♠#The_Vampire_King♠,13,14
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_13
♠♠ In College ♠♠
মিমঃ তোর জন্য আজও লেট হলো দেখলি,,,
শবনমঃ আমি কি করলাম তুমি যেই স্পীডে গাড়ি চালাও ঠেলা গাড়ি ও এর থেকে ফাস্ট চলে।
মিমঃ আমি ট্রাফিক রুল অনুযায়ী ড্রাইভ করি ওকে তোদের মত না ডিসিপ্লিন ছাড়াই চালাই।
শবনমঃ হাহ সব সময় লেট হলে আমার দোষ।
শবনম আর মিম গাড়ি পার্ক করে ঝগড়া করতে করতে ভিতরে যাচ্ছে। আজকে অনেক লেট হয়ে গেছে তাই মিম রেগে গেছে শবনমের উপর।
ক্লাসের সামনে চলে এসেছে ওরা। সামনে শবনমদের ক্লাস আর উপরের ফ্লোরে মিমের।
মিমঃ ও শিট ক্লাস শুরু হয়ে গেছে ইয়ান স্যার ব্যান্ড বাজিয়ে দিবে। ( মনে মনে)
শবনমঃ বাই আপি আমার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে।
মিমঃ হুম সাবধানে যা।
মিম দৌঁড়ে ওর ক্লাসে চলে যায় আর শবনম ওরটায়।
♠♠ In Class ♠♠
ইয়ান মিমদের ক্লাস নিচ্ছে এমন সময় মিম দৌঁড়ে ক্লাসে আসলো।
মিমঃ মে আই কাম ইন স্যার,, ( হাঁপাতে হাঁপাতে)
মিমের কন্ঠ শুনে ইয়ান দরজার দিকে তাকালো। মিমকে দেখা মাত্রই বুকের ভিতর একটা রাহাত অনুভব করছে ও। এতো দিন এই চেহারাটা দেখার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিল ওর মন। আজ অবশেষে দেখা মিলল তার।
ইয়ানের দৃষ্টি এতোই গভীর ছিল যেটা মিম অনেক ভালো ভাবে অনুভব করতে পারছে। এই দৃষ্টির মায়াতেই ও বারবার পরে নিজেকে সামলে উঠতে পারে না।
মিম নিজের দৃষ্টি নামিয়ে নিল। আর ইয়ান নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,,,
ইয়ানঃ ইয়েস প্লিজ কাম।
মিম মাথা নিচু করে ক্লাসে প্রবেশ করলো তারপর নিজের সিটে বসে পরলো।
মিমের দিকে এক পলক তাকিয়ে ইয়ান ক্লাসে মনযোগ দিল।
♠♠ In Other Class ♠♠
ক্লাসের বাইরে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে শবনম। আশেপাশে কয়েক জন স্টুডেন্ট আসা যাওয়া করছে আর শবনমকে দেখে হাসছে।
শবনম তো রাগে দুঃখে পারে না ক্লাসের ভিতরের মানুষটির চুল ছিরে শাক রান্না করে জংলিদের খাইয়ে দেয়।
♠♠ Some Time Ego ♠♠
শবনম মিমকে বিদায় দিয়ে নিজের ক্লাসের সামনে আসে। ক্লাসে আজকে অচেনা কেউ ক্লাস করাচ্ছে। সে বোর্ডের দিকে দাঁড়িয়ে আছে তাই তাকে দেখতে পারছে না শবনম।
শবনমঃ ক্যান আই কাম ইন স্যার ( সুন্দর করে বলল )
শবনমের কথায় ক্লাসের সবাই ওর দিকে তাকালো। আশিশ আয়রা ধ্রুব আর কোয়েল ও আছে ক্লাসে। শবনম ওদের হাই দিল কিন্তু ওরা শবনমকে ঘড়ি দেখিয়ে বলল দশ মিনিট লেট।
শবনম ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে স্যারের দিকে তাকায় কিন্তু শবনমের ডাকে স্যার তাও পেছনে ফিরলেন না। উনি ওনার মত করে বোর্ডে লিখছেন।
শবনমঃ ব্যাটা কি বয়রা নাকি,,, কুল শবনম আরেক বার ডাক। ( মনে মনে)
স্যার আমি কি ভিতরে প্রবেশ করতে পারি ( আবারো কিউট করে বলল।)
স্যার তাও ওর কথায় রেসপন্স করছে না। শবনমের এবার প্রচুর রাগ উঠলো তাই ও জোরে চেঁচিয়ে বলল,,,,
শবনমঃ স্যাররররররররর আপনি কি বয়রা আমি কখন থেকে বলছি মে আই কাম ইন মে আই কাম ইন আপনার কানে যায় না ( রেগে )
এবার স্যার পেছনে ঘুরে দাঁড়ালেন। স্যারকে দেখে শবনম 880 ভোল্টের বিজলির ঝটকা খেল। ওর মুখ অটোমেটিকলি হা হয়ে গেল।
শবনমঃ মি. বাদামী চোখ ( অবাক হয়ে)
আঁধার শবনমের দিকে তাকিয়ে ওর ডান হাত উল্টো করে তুললো তারপর বাম হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঘড়ির দিকে ইশারা করে বলল,,,
আঁধারঃ ইউ আর ইলেভেন মিনিট থার্টি টু সেকেন্ড লেট।
শবনম আঁধারের কথায় নিজের হাত তুলে ওর ঘড়ির দিকে তাকালো একদম কারেক্ট বলসে আঁধার।
আঁধারঃ আমার ক্লাসে লেট লতিফদের কোন জায়গা নেই তাছাড়া যারা সময়ের কদর করতে যানে না তাদের কথার ও কোন কদর আমি করি না। গেট আউটটটটট। ( ধমক দিয়ে)
আঁধারের ধমকে বেচারী ভয়ে চুপসে গেছে। আঁধার নিজের হাত নামিয়ে প্যান্টের দু পকেটে গুঁজে চোখ ছোট ছোট করে শবনমের ভীতু ফেস ইন্জয় করছে। পরক্ষনেই শবনমের খেয়াল হলো আঁধার ওদের ক্লাসে কেন।
শবনমঃ আচ্ছা আমি ভয় পাচ্ছি কেন এই বাদামী চোখ ওয়ালা কে। আর এটা গোপাল ভাঁড় থুক্কু ইমতিয়াজ স্যারের ক্লাস তাহলে এই বাদামী চোখ ওয়ালা এখানে কি করছে। আর আমি কেন এর থেকে পারমিশন নিচ্ছি ইনি কি টিচার নাকি! আর ইনি কি সুন্দর করে আমাকে ধমকাচ্ছে যেন আমার টিচার সাহস দেখো এই বাদামী চোখ ওয়ালার। ( মনে মনে)
শবনম আঁধারের পারমিশন না নিয়েই ভিতরে ঢুকে বলতে শুরু করে,,,
শবনমঃ এক্সকিউজ মি আপনি আমাদের ক্লাসে কি করছেন আর আমি লেট আসি কি বা তারাতারি এতে আপনার কি? আর আমার গোপাল ভাঁড় থুক্কু ইমতিয়াজ স্যার কোথায় এটা তো ওনার ক্লাস। আপনার লজ্জা করে না টিচারের জায়গায় দাঁড়িয়ে টিচার গিড়ি করতে। কই আমাদের ইংলিশ টিচার কই,, স্যারকে আমি এক্ষুনি ডেকে আনছি তারপর উনি আপনাকে টাইম শিখাবেন,,, ( এক নাগাড়ে কথা গুলো বলে শবনম ক্লাসের বাইরে পা রাখে)
ধ্রুবঃ এখন থেকে মি. রেজওয়ান ই আমাদের ইংলিশ টিচার শবনম,,, ( শবনমকে থামিয়ে)
ধ্রুবর কথায় শবনমের পা থেমে গেল। ও নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এই মাত্র ও আঁধারের সাথে বেয়াদবি করলো আর সেই আঁধারই নাকি ওদের টিচার।
ভয়ে ভয়ে কয়েকটা ঢোক গিলল শবনম তারপর হাসার চেষ্টা করে আঁধারের দিকে ফিরল।
আঁধার অগ্নি দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে শবনম কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।
শবনমঃ আব মেরা কেয়া হোগা কোয়ি উঠালে মুঝে। ( মনে মনে)
আঁধারঃ টিচার গিড়ি কাকে বলে সেটা আমি আপনাকে বুঝাচ্ছি,, ( দাঁতে দাঁত চেপে)
ধ্রুবঃ স্যার ও বুঝতে পারে নি,,,
আঁধারঃ ডিড আই আস্ক ইউ এনিথিং ধ্রুব? ( ধমক দিয়ে)
ধ্রুবঃ নো ( মাথা নিচু করে)
আঁধারঃ দ্যান ডোন্ট ইন্টারফেয়ার,,, আমার কথার উপর কেউ কথা বলুক তা আমার অপছন্দ।
ধ্রুবঃ স্যরি স্যার ( নিজের রাগ কন্ট্রোল করে)
তনু হাসছে ওদের অবস্থা দেখে এতে শবনমের আরো রাগ লাগছে। ইচ্ছে করছে গিয়ে ওর মুখে চক পুরে দিতে।
শবনমঃ আব স্যার আসলে কি,,, আমি তো জানতাম ই না যে আপনি আমাদের নিউ টিচার হিহি ( মিছামিছি হেসে)। এই অবুঝ বালিকাকে ক্ষমা করে দেন প্লিজ নেক্সট টাইম আমি ফজরের আজানের সময় কলেজে হাজির হয়ে যাবো প্রমিস ( সিরিয়াসলি কি বলছিস এগুলো ?)।
আঁধারঃ ফালতু কথা বন্ধ করো অ্যান্ড গেট আউটটটটট ফ্রম মাই ক্লাস,,, বাইরে গিয়ে কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকো গোওও ( চিল্লিয়ে)
শবনমঃ স্যারররর ( অসহায় ফেস করে)
আঁধারঃ আই সেইড লিভ,,,
শবনমঃ যাচ্ছিতো এমন করেন কেন,,, ( রেগে )
শবনম রাগে গজগজ করতে করতে বাইরে কান ধরে দাঁড়িয়ে পরে।
♠♠ In Present ♠♠
শবনমঃ যখন থেকে আমার লাইফে এন্ট্রি নিয়েছে তখন থেকেই লাইফ টা আমার ভাজা পুরি হয়ে গেছে। সব সময় আমাকে ইনসাল্ট করে ভাবে কি নিজেকে এই আঁধার রেজওয়ান। শয়তান ইডিয়েট রাবিশ খবিশ জলহস্তী কোথাকার।
আমাকে!!( নিজের দিকে আঙ্গুল তাক করে ) আমাকে সবার সামনে হিউমিলেট করে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে হাও ডেয়ার হি,,, ( আবার কানে ধরলো)
দেখে নিব তোমাকে আমি বাদামি চোখ ওয়ালা উগান্ডার প্রেসিডেন্ট আঁধার রেজওয়ান। তোর থেকে তো ওই ওবামা দেখতে সুন্দর। ব্যাটা কালা হলেও ওর মন পরিস্কার আছে আর তুই? তুই বাইরে দিয়ে ধলা আর ভিতর দিয়ে কালা। নিষ্ঠুর ক্রূর মানুষ।
আর তনুকি বাচ্চি তোর শিক্ষা হয় না বারবার আমার কাছে গোল খেয়ে। এবার তোকে আমি এমন শিক্ষা দিব যে আমার উপর হাসা ছুটে যাবে।
কান ধরে আঁধারকে আর তনুকে ঝারছে শবনম তাও মনে মনে।
আঁধারঃ অনেক তো বকলে এবার তো অফ যাও,,,
শবনম ঘাবরে চোখ বড় বড় করে পাশে তাকালো।
আঁধার কখন থেকে ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে ওর খেয়ালই নেই। কিন্তু নো টেনশন শবনমতো মনে মনে বকেছে আঁধার বুঝতে পারবে না,,, ( হয়তো)
শবনমঃ আমি কখন কাকে বকলাম আমিতো কান ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি স্যারররর( রাগ কন্ট্রোল করে দাঁতে দাঁত চেপে)
আঁধার শবনমের কথায় বাঁকা হেসে ওর দিকে ঝুঁকে আসলো। আঁধারকে ঝুঁকতে দেখে শবনম ও পেছনের দিকে ঝুঁকে যায়। আঁধার যতই এগিয়ে ঝুঁকছে শবনম ততই পিছিয়ে যাচ্ছে।
শবনম ঝুঁকতে ঝুঁকতে পরে যেতে নিলেই আঁধার ওর কোমর জড়িয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে নেয় শবনম এখনো নিজের কানে হাত দিয়ে আছে আর ওর চোখ আঁধারের চোখে আটকে আছে।
হার্ট বিটের গতি যেন বেড়ে যাচ্ছে ওর। গলাও শুকিয়ে যাচ্ছে ভয়ে।
আঁধার শবনমের দিকে আবার ঝুঁকতে শুরু করে আর শবনম এতে ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে। আঁধার শবনমের কানে কাছে নিজের মুখ নিয়ে লো ভয়েজে বলতে শুরু করে,,,
আঁধারঃ নিষ্ঠুর ক্রূর যাই হই না কেন তোমাকে এসব সহ্য করার অভ্যাস করতে হবে শবনম। আমার সাথে তোমার দেখা ব্যাড লাক না গুড লাক সেটা ধীরে ধীরে বুঝতে পারবে। আর হ্যাঁ নিজের ভাষা ঠিক করো সভ্য পরিবারের মেয়েরা এ ধরনের ভাষা ইউজ করে না।
আঁধারের কথায় শবনম ওর চোখ খুলল তারপর রাগি ভাবে বলল,,,
শবনমঃ আপনি কি ইনডাইরেক্টলী আমাকে অসভ্য বলছেন। ( রেগে)
আঁধার শবনমকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলে,,,
আঁধারঃ যা ভাবার ভাবতে পারো,,,
কথাটা বলেই আঁধার চলে যায় আর শবনম এবারো বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে।
আয়রাঃ স্যার চলে গেছে এবার তো নিজের কান ছাড়। ( শবনমের কাছে এসে)
আয়রার কথায় শবনমের ধ্যান ভাঙ্গলো। সাথে সাথে নিজের কান থেকে হাত সরিয়ে ফেলল শবনম।
ধ্রুবঃ শবনম জাস্ট শেক ইট অফ চল ক্যান্টিনে যাই।
কোয়েলঃ হ্যাঁ শবনম মন খারাপ করো না আঁধার ভাইয়া এমনই।
আয়রাঃ শবনম চল না। মাঝে মধ্যে এমন হয়। তুই প্লিজ চুপ করে থাকিস না তোর চুপ্পি আমার ভয় করে।
শবনম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে ঠিক করে বলল।
শবনমঃ আমি ঠিক আছি,,,
ধ্রুবঃ ওই এরোগেন্ট এর জন্য তুই মন খারাপ করছিস কেন বি কুল চল।
শবনমঃ হুম।
সবাই মিলে ক্যান্টিনে চলে যায়। মিমের ক্লাস শেষ তাই ওও ক্যান্টিনে সবাইকে জয়েন করে। শবনম পুরোটা সময় আঁধার কে নিয়ে ভেবেছে। ওর কাছে এই মুহুর্তে আঁধার ওর জীবনের সব চেয়ে বিরক্তিকর অধ্যায়। ওর কাছে আঁধার ওর জীবনে ভিলেন গিড়ি করতে এসেছে। মাথায় শুধু আঁধারের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে হোক সেটা ভিলেন হিসেবে। এখন আঁধার ভিলেন না হিরো সেটা শবনম হয়তো পরে বুঝতে পারবে।
To be continued…..
♠#The_Vampire_King♠
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_14
♠♠At Home ♠♠
শবনম আর মিম ক্লাসের পড়া শেষ করছে এক সাথে। মিম শবনমকে সবসময় গাইড করে ওর পড়ার ব্যাপারে। একজন বড় বোন হিসেবে যত দায়িত্ব আছে সব ও পালন করে।
শবনমঃ আমার কমপ্লিট ( খাতা বন্ধ করে খুশি হয়ে)
মিমঃ গুড। এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পর যা।
শবনম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সবে দশটা বাজে আর এতো তারাতারি ওর ঘুম কখনোই হবে না।
শবনমঃ দি এতো আর্লি ঘুম ইম্পসিবল। চল একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি। দেখ বাইরে কি সুন্দর ঠান্ডা বাতাস বইছে আর চাঁদটাও কত সুন্দর লাগছে। ( জানালার বাইরে তাকিয়ে)
মিমঃ তুই পাগল এতো রাতে বাইরে বের হলে খবর করিয়ে দিবে সবাই। এটা পাহাড়ী অঞ্চল শবনম। এখানে সন্ধ্যার সময় ই রাত হয়ে যায়। নিরব হয়ে যায় চারপাশ। তার উপর জঙ্গলের রাস্তা জঙ্গলি পশুর আতঙ্ক বেশি। সব যেনেও এরকম বায়না করা ঠিক নয়।
শবনমঃ উফফ দি ছোট থেকে বড় হয়েছি এখানে এতো ভয়ের কি আছে। আর আজ কি প্রথম লুকিয়ে বের হচ্ছি নাকি। এর আগেও তো কত বের হয়েছি। আর প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য তো রাতের আঁধারের যাঝে লুকিয়ে থাকে।
প্লিজ চল না বেশি দূর যাবো না ( বায়না করে)
মিমঃ না কোথাও যাওয়া হবে না। সবাই জেগে গেলে কি হবে ভেবেছিস।
শবনমঃ ভয় পাচ্ছিস কেন আমি আছি না। পেছনের ডোর দিয়ে বের হবো চল না। প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ ( বায়না করে )
মিমঃ ওকেইইইইই চল। তোকে মানানো আমার পক্ষে সম্ভব হবে না কখনো।
শবনমঃ Love u diii you r the best sister in the world ( মিমকে জড়িয়ে)
মিমঃ হুম জানি মাস্কা মারতে হবে না।
মিম আর শবনম পেছনের গেইট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। চাঁদের আলোয় পুরো চারপাশ আলোকিত হয়ে আছে। বাইরে খুব ঠান্ডা বাতাস বইছে আর বাতাসে অদ্ভুত সুন্দর ঘ্রান ভাসছে। আসলেই পুরো রাস্তা ফাঁকা। শবনম আর মিম বাড়ির সামনের রাস্তায় হাটছে।
শবনমঃ দেখলি দি কি সুন্দর পরিবেশ ( বাতাসে ঘ্রান নিয়ে)
মিমঃ হুম কিন্তু একটু নিরব আর ঠান্ডা ( হাত ভাজ করে)
শবনম এক পাশে আর মিম অপর পাশে হাটছে।
শবনমঃ আচ্ছা দি একটা প্রশ্ন করি? ( সামনের দিকে তাকিয়ে)
মিমঃ না করলেও কি তুই থামবি তাই বলে ফেল।
শবনমঃ তোর আর ইয়ান স্যারের মাঝে কিছু কি চলছে। ( আড়চোখে তাকিয়ে)
শবনমের কথায় থেমে যায় মিম। তারপর একটু রাগি ভাবে বলে।
মিমঃ কিসব ফালতু কথা বলছিস তুই। ইয়ান স্যার আর আমার মাঝে কি চলবে? উনি জাস্ট আমার টিচার দ্যাট্স ইটট।
শবনমঃ আরে তুই রাগছিস কেন আমিতো এমনিই জানতে চাইলাম। আসলে যখন তুই তোর নানু বাড়ি গিয়েছিলি ইয়ান স্যার বারবার তোর কথা জিজ্ঞেস করতো।
মিমঃ As a teacher জিজ্ঞেস করতেই পারে। তুই বেশি ভাবছিস। টপিক চেঞ্জ কর।
শবনমঃ বুঝি বুঝি আমি সব বুঝি। কুছ তো ঘোটালা হ্যায়। ( মনে মনে শয়তানি হেসে)
শবনমঃ ওকেইই টপিক চেঞ্জ। একটা গান শুনা না,, দেখ কি রোমান্টিক ওয়েদার,,
মিমঃ তুই গা তোর কাছে যখন এতোই রোমান্টিক লাগছে।
শবনমঃ ওকে ওকে ( গলা পরিষ্কার করে মিমের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ) “ বোল দো না জারা দিলমে জো হ্যায় ছুপা ম্যায় কিসি সে কাহুঙ্গি
নেহি ”
মিমঃ শবনমের বাচ্চি দাড়া তুইই ( তেড়ে এসে)
শবনম দৌঁড়ে সামনে চলে যায়। সানমেই একটা ক্যান পরে থাকতে দেখলো ও।
শবনমঃ দেখ দি মানুষ কিভাবে পরিবেশ নষ্ট করছে। বিয়ার খেয়ে ক্যান মাঝ রাস্তায় ফেলে রেখেছে। কেন ডাস্টবিনে ফেলতে কি কষ্ট লাগে যত্তসব। এসব মানুষদের ধরে গাছের সাথে উল্টা লটকিয়ে রাখা দরকার।
মিমঃ সবাই তো আর তোর মত জ্ঞানের দেবি না। তারা ফালায় নি তো কি হয়েছে তুই ফেলে দে।
শবনমঃ হ্যাঁ এখন এই মহান কাজটাও আমাকেই করতে হবে।
ব্যাস দৌঁড়ে গিয়ে ক্যান টাকে কিক করলো জোরে ও। ক্যান টা ছিটকে জঙ্গলে পরে যায়।
শবনমঃ ওয়ায় কি শট মেরেছি দেখলি দি। ( প্রাউড হয়ে)
মিমঃ এতক্ষন জ্ঞানের কথা বলে এখন নিজেই। ( কিছুটা রেগে)
শবনমঃ আরে দি এখন এতো রাতে ডাস্টবিন কোথায় খুঁজবো তাই আর কি।
ক্যান টা ছিটকে একটা ঝোপের ভিতর পরেছে। সেখান থেকে একটা নেকড়ে বেরিয়ে আসে। নেকড়েটির মাথায় হয়তো ক্যান টা লেগেছে। শবনম আর মিম নেকড়েটিকে দেখে ঘাবরে যায়।
শবনমঃ দ দি এটা কোথা থেকে আসলো?
মিমঃ তুই ক্যান মেরে ওকে ইনভাইট করেছিস গাধী।
শবনমঃ এটা আমাদের দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন? ( ভয়ে ভয়ে)
মিমঃ হয়তো ভাবছে কাকে আগে খাবে। তোকে নাকি আমাকে। ( ভয়ে ভয়ে)
শবনম ভয়ে মিমের পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়। নেকড়েটি হিংস্র ভাবে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। হয়তো ওদেল উপর ঝাঁপ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শবনমঃ দ দি ভ ভাগগগগ,,
শবনম আর মিম দৌঁড় দেয় আর ওদের পিছনে নেকড়েটি দৌঁড়াচ্ছে।
মিমঃ তোর জন্য সব সময় বিপদে পরি এমন কেন তুই বিপদকে ইনভাইট করে আনিস অলওয়েজ। ( দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে)
শবনমঃ আমি কি ইচ্ছে করে করেছি ওই নেকড়েটা ঝোপের আড়ালে ছিল কে জানত ( কান্না করে দেওয়ার উপক্রম)
মিমঃ হয়েছে এখন দ্রুত দৌঁড়া নাহলে আজকে ওটা আমাদের নিজের ডিনার বানিয়ে ফেলবে।
দৌড়ানোর মাঝেই হঠাৎ শবনম হোঁচট খেয়ে পরে। কিন্তু পরে যাওয়ার আগেই কেউ ওকে ধরে ফেলে।
শবনম ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে পরে অনুভব করে কেউ ওকে ধরে রেখেছে তাই ও চোখ খুলে তাকায়।
শবনমঃ আ আপনিই ( অবাক হয়ে)
আঁধার শবনমকে জড়িয়ে ধরে আছে যেন না পরে।
মিম দাঁড়িয়ে যায় আঁধারকে দেখে ইয়ান এসে মিমের সামনে দাঁড়ায়।
ইয়ানঃ R u alright Mim…. (চিন্তিত হয়ে)
মিমঃ ইয়েস স্যার।
আঁধার আর ইয়ানকে দেখে নেকড়েটি উল্টা পথে দৌঁড়ে পালায়।
আধার শবনমকে দাঁড় করাতেই শবনম পায়ে ব্যাথা অনুভব করে নিচেই বসে পরে।
শবনমঃ আহহ আমার পা।( কান্না করে দিয়ে)
মিম দৌঁড়ে শবনমের পাশে বসে সাথে ইয়ানও।
মিমঃ কি হয়েছে পায়ে দেখি?
শবনমঃ ভেঙে গেছে মনে হয় তাই ব্যাথা করছে।( কান্না করতে করতে)
মিমঃ চুপপ ভাঙে নি হয়তো মচকে গেছে।
ইয়ানঃ হ্যাঁ শবনম কান্না অফ করো কিছু হয় নি পা।
শবনম তাও পা ধরে কান্না করছে। আঁধার দাঁড়িয়ে দেখছে শুধু।
আঁধারঃ এই মেয়েটা এতো ড্রামা করে কিভাবে। পুরোই ড্রামা কুইন ( মনে মনে)
শবনম আড়চোখে আঁধারের দিকে তাকিয়ে হেঁচকি তুলতে তুলতে ভাবে।
শবনমঃ এই বাদামী চোখ ওয়ালা এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেন। মনেমনে হয়তো অনেক খুশি হয়েছে আমি ব্যাথা পাওয়ায়। ( মনে মনে)
আঁধার খেয়াল করলো শবনমের পায়ের জিন্স এ রক্তের মত বের হচ্ছে। পরে যাওয়ার সময় একটু ছিলে গেছে।আঁধার ভেবেছিল হয়তো শবনম ড্রামা করছে কিন্তু ও এখন বুঝতে পারছে যে ও সত্যিই ব্যাথা পেয়েছে।
এখন শবনমের কান্নায় আঁধারের কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে ব্যাথাটা ও পেয়েছে। কিন্তু কেন সেটা বুঝতে পারছে না ও।
আঁধার শবনমের পাশে বসলো তারপর বলতে শুরু করল।
আঁধারঃ গাড়িতে ফার্স্ট এইড আছে কিন্তু তার আগে ওকে উঁচু কোথাও বসাতে হবে। ( মিমকে বলল)
কিছুটা দূরে উঁচু পাথর আছে।
শবনমঃ আমি হাটতে পারবো না ( পা ধরে কান্না করে)
আঁধারঃ আমি হেল্প করছি।
আঁধারকে সামনে আসতে দেখে শবনম চেঁচিয়ে উঠে।
শবনমঃ নোওওওও আপনি না।
আঁধার থেমে গেল।
শবনমঃ ইয়ান স্যার আমাকে একটু কোলে করে ওখানে বসিয়ে দিন না প্লিজ ( কিউট করে বলল)
শবনমের কথায় আঁধার ইয়ান আর মিমের চোখ বড় বড় হয়ে গেল। ইয়ান ঢোক গিলে আঁধারের দিকে তাকলো। আঁধার রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শবনমের দিকে হাত শক্ত করে মুঠো করে নিয়েছে ও। হয়তো রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।
ইয়ানঃ ইয়ে মানে শবনম আ আমি।
শবনমঃ হ্যাঁ আপনি কারন আমি এখানে আপনাকেই তো চিনি। অপরিচিত কারো কোলে আমি ভুলেও উঠবো…….এএএএ
আঁধার হুট করে শবনমকে কোলে তুলে নেয়।
শবনমঃ নামান নামান আমি আপনার কোলে উঠবো না ইউ উগান্ডার প্রেসিডেন্ট বাদামী চোখ ওয়ালা। ( রেগে)
আঁধার ধপ করে শবনমকে পাথরটায় বসায়।
শবনমঃ আআআহ মায়া দয়া নেই একটুও ক্রূর মানুষষ।
আঁধারঃ আর একটা বাড়তি কথা বললে কানের নিচে দু’টো লাগাবো তখন কথা বলাও ভুলে যাবে (ধমক দিয়ে)
ধমক শুনে শবনম ভয়ে নিজের দুই গালে দুই হাত রাখে যেন থাপ্পড় দিতে না পারে।
আঁধারঃ গুড এভাবেই চুপ চাপ বসে থাকো।
ইয়ান আর মিম গিয়ে গাড়ি থেকে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে আসে।
ইয়ানঃ কিং ( সাথে সাথে চুপ হয়ে যায়।) মানে ভাই ফার্স্ট এইড বক্স।
আঁধারঃ দে।
আঁধার শবনমের পা নিজের হাটুতে তুলে রাখে। পায়ে এন্টিসেপ্টিক লাগাতেই শবনম চিৎকার দিয়ে উঠে।
শবনমঃ আল্লাহহহহ আপনি আমাকে ইচ্ছে করে ব্যাথা দিচ্ছেন আমি বুঝিইই( কান্না করে পা সরিয়ে নিয়ে)
আঁধার ইয়ানকে ইশারায় বলল মিমকে আড়াল করতে ইয়ান সেটাই করলো। আঁধার শবনমের পা টেনে আবার নিজের হাটুতে রাখলো।
আঁধারঃ শবনম তাকনাও আমার দিকে দেখো ব্যাথা লাগবে না।
শবনম কথামতো আঁধারের দিকে তাকালো। আঁধার শবনমের দিকেই তাকিয়ে আছে। আঁধারের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে শবনম। সব কিছু ঘোর ঘোর লাগছে ওর কাছে। আঁধারের বাদামী চোখে যেন হারিয়ে যাচ্ছে ও।
আঁধার তুলো রেখে নিজের হাত দিয়ে শবনমের কাটা যায়গায় স্লাইড করছে কিন্তু চোখ ওর শবনমের দিকেই।
ক্ষতটা নিমিষেই মিশে গেল। আঁধার এখনো তাকিয়ে আছে শবনমের দিকে। ও মায়ায় পরে যাচ্ছে এই মুখের। আঁধারের মনে কেমন একটা অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে। চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না। এই অনুভূতির নাম কি মায়া নাকি ভালোবাসা?
হঠাৎ কিছু একটা মনে পরায় উঠে দাঁড়ায় আঁধার।শবনমের ও ঘোর কেটে যায় আর ও নিজের চোখ নামিয়ে নেয়।
আঁধার অন্যপাশে ফিরে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর ভাবছে।
আঁধারঃ নো নো নো এটা ভালোবাসা না আমি কাউকে ভালবাসতে পারবো না। এটা শুধু মাত্র মোহ অন্য কিছু না। I am king #The_Vampire_King আমি কারো প্রতি দুর্বল হয়ে নিজেকে দূর্বল করতে পারবো না। শবনম শুধু প্রয়োজন প্রিয়জন না। ( মনে মনে)
আঁধারঃ ইয়ান ওদের বাড়ি পৌঁছে দে।
ইয়ানঃ জ্বি ভাই।
কথাটা বলেই আঁধার চলে যায় আর একবারের জন্যে ও পেছন ফিরে শবনমের দিকে তাকায় না।
To be continued…..