Mr_Devil #Part_36,37

0
2084

#Mr_Devil
#Part_36,37
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_36


★—– ৩ দিন পর —–★

সেই কখন থেকে এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছে ইয়াশ আর রশ্নি কিন্তু কোনো রিভিভারের দেখা মিললো না

এদিকে ইয়াশের মাথা প্রচুর গরম হয়ে যাচ্ছে

হঠাৎ রশ্নির চোখে পড়লো একজন ব্লু ড্রেস পড়া ২২-২৩ বছরের একটা ছেলে হাতে একটা প্লে কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে যা তে ইয়াশের নাম লিখা

রশ্নি– স্যার ওই দেখুন,,উনি হয়তো আমাদের রিসিভ করতে এসেছেন

রশ্নির কথায় ইয়াশ লোকটার দিকে তাকালো
আর দেখেই যেন ওর মাথায় আরো আগুন ধরে গেল

কারন ছেলেটা হ‍্যাবলার মতো হাতে প্লে কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, খোঁজা তো দূরের কথা

ইয়াশের মন চাইছে গিয়ে কানের নীচে দুইটা বাজিয়ে দিতে

ইয়াশ আর রশ্নি ছেলেটার কাছে গেল

ছেলেটা ইয়াশকে দেখে বললো
— আর ইউ ইয়াশ আহমেদ চৌ,,,,,

ইয়াশ ছেলেটার কথা শেষ হওয়ার আগেই বললো
— ইয়েস আই এ্যাম,,,

— হাই আমি রীত আপনাদের গাইড এন্ড আমিই আপনাদের রিসিভ করতে এসেছি ?

রশ্নি– আরেহ ওয়াহ আপনি বাংলাও পারেন ?

রীত– জী ম‍্যাম আমি বাঙালি

রশ্নি– ওয়াহ ভাই ওয়াহ
রীত– থ্যাংকস থ্যাংকস ?

রশ্নি ছেলেটার ক‍্যাপ লক্ষ করে দেখল
তা ডোরেমন ডিজাইন এর

রশ্নি– আপনি ডোরেমন দেখেন?
রীত– হ্যা আমার ফেভরেট,, আপনি দেখেন?
রশ্নি– আমিও দেখি বাট আমার সব থেকে বেশি ফেভরেট শিনচ‍্যান
রীত– বাট ডোরেমন বেস্ট
রশ্নি– শিনচ‍্যান বেস্ট
রীত– ডোরেমন বেস্ট
রশ্নি– বললাম না শিনচ‍্যান বেস্ট ?

ইয়াশ এবার রশ্নির দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালো

রশ্নি– ??

ইয়াশ এবার রীতএর দিকে তাকালো
ইয়াশের চাহনি দেখেই ওর কেমন যেন ভয় কাজ করতে লাগলো

রীত চলুন তাহলে এবার হোটেলে যাওয়া যাক

ইয়াশ রীতকে পাস করে রশ্নিকে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসে পড়লো

গাড়ি আপন গতিতে চলছে আর রশ্নি জানালার বাহিরে মুখ বের করে ব্যাংকক শহর টা দেখে নিচ্ছে
জায়গাটার সৌন্দর্য্য মাপা বড় দায়

কিন্তু ইয়াশ ব্যাস্ত রশ্নিকে দেখতে

বাতাসে রশ্নির সব চুল গুলো ওর মুখে উড়ে আসছে যা ওকে আরো পাগল করে দিচ্ছে

কিন্তু ইয়াশের এই প্রশান্তি বেশিক্ষন টিকলো না
আবার রশ্নি আর রীতের বকবকানি শুরু

দুইজনের স্বভাব অনেকটা একই

.

অনেকটা জার্নি করার পর ইয়াশ আর রশ্নি এসে পৌঁছায় hotel Ariyasom villa

চোখ ধাঁধানো সুন্দর হোটেলটা

রীত– পছন্দ হয়েছে ম‍্যাম?
রশ্নি– একটু বেশিই

তারপর রীত ইয়াশকে রুমের চাবি দিয়ে দিল

.

রশ্নি পুরো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে

ইয়াশ– আমার খুব টায়ার্ড লাগছে সো এখন শাওয়ার নিব

রশ্নি– তো আমাকে বলছেন কেন?

রশ্নির কথার প্রতিউত্তরে ইয়াশ একটা বাঁকা হাসি দিল

রশ্নি– নো প্লিইইইইজ?

ইয়াশ কিছু না বলে এসে রশ্নিকে কাঁধে তুলে নিলো

রশ্নি পিছন থেকে ইয়াশের পিঠে কিল ঘুষি খামচি দিয়ে যাচ্ছে বাট নো লাভ ?

ইয়াশ রশ্নিকে ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে দরজাটা ভিতর থেকে লক করে দিল
.
.
(এরপরের টা ওরা দেইখা নিব আপনারা না দেখলেও চলবো হুহ ?)

.

.

★—— বিকালে ——★

রীত এসেছে ইয়াশ আর রশ্নিকে সি বিচে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য

কিন্তু এবার সাথে করে কার না সাইকেল নিয়ে এসেছে

রশ্নি– ??

ইয়াশ– এভাবে তাকানোর কিছু নেই আমি জানি তুমি সাইকেলিং করা পছন্দ করো

রশ্নি– আপনি কিভাবে জানলেন?

ইয়াশ বলতে নিবে তার আগে রশ্নি আবার বললো

— এটা জিজ্ঞেস করবো না,,কারন আমি জানি আপনি উত্তরে বলবেন
এইটুকু ইনফরমেশন জোগাড় করা ইয়াশ আহমেদ এর জন্য কোনো ব্যাপারই নয়?(ইয়াশের মতো ভাব নিয়ে)

ইয়াশ– ugh,,,চলো এবার

রীত,ইয়াশ আর রশ্নি তিনজন তিনটা সাইকেলে ঘুরছে

ইয়াশের চোখ বার বার রশ্নির দিকে আটকে যাচ্ছে

(লেট মি ডিস্ক্রাইব ইউ গাইজ,,হার টুডেস ড্রেস আপ?)

আর্মি প্রিন্টেড জগার্স প্যান্ট,কালো গেঞ্জি,কালো জ্যাকেট,কালো স্নিকার্স,হাতে ব্যাছ
আর ছেড়ে রাখা চুল গুলো বাতাসের সাথে সঙ্গ দিয়ে খেলছে

এমনিতেই লাইটব্রাউন কালার চুল গুলো(Congenital)
তার উপর আবার সূর্যের আলোর মিশ্রনে মিশে আছে

রশ্নি– ইয়াহুউউউউউউ,,,,,,,,

রশ্নির চিৎকারে ইয়াশের ধ্যান ভাঙলো

ইয়াশ– হলি ফাক,,এভাবে কেও চিৎকার করে
(নিজের কানে বাড়ি দিয়ে)

কিছু সময় পর ওরা বিচে গিয়ে পৌছালো

সেখানে পৌঁছানোর সাথে সাথেই রশ্নি সাইকেল রীতের কাছে দিয়ে ভৌ দৌড়
সবখানে ছুটাছুটি করছে

ইয়াশ– এই মেয়েটাকে নিয়ে যে আমি কি করবো?

ইয়াশ পাশে তাকিয়ে দেখে রীতও সেখানে নেই

তারপর লক্ষ করে দেখল
সামনেই রশ্নি আর রীত রেস খেলছে

ইয়াশের মাথা আরো গরম হয়ে গেল
ওর যে রশ্নিকে অন্য কারো সাথে দেখলে সহ্য হয় না
সেখানে ও এখানে ইয়াশের সাথে ঘুরতে এসে অন্য একটা ছেলের সাথে ঘুরছে
আর এই ছেলেটাই বা কেমন
চেনেনা জানেনা, অচেনা একটা মেয়ের সাথে খেলা শুরু করে দিয়েছে
একে কে যে আমাদের গাইড হিসেবে সিলেক্ট করেছে
ওহ হ্যা আমার মমই তো ?

ইয়াশ গিয়ে ওদের সামনে দাঁড়ালো

ইয়াশ– তোমরা তাহলে তোমাদের রেস চালিয়ে যাও আমি নাহয় প্লেনের পিছনে ঝুলে ঝুলে চলে যায়
বাংলাদেশ আসলে লাফ দিবনে ?

রীত– বাট ইটস টু রিস্কি
রশ্নি– হ্যা পরে গেলে হাত পা ছিলে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে?

ইয়াশ– রশ্নি,,,,,,,(চোখ রাঙিয়ে)

রশ্নি– আচ্ছা আচ্ছা,,,,,
কিন্তু আপনি তো প্লেনের ভিতর বসেও যেতে পারেন
রীত– আপনার কথায় লজিক আছে
রশ্নি– আমি কখনো ইললজিকাল কথা বার্তা বলিই না ?
রীত– ওয়াহ ভাই ওয়াহ
রশ্নি– আমার কপি ?

ইয়াশ– রশ্নি,,,,,,,,,,,,(কিছুটা চেচিয়ে)

রশ্নি– আরেহ গলা নাকি মাইক(দুই কানে আঙ্গুল গুঁজে)

ইয়াশ– আমার কিন্তু রা,,,,,

ইয়াশকে থামিয়ে রশ্নি আবার বলতে শুরু করলো
— আচ্ছা শুনুন না ওখানে না একটা কম্পেটিশন হচ্ছে
তাই রীত আর আমি সেটায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি?

এটা শুনে ইয়াশের রাগে যেন মাথায় রক্ত চড়ে গেল

ও টেনে রশ্নিকে নিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ালো

ইয়াশ– দেখো রশ্নি,,এটা কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে
রশ্নি– কি বাড়াবাড়ি হচ্ছে?
ইয়াশ– কি বাড়াবাড়ি হচ্ছে মানে?
তুমি তোমার হাসবেন্ডকে রেখে অন্য একটা ছেলেকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ আর এখন কিনা বলছো তার সাথে কোনো কম্পেটিশনেও নামবে,,কেন আমি কি মরে গেছি নাকি
শুনো রশ্নি আমি চুপ আছি বলে ভেবো না
তুমি যা ইচ্ছে করবে আর আমি কিছু বলবোও না

রশ্নি– আরেহ থামুন থামুন থামুন
আপনি যেমনটা ভাবছেন তেমন কিছু নয়
এই কম্পেটিশনটা ভাই আর বোনদের একসাথে খেলার জন্য
আর আমার কোনো ভাইও নেই তাই রীতকে নিয়ে খেলতে চেয়েছিলাম
আর ওই দেখুন জিতলে আমি ঐ বড় হোয়াইট কিউটু টেডি বিয়ারটা পাবো

ইয়াশ– ভাই বোনদের খেলা?
রশ্নি– জি হ্যা,,আপনি খেলবেন আমার সাথে?

ইয়াশ চোখ রাঙিয়ে রশ্নির দিকে তাকালো

আর রশ্নি মুখ টিপে হাসছে

রশ্নি– তো আমি কম্পেটিশনে পার্টিসিপেট করতে পারি?

ইয়াশ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো

.

রশ্নি– হুহ হুহ হুহ,,,,,,,,,
ইয়াশ– ?
রশ্নি– জালনে ওয়ালে কা মূহ কালা (ভেংচি কেটে)
ইয়াশ– হোয়াট ডু ইউ মিন বাই সে দ‍্যাট?
রশ্নি– দেখুন আমরা পার্টিসিপেট করেছি আর জিতেও গিয়েছি ?
ইয়াশ– সব বাচ্ছাদের মাঝখানে দুটো বুড়ো পার্টিসিপেট করলে জিতবে এটাই স্বাভাবিক ?
রশ্নি– ওহ প্লিজ,,,,আপনার হিংসে হচ্ছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে ??

ইয়াশ লক্ষ্য করলো অনেক্ষন ধরে রীতের ফোন বেজেই চলেছে কিন্তু ও এভয়েড করছে

ইয়াশ– কার কল আসছে আর তুমি রিসিভই বা করছো না কেন?
রীত– না না স্যার কারো না
ইয়াশ– সত্যি টা বললো

ইয়াশের চাপে পড়ে রীত সত্যিটা বলেই দিলো

রীত– আসলে স্যার আমার আম্মুর শরীরটা একটু খারাপ তাই বার বার কল করছে আমাকে বাসায় আসার জন্য

ইয়াশ– তাহলে তুমি রিসিভ করছো না কেন
রীত– এমনি,,,,,,,,
ইয়াশ– তোমার এখন তার পাশে হওয়া উচিত,,
মা বড় দামি জিনিষ একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে পাবে না
মা না থাকার কষ্টটা আমি জানি
হোয়াটেভার এসব কথা বাদ দাও এখন তুমি তোমার মার কাছে যাও

রীত– কিন্তু স্যার,,, আপনারা?

ইয়াশ–আমরা এখানে কিছুখন ঘুরে তারপর হোটেলেই ফিরবো সো তুমি যাও

রীত– থ্যাংকস স্যার,,,,

বলে রীত সেখান থেকে চলে গেল

রশ্নি– আচ্ছা আপনি এটা বললেন কেন যে মা না থাকার কষ্ট টা আমি বুঝি? আপনার তো মা আছে তাহলে?

ইয়াশ– শি ইজ মাই স্টেপমাদার
মিন, দা সেকেন্ড ওয়াইফ অফ মিস্টার ইয়ানাফ আহমেদ চৌধুরী
আমার মা তো আমার বয়স যখন ৮ তখনই মারা যান

ইয়াশের কথায় রশ্নি যেন বড় সর একটা শক খেলো

রশ্নি– সিরিয়াসলি?? কিন্তু তাকে দেখে বুঝাই যায় না
বাকি সব সৎ মা দের মতো না সে
আপনাকে খুব ভালোবাসে

ইয়াশ– হুম,,

রশ্নি– আচ্ছা আরেকটা কথা জিজ্ঞেস করবো বলে ভাবছিলাম
আপনার কি আপনার বাবার সাথে কোনো ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া হয়েছে? মানে আপনাকে কখনো তাকে বাবা বলে ডাকতে দেখিনি,,,,,,,,,

রশ্নির কথায় ইয়াশ অনেকটা ক্ষেপে গেল

ইয়াশ– তুমি আজকাল একটু বেশিই কথা বলছো না?
ঘুরতে এসেছ সো ঘুরো

বলেই রশ্নির হাতটা ধরে ওকে টানতে টানতে সমুদ্রের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো

একটার পর একটা দামি কাছের জিনিষ মাটিতে ছুড়ে ফেলছে নেহা

আজ যেন সব কিছুই ধ্বংস করে দিবে

কাছ ভাঙার শব্দে তাড়াতাড়ি নেহার রুমে গেল নিশা

আর গিয়েই নেহার গালে থাপ্পড় দেওয়ার জন্য হাত উঠলো
কিন্তু তা করার আগেই নেহা ওর হাতটা ধরে ফেলল

— ডোন্ট ড‍্যার টু ডু দিস
বলে নিশার হাতটা ছুড়ে নিজের কাছ থেকে ওকে সরিয়ে দিল

নেহার কাজে নিশার প্রচুর রাগ হলেও নিজেকে কন্ট্রোল করে নিলো
তারপর শান্ত ভাবেই বললো
— এসব কেন করছিস? বাসায় কেউ নেই বলে প্রবলেম হয়েনি কিন্তু যদি রাফি বা মা দেখে ফেলতো তখন কি হতো ভাবতে পারছিস

নেহা– আমি কিছু ভাবতে বা জানতে চাই না (চেচিয়ে)

নিশা– বোন আমার,,বল আমাকে কি হয়েছে

নেহা– আমি না জাস্ট বুঝতে পারছি না তুমি এমন আচরণ করছো কেনো যেন তুমি কিছুই জানো না

নিশা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে

নেহা এবার নিশার কাছে গিয়ে নিশাকে ঝাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো
— আপ্পি তুই তো বলে ছিলি আমাকে আমার ইশু ফিরিয়ে দিবি তাহলে এখন কি হলো

নিশা নেহাকে জড়িয়ে ধরলো তারপর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো
— সবরের ফল মিষ্টি হয়ে কথাটা শুনেছিস তো?
তাহলে এবার একটু দেখেও নে
তোর ইশু তোরই থাকবে প্রমিস

— আহ ইটস নট ফ‍্যার,,আপনি আমাকে পুরো ভিজিয়ে দিলেন কিন্তু নিজে হিরো সেজে আরামসে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,,,

রশ্নির কথা শেষ হওয়ার আগে
পানির আরেকটা ঢেউ এসে ওকে আবারো পুরো ভিজিয়ে দিলো
যার ফলে ওর মুখের উপর সব চুল গুলো স্টিকারের মতো লেগে আছে

ইয়াশ রশ্নির অবস্থা দেখে এবার জোরে জোরেই হেসে দিলো

রশ্নি এবার টেনে ইয়াশকে পানির কিছুটা সামনে নিয়ে দার করলো
পরক্ষনেই আরেকটা ওয়েভ এসে ইয়াশকেও চুবচুবা করে দিলো

ইয়াশ রশ্নির দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো
যা দেখেই রশ্নি দৌড় দিতে নেয় কিন্তু তার আগেই ইয়াশ ওকে পিছন থেকে ধরে ফেলে

— আমাকে ভেজানো,,,এবার দেখাচ্ছি মজা
বলে রশ্নিকে ধরে গোল গোল ঘুরাতে থাকে

আর রশ্নি সেটা খুব ইনজয় করছে,,,
.

আজকের দিনটা খুব সুন্দর করে কাটলো
আসার সময় দুইজন একটা সাইকেলে বসেই আসলো

.

★——-●—–◆{{রাতে}}◆—–●——-★

রশ্নি শাওয়ার নিয়ে চুল মুছতে মুছতে বাথরুম থেকে বের হলো

রাতে গোসল করাটা ওর অভ্যেস

কিন্তু রুমে এসে ইয়াশকে কোথাও দেখতে পেলো না

বিছানার চোখ পড়তেই দেখলো একটা প্যাকেট রাখা
তার সাথে সাইডে একটা ব্ল্যাক কালারের পেপার যার মধ্যে হোয়াইট ইঙ্ক দ্বারা কিছু লিখা

রশ্নি কাগজটার লিখা গুলো পড়া শুরু করলো

(১০ মিনিটের মধ্যে প্যাকেটে থাকা ড্রেসটা পরে রেডি হয়ে হোটেলের নীচে আসো আমি ওয়েট করছি,, এক সেকেন্ডও লেট হলে আমার থেকে খারাপ আর কেও হবে না

— Your Mr_Devil ❤️)

শালা তোর থেকে খারাপ আর কেই বা হইতে পারে?

রশ্নি এবার প্যাকেটটা খুলে দেখলো

একটা ব্ল্যাক কালার স্লিভলেস গাউন
উপরী অংশটা নেটের
এক কথায় সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস

রশ্নি– জান থাকতে পইড়া নেই নাহলে পরে আবার দেখা যাইবো আমারেই জুস বানাইয়া খায়া ফেলবো?

রশ্নি আর সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে হোটেলের নীচে চলে গেল

কিন্তু নীচে এসে ইয়াশকে দেখতে পেলো না

রশ্নি এদিক সেদিক ইয়াশকে খুঁজছিল তখনই হঠাৎ কে যেন এসে পিছন থেকে রশ্নির মুখে রুমাল চেপে ধরলো আর ও ওখানেই বেহুশ



চলবে,

#Mr_Devil
#Part_37
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)



রশ্নির যখন জ্ঞান ফিরল
তখন তাকিয়ে শুধুই অন্ধকার আবিষ্কার করলো

কিন্তু কানে সফ্ট মিউজিক ভেসে আসছে
আর এটা বুঝতে পারলো যে ও একটা চেয়ারের মধ্যে বসে আছে

খুব সাবধানতার সহিত ও উঠে দাঁড়ালো আর এক কদম আগে বাড়ানোর সাথে সাথে কিছু একটায় ওর পায়ের চাপ লেগে কিছুটা জায়গা আলোকিত হয়ে ওঠে

রশ্নি লক্ষ করলো ওর পায়ের নিচে মানে যেটাতে ও পা রেখেছিল
ওটা একটা ছোট পাথর যার গায়ে লিখা
Take 5 steps

রশ্নি খেয়াল করে সেখল
যতটুকু আলো জ্বলেছে তা শুধু চার কদম পর্যন্তই

রশ্নির মাথায় কিছু ঢুকছে না কিন্তু তারপরও ওটা অনুসরণ করে ও সামনের দিকে চার কদম এগোলো
তারপর যেখানে আলো শেষ হয়ে সেখান থেকে আর এক কদম এগোলো
আর সাথে সাথে আবার একটা পাথরে ওর পা লেগে কিছুটা জায়গা আলোকিত হয়ে উঠে

ওই পাথরটাও বালিতে কিছুটা ঢাকা ছিল
রশ্নি বালি সরিয়ে দেখলো
ওটার গায় লিখা
Take 8 steps and turn left

রশ্নি তাই করল

তারপর এমনি আরেকটা পাথর পেলো

এমনি কিছু চলতে থাকে তারপর ও এসে পৌঁছায় আরেকটা পাথরের কাছে

কিন্তু এই পাথরটা অনেক বড় আর এর গায় কিছু লিখা নেই শুধু পাথরটার উপর একটা ছোট্ট কালো রঙের বক্স রাখা

বক্সটার উপর শুধু “Open” লিখা

রশ্নি বক্সটা খুলে দেখলো ওটার ভিতর সুইচের মতো কিছু একটা আছে
ওটার উপর আবার “Press” লিখা

সুইচটায় চাপ দেওয়ার সাথে সাথে

কথাথেকে স্পটলাইট এসে রশ্নির উপর পড়ে
আর গান বন্ধ হয়ে যায়

হঠাত আলোর কারনে রশ্নি ওর চোখ গুলো ঢেকে নেয়
তারপর আস্তে আস্তে সামনের দিকে তাকায়

আর সামনে তাকিয়ে যেন ওর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল

কারন ইয়াশ এক হাটু গেড়ে রশ্নির সামনে বসে আছে

রশ্নি– সসস্যার আআপানি এএএসসব??
আআমি ককিছু বুঝতে পারছি না

ইয়াশ– I Love you (শান্ত ভাবে তাকিয়ে)
রশ্নি– এ্যা,,,,,,,,?
ইয়াশ– হ্যা,,ভালোবাসি,,,খুব ভালোবাসি আমি তোমায়
বলে ইয়াশ ওর হাতে থাকা ছোট বক্সটা খুললো
ওটায় একটা ব্ল্যাক ডায়মন্ডের রিং দেখতে পেলো

রশ্নি ওর দুই হাত গুঁজে বললো
— কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর নাই কখনো বাসবো
বলেই রশ্নি চলে যাওয়ার জন্য পিছনে ঘুরে

ইয়াশ– কোথায় যাচ্ছ?

রশ্নি এখন খেয়াল হলো
ওতো এখন নিজেই কোথায় আছে সেটাই জানে না তাহলে ও যাবেই বা কোথায়

তাই ও সেখানেই থেমে গেলো

ইয়াশ আবার বলা শুরু করলো
— আমাতেই সীমাবদ্ধ তুমি তাই পালাতে চেয়েও লাভ নেই

রশ্নির এবার কিছুটা রাগ হলো
— আমার কোনো ইচ্ছারই যখন দাম নেই তাহলে এভাবে প্রপোজ করছেন কেন

রশ্নির কথায় স্মিথ হাসলো ইয়াশ তারপর ওর হাতটা নিজের কাছে নিয়ে এসে আংটিটা পরিয়ে দিলো
রশ্নি চেয়েও হাতটা ছুটাতে পারলো না
তা দেখে ইয়াশ ওর হাতে একটা চুমু খেয়ে
ওর হাতটা ওর বুকের সাথে মিশিয়ে রাখলো

ইয়াশ– কে বলেছে আমি তোমাকে প্রপোজ করছি

রশ্নি কিছুটা ভ্রু কুচকালো
— মানে?

— মানে আমি শুধু তোমাকে এটা জানাচ্ছি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি
আর নতুন করে প্রপোজ করারই বা কি আছে
তুমি তো আমারি তুমি চাইলেও আমার আর না চাইলেও তুমি আমার

বলেই হ্যাচকা টান দিয়ে ওকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো তারপর ওর কপালে চুমু দিলো

ইয়াশ একটা চুটকি বাজালো আর সাথে সাথে পুরো জায়গাটা আলোকিত হয়ে গেল

তারপর আরেকটা চুটকি বাজানোর সাথে সাথে মিউজিক বেজে উঠলো

ইয়াশ রশ্নির কোমরে এক হাত রেখে অন্য হাত নিজের মাঝে রেখে ডান্স করতে শুরু করলো

রশ্নি– এটা কেমন ভালোবাসা?
ভালোবাসায় তো কোনো কষ্ট থাকে না?
তাহলে আপনার ভালোবাসায় আমি এত যন্ত্রনা অনুভব করি কেন?
ভালোবাসা তো জোর করে হয়ে না কিন্তু আপনার ভালোবাসা যে জোরের স্তম্ভের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে
বলুন না,,এটা কেমন ভালোবাসা

রশ্নির কথায় ইয়াশ হাসলো

তারপর ওকে ঘুরিয়ে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো
তারপর ওর কাঁধে মুখ রেখে কানে ফিসফিসিয়ে বললো

.

☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆

? ???? ???❤️ ??? ? ???? ????
??? ?? ?? ????? ??? ???? ??? ?????
??? ????? ?? ?????????
?? ?? ????? ??? ???? ???? ??? ???? ?? ?????
? ???? ???, ??? ? ???? ????
???? ?? ??? ???’??

???????? ??’? ? ?????’? ?????
??? ????? ??? ?????????

☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆◆☆

.

ইয়াশের মাতাল করা কণ্ঠের কথাগুলো রশ্নির বুকে তীরের মতো গিয়ে লাগছে

ইয়াশ রশ্নিকে আরো শক্ত করে জাপটে ধরলো

ভালোবাসি,,খুব ভয়ঙ্কর ভাবে ভালোবাসি তোমায়
আমার ভালোবাসার মাঝে কোথাও তুমি শান্তি দেখতে ভাবে না
বরং যেখানে তাকাবে সেখানেই যন্ত্রনা

রশ্নির চোখে পানি টলমল করছে

সেখান থেকে এক ফোটা পানি এসে ইয়াশের হাতে পড়লো

ইয়াশ ওকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে আনলো

ইয়াশ রশ্নির চোখের পানি মুছিয়ে দিতে দিতে বললো
— জানো তো ভালোবাসানা একটা আর্ট

সোটাকে একেকজন একেক ভাবে আঁকে

বা বলতে পারো আমি হয়তো
সবার মতো ভালোবাসতেই জানি না

আমার ভালোবাসাটাই এমন
আমি এভাবেই ভালোবেসেছি

রশ্নির চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পড়ে যাচ্ছে

রশ্নি– তার মানে আমি কি চাই সেটার আপনার কাছে মূল্য নেই?

ইয়াশ– হয়তো এটাই আমার ভালোবাসার নিয়ম

রশ্নি ইয়াশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু ইয়াশ ওকে আরো আকড়ে ধরে

রশ্নি– ভুল,,
ভুল ভুল ভুল,,,আপনি ভুল আপনার ভালোবাসা ভুল
এটা কোনো ভালোবাসা না
এটা শুধু আপনার ক্ষমতার প্রদর্শন মাত্র

কেন আমাকেই আপনার নিয়মে চলতে হবে?
আমি আপনার হাতের কোনো পুতুল না

ইয়াশ– কে বলল তোমাকে যে শুধু তোমাকেই আমার নিয়মে চলতে হবে?
আমি তোমাকে ভালোবাসি তাই তোমাকে আমার হয়ে থাকতে হবে
যেদিন তুমিও আমায় ভালোবাসবে সেদিন তুমি মুক্ত

সেদিন শুধু আমার মনে নয় আমার পুরো পৃথিবীতে তোমার রাজত্ব হবে, সাথে আমার উপরো

বলেই আবার ওর কোমরে হাত দিয়ে সফ্ট মিউজিকের তালে তাল মিলিয়ে ডান্স করতে শুরু করলো

রশ্নি কিছু বলবে তার আগেই ইয়াশ বলা শুরু করলো
— দেখো তো কত কষ্ট করে তোমার জন্য জায়গাটা ডেকোরেট করলাম আর তুমি দেখছই না
(অভিমানী সুরে)

রশ্নি এতক্ষন ইয়াশের কথার জালে ছিল তাই খেয়ালই করেনি

রশ্নি এবার পুরো জায়গাটা দেখে নিলো

ওরা ছাড়াও আর অনেকে আছে এখানে যারা ডান্স করছে
কিন্তু সবাই বিভিন্ন ডল আর কার্টুনের কস্টিউম পড়া

ওখানে অনেকগুলো গাছও আছে
গাছগুলোর ডালের সাথে প্লাস্টিকের তৈরি স্টার,হার্ট,এনিমালস ইত্যাদি ঝুলে আছে

বালির মধ্যে বিভিন্ন রঙের লাইট জ্বলছে

আর চারদিকে স্নো হোয়াইট লাইটস দিয়ে ডেকোরেশন করা

সব কিছু মিলিয়ে পরিবেশটা জাস্ট ওয়াও

রশ্নি এতক্ষন হা করে চারদিকটা দেখছিল
ইয়াশের কথায় ওর ধ্যান ফিরে

— চলো ডিনার করবে

বলেই রশ্নির হাত ধরে একটা গোল টেবিলের কাছে নিয়ে গেল

তারপর চেয়ার টেনে রশ্নিকে বসতে দিলো
আর অপরটায় নিজে বসলো

ওরা যেই জায়গাটায় বসেছে তার পাশে
দুই লাইনে দাঁড়িয়ে কয়েকটা ছোট ছোট ছেলে মেয়ে সেইম ড্রেস পরে হাতে মিনি গিটার নিয়ে বাজাচ্ছে

এটা একটু বেশিই কিউট ছিল

ইয়াশ রশ্নিকে খাইয়ে দিচ্ছিল
তখনই রশ্নি ইয়াশকে জিজ্ঞেস করে বসে
— আচ্ছা আমাকে কিডন্যাপ কি আপনিই করিয়েছিলেন?

ইয়াশ– করিয়াছিলাম না আমিই করেছিলাম
রশ্নি– মানে ওটা আপনি ছিলেন?
ইয়াশ– ইয়াপ
রশ্নি– যাক ডাকাত রূপটাও দেখে নিলাম (বিড়বিড় করে)

— কিছু বললে?
রশ্নি ডানে বামে মাথা ঘুরালো



চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here