the unlimited love❤️,part_10,11

0
2700

the unlimited love❤️,part_10,11
writer:nusrat
part_10

“বাহ মিস্টার আদিল খান আমার ভালোবাসাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে এখন বলছেন কে আমি৷ হাউ ফানি?”

“দিস ইজ হুয়াট ইউ আর সেয়িং??আমি কারও ভালোবাসা কেড়ে নেয়নি৷ আর হেয়ালি না করে সোজাসুজি বলবেন কী কে আপনি”???

“ওকে ফাইন বলছি কে আমি৷ তার আগে বাহিরে চলুন সেখানে না হয় বলবো৷ এভাবে দরজায় দাঁড়িয়ে বলা যায় নাকি৷”

“আচ্ছা চলুন”

আদিল ছেলেটাকে নিয়ে তাদের গার্ডেনে গেলো৷

“এখন বলুন৷আপনি কোন ভালোবাসার কথা বলেছিলেন”৷??

“আমি আরুহির কথা বলছি৷ আমি ওর বয়ফ্রেন্ড৷খুব ভালোবাসি আমরা দুজন দুজনকে৷”

“হুয়াট ননসেন্স!!! কী বলছেন আপনি এগুলো৷ আরুহির বয়ফ্রেন্ড মানে৷”

“হ্যা আমি আরুহির বয়ফ্রেন্ড৷ আর আমি কোনো মিথ্যা কথা বলছিনা৷”

“আমি আপনার কথা বিশ্বাস করিনা৷ আর করবই বা কেন৷ কোন অপরিচিত ব্যক্তি এসে বললো আর আমি বিশ্বাস করে নিবো৷ অতটাও বোকা নই৷”

“ওকে ফাইন,,আমি জানি আপনি ট্রাস্ট করবেননা৷ সেদিন রাতে আরুহি আমার সাথে দেখা করার জন্য ক্লাবে গিয়েছিলো৷ বিশ্বাস না করলে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করতে পারেন৷ যদি আমার এই কথাও আপনার বিশ্বাস না হয় তাহলে আমার কাছে আরও প্রমাণ আছে সেগুলো দেখাচ্ছি৷”

ছেলেটা ফোন বেড় করে ট্রায়াল রুমের জড়িয়ে ধরা ফটোগুলা দেখালো৷

এসব দেখে আদিল পাথরের মুর্তির মতো দাড়িয়ে আছে৷ ভাবতেই পারছেনা আরুহি এতোটা নিচ৷ সাথে তার প্রচন্ড রাগও হচ্ছে৷

“আই হোপ আপনার এখন বিশ্বাস হয়েছে৷ আর পারলে আমার আরুহিকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েন প্লীজ৷ ও আমায় সেদিন কল করে খুব কেদেছিলো৷ আর বলে ছিলো ও আমায় ছাড়া বাচবেনা৷ আর আপনি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েন৷ খুব ভালোবাসি আমি ওকে৷ তাই ওর কথা ফেলতে পারিনি৷ আর আপনার সাথে দেখার করতে চলে এসেছি৷ এখন আমি আসি তাহলে”৷

কথাটা বলে ছেলেটা চলে গেলো৷ আর যাওয়ার আগে বলে গেলো,,

“সবসময় আমরা যা দেখি তা সত্য হয়না৷ তাই যা করবেন ভেবে চিন্তে করবেন৷”

“আমি ভেবে নিয়েছি আমি কী করবো৷” (মনেমনে)

_______________________

ফ্লোরে এখনো বসে আছি আমি৷আর ভাবছি কি থেকে কি হয়ে গেলো৷মাও বাড়িতে নেই রুবাও হোস্টেলে চলে গেছে খুব একা একা লাগছে৷ হঠাৎ দরজা খুলার আওয়াজে ধ্যান ভাঙলো আমার৷ তাকিয়ে দেখলাম উনি এসেছেন৷ আমি উনাকে দেখে সাথেসাথে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম৷ উনি রেগে তেড়ে আসলেন আমার দিকে৷ তারপর আমার হাত ধরে টেনে দাড় করিয়ে আবার চড় বসিয়ে দিলেন গালে৷ আগের চড় খুব জোরেই পরেছিলো যার জন্য খুব ব্যথা করছিলো৷ এখন আবার একই জায়গায় চড় দেওয়ায় গাল আরও বেশি ব্যথা করছে৷

“সোহাকে খারাপ প্রমাণ করতে চাইছিলে আমার কাছে৷ তুমি নিজে কতটা ভালো তা আমার জানা হয়ে গেছে৷ ভাগ্যিস আজ তোমার প্রাক্তন প্রেমিক এসে সব বলে গেলো নাহলে তো জানতেই পারতাম না তুমি যে এতটা নিচ থার্ড ক্লাসের মেয়ে৷ ক্লাবে যাওয়া ট্রায়াল রুমে গিয়ে প্রাক্তনকে জড়িয়ে ধরা এসব শুধু তোমার দ্বারাই সম্ভব৷ আমার সন্দেহ ওই ঠিক৷ সেদিন তুমি সোহাকে শাসানোর জন্য নয় নিজের প্রাক্তনের সাথে ডেট করতে গিয়েছিলে,,” ( চিৎকার করে)

“এসব আপনি কী মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন আমার উপর৷ সেদিন আমি আপনাকে ফলো করতে গিয়েছিলাম৷ আপনি ক্লাবে গিয়ে কী করেন সেটা দেখার জন্য৷”(কাদতে কাদতে)

“ওহ আমাকে তোমার মতো মনে করো নাকি৷ যে তুমি যা করে বেড়াও সেটা আমিও করবো৷”

“আপনি এসব কী বলছেন৷আমি কিছু বুঝতে পারছিনা”৷

“আর বুঝতে হবে না তোমায়৷ এখুনি এখান থেকে বেড়িয়ে যাও৷ আর আমার সামনে আসবেনা৷আমি খুব শীগ্রই তোমায় ডিভোর্স দিয়ে দিবো৷আর তোমাকে তোমার প্রাক্তনের কাছে পাঠিয়ে দিবো ৷ আর আমিও সোহাকে বিয়ে করে নিবো৷এখন এখান থেকে চলে যাও৷ নাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে৷”

“আমি আমার দোষ না জেনে কিছুতেই যাবোনা৷ আর কি প্রাক্তন প্রাক্তন করছেন?(এগিয়ে এসে)

“How many times will i tell you not to come in front of me. Get out of my house right now. And don’t look there.”(চিৎকার করে)

“What are you saying, why should i leave home?what have i done wrong? tell me.”(কাদতে কাদতে)

“কী দোষ করেছো তুমি জানতে চাও৷ কী দোষ করোনি সেটা বলো৷ By the way, i can’t explain to you now”.

“কেনো এক্সপ্লেইন করতে পারবেননা৷”

” Because i’m not obliged to tell you.”কথাটা বলে উনি আমায় সজোরে ধাক্কা মারলেন৷ হঠাৎ ধাক্কা দেওয়ায় আমি তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে গিয়ে পরলাম৷ মাথাও খাটের কোনার সাথে লেগে খানিকটা কেটে গেসে৷

“I say get out from here.”নাকি ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিবো৷

আমি নড়তে পারছিনা শরীর প্রচন্ড ব্যথা করছে৷ আমি নড়ছি না দেখে উনি এসে আমায় টেনে দাড় করিয়ে দিয়ে আমাকে টানতে টানতে নিচে নামাতে লাগলেন৷ আমি উনার হাত আমার হাত থেকে সরানোর চেষ্টা করছি৷ উনি এমন ভাবে আমার হাত চেপে ধরেছেন যেনো মনে হচ্ছে এখুনি হাতের হাড় ভেঙে যাবে৷ তবুও উনি আমার হাত ছাড়ছেন না৷ একেবারে মেইন ডোরের সামনে এসে থামলেন তারপর বললেন,,

“আমার বাড়িতে কোনো চরিত্রহীনের স্থান নেই৷”

অতঃপর উনি আমায় ধাক্কা মেরে বেড় করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন৷ আমি দরজা ধাক্কা দিয়েই যাচ্ছি কিন্তু উনি দরজা খুলছেননা৷ আমি দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে সেখানেই বসে পরলাম৷চোখ থেকে অঝোরে পানি গড়িয়ে পরছে৷ কী থেকে কী হয়ে গেলো৷ কী দোষ করেছিলাম আমি৷ যার জন্য এতবড় শাস্তি পাচ্ছি৷ আমার কথা না শুনে উনি আমায় এভাবে ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিলেন৷ চরিত্রহীন বানিয়ে দিলেন৷ এটলিস্ট কারণটাতো বলতে পারতেন৷ সন্ধ্যাও হয়ে গেছে এখন কোথায় যাবো আমি৷ বাপের বাড়িও যেতে পারবোনা৷ সেখানে গেলে একেক মানুষে একেক কথা বলবে৷ আমার মা বাবার অসম্মান হবে৷ আমি কিছুতেই আমার কারণে আমার মা বাবাকে ছোট করতে পারবোনা৷ আর এই বাড়িতেও থাকতে পারবোনা৷এন্ড আই অলসো প্রমিসড্ আমি নিজে থেকে এই বাড়িতে ফিরে আসবোনা কখনো না৷

রাস্তা দিয়ে একমনে হেটে চলেছি৷ কোথায় যাবো জানা নেই৷ হঠাৎই মনে হলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড রিংকির কথা৷ সে তো চট্টগ্রাম থাকে৷ আমি সেখানই চলে যাবো৷ রিংকির মা বাবাও আমায় খুব আদর স্নেহ করেন৷ আমি গেলে উনারা আমায় ফেলে দিতে পারবেননা৷ সেখানে গিয়েই না হয় চাকরি খুজে নিবো৷ এই নিষ্ঠুর ঢাকা শহর ছেড়ে চলে যাবো আমি৷ অনেক দুরে চলে যাবো অনেক দুরে৷ আমি দোয়া করি আদিল যাতে উনার সোহানিকে নিয়ে ভালো থাকে৷ কিন্তু আমি ওতো উনাকে চাইলেই ঘৃনা করতে পারছিনা৷ এই কয়েকদিনে আমিযে উনাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি৷ রাতও হয়ে এসেছে মুখে এসে বাস সিএনজির লাইট পরছে৷ রাস্তার সাইডেই বসে পরলাম আমি৷ আমার কাছে একটা কানাকড়িও নেই চট্টগ্রাম যাবো কী করে৷ আর রাত ওতো হয়ে গেছে৷ কোন রকমে দাড়ালাম আমি একটা গলি চোখে পরেছে দেখি এখানে কেউ আজ রাত থাকতে দেয় কী না৷

আস্তে আস্তে হেটে হেটে গলির একটা বাড়ির সামনে দাড়ালাম৷ তারপর এগিয়ে গিয়ে দরজান কড়া নারলাম৷ একটু পর একজন মধ্য বয়সী মহিলা এসে দরজা খুললেন৷ আমায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে উনি বললেন,,

“একি মা কে তুমি”?

“আন্টি আমি আরুহি৷ আমি একটা বিপদে পরে গেছি৷ আসলে আন্টি আমি ঢাকা শহরের কিচ্ছু চিনিনা৷ যদি আপনি আমায় আজ রাতটা আপনার বাড়িতে থাকতে দিতেন৷ তাহলে আমার খুব উপকার হতো৷ আমি কাল সকালেই চলে যাবো৷”

“ঠিক আছে আসো মা ভিতরে আসো৷ আর তোমার মাথায় এই চোট কিসের৷ ”

চলবে,,,,,,

the unlimited love❤️
part_11
writer:nusrat

“আসার সময় কোথাও লেগে গিয়েছিলো মনে হয়৷”

মহিলাটি এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো আমার কথা উনার বিশ্বাস হয়নি৷ আমার দিকে একটু এগিয়ে এসে বললেন,,,

“মানলাম আসার সময় কোথাও চোট পেয়েছো৷ কিন্তু তোমার গালে যে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ দেখা যাচ্ছে সেটাতো অন্য কথা বলছে৷”

আমি উনার কথা শুনে কেদে দিলাম৷ আর যে কান্না চেপে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা আমার পক্ষে৷ কাঁদতে কাঁদতেই উনাকে বললাম,,,

“প্লীজ আন্টি আমাকে এসব জিজ্ঞেস করবেন না৷ আমি কিচ্ছু বলতে পারবোনা৷আপনার বাড়িতে কী খাওয়ার মতো কিছু আছে৷ আমাকে কী একটু খাবার দিবেন৷ আমার খুব খিদে পেয়েছে৷ দুপুর থেকে কিচ্ছু খাইনি৷”

আমার কথা শুনে মহিলাটিরও চোখে পানি এসে গেছে৷ উনি তারাতাড়ি উনার চোখের পানি মুছে বললেন,,,

“হ্যা মা আমি তোমার জন্য এখুনি খাবার নিয়ে আসছি৷ তার আগে তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও৷”

আমিও আন্টির কথা মতো ফ্রেশ হয়ে নিলাম৷ উনি আমাকে এক প্লেট ভাত এনে দিলেন৷ আমি কয়েক লোকমা মুখে দিয়ে আর খেতে পারছিনা৷ যেন গলা দিয়ে খাবার নামছেই না৷ তারপরও কোনরকমে খাবারটা খেয়ে নিলাম৷

বিছানায় শুয়ে আছি আমি কিন্তু কিছুতেই আমার ঘুম আসছেনা৷ শুধু আদিলের কথা মনে পরছে৷ আচ্ছা উনি খেয়েছেনতো৷ কেমন আছেন উনি৷ এসব কী ভাবছি আমি উনারতো দিব্যি ভালো থাকার কথা৷

_____________________

সোফায় এলোমেলো হয়ে পরে আছে আদিল৷ কিছুই ভালো লাগছেনা তার৷ কেমন যেন এক অদ্ভুত কষ্ট অনুভব করছে৷ হঠাৎ আদিলের চোখ পরলো আরুহির ফ্লোরে পরে থাকা ফোনের দিকে৷আদিল জলদি করে ফোনটা হাতে নিলো তারপর ব্যাটারি, সিম সেটিংস করে ফোন ওপেন করলো৷ কল লিস্ট, গ্যালারী সব খুজলো বাট প্রমানের মতো কিছুই পেলোনা৷ আদিল ফোনটা সোফায় রেখে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো৷

?️?️?️?️

সকালে রোদ আমার চোখে এসে পরতেই ঘুম ভেঙে গেলো৷ আমি লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠলাম৷ কিচেনে উকি দিতেই দেখলাম আন্টি রান্না করছে৷ আমি জলদি করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম তারপর আন্টি কে গিয়ে বললাম,,

“আন্টি আমি চলে যাচ্ছি ভালো থাকবেন”৷

“একি মা তুমি সকালের নাস্তা না করেই চলে যাবে নাকি৷ বসো বসো আমি এক্ষুনি তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি৷”

আমি নাস্তা করে উনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম৷উনি এই একদিনেই আমায় অনেক ভালোবেসেছেন যত্ন করেছেন৷ উনার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো এতো কিছু করতো না৷ সারাজীবন উনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো আমি৷

রাস্তায় এক ঘন্টা যাবত দাড়িয়ে আছি৷ সকাল ৬টা বেজে ৭টা হয়ে গেছে৷ একটা কানাকড়িও নেই আমার কাছে যাবো কী করে সেটাই ভাবছি৷ হঠাৎই চোখ গেলো আমার হাতের দুটো বালার দিকে৷ কিন্তু এগুলোতো আমার শাশুড়ী মা আমায় দিয়েছিলেন৷ তাছাড়াও এই বালা ছাড়াতো আমার কাছে আর কিছু নেই৷ আর কিছু না ভেবে আমি বালা দুটো বন্ধক দিয়ে দিলাম৷ আর যা টাকা পেলাম সেটা দিয়েই চট্টগ্রাম রওনা দিলাম৷

__________________

“আরুহি,আরুহি কোথায়?? তুই দেখ আমি এসে গেছি৷ একি এই মেয়ের কোনো সাড়াশব্দ নেই কেনো”৷

মায়ের ডাক শুনে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো আদিল,,

“একি আদিল তুমি একা কেনো??আরুহি কোথায়”??

“আরুহি এই বাড়িতে নেই মা৷ ওকে আমি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিয়েছি৷”

“আদিল!!!এসব কী বলছো কী তুমি৷ আরুহিকে কেনো বের করে দিয়েছে৷ কী করেছে কী ও??৷(চিৎকার করে)

“ও আমায় ঠকিয়েছে মা৷ তাই ওকে আমি বিদায় করে দিয়েছি৷ আর খুব শীগ্রই ডিভোর্স দিয়ে দিবো৷ তারপর সোহাকে বিয়ে করবো৷”

আদিলের মা আদিলের কথা শুনে রেগে কষিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিলেন গালে,,,

“বিয়ে কী তোমার কাছে ছেলে খেলা মনে হয় নাকি৷ যে যখন তখন ডিভোর্স দিয়ে দিবে৷ শুনো আর যদি তোমার মুখে ওই সোহানি মেয়েটার কথা শুনি তাহলে তুমি আমার মরা মুখ দেখবে৷আর তুমি যা করেছো সেটার জন্য অনেক পস্তাতে হবে তোমাকে অনেক৷” কথাটা বলে মা নিজের রুমে চলে গেলেন৷

________________

ট্রেনে জানালার পাশে বসে একমনে বাইরে তাকিয়ে আছি৷ আচমকাই মনে পরলো রিংকির কথা একি আমিতে রিংকিকে জানাইনি আমি যে চট্টগ্রাম যাচ্ছি৷ ও যদি স্টেশনে না থাকে তাহলে আমি আমার গন্তব্যে পোঁছাবো কী করে৷ ফোন ওতো আনিনি৷পাশে তাকাতেই দেখলাম একটা লোক উনার ফোন ঘাঁটছে৷ আমি উনার দিকে তাকিয়ে ইতস্তত করে বললাম,,

“ভাইয়া আপনার ফোনটা একটু দিবেন প্লিজ৷ আমি একজনকে ফোন করবো”

লোকটা আমায় সাথে সাথেই ফোনটা দিয়ে দিলো৷

আমি রিংকির নাম্বার ডায়াল করলাম৷রিং হচ্ছে বাট কল রিসিভ করছেনা৷ দুবার কল কেটে গেলো৷ আরেকবার দেওয়ার সাথে সাথেই রিংকি কল রিসিভ করলো৷ ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমি বললাম,,

“শুন রিংকি আমি আরুহি বলছি৷ আমি চট্টগ্রাম আসছি৷ তুই একটু স্টেশনে থাকিস প্লিজ৷”

“ওকে রাখছি আমি৷”

আার কয়েক মিনিট পরেই ট্রেন ছেড়ে দিবে৷ আর আমিও এই ঢাকা শহর ছেড়ে অনেক দুরে চলে যাবো৷ সেখানে গিয়েই নতুন করে জীবন শুরু করবো৷ মনকে তো শক্ত করে নিলাম তবুও কেনো জানিনা খুব কষ্ট হচ্ছে৷ হয়তো কাছের মানুষদের ছেড়ে চলে যাচ্ছি সেই জন্যে৷কিন্তু এতে আমার কাছের মানুষরা খুশি থাকেলেই আমি খুশি৷ আর আমার স্বামী তো নিজেই বলে দিয়েছে আমি যাতে উনার সামনে না যাই৷ আমি আপনার কথা রাখবো আদিল৷ আর কোনোদিন আপনার সামনে যাবোনা৷ আপনাকে ডিস্টার্ব করবোনা৷ আমার নিজেরই এখন খুব লজ্জা লাগছে আমি আপনার সাথে ঝগড়া করেছি,স্ত্রীর অধিকার নিয়ে সামনে গিয়েছি৷ হয়তো এখন আপনি আপনার সোহানিকে নিয়ে ব্যস্ত আছেন,আর আমি ব্যস্ত আছি এই ঢাকা শহর ছেড়ে চলে যাবার৷আমি যে আমার মুখও আপনাকে দেখাতে চাইনা আদিল,আর না কোনোদিন দেখাবো৷আমি আর কান্না আঁটকে রাখতে পারলাম না৷ ফুপিয়ে কেঁদে উঠলাম৷ এতে ট্রেনের অনেক যাত্রীরাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷আমি চোখ মুছে জানালার পাশে প্রকৃতি দেখায় ব্যস্ত হয়ে পরলাম৷ কত সুন্দর এই প্রকৃতি৷ সুন্দর সবই সুন্দর, শুধু সুন্দর না আমার এই জীবনটা৷

?????

আহিলও ফিরে এসেছে৷ তার কাজ শেষ তাই৷ মায়ের মুখ থেকে আদিলের কথা শুনে ভীষণ রেগে আছে সে৷ তাই এখন যাচ্ছে আদিলের সাথে বুঝাপড়া করতে৷ আদিলের রুমে এসে চিৎকার দিয়ে উঠলো আহিল,,,

“ভাইয়া”!!!!!!!

“কী হয়েছে এভাবে চিৎকার করছিস কেনো??

“তুমি রুহিকে কেনো বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছো বলো৷”

“আমি তোকে বলতে বাধ্য নই৷”

“কেনো বাধ্য নও তুমি৷বলো কেনো রুহিকে বের করে দিয়েছো৷ কী অন্যায় করেছে ও৷”

“ও আমায় ঠকিয়েছে৷ও রাতে ক্লাবে গিয়ে ছেলেদের সাথে টাইম স্পেন্ড করে৷ ছেলেদের জরিয়ে ধরে৷”

“তা এসব তোমায় কে বলেছে৷??

“কে আবার আরুহির প্রাক্তন প্রেমিক বলেছে৷ আর আরুহি এখন ওর কাছেই আছে৷”

“প্রেমিক,কী বলছো তুমি ভাইয়া ওর তো কোনো প্রেমিক টেমিক নেই৷ আর প্রাক্তন ওই বা আসলো কোথায় থেকে৷ লিসেন ভাইয়া,আমি জানিনা কে তোমাকে কী বলেছে বা কী প্রমান দেখিয়েছে বাট আই ড্যাম শিওর এটা কোনো ষড়যন্ত ছিলো৷ রুহিকে তোমার জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য৷ টোটাল সাত বছর আমি রুহির সাথে লেখা পড়া করেছি৷ শুধু তাই নয় বেস্ট ফ্রেন্ড আমি ওর৷ তাই ওর সব কিছু জানি আমি৷ ও কিছুতেই এমন নিচ কাজ করতে পারেনা”৷

“এনাফ ইজ এনাফ আহিল,তোকে কে বলেছে আরুহিকে নিয়ে মাথা ঘামাতে৷ চলে যা এখান থেকে৷ কিচ্ছু ভালো লাগছেনা আমার৷ ”

আহিল চলে যেতে নিবে এমনি ওর চোখ গেলো সোফার নিচে পরে থাকা মেমোরি কার্ডের দিকে৷আহিল এগিয়ে এসে মেমোরিটা হাতে নিলো৷

“ভাইয়া এই মেমোরি কী তোমার৷”

আদিল একটু ভালো করে দেখে বললো,,,

“নাতো”

“তোমার না তাহলে কার৷ ওয়েট দেখছি”৷ আহিল মেমোরি কার্ড ওর ফোনে ঢুকালো৷ তারপর গ্যালারীতে গেলো৷গ্যালারীর একটা ফটোতে চোখ আটকে গেলো আহিলের৷ একি এটাতো সোহানি আপু৷ছবিটা দেখে আদিলের দিকে ফোনটা এগিয়ে দিলো৷

“হ্যা এটাতো সোহানি,বাট এই ছেলেটা কে??

আহিল ছেলেটাকে দেখে খাটে ফোনটা ছুঁড়ে মারলো৷

“কী হলো আহিল তুই এভাবে ফোনটা ছুড়ে মারলি কেনো??

“ভাইয়া এই ছেলেটা আমার ফ্রেন্ড রেহান৷ বাট রেহান সোহানি আপুর সাথে এতো ক্লোজ হয়ে কী করছে???

“এই ছেলে তোর ফ্রেন্ড কী বলছিস এসব৷ ওতো আরুহির বয়ফ্রেন্ড”

“ওহ সেটআপ ভাইয়া৷ আমি আগেও বলেছি আর এখনও বলছি রুহির কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই৷ যদি হতো তাহলে দুজনের মধ্যে একজনে হলেও বলতো৷ বাই দ্যা ওয়ে তোমায় কে বলেছে রেহান রুহির বয়ফ্রেন্ড৷”

“কেনো রেহান নিজে বলেছে৷”

“কী বলেছে”???

আদিল আহিলকে সব খুলে বললো৷ প্রমাণের কথাও বললো৷

“আচ্ছা আমি যতদুর জানি রেহান ক্লু দিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে৷ ওকি তোমায় কোনো ক্লু দিয়েছে”??

“না ওতো আমায় কোনো ক্লু দেয়নি৷ তাছাড়াও রেহান কী বলেছে সবইতো তোকে খুলে বললাম”৷

“ভাবো ভাইয়া ভাবো৷ রেহানের সাথে চলা ফেরা করেছি আমি৷ তাই খুব ভালোভাবেই চিনি ওকে৷ ও এতো বড় মিথ্যা বলতে পারেনা৷ আই এম ড্যাম শিওর ওকে কেই বাধ্য করেছে মিথ্যা বলার জন্য৷”

আদিল কিছুক্ষণ ভেবে বললো,,,,

“রেহান আমায় যাবার সময় বলে গিয়েছিলো,,সব সময় আমরা যা দেখি তা সত্য হয়না৷ তাই যা করিই না কেনো ভেবেচিন্তে যেনো করি৷”

“বাহ্ ভাইয়া বাহ্ এই ছোট্ট কথাটি তোমার মাথায় ঢুকলো না৷ ভাইয়া তুমি রাগকে সব সময় প্রাধান্য দাও৷ তোমার উচিৎ ছিলো রুহির কথা শুনা৷ তুমিতো ওর কথা না শুনে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিয়েছো৷ আচ্চা ভাইয়া তুমি ওর গায়ে হাত তুলনিতো?৷(ভ্রু কুচকে)

“কেনো??

“না মানে রুহি আমায় সব সময় বলতো ওর নাকি মেয়েদের উপরে হাত তোলা একদমই পছন্দ নয়৷ ”

আহিলের কথা শুনে আদিল মাথা নিচু করে আছে৷ অনেক অনুশোচনা হচ্ছে তার৷

আদিলের মাথা নিচু করা দেখে আহিল যা বুঝার বুঝে গেলো৷ তারপর আদিলের কাধে হাত রেখে বললো,,

“ভাইয়া যা হওয়ার হয়ে গেছে৷ এখন আমাদের আরও ক্লিয়ার করে সব জানতে হবে৷ আমি রেহানকে কফি শপে ডাকছি তুমি রেডি হয়ে নাও৷”

চলবে,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here