THE_BOOK #পর্ব_২০,২১

0
303

#THE_BOOK
#পর্ব_২০,২১
#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)
২০

রাতের আঁধার কেটে আলো এসে পড়েছে পৃথিবীর বুকে। ঘন গাছগাছালির ফাক দিয়ে সরু হয়ে সূর্যের আলো এসে রা’দের মুখের উপর পড়তেছে। সাথে সাথে রা’দের চোখটা কুঁচকে এলো। টিপটিপ করে চোখের পাতা খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু পারছে না। এতোই ভারি হয়ে এসেছে চোখের পাতা যে খোলাই যাচ্ছে না। অনেক কষ্টে চোখ খুলতে সক্ষম হলো। দেখলো যে উপর হয়ে পাতার স্তুপের মধ্যে শুয়ে আছে। চোখের সামনে সবটাই ঝাঁপসা দেখছে। রা’দ অনেক কষ্টে উঠে বসলো। মাথায় প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছে তার তাই দুহাতে মাথা চেপে ধরে। মাথায় আঘাত খাওয়ার কারণে অনেকখানি কেটে গেছে। রক্ত ও বেরিয়েছে কিন্তু এখন সেই রক্ত শুকিয়ে গেছে। হাতপা ও নানা জায়গায় ছড়ে গেছে। রা’দ মাথায় হাত চেপেই আকাশের দিকে তাকালো। ঘন গাছপালার কারণে পুরো আকাশ দেখা যাচ্ছে না। একটু একটু দেখা যাচ্ছে। রা’দ বুঝতে পারলো না যে ঠিক কত উঁচু থেকে ও নিচে পড়েছে?? কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছে যে এই গাছপালা গুলো আর এই পাতার স্তুপের কারণেই ও বেঁচে গেছে।

মাটিতে হাতের ভর দিয়ে কোনমতে উঠে দাঁড়ালো রা’দ। বুঝতে পারলো যে পায়ে ব্যথা অনুভব হচ্ছে তারমানে পায়ে ও চোট লেগেছে। রা’দ খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে লাগলো। হাঁটতে কষ্ট হওয়াতে একটা শুকনো মোটা ডাল কুড়িয়ে নিয়ে লাঠি বানালো। তারপর লাঠির সাহায্যে হাঁটতে লাগলো। কিন্তু এত বড় জঙ্গল যে এখান থেকে বের হতে গেলে দিন ফুরিয়ে রাত হয়ে যাবে। তবুও রা’দ হাঁটছে আর বলছে”অভিনব পূর্ণাশা আর লাবন্য!! ওদের তো কালকে ভাম্পায়ারটা নিয়ে গেলো। ওরা কি আদৌ বেঁচে আছে?? নাকি ওই ভাম্পায়ারটা মেরে ফেলেছে??নাহ ওদের কিছু হয়নি আমি এসব কি ভাবছি?? ওদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। কিন্তু কিভাবে বের করব?? আমি এই অবস্থায় না পারছি ঠিকমতো হাঁটতে না পারছি ঠিকমতো দাঁড়াতে। এভাবে তো ওদের খোঁজা সম্ভব নয়।
আর এই জঙ্গলটা ও ঠিকমতো লাগছেনা। কি জানি হিংস্র কোন জীবজন্তু আছে কি না??”

রা’দ এসব ভাবছে আর হাঁটছে। কিছুদূর গিয়ে রা’দ বসে পড়লো আর পারছে না সে। হাঁটতে ভিশন কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ওকে যে উঠতেই হবে।এই ঘন জঙ্গল থেকে বের হতেই হবে না হলে যে বিপদ হতে পারে। রা’দ আবার উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটতে লাগলো। একটু গিয়ে আর পারলো না ঠাস করে মাটিতে পড়ে গেল। হাত পা মাথায় যন্ত্রনা করছে প্রচুর। চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ল রা’দ। চোখজোড়া আপনাআপনি বন্ধ হয়ে এলো। চোখ বন্ধ করেই ওর তিন বন্ধুর কথা ভাবতে লাগলো। ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়লো।

যখন রা’দ চোখ মেলে তাকালো ততক্ষণে রাত হয়ে গেছে। রা’দ চোখ খুলে অবাক হলো। এইতো একটু আগেই ঘুমিয়েছিল এর মধ্যেই রাত হয়ে গেল কিভাবে??দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক রাত হয়ে গেছে। আকাশে গোলাকার চমৎকার চাঁদ উঠেছে। চাঁদের আলো সারা জঙ্গলে আলো ফেলছে। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সবকিছু। রা’দ আবার উঠে হাঁটতে লাগলো। দিনের বেলায় যেমনতেমন কিন্তু রাতের বেলায় জঙ্গলটা আরো ভুতুড়ে লাগছে। শুকনো পাতার উপর পা পড়তেই খসখস আওয়াজ হচ্ছে। এই খসখস আওয়াজ টা দিনের থেকে রাতে আরো তীব্র হচ্ছে। রা’দের কেমন যেন ভয় ভয় করছে। মনে হচ্ছে এক দৌড়ে জঙ্গল থেকে বের হয়ে যেতে। কিন্তু এতো বড় জঙ্গল তাছাড়া পায়ে ব্যথা। জঙ্গল থেকে বের হওয়া অসম্ভব।

রা’দের ভয়টা আরো বেড়ে গেল কিছু একটার আওয়াজ শুনে। কোন পশুর গোঙানির আওয়াজ এটা। হয়তো আশপাশে আছে যদি এখানে এসে পড়ে তবে ওর কি হবে??রা’দ হাটা বন্ধ করে দিলো। পায়ের আওয়াজ শুনে যদি এদিকে চলে আসে?? কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না কিছুক্ষণ পরেই বড়বড় পাঁচটা হায়না ওর সামনে এসে দাঁড়ালো। রা’দ যা ভেবেছিল সেটাই হয়েছে। বুকটা ধক করে উঠল রা’দের। এখন এদের হাত থেকে বাঁচবে কিভাবে?? চাঁদের আলোয় হায়নাগুলোর হিংস্র রক্তচক্ষু গুলো দেখা যাচ্ছে। লোভাতুর দৃষ্টিতে রা’দের দিকে তাকিয়ে আছে ওরা। দেখে মনে হচ্ছে কতদিন না খেয়ে আছে। তাই আজকে ওরা শিকারকে হাতছাড়া করবে না। ওদের দেখে মনে হচ্ছে আজকে রা’দকে দিয়ে ওদের তৃপ্তি মেটাবে।

রা’দ হায়নাগুলো দেখে দুকদম পিছিয়ে গেলো। শুস্ক ঠোঁটজোড়া জিভ দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে তাকালো। হায়নাগুলো জিহ্বা বার করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। লালা ঝরছে জিহ্বা থেকে। এতেই বোঝা যায় যে ওরা কতটা ক্ষুধার্ত। রা’দ‌ কি করবে বুঝতে পারছে না। হাতের সামান্য লাঠি দিয়ে এদের সাথে পারা যাবে না। দৌড়াতে ও পারবে না এই অবস্থায় তবু ও শেষ চেষ্টা তো করতে হবে। রা’দ হাতের লাঠি টা উঁচু করে ধরতেই একটা হায়না লাফিয়ে রা’দকে আক্রমণ করলো। রা’দ সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হায়নাটা ওকে কামড় দিতে চাইছে কিন্তু পারছে না। রা’দ দুহাতে হায়নটাটাকে আটকানোর চেষ্টা করতেছে। কিন্তু এতবড় হায়নার সাথে পেরে উঠছে না রা’দ ওদিকে বাকিগুলো ও ওদের দিকে আসছে।

ঠিক তখনই একটা সরু ধারালো তীর এসে হায়নার মাথায় লাগলো। তীরটা হায়নার কপাল ভেদ করে মাথার অপরদিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। হায়নাটা মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গড়াগড়ি করতে লাগলো। রা’দ এখন ও শুয়ে আছে ওঠার শক্তি নেই তার। কে তাকে এভাবে বাঁচালো সেটাও পিছন ফিরে দেখতে পারছে না। বাকি হায়নাগুলো একটু পিছিয়ে গেলো। সাথে সাথে দুটো হায়নার বুক ভেদ করে দুটো তীর ঢুকে গেল। তারাও মাটিতে লুটিয়ে পড়ল আর বাকি দুটো দৌড়ে পালালো। রা’দ এসব দেখে অবাক হলো কিন্তু কে করলো এগুলো??রা’দ ঘাড় ঘোড়ানোর চেষ্টা করলো কিন্তু সফল হলো না।

মাটিতে শুয়ে রা’দ নিষ্পলক হায়নাগুলোর মৃতদেহের দিকে তাকিয়ে রইল। রা’দের মনে হচ্ছে কেউ এদিকে আসছে কিন্তু ঘাড় ঘোড়ানোর শক্তি তার নেই। পাতার খসখস আওয়াজ আসছে তার মানে সেই ব্যক্তিটি এদিকেই আসছে। কিন্তু রা’দ এবার আর চোখ খোলা রাখতে পারলো না। এতো কিছু গেছে ওর উপর দিয়ে যে শরীর আর তার সামাল দিতে পারছে না। জ্ঞান হারায় রা’দ চোখজোড়া বন্ধ করার সময় পূর্ণাশা লাবন্য আর অভিনবের চেহারা ভেসে উঠলো। মন বলছে ওরা এখন কোথায়?? ওদের কাছে যাওয়াটা যে খুব জরুরি।

………………….

কাঠের জানালার ফাঁক দিয়ে সূর্যের তীক্ষ্ণ রশ্মি রা’দের মুখের উপর পড়তেই ঘুমটা ভেঙে গেল। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো কাঠের তৈরি একটা ছোটখাটো ঘরের একটা রুমে চৌকির উপর শুয়ে আছে। মাথায় হাত চেপে উঠে বসল সে। মাথায় হাত দিতেই বুঝলো যে মাথায় ব্যান্ডেজ করা। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো কাপড়ের ব্যান্ডেজ করা। রা’দ পুরো রুমে চোখ বুলায়। রুমের ভিতর তেমন কিছু নেই। একটা কাঠের টেবিল তাতে কিছু আসবাবপত্র। এক কোণায় কিছু খড়ের স্তুপ। আর মেঝেতে কিছু থালাবাসন হাঁড়িপাতিল রাখা। রা’দ মনে মনে ভাবছে ও এখানে কিভাবে এলো?? তাহলে কি যে ওকে বাঁচিয়েছে সে-ই ওকে এখানে নিয়ে এলো??
রা’দ চৌকি থেকে উঠে দাঁড়ালো। পায়ে এখনও ব্যথা রয়েছে আর মাথায়ও। রা’দ আস্তে আস্তে বাইরে এলো। ঘরটা বাঁশের খুঁটির ভরে মাটি থেকে উপরে বানানো তাই কাঠের সিঁড়ি বেয়ে মাটিতে নেমে আসলো সে। কিছু একটার আওয়াজ শুনে খোড়াতে খোড়াতে সেদিকে গেল। দেখলো একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে পেছন ফিরে। মুখটা দেখা যাচ্ছে না। পরনে তার লম্বা সাদা রঙের অদ্ভুত পোশাক যা আজ পর্যন্ত রা’দ কখনো দেখেনি। মেয়েটার চুলগুলো কোমড় ছাড়িয়ে পা অবধি পৌঁছে গেছে।

মেয়েটার মুখ দেখতে ইচ্ছে করছে রা’দের। কিন্তু ডাকতে পারছে না। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে যেন। মেয়েটার পাশেই একটা ময়ূর দাঁড়িয়ে আছে। পেখম তার ঝাপটানো,কারণ ময়ূর তখনই পেখম মেলে যখন সে আকাশে মেঘ দেখতে পায়। মেঘ দেখলেই সে পেখম মেলে মনের সুখে নৃত্য করে। মেয়েটার হাতে একটা তীর ধনুক। সে তার নিশানা করলো দূরের একটি গাছের দিকে যেখানে একটি ক্রস চিহ্ন দেওয়া। তীর ছোঁড়ার সাথে সাথে সেটা গাছে গিয়ে আঘাত হানে। একদম সঠিক নিশানায় তীর মেরেছে সে। হঠাৎ ময়ূরটা বিচলিত হয়ে মুখ দিয়ে অদ্ভুত শব্দ বের করলো। মূলত সে রা’দের উপস্থিতি টের পেয়ে এমনটা করছে। মেয়েটা সাথে সাথে পিছনে ঘুরে তাকালো রা’দের দিকে।

রা’দ অবাক হয়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক পড়ছেই না তার। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না সে। এ কি করে সম্ভব??এই মেয়েটাই প্রতিনিয়ত রা’দের স্বপ্নে আসতো কিন্তু কখনোই ধরা দেয়নি। আজকে সেই মেয়ে বাস্তবে এসে ধরা দিলো!!আচ্ছা এটা কি রা’দের চোখের ভুল?? কিন্তু স্বপ্নে আসা মেয়েটা আর এই মেয়েটা হুবুহু একই রকম দেখতে। এতোটা মিল হওয়া তো সম্ভব না। সেই সাদা পোশাক, লম্বা চুল, গাঢ় বাদামী রঙের চোখের মণিজোড়া আর চোখে গাঢ় করে কাজল দেওয়া। রা’দের একটুও ভুল হচ্ছে না। এই সেই মেয়ে। মেয়েটার গায়ের রং এতোই সাদা যেন শরীর থেকে আলো ঝড়ছে। চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে তার। মুহূর্তেই শরীরে শিহরণ বয়ে গেল রা’দের। স্বপ্নে দেখা মেয়েটা যে এভাবে ওকে ধরা দেবে তা ও ভাবতেই পারেনি।
মেয়েটা এতক্ষণ অদ্ভুত দৃষ্টিতে রা’দকে দেখছিলো,সে বলল,”আপনি এখন ঠিক আছেন???”

কন্ঠটা এতটাই মধুর যে রা’দের কন্ঠনালি ধরে এলো। কথা বলতেই পারলো না। মেয়েটা হাতের ধনুকটা গাছের সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে রা’দের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল,”আপনার শরীর ঠিক নেই। এভাবে উঠে আসা উচিৎ হয়নি আপনার। চলুন ভেতরে চলুন।”
মেয়েটার কথাগুলো রা’দের কানে ছন্দের মতো বাজতে লাগলো। মেয়েটা রা’দের দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,”একা যেতে পারবেন না আমার হাত ধরুন।”

রা’দ কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না যে মেয়েটা ওর সামনে। স্বপ্নে সে এভাবেই হাত বাড়িয়ে দিতো কিন্তু রা’দ ধরতে পারতো না। এখনও কি সেই একই ঘটনা ঘটবে??রা’দ হাতটা ধরতে গেলে সে কি পালিয়ে যাবে??রা’দ তার ঠোঁট জিভ দিয়ে হালকা ভিজিয়ে নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো। কাঁপা কাঁপা হাতে হাত ধরলো মেয়েটার। সাথে সাথে যেন বিদ্যুৎ বয়ে গেল ওর সর্বাঙ্গে।

চৌকিতে রা’দকে বসিয়ে দিয়ে সে কাঠের টেবিলটার দিকে এগিয়ে গেল। সেখানে একটা বাটি রাখা। বাটিটা নিয়ে সে রা’দের মুখোমুখি হয়ে বসলো তারপর কাপড়ের ব্যান্ডেজ খুলতে খুলতে বলল,”কাল রাতে আপনি আঘাত পেয়েছিলেন তাই আমি এখানে নিয়ে এসেছি। এভাবে আপনি বাড়িতে ফিরতেও পারবেন না। কিছুদিন এখানে থেকে সুস্থ হন তারপর না হয় ফিরে যাবেন।”

রা’দ এখনও ধ্যানের ভেতরে আছে। বুঝতে পারছে না কিছু। মেয়েটা আবার বলে ওঠে, “আপনি এতো রাতে এই জঙ্গলে কিভাবে এলেন??”

রা’দ অন্যমনস্ক হয়ে বলে,”হু??? আপনার নাম???”
রা’দের প্রশ্ন শুনে মেয়েটার ভ্রু জোড়া কুঁচকে এলো বলল,”প্রশ্নের জবাবে প্রশ্ন??” বলেই সে মুচকি হাসলো। সেই ঘায়েল করা হাসি রা’দের নিজেকে সামলাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। মেয়েটা বলে,”নূরজাহান আমার নাম।”
এবার রা’দ ও একটু হাসলো বলল,”আমি রা’দ।”

নূরজাহান রা’দের হাতের ব্যান্ডেজ খুলে নরম হাত দিয়ে ওষুধ লাগিয়ে দিলো রা’দের হাতে। নূরজাহান এর প্রতিটি স্পর্শ রা’দকে কাঁপিয়ে তুলছে তা নূর বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে। সে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে আবারও বলল,”বললেন না যে এখানে কিভাবে এলেন??”
রা’দ নূরের দিকে তাকিয়ে বলে,”সে অনেক কথা, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এখানে এসে আমার কোন ভুল হয়নি!!”

নূর তার আখিজোড়া ছোট ছোট করে বলে,”কেন??”

“এখানে না এলে আপনার মতো এতো সুন্দরী রমণীর দেখা পেতাম না।”
বিনিময়ে নূর হাসলো। রা’দ বলে,”আপনার হাসিটা খুব সুন্দর ইভেন আপনি ও খুব সুন্দর। আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সুন্দর নারী।”
নূর তার মুখে হাসি বিরাজমান রেখে বলল, “আপনি এতো লাগাম ছাড়া কথা বলছেন কেন??”

“আপনার মতো সুন্দরী দেখে আমি কেন যে কেউ এভাবেই কথা বলবে। কিছু মনে করবেন না আমি ওভাবে বলতে চাইনি।”

নূর উঠে দাঁড়িয়ে হাতের বাটিটা টেবিলের উপর রেখে আবার রা’দের দিকে তাকিয়ে বলে,”যদি হায়নাগুলো আপনাকে খেয়ে ফেলতো তাহলে?? কিভাবে দেখতেন আমাকে??”

“আপনাকে দেখার জন্য সৃষ্টিকর্তা আপনাকে শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে পাঠিয়েছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আপনাকে দেখার জন্য যদি ওই হায়নার দল আমাকে খেয়ে ফেলে তাতে আমার কোন আফসোস নেই। আপনাকে তো দেখতে পেয়েছি এটাই আমার কাছে অনেক।”

নূর কিছু বলল না। বিনিময়ে মুচকি হেসে বাইরে চলে গেল। রা’দ অপলক দৃষ্টিতে নূরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইল। মেয়েটার হাটাচলা সবকিছু মুগ্ধ করে রা’দকে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,

#THE_BOOK

#পর্ব_২১

#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)

চৌকির উপর দু’পা তুলে বসে আছে রা’দ। অনেকক্ষণ যাবত বসে আছে কিন্তু নূরজাহানের আসার কোন নাম গন্ধ নেই। সেই কখন বেরিয়েছে কিন্তু এখনো আসছে না কেন??রা’দ ভাবছে ও কি একবার বাইরে গিয়ে দেখবে??পরে আবার ভাবলো না থাক যদি নূর কিছু উল্টাপাল্টা ভেবে বসে??তার থেকে এখানে বসে থাকাটাই ভালো। রা’দ ঘাড় ঘুরিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। কি ঘন জঙ্গল?? কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে নূর এই জঙ্গলে থাকে কেন??আর একাই থাকে নাকি সাথে আরো কেউ আছে?? কিন্তু আর তো কাউকে দেখছে না রা’দ। আর এই জঙ্গলে মেয়েটা একা থাকে ভয় লাগে না??এসব আকাশ কুসুম ভাবতে ভাবতে নূরজাহান উপস্থিত হলো। দরজার শব্দ শুনে রা’দ সেদিকে তাকালো। নূরকে দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইল সে। এই মেয়েটাকে দেখে যেন তার মন ভরে না।
রা’দ খেয়াল করলো নূরের হাতে কিছু লতাপাতা আর গাছের শেকড়। নূর ধীর পায়ে টেবিলের কাছে গেলো। টেবিল থেকে ছোট হাম্বল দস্তা নিয়ে তাতে লতাপাতা আর শেকড় দিয়ে পিষতে লাগলো। রা’দ উৎসুক হয়ে বলে,”আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন??”

নূর পিছনে না তাকিয়ে উত্তর দিলো,”আপনার জন্য ওষুধ আনতে গিয়েছিলাম।”

“এটার তো কোন দরকার ছিল না। আমি এখন সুস্থ আছি। শুধু শুধু আমার জন্য কষ্ট করলেন। আমি আপনাকে সমস্যায় ফেলে দিলাম।”
নূর নিঃশব্দে হাসলো বলল,”বিপদে পড়লে মানুষই তো মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যাবে। এটাই তো মানবধর্ম। তাছাড়া আমি সেইরকম নই যে বিপদে কাউকে ফেলে চলে যাব। আমার যদি কষ্ট হতো তাহলে আপনাকে এখানে নিয়ে আসতাম না। ওখানেই হায়েনাদের সামনে ফেলে আসতাম।”

রা’দ বড় একটা শ্বাস ফেললো বলল,”আপনি ওতো রাতে জঙ্গলে কি করছিলেন??আর এই গভীর জঙ্গলে আপনি একা থাকেন?? কেন?? আপনার ভয় করে না??আর এখানে থাকেনই বা কেন??”

নূরের ততক্ষণে ওষুধ বানানো শেষ। সে ওষুধ বাটিতে ঢেলে রা’দের সামনে এসে বসতে বসতে বলতে লাগলো,”এতো প্রশ্ন করলে আমি উওর দেব কিভাবে?? আপনি খুব প্রশ্ন করেন।”
রা’দ মাথা চুলকে বলে,”জানতে ইচ্ছে করছিলো তাই বললাম।”
নূর রা’দের মাথার ব্যান্ডেজ খুলতে খুলতে বলে,”ভয় থাকলে কি এখানে থাকতে পারতাম??আর হ্যা আমি এখানে একাই থাকি আমার সাথে থাকে আমার ময়ূর আর আমার ঘোড়া। ঘোড়ায় চড়ে আমি সারাজঙ্গল ঘুরে বেড়াই। শিকার করি, তবে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে জোৎস্না বিলাস করতে।কাল রাতেও বেড়িয়েছিলাম আর সেখানে আপনার দেখা। আমি সঠিক সময়ে না পৌঁছালে ওরা আপনাকে খেয়ে ফেলতো।”

“আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য।”

নূর রা’দের মাথায় নতুন করে ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো। তারপর কিছু ফল এনে দিয়ে বলল,”এর থেকে ভালো কিছু আপনাকে দিতে পারব না এটাই খেতে হবে আপনাকে।”

রা’দ তাকিয়ে দেখে কিরকম অদ্ভুত ধরনের সব ফল যার কোনটার নাম রা’দ জানে না। ও ভাবছে এগুলো খাওয়া কি আদৌ ঠিক হবে?? কিন্তু ওর ভীষণ খিদে পেয়েছে। কাল সারাদিন রাত কিছুই খায়নি সে। তাই একটা ফল হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে বলল, “কিন্তু আমার এর থেকে ভালো কিছু চাই।”

রা’দের কথা শুনে নূরের মুখটা মলিন হয়ে গেল। এর থেকে তো ভালো কিছু ও দিতে পারবে না। এই জঙ্গলে ফল আর পশু পাখিদের মাংস ছাড়া আর কিছু দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাছাড়া কালকে কিছু শিকার করতেও পারেনি সে। নূরের মলিন মুখখানা দেখে রা’দের হাসি পেলো। এতেও নূরকে অপ্সরি লাগছে। রা’দ হঠাৎ করেই হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে বলে,”আপনার হাসি।”

নূরের ভ্রু যুগল আপনাআপনি কুঁচকে এলো। এর মানে সে রা’দের কথা বুঝতে পারেনি। তাই রা’দ আবার বলে,”এর থেকে আপনার হাসি আরো মিষ্টি তাই একটা মিষ্টি হাসি দিন এটাই আমার কাছে অনেক।” বলেই রা’দ আবারো হাসে। নূর এবার সবটা বুঝতে পারে। একটা ছেলে যে এভাবে মুখের উপর কোন নারীর সৌন্দর্যের ইতিকথা বলে দেয় তা নূরের ভাবতেই অবাক লাগছে। নূরকে ভাবতে দেখে রা’দ বলে,”আপনার সৌন্দর্য্যের রহস্য কি??”

রা’দের কথা শুনে নূর না হেসে পারলো না। শব্দ করে হাসতে লাগলো। রা’দ আবারো সেই হাসি মুগ্ধ হয়ে দেখতে লাগলো। নূর হাসি থামিয়ে বলল,”আপনি এরকম অদ্ভুত প্রশ্ন কোথায় পান বলুন তো??”
রা’দ প্রতিত্যুরে কিছু বলে না। নূর বলে উঠে,”পৃথিবীর কোন মেয়ে তার রুপের কারণ বর্ণনা করতে পারবে না। সৃষ্টিকর্তা কাউকে সুন্দর বানান তো কাউকে অসুন্দর। তাই এরকম করার উদ্দেশ্যে কেবল তিনি ছাড়া আর কেউই জানে না। তাই এটা বলা খুব মুশকিল। কিভাবে বলি বলুনতো??”

রা’দ সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলে,”কিন্তু আমার মনে হয় আপনার সৌন্দর্য্যের পিছনে একটা বড় রহস্য লুকিয়ে আছে। আমি বোধহয় কিছুটা আন্দাজ করতে পারছি।”

“তো শুনি আপনি কি আন্দাজ করলেন??”

“আমাকে হার্ট অ্যাটাক করার জন্য আপনাকে সুন্দর বানানো হয়েছে।”
কথাটা রা’দ বুকে হাত রেখে বলল। নূর আবার অবাক হলো। ঠোঁটের কোণে স্নিগ্ধ হাসি রেখে বলে,”আপনি সত্যি অদ্ভুত লোক। কোন কথাই যেন মুখে আটকায় না।”

বলতে বলতে নূর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। রা’দ ভাবতে লাগলো সে কি আদৌ লাগামহীন কথা বলে ফেলেছে?? কিন্তু এরকম তো রা’দ ছিলো না। মেয়েদের সাথে তো এভাবে কখনোই কথা বলতো না। তবে অন্যসব মেয়েদের সাথে নূরের তুলনা একদম হয় না।নূর সবার থেকে আলাদা,সবদিক থেকেই আলাদা। মেয়েটার চোখমুখে মায়া লেগে আছে যে কেউ দেখলেই তার মায়ায় পড়ে যাবে। ভাগ্যিস রা’দ এখানে এসেছে নয়তো অন্য কেউ এসে পড়লে কি হতো??

কিছুক্ষণ বসে থেকে রা’দ ঘর ছেড়ে বাইরে এলো। কাঠের সিঁড়ি বেয়ে মাটিতে নেমে এসে হাঁটতে লাগল। যেদিকে চোখ যায় শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল। এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে রা’দ দেখতে লাগলো। হঠাৎ পানির আওয়াজে রা’দ চমকে তাকালো। খুঁজতে লাগল এই আওয়াজের উৎস। বাড়ির পিছনে একটা পুকুর সেখানে গোসলে নেমেছে নূর। রা’দ আস্তে আস্তে এগিয়ে পুকুরের ধারে একটা গাছের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। নূর একটা ডুব দিয়ে উঠেছে তখন। চুলগুলো তার মুখমন্ডল ঢেকে ফেলেছে। একহাতে নূর সেগুলো সরিয়ে দিতেই তার মুখটা দেখা গেলো। পানির কণাগুলো চিকচিক করছে তার মুখে। আর গায়ে সাদা পোশাকে তাকে আরো মানিয়েছে। মনে হচ্ছে পুকুরে কোন পরীকন্যা গোসলে নেমেছে। পুকুরে কয়েকটা রাজহংস ও আছে।
তারা মুখ দিয়ে পানি ছিটিয়ে নূরের গায়ে ছিটিয়ে খেলা করছে। নূর হাত দিয়ে পানির ঝাপটা আটকাচ্ছে আর হাসছে। সাথে নূরও খেলছে তাদের সাথে।

দূর থেকে রা’দ তা দেখছে। এসব দেখতে ওর ভালো লাগছে। ইচ্ছে করছে নূরের কাছে যেতে আলতো করে নূরের মুখের উপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে দিতে। কিন্তু এসব কি ঠিক হবে??নূর যদি উল্টাপাল্টা কিছু ভেবে বসে??নাহ তার থেকে দূরে থাকাই ভালো হবে। কিন্তু নিজেকে সামলানো যে আস্তে আস্তে কঠিন হয়ে আসছে। রা’দ ওখান থেকে যেতে চেয়েও পারলো না। নূরের সৌন্দর্য তাকে আটকে দিল। তাই রা’দ ওখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নূরকে দেখতে লাগলো।

………………

নূরজাহান ঘরে এসে দেখলো জানালার পাশে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রা’দ। ওকে দেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। রা’দ পিছনে না তাকিয়ে বুঝতে পারলো যে নূর এসেছে কারণ এক সুন্দর সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ছে নূর আসার সাথে সাথে। রা’দ নিঃশ্বাস টেনে বাতাসের সাথে সাথে সেই সুগন্ধি উপভোগ করছে। রা’দ বাইরে দৃষ্টি রেখেই বলল,”আপনার বাড়িটা অদ্ভুত ঠিক আপনার মতো।”

নূর স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে বলে,”আপনার অদ্ভুত লাগতেই পারে কিন্তু আমি এতে অভ্যস্ত।”

নূর দেওয়ালে ঝোলানো চামড়ার ব্যাগটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেল। রা’দ পিছনে ঘুরে নূরকে দেখতে না পেয়ে সেও বাইরে এলো। দেখলো সাদা রঙের ঘোড়াটার সামনে দাঁড়িয়ে তার গলায় হাত বুলাচ্ছে নূর। ঘোড়াটা হিস হিস শব্দ করছে নূরের হাতের পরশ পেয়ে। আর কচি ঘাস চিবুচ্ছে। নূর চামড়ার ব্যাগটা কাঁধে ঝুলায় তারপর তীর ধনুক আর তীরের থলে নিয়ে যেইনা ঘোড়ায় চড়লো অমনি রা’দ বলে উঠলো,”কোথায় যাচ্ছেন??”

নূর রা’দের দিকে ঘুরে তাকালো বলল, “শিকারে যাচ্ছি। বাড়িতে অতিথি এসেছে একটু আপ্যায়ন তো করতেই হয়।” বলেই হাসলো সে। রা’দের আবারও হার্ট বিট মিস হলো। সাদা ঘোড়ার উপরে যেন একটা সাদা পরী বসে আছে। চুলগুলো তার লম্বা বেণুনী করা। ছোট ছোট চুলগুলো মুখের সামনে এসে পড়েছে। গায়ে আবারও সেই একই রকম সাদা পোশাক। রা’দ বিষ্ময়ে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বলে,”যদি কিছু মনে না করেন আমি যেতে পারি আপনার সাথে??”

নূর ঘাড়টা হালকা দুলিয়ে বলে,”আপনি যাবেন!! কিন্তু আপনি তো অসুস্থ??”

রা’দ স্নিগ্ধ হেসে বলে,”তাতে কি আপনি আছেন তো?? তাছাড়া এই জঙ্গলটা ও দেখা হয়ে যাবে।”

“আমার ফিরতে রাত ও হতে পারে!!”

“সমস্যা নেই আপনার সাথে চন্দ্র বিলাস ও হয়ে যাবে। এক সুন্দরী রমণীর সাথে চন্দ্র বিলাসের ভাগ্য ক’জনের হয়!!”

নূর মুচকি হেসে বলে,”হয়েছে আর বলতে হবে না চলুন।”

নূরজাহান এক হাত বাড়িয়ে দিলো রা’দের দিকে। নূরজাহানের হাত ধরে ঘোড়ায় চড়লো রা’দ। নূরজাহান পিছনে ফিরে রা’দকে বলল,”ঠিকমতো বসে থাকতে পারবেন তো??”

“যদিও ঘোড়ায় চড়ার অভ্যাস নেই আপনি যেহেতু আছেন তাহার ঠিক পারব।”

নূর আর কিছু বলে না। এই ছেলের সাথে সে কথায় পারবে না। কথায় কথায় ভালোই লজ্জা দিতে জানে সে। দড়িতে হাত দিয়ে ঘোড়া ছোটালো সে। ঘোড়া খুব দ্রুত গতিতে ছুটছে। রা’দ তাল সামলাতে না পেরে শক্ত করে নূরের কোমড় জড়িয়ে ধরে। সাথে সাথে নূর খানিকটা কেপে উঠল। কিন্তু কিছু বলল না। কেন জানি ওর ভালোই লাগছে এই ছেলেটার সাথে থাকতে।

ঘন গাছগাছালির মধ্যে দিয়ে দূরন্ত বেগে ছুটে চলছে সাদা রঙের ঘোড়াটি। তার উপর দুজন মানব মানবী বসে আছে। তারাও ঘোড়ার সাথে সাথে ছুটছে যেন। গাছগুলোকে পেছনে ফেলে ছুটে যাচ্ছে সামনের দিকে। মাঝে মাঝে নূর এদিক ওদিক তীর ছুঁড়ছে ঘোড়ার উপর থেকেই। রা’দ এতে অবাক হয়। একটা মেয়ের হাত এতো পাকা যে তীর কখনো ভুল জায়গায় রায় না। সোজা শিকারকে ধরে ফেলে।
খুব কাছ থেকে নূরকে লক্ষ্য করছে রা’দ। নূরের এতোটা কাছে এসে ভালোই লাগছে।রা’দ ভাবছে যে ও এতকিছু বলছে নূরকে অথচ নূর একটুও রাগ করছে না। সবসময় হাসি মুখে রা’দের কথার জবাব দিচ্ছে। তাহলে কি রা’দের মতো নূর ও রা’দের উপর দূর্বল?? হবে হয়তো!!রা’দের এটা ভেবে আনন্দ হচ্ছে।

কিন্তু এসব কিছুর মধ্যে সে তার বন্ধুদের কথা ভুলেই গেছে। মগ্ন হয়ে পড়েছে অজানা অচেনা এক সুন্দরী রমণীর নেশায়। বুদ হয়ে আছে তাতে। ও ভাবছে না যে অভিনব পূর্ণাশা আর লাবন্য কি আদৌ বেঁচে আছে?? নাকি প্রাণ দিয়েছে সেই উড়ন্ত ভাম্পায়ারের হাতে??
কিন্তু রা’দ তো এমন কখনোই ছিলো না। বন্ধুত্বের সম্পর্ক ওর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যেই বন্ধুরা ওর প্রাণ ছিল আজ তাদের কথাই সে ভুলে গেছে এক নারীর জন্য যার সাথে কিনা একদিনের পরিচয়??

বন্ধুদের কথা বাদ দিয়ে রা’দ এখন নূরজাহান নামক মেয়েটির নেশায় বুঁদ। যাকে কি না প্রতিদিন সে স্বপ্নে দেখতো। কিন্তু স্বপ্নে দেখে কি কেউ কখনো ভালোবেসেছে??আর স্বপ্নে দেখা মানুষটি কিভাবে বাস্তবে আসতে পারে??এটা তো অবিশ্বাস্য!! তাহলে কি কোন রহস্য লুকিয়ে আছে। এই রহস্যের মায়াজাল ভেদ করে কি রা’দ বের হতে সক্ষম হবে?? নাকি চিরকালের জন্য এই মায়াজালে বদ্ধ হয়ে থাকবে??????

চলবে,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here