#The_Beauty_Of_Love,07,08
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_7
.
.
.
মাহির একটা প্লেটে খাবার নিয়ে ওপরে চলে যায়,,গিয়ে দেখে রুমে নেই মিহু খাবার টা রেখে ছাদে চলে আসে মাহির,,,এসে দেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আমি,,,,এসেই আমার পাশে দাড়িয়ে আস্ক করে,,,
“নিচে এলে না কেনো?(গম্ভীর গলায়)
আমি ওনার দিকে একবার তাকিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকালাম,,,
“কি হলো আমি কিছু আস্ক করছি উত্তর দাও,,খেতে এলে না কেনো,,,
“আপনাকে বলতে বাধ্য নয়,,(আকাশের দিকে তাকিয়ে)
“মিহু আই অ্যাম সরি তখন রাগের মাথায় ওসব বলে দিয়েছি,,,
“রাগে বললেও কথা গুলো সত্যি,,(ওনার দিকে তাকিয়ে)
“আচ্ছা সরি ,,,চলো খাবে,,
“আমার খিদা নেই,,,
“পিচ্ছি দের না খেয়ে থাকতে হয় না,,,
“আমি পিচ্ছি না,,,আর আমি খাবো না আপনি যান তো এখান থেকে আমার ভালো লাগছে এখন,,,,
“সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল ব্যাকাতে হয়,,,
আমি ওনার কথার অর্থ বুঝার আগেই উনি আমাকে পাজা কোলে তুলে নিলো,, আমি অবাক কি হচ্ছে সেটাও বুঝতে পারছি না,,ব্যাপার টা বুঝার পর আমি ছুটাছুটি করতে লাগলাম,,,
“কি করছেন কি ছাড়ুন আমাকে ছাড়ুন বলছি ,,,দেখুন আমি পরে যাবো আর পরে গেলে আমি মরে যাবো আর মরে গেলে আমার বেবি এতিম হয়ে যাবে,,আমার হবু স্বামী বিধবা হয়ে যাবে ছাড়ুন আমাকে,,,,
আমার কথা শুনে উনি দাঁড়িয়ে যায় আর আস্ক করে,,,
“বেবি হবু স্বামী ?,,
“হ্যাঁ আমি যদি এখন মরে যায় তো আমার ফিউচার বেবি স্বামী অকালে বিধবা হবে কিন্তু এখন আমার স্বামী তো আপনি তাহলে আপনি বিধবা হবেন আল্লাহ আপনি এটা করতে পারেন না নামান আমাকে কোল থেকে,,,
“চুপপপপপপপ বেয়াদপ , আর একটা কথা বললে ঠাস করে ফেলে দিবো,,,(ধমক দিয়ে)
ওনার ধমকে আমি মুখে এক আঙ্গুল দিয়ে চুপ করে রইলাম,,,রুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে বেডে বসিয়ে দিলো,,একটা চেয়ার টেনে বসে খাবারের প্লেট টা হাতে নিয়ে বলে,,
“খাও,,,,
“খাবো না খিদা নেই,,,(অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে)
উনি কিছু না বলে ভাত মেখে আমার মুখের সামনে ধরে খেতে বলে,,এটা দেখে আমি অবাকের সাত আসমানে উঠে গেছি,,এটা মোটেও আশা করিনি যে উনি নিজের হাতে খাইয়ে দিতে চাইবে,,আমি কেনো জানি ওনার হাতে খাওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না চুপ চাপ খেয়ে নিলাম,,,এই প্রথম আমাকে কেও এতো যত্ন করে খাইয়ে দিলো,,,, ওনার প্রতি যতো রাগ সব উরে গেলো,,, যতো টা খারাপ ভেবেছিলাম ততটা খারাপ না উনি,,,,,,উনি আমাকে খাইয়ে দিয়ে বলে উঠলো,,
“কি খাধক মেয়েরে বাবা একবার জিজ্ঞেস ও করলো আমি খেয়েছি কি না একা একা এত্তো খাবার খেয়ে নিলো,,,তাই তো বলি এতো ভারি কেনো আটার বস্তা র মতো,,,
আমি ওনার কোথায় রাগী লুক নিয়ে তাকালাম,,উনি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চলে গেলো,,,সত্যি তো আমি একবারও ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম না খাইছে কি না ছি মিহু ছি,,,,
“ওতো ভাবতে হবে না আর যাও ঘুমিয়ে পড়ো,,,
“হুহহহ
।।।
এমন করে আরো কিছু দিন চলে উনি দিন দিন মনে হচ্ছে আমার প্রতি একটু বেশি কেয়ার করছে,, আমি এতো ভুল করি দুষ্টুমি করি কিন্তু উনি রাগ করেন না আর সেদিনের মতো,,তবে ভুলের শাস্তি ঠিক ই দেয়,,,,,,আজ দুই মাস আমি এই চৌধূরী বাড়িতে মাহিরের বউ হয়ে,,,,,কেনো জানি ওনাকে আমার এখন ভালো লাগে ওনার রাগ শাস্তি সব কিছুই ভালো লাগে কিন্তু আমি এই ভালোলাগা টাকে বাইরে আনতে চায় না,,, আমাকে দুর্বল হলে চলবে না,,,,,
সকালে উঠে কলেজের জন্যে রেডি হয়ে নিচে এসে নাস্তা করতে বসলাম আজ উনি চলে গেছে অফিসে ইমপরটেন্ট মিনিং আছে তাই,,,আমি নাস্তা করছিলাম তখনি মামনি বলে উঠে,,,,
“মিহু কাল কি জানিস?
“কাল কি মামনি জানি না তো,,(একটু চিন্তা করে)
“আরে তুই জানিস না কাল তোর হাসব্যান্ড এর বার্থডে,,,
“কি ওনার বার্থডে ওয়াও তাহলে তো আজ রাতে ১২ টাই সারপ্রাইজ দেওয়ায় যায়,,,
“আমিও সেটায় ভাবছিলাম,,,,তুই কলেজ থেকে এক টার সময় মাহিরের অফিসে যাবি আমি ওকে ফোন করে বলে দিবো তোকে শপিং এ নিয়ে যাবে,,,
“মামনি শপিংয়ে তো ড্রাইভার কাকা কেও নিয়ে যাওয়া হবে ওনাকে কেনো লাগবে,,,
“আমি যা বলছি তাই তুই মাহিরের সঙ্গেই যাবি,,,আর তোর জন্যে কিছু শপিং করবি তুই তো সেদিন বাড়িতে পড়ার জন্যে আর কিছু দরকারি জিনিস নিলি আর কিছুই নিলি না ,,,আমি যা বললাম তাই ওকে এখন যা কলেজে,,,,,
আমি আর কিছু না বলে মামনি বাই বলে কলেজে চলে আসি,,,,কলেজে এসে আমার ফ্রেন্ড দের কাছে চলে গেলাম,,,,
“কি রে তোকে আজ খুশি খুশি লাগছে কি ব্যাপার,,,(মাইশা)
“কাল ওনার বার্থডে তাই,,,(কিছু না ভেবেই বলে দিলাম)
“উনি টা আবার কে ? (নিপু)
“আরে আমার বর মাহির,,,(এটা বলেই চোখ বড়ো করে তাকালাম ওদের দিকে ওরাও দুষ্টুমি নজরে তাকিয়ে আছে,,আমি ৩৬ টা দাঁত বের করে বলি,,) হিহিহিহি কিছু না,,,,
“বুঝি বুঝি সব বুঝি,,,(রোদ)
“ওতো বুঝতে হবে তোদের চল ক্লাসে আর হ্যাঁ কাল সন্ধ্যায় ওরা আমাদের বাড়ি তে যাবি সবাই ওকে,,,
“ওকে,,(সবাই একসঙ্গে শুধু অধরা বাদে)
“কি রে মান্নু তুই আসবি না কাল,,,
“তুই তো জানিস আমার ফ্যামিলি এসব লাইক করে না,,,তবুও আমি বলে দেখবো যেতে দেয় তো দিবে,,,(অধরা)
“আচ্ছা,,,
তারপর আমরা ক্লাসে চলে যায়,,,,
এই দিকে মাহির মিটিং শেষ করে মাত্র নিজের রুমে এসে বসেছে আর তখনি ফোন আসে ,,হাতে নিয়ে দেখে মামনির ফোন,,,
“হ্যাঁ বলো আম্মু,,,
“মিহু যাবে তোর অফিসে তুই ওকে নিয়ে শপিং এ যাবি,,,
“আমাকেই যেতে হবে ওর সঙ্গে শপিং,,,
“হ্যাঁ যেতে হবে রাখছি আমি,,,,
বলেই ফোন কেটে দিল মামনি তারপর নিজে নিজে বলতে লাগলো,,,
“তোদের দুজন কে কতো কাছাকাছি রাখবো ততই তোরা এক হবি,,আমি জানি বিয়ে তুই প্রেম করে করিস নি মাহির সম্পত্তির জন্য করেছিস,,,আমি জানি তুই তোর কষ্টে গড়ানো এসব সরকারের হাতে কখনো দিবি না,,,তাই তো উকিল কে বলে আমি এই উইল তৈরি করেছি,,,তোকে এতো বার বলেছি বিয়ে করতে কিন্তু সেই ঘটনার পর সব মেয়েকে ঘৃণা করে চলেছিস,,,তোকে বিয়ে দেওয়ার জন্যেই এমন কাজ করা আমার,,,, কিন্তু বেটা তুই ও তোর বাপের মতো চালাক বিয়ের আগে একবছরের কন্ট্রাক করে বসেছিস,,,,কিন্তু তোদের দুজন কে এক করতে আমার যা করা লাগে করবো আমি,,,,(এসব কথা নিজে নিজে বলে মাহিরের আম্মু)
।।
মাহির কে কিছু বলতে না দিয়েই ফোন কেটে দিল ,,মাহির আর কিছু উপায় না পেয়ে ,,, তার ম্যানেজার লিজা কে ডাকলো ফোন করে,,,,,
“জ্বি স্যার বলুন,,,
“এক টার সময় একটা মেয়ে আসবে ওকে আমার রুমে পাঠিয়ে দিবে,,,
“ওকে স্যার,,,
।।
এই দিকে আমি আজ একটু আগেই বের হয়ে এলাম কলেজ থেকে মামনির কথা মতো,,,বাইরে এসে দেখি ড্রাইভার কাকা আগে থেকেই দাড়িয়ে আছে,,হইতো মামনি বলেছে,,,,আমি গাড়িতে উঠে বসলাম কাকা ড্রাইভ করছে,,, তারপর গাড়ি টা থামলো একটা বরো বিল্ডিং এর সামনে এই টা আমি আগেও দেখেছি,, যেদিন উনি আমাকে বিয়ে করে সেদিন প্রথম এখানেই নিয়ে এসেছিল আমাকে,,,আমি নেমে ভিতরে চলে গেলাম,,, ভিতরে গেলে দেখি সবাই কাজ করছে নিজের নিজের কিন্তু আমি যেতেই তারা আমার দিকে তাকালো অবাক হয়ে,,,অবাক হবেই তো একটা কলেজ পড়ুয়া মেয়ে অফিসে কি করে এই সময় তাই ভাবছে হয় তো,,,,,,,আমি তো কিছুই চিনতে পারছি না ওনার রুম কোনটা কাকে জিজ্ঞেস করবো এখানে,,,তখনি একটা মেয়ে আমার কাছে এসে ,,,দেখতে অনেক সুন্দর বাট ছোটো ড্রেস পরা অনেক মর্ডান,,,,এসে আমাকে বলে,,
“কাকে চায় তোমার,,তুমি কি অফিসের কারো সঙ্গে দেখা করতে এসেছো?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না তাই মাথা নাড়লাম অর্থাৎ হ্যাঁ,,,,
“কাকে নাম বলো আমি ডেকে দিচ্ছি,,,
“মাহির চৌধূরী,,,(আস্তে করে বললাম)
মেয়েটা অবাক হয়ে বললো,,,
“বসের সঙ্গে? কে হয় বস তোমার?
এখন কি বলি আমি ওনার কে হয় এটা কি বলে দিবো নাকি অন্য কিছু বলবো,,দ্বিধায় পড়ে গেলাম তো,,,আমি এসব ভাবছিলাম তখনি কেও একজন বলে উঠে,,,
“হাসব্যান্ড হয় ওর মাহির চৌধুরী,,,আর মাহির চৌধুরীর ওয়াইফ মিসেস সামায়রা মিহু চৌধূরী,,,,,
আমি সহ অফিসের সব স্টাফ রা ওনার দিকে তাকালো আমি তো অবাক এতো মাহির,,,,উনি আমাদের কাছে এসে বললো,,,,,
“মিস লিজা আপনাকে বলা হয়েছে একটা মেয়ে আসবে আর তাকে আমার রুমে পাঠিয়ে দিতে তাহলে এতো প্রশ্ন করার কি আছে ওকে,,,,(রেগে)
“সরি স্যার আমি বুঝতে পারিনি এটা ম্যাম,,,
“এর পর থেকে যেনো ভুল না হয় সব নিজের নিজের কাজে যান,,,,
এই বলে উনি আমার হাত ধরে ওনার রুমে নিয়ে গেলেন,,, আমি এখনও অবাক আমি ভাবতেই পারছি না উনি আমাকে তার বউ এর পরিচয় দিবেন সবার সামনে,,,ভাবতেই অনেক খুশি লাগছে আমার তো লুঙ্গি ড্যান্স করতে ইচ্ছা করছে,,কিন্তু এখন আমার কাছে লুঙ্গি নেই আর উনিও সামনে আছে সো ইচ্ছা টা তোলা থাক,,,,
“অন্য সময় তো বকবক এর ঝুড়ি খুলে দাও তো লিজা তোমায় প্রশ্ন করছিল উত্তর দিচ্ছিলে না কেনো?
“আমি ভয় পেয়ে গেছি এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি তাই,,,(নিচে দিকে মুখ করে)
“বাহ বাহ তুমি ভয় ও পাও,,,
আমি ব্রু কুচকে তাকালাম ওনার দিকে,,,
“আচ্ছা খেয়েছো ?
“না আপনি?
“না আমারও খাওয়া হয়নী,,, তুমি বসো আমি খাবার অর্ডার করছি,,,,
উনি খাবার অর্ডার দেওয়ার কথা বলতেই আমি যোরে বলে উঠি,,,,
“আমি বিরিয়ানি খাবো,,,
“এতো যোরে বলার কি আছে আমি তো এখানেই আছি চলে তো যায় নি,,,
“হুহহ,,,,
আমি ওয়াষ রুমে চলে গেলাম ,, মামনি তখন আমাকে একটা ড্রেস ভরে দিয়েছিল কলেজ ড্রেস পরে তো আর শপিং করতে যাওয়া যাবে না তাই ,,আমি সেটা পরে বের হলাম,,,
“এই ড্রেস কই পেলে,,?
“ম্যাজিক করে,,,
উনি কিছু বলতে যাবে তখনি খাবার চলে আসে,,,খাবার গুলা রেখে লোক টা চলে যাই আমি তো এতো খাবার দেখে ঝাঁপিয়ে পরলাম খেতে খুব খিদা লাগছে তাই,,,,
“আস্তে খাও কেও কেরে নিচ্ছে না,,,আর সব মেয়ে ফিগার ঠিক রাখার জন্য বিরিয়ানি থেকে দূরে যাচ্ছে আর তুমি রাক্ষসীর মতো খাচ্ছ কি আজব মেয়েরে বাবা,,,
“নজর দিবেন না তো খান আপনিও,,,
তারপর আমরা খেয়ে নিলাম,,, উনি বললেন আমাকে একটু বসতে তার একটা কাজ আছে সেটা করেই বের হবো,,,আমি ওনার জন্যে বসে থাকতে থাকতে একসময় সোফায় ঘুমিয়ে পড়ি,,, ওনার কাজ শেষ হলে আমাকে ডাকতে নিলেই দেখে আমি ঘুম,,,,
মাহির আমার কাছে সোফার দিকে একটু ঝুঁকে বসে,,,
“ঘুমালে এই মেয়েকে পুরো বাচ্চা লাগে যেনো কিছুই জানে না কিন্তু আসতো একটা শয়তান এই মেয়ে,,,তবে অনেক কিউট,,,(এই বলে কপালে একটা চুমু দেই মাহির)
তখনি রুমে ঢুকে জেরিন,,,,
“মাহির,,,
মাহির জেরিনের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলে,,
“তোমাকে কতবার বলেছি আমার কেবিনে ঢুকলে পারমিশন নিয়ে ঢুকবে,,,
“মাহির এই মেয়েটা কে আর কি করছিলে তুমি ,,,(রেগে)
“ও আমার বউ আর ওর সঙ্গে আমি যা খুশি করতে পারি তাতে তোমার কি,,,,(রেগে)
“ওহ এই সেই মেয়ে আজ ওকে আমি ছাড়বো না,,,(এই বলে মিহুর দিকে আগাতে লাগে,,তখনি মাহির ওর সামনে দাঁড়াই)
“ও ঘুমাচ্ছে ওর ঘুমে একটু অসুবিধা হলে তোমার আমি কি হাল করবো নিজেও জানি না জেরিন,, ভালোই ভালোই এখান থেকে চলে যাও,,,,(অনেক রেগে)
মাহিরের কথা আর রাগ দেখে ভয়ে আর আগাতে পারে না জেরিন রেগে সেখান থেকে চলে যায় আর যাওয়ার আগে যোরে দরজা টা বন্ধ করে দেয়,,,
এতো যোরে দরজা বন্ধ করায় আমি ঘুম থেকে ফাটিয়ে উঠি,,
“কি হলো,,
“কিছু না শপিং এ যাবে কখন? চলো দেরি হচ্ছে,,,
আমিও ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরলাম শপিং করতে ওনার সঙ্গে,,,,,
চলবে?
#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_8
.
.
.
মাহিরের কথা আর রাগ দেখে ভয়ে আর আগাতে পারে না জেরিন রেগে সেখান থেকে চলে যায় আর যাওয়ার আগে যোরে দরজা টা বন্ধ করে দেয়,,,
এতো যোরে দরজা বন্ধ করায় আমি ঘুম থেকে ফাটিয়ে উঠি,,
“কি হলো,,
“কিছু না শপিং এ যাবে কখন? চলো দেরি হচ্ছে,,,
আমিও ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরলাম শপিং করতে ওনার সঙ্গে,,,,, শপিং করতে গিয়ে ওনাকে এক যায় গায় বসিয়ে রেখে,,যা যা প্রয়োজন সব কিনে নিলাম,,সব কিনে ব্যাগ গুলা নিয়ে চৌধূরী সাহেবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে আবার অন্য জিনিস কিনতে চলে গেলাম,,আমার কান্ড দেখে মাহির শুধু অবাক ই হচ্ছে,,এত্তো গুলা শপিং ব্যাগ ওনাকে ধরিয়েছি ,,উনি আর নিতে না পেরে ওই গুলার বিল দিয়ে গাড়িতে রাখতে চলে যায়,,,এই দিকে আমি শপিং করছিলাম তখনি আমার সামনে রোহান এসে দাঁড়ায়,,রোহান আমাকে জড়িয়ে ধরতে আসে আমি সরে দাঁড়ায়,,,
“মিহু জানু তুমি কই ছিল এতো দিন আমি তোমাকে কতো খুঁজেছি,,,(নাটক করে)
“ওহ রিয়ালি অনেক খুঁজেছো,,,
“আই মিস ইউ জানু,,,(এই বলে আবার জড়িয়ে ধরতে আসে,,আমি ওকে দূরে সরিয়ে বলি)
“বার বার আমাকে টাচ করার চেষ্টা করবে না রোহান তোমাকে আগেও না করেছি আর এখন তো আমি অন্য কারো বউ,,,
“বউ মানে তোমার বিয়ে হয়ে গেছে তোমাকে না আমি পালিয়ে আস্তে বলেছিলাম,,,
“চুপ করো আর এখান থেকে যাও নয়তো অনেক খারাপ হয়ে যাবে,,,
“না আমি যাবো না আগে বলো তুমি কাকে বিয়ে করেছো,,,(আমার হাত ধরে)
রোহান আমার হাত ধরে ফেলে আমি ছড়ানোর চেষ্টা করি কিন্তু ছারে না আমি রেগে কিছু বলতে যাবো তখনি মাহির এসে দাঁড়ায়,,,উনি এসে রোহানের হাত থেকে আমার হাত টা ছাড়িয়ে নিলো,,,,,অবাক করা বিষয় হলো উনি কিছু বললো না রোহান কে ওখান থেকে আমাকে নিয়ে চলে এলো,,,,আজব আমিও আর কিছু বললাম না,,,,বাকি জিনিস গুলাও কিনে চলে এলাম বাড়িতে,,,, বাড়ি এসে উনি সোজা ওপরে রুমে চলে গেল,,,আমি মামনির সঙ্গে কথা বলতে লাগলাম,,
রাত ৯:৩০,,,,
আমি মামনি আর উনি ডিনার করছি ,, মামনি আমি খাচ্ছি আর গল্প করছি,,কিন্তু উনি খেয়েই চলেছেন একটা কিছু বলছে না কি মানুষ রে বাবা এতো চুপ চাপ থাকে কেমনে,,,আমি তো চুপ থাকলেই মুখের ভিতর কথা কিলবিল করে,,,,,ওনার খাওয়া হলে উনি চলে যায় ওপরে ,,,, মামনি আমি খেয়ে ছাদে চলে গেলাম,,, হালকা একটু সাজিয়ে নিলাম ছাদ টা মরিচ বাতি আলো, আর বেলুন,, ফুল দিয়ে,, মামনি কেক তৈরি করেছিল নিজে হাতে,,,ওটা ভাল করে একটা টেবিলে রেখে দিলাম ,,,,, আমাদের এসব ঠিক করতেই ১১ টা ৩০ বেজে গেলো,,,,,
“মিহু তুই যা মাহির কে নিয়ে আয় তবে ১১ টা ৫৭ তে নিয়ে আসবি,,ওকে এখানে নিয়ে আসতেই দেখ সময় লেগে যাবে আস্তে চায়বে না তুই যে করেই হোক নিয়ে আসবি,,,
“ওকে মামনি,,,
এই বলে আমি চলে গেলাম রুমে আগেই হাতে একটা ঘড়ি পরে নিয়েছি যাতে সময় দেখতে সুবিধে হয়,,,,রুমে গিয়ে দেখি উনি এখনো জেগে কিছু ফাইল নিয়ে কি করছে,,,,,আমি গিয়ে ওনার পাসে বসলাম,,,এটা দেখে উনি একটু অবাকই হলো মনে হচ্ছে,,,,,
“কি চায়?( ব্রু কুচকে তাকিয়ে)
“হিহিহিহি কিছুই না দেখছি আপনি কি করছেন,,,(ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
“দেখতেই তো পাচ্ছো কাজ করছি,,,
“হ্যাঁ হ্যাঁ আপনি কত্তো কাজ করেন ,,,(আবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে এখন ১১ টা ৫০ বাজে)
“মাথা ঠিক আছে তোমার আর বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছ কেনো আর রাতে ঘড়ি পরে তুমি কোথায় যাবে,,,
“কোথাও না এমনি,, আচ্ছা আমার না ছাদে যেতে ইচ্ছা করছে একটু চলুন না প্লিজ,,,
“এতো রাতে ছাদে সত্যি কি মাথা গেছে তোমার ,,,
“চলুন না চলুন না প্লিজ প্লিজ,,,(উঠে ওনার হাত ধরে টেনে কিন্তু আমার শক্তি তে উনি একটু নড়ছেন ও না,,আরো কিছু খন অনেক যোর করলাম,,তারপর বললো)
“ওকে চলো,,,(এই বলে উনি উঠে দাঁড়ায়,,)
আমি যেতে লাগি উনি আমার পিছন পিছন আস্তে লাগে না,, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১১ টা ৫৮ বাজছে,,, ,,,, আমি ওনাকে তাড়াতাড়ি আসতে বলে দৌড়ে ছাদে চলে যায়,,,
“আজব মেয়ে ছাদে যাওয়ার জন্য এতো পাগল কেনো হলো তাও এতো রাতে,,,এখন আমাকে ফেলেই চলে গেলো,,,
এই বলতে বলতে ছাদে প্রবেশ করলো মাহির আর আমি মামনি যোর বলে উঠলাম,,, হ্যাপি বার্থডে চৌধূরী সাহেব,,,,,
উনি তো অবাক,,আজ ওর বির্থডে ও নিজেই যানে না,,পুরো ছাদ অনেক সুন্দর লাগছে,,মাহির ওর আম্মুর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে,,,
“থ্যাংক ইউ আম্মু,,তুমি প্রতিবার কিছু না কিছু করে সারপ্রাইজ দাও,,,
” আমার একমাত্র ছেলে বলে কথা ,, কিন্তু এবার মিহু ই সব করেছে আমি তো শুধু বলেছি তোর বার্থডে বাকি ও নিজেই করেছে,,,
মামনির কথা শুনে উনি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন আমিও তাকে একটা মুচকি হাসি ব্যাক দিলাম,,,,
“নাও এবার কেক কাটো,,,
উনি কেক কেটে মামনি কে খাইয়ে দিলো,,,তারপর আমাকেও খাইয়ে দিলো,,,আমরা কিছু খন আড্ডা দিয়ে রুমে চলে আসি,,কাল অনেক কাজ তাই,,,
রুমে এসে উনি আমাকে বলে,,
“মিহু থ্যাংক ইউ,,,
আমি মুচকি হেসে শুয়ে পরলাম,,উনিও শুয়ে পরলো,,,,,,,,,,,,,, সকালে নাস্তা করে উনি অফিসে চলে গেলো তবে আজ তাড়াতাড়ি চলে আসবে বলেছে,, অফিসের স্টাফ দের বার্থডে পার্টির জন্যে ইনভাইট করবে তাই গেছে,,,,,আমিও আজ কলেজে যায়নি,,, অনেক কাজ ,,আরো লোক পুরো বাড়ি ডেকোরেশন করছে ফুল দিয়ে,,,,
।।
এই দিকে অধরা তার মা এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে,,, রাবেয়া বেগম পান মুখে ভরে বলে,,,
“তো আজ কি মনে করে আমার সামনে আশা হয়েছে,,দরকার ছাড়া তো আমার সামনে আসো না তুমি,,,,
(রাবেয়া বেগম হচ্ছে অধরার সৎমা,,, অধরার আম্মু মারা যান যখন অধরার বয়স সাত বছর ছিল,,,অধরার মা মারা যাওয়ার এক বছর পর অধরা বাবা রাবেয়া বেগম কে বিয়ে করে আনে,,সৎমা খুব একটা ভালোবাসে না অধরা কে অধরার থেকে ৬ বছরের বড়ো একটা ভাইয়া আছে আবির,, এই আবির ই একমাত্র যে অধরা কে একটু সময় আর ভালোবাসে আর অধরার বাবা তো কাজের জন্যে বাইরের থাকে সব সময়,,,অধরা তার সৎমা এর সঙ্গে খুব একটা কথা বলে না দরকার ছাড়া,,,)
অধরা একটু চুপ থেকে উত্তর দিল,,,
“আজ সন্ধায় আমার এক বান্ধবীর স্বামীর জন্মদিন ,,তাই সন্ধ্যার সময় আমি ওখানে যেতে চায়,,,,(এটা বলেই চুপ করে রইলো অধরা)
“তো তোমার কোন বান্ধবীর স্বামীর জন্মদিন যে মেয়ে মামা মামীর মুখে চুনকালি লাগিয়ে পালিয়েছে সে,,(পান চিবোতে চিবোতে বললেন রাবেয়া বেগম)
অধরা র রাগ উঠলেও কিছু বলে না চুপ করে থাকে তখনি আবির ওপর থেকে নিচে নামতে নামতে বলে,,,
“যে মামী মামা জেনে শুনে একটা গুন্ডার সঙ্গে বিয়ে দিতে চায় সে মামী মামার মুখে চুনকালি ই মাখানো উচিৎ,,,।।
আবিরের কোথায় অধরার মুখে একটু হাসি ফুটে উঠলো,,,,রাবেয়া বেগম চুপ করে রইলেন,,,,এই আবির কেই একমাত্র একটু ভয় পায় রাবেয়া বেগম,,,, আবির বলে উঠে,,
“অধরা আজ কখন যেতে হবে?
“সন্ধ্যায় ভাই,,,
“ঠিক আছে,,, আজ আমার ফ্রেন্ড এর ও বার্থডে আমি যাবো তখন তোকে নামিয়ে দিবো,,,
“থ্যাংক ইউ ভাই,,,(আবির মুচকি হেসে চলে গেলো সেখান থেকে)
।।।
মাহির রুমে বসে আছে তার হাতে একটা শপিং ব্যাগ,, ব্যাগে একটা সুন্দর গ্রাউন আছে ব্ল্যাক কালারের,,,এটা মিহু জন্যে কিনেছে কিন্তু দিবে কি দিবে না সেটা ভেবেই পাচ্ছে না ,,, আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ের জন্যে কিছু কিনে নি এই প্রথম কিনলো,,,,,
সব কাজ শেষ করে আমি রুমে এলাম রেডি হতে,,এসে দেখি উনি বসে আছে কি যেনো ভাবছে,,কিন্তু আমি কিছু না বলে একট ড্রেস নিয়ে ওয়াশ রুমে যেতে লাগি তখনি ডাকে,,,
“মিহু,!!!!
“হুম বলুন,,
“এটা নাও আজ তুমি এটা পড়বে,,,(ব্যাগ টা দিয়েই উনি উঠে বাইরে চলে গেলো)
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম,,উনি আমার জন্যে নিয়ে এসেছে ওয়াও কত্তো কিউট উনি,,,আমি খুশি হয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম,,,,,গোসল করে ফ্রেশ পরে বের হলাম,,, অনেক সুন্দর প্রিন্সেস দের মতো ,,, এমন ড্রেস পড়া তো দূরে থাক চোখেও দেখিনি আমি,,,,,,খুব সুন্দর করে রেডি হয়ে নিলাম,,আমি চোখে কাজল দিচ্ছিলাম তখন উনি রুমে এসে উনিও আজ ব্ল্যাক পড়েছে,,অনেক কিউট লাগছে যেকোনো মেয়েই ক্রাশ খাবে আমিও খেয়ে নিলাম ছোটো খাটো একটা ক্রাশ,,,,,উনি এসে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে আমি লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলাম,,, উনি আস্তে আস্তে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন,,,অনেক নিখুঁত ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উনি আমাকে,,,,,,তারপর বললেন,,
“চলো নিচে সবাই অপেক্ষা করছে,,,(বলে আমার হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগে উনি)
।।
এই দিকে আবির অধরা কে নিয়ে যেতে লাগে মিহুর শ্বশুর বাড়িতে,,,,
“অধরা মিহুর শ্বশুর বাড়ি কোথায় অ্যাড্রেস বল,,,,
“তুই সামনেই চল আমি দেখিয়ে দিচ্ছি কাছেই বেশি দুরেনা,,,
আবির বাইক স্টার্ট দেই ,, যেতে লাগে সামনে,,,৩০ মিন যেতেই অধরা বলে উঠে,,ভাই এই দিকে ঘুর,,, অধরার কোথায় একটু অবাক হয় আবির কারণ এই দিকেই আবির তার ফ্রেন্ড এর বার্থডে তে যাবে,,,আর একটু গিয়ে অধরা বলে,,
“ভাই এখানে দ্বারা ,,,
“তুই সত্যি চিনিস তো এটাই মিহুর শ্বশুর বাড়ি?
“হ্যাঁ মিহু আমাকে এটাই অ্যাড্রেস দিয়েছে,,,
“মিহুর হাসব্যান্ড এর নাম কি?
“মাহির চৌধূরী কেনো ভাই তুই জেনে কি করবি,,,
“মাহির মিহু কে বিয়ে করেছে ,,আরে এই মাহির ই তো আমার ছোটো বেলার ফ্রেন্ড জার বার্থডে তে আমিও এসেছি,,(আবির অবাক হয়ে বলে আর আবিরের কথা শুনে অধরা ও অভাক হয়)
“তাহলে তো ভালই চল ভিতরে যায়,,,,,(এই বলে ভিতরে চলে যায় অধরা আবির)
সব গেস্ট চলে আসে,,, তখন আমি আর মাহির নিচে আসি আমাদের একসঙ্গে দেখে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে,,কারণ আমাদের অনেক সুন্দর লাগছে একসঙ্গে,,কেও কেও বলছেন ,, নাইস কাপল,,,,,আমরা নিচে চলে আসি তখনি আবির অধরা মাহিরের কাছে আসে আমি অধরা আবির কে দেখে কিছু বলতে জানো তার আগেই আবির মাহির কে জড়িয়ে ধরে,,, বলে।
“হ্যাপি বার্থডে দোস্ত,,,,,
“থ্যাংক ইউ,,,
“হ্যাপি বার্থডে ভাইয়া,,(অধরা)
“থ্যাংক ইউ বাট তুমি?
“এটা আমার বন অধরা,,(আবির)
“আরে সেই ছোটো পিচ্ছি এতো বড়ো হয়ে গেছে,,,তোমার পিক আমাকে আবির দেখিয়েছিল তখন তুমি ছোটো ছিলে,,,,যাক ভালোই করেছিস তুই ওকে নিয়ে এসেছিস আমার দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো,,,
(আমি তো এদের কথা শুনে অবাক এরা একে অপরকে কে নিচে বাহ ভালোই ,,এখন তো আমাকেই পাত্তা দিচ্ছে না কেও আমার মান্নু ও কথা বলছে না,,আমি এসব ভাবছিলাম তখন আবির বলে উঠে)
“,অধরা আমার সঙ্গে আসে নি সে তোর বউ এর ইনভাইট করায় এসেছে,,,
“মিহুর ইনভাইট করায়,,,(অবাক হয়ে)
“হ্যাঁ কারণ অধরা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমরা একসঙ্গে ছোটো থেকে বরো হয়েছি,,আর আবির জিজু কেও চিনি,,,(আমি এবার বলে উঠলাম)
“সবই বুঝলাম কিন্তু আবির জিজু হলো কি করে,?
“আমি ছোটো থেকেই আবির কে জিজু বলি আমার ইচ্ছা ছিলো আমার এক আপুর সঙ্গে বিয়ে দিবো কিন্তু আমার তো আপু নেই তাই ভেবেছি আবির জিজু ই থাকবে ,,যখন বিয়ে করবে তখন তাকে আপু বানিয়ে দিবো,,,
“বাহ কি ভাবনা চিন্তা ভালোই,,,
“ওকে ওকে গল্প পরে হবে এখন কেক কাটার সময়,,,চলুন সব,,,,(আমি)
চলবে?