Mr_Husband,পর্ব_২৫,২৬

0
3615

#Mr_Husband,পর্ব_২৫,২৬
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_২৫

মুন রুমে এসে সোজা ওয়াসরুমে ঢুকলো। আর একবারে শাওয়ার নিয়েই বের হলো। মুন হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে মুন নিচে চলে গেল।এখন দুপুর তিনটা বাজে ওর খুব খিদে পেয়েছে। মুন চুমকিকে ডেকে বলল,

—“চুমকি রুশা খেয়েছে?”

—“হ আপামনি উনি তো সেই কহন খাইয়া ঘুমাইছে।”

—“ওহ! আচ্ছা তুই খেয়েছিস?”

—“না আপামনি। আমি পরে খামু।”

—“পরে কখন খাবি হ্যা? কটা বাজে খেয়াল আছে? এক্ষুনি আমার সাথে খেতে বস।”

—“আপামনি আপনি খান আমার কাজ আছে। কাজগুলা শেষ কইরা তারপর খামু।”

—“তোকে আমি অফার করি নি অর্ডার করেছি। তাই আর একটা কথাও না বলে আমার রাগ উঠার আগে চুপচাপ খেতে বস।”

ধমকের সুরে কথাগুলো মুন চুমকিকে বলল। চুমকি ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি খেতে বসলো। রুশা উপর থেকে সব দেখছিল। রুশাকে আজ অন্য রকম লাগছে। মনে হচ্ছে অনেক খুশি। মুখে সয়তানি হাসি। চোখ কিছু বলছে। খাওয়া শেষে মুন প্লেট ধুতে চায় কিন্তু চুমকি কিছুতেই দেয় না। হাঠৎ মুনের মাথা চক্কর দিয়ে উঠে আর মুন পরে যেতে নেয় কিন্তু চুমকি ধরে ফেলে। মুনকে চেয়ারে বসিয়ে চুমকি চিন্তিত স্বরে জিজ্ঞেস করলো,

—“আপনে ঠিক আছেন তো আপামনি?”

—“হ্যাঁ! আমি ঠিক আছি।”

বলে মুন কপালে হাত দিতেই নিজের শরীরে ভয়ংকর জ্বরের আভাস পায়। মুন দ্রুতো উঠে দাঁড়ায় এক্ষুনি গিয়ে আগে মেডিসিন নিতে হবে না হলে এর জন্য পরে অনেক ভোগ আছে কপালে। মুন বৃষ্টির পানি সহ্য করতে পারে না। গায়ে একটু পরলেই ভয়ংকর জ্বর উঠে যায়। যেমন এখন উঠেছে। মুন উপরে যেতে যেতে চুমকিকে বলে,

—“শোন আমি উপরে যাচ্ছি। তুই সব গুছিয়ে তারপর নিজের রুমে গিয়ে রেস্ট কর তোকে আজ আর কিছু করতে হবে না।”

চুমকি মাথা নাড়ালো। মুন উঠে আস্তে আস্তে উপরে উঠলো। নিজের রুমের দিকে পা বাড়াতেই হঠাৎ কিছু পরার শব্দ পেলো। শব্দটা স্টোর রুম থেকেই আসছে। কিন্তু স্টোর রুমতো সব সময় লক করা থাকে। মুন ধীর পায়ে স্টোর রুমের দিকে এগিয়ে গেল। স্টোর রুমের ভিতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার তাই ভিতরে ঢুকতে কিছুটা ভয় করছে মুনের। মুন আল্লাহর নাম নিয়ে বুকে ফু দিয়ে ভিতরে ঢুকলো। ভিতরে ঢুকে চারদিকে তাকিয়ে শব্দ হওয়ার কারণ খুজতে লাগলো। হঠাৎ করে দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ শুনে ঘুরে তাকালো মুন। মুন দেখলো কেউ পেছন থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। মুন ঘাবরে গেল। দৌড়ে গিয়ে দরজায় আঘাত করতে করতে ডাকতে লাগলো,

—“কেউ আছো? দরজাটা খোলো। আমার ভয় করছে খুব! আমি এখানে আটকে গেছি! আমাকে বের করো প্লিজ।”

কিন্তু কারো কোনো সারা শব্দ পাওয়া গেল না। মুন দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিচে বসে পরলো। ভয়ে ওর হাত-পা থরথর করে কাঁপছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। ভালো করে শ্বাসও নিতে পারছে না। মাথা ঘুরছে। চোখে সব ঝাপসা দেখাচ্ছে। মুনের একটা ফোবিয়া আছে, ও বেশিক্ষণ বন্ধ জায়গায় থাকতে পারে না। মুন কাঁদতে কাঁদতে কাতর কন্ঠে ডাকলো,

—“আঁধার! আঁধার আপনি কোথায়? আমার খুব ভয় করছে এখানে। প্লিজ আমাকে এখান থেকে বের করুন নাহলে আমি, আমি এখানে দম বন্ধ হয়ে মরে যাবো! আঁধার! আঁধার!”

বলতে বলতেই নিস্তেজ হয়ে পরে মুনের শরীর। রুশা দরজার বাইরে স্টোর রুমের চাবি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। ঠোঁটে জয়ের হাসি। হঠাৎ কিছুটা রেগে গিয়ে মুখ শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

—“আমাকে নিচা দেখানোর ফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা এখন তুমি বুঝতে পারবে মুন।”

বলেই রুশা দরজা লক করে চলে গেল।

.
রাত আটটার দিকে আঁধার বাড়িতে ফেরে। মুনের জন্যই এতো তাড়াতাড়ি আসা। ওকে পড়াতে বসাতেও হবে। তাই জন্য তাড়াতাড়ি সব কাজ শেষ করে বাড়িতে চলে এসেছে। আঁধার সদর দরজার চাবিটা পাচ্ছে না। তাই দুবার কলিংবেল চাপলো। কিছুক্ষণ পরেই কেউ এসে দরজা খুলে দিলো। আঁধার ভেতরে প্রবেশ করে রুশাকে দেখলো। রুশা জোড়পূর্বক হেসে বলল,

—“আজ এতো তাড়াতাড়ি?”

—“কাজ শেষ তাই।”

—“ওহ্!”

আঁধার আর কিছু না বলে সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল। রুমে গিয়ে দেখলো মুন নেই। আঁধার ওয়াশরুমেও দেখলো নেই। ব্যালকনিতে চেক করলো সেখানেও নেই। আঁধার ভাবে কোথায় গেল মেয়েটা। আঁধার নিজের রুম থেকে বেরিয়ে আমরমান রেজওয়ান আর আরিফা রেজওয়ানের রুমে গেল। রুমে ঢুকে দেখে কেউ নেই। আঁধার জোরে জোরে চুমকিকে ডাকতে লাগলো। চুমকি নিচ থেকে এক প্রকার দৌড়ে এলো। আঁধার জিজ্ঞেস করলো,

—“মুন কোথায়?”

চুমকি ভীত কন্ঠে জবাব দিলো,

—“আপামনি তো নিজের ঘরেই।”

—“মুন রুমে নেই।”

—“কিন্তু আপামনি তো সেই দুপুরে খেয়েই নিজের ঘরে চলে যায়। সারাদিনে আর বেরও হন নি।”

আঁধারের মাথা কাজ করছে না। চুমকি বলছে দুপুর থেকে মুন ঘর থেকে বেরই হয় নি। কিন্তু মন তো রুমেই নেই। তাহলে ও গেলো কোথায়। আঁধার মনে মনে ভাবে মুন ছাদে থাকতে পারে হয় তো। আঁধার দৌড়ে ছাদে যায় পেছন পেছন চুমকিও যায়। ওরা পুরো ছাদ ঘুরে দেখে কিন্তু ছাদেও মুনের কোনো চিহ্ন নেই। আঁধার পকেট থেকে ফোন হাতরে বের করে ওখানে দাঁড়িয়েই কবির খানকে কল করলো। কল রিসিভ হতেই আঁধার নিজেকে স্বাভাবিক করে সালাম দিলো,

—” আসসালামুয়ালাইকুম!”

কবির খান গম্ভীর স্বরে সালামের জবাব দিলেন,

—“ওয়ালাইকুমাসালাম!”

—“কেমন আছেন আঙ্কেল?”

—“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি?”
“আমিও ভালো আছি।”

—“এখন আসল কথায় আসো, কিসের জন্য ফোন দিয়েছো বলো?”

—“আসলে আঙ্কেল আমি জানতে চাইছিলাম মুন কি ওবাড়িতে গিয়েছে?”

আঁধারের কথা শুনে কবির খানের ভ্রু যুগল কুঁচকে আসে। সে নিজের গম্ভীর্য বজায় রেখে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করে,

—“মুন হঠাৎ এ বাড়িতে আসতে যাবে কেন তাও একা? কিছু কি হয়েছে তোমাদের মধ্যে? আমার থেকে কিন্তু কিছু লানোর অথবা মিথ্যে বলার চেষ্টা করবে না।”

আঁধার বাধ্য হয়েই মিথ্যের আশ্রয় নেয়।

—“না আঙ্কেল, আপনি ভুল বুঝছেন! আসলে মুন আজ ওবাড়িতে যেতে চাইছিলো। কিন্তু আমার হসপিটালে আজ অনেক বেশি কাজের চাপ থাকায় নিয়ে যেতে পারিনি। তাই ভাবলাম আবার রাগ করে একা একা চলে যায় নি তো! তাই ফ্রি হতেই আপনাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম।”

কবির খানের আঁধারের কথা একদমই বিশ্বাস হচ্ছে না কিন্তু তবুও এ বিষয়ে কিছু বললেন না। উনি বললেন,

—“এ বাড়িতে আসেনি।”

—“ওহ! আচ্ছা আঙ্কেল ভালো থাকবেন। এখন রাখছি।”

কবির খানের উওরের আশা না করেই আঁধার ফোন কেটে দিলো আর ভাবতে লাগলো মুন কোথায় যেতে পারে। আঁধার ছাদ থেকে নেমে রুশার রুমে গেল। তারপর শান্ত স্বরে ওকে জিজ্ঞেস করলো,

—“মুনকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তুমি কি ও কে দেখেছো?”

রুশআ না জানার এ্যাক্টিং করে বলল,

—“কি বলছো এসব? মুনকে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি? কোথায় গেছে ও?”

—“সেটা জানা থাকলে আর তোমাকে জিজ্ঞেস করতাম না।”

বলেই আঁধার রুশার রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রুশা আর চুমকি আঁধারের পিছে পিছে যায়। আঁধার খুজতে খুজতে একদম শেষ মাথায় চলে এসেছে। আঁধার হাটতে হাটতে স্টোর রুমের কাছে চলে এসেছে। হঠাৎ আঁধারের পায়ের নিচে কিছু পরে। আঁধার নিচে তাকাতেই দেখে চুরি ভাঙ্গা কাচ পরে আছে নিচে। আঁধার এক হাটু ভেঙ্গে নিচে বসে একটা কাচ হাতে নিয়ে দেখে। কালো রঙের রেশমি চুরি। চুমি গুলো মুনের যা আঁধার নিজে এনে দিয়ে ছিলো। মুন অসাবধানে হাটতে গিয়ে পরে যায় আর হাতে থাকা চুরি কয়েকটা ভেঙে যায়। আঁধারের চিনতে দশ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগে নি। আঁধার কিছু একটা ভেবে স্টোর রুমের কাছে গায়ি দরজার লক ঘুরায় কিন্তু খুলছে না। এটা খুলতে হলে চাবি লাগবে। আঁধার চুমকিকে বলল,

—“গিয়ে স্টোর রুমের চাবি নিয়ে এসো।”

চুমকি নিচু গলায় বলল,

—“চাবি তো বড়মার কাছে থাকে। আর উনি তো কোনো পার্টিতে গেছে।”

রুশা তোতলিয়ে বলল,

—“স্টোর রুমের চা-চাবি দিয়ে কি হবে? আমাদের তো মুন কে খোঁজা উচিৎ।”

আঁধার রুশার কথায় পাত্তা না দিয়ে বলল,

—“চুমকি, আমার রুমের ল্যাম্পটেবিলেরভেতরে দেখবে একটা চাবি আছে। ওটা নিয়ে আসো।”

চুমকি মাথা নেড়ে চলে গেল। রুশার ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। এর মধ্যে চুমকি চাবি নিয়ে এসে আঁধারকে দিয়ে বলল,

—“এই নিন ভাইজান।”

আঁধার একবার রুশার দিকে তাকিয়ে দরজার লক খুলতে লাগলো। দরজা খুলতেই আঁধার স্তব্দ হয়ে গেলো। চুমকি চিৎকার করে বলল,

“আপামনি!”

#চলবে,

#Mr_Husband
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_২৬

আঁধার দৌড়ে গিয়ে মুনের মাথাটা কোলের মধ্যে নিলো। মুনের পুরো শরীর আগুনের ফুলকির মতো গরম। আঁধার মুনের হাতের কব্জি ধরে নিজের হাতে থাকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মুনের পালস্ রেট চেক করে। মুনের পালস্ রেট খুব লো। হার্টবিট ও কমে গেছে। চুমকি কাঁদছে আর মুনের হাত ধরে মুনকে ডাকছে। রুশা বাইরে দাঁড়িয়ে নখ কামড়াচ্ছে। ওর ভয় করছে যদি আঁধার সত্যিটা জেনে যায়! তাহলে কি হবে? রুশা নিজেকে শান্ত করতে মনে মনে বলল,

—“কাম ডাউন রুশা! কিছু হবে না। কারণ তুই তো এসবের কিছুই জানিস না। এতো চাপ নিস না।আঁধার জিজ্ঞেস করলে মিথ্যে কিছু একটা বানিয়ে বলবি।”

আঁধার মুনকে কোলে তুলে নিয়ে নিজেদের রুমে গেল। মুনকে বেডে শুইয়ে দিয়ে চুমকিকে বলল,

—“দ্রুত গিয়ে একটা বোলে করে ঠান্ডা পানি নিয়ে এসো।”

চুমকি মাথা নেড়ে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আঁধার এসি, ফ্যান সব অফ করে দিলো। জ্বর মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এক্ষুনি শরীর মুছিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। আঁধার ওয়াশ রুম থেকে এক বালতি পানি নিয়ে আসে। এর মধ্যে চুমকি ও একটা বোলে করে ঠান্ডা পানি নিয়ে আসে। রুশা রুমেই দাঁড়িয়ে ছিল। আঁধার দুজনকেই উদ্দেশ্য করে বলল,

—“তোমারা এখন আসতে পারো।”

রুশা বলল,

—“কেন আঁধার? আমিও তোমাকে হেল্প করি না।”

—“প্রয়োজন নেই।”

—“কিন্তু আঁধার…..”

আঁধার রেগে চেঁচিয়ে বলল,

—“কথা কানে যায় না? যেতে বলেছিল একবার!”

রুশা ভয়ে আর কথা বাড়ালো না। আস্তে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। চুমকি আঁধার বলা মাত্রই রুম ত্যাগ করে। আঁধার দরজা লাগিয়ে টাওয়াল বালতিতে চুবিয়ে মুনের শরীর মুছিয়ে দিতে নেয়। কিন্তু পরক্ষনেই কিছু একটা ভেবে থেমে যায়। কাবার্ড থেকে মুনের একটা ওড়না বের করে সেটা দিয়ে নিজের চোখ বেঁধে নেয়। তারপর মুনের শরীর মুছে নতুন কাপড় পড়িয়ে দেয়। কাবার্ড থেকে মোটা ব্লাংকেট বের করে মুনের গায়ে জড়িয়ে দিলো আঁধার। তারপর বোলের ঠান্ডা পানিতে রুমাল ভিজিয়ে মুনের মাথায় জ্বলপট্টি দিয়ে দিতে লাগলো। সাথে মাথায় পানি ও দিতে লাগলো। মুন যদি এখন জেগে থাকতো তাহলে আঁধারের ওর জন্য এতো চিন্তা, যত্ন প্লাস ভালোবাসা দেখে মনে হয় পাগল’ই হয়ে যেত। আঁধার একটু পর পর চেক করছে মুনের জ্বর কমেছে কিনা। সে’ইতো হলো আদের্শ স্বামী। যে কিনা নিজের স্ত্রীরর অসুস্থতার সময় খেয়াল রাখে। তার যত্ন করে। এভাবেই অর্ধেক রাত‌ পেরিয়ে যায়। শেষ রাতের দিকে যখন জ্বর কমে আসে তখন আঁধার মুনকে বুকের মাঝে নিয়ে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায়।

.
সকালে আঁধার আগে ঘুম থেকে উঠে মুনের শরীরের তাপমাত্রা চেক করে। আগের থেকে অনেক কমে গেছে। জ্বর নেই বলতে গেলে। কিন্তু শরীর অনেক দূর্বল। আঁধার ফ্রেশ হয়ে নিচে কিচেনে গিয়ে নিজের হাতে মুনের জন্য মিল্ক শেক, হাফ বোয়েল্ড এগ, স্যুপ, সালাদ, ফ্রুটস্ বানিয়ে নিয়ে যায়। ততক্ষণে মুনের ঘুমও ভেঙ্গে যায়। আঁধার এসে দেখে মুন বসে বসে ঝিমাচ্ছে। আঁধার টি টেবিলের উপর ট্রেটা রাখতে রাখতে বলল,

—“দ্রুত ফ্রেশ হয়ে এসো।”

মুন উঠে দাঁড়াতে গিয়ে পরে যেতে নেয় কিন্তু পরার আগেই আঁধার ধরে ফেলে। আঁধার কিছুটা রাগী স্বরে বলল,

—“এতো ছটফটে কেনো তুমি? দেখছো যে শরীর দুর্বল মাথাই জাগাতে পারছো না সেখানে উঠে দাঁড়াতে চাইছো!”

মুন মিনমিনিয়ে বলল,

—“স্যরি!”

আঁধার মুনকে ধরে ওয়াশরুমের কাছে নিয়ে যায়। তারপর বলে,

—“একা পারবে তো ফ্রেশ হতে নাকি হেল্প লাগবে?”

মুন ছোট করে বলল,

—“পারবো আমি!”

মুন ওয়াশরুমের ভেতরে চলে গেল। মুন বের হওয়া পর্যন্ত আঁধার ওখানেই দাঁড়িয়ে রইলো। মুন ফ্রেশ
হয়ে বের হতেই আঁধার আবার মুনকে ধরে বেডে নিয়ে বসিয়ে দিল। তারপর টিটেবিল থেকে ট্রেটা এনে মুনের সামনে রাখলো। মুন অবুঝ দৃষ্টিতে আঁধারের দিকে তাকিয়ে আছে। আঁধার ট্রের দিকে ইশারা করলো। মুন ট্রের দিকে একবার তাকিয়ে আবার আঁধারের দিকে তাকালো। আঁধার এবার বলল,

—“নেও শুরু করো।”

মুন ঢোক গিলে বলল,

—“এগুলো সব আমি খাবো?”

—“এখানে তুমি ছাড়া আর কেউ আছে বলে তো আমার মনে হয় না। কাউ কম বলে এখন খাওয়া শুরু করো।”

মুন আড়চোখে খাবার গুলোর দিকে তাকিয়ে মিনমিন করে বলল,

—“আমি এইসব খাই না।”

আঁধার চোখ রাঙিয়ে বলল,

—“তোমাকে এগুলোই খেতে হবে। এগুলো এখন তোমার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। আর এগুলো না খেলে ঝগড়া করার শক্তি কোথায় পাবে?”

মুন গাল ফুলিয়ে বলল,

—“আমি মোটেও ঝগড়া করি না। এক সপ্তাহ ধরে আমাদের ভালো করে প্রয়োজনের বাইরে কোনো কথাই হয় না। তারপরেও বলবেন আমি আপনার সাথে ঝগড়া করি?”

—“তোমাকে খেতে বলেছি নাকি পকপক করতে?”

মুন বুকের উপর হাত ভাঁজ করে বলল,

—“আমি এসব আফ্রিকার খাবার খাই না।”

—“হোয়াট? এগুলো আফ্রিকানরা খায়? তুমি দেখেছো?”

—“হ্যাঁ!”

—“দেখো আমার রাগ উঠার আগে এগুলো সব ফিনিস করো। একটুকরো খাবারও যেন না থাকে।”

মুন চেঁচিয়ে বলে উঠলো,

—“কিহ! এতো গুলো খাবার আমি একা খাবো?”

—“ইয়েস। আমি আর একটা কথাও যেন না শুনি। চুপচাপ খাও।”

ধমকের সুরে কথা গুলো বলল আঁধার। মুন নাকের জল চোখের জল এক করে কাঁদছে আর খাচ্ছে। মুনের মুনের মতে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য খাবার এগুলো।‌ এগুলো খেয়ে মনে হয় মুন আরো অসুস্থ হয়ে পরববে। মুন আঁধারকে মানানোর অনেক চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়। পরে অনেক কষ্টে সবগুলো খাবার খাওয়া শেষ করে। মুনের এখন বমি পাচ্ছে খুব। আঁধার ধমক মেরে বলে ওঠে,

—“ও ভাবে বসে আছো কেন? চুপচাপ শুয়ে থাকতে পারো ন?”।।

মুন চুপচাপ আঁধারের কথা মতো হেলান দিয়ে শুয়ে পরলো। আঁধার কিছুক্ষণ পরে ল্যাপ্টপে কাজ করতে করতে জিজ্ঞেস করলো,

—“তোমাকে স্টোর রুমে কে লক করে রেখেছিল?”

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here