#Mr_Devil
#Part_41,42
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_41
।
।
ইয়াশকে হসপিটালে নেওয়া হয়েছে
মাত্র অপারেশন থ্রিয়েটার থেকে ওকে আই.সি.ইউ. তে শিফট করা হয়েছে
ডক্টর জানিয়েছেন
গুলি টা পিঠে লাগার কারনে ইয়াশ বেঁচে গিয়েছে ঠিকই কিন্তু ও এখন কমায় আছে
২৪ ঘন্টার মধ্যে জ্ঞান না ফিরলে ওদের হাতে আর কিছু করার থাকবে না
ইয়াশের বাবা খবর টা শুনে কোথাও যেতে চাইলে অনিমা বেগম মাঝে বাধা দিলেন
— কোথায় যাচ্ছ তুমি?
ইয়ানাফ আহমেদ– তোমাকে বলার প্রয়োজন মনে করি না
অনিমা– তুমি ঐ অলক্ষনি মেয়েটার কাছে যাচ্ছ তাই না
ইয়ানাফ– এই মুহূর্তে তোমার সাথে মুখ লাগার কোনো ইচ্ছে আমার নেই সো সামনে থেকে সর
অনিমা– তুমি কোথাও যাচ্ছ না
ইয়ানাফ– তোমার কথা শুনতে আমি বাধ্য নই
বলেই তাকে সামনে থেকে সরিয়ে দিল
.
পুলিস্টেশনের একটা বেঞ্চে দেয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে রশ্নি
নিজেকে মৃত মনে হচ্ছে
এখনো নিউজটা লিক হয়ে নি
নিউজটা যেন লিক না হয় তার সম্পূর্ন ব্যবস্থা করে ফেলেছেন ইয়াশের বাবা
কিন্তু কেন তা রশ্নির জানা নেই
হঠাৎ ইয়ানাফ আহমেদকে সেখানে আসতে দেখে রশ্নি হুড়মুড়িয়ে তার কাছে গেল
— বাবা ইয়াশ কেমন আছেন
তখন সেখানে একজন মহিলা কনস্টেবল বলে তার সাথের জনকে বলে উঠেন
— ঢং দেখেছিস?
নিজেই নিজের স্বামীকে মেরে এখন দরদ দেখানো হচ্ছে
সাথে জন– সত্যিই নেকমো দেখলে বাঁচি না বাপু
ওদের কথা রশ্নি আর ইয়ানাফ আহমেদ স্পষ্ট শুনতে পেয়েছে
ইয়ানাফ আহমেদ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকালো
আর ওরা ওখানেই ভয় চুপসে গেছে
রশ্নি– বাবা তুমি কিছু বলছো না কেন,,কেমন আছেন উনি
ইয়ানাফ আহমেদ ইয়াশের বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা রশ্নিকে জানালো
রশ্নি সেখানেই কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো
ইয়ানাফ আহমেদ রশ্নিকে তুলে একটা বেঞ্চে বসালো
তারপর কমিশনারের কাছে গিয়ে বলল
— আমি আমার ছেলের বউকে নিয়ে যেতে চাই আর
ফাইলটাও ক্লোজ করাতে চাই
— দেখুন এটা একটা সিরিয়াস কেস,,আমরা এভাবেই ওনাকে ছেড়ে দিতে পারি না
তা ছাড়া বড় স্যারের পারমিশন ছাড়া তো আর আমরা এমনি এমনি কিছু করতে পারি না তাই না
ইয়ানাফ আহমেদ কিছু না বলে
ফোনটা বের করে একজনকে কল দিলো
তারপর কিছুক্ষন কথা বলার পর ফোনটা কমিশনারের কাছে দিলো
–নিন কথা বলুন,,আপনাদের বড় স্যার এর সাথে
ফোনটা নিয়ে কিছুক্ষন কথা বলার পর
আবার ইয়ানাফ আহমেদের হাতে দিয়ে দিলেন
ইয়ানাফ– আমি কি এবার আমার বৌমাকে নিয়ে যেতে পারি?
–জি তবে তার আগে কিছু ফর্মালিটিস পূরণ করতে হবে
— আমি করে দিচ্ছি
ফর্মালিটিস গুলো পূরণ করে রশ্নিকে নিয়ে ইয়াশের বাবা হসপিটালের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন
.
হসপিটালে রশ্নিকে দেখেই অনিমা বেগম ক্ষেপে যায়
উনি গিয়ে যেই না রশ্নিকে মারতে যাবেন তার আগেই ইয়ানাফ আহমেদ তাকে আটক ফেলেন
— কি করছো অনিমা,,শান্ত হও
— তুমি এই অলক্ষনি মেয়েটাকে এখানে এনেছ কেন?
উনি এবার রশ্নিকে উদ্দেশ্য করে বলতে শুরু করেন
— আমার ছেলেটাকে একবার মেরে শান্তি হয়নি তোর?
আবার এসেছিস? নাকি পুরোপুরি মরে নি বলে আবার মারতে এসেছিস
ইয়ানাফ– অনিমা প্লিজ সিনক্রিয়েট করো না
অনিমা– আমি সিনক্রিয়েট করছি? আর ও দুধের ধোয়া তুলসী পাতা?
ইয়ানাফ– দেখো ও ইয়াশের স্ত্রী তাই ওর অধিকার আছে নিজের স্বামীকে দেখতে আসার
অনিমা– না,,ওর আর ইয়াশের মধ্যে এখন শুধু খুনী আর ভিকটিমের সম্পর্ক
আচ্ছা তুমি কিসের তৈরি বলতো,,
যেখানে নিজের ছেলেটা জীবন আর মৃত্যুর মাঝে ঝুলে আছে সেখানে তুমি এই খুনীটার হয়ে কথা বলছো
ইয়াশের বাবা চুপ করে রইলেন,,,,
অনিমা– শুনো ও এখানে এসেছে ঠিকই কিন্তু ওকে আমি আমার ছেলের আসে পাশেও ঘেঁষতে দিব না
এই কথাটা মাথায় রেখো
ইয়ানাফ– অনিমা তুমি কিন্তু…..!!
রশ্নি– থাক না বাবা,,,আমি এখানে থাকতে পারলেই হয়েছে
অনিমা বেগম মুখ বাকিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন
.
রশ্নি দরজার বাহির থেকে কয়েকবার ইয়াশকে দেখে এসেছে কিন্তু ভেতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না
মুখে হাত দিয়ে দিয়ে বসে আছে
ইয়াশের সাথে কাটানো সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত গুলো চোখের সামনে ভেসে আসছে
ওর পাগলামো,একটুতেই রাগ করে ফেলা, ঝগড়ার মাঝে হঠাৎ করে কিস করে বসা, জোর করে আদর করা
স্পেশালি ঐদিনের কথাটা
যেদিন ইয়াশ শুধু মাত্র ওর হাতে খাবে বলে নিজের হাত কেটে ফেলেছিল
সেই চঞ্চল রাগি মানুষটা আজ নিস্তেজ হয়ে শুয়ে আছে
তাও শুধু মাত্র ওর দোষে
ভেবেই চোখের কোন দিয়ে পানি বেরিয়ে এলো
হঠাৎ কারো পায়ের শব্দ পাওয়াতে রশ্নি মুখ তুলে তাকায়
লোকটা হন্নতন্ন হয়ে অনিমা বেগমের কাছে গেল
রশ্নি খেয়াল করলো লোকটা একা না সাথে একটা মেয়ে আর আরেকটা ছেলেও এসেছে
মেয়েটা অনিমা বেগমকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলো তাই ওর মুখ ঢাকা ছিল তাই রশ্নি মেয়েটাকে দেখতে পারেনি
তারপর কিছুক্ষন তার সাথে কথা বলে
আই. সি.ইউ. রুমে ঢোকার কিছু স্পেশাল রুলস ফলো করে ভিতরে গেল
তারপর বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এলো
লোকটার চোখ মুখ ফোলা
হয়তো কেঁদেছে
রশ্নি এবার ভালো করে লক্ষ করে দেখল এটা সেহের
আর সাথের মেয়েটা আর কেউ না তার প্রাণ প্রিয় বান্ধবী সানা
রশ্নির মনে হলো যেন ও সবার মাঝে খুব আপন কাওকে খুঁজে পেল
রশ্নি গিয়ে সানাকে জড়িয়ে ধরলো
কিন্তু তার আগেই সানা ওকে সরিয়ে নিল
আর সবার সামনে ঠাস করে একটা চড় লাগিয়ে দিল
রশ্নি গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
এই মুহূর্তে কি বলা উচিত তা ওর জানা নেই
সানা– সবই শুনেছি তুই কি কি করেছিস
আমার তো এখন এটা ভেবেও লজ্জা হচ্ছে যে একদিন তুই আমার বান্ধবী ছিলি
রশ্নি ছলছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে
সেহের– আমরা জানি যে ইয়াশ অতীতে যা করেছে তা অবশ্যই ভুল ছিল কিন্তু ও তো তোমাকে সম্মান দিয়ে বিয়েও করেছিল
তাহলে কেন এমনটা করলে আমার বন্ধুটার সাথে
ওই যাই করেছে কিন্তু তার প্রাপ্তি মৃত্যু হতে পারে না
রশ্নির শেষ আশাটাও মরে গেল
ও গিয়ে আবার নিজের জায়গায় বসে গেল
তখনই সেখানে আরেকটা ছেলেও ছুটে আসলো
ছেলেটাকে চিনতে আর রশ্নির বাকি নেই
এটা মুহিত যে রশ্নিদের কথায় ইয়াশের বিরুদ্ধে গিয়েছিল
মুহিতকে এখানে দেখে রশ্নির কিছুটা অবাক লাগলেও কিছু বললো না
কিন্তু মুহিত এসে ইয়াশের খোঁজ না করে রশ্নিকে খুঁজতে শুরু করলো
শেষে রশ্নিকে পেয়ে ওর কাছে এগিয়ে গেল
মুহিত– ম্যাম এটা আপনি কেন করলেন? স্যার আপনাকে এত ভালোবাসতো তারপরও?
রশ্নির জানা মতে ইয়াশ রশ্নিকে তাদের হানিমুনে গিয়ে প্রপোজ করে সো এর গায় কারোই জানার কথা না যে ইয়াশ ওকে ভালোবাসে
মুহিতের তো না ই
কারন মুহিত যেদিন চলে গিয়েছিল সেদিন তো ইয়াশ সেহেরের পার্টিতে ওই কান্ডটা ঘটাতে যাচ্ছিল
তাহলে?
রশ্নি কিছু বলছে না দেখে মুহিত আবার বলা শুরু করলো
— আসলে আজ যা হয়েছে তার জন্য আমিও যথেষ্ট দায়ী
আমার আপনাকে সবকিছু আগেই বলে দেওয়া উচিত ছিল
রশ্নি– মানে,, কি বলছেন এসব? কি জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল?
মুহিত– সব বলবো কিন্তু এখানে নয়
বাহিরে চলুন
রশ্নি– হুম চলুন
বলে মুহিতের সাথে বাহিরে গেল
মুহিত এবার বলা শুরু করলো
— আচ্ছা ম্যাম,,এত বড় একজন বিজনেসম্যান ধর্ষণের দায়ে জেলে গেল কিন্তু তা একবার মিডিয়ার কানে পৌছালো না
তার থেকেও বড় কথা জেলে গেল তো গেল
তা একদিনের মধ্যেই বেরিয়ে আসলো
ব্যাপারগুলো কি হাস্যকর নয়?
রশ্নি ভেবে দেখলো মুহিতের কথা গুলোতে যুক্তি আছে কিন্তু এগুলোর মানে কি?
রশ্নি– কিন্তু আমাকেও তো খুনের দায়ে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বাট বাবার একটা ফোন কলে সাথে সাথে আমাকে ছেড়ে দিলো
সেখানে স্যারের জন্য ওটাও তো কোনো বড় ব্যাপার না
মুহিত– আপনার ব্যাপারে সত্যিই সত্যিই বড় স্যার
আপনাকে একটা কলেই ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছেন কারন সেই ক্ষমতা তিনি রাখেন
অবশ্য স্যারের বেলায়ও ভিন্ন কিছু না কিন্তু এমন কিছু ঘটেই নি যার জন্য তাকে জেলে থাকতে হবে
রশ্নি– আমি কি বলছেন এসব,,আমি কিছুই বুঝতে পারছি না
মুহিত– আমি বলছি
আচ্ছা যেই বেক্তি এমন একটা মাস্টার প্ল্যান সাজাতে পারে তার মাথায় সিসি টিভির ব্যাপারটা আসবে না ভাবাটাও অস্বাভাবিক
দেখুন আমি ক্লিয়ারলি বলছি
আসলে স্যারের কোনো ইন্টেনশন ছিল না আপনার সাথে ওই পার্টিতে উল্টা পাল্টা কিছু করার
সেদিন ফোনে যে আমি কথা বলছিলাম তা আপনাকে শুনিয়েই বলছিলাম স্যারের কথাতে
আর আপনিও তাই তাইই করলেন যে যা স্যার ভেবেছিলেন
দেখুন স্যার এগুলো কেন করেছেন তা তো আমি জানি না কিন্তু এইটুকুই বলবো যে স্যার আপনাকে ধর্ষণ করতে চায়নি না ওইদিন তার নেশা হয়েছিল
সে শুধু আপনাকে অনেক ভালোবাসে
মুহিতের কথা গুলো রশ্নি না বুঝলেও এইটুকুই বুঝতে পারলো যে ইয়াশ ওকে ধর্ষণ করতে চায়নি বরং ওর মাথায় অন্য কিছু ছিল যার জন্য ওর ওসব করতে হয়েছে
কিন্তু যে কারণেই করুক না কেন তার মূলে যে অঢের ভালোবাসা ছিল তা বুঝতে রশ্নির আর বাকি নেই
নিজের বোকামর জন্য কান্না পাচ্ছে প্রচুর
শুধু এইটুকুই মনে হচ্ছে
ইয়াশ যেন সুস্থ হয়ে যায়
জাস্ট একটা বার ওর মুখে “সুইটহার্ট” ওয়ার্ডটা শুনতে চায়
দুচোখ বেয়ে আবার আপনি ইচ্ছে পানি পড়তে শুরু করলো
.
21 hours later—★
রশ্নি সারাটা রাত ঘুমায়নি
বারবার শুধু ইয়াশের কথা মনে পড়ছিল
চেয়ারে বসে থাকতে থাকতে কখন যে চোখ লেগে গেছিল নিজেরও খেয়াল নেই
হঠাৎ সবার চেঁচামেচির ওয়াজে রশ্নির ঘুম ভেঙে গেল
উঠে দেখে তাদের বাড়ির সবাই দাঁড়িয়ে
সবার মুখে হাসি
একজন আরেকজনকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে
রশ্নিকে উঠতে দেখে ইয়ানাফ আহমেদ গিয়ে রশ্নিকে মিষ্টি মুখ করালো
রশ্নি– মিষ্টি কেন,, বাবা?
ইয়ানাফ– ইয়াশের জ্ঞান ফিরেছে রে মা
কথাটা শুনেই রশ্নির প্রাণটা যেন ফিরে এলো
রশ্নি হাসি হাসি মুখে জিজ্ঞেস করলো
— আমি ওনার কাছে যাব
ইয়ানাফ– ও 412 নাম্বার ক্যাবিনে আছে
যা মা ওকে গিয়ে দেখে আয়
রশ্নি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো
তারপর দৌড়ে ইয়াশের ক্যাবিনে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো
আজ ওর খুশি যেন বাঁধ মানছে না
সবকিছু রঙ্গিন লাগছে
হাওয়াতে যেন মিউজিক বাজছে
চার দিকে বিভিন্ন প্রজাপতি ডানা মেলে উড়ছে
নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে
কিন্তু ওর এই খুশি আর বেশিক্ষন টিকলো না
ইয়াশের ক্যাবিনে যাবে তার আগেই সামনে অনিমা বেগম এসে দাড়ায়
— কোথায় যাচ্ছ তুমি?
রশ্নি– ইয়া,,,
অনিমা– আমার ছেলের নামও মুখে আনবে না
ভাবলে কি করে তোমার মত একটা খুনীকে আমি আমার ছেলের সামনে যেতে দিব
রশ্নি– আমি……
অনিমা– দেখো তোমার জন্য এমনিতেই আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে তাই প্লিজ আর নতুন করে কোনো ক্ষতি করো না
বেরিয়ে যাও এখান থেকে
রশ্নি– আমি প্রমিজ করছি আমি এখন থেকে চলে যাবো তার আগে প্লিজ একটা বারের জন্য আমাকে আমার ইয়াশকে দেখতে দিন প্লিজ
অনিমা– না,,
ইয়ানাফ– অনিমা এত কঠোর হয়েও না
মেয়েটাকে একটা বারের জন্য দেখতে দাও
ইয়ানাফ আহমেদ অনেক রিকুয়েস্ট করার পর অনিমা বেগম রাজি হয় কিন্তু একটা শর্ত আছে
আর তা হলো
রশ্নি ওকে শেষ বারের মতো দেখবে
তারপর আর কখনো ইয়াশের সামনেও আসবে না
সব সময়ের জন্য ইয়াশের জীবন থেকে দূর হয়ে যেতে হবে
রশ্নি বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে কিন্তু তবুও তা চেপে রেখে তার শর্তে রাজি হয়ে গেল
.
রশ্নি গিয়ে ইয়াশের পাশে বসলো
ইয়াশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন আছে
রশ্নি ইয়াশের মায়া ভরা মুখটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিলো তারপর ওর হাতটা নিয়ে বুকের উপর রাখলো
রশ্নি– সত্যিই নিজেকে আজ বড্ড অসহায় মনে হচ্ছে
আমার একটা করা ভুলের জন্য আমার পুরো জীবনটা বদলে যেতে চলেছে
আপনাকে শেষ বারের মতো
দেখছি শেষ বারের মতো ছুঁতে পারছি
ভাবতেই কষ্ট লাগছে তাহলে আপনাকে ছাড়া আমি থাকব কি করে
জানেন তো আমি না হারে হারে বুঝতে পারছি যে আপনাকে আমি কত্বটা ভালোবেসে ফেলেছি
নিজের মুখ কোনো রকম চেপে কান্নাটা কন্ট্রোল করে নিলো
তারপর ইয়াশের কপালে নিজের ঠোঁটের গভীর পরশ বুলিয়ে দিলো
— আচ্ছা আপনি যদি এখন সজাগ থাকতেন তাহলে কি আপনার এতটা কাছে আসতে দিতেন?
হয়তো না কারন
কারন একটা মানুষ কিভাবে এমন একটা মানুষকে ভালোবাসতে পারে যে তাকে খুন করতে চেয়েছিল
রশ্নি নিজের চোখের পানি মুছে নিয়ে একটা গভীর নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো
–আপনি চিন্তা করবেন না,,আমি আর কখনো আপনার সামনে আসবো না
আপনাকে আর কখনোই এই মুখটা দেখতে হবে না
ভালো থাকবেন…!!
বলে ইয়াশকে শেষ বারের মতো দেখে সেখান থেকে বেরিয়ে এলো
তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসছিল
নেহাকে দেখে থেমে গেল
রশ্নি– চিন্তা করো না,,,একজন আছেন যিনি উপর থেকে সবটা দেখছেন,,,তোমার বিচারও সে করবেন
বলে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল
.
করা রোদের মধ্যে রশ্নি হেটে চলেছে
হঠাৎ কেমন যেন সব চক্কর দিতে শুরু করলো
মাথা ঘুরাচ্ছে
সামনে একটা ট্রাক আসছে
আর রশ্নির সেদিকে কোনো খেয়াল নেই
হঠাৎ গাড়িটা রশ্নির একদম কাছে চলে আসলো সর রশ্নি…….!!
।
।
।
চলবে,
নাও তোমাগো ইয়াশরে আবার জিন্দা কইরা দিলাম
এবার আমারে সবাই ট্রিট দাও?
#Mr_Devil
#Part_42
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
।
।
।
রশ্নি মিটমিট করে খুলে দেখে ও একটা বেডে শুয়ে আছে
রশ্নি আস্তে করে উঠে বসে ভালো করে চারদিকটায় চোখ বুলিয়ে দেখলো ও একটা ক্লিনিকে আছে
শরীরটাও বেশ ক্লান্ত লাগছে
পাশে তাকিয়ে তো আরো অবাক
এ যে তার চাচাতো ভাই শুভ
রশ্নি– তুই এখানে? দেশে কবে ফিরলি?
আর আমিই বা এখানে কিভাবে?
শুভ– বেশি হাইপার হইস না,,সব বলছি
এক সপ্তাহ আগে দেশে এসেছি
অনুর জন্য,,ওর মা বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল তাই দেশে এক কয়েকদিনের জন্য এসেছিলাম
আজ রাতেই আমাদের সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট
তো আজই আবার ফিরে যাচ্ছি
(শুভর ওয়াইফের নাম অন্তিকা
কিন্তু শুভ অনু বলে ডাকে)
অনুর জন্য কিছু কিছু দরকারি জিনিষ নেওয়ার ছিল সেগুলোই নিতে এসেছিলাম আর রাস্তায় তোকে দেখতে পেলাম
আর সামনেই একটা ট্রাক আসছিল
আমি না আসলে কি দুর্ঘটনাটাই না ঘটতো
আর আমি বাঁচানোর সাথে সাথে তুই সেন্সলেস হয়ে পড়লেই
আচ্ছা তুই এত কেয়ারলেস কেন বল তো…
খাওয়া দাওয়া করিস না নাকি
রশ্নি– ওহ আচ্ছা,,,, কিন্তু আমার তো কিছুই হয়ে নি
কালকের থেকে কিছু খায়নি বলে হয়তো শরীরটা দুর্বল লাগছিলো
শুভ– কেন খাসনি? তোর জামাই তোকে এমনি না খাইয়ে বাড়ি থেকে বের হতে দিলো?
তুলে নিয়ে গিয়ে যখন বিয়েটা করেছে কেয়ার ও তো রাখা উচিত তাই না
জামাই”” কথাটা শুনে রশ্নির মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল
তখনই ভিতরে ডক্টর আসলো
শুভ– ডক্টর কি হয়েছে আকার বোনের?
— টেন্স হবেন না,,,ইটস আ হ্যাপি নিউজ
রশ্নি– কি নিউজ?
— ইউ আর প্রেগন্যান্ট,,
মা হতে চলেছেন আপনি,,আর আপনি মামা
আমি এতক্ষন বলিনি কজ, আমি চেয়েছিলাম
উনার জ্ঞান ফিরলে
আপনাদের দোনোজনকে সংবাদটা একসাথেই দিব
কথাটা শুনা মাত্র রশ্নির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল
এটা যেমন খুশির কান্না সাথে কষ্টেরও
ও মা হতে চলেছে এটার খুশি তো আছেই
কিন্তু ইয়াশ যে ওর পাশে নেই
শুভ এসে রশ্নিকে জড়িয়ে ধরলো
— Congratulations বোনু
রশ্নি এখনো ওভাবেই বসে আছে
.
শুভ আর রশ্নি ক্লিনিকের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে
— চল তোকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসি
রশ্নি– কোন বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসবি রে শুভ?
আমার যে বাড়ি বলতে আর কিছু নেই
শুভ– মানে? কি বলছিস এসব
রশ্নি এবার কেঁদে দিলো
তারপর শুভকে এ পর্যন্ত ঘটা সব কিছু খুলে বললো
— কাঁদিস না বোনু,, এটা তোর দোষ না তোকে ফাঁসানো হয়েছে
রশ্নি– শুভ,,আমি ইয়াশকে জানাতে চাই এই বেবিটার ব্যাপারে
শুভ– দেখ এখন যদি তুই আবার সেখানে যাস,,তাহলে তোর শাশুড়ি তোকে ইয়াশের কাছে যেতে দিবে না,,আর দেখ তুই কাজটা যেই পরিস্থিতিতে পরেই কর না কেন সেটা এখন ইয়াশ বুঝবে না
ও তোকে ভুলই বুঝবে
রশ্নি– তাহলে এখন আমি কি করবো??
আমি তো মাকে কথাও দিয়েছি যে আমি আর কখনো ইয়াশের সামনে আসবো না
শুভ– তুই আমার সাথে চল
রশ্নি– কোথায় যাবো?
শুভ– তুই আজ থেকে আমাদের সঙ্গে থাকবি
রশ্নি– তা হয় না রে শুভ,,
শুভ– দেখ আমি অত কিছু বুঝি না
তুই আমার সঙ্গে এখন যাচ্ছিস এটাই ফাইনাল আর আজ থেকে আমাদের সঙ্গেই থাকবি
রশ্নি হাজার বার চেষ্টা করেও শুভর সাথে পেরে উঠলো না
শেষে ওর রাজি হতেই হলো
.
এদিকে ইয়াশের ঘুম জ্ঞান ফেরার পর থেকেই রশ্নি রশ্নি রশ্নি করছে
কিছুতেই ওকে থামানো যাচ্ছে না
— বাবাই আমার এমন করে না,,দেখো মা তো আছে তোমার পাশে (অনিমা)
ইয়াশ– হ্যা মম,,বাট রশ্নি কোথায়,,
আমি ওর সাথে দেখা করতে চাই
অনিমা– ও তোমাকে মারার চেষ্টা করেছে,,সেটা কি করে ভুলে গেলে তুমি,,
ইয়াশ– দেখো মা,,আমি জানি ও শুধু শুধু এমনটা করেনি নিশ্চই কোনো কারণ আছে
কজ, আমাকে মারার পর ওর চোখে আমি স্পষ্ট আমার জন্য ব্যথা দেখতে পেয়েছি
অনিমা– ভুল দেখেছো তুমি,,ও জাস্ট একটা খুনী,, ও আমার ছেলেকে মারতে চেয়েছিল
এর থেকে বেশি কিছু না
ইয়াশ– মম প্লিজ,,আমি ওর নামে আর একটা বাজে কথা সহ্য করবো না,,
অনিমা– পালিয়ে গিয়েছে ও,,
ওকে যেন আমরা শাস্তি দিতে না পারি তাই পালিয়ে গিয়েছে
ইয়ানাফ– অনিমা,,
অনিমা বেগম চোখ রাঙিয়ে তাকে চুপ থাকতে বললেন
অনিমা বেগম ইয়াশের বাবাকে এক সাইডে নিয়ে গিয়ে বললেন
— দেখতে পাচ্ছ না নিজের ছেলের অবস্থা?
কি করে গেছে মেয়েটা?
এই অবস্থায় ওকে এগুলো বলে না বুঝলে ওর শরীরের সাথে মেন্টালিটি কন্ডিশনও বিগড়ে যাবে
ইয়াশ– রশ্নিকে ওর কাছে এনে না দিলে
ও এমনিতেই পাগল হয়ে যাবে
অনিমা– শুনো একদম বেশি কথা বলবে না,,চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে
তোমাকে তোমার ছেলের কসম লাগে যদি আরেকটা বাড়তি কথা বলেছো তো
ইয়ানাফ– যা খুশি করো
বলেই রাগে গজগজ করতে করতে ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে গেলেন
এদিকে নেহার গা টা জলে যাচ্ছে এসব দেখে
এতকিছু করার পর ইয়াশ ওই মেয়েটারই গান গাইছে
— এটা মানুষ নাকি অন্য কিছু
কি দিয়ে তৈরি কে জানে
নেহা মনে মনে এসব ভাবছিল তখনই ওর ফোন “টুকুশ” করে বেজে উঠে
মানে মেসেজ এসেছে
মেসেজটা দেখা মাত্র ওর মুখে বাঁকা হাসি ফুটে উঠলো
নেহা– হ্যা আন্টি একদমই ঠিক বলছে
রশ্নি পালিয়ে গিয়েছে
কিন্তু শুধু শাস্তির ভয় না সাথে নিজের প্রেমিকের সাথেও পালিয়েছে
ইয়াশ– জাস্ট শাট আপ নেহা,,,,তোমার মুখে অন্তত আমি রশ্নির ব্যাপারে কোনো ফালতু কথা শুনব না
নেহা– ঠিক আছে,,নিজেই দেখে নাও
বলে ফোনটা বের করে রশ্নি আর শুভর জড়িয়ে ধরে থাকার টাইমের ছবিটা বের করে ইয়াশের সামনে ধরলো
ইয়াশ ছবিটা দেখা মাত্র ফোনটা ছুড়ে মারে
আর ওটা সাথে সাথে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়
নেহা আর অনিমা খিচে চোখ বন্ধ করে নেয়
অনিমা– ওর ফোন ভেঙে কি হবে?
যা হওয়ার তো হয়েই গেছে
দেখো বাবাই তোমার ভালোর জন্য বলছি
ভুলে যাও ওকে
কারো কথাই ইয়াশের কানে গেল না
একা একা কি যেন বিড়বিড় করছে
— তোমরা কি প্লিজ আমাকে একটা একা থাকতে দিবে
অনিমা বেগম ইশারায় সবাইকে বাহিরে চলে আসতে বললো
আর নিজেও বেরিয়ে গেল
ইয়াশ– আমি জানি না
তুমি সত্যিই পালিয়েছ কিনা
কিন্তু একটা কথা মাথায় রেখো,তোমাকে যদি তোমার বিয়ের আসর থেকে তুলে আনতে পারি তাহলে পৃথিবীর যে প্রান্তে যার সাথেই যাও না কেন,, সেখান থেকেও তুলে আনতে পারবো
কারন তুমি শুধুই আমার,,
দরকার হলে হাত পা ভেঙে নিজের কাছে রেখে দিব
কিন্তু তোমাকে আমার চাইই চাই
সেটা যে কোনো মূল্যেই হোক না কেন
তুমি শুধুই আমারই
গেট রেডি টু কাম ব্যাক টু মি, সুইট হার্ট (বাঁকা হেসে)
.
∆∆∆Few weeks later∆∆∆
ইয়াশ এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে
কিন্তু ওর মন রশ্নিকে ছাড়া একদমই সুস্থ নেই
আর এই কয়েকদিনে ইয়াশ ওর লোকগুলোকে রশ্নিকে খোঁজার জন্য লাগিয়ে দিয়েছে
ওরা অনেক খুঁজেও রশ্নিকে পায়নি
ইয়াশ যেহেতু এখন সুস্থ আছে আছে তাই ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে
ও এখন থেকে নিজেই রশ্নিকে খুঁজবে
কিন্তু ইয়াশের এইসব কান্ডে অনিমা বেগম মোটেও খুশি নেই
অনেক চেষ্টা করেছে ইয়াশের মাথা থেকে রশ্নির ভূত নামানোর কিন্তু বারবার তা অপাত্রে দান করাই হয়
ইয়ানাফ আহমেদ সেদিনের পর থেকে আর অনিমার সাথে কথা বলেন না
যথা সম্ভব দুরুত্ব বজায় রাখেন আর নিজেও রশ্নিকে খোঁজার চেষ্টা করেন
.
ইয়াশ হাজার খুঁজেও রশ্নিকে পায়নি
এদিকে ওর মেন্টালিটি কন্ডিশন দিন দিন উইক হয়ে পড়ছে
ওর অবস্থা পাগল প্রায়
ডিজ রাত রশ্নি রশ্নি করে
একা একা বসে কার সাথে যেন কথা বলতে থাকে
জিজ্ঞেস করলে বলে ও নাকি রশ্নির সাথে কথা বলে
রশ্নি নাকি আসে আবার ওকে একা রেখে চলে যায়
এদিকে ছেলের এই অবস্থা দেখে ইয়ানাফ আহমেদ সবার আড়ালে অঝরে চোখের পানি ফেলেন
.
কেটে গেছে অনেকদিন
ইয়াশের অবস্থা দিন বা দিন আরো ক্রিটিকাল হয়েছে
খাওয়া দাওয়ার প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন
একজন নাম করা Phycologist কেও ইয়াশকে দেখানো হয়েছে
উনি বলেছেন
ইয়াশ যা চায় তা ওকে এনে না দিলে ওর মানসিক অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে
ইয়ানাফ আহমেদ এসব আর সহ্য করতে পারছেন না
তাই উনি ডিসাইড করেছেন
ইয়াশকে এবার নিজের দায়িত্বে উনি সুস্থ করে তুলবেন
ইয়ানাফ– শুনো অনিমা,, আমার ছেলের অবস্থার পিছনে শুধু মাত্র তুমি দায়ী
ওকে যদি ঐদিন রশ্নির পালিয়ে যাওয়ার কথা টা না বলতে তাহলে হয়তো ওর মানসিক অবস্থা আজ এমন হতো না
অনিমা– তুমি কি বলছো এসব? আমার দোষ?
সব দোষ ওই মেয়েটার,,কোনো মা ই নিজের ছেলের খুনীকে তার সাথে থাকতে দিতে চাইবে না
তাই আমি যা করেছি একদম ঠিক করেছি
ইয়ানাফ– কিন্তু আমি এখন যা করবো তাও ঠিক করবো,,তার মাঝে তুমি তোমার কোনো ঠিক ঢোকাবে না,,মাইন্ড ইট
বলে ইয়াশের রুমে চলে গেলেন
— আসবো বাবা,,,,
ইয়াশ মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো
— দেখো বাবা আমি জানি তুমি ড্যাডের উপর রেগে আছো কিন্তু,,,
— আর সবসময় রেগেই থাকবো,, তুমি মাম্মামকে আমার কাছে এনে দাওনি
আর আমাকে একা রেখেও চলে গিয়েছিলে
তুমি খুব পচা
— মাম্মাম তো তোমার কাছেই আছে পাপাই,,তারা হয়ে রোজ তোমাকে দেখে
ইয়াশ– তাহলে আমাকে আর আগের মতো আদর করে না কেন?
ইয়ানাফ আর কিছু বলতে পারলেন না
ইয়াশকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিলেন
— ড্যাড,,আমি কি খুব খারাপ
— না বাবা তুমি একটুকুও খারাপ না,,তুমি খুব ভালো
— তাহলে সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যায় কেন?
মাম্মাম চলে গেল,,তুমিও চলে গিয়েছিলে
আর এখন রশ্নিও চলে গেল
— এইতো আমি তোমার কাছে আছি আর কখনো যাবো না,,,আর রশ্নিকেও এনে দিব
রশ্নিকে এনে দিবে” শুনে ইয়াশ অনেকটা এক্সাইটেড হয়ে গেল
— তুমি সত্যি বলছো? রশ্নিকে এনে দিবে?
— হ্যা এনে দিব কিন্তু কিছু শর্ত আছে
— শর্ত? আমি যে কোনো শর্তে রাজি আছি তুমি শুধু আমার রশ্নিকে আমার কাছে এনে দাও
— রশ্নিকে এনে দিব,,কিন্তু তোমার গুড বয় হতে হবে
যেমন, জেদ করতে পারবে না,,সময় মতো খেতে হবে
তাহলেই রশ্নি তোমার কাছে আসবে
— আমি সব কথা মেনে চলবো,,শুধু রশ্নি আমার কাছে ফিরে আসলেই হবে
ইয়ানাফ আহমেদ ইয়াশের কপালে চুমু দিয়ে চলে আসলেন
।
।
।
চলবে,