Mr_Husband,পর্ব_৪৮,৪৯

0
3086

#Mr_Husband,পর্ব_৪৮,৪৯
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_৪৮

লোকটি পেছন থেকে আক্রমণ করে মুনের গলা চেপে ধরে। আঁধার অন্য তিনজনকে একসাথে সামলাচ্ছে।তিনজনই এক সাথে আক্রামণ করছে তাকে। একজন একজন করে আসলে ওদের কাবু করা দুধ ভাতের মতো আঁধারের কাছে। কিন্তু মানুষ রুপি তিনটা দানবের সাথে পেরে উঠছে না আঁধার। তাই আঁধার মুনের দিকে তাকানোর সুযোগ পায়নি। মুন লোকটার হাটুতে সজোরে লাথি মারে সাথে সাথে লোকটা মুনকে ছেড়ে দেয়। মুন সুযোগ বুঝে পেছনে ঘুরে লোকটার নাক বরাবর একটা ঘুষি মারে। লোকটা আত্মনাদ করে উঠে নাকে হাত চেপে দু কদম পেচিয়ে যায়। তারপর রেগে এসে মুনের গালে সজোরে থাপ্পড় দেয়। এক থাপ্পড়ে মুনের ঠোঁট কেটে রক্ত বের হয়ে যায়। মাথা ঝিম ধরে আসে। লোকটা মুনের চুলের মুঠো শক্ত করে টেনে ধরে। মুন রেগে লোকটার পেটে হাটু দিয়ে জোরে আঘত করে। তাই লোকটা মুনকে ছেড়ে পেট চেপে ধরে। লোকটা দাঁত কিড়মিড় করে মুনের গলার দিকে হাত বাড়াতেই মুন লোকটার হাত মুচংএ ধরে। মুনের উপর আবার আক্রমণ করার আগেই মুন ক্লোরোফর্ম শুকিয়ে অজ্ঞান করে দেয় তাকে। তারপর আঁধারের দিকে তাকায় দুজন লোক মিলে আঁধারকে চেপে ধরেছে। আরেক জন আঁধারের পেটে ঘুষি মারছে। লোকগুলো পাকিস্তানি। ইয়া লম্বা, বলিষ্ঠ শরীর। একদম দানবের মতো। এরকম তিন তিনটে মানুষ রুপি দানবের সাথে আঁধধার একা পেরে উঠছে না। মুন আসে পাশে চোখ বুলায় কিছু পায় কিনা সেই আশায়। পাকিস্তানিদের শরীরে অনেক শক্তি। আঁধার একা পারবে না। ওকে সাহায্য করতে হবে। মুন ইংল্যাণ্ড গিয়ে নিজেকে প্রট্যাক্ট করার জন্য সেল্ফ ডিফ্রেন্স শিখে ছিলো। যতই বিদেশ হোক মেয়েদের আত্মরক্ষা কৌশল শিখে রাখা ভালো। অসময়ে ঠিক কাজে লেগে যায়। যেমন এখন মুনের লাগছে। মুন পাশেই একটা বন্দক পরে থাকতে দেখে মুন ওটা উঠিয়ে নেয়। যে দুজন আঁধারকে ধরে রেখেছে তাদের পেছনে গিয়ে আচমকাই তাদের মাথায় সর্ব শক্তি দিয়ে আঘাত করে। লোক দুটো আঁধারের হাত ছেড়ে দিয়ে নিজেদের মাথা চেপে ধরে। আঁধার ছাড়া পেয়েই সামনে থাকা লোকটার নাক বরাবর ঘুষি মারে। তারপর লোকটার মাথা দু হাতে চেপে ধরে নিজের হাটু দিয়ে কয়েক বার আঘাত করে তার মাথায়। ওহ কতবার সাহস ও AR এর গায়ে হাত তুলেছে। ওর হাত আজ ভেঙ্গেই দিবে আঁধার। লোকটার মাথায় পেচানো কাপড়টা খুলে আঁধার লোকটার মুখ বেধে দেয় যাতে এর চিৎকার শোনা না যায়। আঁধার এখন হিংস্র সিংহতে পরিনত হয়েছে। মুনের উপর ওই দুটো লোক হামলে পরেছে। ওদিকে আঁধার অন্য লোকটাকে মারতে মারতে আধমরা বানিয়ে ফেলেছে। হঠাৎ মুনের মৃদু চিৎকারে লোকটাকে ছেড়ে দেয়। মুন মৃদু স্বরে হেল্প চাইছে,

—“আঁধার, আঁধার প্লিজ হেল্প মি।”

মুন মেয়ে হয়ে দুটো লোকের সাথে একা পেরে উঠছে না। আঁধার একটা মুনের থেকে ছাড়িয়ে এলোপাথাড়ি ঘুষি দিতে শুরু করে। নাক মুখ দিয়ে রক্ত ছুটে যায় লোকটার। আঁধার যেইটাকে ধরছে একবারে অর্ধেক জান বের করে ছাড়ছে। মুন শুধে কোনো ভাবে সুযোগ পেলেই ক্লোরোফর্ম শুকিয়ে অজ্ঞান করে দিচ্ছে। মারামারি হাতাহাতি করার কারণে একটু আধটু চিৎকার চেচামেচি হলে পৌঁছে যায় আর বাকি দলের লোকদের কানেও পৌছায়। হলে মোট পাঁচজন পাহারা দিচ্ছে। তাদের মধ্যে তিনজন কে দেখতে পাঠায় কি হয়েছে। বাচ্চা গুলোর অবস্থা করুণ। ছোট ছোট মুখ গুলো শুকিয়ে গেছে। ক্ষুধার চোটে অনেকেই কান্না করছে। স্যার, ম্যাম’রা ভয়ে ভয়ে বাচ্চাদের চুপ করানোর চেষ্টা করছে। ওদের লিডার বাইরে দাঁড়িয়ে নিজেদের ফরমাশ জানাচ্ছে। তাদের দলের যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ছেড়ে দিলেই বাচ্চাদের ও টিচারদের বিনা ক্ষতিতে ছেড়ে দিবে। না হলে কাল পর্যন্ত এদের সবার লাশ পাবে বলে দিয়েছে। মোট চল্লিশ জন লোক। আঁধার আর মুন এতো জনকে একসাথে হ্যান্ডেল করতে পারছিলো না এমন সময় ইশী, আপন, আশিক, অয়ন এসে ওদের সাথে যুক্ত হয়। ওদের দেখে আঁধার স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে। মুনও ভরসা পায়। আর সবাই মিলে এক সাথে ধোলাই দেয় লোকগুলোকে। আঁধার হাপাতে হাপাতে দম নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে ইসীর দিকে,

—“তোরা কখন এলি?”

ইসী শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে উওর দেই,

—“এই তো কিছুক্ষণ আগে।”

জীবনেও এর আগে কখনো এভাবে মারামারি করেনি মুন। ওই লোকটার এক থাপ্পরে মনে হচ্ছে চাপার দাঁত সব কয়টা লড়ে গেছে। ঠোঁটের কোণে রক্ত জমাট বেধে আধে। কপালের একপাশ ফোলা। জায়গাটা পুরো নীল হয়ে আছে। এক জানোরের সাথে মারামারি করছিলো। লোকটা এক পর্যন্ত আচমকা মুনকে ধাক্কা মারো মুন দেয়ালের সাথে সজোরে বারি খায় কপালে। তখন থেকেই ব্যথায় কপালের ওই পাশটা টনটন করছে।

মুনের দিকে তাকাতেই মুনের এই অবস্থা দেখে বুকের মধ্যে চিন চিন ব্যথার আভাস পায় আঁধার। ব্যথায় দাঁত খিচে দাঁড়িয়ে আছে মুন। কপালে ফোলা, গালে স্পস্ট পাঁচ আঙ্গুলের ছাপে রক্ত জমাট বেধে আছে, ঠোঁটের কোণ ঘেষে রক্ত শুকিয়ে গেছে। তার কদম ফুলের মতো ফুরফুরে সতেজ বোকাপাখিটা এখন নিস্তেজ মনে হচ্ছে। প্রিয়তমার এই রুপ সহ্য করতে পারছে না আঁধার। ওই হারামির বাচ্চার কপালের ও বুকে পরপর ছয়টা গুলে করতে ইচ্ছে করছে। তাহলে একটু শান্তি পেত আঁধার। ইসী এতোক্ষন মুনকে খেয়াল করেনি। যখন চোখে পরলো ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো। বিষ্ময় কিংকত্যবিমুঢ় হয়ে বলল,

—“মুন তুমি এখানে?”

মুন বিনয়ি হাসি দিয়ে বলল,

—“কেমন আছো আপু?”

ইসী দুঃখি দুঃখি ভাব করে বলল,

—“ভালো আর থাকতে দিলে কই? তোমার দেবদাস কে সামলাতে সামলাতে নিজের কথাই ভুলে গেছি। এসেই যখন পরেছো, এখন নিজের পাগল প্রেমিক নিজে সামলাও।”

আঁধার আড়চোখে মুনের দিকে তাকিয়ে হালকা কাশে। সবাই মুনের সাথে কথা বলে। তারপর এক এক করে সামনের দিকে এগিয়ে যায় রিভলবার হাতে। মুনও ওদের পেছনে যাওয়ার জন্য পা বারাতেই আঁধার মুনের হাত ধরে ফেলে। মুন অবুঝ চোখে তাকায়। আঁধার এক টানে মুনকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে দেয়ালের সাথে লেগে যায়। মুন বিষ্ফরিত চোখে শুধু তাকিয়ে দেখছে আঁধারের কির্তিকলা। কিছু বলার শক্তি পাচ্ছে না। আঁধার পরম যত্নে মুনের কপালের উপর পরে থাকা চুল গুলো কানের পেছনে গুজে দেয়। মুনের সিরদারা দেয়ে শীতল স্রোত বয়ে যায়। আঁধার কি করছে এসব? মুনের মাথায় কিছু ঢুকছে না। আঁধার স্পর্শ পেয়ে ব্রেন অকেজো হয়ে গেছে। আঁধার কোমল ভাবে মুনের কপালে অধর ছোঁয়ায়। মুন চোখ বন্ধ করে কেপে উঠে। ওর ঠোঁট কাপেথরথর করে। সেদিকে তাকাতেই ঘোর লাগে আঁধারের। মনের মাঝে এক বৈধ ইচ্ছা জাগে। আজ আর নিজেকে বাধা দেয় না আঁধার। আজ রে কোনো বাধা নেই। শুধু একটু ভুল বোঝাবুঝি আর মান অভিমান ছাড়া। তহলে ক্ষতি কি নিজের এই বৈধ ইচ্ছেটাকে পূরণ করতে। আঁধার কিছু ভাবে না। আচমকাই সে তার ইচ্ছে পূরণ করে। মুনের হালকা গোলাপি ঠোঁট জোরায় নিজে ঠোঁট ছোয়ায়। আকষ্মিক ঘটনায় চমকে যায় মুন। দ্রূত চোখ খুলে। বিষয়টা পুরোপুরি বোধগম্য হতে মিনিট পাঁচেক সময় লাগে। সাথে সাথে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয় আঁধার কে। আচমকা ধাক্কায় কিছুটা পিছিয়ে যায় আঁধার। পরক্ষণেই আঁধারের মুখে বাকা হাসি ফুটে উঠে। মুন রাগে ফুসছে তা দেখে আঁধারের মজা লাগছে খুব। আঁধার দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,

—“আহ! কি টেস্ট! এরকম সুইটস রোজ রোজ খেতে পারলে ভালোই হয়।”

বলেই আঁধার তার সেই বিখ্যাত হাসি দিয়ে হেটে সামনে এগিয়ে যায়। মুনের গা ঘিন ঘিন করছে। ইচ্ছে করছে আঁধারের মাথা ফাটিয়ে দেই। ঠোঁটের ঘসতে ঘসতে বিরবির করে অজস্র গালি দিতে দিতে ওর হাটতে থাকে।
.
রাত একটু আগেই পাচিল টপকে বাউন্ডারির ভেতরে ঢুকেছে। রাত এদিক ওদিক তাকাতেই দেখে ওপাশের একটা ছোট জানালা খোলা। জানালাতে কোনো গ্রিল লাগানো নেই। এরকম গ্রিল ছাড়া কয়েকটা জানালা রাখা উচিত বলে মনে হচ্ছে এখন রাতের। কারণ বিপদে কাজে লাগে। জানালাটা দিয়ে ভেতরে ঢুকতে একটু কষ্ট হয় রাতের। রাত রুমের দরজা খুলে মাথাটা হালকা বের করে দেখে বাইরে কেউ আছে কি না। নাহ কেউ নেই। রাত নিজেকে রক্ষা করার জন্য পকেটে একটা ধারালো ছুড়ি রেখেছে। সাথে পেপার স্পে। এগুলো কাজে লাগবে রাত জানে। রাত খুব সাবধানে সামনে এগোয়। এখানে পদে পদে বিপদ। কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না রাতের। মিষ্টির জন্য নিজের জীবনও উৎসর্গ করতে পারবে। মিষ্টির ওর মেয়ে। ওর নিজের রক্ত না হলে কি হয়েছে? রক্তের সম্পর্কই কি সব? না! রক্তের সম্পর্কের চেয়েও বড় আত্মার সম্পর্ক। যেটা মিষ্টির সাথে ওর জুড়ে গেছে।

#চলবে,

#Mr_Husband
#লেখিকা: আবনী ইবনাত মুন
#পর্ব_৪৯

একটু আগেই এশারের আযান দিয়েছে। পরিবেশটা গুমোট হয়ে আছে। প্রেস, মিডিয়া বা পুলিশ কেউই নিজেদের জায়গা থেকে নড়েনি। এতো বড় একটা ঘটনা ঘটেছে কি করে নড়বে। প্রেস-মিডিয়ার লোকেরা স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে একের পর এক আপডেট দিয়ে যাচ্ছে জনগনকে। বাচ্চাদের বাবা-মা’রা এসে বাইরে পুলিশের সাথে ঝামেলা করছে কান্নাকাটি করছে। সেই সকাল থেকে বাচ্চা গুলো না খেয়ে আছে। কতটা নির্দয় এরা। মিষ্টির আবারো খিদে পেয়েছে। ঘুম আসছিলো তাই তিশানের কাধেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেছিল। কিন্তু এখন খিদের জ্বালায় ঘুমও উবে গেছে। মিষ্টি কিছুতেই বুঝতে পারছে না আজ ওর এতো খিদে পাচ্ছে কেনো? রোজ যেখানে খাবেনা বলে মাম্মামের কাছ থেকে ছুটাছুটি করে। এই খাবার নিয়ে কতই না কাহিনী না করে মিষ্টি। সেখানে আজ খিদের চোটে পেট চো চো করছে। খিদের সাথে বসে থাকতে থাকতে হাত পাও ব্যথা করছে। তিশান একবারের জন্য্র মিষ্টির হাত ছাড়েনি। ধরার পর থেকে ওভাবেই ধরে আছে। মিষ্টি হঠাৎ করে চেচিয়ে ডাকে,

—“আঙ্কেল!”

লোকটা বিরক্ত হয়ে বলে,

—“এই মেয়ে আবার কি হয়েছে?”

মিষ্টি মুখটা ছোট করে বলে,

—“ওয়াশরুম যাবো।”

খারাপ লোকটা মিষ্টির দিকে বন্দুক তাক করে দাঁত কিড়মিড় করে বলল,

—“তোকে আমি এখন মেরেই ফেলবো। আমাদের কি তোর বেবীসিটার মনে হয়?”

মিষ্টি উঠে দাঁড়িয়ে কোমরে হাত দিয়ে একটু রাগি গলায় বলল,

—“এখন ওয়াশরুম পেলে আমার কি করার? সেই সক্কাল থেকে এক ভাবে বসে আছি। আমাদের কি খিদে ওয়াশরুম পায় না নাকি? আমাদের কি এলিয়েন মনে হয়? নিজেরা হাতির মতো তো দিব্বি খেয়ে দেয়ে তরতাজা হয়ে বসে আছো। আর আমরা ছোট বাচ্চা গুলো না খেয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছি।”

লোকটা মুনের দিকে তেড়ে গিয়ে বলল,

—“এই কি বললি তুই? আমরা হাতি? আর তোকে খেতে দেই নি?”

—“ওই একটা স্যান্ডউইস খেয়ে থাকা যায়? তোমরা হাতিই তো হাতি। নিজেদের কি মানুষ মনে করো?”

তাশান ভয়ে শিটিয়ে গেছে মিষ্টির কথা শুনে। কেউ কোনো কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। মিষ্টির এই সাহসীকতা দেখে ভয় করছে তাদের। এই সাহসই না মিষ্টির কাল হয়ে উঠে। তিশান মিষ্টিরহাত টেনে ভীত কন্ঠে বলল,

—“আঁধরিকা চুপ করো। কি বলছো এসব। ওই আঙ্কেলটা রেগে যাচ্ছে। উনার হাতে বন্দুক আছে। উনি সুট কে দিবে তোমায়।”

মিষ্টি সহসা বলল,

—“বন্দুক থাকলে কি? মিষ্টি ভয় পায় নাকি। তিশু ভাইয়া তুমি ভয় পেও না।”

—“এতো টুকু পুচকে মেয়ের তেজ কী! দাঁড়া তোর তেজ আমি বের করছি।”

লোকটা রেগে মিষ্টিকে ধরতে আসতেই মিষ্টি লোকটার হাতে কামড় কামড় দিয়ে ধরে। লোকটা চিৎকার করে উঠে। লোকটাকে ছেড়ে মিষ্টি ছুটে হল রুমের দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।লোকটাও মিষ্টির পেছনে ছুটে। মিষ্টি দৌড়ায় আর মিষ্টির পছনে লোকটি দৌড়াতে দৌড়াতে চেচিয়ে বলে,

—“দাঁড়া, দাঁড়া বলছি। একবার তোকে হাতে পাই তারপর কি করবো দেখিস

.
আঁধাররা হল রুমের কাছে এসে থামে। দরজা পুরো খোলা। সাবধানে একবার উকি দেয়। ভেতরে দুজন ট্যারিরিস্ট পাহারা দিচ্ছে। আঁধার ইশারা করে বাকিদের। ভেতরে বাচ্চারা আর টিচার্সরাও আছে আর ওই লোক দুটোর হাতে বন্দুক আছে। একটু এদিক হলেই অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই সাবধানে এগোতে হবে। বাকিদের কাজ হরা তামাম করে দিয়েছে। সব গুলোকে মেরে রুমে লক করে রেখেছে যাতে একটাও পালাতে না পারে। অবশ্য আঁধার যেগুলোকে ধরেছে সেগুলো পালানোর অবস্থাতেও নেই। অন্তত ছয় মাসেও বিছানা থেকে উঠতে পারবে না এমন হাল করেছেব। আর হয় তো পাঁচ কি ছয়জন আছে ঠিক ঠিক আছে এখনো। কিন্তু বেশিক্ষণ মনে হয় থাকবে না। লোক গুলো সামনের দিকে মুখ করে টিচার্সদের ও বাচ্চাদের শাসাচ্চে এমন সময় ওদের উপর আক্রমণ করে আঁধারের টিম। দুটোকে আধমরা বানাতে বেশি সময় লাগে না। সবাই মিলে ইচ্ছে মতো ধোলাই দেয়। লোকগুলোকে আক্রমণ করার সাথে সাথে মুন দৌড়ে বাচ্চাগুলোর কাছে যায়। কিন্তু এখানে ওর কলিজার টুকরোটা নেই। কোথায় গেলো মিষ্টি? মনের ভেতরে ভয়েরা ঝেকে বসে। ওর কোনো ক্ষতি করে নিতো এরা? এসব ভাবতেই মুনের দম বন্ধ হয়ে আসে। তিশান মুনকে দেখেই দৌড়ে এসে মুনের পা জড়িয়ে ধরে হেচকি তুলতে তুলতে বলে,

—“ম-মনি’মা আ-আঁধরিকা….”

তিশানের মুখে মিষ্টির কথা শুনে মুন নিচে বসে তিশানের গাল আগলে বলে,

—“তৃশ বাবা কোথায় মিষ্টি?”

তিশান কাদতে কাদতে বলে,

—“আঁধরিকা, আঁধরিকা একটা আঙ্কেলকে খুব রাগিয়ে দিয়েছিল। আঙ্কেলটা যখন মিষ্টিকে ধরতে আসে তখন আঁধরিকা ওই আঙ্কেলটার হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায় হল রুম থেকে বাইরে। আর ওই আঙ্কেলটাও আঁধরিকাকে ধাওয়া করে। না জানি ওকে ধরতে পারলে কি করে আঙ্কেলটা। আমার খুব ভয় করছে মনিমা আমি বারণ করে ছিলাম আঁধরিকাকে কিন্তু ও আমার কথা শুনেনি।”

তিশান কাদতেই থাকে। হল রুমের মধ্যে একটা হইচই লেগে গেছে। এরই মধ্যে এতো চিৎকার চেচামেচি শুনে ওই ট্যারিরিস্টদের বস হল রুমে আসে এসে যখন দেখে তার লোকগুলোকে এই অবস্থা তখন তার মাথার রক্ত টগবগ করে ফুটতে লাগলো। সে শূন্যে ফায়ার করলো। সাথে সাথে সবাই চুপ হয়ে গেলো। পরিবেশ টা একদম শান্ত। মুন মিষ্টিকে খুজতেই যাচ্ছিল কিন্তু গুলির আওয়াজে দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে পরে। লোকটা মুনকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওর মাথায় গান তাক করে। আঁধার চেচিয়ে বলে উঠে,

—“না! ওকে কিছু করবে না।”

লোকটা ভয়ংকর রাগে ফেটে পরে। গর্জে উঠে বলে,

—“আচ্ছা! তোরা আমার এতো গুলো লোককে মেরেছিস আর আমি ওকে ছেড়ে দিবো?”

লোকটা সামনে তাকিয়ে আঁধারের সাথে কথা বলছিলো। এমন সময় মুন সুযোগ বুঝে লোকটার হাতে বারি মারে সাথে সাথে লোকটার হাত ছিটকে নিচে পরে যায় গানটা। তারপর আর কি? শুরু হয়ে যায় মারামারি। লোকটা একা আর আঁধাররা পাঁচজন। তাই লোকটা পের ওঠে না ওদের সাথে।

.
রাত দুটো লোকের চোখে পেপার স্প্রএ মরে দৌড়াচ্ছে। পেপার স্প্রে চোখে যাওয়ার কারণে লোক দুটো কিছু দেখতে পাচ্ছে না। রাত আরেকটু সামনে যেতেই দেখে মিষ্টি এদিকেই দৌড়ে আসছে আর ওর পেছনে পাকিস্তানি আরেকটা লোক। মিষ্টি রাতকে দেখা মাত্রই যেন আরো শক্তি ওর মধ্যে এসে গেলো। মিষ্টি ‘পাপা,পাপা’ বলতে বলতে রাতের পেছনে এসে লুকায়। রাত মিষ্টিকে দাঁড়া করিয়ে রেখে লোকটার সাথে ফাইট করে। মারামারির এক পর্যায়ে যখন রাত খারাপ ভাবে ফেসে যায় তখন ছুড়িটা বেরকরে লোকটার হাতে আঘাত করে। যে দুটো লোককে পেপার স্প্রে মেরে পেছনে রেখে এসেছিল তাদের মধ্যে একজন পেছন থেকে মিষ্টির মুখ চেপে ওকে নিয়ে যায়। রাত লোকটার সাথে মারামারির পরে দেখে মিষ্টি নেই। রাত যেন পাগল হয়ে যায়। কোথায় গেল মিষ্টি? একটু আগে তো এখানেই ছিলো। রাতের মাথা কাজ করে না। রাত পেছনের দিকে মিষ্টিকে খুজতে দৌড়ে যায়। রাত যেতেই পাশের রুম থেকে মিষ্টিকে নিয়ে বেরিয়ে আসে লোকটা। লোকটা মিষ্টিকে নিয়ে হল রুমের দিকে যায়। মুন এই মাত্রই বেরুচ্ছিলো রুম থেকে কিন্তু মিষ্টিকে নিয়ে পাকিস্তানি লোকটাকে এদিকে আসতে দেখে মুন কিছুক্ষণ থামে। মিষ্টির শুকনো মুখটা দেখে কেদে দেয়। মিষ্টির কাছে ছুটে যেতে নিলে লোকটা মিষ্টির গলায় ছুড়ি চেপে ধরেলো আর বলল,

#চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here