The_Boss Part:27

0
4106

The_Boss

Part:27

Afreen Ella

পেপারে সাইন করে মায়া ব্যাগ নিয়ে সোজা ইলমাজের ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।।ইলমাজ দরজার দিকে একবার তাকিয়ে আবার নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।।

মায়া কাঁদছে না শুধু গুমরে আছে, নিজেও কিছু বুঝতে পারছে না আসলে হলো টা কি??

বাসায় গিয়ে শাওয়ার নিয়ে বিছানায় শুতেই ইলমাজের দেয়া উপহার টির দিকে চোখ গেলো, আবার উঠে তা হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলতে গিয়েও ফেলতে পারলো না।।কাপার্ডের এককোনে দুমড়ে রেখে ধরাম করে আলমারির দরজা লাগিয়ে ফুপাতে শুরু করলো।।

আজ প্রায় সপ্তাহ পেরিয়েছে মায়া ঘর থেকে বের হয় নি।।।

কিরে এভাবে বসে আছিস কেন?চাকরি তো ছেড়েছিস ভালো কথা কিন্তু এভাবে বসে থাকলে কি হবে?গ্রামের বাড়ি চলে যাবি?(মায়ার মা)

হুম,,সব ঠিকঠাক করে নাও মা,এই ব্যাস্ত শহরে নিজের গন্তব্যে পৌছানোর পিছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।।হাফ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো মায়া।।

আচ্ছা,দেখি সপ্তাহ ক্ষানিকের মধ্যে কিছু একটার ব্যাবস্থা করতে পারি কি না।(মায়ার মা)

মা,আমি একটু বাহিরের বাতাস উপভোগ করে আসি,আজকে বহুদিন কোথাও বের হইনি।।(মায়া)

আচ্ছা,,,(মায়ার মা)

মায়া রাস্তার একপাশে একা একা হাটছে,রাতের আকাশে হাল্কা মেঘ আর শীতল বাতাস,ল্যাম্পোষ্টের আবছা আলো যেনো মায়ার অনুভূতি গুলো কে আরও আবেগপ্রবণ করে দিচ্ছে।।মুখে দুহাত দিয়ে ফুকছে মায়া চলতে চলতে প্রায় দূরে কুয়াশার আড়ালে হারিয়ে গেছে সে।।

হেই,,,মিস,,পিছন থেকে কারও ডাকে ফিরে তাকালো মায়া।।

হেই এতো রাতে কোথায় যাচ্ছেন একা একা?

দিহান আপনি?এখানে?(মায়া)

আরেহ ইয়ার আমি তো ছেলে যে কোন সময় আসতেই পারি।।কিন্তু আপনি?(দিহান)

আম,না,মানে আসলে আ,,ভাল্লাগছিলো না তাই একটু হাটতে এসেছি,তো আপনার কি অবস্থা?চাপা হেসে বললো মায়া।।

আলহামদুলিল্লাহ ,, আপনি?(দিহান)

হুম খুব ভালো, দুজন হাটতে হাটতে সামনের দিকে এগিয়ে গেলো।।

চলুন কোথাও গিয়ে বসি?(দিহান)

আম,না মানে আমার বাসায় ফিরতে হবে।।(মায়া)

এতো জলদি কিসের?(দিহান)

না মানে একটু প্যাকিং করতে হবে তাই।।(মায়া)

কিসের প্যাকিং?কোথায় যাচ্ছেন?(দিহান)

আসলে গ্রামের বাড়িতে এক্কেবারে শিফট হয়ে যাচ্ছি তাই সব গুছাতে একটু সময়ের প্রয়োজন।। (মায়া)

ওহ,কখন যাচ্ছেন?আকষ্মিক চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো দিহান।।

এইতো এক সপ্তাহ তো লাগবে।।(মায়া)

ওহ।।।আম গন্না মিস ইউ,,হ্যাভ এ নাইস লাইফ।।?(দিহান)

আমিও?ধন্যবাদ এবার আসি দেরি হয়ে যাচ্ছে খুব,,মা বকবে।।(মায়া)

ওকে,আচ্ছা আমার গাড়ি আছে চলুন আপনাকে পৌছে দিয়ে আসি।।(দিহান)

না, না থাক,আমার হাটতেই বেশ ভালো লাগছে।।(মায়া)

আহ,ওকে,,আল্লাহ হাফেজ।।(দিহান)

আল্লাহ হাফেজ,ভালো থাকবেন।।(মায়া)

দুজনই চাপা হাসলো,, মায়া আবার ইউ টার্নে বাড়ির রাস্তা ধরে হাটতে শুরু করলো।।

সকাল সকাল কে কল করেছে আবার?ঘুম ঘুম চোখে ফোনের দিকে তাকালো মায়া।।আননোন নাম্বার।।

হ্যালো,আসসালামু আলাইকুম, কে?(মায়া)

ওয়ালাইকুম আসসালাম।।আমি দিহান বলছি।।ফোনের ওপাশ থেকে।।

আরেহ আপনি এত সকাল সকাল কিভাবে?(মায়া)

আসলে আপনি তো সপ্তাখানেক বাদে এখান থেকে চলে যাবেন তাই ভাবছি আপনার সাথে কাল রাতে একটা ডিনার হয়ে যাক।।(দিহান)

আসলে না,আমি,,,,মায়াকে থামিয়ে ফোনের ওপাশ থেকে দিহান আবার বলতে লাগলো

নো এক্সকিউজেস।।।প্লিজ না করবেন না,ছোট্ট একটা রিকুয়েষ্ট মাত্র।।(দিহান)

মায়া ভাবছে যার জন্য না করছে সেই তো অবেলার অভিলাষ,তাই আর না করলো না আবার বলতে লাগলো

আচ্ছা,ক’টায় আর কোথায় আসবো ?(মায়া)

এইতো ৭ঃ৩০ এর দিকে,আর কাল যে জায়গায় হাটছিলাম ওখানেই আসবো আপনাকে পিক করতে।।(দিহান)

আচ্ছা,চাপা হাসলো মায়া।

দিনটা বেশ নিরামিষ সময়ের সাথে কেটেছে মায়ার।।

গাড়ি নিয়ে মায়া আসার অপেক্ষা করছে দিহান,,প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তার অপেক্ষার আবাসন ঘটেছে,ইতিমধ্যে মায়া হাজির হলো।।

দিহান গাড়ি থেকে বেরিয়ে দরজা খুলে দিয়েছে মায়া প্রবেশ করার জন্যে।।দিহান ড্রাইভ করছে,মায়ার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,,

এই ক্রীম কালারে আপনাকে মন্দ লাগছে না মুচকি হেসে বললো দিহান।।
মায়াও মুচকি হাসলো।।

একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে গাড়ি থামালো দিহান।যেই মায়া গাড়ি থেকে নামতে যাবে দেখলো ইলমাজ একটা মেয়ের সাথে হোটেল থেকে বেশ হেলে দুলে বেরিয়ে তার গাড়িতে উঠছে।।

মায়ার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে,মায়া তাকিয়েই শুধু জল ঝরাচ্ছে।।

হেই মিস নামছেন না যে?(দিহান)

মায়া পানি মুছে দিহান কে বলতে লাগলো,,,

ওই যে ব্ল্যাক এ্যাশ কার টা দেখছেন ওটার পিছু নিন।।তারাতাড়ি।। (মায়া)

কিন্তু কেন?কে ওখানে?আতংকিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো দিহান।।

পরে বলছি আগে যান প্লিজ,জলদি।।(মায়া)

দিহান বেশ অবাকাতর হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ইলমাজের গাড়ির পিছু যেতে শুরু করলো।।

মায়া ফুঁপাচ্ছে আর ঢোক গিলছে।।ইলমাজের পিছু নিতে নিতে, ইলমাজের কার একটা বিল্ডিংয়ের সামনে গিয়ে থামলো।।। দিহান ও ইলমাজের গাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তার গাড়ি থামালো।।।

গাড়ি পার্কিংয়ে রেখে ইলামাজ আর তার সাথে থাকা মেয়েটা সোজা এলিভেটরে উঠে গেলো।

দিহান বলতে লাগলো,,
আরেহ এটা তো ভাই,এখানে কি করছে?আশ্চর্য হয়ে বললো সে৷।

তাই দেখতে এসেছি,চলুন আমার সাথে। মায়া তড়িঘড়ি গাড়ি থেকে বেরিয়ে লিফটের সামনে গিয়ে,এলিভেটর এর মিটারের দিকে লক্ষ্য করলো তা কয় ত’লায় গিয়ে থামবে।।১১ ত’লায় গিয়ে থেমেছে।।মায়া দরজা ওপেন করে ১১ ত’লায় বাটন ক্লিক করার আগে দিহানও জলদি এসে লিফটে প্রবেশ করলো।।

১১ তলায় লিফট থামতেই দেখলো চারদিকে চারটি এপার্টমেন্ট।।রাগে ফুসতে ফুসতে মায়া বলতে লাগলো,

এখন কোনটাতে খুজবো?কোথায় গায়েব হয়ে গেছে অমানুষ টা।।?(মায়া)

হচ্ছে টা কি দয়া করে একটু বলবেন আমায়?।(দিহান)

ইলমাজকে খুজছি,চলুন সব এপার্টমেন্টের দরজা নক করে দেখি।।(মায়া)

আরেহ আরেহ এটা কিভাবে সম্ভব, এটা ভদ্রতার সপক্ষে পড়ে না,দাঁড়ান দেখছি কি করা যায়,(দিহান)

মায়া সিড়িতে বসে মাতার চুল টানছে,দিহান এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো একজন ডেলিভারি বয় লিফট থেকে কিছু খাবারের প্যাকেট নিয়ে বের হলো আর দিহান তা লক্ষ্য করে মায়াকে ডাকলো।।মায়াও আতংকে উঠে দাঁড়ালো।দিহান মায়ার পাশে গিয়ে বলতে লাগলো আপনি দাঁড়ান আমি দেখি এগুলো কোন এপার্টমেন্টে দেয়।।

সিড়ির পাশের টাতে ডোরবেল বাজালো লোক টি।।দরজা আর কেউ না ইলমাজ ই খুললো।।মায়া তা দেখে প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাবার অবস্থা।।লোক টি চলে যাবার পর মায়া আবারও ডোরবেল বাজালো, ইলমাজ দরজা খুলে চমকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,

তুমি এখানে?(ইলমাজ)

মায়া কিছু না বলে ইলমাজের বুকে হাত দিয়ে ধাক্কাতে ধাক্কাতে আর ভিতরে প্রবেশ করতে করতে বললো,,,,

ছি,এতটা জঘন্য আপনি?লজ্জা করে না আপনার?চেচিয়ে বললো মায়া।।
ইলমাজ ভ্রু কুচকে কিছু বলতে যাবে এমন সময় মায়া আবার বলতে লাগলো,,

চুপ একদম,,একটা শব্দ উচ্চারণ করবি না,তুই কি ভেবেছিস তোর যা ইচ্ছা তা করতে পারবি তুই?অন্য মেয়ের সাথে আগে থেকেই যেহেতু চক্কর তোর তবে কি দরকার ছিলো আমাকে তোর লাইফের অংশ বানানোর?মায়া কাঁদছে আর রাগে ফেটে যাচ্ছে।।

আমি তোমাকে আবার কখন আমার লাইফের অংশ বানিয়েছি?সাংঘাতিক অসহায়ের মতো চেহারা বানিয়েছে ইলমাজ।।

এতো নিষ্পাপ বনছিস কেন?যদি তাই হয় তবে কেন ওই শো পিসে সেনি সেভিয়ারাম মায়া খোদায় করে তা আমাকে দিয়েছিলি?মায়া চেঁচিয়েই যাচ্ছে।।

ইলমাজ রহস্যজনক ভাবে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।।

তোর লাইফে আগে থেকেই অন্য কেউ ছিলো যেহেতু তো আমাকে ভালবাসিস কেন বলেছিলি?মায়া ইলমাজের বুকে ধাক্কাতেই আছে,,

ইলমাজ বাকা হেসে মায়ার দুহাতের কবজি ধরে বুকে টেনে তার ঠোঁট মায়ার ঠোঁটে চেপে ধরলো।।। ?

চলবে।।।

সরি??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here