Our_Unknown_Love_Story,25,26

0
992

#Our_Unknown_Love_Story,25,26
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_25

ভোরের আলো চোখে পরতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল শবনমের। টিপটিপ করে চোখ খুলতেই দেখে আধার ওর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে। শবনম তারাতারি উঠে বসে।

আধারঃ Good morning মেরি জান।শবনমের কপালে কিস করে।

শবনমঃ মর্নিং। আপনি কি সারারাত ঘুমান নি। নাকি এভাবেই তাকিয়ে ছিলেন। (সন্দেহের চোখে।)

শবনমের কথায় আধার হচকিয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলানোর জন্য আধার বললো,,,

আধারঃ ঘুমিয়েছি না এইতো একটু আগেই ঘুম ভেঙ্গে গেল।?
এখন কথা না বাড়িয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আমি তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসছি।

শবনমঃ আপনি কি ভুলে গেছেন কালকে না বলে আমাকে আপনি এখানে নিয়ে এসেছেন। এখন আমি ড্রেস পাবো কোথা থেকে। কিছুটা রেগে।

আধার মুচকি হেসে শবনমের দিকে কিছুটা ঝুকলো তারপর বলল,,,,

আধারঃ তুমি আধার রেজওয়ান কে এখনো চিনো নি জান। কাবার্ড খুলে যেটা পছন্দ হয় পরে নিচে চলে আসো। আর হ্যাঁ শুধু 15 মিনিট সময় আছে তোমার কাছে এর থেকে এক মিনিট লেট হলে আমি নিজে এসে তোমাকে রেডি করে দিবো।?বলে আধার রুম থেকে বের হয়ে যায়।

শবনম রেগে আধারের যাওয়ার দিকে একটা বালিশ ছুরে মারে।

শবনমঃ বললেই হলো। 15 মিনিট না আমি পুরো 1 ঘন্টা করবো লেট করবো হ্হ।

না না তারাতারি করি আধারের কোন বিশ্বাস নেই কখন কি করে বসে। শবনম তারাতারি কাবার্ডের সামনে গেল।

শবনম ড্রেস নেওয়ার জন্য কাবার্ড খুলে অবাক হয়ে যায়। পুরো কাবার্ড ভরা বিভিন্ন ধরনের ড্রেস। গাউন, শাড়ী, থ্রী পিস, জিন্স, টপস, স্কার্ট। আরেকটা কাবার্ড খুলে দেখে ওটাতে বিভিন্ন ধরনের সুজ,পার্স,আর কসমেটিক্স।

আর আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো যে সব কিছুই শবনমের মাপের। শবনম অফ হোয়াট লং স্কার্ট,আকাশি রঙের একটা শার্ট,গলায় স্কার্ফ, হাতে স্টোনের ব্রেসলেট, মেচিং ইয়ারিং। চোখে কাজল আর হাল্কা পিঙ্ক লিপস্টিক দিয়ে চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে নিচে নেমে আসলো।

আধার ডাইনিং টেবিলে বসে শবনমের জন্য অপেক্ষা করছিলো। সিরির দিকে চোখ পরতেই স্তব্ধ হয়ে গেল ও। আজ ওর প্রিন্সেস স্নো হোয়াইট কে সত্যিই স্নো হোয়াট লাগছে। শবনম এক পা দু পা করে আধারের কাছে এসে দাঁড়ালো। কিন্তু এতে আধারের কোন খেয়ালী নেই ও এক ধ্যানে শবনমের দিকে তাকিয়ে আছে।

শবনম আধারকে ডাকছে কিন্তু আধার কোন রিয়েকশনি করছে না। শবনম রেগে একটা কাটা চামচ নিয়ে আধারের হাতে খোচা মেরে দেয়।

আধার আহ্ বলে রাগী লুক নিয়ে শবনমের দিকে তাকায়,,,,,

আধারঃ পাগল হয়ে গেছো কি করলে এটা।

শবনম আধারের কথায় কিছুটা ভয় পেয়ে বলল,,,

শবনমঃ আব কখন থেকে ডাকছি আপনার কানে কথা না গেলে আমি কি করবো।

আধারঃ ওকে বাদ দাও। খেতে বসো আমি নিজের হাতে তোমার জন্য রান্না করেছি।

শবনম আধারের পাশের চেয়ারে বসে পরলো আধার নিজের হাতে শবনমকে খাইয়ে দিতে নেয় শবনম বাধা দিয়ে বলে,,,,

শবনমঃ আমার হাত আছে নিজে থেকে খেতে পারবো।

আধার নিজের রাগ কন্ট্রোল করে নরম স্বরে বলল,,,

আধারঃ সেটা আমি জানি কিন্তু এখন থেকে আমি তোমাকে খাইয়ে দিবো। বেশি কথা না বলে চুপচাপ খাও নাহলে কালকের শাস্তির কথা মনে আছে তো।??

শবনম ভয়ে আধারের হাতে খেয়ে নিলো।খাওয়ার মাঝেই শবনম আধারকে জিঙ্গেস করলো,,,

শবনমঃ আপনি খাবেন না।

শবনমের কথায় আধার ঘাবড়ে যায় তারপর বলে,,,

আধারঃ আমি সকালে কিছু খাই না শুধু কফি খাই। আর কফি আমি একটু আগেই খেয়ে ফেলছি মেডাম।

তারপর আধার শবনমকে খাইয়ে দিয়ে যত্ন সহকারে ওর মুখ মুছে দিলো। শবনমের চোখে পানি টলমল করছে হয়তো ছোটবেলায় ওর বাবা মাও ওকে এভাবে আদর করে যত্ন সহকারে খাইয়ে দিতো।

আধার শবনমের চোখের পানি মুছে দিলো।

আধারঃ তোমার চোখে পানি না ঠোঁটে হাসি দেখতে চাই অলটাইম।

আধারের কথায় শবনম মুচকি হাসলো।

আধারঃ That’s like my princess. চলো তোমাকে আমার স্পেশাল একটা জায়গা থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

শবনমঃ স্পেশাল জায়গা???

আধার শবনমের হাত ধরে বাড়ির বাইরে বাগানে নিয়ে আসলো। বাগানে এসে শবনমের লাগছে যে ও কোন ফুলের রাজ্যে আছে। চারপাশে বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন ধরনের দেশি বিদেশি ফুল।

শবনমঃ ওয়াও আধার that’s amazing. এমন লাগছে যেন কোন ফুলের রাজ্যে চলে এসেছি।

আধার শবনমকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,

আধারঃ হ্যাঁ এটা আমার রাজ্য আর তুমি আমার রাজ্যের রানি। শবনমের মুখে বিশ্ব জয় করা হাসি। শবনম খুশি হয়ে ঘুরে ঘুরে আশেপাশে দেখছিল আর আধার শবনমকে।

আধার ভাবছে,,, তোমার এই হাসির জন্য আমি সব করতে রাজি। আমি জানি না আমাদের ভবিষ্যত কি কিন্তু প্রমিস করছি আমাদের বর্তমান সপ্নের মতো রঙ্গিন হবে।

শবনম ফুল গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছিলো হঠাৎ ওর চোখ একটা বড় গাছের উপর আটকে যায়। গাছটার সব পাতা গাঢ় লাল রঙের। এমন লাগে যেন কেউ নিজ হাতে রং তুলি দিয়ে পাতা গুলো কে রঙীন করেছে।

শবনম দৌড়ে গাছটার নিচে চলে আসে। আধারও
শবনমের পিছে পিছে আসে।

শবনমঃ ওয়াও আমি এমন গাছ কখনো দেখি নি।

আধার শবনমের পিছনে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করল,,,,

আধারঃ এটা বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। এটা Japanese tree. এটার নাম Maple Bonsai tree. সারা বছর এ গাছে পাতা থাকে না। শুধু বসন্ত আর গ্রীষ্মকালে এ গাছে পাতা গজায় আর বসন্ত কালে গাছের পাতা কমলা রঙের হয় আর গ্রীষ্মকালে এটা রক্ত লাল রং ধারন করে।

শবনমঃ it’s just amazing. অন্নেক সুন্দর।

হঠাৎ আধার একটা ধারালো ছুরি এনে গাছটায় খোদাই করে কিছু লিখা শুরু করলো।

শবনম অবাক হয়ে আধারকে দেখছে আর বার বার জিজ্ঞাসা করছে,,,

শবনমঃ আধার কি করছেন এভাবে খোদাই করলে গাছটার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে।

আধার কাজ শেষ করে শবনমকে গাছটার সামনে এনে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,,

আধারঃ দেখো এখন গাছটার সৌন্দর্য হাজার গুন বেশি বেড়ে গেছে।

শবনম তাকিয়ে দেখে গাছটায় একটা লাভ শেপের মাঝখানে,,,,

Aaadhar Love’s Shabnam লেখা। আধার শবনমের ঘারে থুতনি রেখে বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ এটা আমাদের ভালবাসার চিহ্ন হয়ে সারাজীবন এভাবেই থাকবে।যদি আমি কখনো হারিয়ে যাই এখানে এসে তুমি আমাকে খুঁজে পাবে। আর কখনো যদি তুমি আমাকে ভুলে যাও এটা তোমাকে আমার কথা মনে করিয়ে দিবে।

This is the symbol of #Our_Unknown_Love_Story

আধারের চোখে পানি চলে এসেছে। শবনম পিছনে ঘুরে আধারকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে।

শবনমঃ আমি তোমাকে কখনো ভুলবো না আধার ভালোবাসি তোমাকে নিজের থেকেও বেশী। আর কখনো তোমাকে আমার কাছ থেকে হারাতেও দিবো না। যদি কখনো হারিয়ে যাও I promise জমিন আসমান এক করে ফেলবো কিন্তু তোমাকে খুঁজে বের করবোই।

আধার শবনমকে আরো জোরে নিজের সাথে মিশিয়ে বললো,,,

আধারঃ আমি জানি জান। কিন্তু এ দুনিয়াতে এমন অনেক কিছু আছে যা আমাদের ভাবনার বাহিরে। তোমাকে সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

শবনম আধারকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরে বলে,,,

শবনমঃ আমি এই দুনিয়ার কথা ভাবি না আমার শুধু তোমাকে চাই আর কিছু না। প্লিজ আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না।

তুমি যেই মুহূর্তে আমাকে ছেড়ে যাবে আমার নিঃশ্বাস ও ওই মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যাবে আধার। যে দুনিয়াতে আধার নেই সেই দুনিয়াতে শবনমও থাকবে না।

আধার বুঝতে পেরেছে যে শবনম অনেক emotional হয়ে গেছে তাই ওকে সামলানোর জন্য বলে,,,

আধারঃ শবনম আরেকটা স্পেশাল জিনিস আছে এখানে দেখবে।

শবনম মুখ তুলে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো। আধার ওর চোখ মুছে ওর হাত ধরে একটা দোলনার সামনে নিয়ে আসে। তারপর শবনমকে দোলনায় বসিয়ে পেছন থেকে আস্তে আস্তে ধাক্কা দিতে থাকে। শবনমও খুশি হয়ে দোলতে থাকে। হঠাৎ আধার গান গাওয়া শুরু করে দেয়,,,

Main rahoo yaa na rahoo tum mujhme kahi baki rehna..
Mujhe nind aye jo aakhri tum khwabo main aate rehna…
Bass itna hain tumse kehna…
Bass itna hain tumse kehna….

To be continued….

#Our_Unknown_Love_Story
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_26

গান শেষ করে আধার শবনমের পাশে বসে ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো।

আচমকা এমন করায় শবনম কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। আধার বুঝতে পারছে যে শবনম আন কমফোরটেবল ফিল করছে। আধার শবনমের হাত টেনে নিজের মাথায় রাখে আর বলে,,,

আধারঃ বেশি নড়াচড়া না করে চুপচাপ আমার চুল গুলো টেনে দাও। আধার চোখ বন্ধ করে কথা গুলো বলল।

শবনম একটা শয়তানি হাসি দিয়ে জোরে জোরে আধারের চুল টেনে দিলো। আধার ব্যথা পেয়ে লাফ দিয়ে উঠে বসলো। তারপর শবনমের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,,,

আধারঃ এটা কি করলে তুমি। এভাবে কেউ চুল টানে।?

শবনম কিছুটা ভয় পেয়ে যায় কিন্তু আধারকে বুঝতে না দিয়ে উল্টা রাগ দেখিয়ে বলল,,,

শবনমঃ আমি কি বলছি আমাকে দিয়ে চুল টানাও।আমি এভাবেই চুল টানি পছন্দ হলে হবে না হলে না।??

আধারঃ তুমি ইচ্ছে করে করেছো আমি জানি। ?

শবনমঃ জানো তাহ‌লে আবার বলছো কেন।

আধার রেগে কিছু বলতে নিলে শবনম ওকে চুপ করিয়ে নিজে আবার বলতে শুরু করে,,,,

শবনমঃ কলেজের সময় হয়ে গেছে আজ কি কলেজে যাওয়া হবে না।

আধার হাল্কা হেসে শবনমের গাল টেনে বলল,,,

আধারঃ তুমি কিন্তু অনেক পাজি হয়ে গেছ শবনম এখন আমাকে আর ভয় পাও না।

শবনম আধারের নাক টেনে বলল,,,

শবনমঃ তুমি কি বাঘ না ভাল্লুক যে তোমাকে ভয় পাবো।?

আর ভালোবাসি তোমাকে ভালোবাসার মানুষের প্রতি মনে ভয় না ভালোবাসা থাকে। বুঝেছো মি.বুদ্ধু রাম।?

আধার মাথা নিচু করে বলল,,,

আধারঃ জি মালিকায় শবনম।?শবনম তুমি 5 মিনিট বসো আমি রেডি হয়ে আসছি। দেন কলেজে যাবো।

শবনম মাথা ঝাঁকালো।

আধার চলে যেতেই শবনম আবার দোলনায় দোলতে থাকলো।

কিছুক্ষনের মধ্যেই আধার চলে পিছনে ফিরে আধারকে দেখে ওর চোখ আটকে যায়,,,

আধার ওর সাথে মেচিং করে আকাশি রঙের শার্ট, হোয়াইট ডেনিম পেন্ট, হোয়াইট স্কেট্স সুজ, চুল গুলো স্পাইক করা।

শবনম আধারের দিকে কতক্ষন তাকিয়ে মনে মনে বলল,,,

শবনমঃ My Prince Charming Aadhar Rejwan.??

আধার শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত ফোল্ড করতে করতে শবনমের সামনে এসে দাঁড়ালো।

আধারঃ চলো মেরি জান মালিকায় শবনম। বলে শবনমের হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে দিল।

আধার ড্রাইভ করছে আর আড়চোখে শবনমকে দেখছে। শবনম বুঝতে পেরে আধারের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলল,,,

শবনমঃ সামনে তাকিয়ে ড্রাইভ করো নাহলে উপরের টিকিট কেটে যাবে।?

শবনমের কথায় আধার হেসে সামনে তাকিয়ে বলতে থাকে,,,

আধারঃ তুমি ও তাকাও আমি কি না করেছি। after all I’m your Prince Charming Aadhar Rejwan. ?

শবনম অবাক চোখে আধারের দিকে তাকায় তারপর কাদোকাদো ফেস করে বলে,,,

শবনমঃ তুমি এমন কেন মনে মনে কথা বলেও শান্তি পাই না।??

আধার কিছু না বলে শুধু মুচকি হেসে ড্রাইভ করছে।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা কলেজে পৌঁছে যায়।আধার গাড়ি থামিয়ে শবনমের কপালে কিস করে বলে,,,

আধারঃ জান তুমি কলেজে যাও আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি।

শবনম মুচকি হেসে নেমে যায়। আধারো গাড়ি নিয়ে পার্কিংয়ে চলে যায়।

শবনম কিছুটা এগিয়ে যেতেই পাখিদের দেখতে পায় তাই দৌড়ে ওদের কাছে চলে যায়।

শবনমঃ হ্যালো গাইজ।

সবাইঃ হায় শবনম।

মিশা শবনমের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,,,,

মিশাঃ তো দোস্ত কালকে প্রাইভেট মোমেন্ট কেমন কাটলো।?

শবনম চোখ গরম করে মিশার দিকে তাকালো।

শবনমঃ কালকে সব তুই আর আধার মিলে প্লান করেছিলি তাই না।?

মিশা ভয়ে কিছুটা দূরে সরে যায় তার আমতা আমতা করে বলে,,,

মিশাঃ আমি আর আধার একা না পাখি কবীর ইরা পুলক সবাই মিলে।??

শবনম অবাক হয়ে সবার দিকে তাকালো।

সবাইঃ ????

হঠাৎ ধ্রুব ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো। ধ্রুবকে দেখে শবনমের মুখটা মলিন হয়ে গেল। শবনম কিছু বলতে যাবে তার আগেই ধ্রুব বলা শুরু করলো,,,

ধ্রুবঃ It’s okay Shabnam কিছু বলা লাগবে না। ওরা আমাকে সব বলে দিয়েছে।I’m very happy for you. তুমি খুশি থাকলেই আমি খুশি আর তোমার খুশি আধারের সাথে। (অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোর করে হাসার চেষ্টা করে কথা গুলো বলল ধ্রুব)

শবনমঃThank you Dhruvo. And I’m sorry আমি রাগের মাথায় তোমার প্রোপোজাল এক্সেপ্ট করে ফেলছিলাম। কিন্তু আমরা ভালো বন্ধু হয়ে থাকতে পারি।

ধ্রুবঃ of course (দাতে দাত চেপে।)

এর মধ্যেই আধার চলে আসলো। আধার এসে শবনমের পাশে দাঁড়ালো। ওর কাছে ধ্রুবর ব্যবহার কেমন জানি খটকা লাগছে। যাই হোক না কেন কুকুরের লেজ কখনই সোজা হয় না। ভাবছে আধার।

আধার এতক্ষণ দূরে দাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ধ্রুবর মাইন্ড পরার চেষ্টা করছিলো কিন্তু বারবার ব্যর্থ হয়। তাই ওর সামনে এসে ওর প্লান বুঝার চেষ্টা করছে।

আধার এসে ধ্রুবর দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,,

আধারঃ হ্যালো ধ্রুব কেমন আছো। বাকা হেসে।

I’m fine বলে ধ্রুব আধারের সাথে হাত মিলাতেই আধার চোখ বন্ধ করে ফেলে, চোখ বন্ধ অবস্থায় আধার শুধু একটা জঙ্গল দেখতে পেলো। আর কিছু দেখার আগেই ধ্রুব হাত সরিয়ে ফেলল।

সবাই অনেকক্ষণ কথা বলে ক্লাসে চলে গেল আজ শবনমদের সাথে আধারের কোন ক্লাস নেই তাই সারাদিন ওদের দেখা হয় নি।

আধারের মাথায় শুধু শবনমের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। আজ নিশ্চয়ই কিছু একটা খারাপ হবে। আধারের অনেক অস্থির লাগছে। কলেজ ছুটি হতেই সবাই বেড়িয়ে যায় শবনব পাখিদের সাথে যায় নি কারন আধার ওকে পার্কিংয়ে অপেক্ষা করতে বলেছিলো।

আধার পুরো কলেজে শবনমকে খুঁজছে পরে ওর মনে পরলো ও শবনমকে পার্কিংয়ে অপেক্ষা করতে বলেছিলো। আধার আর দেরি না করে দ্রুত পার্কিংয়ের দিকে চলে যায়। আশেপাশে অনেক মানুষ তাই আধার নিজের শক্তি ব্যবহার করতে পারছে না। একজন সাধারণ মানুষের মতো দ্রুত হাটার চেষ্টা করছে।

শবনম পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে আছে এমন সময় ধ্রুব ওর সামনে নিজের গাড়ি থামালো।

ধ্রুবঃ শবনম তুমি এখানে একা কি করছো।

শবনমঃ Actually আমি আধারের অপেক্ষা করছিলাম।

ধ্রুবঃ কি আমিতো আধারকে বিকেলেই গাড়ি নিয়ে বের হতে দেখেছি। ও তো চলে গেছে।

শবনমঃ চলে গেছে। তুমি হয়তো ভুল দেখেছো ধ্রুব আধার আমাকে একা রেখে যাবে না।

ধ্রুবঃ হয়তো ওর কোন দরকারী কাজ ছিলো।

শবনমঃ হতে পারে।

ধ্রুবঃ চলো আমি তোমাকে ড্রপ করে দেই।

শবনমঃ আরে না আমি একাই যেতে পারবো। don’t worry.

ধ্রুবঃ শবনম as a friend you can trust me.

শবনম কিছু একটা ভেবে গাড়িতে উঠে গেলো।

আধার দ্রুত পার্কিংয়ে আসলো।কিন্তু হাজার খুঁজেও শবনমকে পেলো না। আধার প্রায় পাগলের মতো করছে শবনমকে না পেয়ে। ওর চোখের দিয়ে শুধু পানি পরছে।

আধারঃ শবনম তুমি কোথায়। আল্লাহ প্লিজ আমার শবনমের কোন ক্ষতি করো না। আমি শেষ হয়ে যাবো ওর কিছু হলে। আধার চোখ বন্ধ করে শবনমকে ফিল করার চেষ্টা করছে। আধার দেখতে পেলো শবনম ধ্রুবর পাশে বসে কোথাও যাচ্ছে।

এইদিকে,,,

ধ্রুব জঙ্গলের ভিতর গিয়ে গাড়ি থামালো।শবনম জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে গাড়ি জঙ্গলে থেমেছে। শবনম ধ্রুবকে জিঙ্গেস করার জন্য ঘার ঘুরিয়ে দেখে ধ্রুব গাড়িতে নেই। শবনম কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। শবনম তারাতারি গাড়ি থেকে নেমে আশেপাশে ধ্রুবকে খুঁজতে থাকে।

হঠাৎ সেই দিনের নেকড়ে মানবটা শবনমের সামনে এসে দাঁড়ায়। শবনম ভয়ে পিছিয়ে যায়। আর চিৎকার করে বলতে থাকে,,,

শবনমঃ ধ্রুব কোথায় তুমি। ধ ধ্রুব নেকড়ে মানবটা শবনমের দিকে এগোতে থাকে। হঠাৎ থেমে গিয়ে বলে,,,

নেকড়েঃ ধ্রুবকে দেখতে চাও নাও দেখো।

নেকড়ে টা মানুষ রুপ ধারণ করে। শবনমের চোখ ছানাবরা হয়ে গেছে কারন এটা আর কেউ নয় ধ্রুব।

ধ্রুব অট্টহাসিতে ফেটে পরে।

ধ্রুবঃ তুমি কি ভেবেছিলে আমি তোমাকে ভালবাসি তাই এখানে এসেছি। no Shabnam you are such a fool. তুমি কত বোকা। আমি এখানে আমার প্রতিশোধ নিতে এসেছি। আধার আমার ভাইকে মেরেছিলো। এখন আমি তোমাকে মেরে ওর থেকে এর প্রতিশোধ নিবো।

শবনম ভয়ে রীতিমত কাঁপছে। ধ্রুবর কথার কিছুই ও বুঝতে পারছে না।

শবনমঃ কি যা তা বলছো আধার কেন তোমার ভাইকে মারতে যাবে। ও এমন কিছু করতে পারে না। তুমি মিথ্যা বলছো।

ধ্রুবঃ তোমাকে সত্যি মিথ্যা প্রমান করতে আমি এখানে আনি নি। Now get ready for die.

ধ্রুব শবনমকে আঘাত করতে নিলেই আধার ঝড়ের গতিতে এসে শবনমকে সরিয়ে ফেলে। শবনম ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলো। আধারের ছোয়ায় ও চোখ খুলে। শবনম অনেক জোরে আধারকে জড়িয়ে কেঁদে দেয়।

শবনমঃ আ আধার ধ্রুব ন না মানুষ না। ও একটা Werewolf trust me ও অ অনেক ভয়ঙ্কর। কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে শবনমের।

আধার শবনমের চোখের পানি মুছে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে শান্তনা দিতে লাগলো। হঠাৎ ধ্রুব খুব জোরে আধারকে লাথি মেরে বসে আর আধার ছিটকে শবনমের থেকে দূরে সরে যায়।

আধার ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে ধ্রুবর দিকে তাকালো। ধ্রুব আধারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। শবনমের সামনে আধার নিজের আসল রূপ দেখাতে চায় না তাই সাধারন ভাবে ধ্রুবর সাথে লড়াই করছে ও।

আধার ধ্রুবর সাথে পেরে উঠছে না। আধারের শরীর পুরো রক্তাক্ত হয়ে গেছে। ও আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

শবনম আধার বলে চিৎকার দিয়ে ওর কাছে যেতে নেয় তখনই ধ্রুব ওকে আটকিয়ে ফেলে।
ধ্রুব চিৎকার করে বলতে থাকে,,,

ধ্রুবঃ দেখ আধার আজ তোর সামনে তোর ভালোবাসা কে শেষ করবো আর তুই কিচ্ছুই করতে পারবি না। আজকে আমি জিতবো আর তুই হারবি।

শবনম কেঁদে কেঁদে শুধু আধারকে দেখছে হয়তো আর কখনো দেখতে পাবে না ওর প্রিন্স কে।

ধ্রুব শবনমকে আঘাত করতে নিলে আধার ওকে খুব জোরে লাথি মেরে ফেলে দেয়।

শবনম যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আধার ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে তাও এই রুপে। শবনম কখনো ভাবে নি যে আধারকে এতো ভয়ঙ্কর রুপে ও দেখবে। আধার নিজের হিংস্র ভ্যাম্পায়ার রুপে ধ্রুবর সাথে লড়াই করছে।

শবনমের ওই দিকে কোন খেয়ালী নেই। ও শুধু পলকহীন ভাবে আধারের হিংস্র রুপকে দেখছে।

আধার এক সময় একটা ধারালো কাঠের টুকরা ধ্রুবর বুকে ঢুকিয়ে দেয়। ধ্রুবর রক্ত দিয়ে আধারের শরীর আর চেহারা ভরে গেছে। ওকে দেখতে এতোটা ভয়ঙ্কর লাগছে যা বলার বাইরে।

ধ্রুবকে মেরে আধার ভয়ে ভয়ে শবনমের দিকে তাকালো। ওর সন্দেহ ঠিক ছিল ওর প্রিন্সেস ওকে দেখে ভয়ে জমে গেছে। আধার শবনমের দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে রইলো কতক্ষণ। শবনম একি ভাবে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

আধার শবনমের কাছে এক কদম যেতেই শবনম ভয়ে দুই তিন কদম পিছিয়ে যায়।

আধার এটা দেখে ওখানেই দাঁড়িয়ে যায়।

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here