Mr_Devil #Part_38,39

0
2266

#Mr_Devil
#Part_38,39
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_38


ড্রাইভিং স্টার্ট করার আগে একবার জানালায় মাথা ঠেকিয়ে বসে থাকা রশ্নিকে দেখে নিলো ইয়াশ

কিছু না বলে ড্রাইভিং করা স্টার্ট করলো

— আপনি আমাকে ভালোবাসেন তাই না?

হঠাৎ রশ্নির এমন কথায় একবার ওকে দেখে নিলো
তারপর কিছু না বলে ড্রাইভিংএ মনোযোগ দিলো

— ভালোবাসলে ওইদিন রাতে হোটেলে আমাকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলেন কেন

ইয়াশ তাও কিছু বললো না

ইয়াশের ব্যবহারে রশ্নির এবার কিছুটা রাগ হলো

রশ্নি– গাড়ি থামান আমি নামবো

ইয়াশ– ……………..

রশ্নি– আপনি থামাবেন নাকি আমি চলন্ত গাড়ি থেকেই লাফ দিব

ইয়াশ– ……………..

রশ্নি– ঠিক আছে তাহলে তাই হোক
বলেই যেই না গাড়ির দরজা খুলতে যাবে
তার আগেই ইয়াশ জোরসে ব্রেক মারে

তারপর নিজে কার থেকে নেমে রশ্নিকে টেনে বের করে

রশ্নির হাতের ব্যাচে স্টোনের স্টার ছিল
যেটাতে ইয়াশ জোরে চেপে ধরে
যার ফলে রশ্নি হাত ছাড়ানোর জন্য চেঁচামেচি শুরু করে

রশ্নি– হাত ছাড়ুন,,লাগছে আমার
বলেই আবার জোরে চিৎকার দেয়

ইয়াশ চোখ রাঙিয়ে তাকায় ওর দিকে
কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয় না

রশ্নি– দেখুন আপনি যদি আমার হাতটা এখন না ছাড়েন তাহলে কিন্তু আমি,,,,

ইয়াশ– কি?? না ছাড়লে কি করবে
ওই ছেলেগুলোর মতো আমাকেও মারবে?

বলে ওর দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করলো
আর রশ্নি পিছে,,,,,

ইয়াশ– বললে না যে কি করবে?

রশ্নি– আআমি আমি হ্যা আমি চিৎকার করবো
(একটু সাহস নিয়ে) চিৎকার করে লোকজন জড়ো করবো আর বলবো আপনি আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছেন?

— তাই,,,

বলেই রশ্নির কোমর চেপে ধরে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে দিলো
তারপর ওর পুরো ঘাড়ে মুখে পাগলের মতো চুমু দিতে লাগলো

কিছুক্ষন পর
রশ্নি ইয়াশের সাথে পেরে উঠতে না পেরে শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে

আর এদিকে ইয়াশ রশ্নির ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যাস্ত

কিছুক্ষন পর ইয়াশ ওকে ছেড়ে দিলো

তারপর ওকে অবাক করে দিয়ে ধাক্কা দিয়ে গাড়ির ফ্রন্ট সাইডে ফেলে দিলো
তারপর ওর দিকে কিছুটা ঝুকে দাঁড়ালো

রশ্নি চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে

ইয়াশ– তো কি যেন জিজ্ঞেস করছিলে তুমি,,(রশ্নির গালে স্লাইড করতে করতে বললো)

রশ্নি কিছু বলছে না শুধু অসহায় দৃষ্টিতে ইয়াশের দিকে তাকিয়ে আছে

রশ্নি– আপনি সত্যিই অনেক খারাপ
বলা মাত্রই চোখের টলমল করতে থাকা পানিগুলো থেকে এক ফোটা এসে ইয়াশ আঙুলে পড়লো

ইয়াশ ওই আঙ্গুলটাকে নিজের সামনে এনে তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে তা ছিটকে ফেলে দিলো

তারপর ওকে এক টান দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে করে বসিয়ে দিল

রশ্নি আবারো আগের মতো বাহিরের দিকে মুখ করে বসে আছে
আর ইয়াশ নিজের মতো ড্রাইভ করছে

ইয়াশ নিজের মনে মনে কিছু একটা আওরে
বাঁকা হাসলো

.

★——– পরেরদিন ——–★

রশ্নি নিউজ ফিডে ঘুরে ঘুরে করছিল তখন
ওর মনে হলো কে যেন ওর নাম ধরে ডাকছে
কয়েকবার মনের ভুল বলে ইগনোর করলেও
বারবার একই জিনিষ ঘটাতে ও বারান্দায় গিয়ে
দেখেই নিলো

বারান্দায় আসা মাত্রই ওর চোখ যেন উল্টে গেল

কারন নীচে সবাই মাথার উপর রশ্নির নামের অক্ষর গুলো প্লে কার্ডে লিখে দাঁড়িয়ে আছে

যার জন্য নীচে পুরো জায়গাটা জুড়ে রশ্নি নামটা ফুটে উঠেছে

রশ্নি তা দেখে তাড়াতাড়ি নীচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো

কিন্তু কিছু সিঁড়ি পর করার পরই দেখতে পেল অনেকগুলো বাচ্ছা সিঁড়িতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে

সবার হাতেই একটা ঝুড়ি

রশ্নি একটা বাচ্চার সামনে গেল
আর বাচ্চাটা ওর ঝুড়ি থেকে বের করে ওকে একটা গোলাপ ফুল দিলো

রশ্নি ফুল টা নিয়ে নিল
তারপর আরেকটু নীচে নামার পর আরেকটা বাচ্ছা এসে ওর হাতে চকলেট দিলো

পরেরটাতে টেডি,,এমনি আরো অনেক গিফ্টস
রশ্নি সবগুলো নিয়ে নিল ঠিকই কিন্তু এগুলো দেখে ওর এখনো অবাক লাগছে

কিন্তু যখন নীচে আসলো
তখন সেখানে কাওকেই দেখতে পেলো না

হঠাৎ রশ্নি নিজের কাঁধে নরম তুলতুলে কিছু অনুভব করলো

পিছনে ঘুরে দেখলো শিনচ‍্যানের কস্টিউম পড়া একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে

শিনচ‍্যান দেখেই ও পাগলের মতো লাফাতে শুরু করলো

লোকটা ওর সাথে ডান্স করার জন্য ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল

রশ্নিও বেশি কিছু না ভেবে হাত ধরে নিলো

1 2 3 4?
pagal ye pagal voh
pagal karde jahan bhi yeh jaye?
dekho karta hain kaisa deewana sab ko
o shin chan?
mera naam hee shin chan hain
mein shararat se bhara?
badi mushkil mein padi
meri family noahara?
come on baby come on baby
ao kare dance shuru?
zor se ghoome hum tum jhoome
nacho nacho??‍♂️
to dekho tumko hiladoon
kabhi yeh uchaltah hain?
kabhi yeh machalta hain har dam bekaboon?
roj yeh karta hain nayi nayi gadbad
tumko hasadega shin chan?

মিউজিক শেষে লোকটা কস্টিউমের হেড পার্টটা খুলে নিল

রশ্নি– আপনি???

[হ ভাই এইটা তোগো ইয়াশই?]

ইয়াশ– ইয়াপ

রশ্নি লক্ষ করলো
ইয়াশের ঘেমে অবস্থা খারাপ
চুল গুলো সব মুখের সামনে লেগে আছে
আর এতক্ষন এটা পরে থাকার কারণে গরমে গাল আর নাক হয়ে আছে
কিন্তু তবুও এই অবস্থায় প্রচুর কিউট লাগছে

রশ্নি– কিন্তু আপনি এগুলো করেছেনই বা কেন?
ইয়াশ– তুমি ইনজয় করেছ?
রশ্নি– অনেক?
ইয়াশ– তাহলেই হবে
রশ্নি– ?

ইয়াশ– আচ্ছা চলো ঘুরতে যাই
রশ্নি– এ্যা?
ইয়াশ– হ্যা চলো

.

ইয়াশ আর রশ্নি আজ সেইম গেইট অপে বেরিয়েছে:-

হাতে কালো ব‍্যাচ, ব্ল্যাক জিন্স, হোয়াইট কেইডস,
হোয়াইট শার্ট যা এক সাইড দিয়ে ইন করা

দুজনেই পাশাপাশি হেটে যাচ্ছে
কিন্তু কারো মুখে কোনো কথা নেই

ইয়াশ কিছু না বলেই গিয়ে রশ্নির হাতটা ধরলো
রশ্নিও ছাড়ানোর চেষ্টা করলো না

দুজনের মুখেই মুচকি হাসি তবে তা আড়ালে

কিন্তু রশ্নির এই শান্তি আর বেশিক্ষন টিকলো না

কোথাথেকে একটা মেয়ে উড়ে এসে ইয়াশের উপর জুড়ে বসলো

মেয়েটার নাম রেইন
সম্ভবত ওরাও এখানে ঘুরতে এসেছে
কারন দেখে থাই ল্যান্ডের তো মনে হচ্ছে না

সে যাই হোক
মেয়েটা হঠাৎ কোথাথেকে এসে ইয়াশের হাতে ফোন চাপিয়ে দিয়ে বলছে ওদের ছবি তুলে দিতে

আর এই ইয়াশটাও কি সুন্দর তুলে দিচ্ছে

আর এখানে রশ্নির দিকে ওর কোনো খেয়ালই নেই

ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে বলে মেয়েটা এসে ইয়াশকে জড়িয়ে ধরলো
যেই না কিস করতে যাবে তখনই রশ্নি চিৎকার দিয়ে রাস্তায় বসে পড়লো

— আআআআআআআআআআ!!!

রেইন– হেই,, হোয়াই আর ইউ শাউটিং

ইয়াশ তাড়াতাড়ি রেইনকে সরিয়ে রশ্নির কাছে গেল

ইয়াশ– কি হয়েছে তোমার!! (ডিসপারেট হয়ে)
রশ্নি– আমার পা টা মেবি মোচকে গেছে
ইয়াশ– তোমার পা এত মোচকায় কিভাবে? ওইদিন অফিসেও মোচকে গেছিল
রশ্নি– তো এটা কি আমার দোষ?
ইয়াশ– দাঁড়াও ঐদিনের মতো আরেকটা মোচড় দিয়ে দেখি
রশ্নি– না না না,,,প্লিজ,
ওটাতে অনেক ব্যথা লাগে
তাই যদি এখন আমি পাবলিক প্লেসে কান্নাকাটি শুরু করি তা নিশ্চই দেখতে ভালো লাগবেনা
ইয়াশ– হুম তাহলে হোটেলে ব্যাক যেতে হবে,,চলো
রশ্নি– হ্যা দাঁড়ান,,,,
রশ্নি উঠতে গিয়েও পারলো না
রশ্নি– উপস,,এখন আমি উঠবো কিভাবে আমার পা তো মোচকে গেছে
কাশ……ঐদিনের মতোই নিহার এসে আমাকে কোলে তুলে নিতো

রশ্নির কথায় ইয়াশ অনেকটা ক্ষেপে যায় আর নিজেই ওকে কোলে তুলে নেয়

তারপর রেইনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হোটেলে যাওয়ার জন্য হাটা শুরু করে

আর রশ্নি পিছন থেকে রেইনকে বিভিন্ন ভাবে ভ‍্যাঙ্গানো শুরু করলো

রশ্নি– বিজনেসম্যান থেকে কিডন্যাপার হতে দেখলাম নাও ক্যামেরাম্যান
Huh,,,,,,জীবনে যে আরো কতো কি দেখবো

ইয়াশ– তোমার হিংসে হচ্ছে বুঝি

রশ্নি– এভাবে জোক মারতে থাকলে একদিন কাপিল শার্মাকেও টেক্কা দিয়ে যাবেন?

ইয়াশ– তাই না,,,
বলেই রশ্নিকে ফেলে দিতে নেয়
কিন্তু তার আগেই রশ্নি লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়

ইয়াশ– আমি জানতাম,,,,
বলেই রশ্নির পিছনে ছুটে আর রশ্নি দৌড়,,,,
এক পর্যায় ইয়াশ ওকে ধরে ফেলে
তারপর আবার একসাথেই হেসে দেয়

.

●!!!!◆রাতে◆!!!!●

পাহাড়ের চূড়ার উপর ইয়াশের কাঁধে নিজের মাথা রেখে বসে আছে রশ্নি
আর রশ্নির মাথার উপর ইয়াশের মাথা

দুজনের মাঝেই পিনপতন নীরবতা

ইয়াশের শরীর থেকে নেশা ধরানো একটা স্মেল আসছে যা রশ্নিকে ক্রমশই পাগল করে দিচ্ছে

কিন্তু এবারো রশ্নির শান্তি আর বেশিক্ষন টিকলো না
হঠাৎ কি হলো
ইয়াশ নিজেও উঠে গেল আর রশ্নিকেও টেনে উঠালো

রশ্নি– ??

ইয়াশের– 5 4 3…

রশ্নি– শিনচ‍্যানের থিম সঙের লিরিক্সএ তো 5 ছিল না?

ইয়াশ 1 বলার সাথে সাথেই আকাশে কিছু ইংলিশ অক্ষর ভেসে উঠতে শুরু করলো

রশ্নি ভালো করে লক্ষ করে দেখল
সবগুলো অক্ষর একসাথে হয়ে
【Happy birthday Roshni】
দেখাচ্ছে

যা দেখা মাত্রই রশ্নি মুখে হাত দিয়ে চিৎকার করে লাফাতে শুরু করে

ইয়াশ– ভালো লেগেছে?

রশ্নি কিছু না বলে
ইয়াশকে ঝাপটে ধরলো

আর বারবার Thank you বলছে

ইয়াশও রশ্নিকে জড়িয়ে ধরলো?

ইয়াশ– থ্যাংকস বলতে হবে না তোমার ভালো লাগলেই হলো
রশ্নি– আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে আমার বার্থডে তে এভাবে উইশ করে নি
ইয়াশ– আচ্ছা এবার এটা দেখো

ইয়াশের কথায় রশ্নি সামনের দিকে তাকালো

এবারো আকাশে কিছু লিখা ভেসে উঠছে

যা পরে একত্রিত হয়ে [I love you❤️] দেখাচ্ছে

আর এদিকে রশ্নি ব্লাশ করে অবস্থা খারাপ

ইয়াশ রশ্নির হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে বললো
ইয়াশ– রশ্নি আমি জানি আমি হয়তো অতীতে তোমার সাথে খুব খারাপ আচরণ করেছি,অসভ্যতামীও করেছি,,কিন্তু বিস্বাস করো সাথে তোমাকে খুব ভালোও বেসেছি

আমাদের বিয়ের দিন তোমার চোখে অন্য কারো জন্য কেয়ার আমি সহ্য করতে পারিনি তাই অমন জানোয়ারের মতো আচরণ করেছি
কিন্তু তুমিই বলো তারপর থেকে কি আর কখনো তোমার সাথে অমন ব্যবহার করেছি?

রশ্নি আমাকে কি একটু মাফ করা যায় না?

রশ্নি কিছু বলছে না শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে আছে

রশ্নিকে চুপ থাকতে দেখে ইয়াশ এবার কান ধরে মাটিতে দুই হাটু গেড়ে বসে পড়লো

— প্লিজ রশ্নি,,,,,,,



চলবে,

আপনারা কি বলেন?
রশ্নির কি ইয়াশকে মাফ করে উচিত??

#Mr_Devil
#Part_39
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)



___________________________
★——●১ সপ্তাহ পর●——★
―――――――――――――――
এই এক সপ্তাহে ইয়াশ রশ্নিকে আরো অনেক সারপ্রাইজ আর গিফ্টস দিয়েছে
বিভিন্ন ভাবে রশ্নিকে খুশি রাখার চেষ্টা করেছে

এই কয়েকদিনে ইয়াশের প্রতি রশ্নির ভালোলাগাটা ক্রমশ বেড়েই চলেছে

রীতের সাথেও ওর বন্ডিংটা বেশ ভালো হয়েছে

আজ ব্যাংককে ওদের লাস্ট ডে
কাল ওরা নিজের দেশে ফিরে যাবে

.

বারান্দায় দাঁড়িয়ে রশ্নি এগুলো ভাবছিল তখনই পিছন থেকে ইয়াশ এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো

ইয়াশ– এখানে একা একা কি করছো?

রশ্নি– আমার তো আর কোনো সাঙ্গপাঙ্গর নেই যে তাদের নিয়ে একসাথে দাঁড়িয়ে থাকবো তাই একাই দাঁড়িয়ে আছি (রেগে)

ইয়াশ বুঝতে পারলো রশ্নি রেগে আছে তাই আরেকটু ক্ষেপানোর জন্য
বললো– বুঝেছি আমি তোমার সাথে ছিলাম না বলে তুমি রাগ করেছ

ইয়াশ যা চেয়েছিল তাই হলো রশ্নি ইয়াশের কথায় আরো ক্ষেপে গেল

রশ্নি– আমি তা মিন করি নি,,,(চেচিয়ে)

ইয়াশ– থাক আর লজ্জা পেতে হবে না আমি বুঝেছি

রশ্নি– আপনি কিন্তু,,,,,,

ইয়াশ– কি করবো বলো বিজনেস এর কাজে অনেক বিযি থাকতে হয় তো,,,কিন্তু তুমি চিন্তা করো না
আমি না থাকলে কি হয়েছে আমার বাচ্চা তোমার সাথে থাকবে সবসময়

রশ্নি– হোয়াট? আপনার বাচ্চাও আছে? মানে আপনি আগে থেকেই ম‍্যারিড? ছি ছি ছি আপনার লজ্জা করে না? বউ বাচ্চা রেখে অন্য একটা মেয়েকে তুলে এনে জোর করে বিয়ে করেছেন? আমার তো আপনাকে দেখে আগেই মনে হয়েছিল
অপনসর মতো একটা বুড়া লোক এখনো সিঙ্গেল থাকে কিভাবে

ইয়াশ– এই থামো থামো।। আমার কোনো এক্সট্রা বউ বাচ্চা নেই
আমার বাচ্চা দ্বারা আমি তোমার আর আমার উড বি চাইল্ডকেই বুঝিয়েছি

রশ্নি– হেহ হেহে হেহ হে হে?

ইয়াশ– এইটা আবার কেমন হাসি?
আর তুমি হাসছোই বা কেন?

রশ্নি– আপনার অবস্থা দেখে হাহ এটাকে বলে গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল?
আসলে এটা আপনার দোষ না,,আপনার বয়স তো আর কম হয়নি,,অনেক বুড়া হয়েও আজ পর্যন্ত সিঙ্গেল তাই এই অবস্থা
বাই দা রাস্তা আপনি বিয়ে করেননি কেন এখনো? নাকি কেও আপনাকে নিজের মেয়ে দেয় নি? তাই আর না পেরে আমাকে তুলে এনেই বিয়ে করে ফেললেন?
আচ্ছা কয়বার এন্ড কতজনের কাছে রিজেক্ট হয়েছেন বলেন তো? ?

ইয়াশ– শুনো আমি বুড়ো নই ওকে? মাত্র ২৮ বছরের একজন ইয়াং এন্ড গুড লুকিং যুবক?
এন্ড লিসেন্ট ইয়াশ আহমেদ কখনো কারো কাছে রিজেক্ট হয়নি
উল্টো মেয়েরা তার উপর মরে সে তো তোমার ভাগ্য ভালো তাই আমার মতো এত হ্যান্ডসাম একটা জামাই পেয়েছ? (ভাব নিয়ে)

রশ্নি– হুহ ভাগ্য ভালো(ব্যাঙ্গ করে)

রশ্নি বিড়বিড় করে এগুলো বলছিল তখনই হঠাৎ একজোড়া ঠোঁট তার ঠোঁটগুলোকে এসে দখল করে নেয়

আচমকা এমন আক্রমনের জন্য প্রস্তুত ছিল না রশ্নি
ও ইয়াশের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিতে আছে

ইয়াশ রশ্নি গালের থেকে এক হাত সরিয়ে তা ওর কমর পেঁচিয়ে ধরে ওকে সামনে নিয়ে আসলো

রশ্নি বাধা দিতে চাইলে ইয়াশ ওর হাত গুলো পিছনে নিয়ে এক হাত দিয়ে ধরে রাখে

তারপর ওর ঘাড়ে মুখ ডুবায়

রশ্নি– স্যার প্লিজ ছাড়ুন আমার অস্বস্তি হচ্ছে

রশ্নির কথা শুনে ইয়াশ ওকে ছেড়ে দিলো
কিছুক্ষন রশ্নির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে ওকে টাইটলি জড়িয়ে ধরলো

কিন্তু এবার রশ্নি আর বাধা দিল না
ইয়াশের বুকে খুব আপন আপন একটা ফিল পাচ্ছে
যেন পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তিময় স্থান এটা

কিছুক্ষন পর ইয়াশ রশ্নিকে ছেড়ে দিলো
তারপর ওর কপালে হালকা স্পর্শ বুলিয়ে দেয়

ইয়াশ– গুড নাইট
রশ্নি– এ্যা??
ইয়াশ– গুড নাইট মানে শুভ রাত্রি
রশ্নি– বাংলায় ট্রান্সলেট করতে বলিনি ?,,,কিন্তু,,,,,
ইয়াশ– কিন্তু কি?,,,,,কিছু করার প্লান কছে নাকি? (বাঁকা হেসে)
রশ্নি– লুচ্ছা তো লুচ্ছাই হয়?
রশ্নি– আমি এখন ঘুমাবো সো বায় গুড নাইট

বলেই রশ্নি দিলো দৌড়
আর বিছানায় গিয়ে মাথায় ব্ল্যাংকেট উড়ে নিজেকে পুরো কভার করে নিলো

.

◆○◆○◆○◆পরেরদিন◆○◆○◆○◆

ইয়াশ আর রশ্নি এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছে
আজও রীতের জন্য ওয়েট করছে

কিন্তু আজ রীত এস আ রিসিভার নয় বরং রশ্নি আর ইয়াশের কাছের একজন বন্ধু হিসেবে তাদের বিদায় দিতে এসেছে

— সরি সরি সরি,,আসতে একটু লেইট হয়ে গেল

রশ্নি– ইটস ওকে লেটু চ‍্যান
রীত– ??

ইয়াশ– তাহলে আমরা এবার আসি,,
রীত– জি

ইয়াশ আর রীত দুইজন দুইজনকে হাগ করলো

রীত– আপনাদের সাথে পরিচিত হয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো
ইয়াশ– হ্যা আমাদেরও,,

রশ্নি– তবে একটা কথা বলে রাখি,,যত যাই বলুন না কেন আমার শিনচ‍্যানই কিন্তু বেস্ট
রীত– জি না ডোরেমন
রশ্নি– না শিনচ‍্যান?

এবার দুইজন একসাথেই বলে উঠে– আচ্ছা দোনোটাই

বলে আবার একসাথেই হেসে দেয়

রীত– আপনাদের এবার যাওয়া উচিত
নাহলে লেট হয়ে যাবে

ইয়াশ মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো

আরেকবার জড়িয়ে ধরে চলে আসলো রীতের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে

.

প্রায় একমাস কেটে গিয়েছে
এর মধ্যে ইয়াশ রশ্নিকে মসজিদে নিয়ে গিয়ে আরেকবার বিয়ে করেছে

এই একটা মাস দুইজনের খুনসুটি, ভালোলাগা-ভালোবাসা, রাগ,অভিমান,হাসি-কান্না,
টক-ঝাল-মিষ্টি
সবকিছু নিয়ে খুব আনন্দে কেটেছে

ইয়াশের হঠাৎ হঠাৎ কিস করে দেওয়া
সবার আড়ালে আদর করা
সবকিছু রশ্নির অভ্যাসে পরিণত হচ্ছিল

ইয়াশের কাছে আসাতে রশ্নি যখন চোখ বন্ধ করে নিত
লজ্জায় লাল গোলাপি হয়ে যেত

সেইগুলো গিয়ে বারবার ইয়াশের মনে প্রেমের আচর কাটতো
আরো তীব্র ভাবে রশ্নির মাঝে ডুব দিতে মন চাইতো

সবকিছুই ভালো চলছিল কিন্তু হঠাৎ একদিন—-

ইয়াশ অফিসে বসে কাজ করছিল

তখনই নতুন পিএ আরিফ তার কাছে কিছু কাজের জন্য আসলো

রশ্নির পর আরিফ ইয়াশের পিএ হিসেবে কাজ করছে
কিন্তু রশ্নির ক্যাবিনটা ইয়াশ ওভাবেই যত্ন করে রেখে দিয়েছে

আরিফ– স্যার,,,,,

আরিফের ডাকে ইয়াশের ধ্যান ভাঙলো

— হ্যা বলো…..!

আরিফ– স্যার খান ইন্ডাস্ট্রিজের সাথে আমাদের যে ডিলটা হওয়ার কথা ছিল
সেটা ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছে

ইয়াশ– মানে কি,,,,,

আরিফ– খান ইন্ডাস্ট্রিজের এম ডি আমাদের সাথে ডিলারশিপ করতে রিজেক্ট করে দিয়েছে

ইয়াশ– কিন্তু কেন,,,

ইয়াশের কথা শেষ হওয়ার আগে
ওর ফোনটা বেজে উঠলো

কলটা আসায় ওর মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠলো

ক্রমাগত বাজতে থাকার কারনে শেষে কলটা রিসিভ করতেই হলো
ইয়াশ ফোনটা কানের কাছে ধরে
তারপর হাত দিয়ে ইশারা করে আরিফকে সেখান থেকে যেতে বলে

— হোয়াট!!

–………………!!

— এটা আবার তোমার কোনো নিউ ড্রামা নয়তো,,

–……………….!!

— গুড,,উল্টা পাল্টা কিছু করার কথা মাথায় আনলেও আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না

–……………….!!

— আমি আসছি..!!

আরো কিছু কথা বলে ইয়াশ ফোনটা রেখে দিল
তারপর ডিসপারেট হয়ে কোথাও ছুটে গেল

.

ফোনে বলা জায়গায় ইয়াশ তাড়াতাড়ি ছুটে এলো
এদিক সেদিক কাওকে খুঁজতে শুরু করলো

হঠাৎ কাঁধে কারো স্পর্শ পাওয়াতে পিছনে ফিরে তাকালো

পিছনে ফিরে নেহাকে দেখেই ওর মাথায় যেন আরো আগুন ধরে গেল

ইয়াশ আর নেহা কিছুক্ষন কি যেন কথা বললো
পরক্ষনেই ইয়াশ
নেহার গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল
আর নেহা নীচে পরে গেল

হঠাৎ ইয়াশও দুই হাটু গেড়ে বসে পড়লো
সামনে সবকিছু ঘোলাটে লাগছে
নিজের কাছে নিজের শরীরটাকে বড্ড ভারী ভারী লাগছে
ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকানোর মতো শক্তিটাও যেন পাচ্ছে

কিন্তু তার আর প্রয়োজন পড়েনি তার আগেই পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা সামনে এসে দাড়ালো

ইয়াশ অস্পষ্ট ভাবে দেখতে পাচ্ছে তার ভালোবাসার মানুষটি তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে
কিন্তু তার চোখে কোনো ভালোবাসা নেই
আছে অজস্র ঘৃণা আর কষ্টের তীব্রতা

হ্যা কিছুক্ষন আগে রশ্নিই ছিল সেই ব্যক্তি যে ইয়াশকে মেরেছে নিজের হাতে

রশ্নির কাপাকাপা হাতে থাকা গান (Gun) টা
পিসলে পরে গেল

হাতের সাথে পুরো শরীরটাও কাঁপছে

এখনো তার এটা মানতে কষ্ট হচ্ছে যে সে নিজের হাতে তার প্রিয় মানুষটিকে শুট করেছে

ইয়াশ নিজের বুকে হাত দিয়ে তরল কিছু অনুভব করতে পারলো
সামনে এনে নিজেরই রক্ত দেখে স্মিথ হাসলো

ইয়াশের মুখ দিয়ে শুধু এটুকুই বের হলো
— কেন করলে রশ্নি আমার সাথে এমনটা?

রশ্নি এবার চিৎকার করে বলা শুরু করলো
— আপনার মতো মানুষদের এই অবস্থাই হওয়া উচিত
আপনাদের মতো মতো মানুষদের জন্যই হাজার হাজার মেয়েদের জীবন নষ্ট হয়ে
কি ভেবেছিলেন,,,
কয়েকদিন আমাকে আমাকে সারপ্রাইজ গিফ্ট মিফট দিয়ে আগের করা সবকিছু ভুলিয়ে দিবেন?
না কখনোই না
আসলে আপনি মানুষই না আপনাদের মতো লোকেরা হলো অমানুষ

ইয়াশ অবাক হয়ে ওকে দেখছে

রশ্নি আবার বলা শুরু করলো
— আমি বলেছিলাম না আপনাকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না
ভালোবাসা তো দূরের কথা

আমি আপনাকে ঘৃণা করি শুধু ঘৃণা

বলেই জোরে জোরে কাঁদতে শুরু করলো

ইয়াশ– একটু আমার কাছে আসবে রশ্নি? শেষ বারের মতো?
আমার কাছে হয়তো আর বেশি সময় নেই

রশ্নি কিছু একটা মনে মনে আওরে নিয়ে
ইয়াশের দিকে এগোলো
তারপর ওর সামনে গিয়ে বসল

রশ্নি বসার পর ইয়াশ ওর কোলে মাথা রাখলো

ইয়াশ– ধন্যবাদ

ইয়াশের কান্ডে রশ্নি অনেকটা অবাক হলো

ইয়াশ– আজকে তুমি আমাকে খুব সুন্দর একটা উপহার দিলে
আজকে তুমি আমাকে শাস্তি আর সুখ দুটো একসাথে দিলে

নিজের ভালোবাসার মানুষটার হাতে মরার থেকে বড় শাস্তি বোধয় আর কিছু হতে পারে না

অপরদিক দিয়ে এটা আবার সুখও
কতজনের ভাগ্যে থাকে বলে নিজের ভালোবাসার মানুষটার কোলে মাথা রেখে মরার?
জানো তো তোমার হাতে মরতেও আমি রাজি ছিলাম
যদি একটু ভালোবেসে মারতে

আআহ!!

আর নিতে পারছি না প্রচুর কষ্ট হচ্ছে
আমার হাতে মনে হয় আর বেশি সময় নেই

কিন্তু শেষ বেলায়ও শুধু এটুকুই বলতে চাই
খুব ভালোবাসি তোমায় খুব,,
তোমাকে বলার জন্য আরো অনেক কথা ছিল কিন্তু তা হয়তো অজানাই রয়ে যাবে

আই লাভ ইউ রশ্,,,,,,,,

ইয়াশ আর বলতে পারল না ওর চোখের সামনে সব কিছু অন্ধকার হয়ে আসছে
ইয়াশ আস্তে আস্তে নিজের চোখ বন্ধ করে নিচ্ছে

আর রশ্নির কান্নার বেগও ক্রমশ বেড়েই চলেছে,,



চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here