Our_Unknown_Love_Story,27,28,29

0
912

#Our_Unknown_Love_Story,27,28,29
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_27

আধার শবনমের দিকে এক কদম যেতেই শবনম ভয়ে দুই তিন কদম পিছিয়ে গেল। আধার তা দেখে ওখানেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়,,,,

আধার নিজেকে আর সামলাতে না পেরে শবনমের সামনে দুই হাঁটু ভাজ করে বসে পরলো,,,আধারের নিজের প্রতি ঘৃনা হচ্ছে কেন ও ভ্যাম্পায়ার হলো। একজন ভ্যাম্পায়ার হয়ে কেন একজন মানুষকে ভালোবাসলো।কিন্তু আধার তো আগে ভ্যাম্পায়ার ছিল না ওও তো একটা সাধারণ মানুষ ছিল।
ভ্যাম্পায়ার হওয়াটা তো ওর দোষ না। তাহলে কেন ও শাস্তি পাচ্ছে।

আধারঃ শবনম তুমি আমাকে ভয় পাচ্ছো কেন। দেখ আমি তোমার আধার।তুমি তোমার আধারকে ভয় পাচ্ছো কেন।আমি তোমাকে ভালবাসি তোমার ক্ষতি করার কথা ভাবতে ও পারি না। প্লিজ জান প্লিজ আমাকে ভয় পেয়ো। না।?

শবনম এখনো ওভাবে স্টেচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ওর চোখ দিয়ে শুধু পানি পরছে আর মাথায় শুধু একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে যে আধার একটা ভ্যাম্পায়ার।

আধার অপলক দৃষ্টিতে শবনমের দিকে তাকিয়ে আছে যে চোখে ও শুধু ভালোবাসা দেখতে পেতো আজ নিজের জন্য ভয় আর ঘৃণা দেখতে পাচ্ছে। আধার শবনমের চোখে নিজের জন্য ঘৃণা সহ্য করতে পারবে না তাই তো নিজেকে ওর থেকে সব সময় দূরে সরিয়ে রাখতো। ও শবনমকে বলেছিলো ওর থেকে দূরে থাকতে হাজার বার বুঝিয়েছিলো যে ওর অস্তিত্বের কথা জানলে শবনম ওর থেকে দূরে সরে যাবে। কিন্তু শবনম মানে নি ও বলেছিলো ও আধারকে কখনো ঘৃণা করবে না ওর থেকে দূরে যাবে না। কিন্তু এখন যখন কথা বাস্তবায়ন করার সময় হয়েছে শবনম নিজের কদম পিছিয়ে নিলো। কথা গুলো ভেবে আধার একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে দাঁড়িয়ে পিছন ঘুরে যায়।

আধারের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে। যে আধার কখনো নিজের চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে আসতে দিতো না। হাজার কষ্টের মাঝেও যে নিজেকে সামলিয়ে নিতো,,ভালোবেসে আজ সে চোখের পানি ছাড়া কিছুই পেলো না। কথা গুলো ভেবেই একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস নিলো আধার।

আধারঃ শবনম তুমি এখান থেকে চলে যাও। এই আধার আর কখনো তোমার সামনে আসবে না। তোমাকে বিরক্ত করবে না। তোমার এখন কোন বিপদ হবে না। তোমাকে মুক্ত করে দিলাম আমার এই অনিশ্চিত ভালোবাসা থেকে।

শেষের কথাটা শবনমের বুকে গিয়ে বিধলো।এতক্ষণ নীরবে কান্না করলেও আধারের কথা শুনে জোরে কেঁদে দেয় ও।

আধার এখনো পিছন ফিরে আছে। শবনমের দিকে তাকানোর সাহস হচ্ছে না ওর।

আধারকে অবাক করে দিয়ে হঠাৎ শবনম দৌড়ে এসে ওকে পেছন দিয়ে জড়িয়ে ধরে।

আধার ভাবতেও পারে নি শবনম এমন করবে।

শবনমঃ আ আধার I’m sorry প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমাকে। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভুলে গিয়েছিলাম যে তুমি আমার আধার তুমি আমার ক্ষতি করার কথা ভাবতে ও পারো না। আমি তোমার অস্তিত্ব কে না তোমাকে ভালোবাসি। তুমি কি তোমার অস্তিত্ব কি I don’t care আমি আমার জন্য তুমি সে যাকে আমি নিজের থেকেও বেশী ভালোবাসি প্লিজ ক্ষমা করে দাও। আর কখনো এমন হবে না। আমাকে প্লিজ নিজের কাছ থেকে দূর করে দিও না আমি মরে যাবো I will die.

আধার সাথে সাথে শবনমকে ঘুরিয়ে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে।

কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে শবনমের।

আধারঃ আজ বলেছো আর কখনো নিজের মরার কথা বললে আমি নিজের হাতে আগে তোমাকে মারবো দেন নিজেকে শেষ করবো।

And you know Aadhar Rejwan can do anything for his love.
বলে শবনমের কপালে গভীর ভাবে ঠোঁট ছোয়ালো।

শবনমঃ হুম আমি জানি My Vampire Prince Charming Aadhar Rejwan. বলে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো।
আধারও হেসে দিলো।

আধারঃ আমাদের এখন এখান থেকে যেতে হবে জান। এখান থাকা অনেক রিস্কি।( শবনমকে ছেড়ে দিয়ে)

শবনম ধ্রুবর লাশের দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বলল,,, ধ্রুব???

আধারঃ ও আর কখনো উঠবে না।আধার রেজওয়ানের জানে যে হাত দিবে তার পরিনাম এমনই হবে (বাকা হেসে) কিছুক্ষনের মধ্যেই বাকি নেকড়ে মানবরা এসে নিজের প্রিন্সের লাশ নিয়ে যাবে ওদের কিংয়ের কাছে।

শবনমঃ ও werewolf prince. অনেকটা অবাক হয়ে।

আধারঃ হ্যাঁ ও নেকড়ে সর্দারের ছেলে। এখন চলো এখান থেকে।

আধার শবনমের হাত ধরে ওখান থেকে নিজের বাড়ি নিয়ে আসলো।

আধারঃ শবনম তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো আমি আসছি।

আধার বেড়িয়ে গেল আর শবনম কাবার্ড থেকে একটা সাদা থ্রী পিছ বের করে ফ্রেশ হতে চলে গেল।

একটুপর আধার একটা ট্রেতে খাবার নিয়ে রুমে আসলো।

শবনম ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আধারকে দেখে অবাক হয়ে যায়। আধার একটা ট্রাউজার ব্লাক আর ব্লাক গেঞ্জি পরেছে। একদম ফরমাল লুক। শবনম আধারকে আজ অবধি এরকম ড্রেসে দেখে নি।

শবনম আধারকে পেছন দিয়ে জড়িয়ে ধরে। আধার হাল্কা হেসে শবনমকে সামনে ঘুরিয়ে খাটে বসিয়ে দেয়। তারপর শবনমকে নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দেয়। খাওয়া শেষে যত্ন সহকারে শবনমের মুখ মুছে ওকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পরে আধার।

বেঘোরে আধারের বুকে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে শবনম। অনেক টেনশন হচ্ছে আধারের। কিং নিজের সন্তানের মৃত্যু এতো সহজে মেনে নিতে পারবে না। উনি নিশ্চয়ই কিছু একটা ভয়ঙ্কর করবেন। ভাবতে ভাবতে কপালের রগ ফুলে যায় আধারের। শবনমের কপালে কিস করে আরো জোরে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে আধার।

এইদিকে,,,,,

পুরো রাজ্য চিৎকার করে কাপিয়ে তুলছে Werewolf King.

কিংঃ তোমাকে আমি ছাড়বো না আধার। তুমি একে একে আমার দোনো সন্তানকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তোমাকে আমি মৃত্যু না তারচেয়েও ভয়ঙ্কর শাস্তি দিবো। তুমি না বাঁচতে পারবে না মরতে। তোমার ভালবাসাকে আমি অনেক ভয়ঙ্কর পরিনাম দিবো।( চিৎকার করে কথা গুলো বলল কিং)

সকালে,,,,,

শবনমকে খাইয়ে ওকে নিয়ে কলেজে চলে আসলো আধার।

আধার নিজের কেবিনে বসে আছে এমন সময় প্রিন্সিপাল ওর রুমে আসলো।

প্রিন্সিঃ May I come in Mr. Rejwan.

আধারঃ Sure sir please come.

প্রিন্সিঃ মি. রেজওয়ান আপনাকে একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে নিয়ে আসলাম। ভেতরে আসেন।

একটা মধ্য বয়সী লোক রুমে ঢুকলো।

প্রিন্সিঃ ইনি হলেন মি. কাইফ।এখন থেকে আমার বদলে এই কলেজের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করবেন। আমি কিছু দিন যাবত অসুস্থ থাকি তাই অবসর নিলাম।

কাইফঃ Hello young man.

আধারঃ Hello.

লোকটির চোখে আধার অন্য কিছু অনুভব করছে।অনেক রাগ ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে লোকটির চোখে।

প্রিন্সি লোকটাকে নিয়ে চলে গেল। কিন্তু আধারের মনে কেমন যেন একটা খটকা লাগলো লোকটির ব্যবহারে।

আধারঃ আমাকে জানতে হবে লোকটির ব্যপারে।

কলেজ ছুটি হতেই শবনম নিচে নেমে আসে। শবনম নিচে এসে দেখে মিশা পাখি একটা লোককে জড়িয়ে ধরে আছে। আর লোকটি ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। শবনম একটু এগিয়ে এসে লোকটির চেহারা দেখে ওখানেই দাঁড়িয়ে যায়।

শবনম নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
ওর চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে মাথা ঘুরছে।শবনম এক পা দু পা করে পিছনে ফিরে দৌড় দেয়। শবনম দৌড়াতে দৌড়াতে জঙ্গলে চলে আসে। অঝোরে কাঁদছে ও।

হঠাৎ কেও একটা রড দিয়ে শবনমের মাথায় জোরে আঘাত করে। শবনম নিস্তেজ হয়ে আধার বলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ করে ফেলে ও।

আধার বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। ওর পুরো শরীর ঘামছে। শবনম বলে ঝড়ের বেগে দৌড়ে কলেজ থেকে বেড়িয়ে যায় আধার। নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে দৌড়াচ্ছে ও কিন্তু পথ যেন শেষ হতে চাচ্ছে না।

To be continued……

#Our_Unknown_Love_Story
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_28

আধার দৌড়ে শবনমের সামনে আসলো। রক্তাক্ত অবস্থায় সেন্সলেস হয়ে পরে আছে শবনম। রক্ত দিয়ে ওর চেহারা মেখে গেছে। রক্ত দেখে আধারের যেন একটা ঘোর লেগে গেছে। ও আস্তে আস্তে শবনমের কাছে চলে আসলো। আধার শবনমের দিকে ঝুঁকে নিজের ধারালো দাত বের করে ওর ঘারের কাছে নিয়ে আসে। আধারের দাত শবনমের ঘার ছুইছুই এমন অবস্থা। হঠাৎ আধারের ঘোর ভেঙ্গে যায় আর ও ধরফরিয়ে শবনমের কাছ থেকে সরে যায়।

আধার দূরে সরে গিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।

আধারঃ কন্ট্রোল আধার কন্ট্রোল। তুই নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পারলে শবনমের ক্ষতি করে ফেলবি। ওর এখন তোকে প্রয়োজন। You have to control yourself Aadhar.

কথা গুলো ভেবে আধার নিজের হাত দিয়ে স্বজোরে একটা গাছে ঘুষি মারলো তারপর নিজেকে স্বাভাবিক করে শবনমের দিকে ফিরলো। আধার শবনমের কাছে গিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে তারপর ওর হাত দিয়ে শবনমের কপালে স্লাইড করলো সাথে সাথে শবনমের ক্ষত বুজে যায় আর রক্তও গায়েব হয়ে যায়। আধার চোখ খুলে শবনমকে কোলে তুলে নেয় তার পর নিজের বাংলোতে নিয়ে আসে।

শবনমকে আধার খাটে শুইয়ে দেয় তারপর ওর মাথায় কিস করে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

আধারঃ I’m sorry Shabnam. আমি থাকতেও বারবার তোমাকে বিপদে পড়তে হয়। বারবার আঘাত সহ্য করতে হয়। আর আজ,,, আজ তো আমি নিজেই তোমার ক্ষতি করতে যাচ্ছিলাম।
কেন নিজেকে কন্ট্রোল পারি না আমি।বিশ্বাস করো ভ্যাম্পায়ার হওয়া সত্ত্বেও আমি কখনো কারো ক্ষতি করি নি। সব সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। And I promise ভবিষ্যতেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখবো। জান্তে অজান্তে কারো কোন ক্ষতি করবো না।(আমার আধার কত ভালো ভ্যাম্পায়ার ?? love you baby. )

শবনম কিছুটা নরে উঠে তারপর আস্তে আস্তে নিজের চোখ খুলে। আধারকে দেখে শবনম তারাতারি উঠে যায় তারপর আধারকে জড়িয়ে ধরে অনেক জোরে জোরে কেঁদে দেয়। শবনমকে এখাবে কাঁদতে দেখে আধার অনেক ভয় পেয়ে যায়। আধার শবনমের মাথায় আর পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,,,

আধারঃ কি হয়েছে শবনম আমাকে বলো। কান্না অফ করো প্লিজ আমি তোমার চোখের পানি সহ্য করতে পারি না তুমি যানো। আমাকে বলো কি হয়েছে জান। আমি সব ঠিক করে দিবো জান তুমি জাস্ট বলো কি হয়েছে। ( অনেকটা অস্থির হয়ে )

শবনম কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি তুলে ফেলেছে। ও কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে,,,

শবনমঃ আ আমি উনাকে দে দেখেছি আধার। উনি ক কলেজে এসে ছিলেন। আমি দেখেছি পাখি দি আর মিশার সাথে উনাকে।

আধার শবনমকে ওর সামনে ফিরিয়ে বলল,,,

আধারঃ কাকে দেখেছো জান প্লিজ বলো।

শবনমঃ বা বাবাই কে। বাবাইকে দেখেছি আমি। (কাঁপাকাপা গলায় বলল শবনম)
তারপর আধারকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে আবার বলে,,,,

শবনমঃ I hate him Aadhar. I just hate him. উনি আমার মায়ের সাথে ধোঁকা করেছেন। উনি বেঁচে থাকতেও আমি এতিমের মতো অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি।

একজন বাবার দায়িত্ব তার সন্তান কে হেফাজত করা তাকে সব কষ্ট থেকে দূরে রাখা। কিন্তু উনি কোন দায়িত্ব পালন করেন নি। He is a bad father. He is the worst father in the world.

আধার শবনমের অবস্থা বুঝতে পেরে ওকে অনেক কষ্টে শান্ত করায়। শবনম একটু শান্ত হতেই আধার ওর হাত ধরে বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ He is not a bad father Shabnam. উনি খারাপ বাবা নয়। উনি দুনিয়ার সবচেয়ে বেস্ট বাবা।

শবনম অবাক চোখে আধারের দিকে তাকালো,,,

আধার ওর গালে হাত রেখে আবার বলতে শুরু করে,,,,

আধারঃ সেদিন আন্টি আঙ্কেলকে ভুল বুঝেছিলো। হ্যাঁ শবনম আঙ্কেলের কোন দোষ ছিলো না। সব তোমার মামার স্বরযন্ত্র ছিলো। উনি আন্টিকে উনার বিরুদ্ধে করেছিলো।শুধু তোমার সম্পত্তির জন্য।আর আন্টিও নিজের স্বামীকে বিশ্বাস না করে তার ভাইকে বিশ্বাস করেছে। আর তোমাকে নিয়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছে।

আরে আঙ্কেলতো দিন রাত এক করে দিয়েছিলো তোমাদের খোজার জন্য। কিন্তু পান নি।

শবনম অবাক হয়ে আধারের কথা শুনছে,,,

শবনমঃ তাহলে পাখি দি আর মিশা????

আধারঃ ওরা আঙ্কেলের বন্ধুর মেয়ে। তার মৃত্যুর পর তোমার বাবাই ওদের Adopte করেন। নিজের একাকিত্ত্ব কাটাতে।

শবনম যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে ওর নিজের প্রতি নিজের ঘৃণা হচ্ছে। ও নিজের বাবাকে কতটা খারাপ ভাবতো। কথা গুলো ভাবতেই শবনমের কান্না আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেল। ওর ইচ্ছে হচ্ছে নিজেকে শেষ করে দিতে।

আধার শবনমের কান্না সহ্য করতে না পেরে অনেক জোরে ওকে ধমক দিয়ে বসে আর সাথে সাথে শবনম চুপ হয়ে যায়।

শবনম ফোঁপাতে থাকে। আধার শবনমকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয় তারপর বলে,,,,

আধারঃ জান প্লিজ কেঁদো না। তুমি জানো না যে তোমার চোখের পানি আমার কলিজায় গিয়ে বিধে।সহ্য করতে পারি না আমি। আর প্লিজ নিজেকে দোষারোপ করো না। তোমার এতে কোন দোষ নেই সব পরিস্থিতির কারনে হয়েছে।

হঠাৎ শবনমের খেয়াল হলো আধার কিভাবে এতো কিছু জানে,,, শবনম ওর মাথা আধারের বুক থেকে তুলে ওকে জিজ্ঞেস করে,,,,

শবনমঃ আধার!!! তুমি এতো কিছু কিভাবে জানো। এমন লাগছে যে আমার জীবনের কাহিনীর সাথে তোমার জীবন সংযুক্ত।

আধার শবনমের দিকে কতক্ষন তাকিয়ে ওর হাত ধরে বারান্দায় নিয়ে আসে। বারান্দায় এক পাশে রাউন্ড টেবিল আর কয়েকটা চেয়ার আর অন্য পাশে বিভিন্ন ধরনের ফুলের টব। আধার শবনমকে একটা চেয়ারে বসিয়ে ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে ওর হাত নিজের হাতের ভাজে নিয়ে বলতে শুরু করল,,,,,

আধারঃ শবনম আমি এখন যা বলবো তা কেয়ার ফুলি শুনবে।আর প্লিজ panic করবে না।

শবনম মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।

আধার শবনমকে ছোট বেলা থেকে শুরু করে ওর accident আর ওর ভ্যাম্পায়ার হওয়ার সব কাহিনী একে একে বলল।

আধার নিজের কথা শেষ করে শবনমের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর চোখে পানি টলমল করছে আর ও অসহায় দৃষ্টিতে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে।

To be continued…..

#Our_Unknown_Love_Story
#The_College_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_29

শবনম আধারের দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে ওর চোখে পানি টলমল করছে। আধারের চোখ দিয়েও পানি পরছে। শবনম চেয়ার থেকে নেমে আধারের সামনে বসে ওকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,

শবনমঃ এতো কেন ভালোবাসো আমাকে আধার। আমি তো তোমাকে মনেও রাখতে পারি নি আর তুমি আমার স্মৃতি নিজের মন থেকে মুছতেও দেও নি। I don’t deserve your love. ??

আধার শবনমকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে,,,,

আধারঃ এই পুরো দুনিয়াতে যদি আধারের ভালোবাসা কেউ deserve করে তাহলে সেটা শুধু তুমি। Only Shabnam deserves Aadhar’s love.

আধার শবনমকে দাড় করিয়ে ওর চোখের পানি মুছে দিলো তারপর ওকে পেছন দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করল,,,,

আধারঃ I love you like the Star’s love Darkness .আমি জানি ভালোবাসা কষ্ট দেয় আর এই কষ্টের প্রত্যেকটা রাত স্বাক্ষী আমার ভালোবাসার।যদি আমি তোমার থেকে দুরেও চলে যাই আমার ভালোবাসা তোমার জন্য বিন্দুমাত্র কমবে না বরং এটা প্রত্যেক মুহুর্তে মুহুর্তে এই রাতের মতো গভীর হবে।

এই তারা গুলো আমাদের ভালোবাসার স্বাক্ষী।এই অন্ধকার আমাদের ভালোবাসার স্বাক্ষী।

শবনমঃ কখনো ছেড়ে যাবে না তো তোমার ভালোবাসাকে।

আধারঃ বেঁচে থাকতে না আর যদি কখনো চলেও যাই তোমার ভালোবাসা দিয়ে ফিরিয়ে এনো।কি আনবে না আমাকে আবার ফিরিয়ে নাকি ভুলে যাবে তোমার এই আধারকে আর তার #Unknown_Love_Story কে।

শবনম কাঁদোকাঁদো ফেস নিয়ে আধারের দিকে ফিরে বলে,,,

শবনমঃ যে মুহূর্তে তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে I promise আমিও সেই মুহুর্তে এ দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবো।

আধার কিছু বলতে নিলে শবনম ওকে থামিয়ে আবার বলতে শুরু করে,,,,

শবনমঃ আগে আমি আমার কথা শেষ করে নেই আধার।

আমি তোমাকে কখনো ভুলতে পারবো না আধার। কারন তোমার উপস্থিতি কখনো আমাকে তোমার কথা ভুলতে দিবে না। Without you I’m incomplete. Without your love my life is incomplete. Without you our love story is incomplete.

আধার শবনমের কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,,,,

আধারঃ I know Jan. আচ্ছা একটা কথা আমি বুঝতে পারছি না তুমি মাথায় আঘাত পেলে কিভাবে,,,,

শবনম আধারকে সত্যিটা বলতে চাচ্ছেনা কারন আধার এমনেই অনেক টেনশনে আছে।

শবনমঃ গাছের সাথে বারি খেয়ে ব্যাথা পেয়েছি। আর কিছু না।

আধারঃ ওহ….আমি ভেবেছিলাম হয়তো কেউ attack করেছিলো। কিন্তু এখন থেকে কেয়ার ফুলি হাটা চলা করবে জান। তুমি জানো না তোমাকে ওভাবে দেখে আমার কি অবস্থা হয়েছিলো। মনে হচ্ছিল তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি। প্লিজ আমাকে না বলে আর কখনো একা কোথাও যাবে না ওকে।

শবনম মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল। শবনম কিছু বলতে যাবে তখনই ও মাথা ঘুড়িয়ে পরে যেতে নেয় আর আধার ওকে সাথে সাথে ধরে ফেলে।

আধার অনেক ভয় পেয়ে যায় ও শবনমকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে ওর গালে হাত রেখে বলে,,,,

আধারঃ শবনম are you OK. তুমি ঠিক আছো তো জান। (অস্থির হয়ে)

শবনমঃ হ্যাঁ ঠিক আছি। just একটু কেমন যেন লাগছে। (ধীর গলায়)

আধারঃ হয়তো ব্যাথা পেয়েছো তাই। তুমি এখন একটু রেস্ট করো।

আধার শবনমকে কোলে করে বিছানায় শুইয়ে দেয় তারপর ওর পাশে বসে ওকে বুকে জড়িয়ে নেয়।

সকালে,,,,,

আধার নিজ হাতে শবনমের জন্য ওর ফেভারেট চিজ পেস্ট্রি বানিয়ে ওকে খাইয়ে দেয়। তারপর ওকে মেডিসিন খাইয়ে দেয়। এমন সময় আধারের ফোনে কল আসে পাখির। আধার কল রিসিভ করে বারান্দায় চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর কথা শেষ করে আধার রুমে চলে আসে। আধার আসতেই শবনম ওকে জিজ্ঞেস করে,,,

শবনমঃ কে ছিল আধার???

আধারঃ পাখি?

শবনমঃ পাখি দি!! কিন্তু কেন কল করছিলো।

আধারঃ আমাদের ওই বাড়িতে যেতে বলেছে।

শবনমঃ কেন??

আধারঃ জানি না বলেছে কি যেন একটা ইম্পর্টেন্ট কথা আছে।

শবনমঃ আধার আমি যাবো না ওখানে।?

আধারঃ but why Jan.

শবনমঃ ওখানে গেলে বাবাইকে ফেস করতে হবে। আর আমি কিভাবে ওনার সামনে যাবো বলো এতো বছর পর।উনাকে আমি কতটা খারাপ ভাবতাম। আমি উনাকে ফেস করতে পারবো না।?

আধার শবনমের চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর হাত নিজের হাতে নিয়ে বলতে শুরু করল,,,,

আধারঃ জান এসব নেগেটিভ কথা নিজের মাইন্ড থেকে বের করে দাও প্লিজ। উনি এখনো তোমার অপেক্ষায় আছেন । উনার বিশ্বাস যে উনার মেয়ে একদিন উনার কাছে ঠিকই ফিরে আসবে।

আঙ্কেল যদি জানেন যে তুমি তার মেয়ে trust me উনি নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে হ্যাপি পারসন ভাববেন। তোমাকে ফিরে পেয়ে হয়তো এই বারো বছরের কষ্টের অবসান ঘটবে তার।

শবনমঃ কিন্তু,,,,

আধারঃ চুপ আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না। তুমি রেডি হয়ে নিচে আসো আমরা বেরুবো।

শবনমঃ আধার আমার ভয় করছে,,,

আধারঃ Do you trust me Jan.

শবনম কিছুক্ষণ ভেবে দুষ্টুমি করে উত্তর দিলো,,,

শবনমঃ Noooooo ?

আধারঃ যত বারই জিঙ্গেস করি no বলো। কিন্তু আমি জানি তুমি সবচেয়ে বেশি আমাকেই ট্রাস্ট করো মেরি জান।( শবনমের গালে কিস করে)

শবনমের গাল লাল হয়ে গেছে লজ্জায়। আধার ওর অবস্থা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে বের হয়ে গেল। আর যেতে যেতে বলল,,,

রেডি হয়ে নিচে নেমে আসো আমি ওয়েইট করছি quick .

আধার চলে যেতেই শবনম রেডি হয়ে নিচে নেমে গেলো।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা চৌধুরী মেনশন পৌঁছে গেলো।

গাড়ি থেকে নেমেই শবনমের হার্ট বিট ফাস্ট হয়ে গেছে। ভয়ে ঘামতে শুরু করে দিছে। শবনম শুধু একটা কথাই ভাবছে,,, ওকে কি ওর বাবাই চিন্তে পারবে। ওকে সামনে পেয়ে ওনার রিয়েকশন কেমন হবে।

দরজার সামনে আসতেই শবনম থেমে যায়। পা আর এগোচ্ছেনা ওর। হঠাৎ আধার এসে ওর হাত শক্ত করে ধরে শবনম আধারের দিকে তাকাতেই আধার বলে,,,,

আধারঃ সব পরিস্থিতিতে এই হাত এভাবে শক্ত করে ধরে রাখবো কখনো ছাড়বো না। শবনম আধারের কথায় অনেকটা সাহস পেলো।আধার শবনমের হাত ধরে ওকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকলো। পাখি পুলক কবীর মিশা আকাশ ইরা সবাই সোফায় বসে আছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

আধার আর শবনম গিয়ে ওদের পাশে বসলো।

পাখিঃ সেই কখন তোমাদের ফোন করেছিলাম
আর এখন আসছো তোমরা।

আধারঃ Sorry Pakhi but this is not my fault. মেয়েদের রেডি হতে এতো সময় লাগলে আমি কি করতে পারি বলো। ( আড়চোখে শবনমের দিকে তাকিয়ে)

শবনম চোখ গরম করে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে।

আধার একটু জোর করে হাসার চেষ্টা করে কথা ঘুরানোর জন্য পাখিকে বলল,,,

আধারঃ আব কি জন্য ডেকেছো সেটা বলো।

পাখিঃ Wait guys এতো তাড়া কিসের। একটু পরেই যেনে যাবা কি জন্য ডেকেছি।

আকাশঃ এক ঘন্টা ধরে অপেক্ষাই করছি।?

পাখিঃ তোমাকে আমি ডাকিনি। without invitation guest. ?

আকাশঃ ও হ্যালো আমি without invitation আসি নি ওকে পুলক আমাকে ডেকেছে।?বুঝেছো মিস মোটি ?

পাখিঃ Youuu? আরেক বার এই নামে ডাকলে I will kill you

আকাশঃ আরে না না এখন সবার সামনে আমার লজ্জা করে কিস টিস পরে করো বেবি।?

সবাই আকাশের কথা শুনে হেসে দেয়। আর পাখি তো রেগে ফায়ার।

হঠাৎ দরজার দিকে চোখ যেতেই শবনম বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। ওর চোখের কোনে পানি চলে আসে।

আসিফ চৌধুরী একজন লোকের সাথে কথা বলতে বলতে ভিতরে ঢুকছে।

আধার শবনমের অবস্থা বুঝতে পেরে ওর হাত শক্ত করে ধরে রাখে। শবনম ওর দিকে তাকাতেই আধার ইশারায় বলে,,, Everything is fine.

আধার আসিফের পাশের লোকটিকে দেখে ভ্রু কুঁচকে ভাবতে থাকে,,,

আধারঃ ইনি এখানে কি করছে।

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here