#Our_Unknown_Love_Story(2),13,14
#The_Incomplete_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_13
আধারঃ এতো রাতে একা বের হয়েছো কেন ( রেগে )
আধাররের এক হাত তারার মুখে আর এক হাত দিয়ে তারার পিঠে ধরে নিজের কাছে টেনে এনেছে। তারা কিছু বলবে কি ও তো আধারের স্পর্শে জমে গেছে। এর আগে কখনো ও আধারের এতো কাছে আসেনি। তারার হার্টবিট যেন দ্রুত চলছে। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ও আধারের দিকে।
তারা আধারের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ আধারের খেয়াল হলো ও তারার কতটা কাছে চলে এসেছে। তারার নিঃশ্বাস আধারের হাতে বারী খাচ্ছে। তারাকে এতো কাছে দেখে এক ঘোরে হারিয়ে যাচ্ছে আধার।
আধার নিজেকে সামলে নিয়ে নিজের হাত তারার মুখ থেকে সরিয়ে নেয়।তারপর ওর থেকে দুরত্ত্ব বজিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
আধার সরে যেতেই তারা যেন হাফ ছেড়ে বাচঁলো।
আধারঃ এখন বলো এতো রাতে একা বের হয়েছো কেন তারা। এটা তোমার ঢাকা শহর না যেখানে রাতেও মানুষ গমগম করবে। এটা পাহাড়ি এলাকা এখানে রাতে মানুষ না হিংস্র প্রাণী গমগম করে।
আধারের কথায় তারা ভয়ে ভয়ে আশেপাশে তাকায়। আসলেই চারদিক নীরব অন্ধকার তার উপরে দুই পাশে জঙ্গল। এতক্ষণ ভয় না লাগলেও এখন বেশ ভয় করছে ওর। তারা ভয় পেয়ে আধারের পাশ ঘেঁষে দাঁড়ায়। আধারের কাছে বেশ লাগছে তারার ভীতু ফেসটা।
আধারঃ এতো যখন ভয় করে তাহলে বের হয়েছো কেন একা??
তারা মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বলতে শুরু করে,,,
তারাঃ আমার ঘুম আসছিলো না তাই একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম ( মুখ গোমড়া করে)
আধারঃ চলো তোমাকে একটা স্পেশাল যায়গা থেকে ঘুরিয়ে আনি।
তারা অবাক চোখে আধারের দিকে তাকালো। আধার ওকে ঘুরিয়ে আনার কথা বলছে। তারার মনেতো লাড্ডু ফুটছে।
আধারঃ কাম!!
আধার সামনের দিকে হাঁটা ধরে। তারাও ওর পেছনে আসছে। তারা হুট করে আধারকে জিঙ্গেস করলো।
তারাঃ AR আমি নাহয় হাটতে বের হয়েছি কিন্তু আপনি এখানে এতো রাতে কি করছেন।?
আধারঃ আমারো হাটতে ইচ্ছে করছে তাই হাটছি এনি প্রবলেম ?
তারাঃ নো নো নোও প্রবলেম ? আপনি হাঁটবেন আমার কেন প্রবলেম হবে।
পাশাপাশি হাটছে তারা আর আধার। আধার নিজের দুই পকেটে হাত রেখে হাটছে। তারা আড়চোখে আধারকে দেখছে আর ভাবছে।
তারাঃ কিছু একটা কানেকশন তো আছে যা আমাকে ওনার প্রতি এতো দুর্বল করে তুলছে। AR কে দেখলেই মনে হয় উনি আমার অনেক কাছের কেউ। যখন দুরে থাকেন মনে হয় কাছের কেউ দূরে সরে যাচ্ছে। উনার কেয়ার গুলো অনেক পরিচিত লাগে। উনার প্রতি অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে। যখন কাছে আসেন হৃদ স্পন্দন যেন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে যায়। এটা কেমন অনুভূতি কি নাম এটার???
তারার ভাবনায় ছেদ পরে আধারের ডাকে।
আধারঃ কোথায় হারিয়ে গেলে তারা??
তারাঃ ক কই কোথাও না,,
আধারঃ সামনে তাকাও।
তারা সামনে তাকাতেই হা হয়ে যায়। একটা ছোট্ট পুকুর কুয়াশার চাদরে পুকুরটি মুরে আছে। আশেপাশে জোনাকী পোকা উড়ছে।
তারা খুশি হয়ে দৌড়ে সামনে চলে যায়। দু হাত মেলে গভীর নিশ্বাস নিচ্ছে ও। বাতাসে হাসনাহেনার ঘ্রান ভেসে আসছে। চোখ বন্ধ করে এই সুন্দর দৃশ্য টা অনুভব করছে তারা। আর আধার!! ওতো এক ধ্যানে তারার দিকে তাকিয়ে আছে। তারাকে এত খুশি দেখে নিজেকে সার্থক মনে হচ্ছে ওর। ঠাণ্ডা বাতাস এসে তারার চুল গুলো উড়িয়ে দিচ্ছে। শীতে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে তারার। তাড়াতাড়ি করে হাত নামিয়ে চাদর দিয়ে নিজেকে ভালো ভাবে ঢেকে নিলো তারা।
পেছনে ফিরে দেখে আধার ওর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে আর ঠোঁটে সেই মুচকি হাসি। তারা আধারের কাছে এসে দাঁড়ায় তারপর কি বলে,,
তারাঃ থ্যাঙ্ক ইউ AR এত্ত সুন্দর একটা যায়গায় নিয়ে আসার জন্য। দ্যা প্লেস ইজ জাস্ট আমেজিং ( অনেক খুশি হয়ে)
আচ্ছা আপনি আগেও এখানে এসেছিলেন??
তারার প্রশ্নে আধারের হাসি উধাও হয়ে গেল। চেহারায় বিষন্নতা ছেয়ে গেল ওর।
আধারঃ এই যায়গাটায় আমাদের কত স্মৃতি আছে জান অথচ তোমারই মনে নেই। ( মনে মনে)
আধার কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,,
আধারঃ হুম এসেছি। যখনই আমার মন খারাপ করে আমি এখানে এসে বসে থাকি।
তারাঃ ওহ।
আধার গিয়ে একটা পাথরের উপর বসে পরে সাথে তারাও।
তারাঃ AR আপনি গান পারেন?? একটা গান শুনান না প্লিজ। এরকম পরিবেশে গান শোনার অনুভূতি টাই আলাদা। প্লিজ AR (আধারের দিকে ফিরে বাচ্চামো ফেস করে )
আধার তারার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলল,,,
আধারঃ নোও,,,
তারার মুখ গোমড়া করে পুকুরের চিকচিক করা পানির দিকে তাকিয়ে আছে।।ওর চোখের কোনেও পানি চিকচিক করছে অনেক অভিমান হচ্ছে আধারের প্রতি। একটা গানই তো শুনতে চেয়েছিল,,, মুখের উপর না করার কি হলো। ( মনে মনে ভাবছে তারা)
হঠাৎ আধারের কন্ঠ শুনে চমকে ওর দিকে তাকালো তারা। আধার চোখ বন্ধ করে গাছের সাথে হেলান দিয়ে গান করছে।
” শুধু তোমায় ঘিরে…শুধু তোমায় ঘিরে ”
” সিঁদুর রাঙা মেঘ করেছে দূরে”
“শুধু তোমার ছায়া মেঘের উপর ঢেউ খেলে রোদ্দুরে ”
“শুধু তোমায় ঘিরে…শুধু তোমায় ঘিরে ”
” সিঁদুর রাঙা মেঘ করেছে দূরে”
“শুধু তোমার ছায়া মেঘের উপর ঢেউ খেলে রোদ্দুরে ”
“অভিমানের আড়ি কেটে কোথায় তুমি যাচ্ছো হেটে”
“হৃদয়ের চিরকুটে তুমি খুব ডানপিটে”
“আমি তোমার মান ভাঙাবো”
“ভালোবাসার চোখ রাঙাবো”
“মিষ্টি কোন গান শোনাবো গলার নরম স্বরে ”
“শুধু তোমায় ঘিরে…শুধু তোমায় ঘিরে ”
” সিঁদুর রাঙা মেঘ করেছে দূরে”
“শুধু তোমার ছায়া মেঘের উপর ঢেউ খেলে রোদ্দুরে ”
তারা অবাক হয়ে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে। এতো অমায়িক লাগছে গানটা আধারের কন্ঠে যা শুধু তারা বুঝতে পারছে। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। কারো জন্য তীব্র ভালোবাসা লুকিয়ে আছে এই কন্ঠে। গানের প্রত্যেকটা শব্দ আধারের হৃদয়ের কথা প্রকাশ করছে।
“আনমনে আলতো করে হাত ছোয়াবো মুখে”
“তোমার চোখে জল গড়াবে একটু খানি সুখে”
আধারের চোখে শবনমের হাসি মাখা মূখটা ভেসে উঠছে। ওর প্রথম স্পর্শ ওর জড়িয়ে ধরা ওর লজ্জা মাখা হাসি।
“আনমনে আলতো করে হাত ছোয়াবো মুখে”
“তোমার চোখে জল গড়াবে একটু খানি সুখে”
“অভিমানের আড়ি কেটে কোথায় তুমি যাচ্ছো হেটে”
“হৃদয়ের চিরকুটে তুমি খুব ডানপিটে”
“আমি তোমার মান ভাঙাবো”
“ভালোবাসার চোখ রাঙাবো”
“মিষ্টি কোন গান শোনাবো গলার নরম স্বরে”
“শুধু তোমায় ঘিরে…শুধু তোমায় ঘিরে ”
” সিঁদুর রাঙা মেঘ করেছে দূরে”
“শুধু তোমার ছায়া মেঘের উপর ঢেউ খেলে রোদ্দুরে ”
“আলগোছে আঁকড়ে ধরি মুখ লুকানো হাসি”
“তোমার বুকে আছড়ে পরি আমি অহর নিশি”
“আলগোছে আঁকড়ে ধরি মুখ লুকানো হাসি”
“তোমার বুকে আছড়ে পরি আমি অহর নিশি”
“অভিমানের আড়ি কেটে কোথায় তুমি যাচ্ছো হেটে”
“হৃদয়ের চিরকুটে তুমি খুব ডানপিটে”
“আমি তোমার মান ভাঙাবো”
“ভালোবাসার চোখ রাঙাবো”
“মিষ্টি কোন গান শোনাবো গলার নরম স্বরে ”
“শুধু তোমায় ঘিরে…শুধু তোমায় ঘিরে ”
” সিঁদুর রাঙা মেঘ করেছে দূরে”
“শুধু তোমার ছায়া মেঘের উপর ঢেউ খেলে রোদ্দুরে ”
আধারের চোখের কোনা বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল। তারার চোখ এড়ানোর জন্য আধার পিছ ফিরে তা মুছে নিলো।
আধার নিজের মুখে হাসি টেনে তারার দিকে ফিরলো।
আধারঃ কি পছন্দ হয়েছে??এর থেকে ভালো করে আমি গাইতে পারি।
তারা এক ঝটকায় দাঁড়িয়ে গিয়ে বলতে শুরু করে।
তারাঃ পছন্দ হয়েছে মানে,,, AR ইউ আর আ রকস্টার।এতো সুন্দর হয়েছে যা বলে বুঝাতে পারব না।
আধার তারার কথায় হেসে দাঁড়িয়ে যায়। আর বলে,,,
আধারঃ তো এখন চলেন,,, অনেকতো ঘুরলেন। ঘুম পুরো না হলে আবার মাথা ব্যাথা করবে।
তারাঃ ওকে যাবো তো কিন্তু আগে আমাকে প্রমিস করেন আবার নিয়ে আসবেন এখানে।
আধারঃ ওকেই প্রমিস এবার চলো।
আধার তারাকে কটেজে পৌছে দেয়। তারপর নিজেও চলে আসে ভ্যাম্পায়ার কিংডমে।
তারা শুয়ে শুয়ে ভাবছে,,,
তারাঃ AR হান্ড্রেট পার্সেন্ট কাউকে মিন করে গানটা গেয়েছেন। উনার কন্ঠে সেটা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি আমি।
তাহলে কি উনার লাইফে কেউ আছে,,,
তারা এক লাফে উঠে বসে তারপর চিন্তিত হয়ে বলে,,,
তারাঃ AR এর লাইফে কি সত্যি কেউ আছে। নো নো নো দ্যাট্স নট পসিবল। আমি একটু বেশিই ভাবছি। এসব আজগুবি চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে ঝেরে ফেল তারা। AR এর লাইফে এমন কেউ নেই( নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে)
কিন্তু যদি থাকে তাহলে আমার কি হবে( চিন্তিত হয়ে)
এসব চিন্তা ভাবনা করতে করতে তারা ঘুমিয়ে পরে।
To be continued….
#Our_Unknown_Love_Love_Story(2)
#The_Incomplete_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_14
In College….
তারা আমান রোহান আর দিয়া ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতেই দেখতে পেল পুরো কলেজ সাজানো হচ্ছে। আমায়রা আমান আর তারাদের দেখে ওদের কাছে ছুটে আসলো।
আমায়রাঃ হায় গাইজ গুড মর্নিং ?
আমানঃ হায় আমায়রা ?
তারাঃ আচ্ছা আমায়রা কলেজে কি আজকে কোন ফাংশন আছে?? সব কিছু ডেকোরেট কেন করা হচ্ছে??
আমায়রাঃ হ্যাঁ আজকে একটা ফাংশন আছে কলেজে। এভরি ইয়ার বছরের প্রথম মাসে একটা ডান্স কম্পিটিশন থ্রো করা হয় সেটার জন্যই এই এরেন্জমেন্ট করা হচ্ছে।
তারাঃ ওহ,,,
রোহানঃ সাউন্ডস ইন্টারেস্টিং,,, আমিও পার্টিসিপেন্ট করবো।( এক্সাইটেড হয়ে)
আমায়রাঃ সিউর কিন্তু পার্টনার লাগবে,,, উইথআউট পার্টনার কম্পিটিশনে পার্টিসিপেন্ট করা যাবে না রোহান। এজন্যই আমি এখানে তোমাদের কাছে এসেছিলাম।
দিয়াঃ মানে?? তুমি কি রোহানকে পার্টনার করতে চাইছো ( ভ্রু কুঁচকে)
দিয়ার কথায় আমান আপসেট হয়ে যায় আর রোহান খুশি হয়ে বলতে শুরু করে,,
রোহানঃ সিরিয়াসলি আমি রাজি,,,
আমায়রাঃ নো নো রোহান তুমি ভুল ভাবছো। আমি আসলে আমানকে বলতে এসেছিলাম আমার পার্টনার হতে। ( আমতা আমতা করে)
এবার আমানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
আমানঃ সিউর আমায়রা আ’ল বি ইউর পার্টনার। ?
আমায়রাঃ থ্যাংকস আমান।
রোহিতঃ তো আমি কার সাথে পার্টিসিপেন্ট করবো,,, ( মুড অফ করে)
রোহান আড়চোখে দিয়ার দিকে তাকালো। রোহানের চাহনি দেখে দিয়া বিরক্তিকর ভাবে ওকে বলল,,,
দিয়াঃ হোয়াটটট ??? আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?? ?
রোহানঃ প্লিজজজজ
দিয়া কিছুক্ষণ ভেবে তারপর উত্তর দিল।
দিয়াঃ ওকেই ( ভাব নিয়ে)
রোহানঃ সিরিয়াসলি দিয়া,,, লাভ ইউ ইয়ার,,, ( দিয়াকে জড়িয়ে ধরে)
দিয়াঃ হয়েছে ছাড় এখন। তারা তুই পার্টিসিপেন্ট করবি না,,,
এতক্ষন ওদের কথা শুনছিল তারা। বেচারির মুখটা মলিন হয়ে আছে। আজ একটা পার্টনার নেই বলে…?
তারাঃ আব নোও তোরা কর আমার ভালো লাগছে না,,,
আমার তো পার্টনারই নেই কি পার্টিসিপেন্ট করবো ?( মনে মনে)
কলেজের দো’তলায় দাঁড়িয়ে তারাকে দেখছিল আধার। ওর এই মায়ুস ফেসটা অনেক কিউট লাগছে আধারের কাছে। তারা গাল আর নাক ফুলিয়ে রেখেছে আধারের ইচ্ছে করছে গিয়ে গাল দুটো আর নাকটা একটু টেনে দিতে। নিজের ইচ্ছেতে আপাতত সংযম রেখে আধার বলতে শুরু করল।
আধারঃ তোমার যখন কম্পিটিশন জিতার এতোই ইচ্ছে তাহলে এটাই হবে। ডোন্ট ওয়ারি মেরি জান এবার তুমি পার্টিসিপেন্টও করবে আর জিতবেও। দ্যাট্স মাই প্রমিস টু ইউ,,,তাছাড়া এই বাহানেয় আমি তোমার আরো কাছে আসার সুযোগ পাবো। তোমার মনে আমার জন্য আগের অনুভুতিটা জাগানোর চেষ্টা করবো। হয়তো এবার আল্লাহ আমাকে সফল করবে।
আধার কথা গুলো ভেবেই দ্রুত পায়ে কেবিন রুমে চলে যায়।
After Some Hours….
সবাই ফরম ফিল করে জমা দিচ্ছে। অনেকে প্র্যাকটিস শুরু করে দিয়েছে রাতে কম্পিটিশন আর এখন দুপুর। তারার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে পারছে না তাকিয়ে তাকিয়ে সবাইকে দেখা ছাড়া। আমান আর রোহান ফরম জমা দিয়ে প্র্যাকটিস করার জন্য কমন রুমে এসেছে। সবাই এখানেই বিভিন্ন গানে নিজেদের প্র্যাকটিস করছে। তারা মন খারাপ করে একটা চেয়ার টেনে বসে পরলো। আমান আর আমায়রা একটা রোমান্টিক গানে রিহার্স করছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাদের এক সাথে। কিন্তু রোহান আর দিয়া বার বার ঝগড়া করছে।রোহান দিয়াকে ধরতে গিয়েও ফালিয়ে দিচ্ছে আর দিয়া ওকে ঝাড়ছে আবার দিয়া ভুল স্টেপ করে রোহানের পায়ে চাপ দিয়ে দিচ্ছে বেচারা রোহান পা ধরেই লাফাচ্ছে। তারা ওদের অবস্থা দেখছে আর হাসছে।
হঠাৎ সামনে কেউ এসে পরায় তারা বিরক্ত হয়ে উপরের দিকে তাকালো। আধার একটা স্মাইল দিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আধারকে দেখে চট করে দাঁড়িয়ে যায় তারা। ক্লাস রুমের অনেকেই অবাক হয়ে আধারকে দেখছে কারন ওরা কখনোই আধারকে এসব নাচ গানের জায়গায় আসতে দেখে নি। আধার এতো বছরে কখনো কোন ফাংশনেও আসে নি শুধু ক্লাস করিয়ে চলে গেছে।
আধারঃ একচুয়ালি তারা কিছু বলার ছিলো তোমাকে,,,
তারাঃ আমাকে?? আমাকে ক কি AR?? ( তোতলিয়ে)
আধারঃ এ্যাজ ইউ নো আজকে রাতে একটা ফাংশন আছে তো আমি ওটাতে পার্টিসিপেন্ট করছি। বাট আই নিড এ পার্টনার।
তারাঃ ওহ ( মন খারাপ করে) তার মানে এখন আমি আপনাকে পার্টনার খুঁজে দিবো।
আধার তারার কথা শুনে মুচকি হেসে বলল,,,
আধারঃ খুঁজে দেওয়া লাগবে না আমি নিজেই খুঁজে নিয়েছি।
আধারের কথা শুনে তারা কাদোকাদো ফেস করে আধারের দিকে তাকালো।
তারাঃ তার মানে আমি ঠিক ভাবছিলাম AR এর লাইফে আগে থেকেই কেউ আছে,,,? ( মনে মনে)
ক কে সে AR??( আসেপাশে চোখ বুলিয়ে)
আধারঃ তুমি!!
তারা চোখ বড় বড় আধারের দিকে তাকালো।
তারাঃ আ আ’ম আমি ( নিজের দিকে আঙ্গুল ঘুরিয়ে)
আধারঃ হুম তুমি,,, তো তুমি কি আমার সাথে এই ফাংশনে এ্যাজ আ পার্টনার পার্টিসিপেন্ট করবে তারা?? ( প্রশ্ন বোধক চোখে)
তারাতো এতো খুশি যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে। অবশ্যই আধার ওর কাছে আকাশের চাঁদ এর থেকে কম না। তাছাড়া এখন ও সিউর যে আধারের লাইফে কেউ নেই,,,
তারা খুশি হয়ে আধারকে জড়িয়ে ধরলো আর বলতে শুরু করল।
তারাঃ আমি তো সারাজীবন আপনার পার্টনার হতে রাজী।
কথাটা বলেই তারা বোকা বনে গেল। সাথে সাথে আধারের থেকে দূরে সরে দাঁড়ালো মাথা নিচু করে। আধার মুচকি হেসে তারার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,,,
আধারঃ আমার কেবিনে আমরা প্র্যাকটিস করবো চলো।
তারাঃ হয়তো AR আমার কথায় খেয়াল করে নি বেঁচে গেছি। ( মনে মনে)
তারা আধারের হাতে হাত রাখলো।
আধারঃ আমি জানি তারা তোমার মনে আমার জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি হচ্ছে। ইউ অলসো ডু লাভ মি। এখন শুধু তোমার মুখে প্রকাশ করার অপেক্ষায় আছি। ( মনে মনে)
আধার গান প্লে করে তারার সাথে স্টেপ বাই স্টেপ প্র্যাকটিস করছে। তারা অবাক হয়ে শুধু আধারকেই দেখছে। উইথআউট কোরিওগ্ৰাফার আধার একদম প্রফেশনাল ভাবে স্টেপ গুলো করছে। সেদিন আধারের গান শুনেছিল তারা মুগ্ধ হয়ে আর আজকে ওর নাচ।
আধার যতবার তারার কাছাকাছি আসছে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে তারার মাঝে। আধারের প্রতিটা স্পর্শ অনেক চেনা চেনা লাগছে ওর।
রাতে,,,
সবাই একেক করে নিজেদের পারফর্মেন্স দিচ্ছে। তারা রেডি হয়ে স্টেজের পেছনে আধারের অপেক্ষা করছে।
তারা হোয়াইট জিন্স ব্লাক টি শার্ট আর হোয়াইট জ্যাকেট পরেছে। উঁচু হিল স্কেট্স সুজ। চুল গুলো কার্ল করে এক সাইডে আনা। ম্যাচিং করে মেকআপ করা। একদম বার্বিডল এর মতো লাগছে ওকে।
তারা অনেকক্ষন ধরে অপেক্ষা করছে আধারের কিন্তু ওর আসার কোন খবর নেই। অনেক টেনশন হচ্ছে তারার। এর মধ্যে তারা আর আধারের নাম এনাউন্স করা হয়ে গেছে।
তারা ভয়ে ভয়ে স্টেজে দাঁড়িয়ে যায়। আধার এখনো আসে নি। ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে ওর। যদি আধার না আসে তাহলে কি হবে। সবাই উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছে। স্পীকার বার বার তারাকে আধারের কথা জিজ্ঞাসা করছে কিন্তু তারা চুপ হয়ে আছে। ও কি বলবে ও তো নিজেই জানে না আধার কোথায়??
তারাঃ AR কোথায় আপনি?? আপনি যদি না আসেন সবাই আমার উপর পচা টমেটো আর ডিম ছুড়ে মারবে। ইউউউ ?( মনে মনে)
হঠাৎ স্টেজের লাইট অফ হয়ে গেল আর সেন্টার স্টেজের লাইট জ্বলে উঠলো। সাথে সাথে মিউজিক প্লে হয়ে গেল। Chogada tara….
তারা পেছনে ফিরে তাকাতেই হা হয়ে গেল। সবাই জোরে জোরে চিয়েরআপ করছে।
আধার ব্লাক জিন্স হোয়াই টি শার্ট ব্লাক জ্যাকেট ব্লাক সুজ। চুল গুলো সিল্কি যার কারনে বারবার চোখের সামনে চলে আসছে।
তারা হা হয়ে দেখছে আধারকে। আধারের এই রুপটা তারার কাছে একদম নতুন। ও আধারকে এটিটিউট লুকে দেখেছে প্রথম দিন। রাগী লুকে দেখেছে, ইমোশনাল লুকে দেখেছে। কিন্তু আজকের লুকটা সম্পুর্ন ভিন্ন। একদম কিউট লুক যাকে বলে। কেউ বলবে না এই আধার এতোটা এরোগেন্ট ও এক রোখা হতে পারে। একদম বাচ্চা বাচ্চা লাগছে ওকে যেন টিচার না কলেজের স্টুডেন্ট।
মিউজিক বাজছে এতে তারার কোন হুশই নেই। আধার তারার সামনে আসতে আসতে স্টেপ করছে।
Ho avi gayi Raat…
Ane bhulo badhi Baat….
Prem niya mausom che…
Aabh aao mere pass..
Reh jao mere saath….
Prem niya mausom che…
আধার এসে তারার হাত ধরে টান দেয় আর সাথে সাথে তারার ধ্যান ভাঙে। আধার ইশারায় ওকে বলে ও ঠিক আছে কি না। তারা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। আধার তারার এক সাইডে আর তারা অন্য সাইডে,,,
Ho avi gayi Raat…
Ane bhulo badhi Baat….
Prem niya mausom che…
Aabh aao mere pass..
Reh jao mere saath….
Prem niya mausom che…
Mil jaye mujhko aagar saath tera
To bhulu main sara jahaan….
আধার তারার পেছন দিয়ে ঘুরে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে,,,
Chogada tara… Chabila tara…
Rangila tara Rang bher juwe tari vaat re…
Ho Chogada tara… Chabila tara…
Rangila tara Rang bher juwe tari vaat re…
Chup chup ke tumhe dekha main karu…
Saari Saari raat Saari Saari raat…
তারা আধারের দু কাধে হাত রেখে স্টেপ করলো।
Chup chup ke mujhe dekha tu kare…
Saari Saari raat Saari Saari raat…
আধার তারাকে ঘুরিয়ে স্টেপ করলো। তারপরে ওর কোমর জড়িয়ে উপরের দিকে তুলল।
Mil jaye mujhko aagar saath tera
To bhulu main sara jahaan….
Chogada tara… Chabila tara…
Rangila tara Rang bher juwe tari vaat re…
Ho Chogada tara… Chabila tara…
Rangila tara Rang bher juwe tari vaat re…
গান স্টপ হতেই সবাই দাঁড়িয়ে জোরে জোরে হাততালি দিচ্ছে। আধার আর তারার নাচে সবাই মুগ্ধ গেছে।
আধারঃ স্যরি তারা আসলে একটা কাজে লেইট হয়ে গেছে।
তারাঃ ইট্স ওকেই AR ?
এবার রেজাল্ট এর টাইম। তারা শক্ত করে আধারের হাত ধরে আছে। ( আরে নাচের রেজাল্ট বলবো পরীক্ষার না এতো টেনশন করার কি আছে। ?)
সেকেন্ড আমান আর আমায়রা হয়েছে এখন ফার্স্ট প্লেস বাকি শুধু।
মি.মাহমুদঃ ফার্স্ট উইনার ইজ AR এন্ড তারা।
তারাঃ ইয়েসসসস উই উইননন AR ?
তারা আধারকে জড়িয়ে ধরে দৌড়ে গিয়ে জজের সামনে গেল পেছনে আধারও। জজ তারাকে একটা ব্যাচ পরিয়ে দিলেন। আধারকে পরতে গেলে ও বাধা দেয় আর ব্যাচ হাতে নিয়ে নেয়।
তারা ব্যাচটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে।
মাহমুদঃ কংরেচুলেশন মি. আধার রেজওয়ান,,,
মাহমুদ আধারের সাথে হাত মিলাচ্ছে।
আধারঃ থ্যাংকস মি মাহমুদ,,,
আধার রেজওয়ান নামটা কানে আসতেই শক খেয়ে তারা আধারের দিকে তাকালো।
তারাঃ AR এর নাম আ আধার রেজওয়ান??( কাপাঁকাপা কন্ঠে)
তারা পাশে থাকা ওদের ফরম টা তুলে দেখতেই দেখে আধার রেজওয়ান দেওয়া। তারা ছলছল চোখে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে।
তারার চোখে সেদিন একসাথে দেখা নামটা ভেসে উঠছে আধার শবনম।
তারাঃ তার মানে AR আর আধার একই। AR এর লাইফে আগে থেকেই কেউ আছে। ওও ওই মেয়েটা কে?? কোথায় ও?? আই হ্যাভ টু নো,,,
তারা এক কদম দুই কদম করে পিছনে ফিরে দৌড়ে বের হয়ে যায়। চোখ দিয়ে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে ওর।
To be continued…..
গল্পে নতুন মোর এখন থেকে যা যা হবে সব ভাবনার বাইরে ? আজকে খুশির ঠেলায় নেচেছেন কাল কি হয় আল্লাহ জানে ?