা পর—–০০—
রশ্নি রেডি হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে
গ্রে কালারের গাউন
চুলে মেসি বান করা
গলায় গ্রে বেল্টের মধ্যে হোয়াইট স্টোন দিয়ে ডিজাইন করা গার্লস ডগ কলার
হাতে হোয়াইট গোল্ডের ব্রেসলেট
আর হালকা একটু মেক-আপ
সব মিলিয়ে কিউটের ডিব্বা
রশ্নি: লেটস গো রশ ?
…
★ # ★ # ★ # ★ # অফিসে # ★ # ★ # ★ # ★
ইয়াশ এক হাতে ওয়াইন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
কাওকে দেখার জন্য তার চোখ যেন ভীষন তৃষ্ণার্থ
হঠাৎ ওর চোখ গেল গেইটের দিকে
রশ্নি নিচের দিকে তাকিয়ে ওর দুই হাত দিয়ে গাউনটাকে একটু উঁচু করে ভিতরে প্রবেশ করছে
আর ইয়াশের চোখ যেন ওখানেই আটকে গেছে
কিন্তু ইয়াশ যেই না রশ্নিকে গিয়ে ধরবে তার আগেই সানা গিয়ে রশ্নিকে জড়িয়ে ধরলো
রশ্নি: আরেহ মামমা তোমারে তো পুরাই কাঁচা করলার মতো সুইট লাগতাছে
সানা: তোরেও পুরাই ছোট্ট একটা কিউট পেত্নী লাগতাছে
::– তারিফ কার রাহে-হো ইয়া বেইজ্জাতি (দুইজন একসাথে বলে উঠলো)
::– দোনো (আবারো একসাথে)
বলেই দুইজন আবার হাইফাইভ দিয়ে হাসতে শুরু করলো
রশ্নি: থাম বইন থাম নাহলে কেও আমাগোরে এমনে হাসতে দেখলে ধইরা বাইন্ধা পাবনায় ভর্তি কইরা দিয়া আইবো ?
সানা: হ রে,,,,,,,,,,,
রশ্নি আর সানা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল তখনই একটা ছেলে এসে সানাকে বললো
কে যেন ওকে ডাকছে
রশ্নি: তোকে আবার কে ডাকছে রে
সানা: কি জানি,,,,,দারা যেয়ে দেখে আসি
বলেই সানা ছেলেটার আঙ্গুল দিয়ে দেখানো জায়গায় গেল
সানা এদিকে সেদিকে কাওকে খুঁজছে কিন্তু কাউকে পাচ্ছে না বলে ওর মেজাজটা আরো বিগড়ে গেল
সানা: ধুর মনে হয় পিচ্চিটা মজা করছিল (মনে মনে)
এটা ভেবে সানা চলে আসছিল তখনই কে যেন ওকে হ্যাচকা টান দিয়ে এক সাইডে নিয়ে গেল
সানা চোখ বড় বড় করে সামনের বেক্তিটার দিকে তাকিয়ে আছে
.
সানা: আপনি,,,,,,,
সেহের: কেন অন্য কাউকে এক্সপেক্ট করেছিলে নাকি
সানা: না মানে আপনি এখানে কিভাবে,,,,,,
সেহের: এই অফিসের বস আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সো সেই খাতিরে আমি আসতেই পারি
সানা: মানে ইয়াশ স্যার আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড?
সেহের: জি ইউ এস এ তে আমরা সেইম ভার্সিটিতে পড়তাম বাই দা ওয়ে রশ্নি কোথায় ওকে দেখছি না যে?
রশ্নি: আপনি আমাকে এখানে যেভাবে ডেকে এনেছেন,,
তাতে রশ্নির না থাকারই কথা
সেহের: উপস সরি,,,,, ওই ও তো নিশ্চই অনেক বড় হয়ে গিয়েছে তাই না
সানা: এমন ভাবে বলছেন যেন আমি ছোট থেকেই বুড়ি?
সানার কথা শুনে সেহের ফিক করে হেসে দিলো
সেহের: হুম আমার বুড়ি (সানার নাক টেনে দিয়ে)
সেহেরের কাজে সানা কিছুটা লজ্জা পেল
সেহের: এভাবে লজ্জা পেও না আর ঘায়েল হয়ে যাবো
[সানাকে আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে
ডিপ গ্রীন কালার শাড়ি, কমর পর্যন্ত চুল গুলো স্ট্রেইট করে ছেড়ে রাখা
আর হালকা একটু সাজ সবমিলিয়ে পুরাই লাবন্যমই]
সানার চোখ গেল এবার সেহেরের দিকে
[ডিজাইনিং ব্লু পাঞ্জাবি
হাতে ব্ল্যাক ব্যাচ আর সবসময়ের মতো রকস্টার Hair style]
সানা এক ধ্যানে সেহেরের দিকে তাকিয়েই আছে
সেহের: এভাবে দেখছো কেন? আমার বুঝি লজ্জা করে না (দুস্ট হেসে)
সানা: হুহ ??
হঠাৎ সেহের আলতো করার সানার ঠোঁট নিজের ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ করে দিলো
আচমকায় এমনটা করায় সানা ওর ঠোঁটে হাত দিয়ে সেহেরের দিকে অবাক হওয়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
সানার রিয়েকশন দেখে সেহের সানাকে চোখ টিপ মারলো
সানা: ???????
সেহের: এমন বিদঘুটে রিয়েকশন না দিয়ে বাহিরে চলো
সানা আর সেহের বাহিরে এসে দেখলো সবাই ডান্স করছে (কাপল ডান্স)
সেহের: ক্যান আই গেট দা চান্স টু ডান্স উইদ মাই ড্রিম গার্ল (সানার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
সানা মুচকি হেসে সেহেরের হাতটা ধরে সম্মতি জানালো
একটা স্টাফ বয় এসে সানা আর সেহেরকে দুইটা পার্টি মাস্ক দিলো
কারন এটাই পার্টির স্পেশালিটি+রুলস যে আজ সবার মাস্ক পড়তে হবে
লাইটস অফ হয়ে গেল আর তখনই মাইকে একটা ছেলে বলে উঠলো
ছেলেটি: Hey guys it’s a game of finding your soulmate,,,,,,,,So let’s begin
অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছে না তাই সবাই এদিক সেদিক হাতরাচ্ছে
হঠাৎই সানাকে কেউ এক টানে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো
সানা বেশ বুঝতে পারছে এটা কে
সানা: সেহের আপনি,,,,,,,
সেহের: আবার অন্য কাউকে এক্সপেক্ট করছিলে?
সানা আর কিছু বললো না
সেহেরের হাত ধরে ডান্স করতে লাগলো
রশ্নি একটা টুলের উপর একা বসে আছে ওর পাশের টুল গুলোতেও কয়েকটা মেয়ে বসে ছিল
কিন্তু কয়েকটা ছেলে এসে তাদের সাথে ড্যান্স করার জন্য প্রপোজাল দেওয়ায় ওরা নাচতে চলে গেল
হঠাৎই অন্ধকারের মধ্যে থেকে দুইটা হাত এসে রশ্নিকে টান দিয়ে নিয়ে গেল
লোকটা খুবই শক্ত করে রশ্নি কমর চেপে ধরে রেখেছে
রশ্নি: এই আপনি কি করছেন ছাড়ুন আমাকে
(লোকটার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করার)
//– এত দিনে তো এগুলোর অভ্যেস হয়ে যাওয়ার কথা রশ বেইবি (রশ্নির কানে ফিসফিস করে বললো)
লোকটার কথা আর কন্ঠ শুনে রশ্নির বুঝতে একটুও বাকি রইল না যে এটা ইয়াশ
রশ্নি: স্যার আপনি,,,,,,
ইয়াশ আরো জোরে রশ্নিকে আকড়ে ধরলো,,,,,
ইয়াশ: বাহ একবারেই চিনে গেলে দেখি,,,,,ভালোই ভালোই
রশ্নি: স্যার প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন কেও দেখে ফেলবে
ইয়াশ: শাট আপ ইউ ফুল,,,,,,এই অন্ধকারের মধ্যে কে দেখবে
ইয়াশের কথায় রশ্নি চুপসে গেল কারন ও জানে এখন ওর কিছুই করার নেই
জোরে গান চলছে আর অনেকেই চিল্লা চিল্লি করছে তাই ওর আর্তনাদ শোনার কেউই নেই
তাই রশ্নিও ইয়াশের সাথে তালে তালে মিলাতে শুরু করলো
চারদিকে অন্ধকারের মাঝেও বিভিন্ন কালারিং লাইটস, ডেকোরেশনের জন্য পরিবেশ টা খুবই সুন্দর লাগছে
আর এই সব কিছুর মাঝে ইয়াশকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে
(গ্রে কালারের কোর্ট প্যান্ট, ভিতরে ব্ল্যাক কালারের শার্ট, চুল গুলো স্পাইক করা, আর তার সাথে ওর কাতিলানা বাঁকা হাসি তো আছেই
দেখলেই যেন যে কোনো মেয়েরই বলতে ইচ্ছে হয়
★হট টু হ্যান্ডেল ইউ বেইবি★??)
রশ্নি আর ইয়াশ দুজনই যেন দুজনের চোখে ডুবে আছে
হঠাৎ লাইট জলে উঠলো কিন্তু রশ্নি আর ইয়াশ এখনো দুইজন দুইজনের চোখে ডুবে আছে
ইয়াশ: মিস খান,,,,
রশ্নি: হুম,,,,,
ইয়াশ: লাইটস অন হয়ে গিয়েছে
ইয়াশের কথা শুনে রশ্নি তাড়াতাড়ি ইয়াশের থেকে সরে আসলো
সবাই নিজের মুখোশ আগেই খুলে রেখেছিল শুধু ইয়াশ আর রশ্নিই বাকি ছিল
রশ্নি আর ইয়াশও পার্টি মাস্ক গুলো খুলে নিল
এতক্ষন সবার নজর রশ্নি আর ইয়াশের দিকেই ছিল
কিন্তু রশ্নি মাস্ক টা খুলার পর একজন খুব জোরে চিৎকার করে রশ্নির নাম ডেকে উঠলো
লোকটার চিৎকার শুনে সবাই অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাকালো স্পেশালি রশ্নি
আর ইয়াশ এখানে পকেট এ হাত দিয়ে Damn care Attitude নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর মুখে রহস্যময় বাঁকা হাসি
ইয়াশ এমন একটা ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন এটাই হওয়ার ছিল
লোকটাকে দেখে রশ্নির পা যেন কাঁপছে
ও কথা বলতে পারছে না
রশ্নি: তততুমি,,,,,,,,,,,,,,
.
চলবে,
#Mr_Devil
#Part_18
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
.
হঠাৎ কে যেন রশ্নিকে খুব জোরে ডেকে উঠলো
//– রশ্নি,,,,,,,,,,,,,,,(জোরে)
লোকটার চিৎকার শুনে সবাই লোকটার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো স্পেশালি রশ্নি
রশ্নি কাপাকাপা কণ্ঠে লোকটাকে বলে উঠলো
রশ্নি: তততুমি??? এএএখানে কককি ককরছো?
নাহিদ: কেন খুব বেশি ডিস্টার্ব করে ফেললাম মনে হয়
(হ্যা এটা নাহিদই যে রশ্নিকে জোরে চিৎকার করে ডেকেছিল কারন ইয়াশ রশ্নিকে যেভাবে আষ্টে পিষ্ঠে ধরে ডান্স করছিল আর রশ্নিও কোনো বাধা দিচ্ছিল না যা দেখে যে কেউরই মনে হবে ওরা কাপল
আর NAC কোম্পানির মালিকও নাহিদই
NAC এর ফুল ফর্ম Nahid Ahmed Chowdhury)
রশ্নি: নাহিদ তুমি আমাকে ভুল,,,,,
রশ্নির কথা শেষ হওয়ার আগে নাহিদ হাত দেখিয়ে ওকে চুপ হতে বললো
তারপর নাহিদ রশ্নির সামনে গিয়ে বলল
নাহিদ: কি বলবে? যে আমি ভুল বুজছি তোমাকে তাই তো?
নাহিদের কথার মাঝখানে রশ্নি ওর হাত জোরে নিজের হাতে মুষ্ঠী বদ্ধ করে বললো
রশ্নি: বিস্বাস করো নাহিদ আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি এই,,,এই লোকটা আমার সাথে ফোর্সফুলি,,,,,,
রশ্নি আর বলতে পারল না তার আগেই নাহিদ ওর হাতটা ঝারা দিয়ে ওর থেকে সরিয়ে
নাহিদ: আচ্ছা ঠিক আছে একবারের জন্য যদিও তোমার কথাটা মেনেও নেই তাহলেও কিন্তু প্রশ্ন অনেক গুলো রয়েই যায়
আচ্ছা মানলাম এই লোকটা তোমার সাথে ফোর্স করছিল কিন্তু তুমি কেন কোনো প্রতিবাদ করলে না? কেন সরে আসলে না??
রশ্নি: আমি,,,,
নাহিদ: জানো তো এবার আমার কাছে সব পানির মতো পরিষ্কার যে তুমি কেন আমাদের এত বড় বিজনেস রেখে অন্য জায়গায় জব করো
রশ্নি প্রশ্নাক্ত চোখে নাহিদের দিকে তাকিয়ে আছে
নাহিদ আবার বলা শুরু করলো,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
নাহিদ: আমাদের অফিসে কাজ করলে তো আর নিজের প্রেমিকের সাথে দেখা করতে পারবে না আর হয়তো তুমি ভেবেছিলে যে নিজের মামার বিজনেসে কাজ করলে টাকা পাবে না তাই না?
আর আরেকটা কোথাও ক্লিয়ার হলো যে তুমি কেন ওইদিন বাবার বিয়ের কথা জিজ্ঞেস করায় কিছু না বলে উঠে চলে গিয়েছিল আর কেনই তুমি সবসময় আমার ভালোবাসার কথা বললে আমাকে ইগনোর করতে কারন তোমার তো আগের থেকেই একটা প্রেমিক আছে তাই না
আচ্ছা তুমি আমাকে একটা বার বলেও তো দেখতে পারতে কখনো কি তোমাকে কোনো কিছুর অভাব অনুভব করতে দিয়েছি?
বললেই পারতে তুমি আমাকে ভালোবাসো না অন্য জনকে বাসো সত্যি বলছি কখনো বিরক্ত করতাম না
রশ্নির চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরেই যাচ্ছে
ও নির্বার হয়ে নাহিদের কথা গুলো শুনে যাচ্ছে
ও কি বলবে বা কি বলা উচিত তা কিছু বুঝতে পারছে না
ইয়াশ: উফ এরা এত্তো ড্রামাটিক কেন এত ইমোশন আসে কোথা থেকে এদের, আহ জাস্ট ডিসগাস্টিং
(মনে মনে)
নাহিদ নিজের চোখের কোনের পানি হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে মুছে নিয়ে বললো
নাহিদ: সরি ফর ডিস্টার্বিং ইউ এন্ড বায়,,,,, আর রশ্নি,,, আমি বাবাকে বলে দিব যেন তোমার আর আমার বিয়ের ব্যাপার নিয়ে আর না ভাবে,,,,,,,,,
বলেই নাহিদ দ্রুত কদমে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল
নাহিদ চলে যাচ্ছে দেখে রশ্নি দৌড়ে নাহিদের কাছে যেতে চাইলে ইয়াশ খুব শক্ত করে রশ্নির হাত আটকে ধরে
আর রশ্নি নিজেকে ইয়াশের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই ইয়াশের সাথে পেরে উঠছে না
রশ্নি বার বার নাহিদকে ডেকে উঠছে নাহিদের কাছে যাওয়ার জন্য ছটফট করছে কিন্তু ইয়াশএর মন যেন গোলছেই না
ইয়াশ গার্ডসদের কি যেন ইশারা করলো তারপর রশ্নিকে নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল
এতক্ষন সবাই যেন ফ্রিতে সিনেমা দেখছিল
গার্ডস এসে সবাইকে সেখান থেকে বের করে দিলো
ইয়াশের অর্ডারে
ইয়াশ রশ্নিকে অফিসের পিছনের একটা বাগানে নিয়ে ছাড়ল
রশ্নি ইয়াশকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে বললো:
কি চান আপনি আমার থেকে? কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার? কেন করছেন আমার সাথে এমন?
রশ্নির এই ছটফটানি দেখে ইয়াশ যেন এক পৈচাশিক আনন্দ পাচ্ছে
ইয়াশ একটা বাঁকা হাসি দিয়ে রশ্নির বাহু ধরে ওকে কাছে নিয়ে এসে বললো
ইয়াশ: উম বেইব,,,,,তোমার না আই কিউ লেভেল খুবই লো,,,সব কিছু খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যাও,,,,
//– মানে? (রশ্নি অবাক হয় জিগ্গেস করলো)
ইয়াশ: এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে? Whatever তুমি ভুলে গেলেও আমি কিন্তু ভুলিনি
মনে আছে সেই দিনের কথা?
যেদিন তোমার সাথে আমার ফার্স্ট দেখা হয়েছিল অফিসে?
রশ্নি তখনও জিজ্ঞেসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে ছিল
ইয়াশ: মনে করো মনে করো,,,,,সেদিন তুমি যখন আমাকে থাপ্পর মেরেছিলো তখন আমি কি বলেছিলাম
রশ্নি তখন ঐদিনের কথা মনে করল যেদিন ইয়াশ প্রথমবার ওর সাথে অসভ্যতামি করেছিল যার জন্য রশ্নি ওকে থাপ্পড় মেরেছিলো তখন ইয়াশ বলেছিল:
ফ্লাশব্যাক:**
——————
ইয়াশ রশ্নিকে জোর করে কিস করেছিল যার জন্য রশ্নি ওকে থাপ্পড় মারে
রশ্নির থাপ্পড়ে ইয়াশ রক্ত চক্ষু নিয়ে ওকে বলেছিল
ইয়াশ: আজ পর্যন্ত কেও এই ইয়াশ আহমেদ এর সাথে চোখ তুলে কথা বকতে সাহস পায়নি আর তোমার মতো একটা ক্লাসলেস চিপ মেয়ে কিনা আমাকে থাপ্পড় মারলো দা বিজনেস টাইকুন ইয়াশ আহমেদ এর গায় হাত তুললো
মনে রেখো তোমার এই থাপ্পড় এর জবাব তুমি পাবে,,,খুব ভয়ংকর ভাবে পাবে
এটা মাথায় রেখো,, ছাড়বো না তোমায় [Part_05]
…
বর্তমান
———–
রশ্নি এবার সব কিছু বুঝলো ইয়াশ এসব কেন করেছে
রশ্নি: তার মানে আপনি এসব শুধু মাত্র প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য করলেন (কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে)
ইয়াশ: ইয়াহ বেইব (রশ্নির কমর চেপে ধরে)
রশ্নি আর সহ্য করতে পারলো না ইয়াশের কথা গুলো মাটিতে হাটু গেড়ে বসে পড়লো
রশ্নি বসে মুখ দুই হাত দিয়ে ঢেকে ফুঁপিয়ে কান্না করতে শুরু করলো
রশ্নি: একটা থাপ্পড়ের জন্য আপনি আমার পুরো লাইফটা নষ্ট করে দিলেন,,,,,,,
আর আপনি নাহিদকে কিভাবে চিনলেন?
ইয়াশ: এটা তো তোমার আগে খেয়াল করে উচিত ছিল রশ বেইবি যে তুমি কার সাথে পাঙ্গা নিচ্ছ
আর এসব ছোট খাটো ইনফো বের করা আমার জন্য যে অসম্ভব কিছু না সেটার ধারণা তোমার নিশ্চই আছে
রশ্নি: ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ইয়াশ: বলে ছিলাম না প্রত্যেকটা সেকেন্ডে সেকেন্ডে নিজের ভুলের জন্য পস্তাবে তুমি
রশ্নি: কি করলে আমার পিছা ছাড়বেন?
ইয়াশ: গুড কোয়েশ্চেন বাট প্রশ্ন টা ভেবে করছ তো?
রশ্নি প্রশ্নাক্ত চোখে ইয়াশের দিকে তাকালো
ইয়াশ: যা চাইবো দিতে পারবে তো?
ইয়াশের কথায় রশ্নি কিছুটা ধারণা করতে পারলেও ইয়াশ কি বুঝতে চাইছে সেটা বুঝতে পারছে না
ইয়াশ: ইউ হ্যাভ টু স্ট্যান্ড ওয়ান নাইট উইদ মি
তুমি চাইলে আমি তোমাকে একটা হিউজ এমাউন্ট ও পে করতে পারি
অর আরেকটা অপশন আছে তোমার কাছে
তুমি যদি চাও আমি তোমাকে বিয়েও করতে পারি বাট বিয়ের পর তুমি শুধু আমার বিয়ে করা রক্ষিতা হয়ে থাকবে আর ১-২ বছর পর আমরা ডিভোর্স নিয়ে নিব
দেন তোমার সব দ্বায়িত্ব উঠতে আমি রাজি আছি
কি বলো ডিল ফাইনা,,,,,,,,
ইয়াশ কথা শেষ করতে পারলো না তার আগেই খুব তীব্র গতিতে একটা হাত এসে ওর গালে পড়লো
এতক্ষন রশ্নি অবাক দৃষ্টিতে ওর কথা গুলো শুনছিলো
ইয়াশের কথা গুলো ওর গায়ে যেন সুচের মতো চুবচে
পুরো মাথা রাগে ঘৃণায় ফেটে যাচ্ছে তাই আর সহ্য করতে না পেরে ইয়াশের গালে ঠাস একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল
ইয়াশ চোখ বন্ধ করে ওর রাগ টা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে কিন্তু ইয়াশ তো ইয়াশই
ইয়াশ রশ্নিকে হুঙ্কার দিয়ে উঠলো কিন্তু তার আগে রশ্নি ইয়াশের কলার ধরে দ্বিগুন জোরে হুঙ্কার দিয়ে উঠলো
রশ্নি: কি ভেবেছিস কি তুই নিজেকে? তোর অনেক টাকা আছে তাই না সেই টাকার অহংকার দেখাস?
কিন্তু শুনে রাখ তোর এই টাকার কোনো মূল্য নেই আমার কাছে
আমি কখনোই টাকার জন্য জব করিনি
মামু আর নাহিড আমাকে অনেক ভালোবাসে কখনো আমাকে মা বাবার অভাব বুঝতে দেয়নি কিন্তু আমি সবসময় নিজের দায়িত্ব নিজেই উঠতে চেয়েছি তাই আমি জব করেছি
রশ্নি এক দমে কথা গুলো বলে ইয়াশের কলার ছেড়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল
ইয়াশ অবাক হয়ে রশ্নির কথা গুলো শুনছিলো
রশ্নি আবার বললো: আমি কালকে সকালে Resignation letter পাঠিয়ে দিব (শান্তি ভাবে বললো)
রশ্নি কথাটা শান্ত ভাবে বললেও ইয়াশের বুকে যেন অনেক বড় একটা পাথর আঘাত করেছে
যেমন কেউ ওর দিকে একটা বড় বরফএর টুকরা ছুড়ে মেরেছে
যেটা খুব শীতল কিন্তু এর আঘাত মারাত্তক
রশ্নি ইয়াশকে পাশ কাটিয়ে সেখান থেকে চলে গেল আর ইয়াশ আটকাতে যেয়েও আটকাতে পারলো না,,,,,
.
চলবে,
#Mr_Devil
#Part_19
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
.
রাত ৩ টা বেজে ১৫ মিনিট
খাটের সাথে হেলান দিয়ে মাটিতে বসে আছে রশ্নি
চোখ গুলো ভীষন ক্লান্ত কিন্তু একটুও ঘুম নেই চোখে
চোখটা বন্ধ করলেই যেন আজকের ঘটনা গুলো বার বার রিপিট হচ্ছে
রাগ,কষ্ট,ঘৃণা এই তিনটা জিনিষ যেন ওকে পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে
বুক ফেটে যাচ্ছে কিন্তু চোখে একটুও পানি নেই যা আছে তা রাগের আগুন
রশ্নি এসব ভাবছিল হঠাৎ দরজায় কে যেন নক করলো
— খোলা আছে (গম্ভীর কণ্ঠে)
রশ্নির কন্ঠস্বর শুনে দরজার ওপাশের লোকটা ভিতরে প্রবেশ করলো
লাইট অন করে রুমটা দেখে পুরো অবাক প্রায়
সবসময় সুন্দর করে গুছিয়ে থাকা রুমটার আজ এই অবস্থা
রশ্নি সবসময় রুমটা পরিষ্কার পরিছন্ন করে গুছিয়ে রাখতো আর আজ?
রুমের সব জিনিষ পত্র গুলোকে খুব নির্মম ভাবে ভাঙচুর করে রাখা হয়েছে সেটা বুঝাই যাচ্ছে
আর রুমের এক কোনায় পরে আছে ইয়াশের দেওয়া ওই গ্রে কালারের গাউনটা
গাউনটাকে খুব বিশ্রী ভাবে ছিড়ে ফেলে রাখা হয়েছে
এগুলা ভাবতে ভাবতে লোকটার চোখ গেল রশ্নির দিকে
এক হাটু ভাঁজ করে তার উপর হাত রেখে চোখ মুখ শক্ত করে বসে আছে রশ্নি
এক ধ্যানে পায়ের দিকে গম্ভীর মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে
আজকের ঘটনাটা যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না ও
লোকটা গিয়ে রশ্নির পাশে বসলো
রশ্নি মুখ তুলে দেখলো নাহিদ এসেছে হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে
নাহিদ: কিছু খাওনি তাই না,,,
রশ্নি:,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
নাহিদ: খেয়ে নাও,,,
রশ্নি:,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
নাহিদ: আমি কিছু বলছি,,,,
রশ্নি তখনো চুপ,,,,
নাহিদ: এখন কি আমার সাথে কথাও বলবে না?
রশ্নি: খাওয়ার মুড নেই,,,
নাহিদ: কেন নেই? ওহ বুঝেছি তুমি চাইছো যেন আমি না খেয়ে থাকি তাইতো?
নাহিদের কথায় রশ্নি জিজ্ঞেসু দৃষ্টিতে নাহিদের দিকে তাকায়
নাহিদ হালকা হেসে বললো: তুমি জানো না তুমি না খেলে যে আমিও খেতে পারি না?
নাহিদের কথায় রশ্নির কিছুটা অবাক লাগল এত কিছুর পরও কিভাবে নাহিদ এতটা স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে
নাহিদ: কি হলো এভাবে কি দেখছো?
রশ্নি: কিভাবে পারো নাহিদ?
নাহিদ: হয়তো ভালোবাসি বলে,,,
রশ্নি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না নাহিদকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো
রশ্নি: বিস্বাস করো নাহিদ আমার ওই লোকটার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই (কাঁদতে কাঁদতে)
তারপর রশ্নি নাহিদকে অফিসের প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব কিছু বললো
রশ্নির কথা শুনে নাহিদ যেন অনেক বড় সর একটা ঝাটকা খেলো
নাহিদ: কত বড় শয়তান লোকটা কিন্তু তোমার সাথে এত কিছু হয়ে গেল কিন্ত তুমি আমাদের কিছু জানাওনি কেন
রশ্নি:,,,,,,,,,,,,,,,
নাহিদ: তুমি আর ওই লোকটার অফিসে কাজ করবে না
রশ্নি: হুম আমি কাল সকালেই Resignation letter পাঠিয়ে দিব
নাহিদ: হুম এবার খেয়ে নাও
রশ্নি: হুম
রশ্নিকে খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিল নাহিদ তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে গেল
…
পরেরদিন অফিসে ইয়াশের ক্যাবিনা
◆———————–★———————–◆
ইয়াশ চোখ বন্ধ করে কপালে হাত রেখে চেয়ারে বসে আছে
আজ অফিসে এসে ইয়াশ নিজেই রশ্নির খোঁজ করেছিল কিন্তু কোথাও পায়নি
কালকের ঘটনার পর রশ্নির না আসাটাই স্বাভাবিক
ইয়াশ এসব ভাবছিল তখনই ওর ক্যাবিনের গেটএ কে যেন নক করলো
আনএক্সপেক্টেড হলেও ইয়াশ মনে করল রশ্নি এসেছে
কিন্তু ওর ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে দিয়ে ভিতরে রফিক(অফিস বয়) প্রবেশ করলো
রফিক এসে জানালো ইয়াশের জন্য একটা চিঠি আছে
ইয়াশ চিঠিটা রেখে যেতে বলায় রফিক সেটা রেখে চলে গেল
ইয়াশ দেখলো চিঠিটা রশ্নি পাঠিয়েছে
খুলে দেখে সেটা একটা পদত্যাগ পত্র
ইয়াশ কিছুক্ষন লেটারটার দিকে তাকিয়ে বাঁকা একটা হাসি দিল
■ —— সন্ধ্যায় —— ■
রশ্নি চিপস খাচ্ছে আর টিভি দেখছিল
তখনই কলিং বেল বেজে উঠলো
রশ্নি ভাবছে গেইট খুলবে কি খুলবে না কারন ও পুরো বাড়িতে একা
মামা আর নাহিদ বিজনেসের কাজে দেশের বাহিরে গিয়েছে এক মাসের জন্য আর মামীও মামার সাথে ঝগড়া করে তার মার বাসায় চলে গিয়েছেন
রশ্নি সাহস জোগাড় করে গেল দরজা খুলতে
দরজা খুলে দেখে একটা পোস্ট ম্যান এসেছে
পোস্ট ম্যান: মিস রশ্নি এনায়াত খান কি এই খানে থাকেন?
রশ্নি: জি আমিই রশ্নি এনায়াত খান
পোস্ট ম্যান: আপনার নামে চিঠি এসেছে,,,,এখানে সাইন করে দিন (একটা ফর্ম দিয়ে বলল)
রশ্নি সাইন করে দিয়ে চিঠি টা দেখতে দেখতে
বললো: কিন্তু কে দিয়েছে,,,,,
পরক্ষনেই রশ্নি মুখ উঠিয়ে দেখে লোকটা সেখানে নেই
রশ্নি: পোস্ট ম্যান ছিল নাকি নিনজা হাতরি এত তাড়াতাড়ি গায়েব?
রশ্নি খামটা খুলে দেখলো
মায়াবতী কোম্পানি থেকে এসেছে চিঠিটা
চিঠিটা পরে রশ্নির কপাল যেন চোখে মানে চোখ যেন কপালে
.
চলবে,