Mr_Devil #Part_23,24,25

0
2640

#Mr_Devil
#Part_23,24,25
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_23
.
তানিয়ার ডাকে ইয়াশ ভিতরে গেল
আর যা দেখলো তাতে ইয়াশের মাথা ঘোড়ানো শুরু হয়ে গেছে??

তানিয়া কান্না করছে ওর দুই ঝুটি বাধা চুল গুলো পুরো বিগড়ে আছে হাতে কয়েকটা খামচির দাগ

ইয়াশ দৌড়ে তানিয়ার কাছে গেল

–* কি হয়েছে তোমার এই অবস্থা কেন?

ইয়াশের কথায় তানিয়ার মাথায় যেন আগুন ধরে গেল

তানিয়া– বুঝতে পারছেন না কি হয়েছে??
আপনার বউকে শাড়ি পড়াতে গিয়ে আমার এই হাল

ইয়াশ– মানে???

তানিয়া– মানে ও কিছুতেই শাড়ি পড়তে চাইছিল না তাই যখন ওকে শাড়ি পরাচ্ছিলাম তখন ও আমার দুই ঝুটি ধরে টেনেছে তারপর আমাকে খামছিও দিয়েছে??

ইয়াশের হাসিও পাচ্ছে আবার তানিয়ার অবস্থ্যা দেখে খারাপও লাগছে

— সরি তানু আসলে,,,

–আমার বফকে বললে আপনাদের আর রক্ষে থাকবে না,শুধু আমার বাপির মেহমান বলে বেঁচে গেলেন,,হুহ যেমন জামাই তেমন বউ??

তানিয়া ঝাড়ি দিয়ে চলে গেল আর ইয়াশ?

ও তো–?????

হাসতে হাসতে ইয়াশের চোখ গেল রশ্নির দিকে,,

ও এক সাইডে গাল ফুলিয়ে বসে আছে,,,

পরনে ওই সাদা শাড়ি টা
সবই ঠিক ছিল শুধু কুচি দেওয়া নেই শাড়িতে?
শুধু পেঁচিয়ে রাখা হয়েছে

পরের দিন সকালে,,,,,

সকালে উঠেই রশ্নির মাথাটা যেন হ্যাং মারছে

মাথা চুলকাতে চুলকাতে সামনে তাকিয়ে দেখল ইয়াশ বাহিরের দিকে মুখ করার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,
চারপাশে তাকিয়ে দেখল
সম্পুর্ন অচেনা একটা স্থান

আস্তে আস্তে কালকের সব ঘটনা গুলো মনে পড়তে শুরু করলো

মর্নিং,,,,,,,

বলে ইয়াশ এসে রশ্নির পাশে বসলো

রশ্নি– আমরা এখন কোথায় আছি? এটা কোন জায়গা? (ঘুম ঘুম কণ্ঠে)

ইয়াশ– এটা হাসান সাহেবের বাড়ি,,কালকে ঝড় হওয়াতে তিনি আমাদের তার বাড়িতে আশ্রয় দেন

রশ্নি– ওহ,,,
তারপই ওর চোখ গেল ইয়াশের আর নিজের দিকে

রশ্নি– এটা কার শাড়ি? আর আমাকেই বা কে পরিয়ে দিলো

ইয়াশ– কাম ডাউন,,সব বলছি

তারপর ইয়াশ ওকে কালকের ঘটে যাওয়া সব বললো সাথে তানিয়ার কথাও,,,,,

রশ্নি– ইশ রে,,বেচারির সাথে কি জুলুমটাই না করলাম?

ইয়াশ– হুম,,,,

ইয়াশকে সাদা পাঞ্জাবিতে অনেক হট থুক্কু সহজ সরল ভদ্র লাগছে?
রশ্নির চোখ যেন ওর উপরই আটকে গেলো

ইয়াশ– লজ্জা শুধু আপনার না আমারও আছে সো প্লিজ এভাবে দেখবেন না

ইয়াশের কথায় রশ্নি খুব লজ্জা পেল
ঠিকই তো কেমন নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে ছিল

–*উঠেছেন তাহলে আপনি*,,,,,,

কারো কন্ঠ শুনে ইয়াশ আর রশ্নি দরজার দিকে তাকালো

তানিয়া দুই হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে
দেখেই বোঝা যাচ্ছে রশ্নির উপর থেকে রাগ এখনো কমে নি

ইয়াশ– রশ্নি,,এটাই হলো ওই তানু,,

তানিয়া– এক্সসিউজ মি??
ইটস তানিয়া নট তানু,,সো কল্ড মি তানিয়া?

রশ্নি ইয়াশের রিয়েকশন দেখে মুখ টিপেটিপে হাসছে

তানিয়া– এন্ড ইউ,,,,(রশ্নিকে উদ্দেশ্য করে)
তুমি জানো কালকে তুমি আমার কি অবস্থা করে ছিলে?

রশ্নি– হুম শুনেছি,,,এন্ড আই এম রিয়েলি শেইমফুল ফর মাই বিহেইভিয়ার,,,সরি?

তানিয়া– ইয়াহ ইটস ওকে?

সন্ধ্যার সময়,,,,,,,,,,,,

রশ্নি আর ইয়াশ এখন বেরিয়ে পড়েছে বাসার উদ্দেশ্যে ওদের গাড়িও এখন ঠিক আছে

হাসান সাহেব– আপনাদের সাথে পরিচিত হয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো,,,যদি আবার কখনো এই গ্রামে আসেন তাহলে আমাদের বাসায় অবশ্যই আসবেন

ইয়াশ– আমাদেরও খুব ভালো লেগেছে আপনাদের সাথে পরিচিত হয়ে আর বেশি ভালো লেগেছে এই টর্নেডোর সাথে দেখা করে

তানিয়া মুখ ভেংচি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
ইয়াশ ওকে খেপানোর জন্য ওর গাল টা টেনে দিলো,,,

–*ইউউউ,,,,,???

ইয়াশ–???

আচ্ছা আসি ভালো থাকবেন আপনারা এন্ড ওয়ান্স এগেইন,,থ্যাংকিউ,,,

রশ্নি– বায় ছুটকি,,,,??

তানিয়া– হুহ?

ইয়াশ আর রশ্নি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল

.
ইন দা কার,,,

রশ্নি– পিচ্চিটা পুরাই এটম বম ছিল তাই না??

ইয়াশ– হুম,,,, তোমার থেকে বেশি না (বিড়বিড় করে)

রশ্নি– কিছু বললেন?

ইয়াশ– না বললাম পুরাই বিচ্ছু ছিল

রশ্নি– হুম,,,,

.

কেটে গেছে অনেক দিন,,,,ইয়াশ আর রশ্নির সম্পর্কটাও আরো ভালো হয়েছে,,,,

একদিন রশ্নির কথা কাটাকাটি হয়েছিল ইয়াশের

সেদিন বাসায় গিয়ে ফোন চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিল রশ্নি আর বেশি চার্জও ছিল না তাই কিছুক্ষন পরই ফোনটা সুইচড অফ হয়ে যায়

ইয়াশ অনেকবার কল দিয়েছিল কিন্তু ফোন বন্ধ হওয়াতে রশ্নি ধরতে পারেনি আর ইয়াশ খুব পেয়ে গিয়েছিল কজ, ওই কয়েকদিনের মধ্যে ইয়াশ ওভার পসেসিভ হয়ে পড়েছিল রশ্নিকে নিয়ে

তাই ও এর বেশি কিছু না ভেবে বৃষ্টির মধ্যেই এসে রশ্নির বাসার বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিল

রশ্নিকে অনেকবার ডেকেও ছিল কিন্তু ও শুনতে পায়নি
তাই ও বাহিরে ওভাবেই ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল

বৃষ্টির দিনে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাবে বলে বারান্দায় গিয়ে নীচে ইয়াশের এই অবস্থা দেখতে পায় রশ্নি

বাড়িতে কেউ ছিল না তাই তাড়াতাড়ি ওকে ভিতরে এনে মুছিয়ে দেয় রশ্নি

.
আরো অনেক পাগলামি করেছে ইয়াশ রশ্নির জন্য
এই কয়েকদিনে অনেক সুন্দর সুন্দর সময় একসাথে কাটিয়েছে ওরা,,,,
.

রকিং সিচেয়ারে বসে থুতনিতে হাত রেখে এসব আওড়াচ্ছিলো ইয়াশ
ভাবতেই তার মুখের কোনে হাসি ফুটে উঠে,,,,,,,,,,

কিন্তু পরক্ষনেই তা নিমিষে গায়েব হয়ে যায়,,,,,,,

তার নিজের উপর প্রচুর রাগ হচ্ছে
চোখ গুলো লাল হয়ে আসছে
নিজের কাছে নিজেকে অসহ্য মনে হচ্ছে,,,,,

.

চলবে,

#Mr_Devil
#Part_24
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)

.

কিন্তু পরক্ষনেই ইয়াশের হাসি নিমিষে গায়েব হয়ে যায়,,,,,,,

টসর নিজের উপর প্রচুর রাগ লাগছে
চোখ গুলো লাল হয়ে আসছে
নিজের কাছে নিজেকে অসহ্য মনে হচ্ছে,,,,,

ওহ নো,,,,আমি কি ভাবছি এসব?
না কিছুতেই ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়লে চলবে না
ওর আমার প্রতি দুর্বল হতে হবে
নাহলে আমার এত দিনের করা সব মেহেনত বেকার যাবে
নিজের উদ্দেশ্যটা ভুলে গেলে চলবে না,,

হুহ এই কয়েকদিনে অনেকটা উইক হয়ে পড়েছে আমার প্রতি
সো ইটস এ পারফেক্ট টাইম টু টেক একশন (বাঁকা হেসে)

মেয়ে তুমি বড়ই বোকা
ভাবলেও কি করে সেই এতকিছুর পরও তোমাকে আমি এভাবেই ছেড়ে দিব?
হুহ কখনো না

তারপর ইয়াশ ওর ফোন বের করে একজনকে কল লাগিয়ে মোবাইল কানের কাছে ধরলো

.
–হুম তুমি সব এরেঞ্জ করো,,,

–,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

–হ্যা আমি আজকের মধ্যেই সব সেরে ফেলতে চাই

–,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

–আজকের টা তুমি দেখে নিও কালকে আমি চেক মেইট করবো (বাঁকা হেসে)

কিছুক্ষন কথা বলে ইয়াশ ফোনটা রেখে দিল

.
এবার বুঝবে ইয়াশ আহমেদ এর সাথে পাঙ্গা নেওয়ার ফল কি হতে পারে
বলেই ইয়াশ আবার হাসতে লাগলো

.

★—At the office—★
.
রশ্নি আনমনা হয়ে যেতে অফিসে ঢুকছে
সবকিছু কালারফুল লাগছে
সবার মধ্যে ইয়াশকে দেখছে
মনে হচ্ছে চারদিকে যেন মিউজিক বাজছে

–ওই মাইয়া ওই?

হঠাৎ কারো চিল্লানিতে রশ্নির ধ্যান ভাঙলো
সামনে তাকিয়ে দেখে সানা রেগে দাঁড়িয়ে,,,

রশ্নি– কিচ্ছে তোর??

সানা– আমার কিছু হয় নাই স্যারের হইছে?

রশ্নি–মানে কি? স্যারের কি হয়েছে? উনি ঠিক আছেন তো? কোথায় উনি

সানা– খাড়া মাম্মা,,,তুই এত হাইপার হইতাছস কেন স্যারের জন্য?

রশ্নি– উফফ তুই এত ফালতু কোয়েশ্চেন না করে বল স্যার কোথায়

সানা– ধুর স্যারের কিছু হয় নাই সে সবাইকে তার ক্যাবিনে ডাকছে

সানার কথায় রশ্নি একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো

রশ্নি– হুহ ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি,,,,

বলেই রশ্নি সেখান থেকে চলে গেল

সানা– হুমম,,,দাল মে কুছ কালা হ্যা ইয়া তো পুরি দাল হি কালি হ্যা ???

ইয়াশের ক্যাবিনে—

সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইয়াশ বলা শুরু করলো

–* আগামীকাল আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ডের বার্থ ডে তাই আমি তার জন্য একটা পার্টির ব্যবস্থা করেছি আর আগের বার আমাদের পার্টিতে কিছু সমস্যা হওয়ার কারনে সেটা যেহেতু স্পইল হয়ে যায় তাই ওই পার্টিটাতে আমি আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রিত করছি আর আমি আশা করছি আপনারা সেটা খুব ইনজয় করবেন

রশ্নি– স্যারের আবার কোন বেস্ট ফ্রেন্ড রে?
সানা– আরেহ সেহেরের কথা বলছে
রশ্নি– মানে কি?
সানা– মানে সেহের নাকি আমাদের স্যারের বেস্ট ফ্রেন্ড ঐই আমাকে বলেছে,,,আর আমাদের আগের বারের পার্টিটাতেও ও এসেছিল
রশ্নি– ওহ

ইয়াশের কথা শুনে সবাই বেশ খুশি হলো ইয়াশের কথা শুনে

সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর রশ্নি আর ইয়াশের চোখাচোখি হলো
রশ্নি ইয়াশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লো

ইয়াশ– বেচারি (বাঁকা হেসে)

.
●◆■।।।পরের দিন পার্টিতে।।।■◆●

আজ ইয়াশকে চোখ ধাঁধানো সুন্দর লাগছে
সব গুলো মেয়ে হা করে ওকে দেখছে

আর এদিকে ইয়াশ ব্যাস্ত রশ্নিকে দেখতে

সানা আর রশ্নি একসাথে বসে কি নিয়ে যেন ঝগড়া করছে
.

রশ্নি– দেখ বইন যাই ক কিন্তু জিতবো তো আমার লাল পিঁপড়াই
সানা– স্বপ্ন দেখা ভালো কিন্তু ঘুমের মধ্যে?
রশ্নি– তুই আমারে চ্যালেঞ্জ করতাসস?
সানা– হ,,,দেখিস জিতবো আমার কালো পিঁপড়াই?
রশ্নি– ঠিকাছে তাহলে বল লাগলো পাঁচ টাকার বাজি?
সানা– পাঁচ টাকা দিতে হইবো??
ঐটা দিয়া তো দশ দশ টা হাজমলা পাওয়া যায় আর আমি ঐটা তোরে দিয়া দিমু??
রশ্নি– কিপ্টামি ছাড় নাইলে কপালে জামাই নাই?
সানা–ওকে লাগলো পাঁচ টাকার বাজি?

তখনই পিছন থেকে সেহের বলে
উঠলো– লাইক সিরিয়াসলি তোমরা পিপরাদের নিয়েও রেস খেলা শুরু করে দিয়েছো???

ওরা পিছনে ঘুরে দেখলো ইয়াশ সেহেরের কাঁদে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে
দুজনেই বত্রিশ দাঁত বের করে হাসছে?

রশ্নি– তো কি করবো?? টাইমপাস করার জন্য কিছু পাচ্ছিলাম না তাই আর কি?

সেহের– হ্যা বুঝেছি,,?

কিছুক্ষন পর ইয়াশ গিয়ে স্টেজে সেহেরকে ডেকে উইশ করলো

সেহের ওর স্পিচ দেওয়া শেষে সানাকে স্টেজে ডাকলো

রশ্নি– যাও যাও মাম্মা,,,স্টেজ থেকে তোমার সুখের দিন তোমারে ডাকতেছে
সানা– আমার প্রসুর শরম করতাছে?
রশ্নি– যা তো বা*ডা?

রশ্নি ধাক্কা দিয়ে সানাকে পাঠিয়ে দিলো
সানা একবার রশ্নির দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে তারপর নরমাল থাকার ভান করে স্টেজে যায়

সেহের এক হাটু গেড়ে বসে সানাকে সবার সামনে রিং দিয়ে প্রপোজ করে

যা দেখে সানা বি লাইক ???

সবাই একসাথে চিল্লাছে
সবার একই স্লোগান “সে ইয়েস সে ইয়েস”

— ইয়েস?

বলার সাথে সাথে সবাই হাত তালি দিয়ে উঠে

আর উপর থেকে ছোট ছোট কালারফুল পেপার,স্ট্রিমার্স,চমকি পড়তে থাকে

সেহের সানাকে রিং টা পরিয়ে দিলো তারপর ওর হাতে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো

সবাই যে যার মত ইনজয় করছে
কেও খাচ্ছে তো কেউ নাচ্ছে

কিন্তু রশ্নি তো রশ্নিই এক কোনায় বসে সবাইকে দেখছে
তখন সবার মাঝ থেকে ইয়াশ এসে রশ্নির পাশের একটা টুলে বসলো

ইয়াশ– একা বসে আছো যে?
রশ্নি– এমনি ভালো লাগছে না তাই
ইয়াশ– ওহ আচ্ছা
রশ্নি– হুম
ইয়াশ– উম,,উড ইউ লাইক টু হ্যাভ জুস?
রশ্নি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো

ইয়াশ গিয়ে রশ্নি আর ওর জন্য জুস নিয়ে এলো
একটা গ্লাস নিজের জন্য রাখলো আর আরেকটা রশ্নির সামনে ধরলো

রশ্নি কয়েক চুমুকে জুসটা শেষ করলো
আর ইয়াশ একটা সিপ নিয়ে গ্লাসটাকে হাতে নিয়ে ঘোরাতে লাগলো

জুসটা খাওয়ার কিছুক্ষন পর রশ্নির মাথাটা যেন কেমন ভ ভ করছে
ও মাথায় হাত দিয়ে সেটা বুঝার চেষ্টা করছে

কিন্তু ইয়াশের তাতে কোনো মাথা ব্যথা নেই
ও বাঁকা হেসে রশ্নির দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে

রশ্নির চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে আসছে

রশ্নি ওর পাশের টেবিল টা ধরে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু বারবার বিফলে যাচ্ছে
কোনোমতে উঠে ঢোলতে ঢোলতে ওয়াশ রুমের দিকে যাচ্ছিল মুখে মাথায় পানি দেওয়ার জন্য
কিন্তু তা আর হলো না
অর্ধেকটা পথ গিয়েই কারো বুকের উপর মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো
আর লোকটা হলো ইয়াশ

ইয়াশ রশ্নিকে ওর বুকে মাঝে জড়িয়ে নিলো
ওর মুখের ভাবটা এমন
যেন যা হচ্ছে তা স্বাভাবিক
এটা যেন হওয়ারই ছিল

যেখানে পার্টিটা হচ্ছিল সেই হোটেলেরই একটা রুমে ইয়াশ রশ্নিকে নিয়ে গেল

দরজা লক করে রশনিকে বিছানায় ফেলে দিলো

রশ্নি কিছু বুঝতে পারছে না ওর সাথে কি ঘটছে
চারদিকটা শুধু ঘোলাটে লাগছে

অস্পষ্ট ভাবে দেখতে পাচ্ছে
একটা লোক তার সামনে
সে তার গা থেকে ব্লেজারটা খুলে ফেলে দিলো তারপর শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করলো

সব না বুঝতে পারলো এইটুকু ঠিকই বুঝতে পারছে যে ওর সাথে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে

ওর কানে লোকটার বলা কিছু কথা ভেসে আসলো

–এবার তোমাকে কে বাঁচাবে জান? (বাঁকা হেসে)

ইয়াশ ওর শার্টটা মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আস্তে আস্তে রশ্নির দিকে এগোতে শুরু করলো

.

চলবে,

আপনাদের কি মনে হয় রশ্নি কি এবার বাঁচতে পারবে ইয়াশের হাত থেকে?

#Mr_Devil
#Part_25
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)

.

সকাল ১০:৪৪

নরম তুলতুলে মাস্টার বেডের উপর উপুত হয়ে শুয়ে আছে দা বিযনেস টাইকুন ইয়াশ আহমেদ

চোখ মিটমিট করে খুলছে
সম্পুর্ন ভাবে খুলতে পারছে না মাথায় অসহ্য যন্ত্রনা হওয়ার কারণে

খুব কষ্ট করে আস্তে আস্তে মাথা ধরে উঠে বসলো

মাথাটা পুরো ভনভন করছে

চারপাশে তাকিয়ে সবটা বুঝার চেষ্টা করছে
তারপর নিজের দিকে তাকালো
শরীরে কোনো কাপড় নেই শুধু একটা সাদা চাদর দেখেই ভ্রু কুচকালো ইয়াশ

কিছুক্ষন পর কালকে রাতের ঘটনা মনে পড়লো
মনে পড়তেই ধরফরিয়ে বিছানার অন্য পাশটায় তাকালো

কিন্তু না এখানে রশ্নি নেই

তাহলে কোথায় ও?

ইয়াশ মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে
কালকে রাতের সব ঘটনা মনে করার চেষ্টা করছে
ও রশ্নির গা থেকে ওড়না টা নিয়ে ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিলো
তারপর রশ্নির দিকে এক পা দু পা করে এগোতে লাগলো

এইটুকুই মনে আছে তার এর পর কি হয়েছিল কিছু মনে পড়ছে না

হ্যা সেও হালকা ড্রিঙ্কস করেছিল কিন্তু ততটা, যতটা দ্বারা নিজেকে প্রপার্লি কন্ট্রোল করা যায়

তাহলে তার কিছু মনে পড়ছে না কেন?

এসব ভাবতে ভাবতে তার কানে কারো কান্নার আওয়াজ আসে

ইয়াশ দেখলো নীচে বসে একটা মেয়ে দুই হাঁটুতে মুখ গুজে কাঁদছে
মেয়েটার শরীর শুধু বেড শিট দিয়ে ঢাকা

ইয়াশ বুঝতে পারলো মেয়েটা রশ্নি আর ওর কাদার কারনটাও আন্দাজ করতে পারলো

ওর না মনে থাকলেও কিছু না ঘটলে তো আর রশ্নি শুধু শুধু কাঁদছে না

ইয়াশের মুখে বিজয়ের হাসি ফুটে উঠলো

ও গিয়ে রশ্নির পাশে এক হাটু ভাজ করে বসলো
তারপর রশ্নির মুখটা উঁচু করে ওর সামনে ধরলো

তারপর নিজের অন্য হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে রশ্নির মুখে স্লাইড করতে করতে
বললো– কাঁদছো যে? এটা তো হওয়ারই ছিল
দেখো, এখন তুমি যদি ইয়াশ আহমেদকে থাপ্পড় মেরে বসে ভাবো যে তুমি এমনি এমনিই বেঁচে গেছো তাহলে তো সেটা তোমার বোকামি আমার কিছু না,, তাই না?

কিছুক্ষন থেমে আবার বলা শুরু করলো,,,,

মনে আছে একদিন তোমাকে দিয়ে কিছু পেপারে সাইন করিয়েছিলাম?
যা তুমি না দেখেই সাইন করে দিয়েছিলে
সেটার লাস্ট পেজের আগের পেজেই ছিল পাঁচ বছরের ডিলারশিপের কন্ট্রাক্ট পেপার

আচ্ছা ওসব ছাড়ো কখনো ভেবে দেখেছো
তুমি যেদিন পার্টির পরের দিন আমার ক্যাবিনে এসে পেপারগুলোর কথা জিজ্ঞেস করছিলে তখন আমি কোনো রিয়েক্ট না করেই কেন স্বাভাবিক ভাবেই তোমার কথা মেনে নিলাম?

চলো তোমাকে বলি তাহলে

একটা কথা কি জানো তো?
কোনো মানুষের শরীরে শত আঘাত করলেও মানুষটা ততটা যন্ত্রনা অনুভব করে না যতটা করে তার হৃদয় আঘাত করলে
সো হোয়াট আই হ্যাভ ডান (শয়তানি হাসি দিয়ে)

রশ্নি– একটা থাপ্পড়ের জন্য এগুলো সব করলেন (শান্ত ভাবে)

ইয়াশ– জেদ হুম জেদ,,, জেদই বলতে পারো
জানো তো,,ছোট থেকেই যেই জিনিষটার উপর আমার নজর পরে সেটা যে কোনো মূল্যে আমি নিজের করেই ছাড়ি আর সেখানে তো তোমার মতো একটা মেয়ে (কিছুক্ষন থেমে আবার বললো) জাস্ট নাথিং ফর মি

রশ্নি– আপনি কি ভেবেছেন? এত কিছু করে আপনি পার পেয়ে যাবেন? কখনো না!!
কথায় বলে না “Karma is a bitch”
আপনিও আপনার প্রতিফল ঠিক পাবেন

রশ্নির কথা শুনে ইয়াশ এমন রিয়েকশন দিলো যেন রশ্নি মাত্র কোনো জোক বললো

ইয়াশ– ওহ রিয়েলি??
তা কি করবে শুনি? রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাতে প্লে কার্ড নিয়ে আন্দোলন করবে আমার বিরুদ্ধে? নাকি নিজের নায়ক নাহিদকে বলবে এসে আমাকে মারতে?
শুনো তোমার নায়ক নাহিদ যদি জানতে পারে যে তুমি অন্য একটা পুরুষের সাথে রাত কাটিয়ে এসেছ তাহলে ও ফিরেও তাকাবে না তোমার দিকে
আর শুধু ও কেন গোটা সমাজ তোমার উপর থু থু দিবে

ইয়াশ এতক্ষন কথা গুলো ব্যাঙ্গ করে বললেও এখন মুখে সিরিয়াস ভাব এনে রশ্নির চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে
বললো– তোর সাহস কিভাবে হয় রে আমার সামনে এই অবস্থায় থেকে উঁচু গলায় কথা বলিস

তুই,তোর মিডেল ক্লাস মামা আর তোর ওই মিডল ক্লাস নাগর তোদের পুরো মিডেল ক্লাস ফ্যামিলিটা আমার চুলটাও বাঁকা করতে পারবে না মাইন্ড ইট

বলেই রশ্নিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল তারপর নিচের থেকে শার্টটা তুলে গায় জড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল



◆—————◆
৭ পর দিন
◆—————◆

এই এক সপ্তাহে ইয়াশ একদিনও অফিসে যায়নি কেন তা নিজেও জানে না?

ইয়াশ মুখের উপর হাত রেখে বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে

কখন থেকে ফোন টা বেজেই চলেছে কিন্তু ধরার কোনো ইচ্ছা বা মুড কোনোটাই নেই

বার বার বাজতে বাজতে আপনে ইচ্ছায় কেটে যাচ্ছে

আরো কয়েকবার কল আসায় ইয়াশ বিরক্ত নিয়েই গেল কল টা রিসিভ করতে

দেখে তার ম্যানেজার মিস্টার হাতিমের কল

ইয়াশ কল রিসিভ করে কানের কাছে রাখলো

ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে ইয়াশ কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওপাশ থেকে ম্যানেজার বলে
উঠলো– স্যার প্লিজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অফিসে আসুন!!!

ইয়াশ– কেন? কি হয়েছে?

–* স্যার দেখুন এই মুহূর্তে আমি কিছু বলতে পারছি না!! কিন্তু আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখানে আসুন

বলেই ফোনটা কেটে দিলো

না কোনো বড় ধরনের সমস্যা না হলে এভাবে ডাকতো না,,,,কিন্তু এমন ঘটতে পারে যার জন্য অফিস থেকে এভাবে আর্জেন্ট ডাকা হলো,,,রশ্নি কিছু করলো না তো? না না ওর সাথে যা হয়েছে তারপর তো আর মনে হয় না অফিসে এক কদমও রাখবে,,

ইয়াশ আর বেশি কিছু না ভেবে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল উদ্দেশ্য অফিস!!!

ইয়াশ অফিসে পৌঁছে দেখলো ওর অফিসের বাহিরে পুলিশের একটা গাড়ি আর তার সামনে কয়েকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে
ইয়াশ আর সময় নষ্ট না করে অফিসের ভিতরে চলে গেল

আর ভিতরে যেতেই কয়েকজন পুলিশ ওকে ঘিরে ধরলো
–* ইউ আর আন্ডার এরেস্ট মিস্টার চৌধুরী,,,

এইসব দেখে ইয়াশের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল

ইয়াশ– মানে? আন্ডার এরেস্ট? মানে কি এসবের?

–* মানে খুব ক্লিয়ার আমরা আপনাকে ধর্ষণের দায় গ্রেপ্তার করছি

ইয়াশ– হোয়াট?(চেচিয়ে)
আর ইউ গাইজ আর কিডিং উইদ মি?

–* আমরা এখানে আপনার সাথে মজা করতে আসিনি

ইয়াশ– তো কিসব আলতু ফালতু কথা বলছেন? আপনি বলছেন যে আমি মানে দা বিজনেস টাইকুন ইয়াশ আহমেদ ইজ আ রেপিস্ট?
লাইক সিরিয়াসলি?

–* দেখুন আমরা এখানে নিজেদের টাইম ওয়েস্ট করতে আসিনি,,আমাদের কাছে আপনার নামে কমপ্লেইন এসেছে তাই আমরা,,,,,

কথা শেষ হওয়ার আগেই ইয়াশ তাকে থামিয়ে দিয়ে
বললো– কম্পলেইন এসেছে? তাও আবার আমার নামে? কে করেছে?

ইয়াশের কথায় পুলিশটা একজন মহিলা কর্মকর্তাকে ইশারা করে সে গিয়ে অন্য একটা রুমে গিয়ে একটা মেয়েকে নিয়ে এলো

পুলিশটা রশ্নিকে দেখিয়ে বললো– ইনি!!!

রশ্নিকে দেখতে খুব রোগা লাগছে
মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে,,গালে,ঘাড়ে, হাতে আর বিভিন্ন জাগায় দাগ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে

ইয়াশকে দেখা মাত্র রশ্নি যেন আটকে উঠলো
ও গিয়ে মহিলা কর্মচারীটার পিছনে লুকিয়ে গেল
সে রশ্নিকে কোনোমতে সামলে নিলো কিন্তু ওর কান্না কোমল না ও ভ্যা ভ্যা করে কেঁদেই চলেছে

এতক্ষন ইয়াশ রশ্নিকে দেখছিল কিন্তু হঠাৎ ওর এমন বিহেভিয়ারে ওর ঘোর কাটলো

পুলিস রশ্নিকে জিজ্ঞেস করলো ইয়াশই সেই লোকটাই নাকি যার বিরুদ্ধে ওর অভিযোগ,,,
রশ্নি মাথা নেড়ে হ্যাঁ জবাব দিলো

ইয়াশ রশ্নির দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিল তারপর পুলিশকে উদ্দেশ্য করে রশ্নির দিকে তাকিয়ে বলল

— আপনাদের কথা মতে আমি ওকে রেপ করেছি তাই তো?

ইয়াশ কথায় সবাই একে অন্যের দিকে চাওয়া চাওই করছে,,কি বলতে চায় ইয়াশ?

— আচ্ছা আমিই যে এই কাজটা করেছি তার কোনো প্রপার প্রুফ আছে তো আপনাদের কাছে নাকি এভাবেই মুখ উঠিয়ে এসে পড়েছেন কোনো প্রমাণ ছাড়া আমাকে এরেস্ট করতে?

–** হ্যা উনি তো ঠিকই বলছে,,আপনার কাছে কি ওনার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ আছে? (রশ্নিকে উদ্দেশ্য করে বললো)

— জী আছে,,,,

রশ্নির উত্তর পেয়ে ইয়াশ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো,,কি প্রমান দিবে ও?

এতক্ষণ রশ্নি ভয় পেলেও এখন আর ওর চোখে ভয়ের কোনো ছিটে ফোটাও নেই,,

— আছে প্রমান,,(পুলিশকে বললো)

ইয়াশের হাসি উধাও,,,কিন্তু এবার রশ্নির মুখে সেই বাঁকা হাসি,,,যা শুধু ইয়াশই দেখতো পেলো

রশ্নি আবার আগের মতো সেই করুন ফেইস বানিয়ে পুলিশ অফিসারকে
বলল– স্যার আপনি চাইলে সেদিনের সিসি টিভি ফুটেজ চেক করে দেখতে পারেন,,,,,,

এবার ইয়াশের মাথায় শুধু আকাশ না যেন পুরো বিশ্ব ভ্রম্মান্ড ওর মাথার উপর পড়লো

ও ভাবে নি যে রশ্নি এত্তো দূরের ভাবতে পারবে

পুলিশ অফিসার রশ্নির কথায় যুক্তি খুঁজে পেল তাই সে তার একজন লোককে পাঠালো ওই হোটেলের সে দিন রাতের সিসিটিভি ফুটেজ আনতে


ফুটেজে ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছে ইয়াশ রশ্নির সাথে জোরাজোরি করছে

রশ্নি আবার সেই আগের ন্যাকা কান্না শুরু করলো

আসে পাশের সবাই ওকে সান্তনা দিচ্ছে,,,,,

পুলিশ অফিসার– আপনার কি আর কিছু বলার আছে?

ইয়াশ কিছু বলছে না শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে আছে

তাদেরই একজন এসে ইয়াশের হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দিলো

ইয়াশকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিন্তু ও পিছন থেকে রশ্নির ন্যাকা কান্না শুনতে পাচ্ছে
রশ্নি কাঁদছে আর বলছে– আল্লাহ গো আমার সব কাইরা নিলো গো,,,, আমার সর্বনাশ কইরা দিলো গো,??

আর আসে পাশের মেয়ে গুলার স্পেশালি আন্টি গুলো বিভিন্ন কানাঘুষা করছে

ইয়াশ সব হাত মুঠ করে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে

ইয়াশ একবার পিছে তাকালো
রশ্নি ইয়াশ পিছনে ফেরা দেখে একটা বাঁকা হাসি দিল যা ইয়াশের রাগটাকে আরো কয়েক হাজার গুণ বাড়িয়ে দিল

ইয়াশ একবার রশ্নির দিকে তাকিয়ে তারপর পুলিস জিপে উঠে চলে গেল
.

চলবে,

রশ্নি আফা মনি তো পুরা গেমটাই উল্টাই দিলো?

আজকের পার্টটা পড়ার পর আপনাদের এখন অনুভূতিটা কেমন??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here