The_Beauty_Of_Love,09,10

0
1852

#The_Beauty_Of_Love,09,10
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_9
.
.
.
“আচ্ছা গল্প পরে হবে এখন চলুন কেক কাটবেন,,,,

এই বলে আমরা যেতে লাগি ঠিক তখনি একটা মেয়ে চিলের মতো উড়ে এসে মাহির কে জড়িয়ে ধরলো,,,আর বললো,,

“হ্যাপি বার্থডে বেবি,,,,

মাহির অবাক হয়ে যায় হঠাৎ এমন হওয়ায়,,,তাড়াতাড়ি মেয়ে টাকে ছাড়িয়ে বলে,,

“থ্যাংক ইউ জেরিন ,, (অনেক গেস্ট আছে তাই কিছু বলতে পারলো না মাহির)

আমার যেনো দুনিয়া ঘুরছে ওনার গার্ল ফ্রেন্ড আছে,,, আমার অনেক কান্না পাচ্ছে কিন্তু কান্না কেনো করবো আমি? না করবো না মিহু তুই বার বার ভুলে কেনো যাস এটা জাস্ট কন্ট্রাক এর বিয়ে একবছরের কন্ট্রাক,,, এক বছর পর ঠিক ছেরে দিবে,,,আমার ই ভুল ওনাকে নিয়ে একটু বেশি ভেবে ফেলেছি,,,এটা যে আমার জন্যে না,,,,

।।

আমি মাহিরের পাসে ছিলাম জেরিন আমার কাছ থেকে মাহির কে নিয়ে চলে গেলো কেক কাটার ওখানে,,, আমি আর গেলাম না ,, এক সাইডে দাড়িয়ে রইলাম,, আমার কাছে অধরা ,, মাইশা আয়ান রোদ আছে ,,ওরাও কিছু বলছে না চুপ করে আছে,,,,আমি শুধু ওনার আর ওই জেরিনের দিকে তাকিয়ে আছি,,,না চাইতেও চোঁখ টা জ্বলজ্বল করে উঠছে,,,অধরা বুঝতে পারে আমার কষ্ট হচ্ছে তাই আমার হাত টা শক্ত করে ধরে,,আমি ওর দিকে তাকিয়ে ইশারা করি আমি ঠিক আছি,,,অধরা ও মুচকি হাসে,,,

“মাহির নাও কেক কাটো সবাই তো ওয়েট করছে,,,(জেরিন)

মাহির চারি দিকে একটু তাকিয়ে দেখলো হইতো তার পাসে কাওকে দেখতে চায়ছে কিন্তু কই সে,,,দেখতে না পেয়ে কেক কাট তে লাগে মাহির তখনি মামনি বলে উঠে,,,

“ওয়েট মাহির,,, (এটা বলে মামনি আমার কাছে আসে এসে আমার হাত ধরে ওনার কাছে নিয়ে যায়,,জেরিন কে ওনার কাছ থেকে সরিয়ে আমাকে দাড় করায় আর জেরিন কে বলে,,)

“জেরিন তুমি একটু সাইডে দাড়াও মা,, মাহিরের বউ আছে ওকে এখানে দাঁড়াতে দাও,,,(মামনি জেরিন কে একটু জ্বালিয়েই বললো কথা টা)

জেরিন রেগে অন্য পাসে দাড়ালো আমি ওনার একপাশে দাড়ালাম আর মামনি এক পাসে,, উনি কেক কেটে আগে মামনি কে খাইয়ে দিলো তারপর আমাকে,,, ব্যাপার টা আমার কাছে খুব ভালো লাগলো,, কিন্তু তবুও মন খারাপ উনি কেনো বললো না আর ওনাকে বেবি বলছে এটা উনি শুনে না ,,,আর এই শাকচুন্নি (জেরিনের দিকে তাকিয়ে) কে রে তুই কোন জন্মের আমার স্বামী তোর ছেলে লাগে যে বেবি বেবি করছিস যত্ত সব ঢং,,,(মনে মনে বললাম)

আমি মামনির সঙ্গে দাড়িয়ে আছি তখনি একটা মহিলা আর সঙ্গে একটা মেয়ে এলো অনেক সুন্দর মেয়েটা আমার বড়ো হবে দেখে মনে হচ্ছে,,,,

“ভাবি কামন আছো , (মামনি ওই মহিলা কে উদ্দেশ্য করে বললো)

“আলহামদুলিল্লাহ ননদী,, তো এই কি আমাদের মাহিরের বউ,,,(মহিলা টা)

“হ্যাঁ মিহু এটা হচ্ছে আমার ভাবি রকেয়া তোমার মামী শাশুড়ি আর এই এটা হচ্ছে ইরু তোমার ননদ,,

“আসসালমুয়ালাইকুম মামী,,,(মামী শাশুড়ি বলে কথা সালাম তো দিতেই হবে)

“ওয়ায়কুম আসসালাম মা সুখী হও,,, মাহিরা অনেক সুন্দর বউ পেয়েছিস তুই,,,,,আমাদের আয়ন টার জন্যে যে কামন যে কামন বউ পাবো কে জানে,, কিন্তু আমি শান্ত শিষ্ট ভদ্র একটা বউ নিয়ে আসবো যাতে বড়ো দের মুখের ওপর কথা না বলতে পারে,,,,

মামী এই কথা গুলা বলছিলো তখনি নিপু পাস দিয়ে যেতে লেগে শুনে এই কথা গুলা ,,তখন নিপু বলে উঠে,,,

“আণ্টি একটা কাজ করবে ,,কথা বলতে পারে না বোবা এমন মেয়ে খুঁজে বিয়ে দিন আপনার ছেলের,,,,,,

“এই মেয়ে কে তুমি বড়দের মুখের ওপর কথা বলো,, বেয়াদোপ কোথাকার,,,(মামী)

“ঠিক ই তো বললাম আণ্টি এমন মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলে আপনার সব ইচ্ছা পূরণ হবে ,,,আচ্ছা বাই আণ্টি,,,(এই বলে চলে গেলো,,এই দিকে মামী রেগে বলে উঠে)

“কে এই মেয়ে কতো অসভ্য দেখেছো ছি ছি যার ঘরের বউ হয়ে যাবে জ্বালিয়ে মারবে সবকে,,,

“মামী ওর আমি মাফ চায়ছি বুঝতে পারে নি ও,,,(বাপরে এই নিপু টাকে নিয়েও পারি না কি দরকার ছিলো এমন বলার,,)

মাহিরের আম্মু আর মামা দুই ভাই বোন,, মামী মামা গ্রামে থাকে তাদের একটা ছেলে আয়ন আর একটা মেয়ে ইরু,,দুইজনে দেখতে মাশাআল্লাহ ,, ইরু এবার অনার্স প্রথম বর্ষে,, আর আয়ন জব করে,,,, বার্থডে তে আয়ন আসতে পারেনি কাজের জন্য,,,,,

।।

“তুই হঠাৎ মিহু কে বিয়ে করলি যে,, আমরা তো জানতাম না তুই মিহুর সঙ্গে রিলেশনে ছিলিস?,(আবির মাহির কে প্রশ্ন করলো)

“কে বললো তোকে আমি মিহুর সঙ্গে রিলেশন ছিলাম,,,,তুই খুব ভালো করে জানিস এই সব বিয়ে লাভ আমি বিশ্বাস করি না ,,,

“তাহলে বিয়ে কেনো করলি?

তারপর মাহির এক এক করে সব বলে আবির কে আবির শুনে অবাক,,

“তারমানে মিহু তোর সঙ্গে পালিয়ে আসে নি রোহানের সঙ্গে পালাবে বলে কাজী অফিসে গেছে,,?

“হুম,,, কিন্তু এই মেয়ে অনেক আলাদা আবির,, এর কাছে বেশি থাকলে আমি দুর্বল হয়ে পড়ি,, মিহুর চোখে ফেসে এক অন্য রকম মায়া আছে যা সব সময় আমাকে টানে,,,,,(আনমনে বলে দিলো কথা গুলা মাহির)

“বন্ধু তুমি ফেসেছো,,,(মজা করে)

“হোয়াট!!! ফেসেছি মানে কি মাহির চৌধূরী কখনো কোনো মেয়ের প্রতি দূর্বল হবে না ,,, দরকার হলে আমি এই মেয়ের থেকে দূরে থাকবো আমি,,,

“বাহ বাহ মাহির চৌধূরী একটা মেয়ের মায়াই পড়ার ভয়ে দূরে দূরে থাকছে ব্রেকিং নিউজ,,,,,

“চুপ করবি তুই,,,

“আচ্ছা আমি চুপ,,,কিন্তু মাহির মিহু কে আমি ছোটো থেকে দেখছি অনেক ভালো মেয়ে,, অনেক কষ্ট সহ্য করেছে মেয়েটা,,পারলে একটু খুশি রাখার চেষ্টা করিস,,,,,(এই বলে আবির চলে যায়)

মাহির আবিরের কথা গুলা ভাবে আর মিহুর দিকে তাকায়,,, হেসে হেসে কথা বলছে তার ফ্রেন্ড দের সঙ্গে,,,,, মাহির মুচকি হেসে মিহুর কাছে যায়,,,

।।

আমি অধরা মাইশা নিপুর সঙ্গে কথা বলছি তখনি আমার পাশে এসে দাড়ালো মাহির,,

“হাই শালিকা রা,,,(ওনার এমন কোথায় আমি বেশ অবাক হলাম )

“হাই জিজু,, আপনার সঙ্গে কথা বলার খুব ইচ্ছা ছিলো,,, আমি মাইশা,,,

তারপর নিপু মাইশা আর উনি মিলে কি গল্প শুরু করলো আল্লাহ অধরা ও মাঝে মাঝে কথা বলছে,,আমাকে তো এরা চোখেই দেখে না আরে ভাই আমিও আছি এখানে আমাকে দেখিস না ,,, অনেক রাগ উঠছে উনি তো এমনই কিন্তু আমার ফ্রেন্ড রা তারা তো দেখবে আমাকে,,, কিছু ক্ষন গল্প করার পর নিপুর ফোন বেজে উঠলে সে এক্সিকিউমি বলে চলে গেলো কিছু দিন থেকে দেখছি নিপুর ফোন একটু বেশি ই আসছে কিন্তু আমাদের সামনে কথা বলে না অন্য কোথাও গিয়ে কথা বলে আসে,,,,,কিছুক্ষন পর নিপু আবার এসে গল্প জুড়ে দিল,,,,,, দুর আমি চলেই যায়,,,,,,এই ভেবে চলে যায়,,,,কিছু খন পর মাইশা নিপু আর মাহির ড্যান্স করলো,,, আল্লাহ য়ে আমি কি দেখছি উনি এতো সুন্দর ড্যান্স পারে,, ,,, ,, কিছুক্ষন পর কাপল ড্যান্স শুরু হয় ,,, মাইশা আমাকে টেনে ওনার পাসে দার করায়,,,মাইশা আয়ান,, আবির ইরু,, রোদ অধরা কে বলেছিল ড্যান্স করতে কিন্তু অধরার এটা পছন্দ না তাই করেনি রোদ বাধ্য হয়ে নিপু কে নিয়ে ড্যান্স শুরু করে,,,,

Jab jab tere paas main aaya, Ik sukoon mila
Jise main tha bhoolta aaya, Wo wajood mila
Jab aaye mausam gham ke, Tujhe yaad kiya

Ho…

Jab sehme tanhapan se, Tujhe yaad kiya
Hmm.dil… Sambhal ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu
Dil yahin ruk jaa zara
Phir mohabbat karne chala hai tu???

(মাহির এক পলকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে আর গানের তালে ড্যান্স করছি দুইজনে,,কেনো জানি গানের শব্দ গুলা আমাদের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে,,, )

Aisa kyun kar hua janu naa
Main janu naa o.o.
Dil sambhal ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu
Dil yahin ruk ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu????

Jis raah pe, hai ghar tera
Aksar wahan se, haan main hoon guzra
Shayad yahin dil mein raha
Tu mujh ko mil jaye, Kya pata…

Kya hai yeh silsala
Janu naa, Main janu naa
Dil sambhal ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu
Dil yahin ruk ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu????

(রোদ অধরার দিকে তাকিয়ে আছে,, রোদের চোখে অধরার ভালোবাসা পাওয়ার নেশা কিন্তু এই ভালোবাসা অধরার থেকে নেওয়া যে খুব কঠিন,,,,,,,)

Kuch bhi nahi Jab darmayaan
Phir kyun hai dil, tere hi khwaab bunta
Chaha ki de, tujhko bhula
Par yeh bhi mumkin ho na sakaa…
Kya hai yeh maamla, Janu naa
Main janu naa

Dil sambhal ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu
Dil yahin ruk ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu
Dil sambhal ja zara
Phir mohabbat karne chala hai tu?????????

(পুরো সং টাই ড্যান্স করলাম আমরা)

অনেক ভালোই ভালোই বার্থডে অনুষ্ঠান শেষ হলো,,,সব যে যার বাড়ি তে চলে গেলো,, শুধু মামী আর ইরু আপু থেকে গেলো,,,,কেক কাটার পর থেকে ওই জেরিন মেয়েটাকে দেখিনি আর,, তাতে আমার হুহ না দেখলেই ভালো ওই শাকচুন্নি কে,,, আমি ফ্রেস হয়ে সোফায় শুয়ে পরলাম,,,,,অনেক কাজ করেছি তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলাম,,,,,,,,,,

কিছুক্ষন পরে মাহির রুমে এসে দেখে মিহু ঘুমিয়ে পড়েছে মাহির ফ্রেশ হয়ে বেডে বসে,, বসে মিহুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে,,, একটু ভালো করে দেখে মিহু সিতে কাপছে,,,মাহির উঠে একটা কম্বল নিয়ে মিহু কে জড়িয়ে দেয়,,,,,তারপর মাহির ও গিয়ে শুয়ে পড়ে মাহির শুয়ে শুয়ে ভাবে,,,,, আমি কি সত্যি মিহুর প্রতি দুর্বল,, কিন্তু মেয়েরা তো ভালোবাসা বুঝে না তারা শুধু টাকা বোঝে,, কি দোষ করেছিল নিবিড় শুধু তো ভালোবেসে ছিলো কিন্তু তার পরিণাম কি হলো মৃত্যু,,,,, আমি ওই মেয়েকে ছাড়বো না আজ তিন বছর ধরে খুঁজে চলেছি কিন্তু পায়নি তবে আমি তোমাকে খুঁজে বের করবই মিস আলিশা,,, আমার কলিজা কে মৃত্যু দিয়ে তুমি সুখে সংসার করবে তা আমি কখনো হতে দিবো না,,,,,,

মাহির এই সব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আজ আমাদের বিয়ের ছয় মাস পূর্ণ হলো,,,এই ছয় মাসে উনি আমাকে আগের মত আর কথা বলেনি আর না ঝগরা করেছে,,,এক কথায় ইগনোর করে গেছে আমাকে অনেক রাত করে বাড়ি ফিরে আর অনেক সকালে চলে যায় ওনাকে দেখতেও ঠিক ভাবে পায়না এখন,,,,,,একদিন রাতে আমি স্টাডি করছিলাম তখনি উনি এলো অফিস থেকে,,এসে ফ্রেশ হয়ে বেডে বসে আজ অনেক দিন পর এতো জলদি বাড়ি ফিরলেন নয়তো আমি ঘুমিয়ে যায় তারপরে কখন আসে জানতেই পারি না,,,,,, আমি আয়ার চোখে দেখলাম উনি কি করছে ব্যাগ থেকে দুটো পেপার বার করে আমার কাছে এসে দাড়ালেন আমি আবার পড়ায় মন দিলাম ওনাকে দেখে,,, উনি বলে,,,

“এখানে সাইন করে দাও মিহু,,,(পেপার টা এগিয়ে)

“এগুলা আবার কিসের পেপার ?(বই এর দিকে তাকিয়ে)

উনি একটু চুপ থেকে বললেন,,,

“একটা তোমার ইউএসএ যাওয়ার জন্যে পাসপোর্ট তৈরি করার পেপার,,, আর একটা ডিভোর্সের জন্যে পেপার,,,আমি ওকিল এর সঙ্গে কথা বলেছি তিনি বলেছেন ডিভোর্স এর জন্য ছয় মাস আগে থেকে অ্যাপ্লাই করতে হবে,,, আমাদের বিয়ের কন্ট্রেক শেষ হতে এখনো ছয় মাস শেষ বাকি আছে ,, আর এই ছয় মাসে তোমার পাসপোর্ট ও হয়ে যাবে,,নাও এখন সাইন করে দাও,,,,,,,,(এক দমে সব কথা গুলা বলে থামলো মাহির)

আমি ওনার কথা শুনে যেনো পাথর হয়ে গেছি,,, উনি কি বলছে এসব তাহলে আমি যা ভাবতাম সব কিছু ভুল,, উনি আমাকে ভালোবাসেন না,,, কিন্তু এতো কেয়ার করতো কেনো,,, এই কইমাসে আমাকে ইগনোর করেছে ঠিক কিন্তু আমি খেয়েছি কি না মামনি আস্ক করতো,,, রাতে কম্বল নিয়ে না ঘুমালে উনি দিয়ে দিতো,,,,,এগুলা কি ছিলো তাহলে,,, হোয়তো দয়া ছিলো,,,,ওনার ঠিক ই মনে আছে সব কিছু আমি ই ভুলে গেছিলাম সব,,,(আমি এসব ভাবছিলাম তখন উনি আবার বললেন)

“কি হলো সাইন করো,,,

“হুম,,, (এই বলে সাইন করে দিলাম আমার হাত কাপছে সব কিছু ঝাপসা ঝাপসা লাগছে দেখতে,,)

সাইন করে আমি ওয়াষ রুমে চলে গেলাম,,,অনেক কান্না পাচ্ছে আমার ,,,, নিজেকে ঠিক রাখতে হবে আমাকে ভেঙ্গে পড়লে একদম চলবে না,,,,,নিজেকে সামলে নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম ওনার দিকে না তাকিয়ে সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম,,,,,,,

#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_10
.
.
.
“কি হলো সাইন করো,,,

“হুম,,, (এই বলে সাইন করে দিলাম আমার হাত কাপছে সব কিছু ঝাপসা ঝাপসা লাগছে দেখতে,,)

সাইন করে আমি ওয়াষ রুমে চলে গেলাম,,,অনেক কান্না পাচ্ছে আমার ,,,, নিজেকে ঠিক রাখতে হবে আমাকে ভেঙ্গে পড়লে একদম চলবে না,,,,,নিজেকে সামলে নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম ওনার দিকে না তাকিয়ে সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম,,,,,,,

।।।।

আজ আমি ওনার আগে উঠে পড়েছি তাকিয়ে দেখি উনি ঘুমায় এখনও,,, আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম,, মামনি চা খাচ্ছে আর খবরের কাগজ পড়ছে ,,আমি গিয়ে চাইর টেনে বসলাম,,,,,আমার আজ কথা বলতে মোটেও ভালো লাগছে না তাই চুপ করে আছি,,,, মামনি খবরের কাগজ রেখে বলে,,,

“কিছু হয়েছে মিহু?

“কই না তো মামনি কি হবে,,(মুচকি হেসে মামনি কে কিছু বলা যাবে না )

“ভালোবাসিস আমার ছেলে কে?

সকাল সকাল মামনির এমন কথা শুনে অনেক অবাক হলাম,, কি বলছে এসব মামনি,,,

“মামনি এসব কি বলছো ভালোবাসি বলে তো বিয়ে করেছি তোমার ছেলে কে,,,,

“হুমম আমি খুব ভালো করে জানি মিহু আমাকে শিখাস না,,,, আর তোদের বিয়ে করা টাও যে কি কারণে সেটাও আমি যানি মিহু,,,,আর আমি এটাও যানি কাল রাতে তোকে ডিভোর্স এর জন্য সাইন করায়ছে,,,,উকিল আমাকে সব বলেছে ফোন করে,,,,

মামনির কথা শুনে অনেক অবাক হলাম তারমানে মামনি সব জানতো,, আর আমরা নাটক করে এসছি ওনার সামনে এতো দিন,,,,,আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না মামনি কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম,,,,

“কান্না করে কি কোনো লাব আছে মিহু?? তুই কান্না করলে কি সব ঠিক হয়ে যাবে?? আচ্ছা তার আগে তুই এটা বল আমার ছেলে কে ভালোবাসিস?(আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো মামনি)

“যানি না মামনি ভালোবাসি কি না কিন্তু ওনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না আমি,,, উনি আমার সঙ্গে তামন কথা বলে না ঠিক কিন্তু আমার খেয়াল রাখে অনেক সব কিছু তে আমার সঙ্গে থাকে,,,উনি অন্য মেয়ের সঙ্গে কথা বললে আমার ভালো লাগে না ,, ওনাকে হারাবার ভয় সব সময় আমার পিছনে থাকে,,, কিন্তু উনি তো আমাকে ভালোবাসে না ,, আর না আমাকে চায়,, তাই তো কাল রাতে এমন করলো,,,,,(কান্না করছি আর বলছি)

মামনি আমাকে ভালো করে বসিয়ে চোঁখের জল মুছে দেয়,,,আর বলে,,

“একদম কান্না করবি না,,, এখন কার যুগে নিজের মনের কথা মনেই রেখে কষ্ট পাওয়া কে বোকামি ছাড়া কিছু ই বলে না মিহু,,, যেটা তোর সেটা তুই নিজে আসিল করে নে,,, মাঝ রাস্তায় ছেরে দিসনা,,, নয়তো অন্য কেউ এসে নিয়ে চলে যাবে,,,,,,

“মামনি তুমি ঠিক কি বুঝাতে চায়ছো বলো তো,,,(হেঁচকি টেনে চোঁখের পানি মুছে)

“তুই নিশ্চয় জানিস তোকে মাহির বিয়ে কেনো করেছে,,,

“হুমম তার টাকা কোম্পানি সম্পত্তি বাঁচানোর জন্যে,,,

“হুমম আর তুই জানিস এমন টা কেনো করতে হয়েছে ,,আচ্ছা আমি বলছি,,, মাহির যখন ছোটো ছিল তখন তার বাবা মারা যায়,, মাহিরের বাবা তার ব্যাবসার জন্যে অনেক টাকা লোন নিয়েছিল ব্যাংক থেকে,, মাহিরের বাবার মৃত্যুর পর আমার যা কিছু ছিল সব সরকারে নিয়ে নেয়,,, আমাদের বাড়ি টাও চলে যায়,, মাহির কে অনেক কষ্ট করে বড়ো করেছি পড়াশোনা করায়ছি,,,আমি মাস্টার্স কমপ্লিট করেছিলাম তাই একটা জব করতাম,,, মাহিরের ছোটো বেলার একটা বন্ধু ছিলো নাম নিবিড়,,, মাহির একদিন তার বাবার কবরের সামনে বসে কান্না করছিল তখন নিবিড় ও সেখানে আসে,,, মাহির কে কান্না করতে দেখে ওকে বুঝিয়েছিল একটা ছোটো বাচ্চা হয়ে আরেক টা বাচ্চা কে অনেক সুন্দর করে বুঝিয়ে ছিলো,,, নিবিড়ের মা নেই বাবার সঙ্গে থাকে,,, তারপর থেকে ওদের দুজনের ফ্রেন্ডশিপ হয়,,একসঙ্গে বড়ো হয় দুজন ,,,একে অপরের প্রাণ ছিলো দুইজন,,, মাহিরের যখন ১৯ বছর তখন নিবিড়ের বাবার সাহায্যে ব্যাবসায় নামে,,এটা আমি জানতাম না,,,, তার ঠিক দুই বছরের মাথায় মাহির অনেক বড়ো বিজনেস ম্যান হয়ে যায়,,, একে একে আমাদের সব কিছু ফিরিয়ে আনে,, আমাদের এই বাড়ি টাও,,, আমার বার্থডে তে আমাকে এই বাড়িতে নিয়ে আসে,,, এসব কিছু আমার নামে করে দেয় মাহির,,, মাহিরের এতো এগিয়ে যাওয়ার পিছনে নিবিড়ের বাবার হাত আছে,,,,,,, উনি অনেক সাহায্য করেছেন,,,, কিন্তু একটা ঝড় এসে সব কিছু উলোট পালোট করে দিলো,,,, (শেষের কথা টা বলে থামলো মামনি,,, কি এমন হয়েছে তা জানার আগ্রহ নিয়ে বললাম)

“কি এমন হয়েছিলো মামনি,,,,

“নিবিড় একটা মেয়েকে ভালোবাসতো সেটা মাহির জানতো না,,, আসলে মাহির নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এতো ব্যাস্ত ছিলো যে নিবিড় কে সময় দিতে পারতো না বেশি,, সপ্তাহে একদিন ওরা দেখা করতো অনেক মজা করতো,,,,,,,, সেদিন ও মাহির নিবিড়ের জন্যে রাস্তার পাসে ওয়েট করছিলো,,, তখন নিবিড় আসে,, তবে নিবিড় রাস্তার অন্য পাসে ছিলো,, মাহির ওকে দেখতে পেয়ে বলে সাবধানে আয়,,,, নিবিড় ও মুচকি হেসে আগাতে লাগে,,, কিন্তু মাঝ রাস্তায় এসে থেমে যায়,, পিছনে একটা ট্র্যাক আসছিল,, মাহির এতো করে চিৎকার করে বলেছিল সরে যা নিবিড় কিন্তু নিবিড় সরে নি ভালো থাকিস নিজের খেয়াল রাখিস এই ছিল তার শেষ কথা তারপরে অ্যাকসিডেন্ট হয়ে যায়,,,, মাহির চুপ করে গেছিলো কিছু বলেনি আর না চোখ থেকে এক ফোঁটা জল করেছিল,,,,,,,

“কিন্তু মামনি নিবিড় ভাইয়া এমন কেনো করলো?

” এটাই সবার প্রশ্ন নিবিড় এমন কেনো করলো,,, কিছু দিন পর জানতে পারি,,, নিবিড় যেই মেয়ে টাকে ভালোবাসতো ওই মেয়ের বাবা মা বড়ো লোকের ছেলে পেয়ে বিয়ে ঠিক করে দেয়,,, আর মেয়েটাও রাজি হয়ে যায় একবারও নিবিড়ের কথা ভাবে নি,,,, নিবিড় এটা নিতে না পেরে সুইসাইড করে,,,,,,,,মাহির এটা জানার পর সব মেয়ের প্রতি তার ঘৃণা জন্মে যায়,,, বিয়ে করবে না কসম করে,,, কিন্তু বয়সও হচ্ছিল,, বিয়ে তো দিতেই হবে,, কিন্তু কোনো কিছু করেও রাজি করাতে পারিনি,,, তাই আমি উইল তৈরি করি উকিল কে দিয়ে,, যেহেতু সব কিছু আমার নামে করা তাই এটা করতে আমার অসুবিধা হয় নি,,,তবে চালাক আমার ছেলে এক বছরের কন্ট্রাক্ট করে তোকে বিয়ে করে আনে,,,,,,,,

আমি সব কথা শুনে চুপ করে আছি কিছু বলার ভাষায় নেই আমার কাছে,,,মামনি আবার বলে উঠলো,,,,,

“এখন তুই ভাব তুই মাহিরের একটা ভুলের জন্যে ওকে ছেড়ে দিবি,, ও যেই ভুল ধারণা নিয়ে ঘুরছে যে সব মেয়ে খারাপ হয় সেটা তুই ভাঙতে পারবি না,,? ওর মনে ভালোবাসা জাগাতে পারবি না? আমি তোকে দেখেছি তুই অনেক ভালোবাসিস আমার ছেলে কে তোর চোখে ভালোবাসা দেখেছি আমি,, এটাই তুই মাহির কে বুঝাতে পারবি না?? দেখ মিহু একটা মেয়ে চায়লে সব কিছু করতে পারে,,,তুইও ভেবে দেখ ব্যাপার টা,,,,,,

মামনির কথা গুলা আমাকে অনেক ভাবাচ্ছে,,, আমার এখন কি করা উচিত,, মামনি যা বলছে তাই করবো নাকি উনি যা করছে তা মেনে নিবো,,,,কিন্তু সত্যি তো এটাই আমি এই ছয় মাসে ওনাকে ভালোবেসে ফেলেছি,, ওনাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না,,, ভাব মিহু ভাব ,,, তুই যদি তোর চৌধূরী সাহেব কে ছেরে চলে যাস তাহলে ওই শাকচুন্নি জেরিন গায়ে পরা মেয়েটা তোর চৌধূরী সাহেব কে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করে নিবে,,,, না না না আমি এটা কখনো হতে দিবো না,,, আমার ওনাকে চায় ওনার ভুল ধারণা ভাঙতেই হবে আমাকে,,,,এসবে মামনি আমাকে সাহায্য করতে পারবে,,,,,,,আমি মামনির কাছে গিয়ে বলি,,,,

“মামনি আমার এখন কি করতে হবে তুমি বলে দাও না,,, কি করে ওনাকে বুঝাবো আমি ওনাকে ভালোবাসি,,,,(আমার কথায় মামনি অনেক খুশি হলো মুখ দেখেই বুঝতে পারছি)

তারপর মামনি আমাকে সব কিছু বুঝিয়ে দিলো আমিও রেডি,,, মামনি কে একটা উম্মাহ দিয়ে দিলাম ,,আরে আমার শাশুড়ি মা টার কতো বুদ্ধি রে,,,,

“বুঝেছিস তো সব কিছু?

“হ্যাঁ মামনি পানির মতো,,,,,

” কি পানির মতো বুঝেছো আর আম্মু তুমি কি বুঝালা ওকে,,,(ওপর থেকে নামতে নামতে বলছে মাহির)

“সেটা তোর জানা লাগবে না এটা আমাদের মা মেয়ের কথা,,,

“বাহ বাহ আমি তাহলে পর হয়ে গেলাম,,,

“আসছে হিংসুটে,,,(বলে মুখ ভেংচি দিলাম)

।।

উনি নাস্তা করে বেরিয়ে যেতে লাগে তখনি আমি বলি,,,

“ওয়েট আমিও যাবো আপনার সঙ্গে,,,

“তুমি কোথায় যাবে আজ তো তোমার কলেজ নেই,,(ব্রু কুচকে তাকিয়ে)

“আমি বলেছি নাকি আমি কলেজ যাবো,,,আমি আপনার সঙ্গে যাবো,,,

“মানে মাথা খারাপ হয়েছে? আমি কাজে যাচ্ছি তুমি আমার সঙ্গে গিয়ে কি করবে,,,?

“আপনার কাজ শেষ হলে আমরা ঘুরতে যাবো ফুচকা খাবো,, অনেক ঘুরবো,,,,,

“এসব ফালতু কাজ করার আমার কাছে সময় নেই,,আমার আরো কাজ আছে,,,

“আপনি যদি আমার কথা না শুনেন তাহলে আমি মামনি কে আমাদের ডিলের কথা সব বলে দিবো,,,(আস্তে করে ওনার কানের কাছে বললাম)

“মিহু বাড়াবাড়ি হচ্ছে না(রেগে)

” সে যায় ভাবেন আমি যাবো ব্যাস যাবো,,, নয়তো কি করবো বললাম তো,,,,

“ওকে যাও রেডি হয়ে আসো,,,(বাধ্য হয়ে)

তারপর আমি মনের খুশিতে রেডি হতে চলে গেলাম,,,এতো দিনে আমি মামনির কাছে শাড়ি পরা শিকে নিয়েছি তাই একটা ব্ল্যাক সিল্কের শাড়ি পরে নিলাম,,,চুল ছেরে নিলাম হালকা একটু মেক আপ,,,ঠোঁটে গাঢ় রেড লিপস্টিক,,,,রেডি হয়ে ওনার কাছে চলে গেলাম উনি বাইরে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,, আমাকে দেখে হা করে তাকালো,,, আমি মুখের কাছে তুরি বাজাতেই চমকে উঠলো উনি,,,তারপর বললাম চলুন ,,, আমি গাড়িতে বসে পরলাম উনিও বসে ড্রাইভ করতে লাগে,,,,,উনি ড্রাইভ করছে আর বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে,,,

“আমাকে পরে দেখবেন আপনারই বউ আমি অন্য কারো না এখন ভালো করে ড্রাইভ করুন নয়তো অ্যাকসিডেন্ট হয়ে যাবে,, তখন আমার আর আপনার বেবি যে অনাথ হয়ে যাবে,,,,

আমার কথা শুনে উনি যোরে গাড়ি ব্রেক করলো,,আমার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

“আমাদের বেবি মানে?(অবাক হয়ে)

“আরে আমাদের তো বেবি হবেই একদিন তখন কার কথা বলি,,,আচ্ছা আপনি বুঝবেন না এখন গাড়ি চালান তো বাপু,,,,

উনি আমার দিকে একটু তাকিয়ে থেকে আবার গাড়ি চালাতে লাগে,,,,কিছু খন পরে একটা যায় গায় গাড়ি থামিয়ে ,,আমাকে গাড়ি তে থাকতে বলেই উনি চলে গেলেন একটা ফাইল নিয়ে,,,,কিছুক্ষন পরে উনি এসে আবার গাড়ি চালাতে লাগে,, একটা রেস্টরেন্টে যায় সেখানে কিছু খেয়ে আবার অন্য যায় গা যায় সারাদিন ঘুরা ঘুরি করি আমরা,,, তারপর ফুচকা খায় ওনাকেও খাওয়ায় উনি দুটো খেয়ে আর খেতে পারে নি আমি পাঁচ প্লেট শেষ করে দি,,,,,,ফুচকা খাওয়ার পর আমরা নদীর দিকে ঘুরতে যায়,,,উনি আমার থেকে একটু দূরে দূরে হাঁটছে,,, আমি কাছে গিয়ে ওনার হাত ধরে হাঁটতে লাগি,,,,উনি অবাক হলেও কিছু বলে না,,,,,কিছুক্ষন যেতেই একটু দূরে দেখি রোহান আর একটা মেয়ে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here