The_Boss
Part: 28
Afreen Ella
ইলমাজকে স্ব-জোরে ধাক্কা দিয়ে মায়া এখনো থ দাঁড়িয়ে হা করে তাকিয়ে আছে,,।ইলমাজ মুচকি হসছে,
রাগে ফুসতে ফুসতে মায়া বলতে লাগলো,,
এটা আপনি কি করলেন?আপনার সাহস তো কম না,ছি আপনি শুধু লুইচ্চা না লুইচ্চার প্রাইম মিনিস্টারও বটে।(মায়া)
চুপ করো,খুবই শান্ত গলায় বললো ইলমাজ।
আপনি এটা কিভাবে করলেন হ্যাঁ?রাগে মুখ ফেটে যাচ্ছে মায়ার।
বেশি বক বক করছিলে তাই এটাই একমাত্র নিখুঁত রাস্তা ছিলো তোমাকে চুপ করানোর।।যদি এবার ও চুপ না হওতাহলে আমি এটা আবার করতে বাধ্য হবো আর কারন হবে তুমি নিজেই।।বড়ই স্বাভাবিক ভাবে বললো ইলমাজ কথাগুলো।।
মায়া চোখ রাঙ্গিয়ে তাকিয়ে যাওয়ার জন্য ফিরতেই অনেকগুলো লোকের আওয়াজ একসাথে শুনতেই চমকে উঠলো।।
ওয়েলকাম টু আওয়ার ব্রাদার্স লাইফ ডিয়ার ভাবি।।।
পিছনে তাকাতেই যেনো জোর কা ঝাটকা খেয়ে মাথার চারপাশে পাখি উড়ছে মায়ার,মায়া চোখ ছানাবড়া করে তাকিয়ে আছে ছেলে মেয়ে মিলে প্রায় ১৫ জন একসাথে দাঁড়িয়ে মায়াকে স্বাগতম জানালো।।।তাদের মধ্যে একজন মায়ার কাছে আসলো তা আর কেউ না ইলমাজের সাথে এতক্ষন যে ছিলো সে, তারপর বলতে লাগলো,,।।
আম সরি হবু ভাবি,আপনাকে হার্ট করা একান্ত আমার ইচ্ছা ছিলো না,সব ভাইয়ের পরিকল্পনা ছিলো,,, মেয়েটি মুচকি হেসলো,,
ভাই?মায়া চোখ বড় করে বললো!
হুম,আমি দিহান ভাইয়ের ছোট বোন মিয়াশা মানে ইলমাজ ভাইয়ের মামাতো বোন।।
মায়া অসহায়ের মতো চেহারা বানিয়ে ঢোক গিলে ঘরের চারপাশে সবার দিকে একবার নজর বুলিয়ে নিলো।ইলমাজের দিকে তাকিয়ে আছে মায়া ইলমাজ মুগ্ধ নয়নে দেখছে মায়াকে।।
হচ্ছে টা কি আমতা আমতা করে বললো মায়া।।দিহান ভিতর থেকে বেরিয়ে বলতে লাগলো,,
এতো প্রেসারাইজ করলে ব্রেইনে এফেক্ট করবে উড বি ভাবি,,তাই চিন্তা কইরেন না,আমিই বলবো সব আগে ডিনারটা সেড়ে ফেলি,শুভ কাজে দেরি করতে নেই।।
দু একজন মেয়ে মায়াকে টেনে ঘরের বাহিরে লিফটে উঠিয়ে সোজা ছাদে নিয়ে গেলো।। তার পিছু ইলমাজ আর বাকিরাও গেছে।।
আপনারা করছেন টা কি সবকিছু অদ্ভুত লাগছে আমার,যেতে যেতে বললো মায়া।।
মায়ার কথা শুনে বাকিরা শুধু হাসছে।।
মায়াকে টানতে টানতে ছাদে নিয়ে গেলো তারা।।মায়া আবারও ঝাটাকা খেয়ে কাত হয়ে যাবার অবস্থা প্রায়,ছাদ খুব সুন্দর করে ডেকোরেট করা,চারটি রাউন্ড টেবিল বসানো সিল্কের লাল আর ক্রিম কম্বিনেশনে কভার, সাদা গোলাপ,লাল আর সাদা বেলুন দিয়ে গোটা ছাদ খুব সুন্দর ভাবে সাজানো, ইলমাজ মায়ার পাশে এসে দাঁড়াতেই বাজি ফুটে দেয়ালে একটা ব্যানার উপর থেকে গড়িয়ে খুললো।।মায়া আর ইলমাজের সিলেটের পার্টির দৃশ্য যেখানে ইলমাজ মায়াকে উৎসর্গ করে গান গাইতে গাইতে মায়ার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ছিলো আর তা ক্যামেরা বন্দী করা হয়েছে, মায়া হা করে তাকাচ্ছে ব্যানার এর দিকে একবার ইলমাজের দিকে।।।মায়ার মাথা ঘুরছে,সে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে,কিছু বলার ক্ষমতা যেনো হারিয়ে গেছে ।।
ইলমাজ মায়ার হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলো তাকে তারপর মায়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে একটা রিংয়ের বাক্স এগিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,,,
থ্যাংক্স আমাকে টার্কিশ রংয়ের প্রেমে পড়তে বাধ্য করার জন্য,থ্যাংক্স গরম চা আমার মুখে না মেরে বুকে মারার জন্য, পোড়ার দাগটা বার বার তোমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, থ্যাংক্স সেই দাগটা বুকের বাম পাশে আবদ্ধ করার জন্য,আর থ্যাংক্স সেই ঔষধগুলোর কাচের বোতলগুলোকে যেগুলো না ভাঙ্গলে হয়তো তোমার সাথে আমার দেখা কখনোই হতো না,আমার গাড়ির ফ্রন্ট গ্লাসে কাঁদা নিক্ষেপ করার জন্য ধন্যবাদ, ধন্যবাদ তোমার সেই প্রতিটি রাগচটে স্বাভাবগুলোর জন্য যেগুলো আমকে প্রভাবিত করেছে তোমাকে ভালবাসতে,তোমাকে আমার প্রয়োজন বানাতে চাই না, কিন্তু আমার শখ,চাওয়া,ইচ্ছে,অনুরাগে শুধু তোমাকে চাই।যেখানে শুধু আমি ছাড়া আর কেউই থাকবে না,তুমি আমার অনেক শখের একটা মুখ্য অধ্যায় যেটার সমাপ্তি আমি কখনোই চাইবো না।।।
এতক্ষন মায়া মুগ্ধ হয়ে শুনছিলো আর মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ লাগছে তার আজ নিজেকে, ইলমাজের দিকে তাকিয়েই আছে মায়া কোন উত্তর দিতে পারছে না।।।
ইলমাজ প্রচন্ড আবেগপ্রবণ হয়ে আবার বলতে লাগলো,,
সরি এতদিনের রুক্ষ ব্যবহারের জন্য, শুধু অপেক্ষা করছিলাম কখন তুমি আমাকে ওই শব্দের অর্থের জবাব দিবে,তুমি জেনেও আমার জবাবের উত্তর দেয়াটাকে এড়িয়ে চলেছো,আমি রোমিও টাইপ কথাবার্তা বলতে জানি না কিন্তু হ্যাঁ ইলমাজ টাইপ কথাবার্তায় তোমাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।এই বিগত একমাস নিজেকে তোমার থেকে সরিয়ে রেখে নিজেকেই সময় দেয়ার চেষ্টা করেছি,তোমাকে ছাড়া থাকার প্রয়াস করেছি কিন্তু দুদিনের মধ্যেই আমি ব্যার্থ হয়েছি,প্রতিদিন তোমাকে দুর থেকে দেখেছি,দিহানের দিয়ে ডিনারের অফারটাও আমিই করিয়েছিলাম,যদিও তোমার কাছে আসি নি কিন্তু হ্যাঁ তোমার থেকে দুরেও যাইনি,নজরে নজরে রেখেছি,শাফিন্নাকে মাছ ধোয়া পানির সাথে যে ধোলায় টা দিয়েছিলে সেটা ও এতটা খারাপ ছিলো না,উপভোগ করার মতো ছিলো। আর জব থেকে ফায়ার করার কারন শুধু একটাই,যাকে আমি ভালবাসি সে আমার অফিসের এম্পলয় হয়ে থাকবে ব্যাপার টা কেমন বিদঘুটে না? তোমার পাশে থাকার জন্য জবের প্রয়োজন হবে না, নানা ভাবেই তোমার কাছে থেকেছি আমি আর থাকবো যদি তুমি এই হনুমানকে কবুল করো তো।।
নিশ্চিত আমি স্বপ্নই দেখছি,এমন স্বপ্ন কেন দেখি ঘুম ভাঙ্গতেই যেই অনুভূতির কোন অস্তিত্বই থাকবে না।।নিজেই নিজেকে বলছে মায়া।।
তুমি স্বপ্নে দেখছো না মায়া আমার হাটু ব্যাথা করছে আর কতক্ষন এভাবে বসিয়ে রাখবে?( ইলমাজ)
মায়া চোখ দুহাতে কচলে ইলমাজের দিকে তাকিয়ে বললো,
না মানে স্যার আপনি উঠুন প্লিজ।
তুমি উঠতে দিচ্ছো কোথায়?আংটির দিকে ইশারা করে বললো,
মায়া রাজ্য জয় করা হাসি হেসে বললো,
আংটি পড়িয়ে দিচ্ছেন না যে?
ইলমাজ মায়ার আংগুলে আংটি পড়িয়ে উঠে দাঁড়াতেই মায়া ইলমাজের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো আর তার সাথেই ইলমাজের কাজিনরা সবাই সাচ্ছ্যন্দে চিৎকার করে হুইসিল বাজিয়ে তারাও তাদের দুজন কে ঘিরে একটা সার্কেল হয়ে জড়িয়ে ধরলো।।
চলবে।