The_Love_Of_A_Devil_And_Angel,06,07

0
1640

#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel,06,07
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_6

শুভ আর রশনি ওদের সামনে গিয়ে দেখে নিশি ইচ্ছা মতো রোহিতকে ঝাড়ছে আর তা দেখে সাদ ধীর আর তিনা হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। রোহিত বেচারার তো কেঁদে দেওয়ার উপক্রম।

শুভ সামনে আসতেই রোহিত শুভর পেছনে চলে যায়।

রোহিতঃ Bro save me from this witch lady? ( শুভর পেছনে দাঁড়িয়ে)

নিশিঃ What!!! how dare you call me witch ( রেগে রোহিতের দিকে এগিয়ে যেতে নেয়।)

রশনি নিশির হাত ধরে ওকে আটকায়।

রশনিঃ কি করছিস নিশি বেচারা এমনেই দেখ তোকে ভয় পাচ্ছে লিভ ইট। ?

রোহিতঃ লুক কিভাবে আমাকে মারার জন্য তেরে আসছে such a dangerous lady. ?( শুভকে বলল)

নিশিঃ এক তো আমাদের গাড়ির এক্সিডেন্ট করেছেন তার উপর আবার আমাকে যা তা বলছেন আপনার সাহস তো কম না।

রোহিতঃ হোয়াট আমি গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছি ( নিজের দিকে আঙ্গুল তুলে) আরে না না গাড়িতো শ (কিছু বলার আগেই শুভ বলতে শুরু করে)

শুভঃ যা হয়েছে তার জন্য আ’ম এক্সট্রিমলি স্যরি ইট্স জাস্ট আ মাইনার এক্সিডেন্ট। সো প্লিজ কাম ডাউন।

রশনিঃ নিশি বাদ দে না এমনেই অনেক লেট হয়ে যাচ্ছে।

তিনাঃ হ্যাঁ নিশি চলনা এখান থেকে উনারা স্যরি বলেছে দেট্স ইনাফ।

নিশি রোহিতের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে হনহন করে ওখান থেকে চলে গেল।

রশনিঃ আ’ম স্যরি ফর দিস দোষ আমাদেরও ছিলো।?

শুমঃ ইট্স ওকে মিস???

রশনিঃ রশনি আ’ম রশনি।

শুভঃ রশনি,,,, নাইস নেম। আ’ম শুভ। হি ইজ রোহিত, সাদ এন্ড ধীর। ( বাকিদের দেখিয়ে দিয়ে)

নিশি গাড়িতে উঠে জোরে জোরে হর্ন বাজাচ্ছে।

রশনিঃ আমাদের যাওয়া উচিত।

শুভঃ I hope we’ll meet again.

রশনিঃ হুম ( মুচকি হেসে)

রশনি আর তিনা চলে যায়। রশনি কিছু একটা ভেবে পিছনে ফিরে দেখে শুভ একই ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এই চাহনিতে এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করছে রশনির মাঝে। না চাইতেও বারবার পিছনে ফিরে তাকাচ্ছে ও।

শুভ ধীর সাদ আর রোহিতও গাড়িতে উঠে যায়।

নিশি এবার ড্রাইভিং সিটে বসেছে আর রশনি ওর পাশে।

নিশি ড্রাইভ শুরু করে আর এই দিকে শুভও গাড়ি স্টার্ট দেয়। দোনো গাড়ি পাশ ফিরিয়ে দুই দিকে চলে যাচ্ছে।

রশনি একপলকে শুভর দিকে তাকিয়ে আছে আর শুভ রশনির দিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করছে। নিশি রোহিতকে দেখে একটা ভেঙ্গচি কাটে আর রোহিত নিশিকে দেখেও না দেখার ভান করে সামনে তাকায়। তিনা সাদের দিকে এক পলক তাকিয়ে নিজের চোখ নামিয়ে নেয় আর সাদ তিনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।

দুই গাড়ি দুই দিকে চলে যায়। নিশির গাড়ি চলে যেতেই রোহিত যেন হাফ ছেড়ে বাচঁলো।

রোহিতঃ কি মেয়েরে বাবা আজ অব্দি এমন ডেঞ্জারাস মেয়ে কোথাও দেখি নি ( ঢোক গিলে)

সাদঃ তোর জন্য পারফেক্ট তাই না ?

রোহিত রাগি দৃষ্টিতে সাদের দিকে তাকালো। সাদ আর ধীর ওর চাহনি দেখে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো।

ওদের কোন কথাই শুভর কানে যাচ্ছে না শুভর চোখে শুধু রশনির চেহারাটাই ঘুরপাক খাচ্ছে।

নিজের অজান্তেই নিজের মনে রশনির নাম লিখে ফেলে শুভ।

এইদিকে,,,

নিশিঃ ওই লাল হনুমান এর বন্ধু গুলো কি বলছিলো।

তিনাঃ ক কিছুনা জাস্ট স্যরি বলছিলো আর কি?।

নিশিঃ আর একবার যদি ওই লাল হনুমানের সাথে আমার দেখা হয়না এমন অবস্থা করবো সব ইংরেজী ভূলে যাবে। ইংরেজের নাতি। ?

রশনি এক ধ্যানে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে। মাথায় শুধু শুভর চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে ওর। শুভর চোখের মায়ায় পরে গেছে ও।

একে অপরের প্রতি এ মায়া ভালোবাসা আনে নাকি বরবাদি সব অজানা ওদের কাছে। ওদের এই ভালোবাসার পথে পথে বিপদ পথে পথে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে ওদের। এর সব কিছু থেকে অজানা ওরা। যদি জানতো হয়তো এ পথটা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতো নিজেকে। পারবে কি ওরা ওদের এই অসম্ভব ভালোবাসাকে সম্ভব করতে???

বড় একটা গেটের সামনে গাড়ি থামতেই দারোয়ান গেটটা খুলে দিলো। গেটের ভেতরে শুভর গাড়ি প্রবেশ করতেই সাদ আর রোহিত অবাক চোখে চারোদিকে দেখছে। বিশাল রাস্তা তার দুই দিকে বিরাট গার্ডেন। সকালের সময় তাই মালিরা গাছে পানি দিচ্ছে অনেকে বাগানের আবর্জনা পরিস্কার করছে।

রোহিতঃ OMG Shuvo what a palace yaar.? বাগান এতো বড় আর সুন্দর তাহলে বাড়ি কেমন হবে কান্ট ইমেজিন ?

ওয়াও দেখতে পুরো প্যালেসের মতো দেখা যাচ্ছে বাড়িটা। ( বাড়ির দিকে তাকিয়ে)

শুভ বাড়ির সামনে গাড়ি থামায়। শুভ অনেকটা অবাক হয়ে যাচ্ছে কারন, পুরো বাড়ি লাইটিং করা যেন কোন ফাংশন আছে।

শুভ গাড়ি থেকে নেমে যায় আর ওর সাথে সাদ রোহিত আর ধীর ও নেমে যায়।

সাদঃ তুইতো বলেছিলি যে তোর ফেমিলি জানে না যে তুই আসছিস তাহলে এতো ডেকোরেশন কিসের??

ধীরঃ আই থিঙ্ক কোন ফাংশন আছে মেবি।

শুভঃ ভেতরে গেলেই বুঝতে পারবো।

শুভ সামনে এগিয়ে কলিং বেল বাজানোর জন্য নিজের হাত তুলে। হাত কাঁপছে শুভর। এতো বছর পর আজ নিজের বাড়ির চৌখটে দাঁড়িয়ে আছে ও। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। জমানো কষ্ট গুলো পানি হয়ে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নিজেকে স্ট্রং করার চেষ্টা করছে শুভ।

শুভঃ No Shuvo you can’t become week. নিজেকে সামলা you can do this.

শুভ বেল বাজানোর জন্য আবার হাত উঠাতেই দরজা খুলে যায়।

শুভ স্থির ভাবে তাকিয়ে আছে সামনে দাঁড়ানো মানুষটির দিকে। যাকে এক পলক দেখার জন্য ছোট থেকে ছটফট করতো শুভ যার আদর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য নিজের সব দিতে রাজি ছিল। যার কোলে মাথা রেখে ঘুমানোর জন্য কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছে শুভ। আজ সেই মানুষটি ওর চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে শুভর। হাতের মুঠো শক্ত বন্ধ করে নিজের আবেগ কন্ট্রোল করতে চেষ্টা করছে ও।

মায়াঃ শ শুভ ( কান্না জড়িত কন্ঠে)

মায়ের মুখে নিজের নাম শুনে চোখের পানি সামলাতে পারে নি শুভ। অবাধ্য অশ্রু গুলো চোখের কোন দিয়ে গড়িয়ে পরলো।

মায়া শুভকে জড়িয়ে ধরার জন্য এগোতেই শুভ দুই তিন কদম পিছিয়ে গেল। মায়া নিজের যায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে গেল। শুভর রাগ অভিমান সব কিছু বুঝতে পারছে তিনি।

শুভঃ মিসেস রেজওয়ান আমরা কি ভেতরে আসতে পারি?? না মানে আপনি এভাবে সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে আমাদের হয়তো বাইরেই থাকতে হবে।

মায়া শুভর দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে এক সাইড হয়ে যায়। মায়া সাইড হতেই শুভ ভেতরে ঢুকে যায় আর ওর পিছু পিছু বাকিরা। সাদ আর রোহিত জানে যে শুভ কেন ওর মায়ের সাথে এমন বিহেভ করছে তাই ওরা একটুও অবাক হলো না।

শুভঃ আজকে কি কোন ফাংশন আছে চাচা। ( সামনে কাজের লোককে জিঙ্গেস করলো)

মায়াঃ আমার ছেলে ফিরেছে এটা কি কোন উৎসবের থেকে কম।

মায়ার কথায় শুভ অবাক চোখে মায়ার দিকে তাকায়।

মায়াঃ মা হই তোমার। তুমি আমাকে না জানালে আমি জানতে পারবো না এটা তোমার মনের ভূল শুভ। তোমার প্রতি মুহূর্তের খবর রাখি আমি। দূরে থেকেও তোমাকে নিজের কাছে রেখেছি।

মায়ার কথায় শুভ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,,,

শুভঃ I wish আপনি আমাকে নিজের কাছে রাখতেন। ( ছলছল চোখে)

শুভর কথাটা মায়ার বুকে গিয়ে লাগছে। অনেক বেশি কষ্ট লাগছে ওর নিজের ছেলের মনে নিজের জন্য এতো ঘৃণা দেখে।

মায়াঃ যেদিন তুমি সত্যটা জানতে পারবে আমার বিশ্বাস তুমি বুঝবে আমি কেন তোমাকে নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছি। ( মনে মনে)

সাদঃ আসসালামু আলায়কুম আন্টি আমি সাদ।
( মায়ার সামনে দাঁড়িয়ে)

মায়াঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। ( সাদের গালে হাত রেখে)

ধীরঃ হ্যালো আন্টি আ’ম ধীর।

মায়াঃ হ্যালো ডিয়ার। (মুচকি হেসে)

রোহিত মায়ার সামনে এগিয়ে আসলো,,,

রোহিতঃ Hey pretty lady you are so beautiful ( মায়ার গাল টেনে)

রোহিতের কাজে মায়া হেসে দেয় সাথে বাকিরাও।

সাদঃ Don’t mind auntie ও একটু পাগল টাইপের ? ও রোহিত।

মায়াঃ Thank you Rohit আমার এতো তারিফ করার জন্য ( রোহিতের গাল টেনে)

রোহিতঃ My pleasure beautiful lady (একটু ঝুঁকে)

মায়াঃ তোমরা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো অনেক টায়ার্ড হয়ে গিয়েছো না।

রোহিতঃ you are right auntie তাছাড়া রাস্তা ঘাটে যেসব lady witch রা ঘুরে অবস্থা খারাপ হয়ে যায় ?

মায়াঃ মানে??

সাদঃ কিছুনা আন্টি ও তো এমনি অলওয়েজ ফান করে ?

মায়াঃ রহিম ওদেরকে ওদের রুম দেখিয়ে দাও।

রহিমঃ জি আচ্ছা চলেন।

ধীর সাদ আর রোহিত রহিমের পিছু পিছু চলে যায়।

শুভ যেতে নিলে মায়া ওকে পিছন থেকে বলে,,,

মায়াঃ তোমার রুম যেমন রেখে গিয়েছিলে তেমনি আছে কিচ্ছু পরিবর্তন হতে দেই নি আমি।

শুভঃ আজকাল তো মানুষের মন পরিবর্তন হয়ে যায় সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা পরিবর্তন হয়ে যায় এটাতো শুধু মাত্র একটা কক্ষ। ( তাচ্ছিল্য হেসে)

শুভ কথাটা বলে সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর,,,

ফোনে কথা বলতে বলতে সামনে এগুচ্ছিলো ধীর। হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে নেয় ও। নিজেকে সামলে নিয়ে সামনের মানুষটির হাত ধরে ওকে পরে যাওয়া থেকে বাঁচায় ধীর।

হালকা ব্রাউন কালার করা লম্বা চুল, চোখে গোল ফ্রেমের চশমা, গোলাপি ঠোঁট , ফর্সা গায়ের রং।
মেয়েটির হাত টান দিয়ে নিজের বুকে আনে ধীর।
মেয়েটি চোখ বন্ধ করে আছে। অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে ধীর মেয়েটির দিকে। আস্তে আস্তে চোখ খুলে সামনে ধীরকে দেখে সরে দাঁড়ায় মেয়েটি।

ধীরঃ Are you okay??

মেয়েটিঃ হুম। thank you.

ধীর নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,,

ধীরঃ আ’ম ধীর। শুভর ফ্রেন্ড।

মেয়েটিঃ আ’ম সিয়া।

ধীর খেয়াল করলো সিয়ার হাতে একটা গিফট বক্স।

ধীরঃ গিফ্ট!!! কার জন্য??

সিয়াঃ ভাইয়ার জন্য (অনেক খুশি হয়ে) আসলে ভাইয়া এতো বছর পর প্রথম বাড়িতে এসেছে তাই ওনার জন্য অনেক খুঁজে এটা নিয়ে এসেছি। ( কথা গুলো বলার সময় সিয়ার চোখে পানি চলে আসছিলো।)

ধীরঃ অনেক ভালোবাসো শুভ কে তাইনা।

সিয়াঃ অনেকের থেকেও বেশি। আমি ভাইয়ার সাথে দেখা করে আসছি।

সিয়া দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায় আর ধীর ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আনমনে বলে ফেলল।

ধীরঃ Something is really special in you.

সিয়া শুভর রুমের দরজায় উকি মেরে দেখে শুভ বারান্দা দিকে তাকিয়ে আছে। আস্তে আস্তে শুভর পিছনে এসে দাঁড়ালো সিয়া।

পিছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনে ফিরলো শুভ। সিয়াকে শুধু ছবিতে দেখেছিলো ও আজ সামনা সামনি দেখতে পারছে নিজের বোনকে শুভ। ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরতে বোনটাকে কিন্তু কিছু একটা ভেবে ঘুরে দাঁড়ায় শুভ। সিয়া ভেবেছিলো শুভ ওকে জড়িয়ে ধরবে কিন্তু শুভ ঘুরে যাওয়ায় মন ভেঙ্গে যায় ওর।

নিজেকে সামলে নিয়ে শুভর সামনে গিফ্টটা তুলে ধরে সিয়া।

সিয়াঃ Welcome home ভাইয়া। ( হাসি মুখে)

সিয়ার মুখে ভাইয়া ডাক শুনে চোখে পানি চলে আসে শুভর কিন্তু নিজের দূর্বলতা ও সিয়ার সামনে আনতে চায় না।

সিয়ার দিকে ঘুরে ওর হাত থেকে বক্সটা নিলো শুভ। বক্সটা খুলে একটা কাপ বের করলো ও ওটাতে লেখা Best Brother In The World.

সিয়া হাসি মুখে তাকিয়ে আছে শুভর দিকে। শুভ সিয়ার দিকে তাকিয়ে হাত থেকে কাপটা ফেলে দেয়। কাপটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। সিয়া কান্না জড়িত চোখে চুরমার হয়ে যাওয়া কাপটির দিকে তাকিয়ে আছে।

শুভঃ এসব নাটক আমার সামনে করার কোন দরকার নেই। দূরে থাকো আমার থেকে যেমন এতো বছর ছিলে। Get out from here ( চিৎকার দিয়ে)

শুভর চেঁচানোতে সিয়া ভয়ে কেঁপে উঠে। কান্না করতে করতে রুম থেকে দৌড়ে বেড়িয়ে যায় সিয়া।

সিয়া বেড়িয়ে যেতেই শুভ ওখানেই হাটু গেড়ে বসে পরে। হাত দিয়ে কাপের টুকরা গুলো কুড়িয়ে নেয়। দুই হাতের শক্তি ব্যবহার করে কাপটা জোরা লাগিয়ে ফেলে ও।

লেখাটাতে নিজের ঠোঁট ছোয়ালো শুভ।

শুভঃ দূরে থাকো আমার থেকে সিয়ু। আমার আশেপাশে থাকলে আমি তোমার ক্ষতি করে বসবো। আমার থেকে যত দূরে থাকবে ততই সেফ থাকবে। ছোট বেলায় নিজের অজান্তেই তোমাকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছিলাম। এখন তোমার কোন ক্ষতি সহ্য করতে পারবো না। ( কান্না জড়িত কন্ঠে)

আমি এখানে শুধু নিজের অজানা প্রশ্নের উত্তর জানতে এসেছি। উত্তর যানা হয়ে গেলে আবার দূরে চলে যাবো যেখানে আমার ছায়াও তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ( উঠে দাঁড়িয়ে)

To be continued…..

ডিয়ার রিডার্স সবাই জানো যে গল্পের নাম ডেভিল এন্ড এঞ্জেল লাভ। কিন্তু এই গল্পে শুধু হিরো ডেভিল আর হিরোইন এঞ্জেল তা না। এখানে আরো কয়েকজন ডেভিল এন্ড এঞ্জেল আছে। তাই শুধু শুভ আর রশনি লিড না বাকি জুড়ি গুলোও লিড।

Shuvo ❤Roshni
Dheer❤Siya
Saad❤Tina
Rohan❤Nishi

এখান থেকে শুভ রশনি বাদে কে ডেভিল আর কে এঞ্জেল এটা সিক্রেট।

#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_7

সিয়া কান্না করতে করতে ছাদে চলে আসলো। ছাদের এক কোনায় হাটু ভাজ করে মুখ গুঁজে বসে কান্না করতে লাগলো ও। পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মুখ তুলল সিয়া। তাকিয়ে দেখে ধীর ওর পাশেই বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

ধীরকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিজের চোখ মুছে ফেলল সিয়া। উঠে যেতে নিলেই হাতে টান অনুভব করল ও। পিছনে ফিরে দেখে ধীর ওর হাত ধরে আছে। ধীর ইশারায় সিয়াকে বসতে বলল,,, সিয়াও বাধ্য মেয়ের মতো চুপচাপ বসে পরলো। মাথা নিচু করে আছে সিয়া। ওর অনেক অকওয়ার্ড লাগছে এভাবে ধীরের পাশে বসে থাকতে। তবুও বসে আছে কেন তার উত্তর জানা নেই ওর।

ধীরঃ শুভর ব্যবহারে অনেক খারাপ লাগছে তাইনা??? ( নরম স্বরে)

সিয়া অবাক চোখে ধীরের দিকে তাকালো। সিয়ার তাকানো তে ধীর কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল,,,

ধীরঃ আব আসলে ওর সাথে দেখা করতে ওর রুমে যাচ্ছিলাম তখনই তোমাদের কথা শুনতে পারলাম আরকি। ( চাপা হেসে)

সিয়াঃ ওহ (মন খারাপ করে) আসলে ভূল আমার। আমার উচিত হয়নি ভাইয়ার সামনে যাওয়ার। আমার বুঝা উচিত ছিল যে ভাইয়া আমাকে হেট করে। আর করবেই বা না কেন একমাত্র আমার কারনে ভাইয়া এতো বছর নিজের ফেমিলি থেকে দূরে ছিলো। মাম্মাম এর কাছ থেকে দূরে ছিলো। I deserve it ( কান্না করতে করতে)

সিয়ার কান্না ধীরের সহ্য হচ্ছে না। সিয়াকে এভাবে কাঁদতে দেখে মনে হচ্ছে যেন কেউ ওর বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছে।

ধীর সিয়ার আরেকটু কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে। নিজের অজান্তেই সিয়াও ধীরকে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ গুঁজে কান্না করতে থাকে।

ধীরঃ সিয়া প্লিজ ডোন্ট ক্রাই। দেখো শুভ তোমাকে হেট করে না। বোন হও তুমি ওর আর কোন ভাই নিজের বোনকে ঘৃণা করতে পারে না। শুভর মনে শুধু অভিমান জমে আছে যা সময়ের সাথে গলে যাবে। সব ঠিক হয়ে যাবে তুমি দেখো। প্লিজ কান্না অফ করো সিয়া প্লিজ। ( সিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করছে)

হঠাৎ সিয়ার ঘোর কাটলো আর ও বুঝতে পারলো যে ও ধীরকে জড়িয়ে ধরে আছে। একটা ঢোক গিলল সিয়া ধীরকে ছারতেও পারছে না কারন ওকে ফেস করার মতো ক্ষমতা সিয়ার নেই। লজ্জায় গাল লাল হয়ে গেছে সিয়ার।

ধীর এখনো সিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এক আলাদা অনুভূতি হচ্ছে সিয়ার যা কখনো আগে হয়নি। ইচ্ছে করছে এভাবেই ধীরের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রাখতে। কিন্তু এটা সম্ভব না। সিয়া মনে সাহস জাগিয়ে হঠাৎ ধীরকে হালকা ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে নিচে নেমে গেলো।

ধীর বেকুবের মতো তাকিয়ে আছে সিয়ার যাওয়ার দিকে। পরক্ষণেই সিয়ার কথা ভেবে ফিক করে হেসে দিলো ও।

ধীরঃ পাগল মেয়ে। কিছু একটা তো স্পেশাল আছে তোমার মধ্যে যা আমাকে তোমার প্রতি দুর্বল করে তোলে। ( আনমনে)

হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতেই মন খারাপ হয়ে যায় ধীরের।

ধীরঃ কি করছিস ধীর এটা তোর লক্ষ না। Concentrate on your goal. ভূলে জাসনা যে তুই কেন এখানে এসেছিস। তোকে দূর্বল হলে চলবে না। ( মুখ শক্ত করে নিজে নিজে বলল)

সিয়া নিজের রুমে এসে বুকে হাত রেখে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে আর ব্লাশিং হচ্ছে। এক অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে সিয়ার যা আগে কখনো হয় নি।

❤ ❤ ❤

কলেজ থেকে বাসায় এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো রশনি। চোখ বন্ধ করতেই শুভ চেহারা ভেসে উঠে। বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে ও।

রশনিঃ What the,,, এটা কি হলো চোখ বন্ধ করতেই ও ওই ছেলের চেহারা ভেসে উঠছে কেন। ( অবাক হয়ে নিজেই নিজেকে জিঙ্গেস করলো)

আবার ট্রাই করি বলে রশনি আবার চোখ বন্ধ করতেই শুভকে দেখতে পায় ওর নীল চোখের অদ্ভুত চাহনি।

রশনিঃ এটা কি হচ্ছে আমার সাথে আমি একটু ঘুমাতে চাই ?

দরজায় টোকা পরতেই পাশে তাকায় রশনি।

সার্ভেন্টঃ বড় ম্যাডাম আপনাকে নিচে আসতে বলেছে।

রশনিঃ আসছি।

সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে ও। সোফায় নাহার আর তাহির বসে ছিলো। রশনি গিয়ে তাহিরের পাশে বসলো।

রশনিঃ ডেকেছিলে মাম্মাম??

নাহারঃ হ্যাঁ একটা কথা বলার ছিল।

রশনিঃ কিইই কথা??

তাহিরঃ তোমার মায়া আন্টির ছেলে ফরেন থেকে এসেছে তাই উনি একটা পার্টি থ্রো করেছে তাই রাতে রেডি হয়ে থেকো ওকে।

রশনি এক লাফে দাঁড়িয়ে যায়।

রশনিঃ রিয়েলি বাবাই আমরা আজকে সিয়ুদের বাসায় যাবো ( অনেক খুশি হয়ে )

তাহিরঃ ইয়েসস আর হ্যাঁ তিনারা তো আসবেই তোমার নিউ ফ্রেন্ড কি যেন নাম??

রশনিঃ নিশি!!

তাহিরঃ হ্যাঁ নিশি ওকেও কল করে ডেকে নিও। ( রশনির গাল টেনে)

রশনিঃ Thank you বাবাই আমি এক্ষুণি নিশি কে কল করে ব‌লছি আসতে।

❤❤❤

ডাইনিং টেবিলে বসে সবাই খাবার খাচ্ছে। সিয়া শুভর পাশে বসেছে আর ধীর সিয়ার বরাবর। সাদ আর রোহিত পাশাপাশি বসেছে আর বরাবর চেয়ারে বসেছে মায়া।

ধীর এক বারের জন্যও সিয়ার দিকে তাকায় নি। সিয়ার এতে বেশ খারাপ লাগছে। সিয়া ভাবছে হয়তো তখন ওভাবে ধাক্কা দেওয়া ওর ঠিক হয় নি।

শুভ নিচে তাকিয়ে চুপচাপ খাবার খাচ্ছে। আর মায়া শুভকে দেখে আড়ালে নিজের চোখ মুচছে।

রোহিতঃ ওয়াও এগুলো সব বাঙ্গালী ফুড লুকিং ইয়াম্মি ?

সাদঃ খাদক নাম্বার ওয়ান ?

রোহিতঃ হোয়াট ইজ দিস খাদক ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)

সাদঃ খাদক মিন্স গুড এন্ড হ্যান্ডসাম বয় ??

সবাই মুখ চেপে হাসছে।

রোহিতঃ রিয়েলি সাদ? ব্রো তুই আমার তারিফ করলি I’m so proud of me ? তুই ঠিক বলছিস I’m a khadok ??

এবার সবাই জোরে জোরে হেসে দিলো। সিয়া হাসতে হাসতে ওর গলায় খাবার আটকে যায় আর ও কাশতে থাকে।এটা দেখে শুভ আর ধীর দুজনেই ঘাবড়ে ওর সামনে পানির গ্লাস ধরে। ধীর নিজের গ্লাস নামিয়ে নেয় আর সিয়াকে শুভ নিজের হাতে পানি খাইয়ে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়।

সিয়া শুভর চোখে ওর জন্য টেনশন আর ভালোবাসা দুটোই দেখতে পাচ্ছে। চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল সিয়ার। সিয়াকে কাঁদতে দেখে শুভ অস্থির হয়ে ওকে জিঙ্গেস করলো,,,

শুভঃ Are you ok siyu.

সিয়া মাখা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল। শুভ সরে আসলো।

মায়াঃ তোমার জন্য আজকে একটা গেট টুগেদার পার্টি রেখেছি শুভ। সন্ধ্যায় সব মেহমানরা আসতে শুরু করবে।আমাদের বিজনেস অর্গানাইজেশন এর পার্টনার রাও আসবে তাই একটু প্রিপারেশন নিয়ে রেখো।

শুভঃ আপনার কোন পার্টিতে আমি ইন্টারেস্টেট না। তাই আমার আশা বাদ দিয়ে দেন।
বলে উঠে চলে যেতে নেয়,,,

মায়াঃ আমার জন্য না হলেও নিজের বাবার জন্য পার্টিটা এটেন্ড করো। উনার উপর তো তোমার কোন রাগ নেই।

বাবার কথা শুনতেই শুভ থমকে যায়।

(ওকে যেদিন হোস্টেলে পাঠানো হবে তার আগের দিন রাতে ওর বাবা মারা যায়। কিভাবে মরে এটা আদৌ জানতে পারে নি শুভ। ওর সামনে ওর বাবার লাশ পরে ছিলো। অনেক ভয়ঙ্কর মৃত্যু দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু বাবাকে দাফন করার সুযোগ ও মায়া ওকে দেয় নি তার আগেই ওকে পাঠিয়ে দেয় সেই অজানা দেশে অচেনা মানুষের ভিড়ে। এজন্য আরো বেশী রাগ জমে আছে মায়ার প্রতি শুভর)

শুভ পিছনে না ফিরেই বলল,,,

শুভঃ পার্টিতে থাকবো কিন্তু আপনার জন্য না আমার বাবার জন্য।

কথাটা বলে সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে যায় শুভ।

রোহিতঃ আন্টি আঙ্কেলের ডেথ কিভাবে হয়েছিলো???

মায়াঃ এক্সিডেন্টে মারা গেছেন তিনি। (কিছু কথা অজানাই থাকা ভালো।মনে মনে)

রোহিতঃ ওহ স্যরি।

❤❤❤

রাতে,,,,

বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আস্তে আস্তে সব মেসমান আসতে শুরু করেছে।

ধীর রেডি হয়ে পুরো বাড়ি ঘুরে দেখছিলো। হঠাৎ ওর চোখ আটকে যায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সিয়ার দিকে। আকাশি রঙের গাউন চুল গুলো খোপা করা সিম্পল জুয়েলারী হালকা মেকআপ আর চোখে সেই গোল ফ্রেমের চশমা সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে সিয়াকে।

ধীর ঘোর লাগা চোখে সিয়ার দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ ধীরের কদম থেমে যায়। রাগে চোখ দুটো অসম্ভব লাল হয়ে যাচ্ছে। সিয়া একটা ছেলের সাথে কথা বলছে তাও হেসে।

সিয়া পিছন দিকে ধীরকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। নেভি ব্লু শার্ট, নেভি ব্লু কালারের কোট, প্যান্ট চুলগুলো জেল করা।

হঠাৎ ধীরের চোখের দিকে তাকাতেই আতকে উঠে সিয়া। রাগে চেহারা লাল হয়ে গেছে চোখ দিয়ে মনে হয় আগুন বেরুচ্ছে। এই মুহুর্তে ধীরকে অনেক ভয়ঙ্কর লাগছে সিয়ার কাছে।

❤❤❤

রোহিত আর সাদ রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে।

( রোহিত স্কাই ব্লু কালারের শার্ট আর হোয়াইট প্যান্ট পরেছে। চুল গুলো স্পাইক করে স্টাইল করা। অনেক মেয়েরাই ওর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে)

( সাদ হোয়াইট শার্ট , হোয়াইট কোট আর প্যান্ট পরেছে। চুল গুলো খাড়া খাড়া যার জন্য ওকে আরো বেশি এট্রাকটিভ লাগছে)

রোহিত দেখে মেয়ে গুলো ওদের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। রোহিত মেয়ে গুলোর দিকে তাকিয়ে একটা চোখ টিপ মারলো। আর ইশারায় হায় বলল। মেয়ে গুলো ও ইশারায় হায় বলছে।

সাদঃ শুরু হয়ে গেল এর মেয়েদের পিছু পিছু ঘুরা ঘুরি ?

রোহিতঃ ওয়েট ওয়েট সাদ মেয়েরা আমার পিছু ঘুরে আমি ওদের পিছু না ওকে ?

সাদঃ আমার সবই জানা আছে ?

রোহিতঃ জ্যালাস হা? কারন মেয়েরা আমার পিছু ঘুরে তোর না। ?

সাদ রাগী চোখে রোহিতের দিকে তাকাতেই রোহিতের চুপ হয়ে যায়।

রোহিতঃ এমন রাগ দেখাস বলেই তো মেয়েরা 100 হাত দূরে থাকে তোর থেকে। ?আল্লাহ জানে কোন মেয়ের কপাল পুরেছে যে তোর লাইফে আসবে Poor girl ?.( মনে মনে)

রোহিত খেয়াল করলো সব মেয়েরা সিঁড়ির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। রোহিত সিঁড়ির দিকে তাকাতেই দেখে শুভ নিচে নামছে with full attitude.

শুম ব্লাক শার্ট আর কোট, ব্লাক প্যান্ট হাতে ইম্পোর্টেড ব্লাক ডায়মন্ড ওয়াচ। চুল গুলো সিল্কি যার কারনে কপালের সামনে চলে আসছে।

সাদঃ সবার ক্রাশ বয় চলে এসেছে এখন আর কেউ তোর দিকে তাকাবে না ?

রোহিত তাকিয়ে দেখে যে মেয়েরা এতক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো তারা এখন শুভর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।

সাদঃ আব তেরা কেয়া হোগা রোহিত ?

রোহিত অসহায় ভাবে সাদের দিকে তাকালো।

রোহিতঃ ??

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here