the unlimited love❤️part_12,13
writer nusrat
part_12
আহিল আদিলের থেকে একটু দুরে গিয়ে রেহান কে ফোন করলো৷রিং হওয়ার কিছুক্ষণ পর রেহান ফোন রিসিভ করলো৷
“হ্যালো রেহান আমি আহিল বলছি৷ তুই কী আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবি??
“হঠাৎ দেখা করতে বললি যে৷”
“এমনি কতদিন ধরে তোকে দেখি না তো তাই একটু দেখতে ইচ্ছে করছে আরকি৷ থাক তুই যদি আসতে না চাস তো আসিস না৷ “”
“আমি তোকে কখন বললাম যে আমি আসবোনা৷ কোথায় আসতে হবে বল৷ আমি চলে আসবো৷”
“আচ্ছা ঠিকাছে কফি শপে চলে আয় তুই৷ আমি ওয়েট করবো৷”
“ওকে ডান”
আহিল রেহানের সাথে কথা বলে আদিলের দিকে তাকিয়ে বললো
“রেডি হয়ে নাও ফাস্ট৷ রেহান দেখা করতে রাজি হয়েছে৷ আর সব সত্য শুনার জন্য প্রস্তুত আছো তো”?? কথাটা বলে আহিল চলে গেলো৷
☕☕☕☕
কফি শপে বসে আছে আদিল আর আহিল৷ আর অপেক্ষায় আছে কখন রেহান আসবে৷ প্রায় ১৫ মিনিট পর রেহানের দর্শন মিললো৷ রেহান টেবিলে এসে বসতেই আদিলকে দেখে চমকে গেলো৷ তারপর কাপা কাপা গলায় বললো,,,,
“আপনি এখানে কী করছেন”??
“আরে উনি তো আমার ভাইয়া আদিল৷ তুই চিনিস নাকি??
রেহান কিছু না বলে এক ধ্যানে টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে৷
“আরুহি কেমন আছে”??
আদিলের এমন প্রশ্নে আহিল আর রেহান দু’জনই চমকে উঠলো৷
“আরুহি কেমন আছে সেটা আমি কী করে জানবো”৷
“ওতো তোমার গার্লফ্রেন্ড৷ আর বাড়ি ছেড়ে যখন চলে গেছে তখন নিশ্চয় তোমার কাছেই আছে”৷
“এসব কী বলছেন আপনি ভাইয়া??আরুহি আমার কাছে নেই আর আপনি ওকে বাড়ি থেকেই বা কেনো বেড় করে দিয়েছেন??
“কারণ আমার বাড়িতে কোনো ধোঁকা বাজের জায়গা নেই৷ ”
রেহান আদিলের দিক থেকে চোখ সরিয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে৷ আহিল একটু গলা ঝেরে বললো,,
“ভাইয়া আমায় সব বলেছে রেহান৷ আই ডোন্ট নো তুই কেনো এসব করছিস৷ কার কথায়ই বা করছিস?? তুই তো এমন না তাহলে?? দেখ তোর এমন মিথ্যা কথা আর মিথ্যা প্রমানে ওরা আলাদা হয়ে গেছে৷ এখন যদি ওদের ডিভোর্স না চাস তো বলে ফেল প্লিজ যে এসব কার কথায় করছিস”??
“তুই এতো শিওর কী করে যে আমি সব মিথ্যা বলেছি আর কারও কথায় করছি??
“বিকজ আই ট্রাস্ট ইউ৷ বন্ধু আমি তোর তাই সব জানি আমি৷তুই আর রুহি বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড নস৷ ইভেন তোরা একজন আরেকজনকে চিনিস পর্যন্ত না৷ আমি তোকে যেমন বিশ্বাস করি তেমনি রুহিকেও বিশ্বাস করি৷ তাই এখন সত্যি কথাটা বলে দে প্লিজ কার কথায় এমন করছিস??
রেহান তবুও কিচ্ছু বলছেনা আদিল শুধু বসে বসে নিরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে৷
“দেখ রেহান তুই যদি না বলিস তো আমি অন্যপথ বেচে নেবো৷”
“অন্যপথ মানে??(ভ্রু কুচকে)
আহিল একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে তার ফোন বেড় করে রেহানকে তার আর সোহানির ক্লোজ ফটোগুলো দেখালো৷ রেহান ছবিগুলো দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷
“একি এটাতো সেদিনের ফটোগুলো যেদিন আরুহি গিয়ে আমাকে আর সোহানিকে একসাথে দেখে নিয়েছিলো৷,, কথাটা বলে রেহান আবার মাথা নিচু করে নিলো৷
রেহানের কথা শুনে আদিল আর আহিল দুজনেই ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে রেহানের দিকে৷
“তারমানে এই মেমোরিটা আরুহির ছিলো৷ আর ও আমায় সেদিন এই ফটোগুলোই দেখাতে চেয়েছিলো বাট আমি তাকে বিশ্বাস করিনি৷”
আদিলের কথা শুনে আহিল একবার রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার রেহানের দিকে তাকিয়ে বললো,,
“দেখ ভাই আস্তে আস্তে সব ক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে৷ তাই তুইও আর কিউরিওসিটি না বাড়িয়ে বলে ফেল প্লিজ”৷
“ওকে ফাইন বলছি আমি সব৷”
রেহান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,,,
“সেদিন আরুহি আমার সাথে মিট বা ডেট করতে ক্লাবে যায়নি৷ ওতো আমায় চিনতো পর্যন্ত না৷ তারপর রেহান” আদিল আর আহিলকে এ টু জেট খুলে বললো৷
“তা এসব কে করাচ্ছে এটা তে বললি না৷”
“সোহানি করিয়েছে৷”
“কীহহহ!!!! সোহানি তোমায় এসব করতে বলেছে বাট হুয়াই???”
“যাতে আপনি আর আরুহি আলাদা হয়ে যান সেই জন্যে৷”
“সোহানি তোকে বললো আর তুই রাজিও হয়ে গেলি, হুয়াই ব্রো???
“আমি কী এমনি এমনি রাজী হইসি নাকি ও আমায় ব্ল্যাকমেইল করেছে এসব করার জন্য৷”
“কী ধরনের ব্ল্যাকমেইল?”?
“আসলে সোহানির সাথে আমার ২ বছরের সম্পর্ক৷ আর অনেক বার ওই আমি ওর সাথে ফিজিক্যাল রিলেশনে গিয়েছিলাম৷ আমি যাইনি ও নিজেই আমায় জোর করতো৷ আর ওই মুহুর্তের ছবি দেখিয়েই ও আমায় ব্ল্যাকমেইল করতো৷সেদিন ট্রায়াল রুমে আমিই আরুহিকে জরিয়ে ধরেছিলাম আর সোহানি ছবি তুলেছিলো৷ আমি এমন করতে চাইনি৷ আমি জানি আরুহির সাথে আমি যা করেছি সেটা অন্যায় করেছি, ক্ষমার অযোগ্য আমি৷ তবুও আরুহির কাছে একদিন আমি ক্ষমা চেয়ে নিবো৷ আর অন্যায় কিন্তু আমি একা করিনি৷ আদিল ভাইয়াও অন্যায় করেছে৷ উনার এভাবে আরুহিকে বেড় করে দেওয়া একদম উচিৎ হয়নি৷ আরুহির কথাও শুনা উচিৎ ছিলো উনার৷ আরুহি মেয়েটা সত্যি খুব ভালো৷ আর খুব ভালোবাসে আদিল ভাইয়াকে,, সেদিনের কথার দ্বারাই বুঝেছিলাম আমি৷আমি তো সেদিন ভাইয়াকে এটাও বলেছিলাম যে আমরা সবসময় যা দেখি তা সত্য হয়না৷ তাই যাই করুননা কেনো ভালো করে চিন্তা ভাবনা করে যেন করেন৷যাইহোক আমি এবার যাই৷ ভালো থেকো””৷,,,কথাটা বলে চলে গেলো রেহান৷
আদিল এখনো শক্ত হয়ে বসে আছে৷কী মনে হতেই কফি শপ ছেড়ে বেড়িয়ে গেলো সে৷তারপর একটা লেকের পাড়ে গিয়ে সোহানিকে ফোন করলো৷ কিছুক্ষণ পরেই সোহানি চলে আসলো৷ সোহানিকে দেখেই আদিলের চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে রাগে৷তবুও রাগ প্রকাশ না করেই বললো,,,
“শুনো সোহানি আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই”??
“হ্যা বলো বেবি কী বলবে??
“আমি আরুহিকে আমার বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিয়েছি৷ ও একটা ধোঁকাবাজ৷ আর তুমি তো জানো ধোঁকাবাজকে আমি একদম লাইক করিনা৷ তাই আমি এখন তোমাকে বিয়ে করবো৷ তুমি কী আমায় বিয়ে করবে”???
“কী বলছো তুমি?? তোমাকে বিয়ে না করার কী আছে৷ তোমাকে বিয়ে করার জন্যইতো আমি এত্তো কিছু করলাম৷ এত্তো প্লেন করলাম৷ নাও আই এম সাকসেস”৷
সোহানির কথা শুনে আদিল আর রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো না কষিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিলো৷
“তুই কী মনে করেছিস??তুই এতো কিছু করবি তারপরও আমি তোকে বিয়ে করবো৷ সেই ভুল আমি করবো না৷ খুব ভালো করেছি আমি আরুহিকে বিয়ে করেছি৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাকেও তোর জন্য হারাতে হয়েছে৷ যে মেয়েটা ফুলের মতো নিষ্পাপ সে মেয়েটিকে আমি চরিত্রহীন বলেছি৷ আর যে আসল চরিত্রহীন তাকে আমি নিষ্পাপ ভেবে এসেছি৷ তোর জন্য শুধু মাত্র তোর জন্য আরুহিকে ভুল বুঝে আমি বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছি”(রেগে চিৎকার করে)
“আরে বাহ্ এতো ভালোবাসা৷ যাক তুমি আমায় বিয়ে করো বা নাই করো আমি একটা খুব ভালো কাজ করেছি তোমাকে আর আরুহিকে আলাদা করে দিয়েছি৷”
সোহানির কথা শুনে আদিল আরেকটা চড় মেরে দিলো তার গালে৷
“তুই কী মনে করেছিস আমার সর্বনাশ করে তুই পার পেয়ে যাবি??? নাহ৷ পুলিশে দিবো আমি তোকে৷,,,
কথাটা বলে রেগে লেক থেকে চলে গেলো আদিল৷
?️?️?️?️?️?
মানুষের হৈচৈ এ ঘুম ভেঙে গেলো আমার তাকিয়ে দেখলাম সব যাত্রীরা নেমে যাচ্ছে তারমানে কি চলে এসেছি নাকি৷একজনকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম ২টা বাজে৷ হায় আল্লাহ এতো সময় ঘুমিয়ে ছিলাম৷ আমিও নেমে পরলাম ট্রেন থেকে৷মাথাটা খুব ব্যথা করছে৷ চারিদিকে তাকিয়ে রিংকিকে খুজতে তাকলাম আমি৷ওকে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা৷
আমাকে দেখে কোথায় থেকে জানি রিংকি দৌরে এলো৷
“তুই এখন এলি?? আমি কতো সময় ধরে অপেক্ষা করছি৷”
আমি কিছু বলতে পারছিনা৷অনেক খিদে পেয়েছে আমার সেই সকাল ৬টায় ১টা রুটি কোনোরকমে খেয়েছিলাম৷ প্রচুর দুর্বল লাগছে৷ কথাও যেনো মুখ থেকে বের হচ্ছেনা৷
“একি রে কী হয়েছে তোর৷ শরীর দুর্বল নাকি???
“তুই কী আমাকে তোর সাথে নিয়ে যাবি নাকি চলে যাবো আমি৷???
“এই না না চল আমার সঙ্গে৷”
চলবে,,,,,,,,
the unlimited love❤️
part_13
writer:nusrat
রিংকিকে নিয়ে স্টেশন থেকে একটা গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম ওদের বাড়িতে৷রিংকির আম্মু আগে থেকেই জানতেন তাই তেমন রিয়েকশন করেননি আমাকে দেখে৷ রিংকি আমাকে ফ্রেশ করিয়ে দিয়ে টেবিলে খাবার এনে দিলো৷ আমি খাবারটা খেয়ে সোফায় বসে পরলাম৷
কিছুক্ষণ পর রিংকির আম্মু এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন৷
“তোমার কী হয়েছে মা??এতো মনমরা দেখাচ্ছে কেন??
“না আন্টি তেমন কিছু হয়নি৷”
“দেখ রুহি আমি কিন্তু তোকে খুব ভালো মতে চিনি কিছু একটাতো হয়েছে তোর৷ নাহলে এভাবে ঘর সংসার ছেড়ে চলে আসলি কেনো??
“কোনটাকে তুই ঘর সংসার বলছিস?যেখানে কোনো ভালোবাসা নেই আছে শুধু একরাশ ঘৃণা আর অপমান”(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
“আমি জানিনা মা তোমার আর তোমার স্বামীর মধ্যে কী মনমালিন্য হয়েছে বাট এভাবে ঘর সংসার ছেড়ে চলে আসা একদম উচিৎ হয়নি৷”
“আমি জানি আন্টি এটা উচিৎ হয়নি৷ কিন্তু এখন যদি রিংকিকে ওর স্বামী ওর কথা না শুনে না যাচাই করে বাসা থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিতো তাহলেও কী আপনি এই কথাটাই বলতেন৷ ”
আমার কথা শুনে রিংকি আর ওর আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন৷
“তারমানে তোর স্বামী তোকে,,,
“হ্যা আমার স্বামী আমার কথা না শুনে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বেড় করে দিয়েছে৷আর এটাও বলেছে কোনোদিন যাতে আমি তার সামনে না যাই৷আমি কী দোষ করেছি সেটা পর্যন্ত বলেনি৷কালকের রাত আমি আরেক ভদ্র মহিলার বাড়িতে কাটিয়েছি৷ উনার কাছে পেটের দায়ে খাবার চেয়েছি”৷ (কাদতে কাদতে)
“আচ্ছা আরুহি মা তুমি আমায় একটু খুলে বলোতো ঠিক কী হয়েছিলো৷”
আমি আন্টিকে সব খুলে বললাম৷ আন্টি আমার সব কথা শুনে বললেন,,,
“আচ্ছা মা তোমার এখানে যতদিন ইচ্ছা ততদিন থেকো৷ আমাদের কোনো আপত্তি নেই৷ রিংকি যেমন আমার মেয়ে তেমনি তুমিও তো আমার মেয়ে৷”
রাতে,,,????
আদিল রুমে বসে আছে আর কাদছে৷
“সোহানি আমার সঙ্গে কেনো এমনটা করলো৷ ওর জন্য কত কষ্ট দিয়েছি আমি আরুহিকে৷ মেয়েটার চোখে সব সময় আমি ভালোবাসা দেখতে পেতাম৷ তবুও আমি সেসবে পাত্তা দিতাম না৷শুধু মাত্র সোহানির জন্যে৷আর সোহানির চোখে আমি আকাংকা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি৷ কোথায় আছো তুমি আরুহি প্লিজ কাম ব্যাক৷ আই সোয়ার আর কখনো তোমায় কষ্ট দিবোনা৷ তুমি তো তোমার মা বাবার কাছেও যাওনি৷ তাহলে কোথায় আছো, তুমি কোথায়??”
আদিলের এসব ভাবনার মাঝেই আহিল এসে ডিনারের জন্য ডেকে গিলো৷
আদিল ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসতেই আদিলের বাবা টেবিল ছেড়ে উঠে পরলেন৷
“তোমার ছেলেকে বলে দাও ওর সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাবার খাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷ যে ছেলেটা আমার ঘরের লক্ষীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে পারে সে এটলিস্ট যাইহোক আমার ছেলে কিছুতেই হতে পারেনা৷”
কথাটা বলে আদিলের বাবা হনহনিয়ে উনার রুমে চলে গেলেন৷আদিলের মা আর আহিল ও আদিলের সাথে তেমন কথা বলেননা৷ আদিল কোনোরকমে খাবারটা খেয়ে চলে গেলো৷রুমে গিয়ে সব কিছু ভাংচুর করে ফেলছে৷পরিবারের এমন নেগলেক্ট কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা সে
হঠাৎই আদিলের চোখ পরলো বুক সেল্ফে রাখা একটা নীল ডায়েরির উপর৷ কৌতূহলবশত ডায়েরিতে কী লিখা আছে সেটা দেখার জন্য ডায়েরিটা খুললো৷ প্রথম পেইজেই চোখ আটকে গেলো আদিলের৷ সেখানে লিখা,,
“বিয়ে নিয়ে মেয়েরা কতো স্বপ্নই না দেখে তেমনি আমিও দেখেছিলাম৷কিন্তু সব সময়তো আর সব স্বপ্ন পুরন হয়না৷ তেমনি আমারো হয়নি৷ বিয়ের রাতে মেয়েরা তার স্বামীর কাছ থেকে ভালোবাসা আর সম্মান পায়৷ কিন্তু আমি পেয়েছিলাম একরাশ ঘৃনা আর চড়৷ কোনোদিন কখনো শুনিনি বাসর রাতেই নিজের স্ত্রীর শাড়ি অলংকার খুলে অন্য মেয়ের জন্য রাখা হয়৷কিন্তু সেটা আমার ক্ষেত্রে হয়েছে৷ স্বপ্ন দেখতাম একটা রাজপুত্রের মতো ছেলের সাথে বিয়ে হবে৷ এই স্বপ্ন আমার পুরন হয়েছে৷ তবে রাজপুত্রের কাছ থেকে ভালোবাসা পাবো সেটা পুরন হয়নি৷হয়তো কোনোদিন তার কাছ থেকে ভালোবাসা পাবোও না৷ কিন্তু আমি চেষ্টা করবো৷”
আদিলের চোখে পানি চলে এসেছে৷ সে চোখের পানিটা মুছে আবারো পেইজ উল্টালো৷সেখানে লিখা,,
“সোহানিকে আদিল ভালোবাসে তাতে আমি একদমই কষ্ট পাইনি৷ গার্লফ্রেন্ড থাকতেই পারে এতে রাগ অভিমান করার কিছুই নেই৷ আমি আদিলকে ভালোবাসি খুব ভালোবাসি হয়তো আমার ভালোবাসা এক তরফাই থেকে যাবে তবুও উনাকে আমি ভালোবাসি আর খুব বিশ্বাসও করি৷ কিন্তু সোহানি মেয়েটা এতো খারাপ সেটা যদি আমি আজ উনাকে ক্লাবে ফলো না করার জন্য যেতাম তাহলেতো জানতেই পারতামনা৷ আমি উনাকে সব কিছু বলে দিবো৷ কেমন মেয়েকে ভালোবেসেছেন সেটা ওতো জানার দরকার৷ আমার কাছে প্রমান আছে সেটা আমি উনাকে দেখাবো না৷আমি উনাকে আমার কথা দ্বারা বুঝাবো৷ আমিও দেখতে চাই উনি আমায় কতটা বিশ্বাস করেন”৷
ডায়েরিতে আর কিছুই লিখা নেই৷ আদিল ফুপিয়ে কেদে উঠলো সব পড়ে৷
“মেয়েটা আমায় এতো ভালোবাসত এতো বিশ্বাস করতো আর আমি ওকে এভাবে বাড়ি থেকে বেড় করে দিলাম৷ শুধু মাত্র ওই ক্যারেক্টারল্যাস সোহানির কথা শুনে৷আচ্ছা আমিতো এটাই চেয়েছিলাম যে ও আমায় ছেড়ে চলে যাক কিন্তু এখন কেনো আমি সুখি হতে পারছিনা কেনো?কেনো এত কষ্ট হচ্ছে আমার আরুহির জন্য?
আদিল ওর গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলো আরুহিকে খোঁজার জন্য৷ হন্য হন্য হয়ে খুঁজে চলেছে কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেনা৷
?️?️?️?️?️
সকালে রিংকির ডাকা ডাকিতে ঘুম ভেঙে গেলো আমার৷ আমি ছোট ছোট চোখ করে বললাম,,,
“কীরে এতো সকালে এভাবে ডাকছিস কেনো??
“সকাল ১১টা বাজে আর বলছিস সকাল৷বাই দ্যা ওয়ে এখন উঠে পর তোকে নিয়ে আমি এখন শপিংয়ে যাবো৷
“শপিংয়ে কেনো??
“বাহ্ রে তুই যে কোনো ড্রেস আনিসনি কী পরবি৷? তাই আব্বু বলেছে তোকে নিয়ে শপিংয়ে যেতে৷ আর এখুনি রেডি হয়ে নে৷ আমি তোর কোনো কথা শুনছিনা৷
রিংকি আর আমি ব্রেকফাস্ট করে শপিংয়ে চলে আসলাম৷ শপিংয়ে এসে আদিলকে খুব মনে পরছে৷ উনাকে নিয়ে ২ দিন আগেও শপিংয়ে গিয়েছিলাম৷ আর এখন আমি এক জায়গায় আর উনি আরেক জায়গায়৷ আচ্ছা উনি তো বলেছিলেন সোহানিকে বিয়ে করে নিবেন৷ হয়তো বিয়ের তোরজোড়ও শুরু হয়ে গেছে৷ রিংকির ধাক্কাতে ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি৷ তারপর কোনো রকমে নিজেকে ঠিক করে ড্রেস চয়েজে মনোযোগ দিলাম৷
?????
বিকেলে রিংকিকে নিয়ে ছাদে বসে আছি আমি৷
“রিংকি তোকে একটা কথা বলি??
“হ্যা বল না৷”
“আংকেলকে বলবি আমাকে একটা চাকরীর ব্যবস্থা করে দিতে৷???
“তুই কী চাকরী করবি নাকি??
“হুম করবো৷”
“পারবি তো???
“না পারার কী আছে৷ আর পারতে তো আমাকে হবেই৷ নিজের পায়ে নিজেকে দাঁড় করাতে হবে৷নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে৷ ব্যস্ত থাকলে কীভাবে সময় চলে যাবে বুঝতেই পারবোনা”৷
“আচ্ছা আমি আব্বুর সাথে কথা বলবো”৷
????
সোফার রুমে মনমরা অবস্থায় আরুহির মা বাবার সামনে বসে আছে আদিল৷উনারা যখন জানতে পেরেছেন আরুহিকে পাওয়া যাচ্ছে না ওমনি আদিলদের বাড়িতে চলে এসেছেন৷ কেনো আরুহি বাড়ি ছেড়ে চলে গেলো? কী হয়েছে ওর?আদিলকে একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন৷ আরুহির মা তো কান্নাকাটি করে একাকার৷ আরুহির বাবা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,,,,,,
“দেখো বাবা আমার মেয়ে খুব শান্ত প্রকৃতির৷যা করে ভেবে চিন্তে করে৷ তবুও যদি কোনো ভুল করে থাকে তাহলে ওকে ক্ষমা করে বাড়িতে নিয়ে আসো বাবা৷ আমার যে একটাই মেয়ে৷”
“আব্বু আমি জানিনা আরুহি কোথায় আছে৷ যদি জানতাম তাহলে এখন এখানে বসে থাকতাম না ওকে নিয়ে আসতাম৷ বাট কোথাও পাচ্ছিনা ওকে৷ কাল থেকে ওকে আমি হন্য হন্য হয়ে ঢাকা শহরে খুজে চলেছি৷ আই সোয়ার আমি ওকে আপনাদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো আজ নয়তো কাল৷ আপনারা এই বিশ্বাস আমার উপরে রাখতে পারেন৷ তবে আপনাদের ধৈর্য ধরতে হবে৷
খাটে বসে আছে আদিল৷ যে দিকে তাকাচ্ছে যেখানে যাচ্ছে সে দিকেই শুধু আরুহির স্মৃতি,আরুহির শরীরের ঘ্রাণ৷ রুমের সবই ঠিক আছে সবই আছে শুধু নেই আরুহি৷
“না এই সোহানি মেয়েকে একটা শাস্তি দিতেই হবে৷ আমি সুখি হয়েও সুখি হতে পারিনি শুধু মাত্র এই মেয়েটার জন্য তাই একে আমি ছেড়ে দিবোনা কিছুতেই না৷
চলবে,,,,,,,