#Our_Unknown_Love_Story,21,22
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_21
জোরে ধাক্কা দেওয়ায় গাড়িটি অনেক দূরে ছিটকে একটা গাছের সাথে বারি খায়। শবনম টাল সামলাতে না পারায় Staring এর সাথে লেগে আঘাত পায়। শবনম উঠতে নিলে আবার কেউ গাড়িটাকে পেছন দিয়ে জোরে ধাক্কা দেয় দরজা লক না থাকায় শবনম গাড়ি থেকে পড়ে যায়। হাতের অনেক অংশ কেটে ছিলে গেছে। শবনম ভয় পেয়ে তারাহুরা করে দাঁড়িয়ে যায় পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই।
শবনম গাড়ির পিছনের দিকে এসে দেখে গাড়ির পিছনে বড় বড় দুটো পায়ের ছাপ। হয়তো পিছন থেকে কেউ লাথি দিয়েছে। কিন্তু পায়ের ছাপগুলো অনেক বড়। কোন নরমাল মানুষের ছাপের মতো না।
ভয়ে শবনমের গলা শুকিয়ে গেছে। হাত পা প্রচন্ড ভাবে কাপছে।ঘামে পুরো একাকার হয়ে গেছে ও। আশেপাশে বার বার তাকাচ্ছে কিন্তু কাওকে দেখতে পাচ্ছে না।
শবনম ভয়ে ধ্রুবর নাম ধরে ডাকতে শুরু করে,,,,,
শবনমঃ ধ্রুব,,, ধ্রুব তুমি কোথায়। দেখো আ আমার অনেক ভ ভয় করছে। প প্লিজ তারা ত তারি আসো।
ভয়ে কথাও বলতে পারছে না। কান্না করছে শবনম।
শবনম হঠাৎ ঝোপের আড়ালে তাকাতেই কারো হিংস্র চোখ দেখতে পেলো । ভয়ে দুই তিন কদম পিছিয়ে গেল ও। চোখের মালিক ঝোপের থেকে বের হতেই অনেক জোরে চিৎকার দিয়ে নিচে পরে গেল ও।
কারন এটা কোন মানুষ বা প্রানী না। দেখতে পুরো দানবের মতো। বিশাল শরীর,,,, পুরো শরীরে বড় বড় কালো লোমে ঢাকা। শরীরটা দেখতে কিছুটা মানুষের আকারের হলেও চেহারা টা পুরো হিংস্র নেকরের মতো। বড় বড় চোয়াল দাত বের করা চোখ দুটো লাল আর চোখে শুধু হিংস্রতা। ( এগুলো কে werewolf বলে )
দানবটি শবনমের দিকে এগোতেই শবনম উঠে জঙ্গলের দিকে দৌড় দেয়। আর সাহায্যের জন্য চেঁচাতে থাকে।
শবনমঃ Help ধ্রুব। someone help me. ?
শবনম দৌড়ে অনেক দূরে চলে আসে। আশেপাশে ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। শবনম ভাবলো হয়তো জানোয়ার টা চলে গেছে। শবনম হাঁপাতে হাঁপাতে পিছনে ফিরতেই দানবটা ওকে হাত দিয়ে বারি দেয় সাথে সাথে শবনম অনেক দূরে ছিটকে পরে গাছের সাথে বারি খায়। কপাল দিয়ে অঝোর ধারায় রক্ত পরছে । দানবটার ধারালো নখের আঘাত লাগায় গাল হাত কেটে ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে। শবনম এখনো পুরোপুরি জ্ঞান হারায় নি টিপটিপ করে চোখের পাতা খুলে রাখার চেষ্টা করছে। দানবটি শবনমকে আবার আঘাত করতে নিলে কেউ ঝড়ের গতিতে এসে তাকে শবনমের কাছ থেকে সরিয়ে দেয়।
শবনম হাল্কা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে এটা আধার। আধার দৌড়ে এসে শবনমকে তুলে নিজের কোলে ওর মাথা রাখে।
আধারঃ শবনম তুমি চোখ বন্ধ করো না জান। দেখো আমি এসে গেছি। তোমার কিছু হতে দিবো না প্রমিস।প্লিজ চোখ বন্ধ করো না। আধার কাঁদছে আর পাগলের মতো বিহেভ করছে। শবনম হাল্কা হেসে নিজের রক্ত মাখা হাত দিয়ে আধারের মুখ স্পর্শ করে সাথে সাথে ওর চোখ বন্ধ হয়ে যায় আর হাতটাও নিচে পরে যায়।
শবনমের চোখ বন্ধ হওয়ায় আধারের নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
আধারঃ এই শবনম প প্লিজ চোখ খুলো জান।please for God sake. তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না। আমি শুধু তোমার জন্য মরেও বেঁচে ফিরেছি। এই অভিশপ্ত রুপে এই Vampire রুপে। আর কক্ষনো তোমাকে কষ্ট দিবো না। নিজের থেকে আলাদা করবো না। শেষ বারের মতো ক্ষমা করে দাও প্লিজ।?তুমি আমাকে মারো বকো তবুও চোখ খোলো আমার সাথে কথা বলো।??
শবনমকে বুকে জড়িয়ে আধার কথা গুলো বলছে। কিন্তু তবুও শবনমের কোন রেসপন্স পাচ্ছে না।
হঠাৎ দানবটা এসে আধারের মাথায় কিছু দিয়ে আঘাত করে।আধার বেশী ব্যথা না পেলেও ওর চোখে হিংস্রতা ফুটে উঠেছে। আধার শবনমকে নিচে শুয়ে দিয়ে দাঁড়ায় । হঠাৎ আধারের চোখ নীল বর্ণ ধারন করা গলার হাতের রগ ফুলে ফেঁপে উঠে। বড় বড় দুটো চোয়াল দাঁত বের হয়ে আসে। আধার নিজের Vampire রুপ ধারণ করে পিছনে ফিরে।
আধারঃ তুই আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস। আমার ভালবাসাকে আমার জানকে মারার চেষ্টা করেছিস। আজ তোকে আমার কাছ থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
কথা গুলো বলে আধার দানবটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু দানবটাও কম শক্তিশালী না ওও সমান ভাবে আধারকে আঘাত করছে। যুদ্ধ করতে করতে দুজনে দুইদিকে পরে যায়। আধার নিজের সামনে একটা ধারালো অস্ত্র দেখে ওটাকে তুলে এক লাফে ওই werewolf টার ডান হাতে আঘাত করে। werewolf টা আর না পেরে দৌড় দেয়। আধার ওর পিছনে যেতে নিলে মাহিরা দৌড়ে এল আধারকে আটকায়।
মাহিরাঃ what’s wrong with you Aadhar. তুমি ওই werewolf টার সাথে লড়াই করছো কেন।
আধার অসহায় ভাবে কাঁপাকাপা হাত দিয়ে আঙ্গুল তুলে শবনমের দিকে ইশারায় দেখায়। মাহিরা শবনমকে এভাবে দেখে ওর মাথায় বাজ ভেঙ্গে পরে। ও দৌড়ে শবনমের কাছে যায় ওর pal’s rate check করে দেখে নিঃশ্বাস এখনো চলছে। মাহিরা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে আধারের দিকে তাকিয়ে বললো।
মাহিরাঃ আধার আমাদের এখনি শবনমকে এখান থেকে নিয়ে যেতে হবে আরো দেরী হলে ওকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
আধারঃ হ্যাঁ বলে শবনমের কাছে আসতেই মাহিরা ওকে থামিয়ে দেয়।
মাহিরাঃ wait Aadhar. শবনমের পুরো শরীরে রক্ত মাখা। অন্ধকারে কারনে রক্তের রং বুঝা আমাদের চোখে পরছে না।রক্ত দেখলে আমরা out of control হয়ে যাবো তখন হয়তো শবনমের কোন ক্ষতি করে বসবো। আগে এই রক্ত গুলো মুছতে হবে,,,,,
বলে মাহিরা চোখ বন্ধ করে কিছু পড়ে তারপর শবনমের মাথায় হাত রাখতেই শরীরের সব রক্ত গায়েব হয়ে যায়। কিন্তু ক্ষত গুলো গায়েব হয় নি।
রক্ত গায়েব হতেই আধার শবনমকে কোলে তুলে নেয় তার পর চোখের পলকেই ওর বাসায় চলে আসে। আধার শবনমকে ওর বিছানায় শুয়ে দেয়। আর ও নিজে শবনমের পাশে ওর হাত ধরে বসে।
আধারের চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।
আধারঃ তোমার কিছু হবে না জান আমি তোমাকে কিচ্ছু হতে দিবো না।
মাহিরাঃ শবনমকে বাঁচানোর শুধু একটাই উপায় আছে কিন্তু এটা অনেক রিস্কি আধার তোমার শক্তি চলে যেতে পারে আবার জানও। ??
আধারঃ শবনমই যদি না থাকে তাহলে আমি থেকে কি করবো। she is my life my reason to live. ওকে বাঁচাতে যদি নিজেকে শেষ করতেও
হয় সেটার জন্য দ্বিতীয় বার ভাববো না। কথা গুলো বলার সময় আধারের চোখ থেকে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে।
মাহিরাঃ OK আমি বাইরে যাচ্ছি। But please take care of yourself. বলে মাহিরা রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
মাহিরা বের হতেই আধার শবনমের অনেক কাছে গিয়ে বসলো। শবনমের কপাল গাল হাত অনেক জায়গায় কেটে ছিলে গেছে মাহিরা রক্ত পরা বন্ধ করলেও ক্ষত গুলো মুছতে পারে নি।
আধার শবনমের দিকে ঝুঁকে ওর কপালের ঘায়ে গভীর ভাবে ঠোঁট ছোয়ালো সাথে সাথে কপালের ক্ষত গায়েব হয়ে গেল। এভাবে গালে হাতে ও ঘারের ক্ষতেও আধার ঠোঁট ছোয়ালো আর এগুলোও মিশে গেল। আধার শবনমের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,,,,,
আধারঃ I know Shabnam you can hear me. তুমি আমাকে শুনতে পাচ্ছো আমার স্পর্শ গুলো অনুভব করতে পারছো। I’m really sorry তোমার এই অবস্থার জন্য একমাত্র আমিই দায়ী। আমি যদি তোমাকে একা না ছারতাম তাহলে এমনটা হতো না। but don’t worry আমি সব ঠিক করে দিবো জান। কথা গুলো বলার সময় আধারের চোখ দিয়ে পানি পরছিলো।
কথা গুলো বলে আধার শবনমের চেহারার দিক কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে উঠে যায়। তার পর একটা ছুরি নিয়ে শবনমের পাশে বসে। আধার ছুরিটা দিয়ে নিজের ডান হাতের তালু কেটে ফেলে। তার পর শবনমের ডান হাত তুলে ওর হাতেও ছুরি চালিয়ে দেয়। শবনমের হাত থেকে রক্ত বের হবার আগেই আধার ওর রক্ত মাখা হাত দিয়ে শবনমের হাত চেপে ধরে।
শবনমের হাতে ছুরি চালানোর সময় আধারের হাত প্রচুর ভাবে কাঁপছিল। হয়তো নিজের হাতে নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে আঘাত করতে পারছিলো না। কিন্তু এটা অনেক জরুরী ছিল তাই না চাওয়া সত্যেও ওকে নিজের ভালোবাসাকে আঘাত করতে হয়েছে।
আধার চোখ বন্ধ করে বিরবির করে কিছু পরছে। আশেপাশের সব আসবাবপত্র হাওয়ায় ভেসে উঠে। রুমের মধ্যে অনেক জোরে বাতাস বইতে শুরু করে। আধার আরো জোরে শবনমের হাত চেপে ধরে। আধারের কাটা হাত থেকে একটা নীল রশ্মি বের হয়ে শবনমের হাত দিয়ে ওর শরীরে প্রবেশ করছে। আধারের পুরো শরীরে আচরের দাগ বসে যাচ্ছে। কিন্তু এতে আধারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই ও নিজের মত করে মন্ত্র পরছে। হঠাৎ একটা Vase আধারের গায়ে ছিটকে পরে এতে আধার অনেক ব্যাথা পায় তবুও চোখ খোলে নি আর মন্ত্র পরাও বন্ধ করে নি। আধার ধীরে ধীরে অনেক week হতে থাকে। হয়তো ওর শরীরের সব শক্তি ও শবনমকে বাঁচানোর জন্য দিয়ে দিচ্ছে ।
আধার চোখ খুলতেই ঘরের সব আসবাবপত্র ফ্লোরে পরে গেল। আধারের চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে। অনেক বেশী week হয়ে গেছে ও। আধার শবনমের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। আধার শবনমকে তুলে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে,,,,
আধারঃ please Jan please open your eyes. আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছি তাহলে তুমি চোখ খুলছো না কেন। তুমি আমাকে এভাবে ফেলে চলে যেত পারো না you have to come back to me ???
অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছো অনেক শাস্তি দিয়ে ফেলেছো আর না প্লিজ।??
আধার শবনমকে একই ভাবে বুকে জড়িয়ে রেখেছে আর কান্না করছে। হঠাৎ আধার নিজের বুকে শবনমের গভীর নিঃশ্বাস পেলো। আধার শবনমকে আবার বালিশে শুইয়ে দিলো। জোরে জোরে দুটো নিঃশ্বাস নিয়ে শবনম টিপটিপ করে চোখ মেললো । আধারের দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার হাল্কা হাল্কা করে চোখ বন্ধ করে ফেললো। আধার একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে হাল্কা হেসে শবনমের কপালে কিস করলো।
আধারঃ I know that আল্লাহ তোমাকে আমার কাছ থেকে এভাবে কেরে নিতে পারে না। উনিই তো আমাকে তোমার জন্য নতুন জীবন দিয়েছে।
বাস একবার ওই werewolf টার পরিচয় পাই then I will show my true color.তুমি যেই হও না কেন you have to pay for this. (With devil smile )
কিন্তু তার আগে আমাকে কাল রাতের ঘটনা শবনমের ব্রেন থেকে মুছে ফেলতে হবে। ওকে কোন ভাবে এসবে জড়াতে দেওয়া যাবে না। নাহলে ওর জীবনের ঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে।
তার পর আধার শবনমের কপালে হাত রেখে ওর ব্রেন থেকে রাতের সব ঘটনা মুছে ফেলে। ওর কপালে আরেকটা কিস করে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
আধার মাহিরার কাছে যায়।
মাহিরাঃ Aadhar Shabnam is alright. ও ঠিক আছে। ( অনেকটা চিন্তিত হয়ে)
আধারঃ yeah But আমি ওকে সব ভুলিয়ে দিয়েছি। ওর জ্ঞান ফিরলে ওকে তুমি কিছু না কিছু বুঝিয়ে দিও। আর আমার কথা ওকে বলো না।
মাহিরাঃ সেটা ঠিক আছে।but are you alright.
আধার হাল্কা হেসে,,,,,, আমার জান ঠিক আছে তো আমিও ঠিক আছি।
কিন্তু এখন আমাকে যেতে হবে কিছু অসম্পূর্ণ কাজ অসম্পূর্ণ করতে হবে।
মাহিরাঃ কিন্তু এখন তুমি অনেক দূর্বল আধার। যদি werewolf রা আবার attack করে তুমি ওদের সাথে পেরে উঠবে না।
আধারঃ Don’t worry আমি শুধু কিছুক্ষনের জন্যই দূর্বল হয়েছি। Full Moon হতেই আমি আমার সব শক্তি পেয়ে যাবো। আর Full Moon হতে বেশি সময় বাকি নেই। বলে আধার বেড়িয়ে গেল।
মাহিরাঃ I know Aadhar. তোমার শক্তি যত তারাতারি যায় তত তারাতারি আবার চলে আসে এজন্যই তুমি ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী ভ্যাম্পায়ার। আর werewolf রা তোমার সবচেয়ে বড় শত্রু।
সকালে,,,,,,,
শবনম হাল্কা হাল্কা করে চোখ খুলে দেখে ও কোন অচেনা জায়গায় আছে। মাথাটা প্রচুর ভার হয়ে আছে ওর আস্তে আস্তে উঠে বসে মাথা চেপে ধরে শবনম। কিছুক্ষন ওভাবে থেকে মাথা তুলে জায়গাটা চেনার চেষ্টা করতে থাকে।
শবনমঃ আমি এখানে কেন। আমিতো কালকে ধ্রুবর সাথে হোস্টেলে,,,,, আহ কিচ্ছু মনে করতে পারছি না কেন। দু হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে শবনম।
একটা কফির মগ হাতে নিয়ে মাহিরা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে,,,,,,
মাহিরাঃ Don’t worry Shabnam তুমি আমার বাসায় আছো।
শবনম মাথা তুলে মাহিরার দিকে তাকায়।
মাহিরাঃ জানি তোমার মনে অনেক প্রশ্ন জমে আছে। আগে কফিটা শেষ করো you’ll feel better. Then আমি তোমাকে সব বুঝিয়ে বলছি।??
শবনম মুচকি হেসে মগটা নিয়ে এক সিপ মুখে দিয়ে মাহিরাকে বলল,,,,,
শবনমঃ আমি এখানে কেন। আমি তো কাল ধ্রুবর সাথে ছিলাম তারপর ও পানি আনতে গেল।আহ্ আমি কিছু মনে করতে পারছি না।
মাহিরাঃ Relax Shabnam don’t panic. আসলে আমি নিজেও জানি না কাল কি হয়েছিল। আমি ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তার পর তোমাকে রাস্তার কিনারে অজ্ঞান অবস্থায় পাই আর আমার সাথে নিয়ে আসি। don’t worry আমি পাখিদের কল করে দিয়েছি ওরা তোমাকে নিতে আসছে।
শবনমঃ কিন্তু ধ্রুব ও ঠিক আছে তো। আমার ফোন আমার ফোন কোথায়,,,,,,
To be continued…….
#Our_Unknown_Love_Story
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_22
শবনম আশেপাশে নিজের ফোন খুঁজতে লাগলো।
মাহিরাঃ শবনম হয়তো তোমার ফোন জঙ্গলে কোথাও পরে গেছে।
শবনমঃ কালকে রাতে কি হয়েছিল না হয়ে ছিল আমি কিচ্ছুই মনে করতে পারছি না মাহিরা।?
মাহিরাঃ it’s okay Shabnam. মাথায় এতো চাপ নিয়ো না আস্তে আস্তে মনে পরে যাবে।
শবনম মাহিরার সাথে কথা বলছিলো এমন সময় পাখি আর মিশা দৌড়ে এসে শবনমকে জড়িয়ে ধরলো।
পাখিঃ শবনম তুমি ঠিক আছো। মাহিরা বলল তুমি নাকি জঙ্গলে ফেইন্ট হয়ে গিয়েছিলে।
মিশাঃ হ্যাঁ শবনম are you alright.
শবনমঃ পাখি দি মিশা I’m absolutely all right don’t worry.
পাখিঃ You have no idea আমরা কতটা tensed ছিলাম কাল রাত থেকে। কিন্তু শবনম তুমি অজ্ঞান হলে কিভাবে আর তুমি গাড়ি থেকে বের হয়ে কোথায় গিয়েছিলে। You know what ধ্রুব কতটা টেনশনে ছিলো।
শবনমঃ ধ্রুব ও কোথায় পাখি দি। আমার যতটুকু মনে আছে পাখি দি কালকে রাতে ধ্রুবর গাড়ি নষ্ট হয়ে যায় আর ও পানি আনতে চলে যায় তারপর কি হয়েছে না হয়েছে আমি এখানে কিভাবে এলাম কিচ্ছু মনে করতে পারছি না।
মিশাঃ it’s ok Shabnam. কালকে রাতে ধ্রুব পানি নিয়ে ফিরে এসে দেখে তুই গাড়িতে নেই আর গাড়ির অবস্থা বেশী ভালো না ও তোকে অনেক খোঁজে কিন্তু পায় নি তারপর আমাদের কল করে বলে যে তোকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সবাই মিলে সারা রাত তোকে খুঁজেছিলাম অনেক ভয় করছিলো যদি তোর কিছু হয়ে যায়। ( কথা গুলো বলতে বলতে মিশা কেঁদে দেয়। তার পর শবনমকে জড়িয়ে ধরে।)
পাখি শবনমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,,,,,
পাখিঃ সকালে মাহিরা কল করে বলে যে তুই এখানে। এটা শোনার পর একটু স্বস্তি পাই আমরা।
মিশা শবনমকে ছেড়ে ওর হাত ধরে বলে,,,,
মিশাঃ অনেক কম সময়ে অনেক বেশি আপন হয়ে গেছিস আমাদের। you are like our sister right pakhi Di.
পাখিঃ হুম।
শবনমঃ তোমরা অনেক ভালো তাই আমার মতো অনাথকে আপন মানুষের মতো এতো ভালোবাসো।?
পাখিঃ একটা থাপ্পড় দিবো যদি নিজেকে আবার অনাথ বলিস। we are a family OK. Just like three sisters.
শবনমঃ Thank you Pakhi Di. ?
পাখি মাহিরার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,,,
পাখিঃ Thank you মাহিরা শবনমের এতো খেয়াল রাখার জন্য।
মাহিরাঃ Hey don’t thanked me it’s my duty.
মিশাঃ তো আমাদের এখন যাওয়া উচিত। চল শবনম অনেক আরাম করলি। এখন আমাদের বাসায় নিয়ে তোর আরাম হারাম করবো।?
শবনমঃ কেন?? আমি আবার কি করলাম।?
মিশাঃ কি করেছিস মানে তোর জন্য কাল রাত থেকে একটুও ঘুমাতে পারি নাই। সারা রাত দুশ্চিন্তা করেছি।?
শবনমঃ ওহ ওকে এইযে কানে ধরলাম স্যরি।
মিশাঃ হয়েছে হয়েছে এখন চলেন।
পাখিঃ আমরা আসি মাহিরা see you.
মাহিরাঃ OK bye and take care.
পাখি আর মিশা শবনমকে নিয়ে ওদের বাসায় গেলো। শবনম হোস্টেলে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু পাখি আর মিশা জেদ করে ওকে এ বাড়িতে নিয়ে এসেছে।
শবনমকে ওরা একটা রুমে রেস্ট করতে দিয়ে ওর জন্য খাবার আনতে গেছে।
শবনম রুমের চারপাশে চোখ বুলাচ্ছে আর ভাবছে,,,,,
শবনমঃ এই বাড়িটাতে যত বার আসি কেমন যেন একটা টান অনুভব হয়। মনে হয় এই বাড়ির প্রতিটা দেয়াল আমার চেনা। প্রত্যেকটা জিনিস অনেক আপন আপন লাগে।
নাহ এটা শুধু আমার মনের ধারনা আর কিছু না। কেন যেন লাগে হয়তো আমার ও এমন একটা পরিবার ছিল।আমিও না আমার তো ছোট বেলার কোন কথাই মনে নেই শুধু আম্মুর ডায়েরী আর এই লকেটের কারনে আম্মু আর বাবাইয়ের সম্পর্কে সবকিছু জানতে পেরেছি।
এমন কিছুই নেই সব আমার মনের ভূল। সব আমার ভ্রম।
কি ভাবছো শবনম,,,, খাবারের ট্রে হাতে নিয়ে পাখি রুমে ঢুকতে ঢুকতে জিজ্ঞেস করল।
শবনমঃ কিছুনা পাখি দি এমনেই। মিশা কোথায়।
পাখিঃ ওর কথা আর বলো না এসেই বিছানায় চিৎ হয়ে গেছে। ও অনেক ঘুম পাগলীতো তাই।
শবনমঃ Sorry di আমার জন্য তোমাদের এতো কষ্ট হলো।
পাখিঃ তুই আবার শুরু করলি। কতবার বললাম তুই আমার ছোট বোনের মতো। আমার কাছে মিশা যেমন তুইও তেমনি।
শবনম পাখিকে জড়িয়ে ধরে,,,,, love you Di and thank you আমাকে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য।
পাখিঃ হয়েছে এখন খাবার খেয়ে ঔষধ টা খেয়ে রেস্ট নে then আমরা বিকেলে সবাই ঘুরতে যাবো।
শবনমঃ ওকে।??
এইদিকে,,,,
আধার জঙ্গলে এসে যেখানে werewolf টার সাথে লড়াই করেছিলো সেখানে কি যেন খুঁজছে।
হঠাৎ আধার একটা গাছের সাথে রক্ত দেখতে পেলো।
এটা ওই werewolf এর রক্ত। আধার একটা কাচের গোল আয়নায় রক্ত টুকু তুলে নিলো। আধার বাকা হেসে বলতে লাগলো,,,,
আধারঃ এখন তোমার জীবন আমার হাতের মুঠোয়। আজ আমি জেনে যাবো তুমি কোন রুপে আমাদের মাঝে এসেছো। একবার শুধু জানি যে তুমি কে,,,, তারপর তোমাকে এতো ভয়াবহ মৃত্যু দিবো,,,যেটা দেখে তোমার রুহ ও কেঁপে উঠবে।
এখন শুধু রাতের অপেক্ষা।( with devil smile)
বিকালে,,,,
শবনম পাখি আর মিশা একসাথে ঘুরতে বের হয়েছে।
শবনমঃ পাখি দি পুলক কবীর আর ইরা আসবে না আমাদের সাথে।
পাখিঃ না শবনম কালকে মিশার জন্মদিন তাই ওরা কালকের পার্টির Arrangements করছে।
শবনমঃ Birthday আমিতো জানতাম না sorry.
পাখিঃ কিছু দিনইতো হয়েছে শবনম আমাদের পরিচয় তুমি জানবে কি করে। But মিশা যেন টের না পায়। ওর জন্য এটা সারপ্রাইজ।
শবনমঃ OK don’t worry. আমরা সবাই মিলে ওর বার্থডে অনেক স্পেশাল বানাবো।?
মিশাঃ guys I’m back কি কথা বলছিলে তোমরা।
পাখিঃ কোন রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো সেটা ডিসাইড করছিলাম। right Shabnam.
শবনমঃ আব হ্যাঁ হ্যাঁ ।
তারপর তিনজনে একটা রেস্টুরেন্টে চলে আসে।
শবনমঃ তোমরা একটু বসো আমি washroom থেকে আসছি।
মিশাঃ OK তারাতারি আসিস।
পাখিঃ শবনম carefully যেও।
শবনম ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখ ধুচ্ছিলো।হঠাৎ আয়নায় তাকাতেই ও আধারকে দেখতে পায়। শবনম চমকে গিয়ে পিছনে ফিরে দেখে আধার দুই পকেটে হাত দিয়ে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে মুখে টেডি স্মাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
শবনমঃ আপনিইই
আধার শবনমের দিকে এগোতে এগোতে,,,,, কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলে।
আধারকে এগোতে দেখে শবনম পিছাতে থাকে আর কাঁপাকাপা গলায় বলে,,,, এটা লেডিস ওয়াশরুম আপনি কোন সাহসে ভিতরে এসেছেন। বের হন তারাতারি।
শবনম পেছনে যেতে যেতে দেয়ালের সাথে লেগে গেছে।আধার ওর একদম কাছে এসে বলতে শুরু করে,,,,,,
আধারঃ আমার সাহসের এখনো তুমি কিছুই দেখো নি। আর তোমাকে দেখার জন্য আমার কোন স্থান কাল সময় নির্ধারণ করা লাগে না ওকে। আমার যখন ইচ্ছে তখন যেখানে ইচ্ছে সেখানে গিয়ে তোমাকে দেখতে পারবো do you get that. Because you are only mine.
আধারের কথায় শবনমের প্রথম প্রথম একটু খুশি লাগলেও পরক্ষনে আবার সেইরাতে আধারের বলা কথা গুলো মনে পরে যায় আর রেগে শবনম আধারকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
শবনম হঠাৎ এমন করায় আধার বুঝে উঠতে পারে নি তাই ধাক্কা খেয়ে একটু দূরে সরে যায় ও। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আধার শবনমের দিকে,,,,,,
শবনম কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে,,,,,
শবনমঃ কোন অধিকারে আমার কাছে আসেন আপনি হ্যা।কোন অধিকার নেই আপনার আমার উপর। কেউ হই না আমি আপনার।
আপনি সেদিন বলেছিলেন না যে I’m a carrecterless girl লোভী। তাহলে আমার মত carrecterless লোভী মেয়ের কাছে কেন এসেছেন।
আপনার পাশে আমাকে মানায় না আধার রেজওয়ান।
কথা গুলো বলে শবনম কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে যায়। আধার ঠায় একি ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।ওর চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল।
আধারঃ অনেক বেশী কষ্ট দিয়ে ফেলেছি তোমাকে। but I promise আর কষ্ট পেতে দিবো না জান। তোমার সব রাগ অভিমান ভেঙ্গে নতুন করে জীবন শুরু করবো। আমাদের একটা আলাদা ছোট দুনিয়া বানাবো যেখানে শুধু তুমি আমি আর আমাদের #Unknown_Love থাকবে।
শবনম নিজেকে নরমাল করে পাখিদের পাশে এসে বসলো। চুপচাপ খাবার খেয়ে শবনম পাখি মিশা বাড়ি চলে আসে।
রাতে,,,,,
শবনম বিছানায় এপাশ ওপাশ করছে চোখ বন্ধ করলেই আধারের কথা গুলো কানে বাজছে।
শবনমঃ আমি কি বারাবারি করে ফেললাম। আধারকে এভাবে বলা হয়তো ঠিক হয়নি।
না আধার আমাকে নিজেই ওর থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই আমি কিছুই ভূল করি নি।
এইদিকে,,,,,,,,,
আধার আর মাহিরা ওই রক্ত টুকু একটা কাচে রেখে মন্ত্র পরছে। চাঁদের আলো রক্তে পরতেই আয়নায় সেই নেকড়ে মানবের মানুষ রূপী চেহারা ভেসে উঠে।
আধার আর মাহিরা অবাক হয়ে ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে।
To be continued………