#Our_Unknown_Love_Story(2),09,10
#The_Incomplete_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_9
আধার তারার হাত ধরে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে আসে,,, তারা কান্না করছে যা আধারের সহ্য হচ্ছে না,,, নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে ওর কাছে,,, এমনটা না করলেও পারতো ভাবছে আধার,,,
তারা নীরবে কান্না করছে আর বার বার হেচকি তুলছে,,, আধার আর না পেরে তারাকে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে জড়িয়ে ধরে,,, আধারের জড়িয়ে ধরায় তারার কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেল,,, তারাও আধারকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ গুঁজে কান্না করতে থাকে,,,
আধার তারার পিঠে এক হাত রেখে অন্য হাত মাথায় বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে,,,
আধারঃ তারা প্লিজ স্টপ ক্রাইং,,, দেখ আমি আছি না সব ঠিক করে দেব,,,
তারাঃ এআর ট্রাস্ট মি আ আমি প্রেজেন্টেশন রেডি করেছিলাম আই রিয়েলি ডোন্ট নো কিভাবে গায়েব হয়ে গেল,,, আ’ম নট ইরিস্পনসিবল গার্ল এআর ?
আধারঃ এমনটা না করলেও পারতাম,,, আমার জন্য তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছে,,, ইউ আর জাস্ট রিডিউকিলাস আধার,,, (মনে মনে নিজেকে বকছে)
আধারঃ তারা আই ট্রাস্ট ইউ,,, দেখ আমি বলছি না যে আমি নিজে তোমাকে ট্রেইন করবো এন্ড আ’ম সিওর ইউ ক্যান বি এন ব্যাটার জার্নালিস্ট,,,
তারা আরো শক্ত করে আধারকে জড়িয়ে ধরে ফুপাতে শুরু করে,,,
আধার আশেপাশে খেয়াল করে দেখে অনেকেই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে আর কানাঘুষি করছে,,,
আধার তারার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,,,
আধারঃ দেখো তারা তোমার কান্না দেখতে কত পাবলিক নিজের কাজ ফেলে এখানে ভীর করে আছে,,,, আরকতক্ষন এভাবে জড়িয়ে ধরে রাখবে আমার কিন্তু লজ্জা করছে ? দেখ আমি কিন্তু এখনো অবিবাহিত,,, তোমাকে আমাকে এভাবে দেখলে কোন মেয়ে আমাকে বিয়ে করবে না তখন আমার সারাজীবন কুমার হয়ে সন্ন্যাস গ্ৰহন করতে হবে। ( ন্যাকা কান্না করতে করতে)
আধারের কথা শুনে তারা সাথে সাথে দুরে সরে দাঁড়ায়,,, আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সত্যিই অনেকে তাকিয়ে আছে,,, আধারের দিকে তাকিয়ে দেখে আধার হাসি দিয়ে নিজের দুই পকেটে হাত রেখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,, আধারের বলা কথা গুলো মনে পরতেই তারার চেহারা লজ্জায় লাল হয়ে উঠে,,,
তারা ব্লাশিং হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আঙ্গুল দিয়ে স্কার্ফের কোনা ঘুরাচ্ছে,,, আধার বুঝতে পারছে যে তারা লজ্জা পাচ্ছে তাই ও একটু জোরেই গলা পরিষ্কার করে সবার উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করল,,,
আধারঃ আমরা হিরো হিরোইন না আর এখানে কোন ফিল্মের শুটিং চলছে না তাই এভাবে ভীর না করে যার যার ক্লাসে যান গোও( কড়া গলায় ধমক দিয়ে )
আধারের ধমক শুনে সবাই হন্তদন্ত করে ভয়ে ওখান থেকে কেটে পরে,,
আধারের ধমকে তারার ও বুক কেঁপে ওঠে।
তারাঃ আল্লাহ কত জোড়ে ধমক দেয় জান পাখি টা উড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় ? এমনেই সকাল থেকে কিছু খাইনি ক্ষুধায় পেটে ইঁদুর গুলো ডিজে গানে নাচ করছে,,, মনে মনে ভাবছে তারা,,।
আধার তারার দিকে তাকাতেই দেখে বেচারি ভয়ে চুপসে গেছে,,, আধার তারার অবস্থা দেখে হালকা হেসে বলতে শুরু করে,,
আধারঃ চলো ক্যান্টিনে যাই তোমার ক্ষিদে পাচ্ছে আমি জানি,,,
আধারের কথায় তারা অবাক হয়ে ওকে জিঙ্গেস করে,,
তারাঃ আপনি কিভাবে বুঝলেন আমার মনের কথা ?
আধারঃ তোমার মনের কথা আমি বুঝবো না তো কে বুঝবে মের ( মেরি জান বলতে গিয়েও আধার থেমে গেল)। এখন কথা না বাড়িয়ে চলো,,,
আধার তারার হাত ধরেই ক্যান্টিনে নিয়ে আসলো,,,
একটা মেয়ে পিজ্জা খাচ্ছিল আধারকে তারার হাত ধরে ক্যান্টিনে আসতে দেখে ওর হাত থেকে পিজ্জার পিস টা প্লেটে পরে গেল আর মেয়েটি হা হয়ে গেল,,, সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে,,, ভূত দেখার মতো চমকে গেছে সবাই,,,
এআর যাকে কখনো কোন মেয়ের সাথে কেউ কথা বলা তো দুরের কথা ফিরে তাকাতেও দেখেনি সে এআর একটা মেয়েকে এতো প্রায়রিটি দিচ্ছে। তার হাত ধরে হাটছে। ভাবতেই অবাক লাগছে সবার কাছে,,
আধার তারাকে একটা টেবিলে বসিয়ে ওর অপজিটে বসে পরে।
একটা ছেলে অর্ডার নিতে আসে,,
আধারঃ তারা তুমি কি খাবে??
তারা চট করে বলে ফেলে,,
তারাঃ পেস্ট্রি ?
আধার হালকা হেসে ছেলেটিকে বলে,,
আধারঃ একটা পাইনাপেল ক্রিম পেস্ট্রি নিয়ে আসো,,
তারাঃ আপনি কিছু খাবেন না,,??
আধার তারার কথায় হচকিয়ে যায় তারপর কথা ঘুরানোর জন্য বলে,,,
আধারঃ আব আমি সকালে খেয়েই বের হয়েছি ?
তারাঃ ওহ,, আচ্ছা আপনি কিভাবে বুঝলেন আমার পাইনাপেল পেস্ট্রি পছন্দ,, ( চোখ ছোট ছোট করে)
তারার কথা শুনে আধারের চোখের সামনে নিজের অতীত ভেসে উঠলো,,, শবনমেরও পেস্ট্রি ফেভারেট ছিল,, আধার শবনমের বার্থডে তে ওর জন্য নিজের হাতে কেক বানিয়েছিল,,, একে একে সব স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠতে শুরু করে ওর,,
তারার ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে আধারের,,,
তারাঃ এআর কোথায় হারিয়ে গেলেন??
চোখের কোনে জমে থাকা পানি টুকু বেরিয়ে আসতে দিল না আধার,,, নিজেকে স্বাভাবিক করে ও তারাকে বলে,,,
আধাঃ জাস্ট গেস করলাম আমারও পাইনাপেল পেস্ট্রি পছন্দ তাই তোমার জন্যও ওটাই অর্ডার করলাম ?
তারাঃ ওহ,,
কথার মাঝেই ওয়েটার খাবার নিয়ে এসে পরে,,, তারাকে আর পায় কে মনের আনন্দে একা একা পেস্ট্রি খাচ্ছে। আর আধার ওকে দেখে এতো বছরের চোখের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে,,,।
আধারঃ একটুও বদলাও নি তুমি সেই আগের মতই রয়ে গেছ,, সেই হাসি, সেই বাচ্চামো , কথা বলার ধরন সব আগের মতই,,,
কত বছর পর তোমাকে আবার আগের মতো নিজের কাছে পেলাম,,, তোমার হাসি মুখটা আবার দেখতে পাচ্ছি,,, আর দুরে যেতে দিব না তোমাকে,,। প্রমিস করছি আর নিজের থেকে হারাতে দেব না।
তারার খাওয়া শেষ হতেই আধার তারাকে নিয়ে নিজের কেবিনে আসে,, তারা ঘুরে ঘুরে পুরো কেবিন দেখছে,,, আধার বুক সেল্ফের থেকে অনেক গুলো বই নিয়ে টেবিলে রাখে তারপর তারাকে উদ্দেশ্য করে বলে,,
আধারঃ তারা!!
আধারের ডাকে তারা পেছনে ফিরে তাকালো।
তারাঃ ইয়েস এআর?? ?
আধারঃ বসো,, সোফা দেখিয়ে দিয়ে।
তারা বসতেই আধার ওর সামনের টেবিলে বই গুলো রাখলো তারপর তারার সামনে বসে পরলো,, তারা বই গুলো দেখে ঢোক গিলছে,,
আধারঃ এগুলো সব এখন কম্পপ্লিট করবে,,
আধারের কথা শুনে তারা চোখ বড় বড় করে দাঁড়িয়ে যায়।
তারাঃ কিইইই এতগুলো বই আমি সাত জনমে কমপ্লিট করতে পারবো না ?
আধার তারার হাত ধরে টান দিয়ে ওকে আবার বসিয়ে দেয়।
আধারঃ সাত জনম না এক দিনে করতে হবে,,,
তারা কাদোকাদো ফেস করে আধারের দিকে তাকিয়ে বলে,,
তারাঃ আমার দ্বারা হবে না,,
আধারঃ নো মোর এক্সকিউজ তারা গেট স্টার্ট,,, ( কড়া গলায়)
তারা মুখ ফুলিয়ে বইয়ে মুখ গুঁজে পড়া শুরু করে,, আধার ওর কান্ড দেখছে আর মিটমিট হাসছে,,,
তারা বই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে আড়চোখে আধারকে দেখছে,, আধার নিজের চেয়ারে বসে ল্যাপটপে কিছু কাজ করছে। আধারের দিকে তাকাতেই একটা অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করে তারার মাঝে। একটা টান অনুভব করে ও। হালকা খোঁচা খোঁচা দাড়ি চোখে হোয়াইট গ্লাস ঠোঁটের হাসি সব তারার কাছে অমায়িক লাগে,,। তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে সারাক্ষণ। এইভাবে আধারকে দেখে নিজের সারা জীবন পার করে দিতে পারবে ও।
আধারের প্রত্যেকটা কাজ ওর কথা তারার মন কেরে নিয়েছে। বুকের বা পাশের হার্টটা হয়তো কারো জন্য বিট করতে চাইছে আর সে অন্য কেউ নয় ওর এআর। কথা গুলো ভেবেই তারা ব্লাশিং হচ্ছে।
হয়তো এটাই ভালোবাসার নতুন অধ্যায় এর শুরু।
To be continued…..
#Our_Unknown_Love_Story(2)
#The_Incomplete_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_10
আধার ল্যাপটপ অফ করে তারার দিকে তাকাতেই দেখে ও মুখ ফুলিয়ে বই পরছে। চেহারায় বিরক্তির ছাপ। দেখতেই বুঝা যাচ্ছে যে তারার বিরক্তিকর লাগছে বইগুলো পরতে। বারবার ফেসটাতে কান্না কান্না ভাব আনছে।
তারার এই বাচ্চামো ফেসটা আধারের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এই ফেসটাই ওকে বারবার ঘায়েল করে।
আধারঃ আ’ম স্যরি তারা আমার জন্য আজকে তোমার এত ইনসাল্ট হতে হলো। অযথা এতো কথা শুনতে হলো। কিন্তু কি করবো বলো আই হ্যাভ নো আদার চয়েজ। তোমাকে সব কিছু মনে করানোর জন্য নিজের কাছে রাখা জরুরী। তাছাড়া কখন কোথায় কিভাবে তোমার উপর বিপদ চলে আসে আই হ্যাভ নো আইডিয়া। তোমাকে প্রটেক্ট করতে নিজের কাছে রাখা ইম্পর্টেন্ট। তাই তোমাকে চব্বিশ ঘন্টা নিজের কাছে রাখার জন্যই এমনটা করেছি মেরি জান।
একবার হারিয়েছি তোমাকে আবার হারানোর মত ক্ষমতা আমার নেই। (মনে মনে)
আধার তারার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবলো তারপর উঠে গিয়ে তারার সামনে দাঁড়ালো।
তারা মুখ তুলে তাকাতেই দেখে আধার পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে।
আধারঃ হোয়াট হ্যাপেন্ড মিস তারা?? কোন প্রবলেম??
তারাঃ হুম!!
তারা আধারকে কয়েকটা চ্যাপ্টার দেখিয়ে দিল যা ও বুঝতে পারছে না।
আধারঃ ওকে দিন আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।
আধার তারার হাত থেকে বইটা নিয়ে ওর অপজিটে বসে পরে।
আধার তারাকে পড়ে পড়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে কিন্তু তারা! তারার কানে তো আধারের কোন কথাই ঢুকছে না ওতো এক ধ্যানে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে।
আধার চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হাত নাড়িয়ে বিভিন্ন ইশারায় পড়াগুলো বুঝাচ্ছে,,, আধারের ঠোঁট দুটো অনবরত নরছে এক সেকেন্ডের জন্য ও থামছে না। সিল্কি চুল গুলো স্পাইক করা সত্ত্বেও কপালে চলে আসছে। পড়ানোর মাঝেই মুচকি হাসিটা তারার হার্টবিট বাড়িয়ে দিচ্ছে। একটা মানুষ এতোটা সুন্দর কিভাবে হয় ভাবছে তারা। আধারের প্রতিটা স্টেপে ওর একটা আলাদা পার্সোনালিটি ফুঁটে উঠে। ওর প্রতিটা কথায় কাজে একটা আলাদা স্টাইল আছে যা সবাইকে মুগ্ধ করতে সক্ষম।
এই মুহুর্তে তারার মনে হয়তো একটা গানই বাজছে
“উফফ্ মেরে দিলমে থোরি খালি সি জাগাহ থি” “উফফ্ তুনে আকে বিন্ কিরায়ে ইয়ে জাগাহ লি”
“কুছ্ ক্যাহ্ ভি না সাকি ইয়ে কেসি বেবাসি”
“ইউ চুপকে চুপকে আয়া বিন্ বুলায়া মেহমান..”
“উফফ্ মেরে দিলমে থোরি খালি সি জাগাহ থি”
????
হঠাৎ আধারের চুটকির আওয়াজে ঘোর কাটে তারার।
আধারঃ হ্যালো ম্যাম কোথায় হারিয়ে গেলেন। সেই কখন থেকে ডাকছি বাট আপনার কোন খবরই নেই।
আধারের কথায় অনেক বেশি লজ্জা পায় তারা।
তারাঃ তার মানে আমি এতক্ষন এআর এর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আর উনি আমার ধ্যান ভাঙানোর জন্য আমার সামনে তুরী বাজিয়েছেন।?? ইইই কি লজ্জা এআর কি ভাববে আমি লুচু মেয়ের মতো ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।?আল্লাহ সিঁড়ি ফালাও আমি উঠে যাই। আমি এআর কে ফেস করবো কিভাবে উনি কি ভাবছেন আমাকে নিয়ে ?( মনে মনে)
আধার আবারো তারাকে হারিয়ে যেতে দেখে ডাক দেয়।
আধারঃ আবার কোথায় হারিয়ে গেলে।
তারাঃ ক কই নাতো কো কোথাও না এ আর ?
আধারঃ আচ্ছা বাদ দাও এখন বলো সব ক্লিয়ারলি বুঝেছো নাকি কোন প্রবলেম আছে।
তারাঃ হুম ( বোকার মত মাথা নাড়ালো)
কিছুইতো শুনলাম না বুঝবো কি করে আমিতো আপনাকে দেখতেই ব্যস্ত ছিলাম। পড়া কখন শেষ করলেন টেরও পাই নি ??( মনে মনে)
আধারঃ আমি তারার মনের কথা পড়তে পারছি না কেন?? আগেতো শবনমের মনের সব কথা বুঝে যেতাম তাহলে তারার বেলাতে এমন হচ্ছে কেন। আই হ্যাভ টু ফাইন্ড আউট ( মনে মনে)
হঠাৎ তারা হাতের ঘড়ির দিকে তাকাতেই লাফ দিয়ে উঠে। সন্ধ্যা সাতটা বাজে আর শীতের দিনে সাতটা মানেই রাত। তারউপর পাহাড়ি এলাকা।
আধারঃ কি হয়েছে তারা এভাবে লাফিয়ে উঠলে কেন!
তারাঃ কেন মানে!! আপনি টাইম দেখেছেন এআর। সাতটা বেজে গেছে আমার ফ্রেন্ডস রা সবাই আমাকে ফেলে কটেজে চলে গেছে ফর সিউর। এখন আমি কার সাথে যাবো আমিতো এখানকার কোন রাস্তাই চিনি না।?
তারা কান্না করতে করতে বসে পরে। আধার হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না।
আধারঃ ডোন্ট ওয়ারি তারা আমার জন্য তোমার লেইট হয়েছে আমিই তোমাকে পৌঁছে দিব।
সাথে সাথে তারা কান্না থামিয়ে দেয়।
তারাঃ রিয়েলি??
আধারঃ হুম চলো।
তারাতো মহা খুশি হয়ে আধারের সাথে বেড়িয়ে যায়।
আধার ড্রাইভ করছে আর আড়চোখে তারাকে দেখছে। গাড়ির গ্লাস খোলা যার কারনে ঠান্ডা বাতাস ঢুকছে। তারা ঠান্ডায় কুকরিয়ে যাচ্ছে তাও গ্লাস লাগাচ্ছে না। আধার জানে তারার বন্ধ জায়গায় সাফোকেশন প্রবলেম হয় তাই ওও তারাকে গ্লাস লাগাতে বলে নি।
আধার গাড়ি ব্রেক করে ফেলে। হঠাৎ গাড়ি থেকে যাওয়ায় তারা অবাক হয়ে আধারকে জিঙ্গেস করলো,,,
তারাঃ এআর গাড়ি থামালেন কেন??
আধারঃ সামনে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না আকাবাকা রাস্তা রাতে এখানে গাড়ি চালানো রিস্কি তারা।
তারাঃ তাহলে??
আধারঃ বাকিটা পথ নাহয় হেঁটেই যাই!!( তারার দিকে তাকিয়ে)
তারাঃ আপনার সাথে তো আমি সারাজীবন হাটতে রাজি ?( মনে মনে)
আধার আর তারা গাড়ি থেকে নেমে গেল। আধার গাড়ির পেছনের ডোর খুলে একটা জ্যাকেট বের করে।
আধার তারার কাছে এসে জ্যাকেট টা এগিয়ে দিয়ে বলে।
আধারঃ এটা পরে নাও তারা ঠান্ডা কম লাগবে।
তারা জ্যাকেট টা হাতে নিয়ে আধারকে জিঙ্গেস করলো,,,
তারাঃ এটা কোথা থেকে আসলো??
আধারঃ কিছুদিন আগে খুলে রেখেছিলাম। আজকে কাজে লেগে গেল।
তারা মুচকি হেসে জ্যাকেট টা গায়ে জড়িয়ে নেয়। জ্যাকেট টা থেকে এক অদ্ভুত ঘ্রান তারার নাকে বারি খাচ্ছে। ঘ্রানটা তারার অনেক পরিচিত মনে হচ্ছে।
তারা জ্যাকেট টা পরে দু’হাত ভাজ করে জ্যাকেট টা বুকে জড়িয়ে নেয় যেন আধারকে জড়িয়ে ধরেছে। তারপর ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে আধারের সাথে হাটা শুরু করে। ( প্রথম ভালোবাসা তো তাই এমন আজীব বিহেভ করছে ?)
দুপাশে জঙ্গল অন্ধকার রাস্তা ঠান্ডা পরিবেশ চাঁদের আলো ও ল্যাম্প পোষ্ট এর আলোতে কিছুটা আবছা দেখা খাচ্ছে। এই নিস্তব্ধতার মাঝেই এক অদ্ভুত সৌন্দর্য বিরাজ করছে চারোদিকে। তারা অন্ধকারকে প্রচুর ভয় পায় কিন্তু আজ ওর ভয় করছে না বরং এই অন্ধকার আজকে ওর কাছে অন্যরকম সুন্দর লাগছে। অন্যসময় হলে হয়তো ভয় পেত কিন্তু আধার পাশে থাকায় সেই ভয়টি কোথাও গায়েব হয়ে গেছে। এই অন্ধকারেও রাস্তাটা অসম্ভব সুন্দর লাগছে ওদের কাছে। পাশাপাশি হাটছে আধার আর তারা। তারা দু’হাত ভাজ করে বার বার হাত ঘষছে আর আধার দুই পকেটে হাত রেখে ঠোঁটে সেই মন ভুলানো হাসি দিয়ে হাটছে। কেউ কোন কথা বলছে না নিস্তব্ধতা সব বলে দিচ্ছে একে অপরের প্রতি সেই লুকানো অনুভূতি।
নীরবতা ভেঙে তারাই আগে বলা শুরু করলো,,,
তারাঃ আচ্ছা এআর আপনার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?? ( উৎসুখ হয়ে)
আধার একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে,,
আধারঃ কেউ নেই….
কথাটা শুনে তারার হাসিমাখা মুখটা মলিন হয়ে গেল,,,
তারাঃ আ’ম স্যরি এআর!! ( মন খারাপ করে)
হঠাৎ আধার থেমে গেল আর তারাকে আকাশের দিকে ইশারা করে বলল,,
আধারঃ তারা লুক,,,
তারা আকাশের দিকে তাকাতেই হা হয়ে যায়,,,
তারাঃ ওয়াও ব্রোকেন স্টার ( অবাক হয়ে)
তারা সাথে সাথে নিজের ব্যাগ থেকে ক্যামেরাটা বের করে ওটার ছবি তুলে নেয়।
তারা ছবি তুলছে আর আধার পেছন দাঁড়িয়ে তারাকে দেখছে।
তারা ক্যামেরা টা রেখে পেছনে আধারের দিকে ফিরে।
তারাঃ ইউ নো হোয়াট এআর আই লাভ স্টারস।
আধারঃ আমি শুনেছি ব্রোকেন স্টার থেকে কোন
উইশ করলে তা পূরন হয়।
তারাঃ আপনি বিশ্বাস করেন?? (অবাক হয়ে)
আধার কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,,
আধারঃ হুম কিছুটা,,, চলো উইশ করি।
আধার চোখ বন্ধ করে ফেলে সাথে তারাও,,,
আধারঃ আমি আমার শবনমকে ফিরে পেয়েছি তারার রুপে আর কিছু চাই না আমার। আপনি শুধু আমার শবনমের ইচ্ছেটা পূরন করে দিন।
তারাঃ আপনি জানেন আমার কি চাই। প্লীজ আমাকে হেল্প করেন যেন আমি আমার ডেস্টিনেশনে পৌছতে পারি।
আধার চোখ খুলে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে তারার দিকে আর ভাবছে।
আধারঃ কি এমন আছে তারা যা তুমি এতো গভীর ভাবে চাইছো। আই উইশ তোমার সব চাওয়া পুরণ হোক।
তারা চোখ খুলে দেখে আধার ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
আধারঃ চলো তারা দেরি হয়ে যাচ্ছে।
তারাঃ হুম।
আবার নীরবতার মাঝে হাটা শুরু করে ওরা।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আধার আর তারা কটেজের সামনে পৌঁছে আসে।
তারাঃ গুড নাইট এআর,,
আধারঃ গুড নাইট।
তারা ধীর পায়ে ভিতরে চলে যায়। কিন্তু আধার ঠাই একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে তারার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে।
To be continued….