The_Vampire_King?,05,06

0
1855

?#The_Vampire_King?,05,06
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Fahmida_Shabnam
#Part_5

গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন শবনম। হঠাৎ ও অনুভব করলো এক জোড়া হাত ওর দিকে এগিয়ে আসছে। শরীর যেন ওর অবশ হয়ে যাচ্ছে হাত পা নারাতে পারছে না। ভয়ে চোখের কোনা দিয়ে পানি পরছে তাও চোখ খুলছে না ও। আসলে চোখ জোড়া খোলার সাহস পাচ্ছে না। হাতজোড়া ওর গলার কাছে এগিয়ে আসছে যেন এখনি ওকে খুন করবে। শরীর কাঁপছে ভয়ে।

সাহস করে চোখ দুটো মিটমিট করে খুলে ফেলল শবনম।

চোখ খুলতেই নিজের খুব কাছে কাউকে দেখতে পেল ও। সেই কফিনের লোকের মত অবয়ব তার।

লাল রক্তিম চোখ শবনমের চোখের বরাবর আনা। ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে শবনমের। চোখ জোড়া এতোই ভয়ঙ্কর লাগছে যা বলার বাইরে।

চোখ জোড়ার মালিক ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শবনমের দিকে। হঠাৎ লোকটি শমনমের গলার সামনে একটা ছুরি এগিয়ে আনলো। লোকটি ছুরি চালাতেই শবনম ধরফরিয়ে উঠে বসে।

নিজের আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউই নেই। ভোর হয়ে গিয়েছে তাই রুম আলোকিত। ভয়ে গলা শুকিয়ে গিয়েছে জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে নরমান করছে শবনম। আঁধারের ভয় শবনমের মাথায় এমন ভাবে ঝেকেছে যে ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছে ও।

শবনমঃ কুল ডাউন শবনম জাস্ট একটা ব্যাড ড্রিম ছিল নাথিং ইল্স। ( নিজেকে শান্ত করে)

শবনম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আটটা বাজে। কলেজের সময় হয়ে গিয়েছে তাই আর লেইট না করে উঠে যায় শবনম।

কাবার্ড থেকে একটা গোল্ডেন লেডিজ শার্ট আর ক্রিম কালারের স্কার্ট বের করে রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে ও। তারপর ব্রেকফাস্ট করে কলেজের জন্য বেড়িয়ে যায়। আজকে কলেজের পক্ষ থেকে সবাইকে ক্যাম্পিং এ নিয়ে যাওয়া হবে। তাই আসিফ আর মায়ার মানা করা সত্ত্বেও শবনম কলেজে যাচ্ছে।

আবারো সেই একই রাস্তা কিন্তু আগে এই রাস্তা টাকে ভয় পায়নি ও আজ কেন জানি ভয় অনুভব হচ্ছে এই রাস্তা দিয়ে ক্রস করতে।

ডার্ক ফরেস্টের সামনে গিয়ে ক্রস করার সময় একপলক সেই বাড়ির দিকে তাকিয়েছে শবনম। বুঝার চেষ্টা করেছে যে ওকি সত্যিই ভিতরে গিয়েছিল নাকি সব‌ই ওর মনের ভ্রম।

কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কলেজে পৌঁছে যায় শবনম। গাড়ি পার্ক করে ক্যাফে তে চলে আসে কারন সবাইকে ও ক্যাফেতেই পাবে।

ক্যাফেতে ঢুকতেই ধ্রুব আয়রা আর আশিশ কে দেখতে পেলো শবনম। আয়রা চেয়ারে বসে আছে আর ধ্রুব টেবিলের উপর আশিশ সবার জন্য অর্ডার করা খাবার আনছে। কিছু একটা নিয়ে হাসাহাসি করছে ওরা।

শবনমঃ গুড মর্নিং গাইজ কি নিয়ে এত হাসাহাসি চলছে।( চেয়ারে বসতে বসতে)

ধ্রুবঃ আজকে গোপাল ভাঁড় স্যার অনেক রেগে আছে।

শবনমঃ কেন??

ধ্রুবঃ হয়তো ব‌উ এর হাতে পিটানি খেয়েছে।( বলে আবারো হাসতে শুরু করল)

ধ্রুবর কথা শুনে শবনম‌ ফিক করে হেসে দিলো।
সাথে আয়রা আর আশিশ‌ও।

শবনমঃ এজন্য এতক্ষন হাসছিলি তোরা। বাই গড যদি স্যার শুনে ফেলে আমরা তার নিক নেম দিয়েছি তাহলে আর আমাদের এই কলেজে পড়তে হবে না।

আয়রাঃ তুইই তো স্যারের নাম গোপাল ভাঁড় দিয়েছিস এখন সাধুগিড়ি কেন করছিস,, ( চোখ কুনিয়ে)

শবনমঃ আমি দিয়েছি তাই আমি ডাকবো তোরা কেন পাবলিসিটি করছিস আমার দেওয়া নিক নেমের ( মুখ বাঁকিয়ে)

আশিশঃ তোরা দু’জন আবার শুরু করে দিলি,,,

শবনমঃ এটা আমাদের পার্সোনাল ম্যাটার তুই নাক গলাবি না। তাই না আয়ু বেবি।

আয়রাঃ ইয়েস তুই নাক গলালে তোর নাক স্ট্যাপলার দিয়ে পিন করে দিব,,,

আশিশঃ ধ্রুব ভাই দেখছিস এতক্ষণ নিজেরা ঝগড়া করছিল আমি একটা কথা বলায় এখন দুজন মিলে আমাকে শাসাচ্ছে। তোরা দু’জন আসলেই ওয়ান পিস পুরো দুনিয়াতে।

ধ্রুবঃ এজন্যই আমি ওদের দুজনের মাঝখানে কথা বলি না। ( হাসতে হাসতে)

ওদের কথার মাঝেই পিউন এসে বলতে শুরু করে।

পিওনঃ সেকেন্ড ইয়ারের সব স্টুডেন্টস দের স্যার ক্লাসে যেতে বলেছে। ( বলেই চলে গেল)

ধ্রুবঃ স্যারের আবার কি হলো??

শবনমঃ গেলেই দেখতে পাবো চল।

সবাই ক্লাসে চলে আসে। আজিজ স্যার ক্লাসে আসতেই সবাই দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান দেয়। তার পেট দেখতে কিছুটা গোপাল ভাঁড়ের মতো তাই শবনম তার নিক নেম গোপাল ভাঁড় দিয়েছে।

আজিজঃ স্টুডেন্টস আজকে তোমাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল রাইট।

সবাইঃ ইয়েস স্যার,,,

আজিজঃ নিচে গ্রাউন্ডে সবার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে সবাই সিট অনুযায়ী গিয়ে বসে পর। কিছুক্ষণের মধ্যএই জার্নি শুরু হবে। আমরা হিল ফরেস্ট এর পাশে ক্যাম্প করবো সেখানে সারাদিন ঘুরে রাতে ক্যাম্প করা হবে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের বনজ গাছ আর পাহাড় পর্বত আছে তাই তোমাদের রিসার্চ এর সুবিধার জন্য ওখানে ক্যাম্প করা হবে। তোমরা গ্ৰুপ অনুযায়ী টিচার্সদের সাথেই থাকবে।কেউ একা কোথাও যাবে না।

সবাইঃ ইয়েস স্যারররর,,,

সবাই টিচারের কথা অনুযায়ী গ্রাউন্ডে চলে আসে। যার যার সিট মোতাবেক সে সে বসে পরে। আয়রা আর আশিশ একসাথে বসেছে আর শবনম আর ধ্রুব এক সাথে। শবনমের সিট অন্য একজনের সাথে ছিল কিন্তু ধ্রুব তাকে বলে নিজে শবনমের পাশে বসেছে।

শবনম জানালার পাশে আর ধ্রুব কর্নারে বসেছে। বাস চলতে ‌শুরু করে। এক ঘণ্টার মধ্যেই সবাই হিল ফরেস্ট পৌঁছে যায়।

হিল ফরেস্ট এর বিশাল পুকুরের সাইডে সবাই ক্যাম্প বসিয়েছে।

ক্যাম্প রেডি করার পর,,,,

টিচারঃ তোমাদের সবাইকে তিনটা অ আলাদা গ্ৰুপে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সেই গ্ৰুপ অনুযায়ী তোমরা বনের বিভিন্ন সাইডে গিয়ে সেখান থেকে ঔষধি গাছ সংগ্রহ করবে। গ্ৰুপ A1 এর ক্যাপ্টেন হলো আনিশা , A2 আদি আর A3 এর ক্যাপ্টেন হলো ধ্রুব। সো সবাই ভালো ভাবে নিজেদের প্রজেক্ট করে সাবমিট করো অ্যান্ড বি কেয়ারফুল যেহেতু এটা একটা জঙ্গল।

সবাইঃ ইয়েস স্যারররর,,,

শবনমঃ গাইজ আমরা লেফ্ট সাইডে যাবো।

তনুঃ নাহ রাইট সাইডে যাওয়া ব্যাটার হবে ধ্রুব।

শবনমঃ টিম লিডার ধ্রুব তাই ও যা বলবে সেটাই হবে। ধ্রুব আমরা কোন সাইডে যাবো।

ধ্রুব একবার তনুর দিকে তো একবার শবনমের দিকে তাকিয়ে বলল।

ধ্রুবঃ আই থিঙ্ক লেফ্ট ইজ ব্যাটার।

শবনমঃ ইয়াপপপ,,, লেট্স গো গাইজ লেফ্ট সাইড। ( তনুকে দেখিয়ে)

তনু রাগে গজগজ করতে করতে তাকিয়ে আছে শবনমের দিকে ।

তনুঃ হেসে নাও শবনম আজকের পর থেকে হয়তো হাসতে ভূলে যাবে। ( শয়তানি হাসি দিয়ে)

ধ্রুবঃ ওকে গাইজ আমি সবাইকে সবার কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছি।

ধ্রুব সবাইকে নিজের নিজের কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছে।

সবাই এক এক সাইডে গিয়ে গাছ গুলো পর্যবেক্ষণ করছে। শবনম সব গুলো গাছের পাতা নেরে চেরে দেখছে।

শবনমঃ এই গুলি সব‌ই তো নরমাল।গাছ এগুলোর উপর কি প্রজেক্ট করবো। একটা আনকমন গাছ পাইয়ে দাও আল্লাহ। ( বিরক্ত হয়ে)

কেউ একজন আড়ালে দাঁড়িয়ে শবনমকে পর্যবেক্ষণ করছে। অনেকক্ষণ যাবত চোখ জোড়া শবনমের দিকেই আছে।

শবনম যেতে যেতে একটা গোল পাতার মতো দেখতে গাছ পেল। গাছটার সব গুলো পাতা হালকা ঘাসের কালার আর গোল গোল।

শবনমঃ ওয়াওও পেয়ে গেছি ( খুশি হয়ে) শবনম দৌড়ে গাছটার সামনে চলে আসে।

গাছটা বিশাল বড়। শবনম গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে।

উপরের দিকে তাকিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছে ও গাছটাকে। হঠাৎ পায়ের পাশে কিছু অনুভব করলো ও। নিচে তাকাতেই ওর জান বেড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম হলো। পায়ের সামনে একটা সবুজ রঙের সাপ যাচ্ছে( green Boomslang snake).

শবনমের চোখ বড় বড় হয়ে গিয়েছে এটা দেখে। শবনম চিৎকার দিতে নিলেই হঠাৎ কানের পেছনে কারো ফিসফিস কথা শুনতে পেলো।

>> Don’t move and don’t shout. আমি আছি কিচ্ছু হবে না। ( ধীর কন্ঠে)

শবনম লোকটির কথায় খিঁচে র‌ইলো। শব্দ গলা অবধি এসে আটকে গেছে। সাপটি আস্তে আস্তে শবনমের পায়ের উপর দিয়ে যাচ্ছে। শবনম ভয়ে নরতে নিলেই কারো হাত জোড়া পেছন থেকে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

স্পর্শটা শবনমের অনেক চেনা। এটা সেই স্পর্শ যেটা ও সেদিন কফিনে অনুভব করেছিল। সাপের ভয় মন থেকে যেন মুছে গেছে ওর। স্পর্শের অনুভূতিটাতেই যেন ও ডুবে যাচ্ছে। ঘোরে চলে যাচ্ছে শবনম।

হঠাৎ পেছনের মানুষটার স্পর্শ গায়েব হয়ে গেল। শবনমের ঘোর কাটতেই ও নিচে তাকিয়ে দেখে সাপটি নেই। শবনম মানুষটিকে চেনার জন্য পেছনে ফিরতেই দেখলো কেউ নেই।

আবার পেছনে খচখচ শব্দে ও ঘুরে গেল। গাছটার উপর খোদাই করে করে লিখা,,,

>> আমি ছিলাম আছি আর থাকবো তোমার পাশে। I’m always there for protecting you.

#A_Unknown……..বাকিটাতে ডটডট দেওয়া।

শবনমঃ কে ছিল এটা। একি সেই লোকটি নাকি অন্য কেউ,,, who’s that #Unknown person. ( ভাবছে ও)

To be continued….

?#The_Vampire_King?
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Fahmida_Shabnam
#Part_6

আকাশ কুসুম ভাবনার মাঝেই হঠাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে ঘুরে দাঁড়ায় শবনম।

শবনমকে এভাবে ভয় পেতে দেখে ধ্রুব কিছুটা অবাক হয়ে বলল।

ধ্রুবঃ কি হয়েছে শবনম আর ইউ ওকে।

ধ্রুবকে দেখে শবনম হাফ ছেড়ে বাচঁলো। নিজেকে নরমাল করে বলল ও।

শবনমঃ ইয়াহ আ’ম ওকে,,,

ধ্রুবঃ তুমি এতো দূর একা কেন আসলে। জঙ্গলে একা থাকা কতটা রিস্কি তুমি জানো।

শবনমঃ এই মাত্র জানলাম সাপের মুখ থেকে বেঁচে ( আমতা আমতা করে)

ধ্রুবঃ কিছু বললে।

শবনমঃ আব নোও কিছু না।

ধ্রুবঃ ওকে বাদ দাও এখন চলো সন্ধ্যা হয়ে আসছে। ক্যাম্পে সবাই অপেক্ষা করবে।

শবনমঃ হুম চলো।

শবনম আর ধ্রুব চলে আসে ওখান থেকে। শবনম বারবার পেছন ঘুরে দেখছিল এই আশায় হয়তো সেই Unknown টাকে দেখতে পাবে। কিন্তু শেষ অবধি কারো দেখা পেল না ও।

শবনম আর ধ্রুব চলে যেতেই গাছের আড়াল থেকে বের হয়ে আসে আঁধার। শবনমের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে ও।

আঁধারঃ এতো সহজে তোমাকে আমি ধরা দিচ্ছি না ( বাঁকা হেসে)। সবে তো গল্প শুরু হলো ধীরে ধীরে আরো অনেক অজানা বাস্তবতা তোমার সামনে আসবে। আমি তোমার আশেপাশে থাকবো তাও তুমি আমাকে খুঁজবে। তোমার চোখের সামনে থেকেও তোমার জন্য #Unknown হয়ে থাকবো। যেখানে তাকাবে আমাকেই পাবে তাও চিনতে পারবে না।

আমি তোমার সামনে আসবো না তুমি নিজেই আমাকে খুঁজে বের করবে। আমি আড়ালে থেকেই তোমার ছায়া হবো। তোমার উপর আসা সব বিপদকে সবার আগে আমার উপর হয়ে যেতে হবে। কারন তোমাকে প্রটেক্ট করা আমার দায়িত্ব। তোমার কোন ক্ষতি হলে আমার রাজ্যের উপর সংকট আসবে‌। তোমাকে ছাড়া ক্রিস্টাল নাইফ এর শক্তি অসম্পূর্ণ। আর ক্রিস্টাল নাইফ ছাড়া ভ্যাম্পায়ার কিংডম অসম্পূর্ণ। আর ভ্যাম্পায়ার কিংডম ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। আমরা দুজন একে অপরের পরিপূরক। একে অপরকে ছাড়া আমাদের শক্তির কোন মূল্য নেই। তাই যে কোন মূল্যে তোমাকে আমার প্রটেক্ট করতে হবে।

ক্যাম্পের বাইরে বর্নফায়ার জ্বালিয়ে সবাই গোল হয়ে বসে আছে। ট্রুথ অ্যান্ড ডেয়ার খেলছে সবাই। এক জন এক জন করে বোতল ঘুরিয়ে ট্রুথ অ্যান্ড ডেয়ার দেওয়া হচ্ছে।

আশিশঃ এবার বোতল আমি ঘুরাবো।

আশিশ সামনে গিয়ে বোতলটাকে ঘুরিয়ে দিল। বোতল ঘুরতে ঘুরতে তনুর বরাবর থামলো। শবনম আর তনু বরাবর বসেছে তাই ওরা একে অপরকে ট্রুথ অ্যান্ড ডেয়ার দিবে। নিজের দিকে বোতল ঘুরতে দেখে তনুর মুখ শুকিয়ে যায় ভয়ে।শবনম একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল।

শবনমঃ তনুকে আমি ডেয়ার দিব। তনু অনেক ব্রেভ আ’ম সিওর ও ডেয়ার নিবে তাইনা তনু??(তনুর দিকে তাকিয়ে)

তনুঃ আব হ্যাঁ হ্যাঁ আমি ডেয়ার নিব। আমি কাউকে ভয় পাই না। দাও কি ডেয়ার দিবে। ( সাহস দেখিয়ে)

শবনমঃ তুমি নিজের ব্যাগের সব মেক‌আপ যা যা আছে সব এনে ওই পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে দিবে।

তনুঃ হোয়াটটট ন্যাভারররর কখনো না। মেক‌আপ ফেলে দিলে আমি কালকে রেডি হবো কিভাবে। ( রেগে)

শবনমঃ সেটা কি আমি জানি। আমি তোমাকে ডেয়ার দিয়েছি এখন রুল মোতাবেক তোমাকে ডেয়ার কমপ্লিট করতে হবে রাইট গাইজজজজজ।

সবাইঃ ইয়েসসসসস

তনু রাগে গজগজ করতে করতে উঠে টেন্টের ভিতরে গিয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের মেক‌আপ বক্স এনে পুকুরে ফেলে দিল। বেচারির মনে হচ্ছে ওর বয়ফ্রেন্ড কে ও পানিতে ফেলে দিয়েছে।

তনু এসে আবার নিজের জায়গায় বসলো। এবার বোতল আশিশের সামনে থামলো। ওকে ডেয়ার ধ্রুব দিবে।

ধ্রুবঃ কি নিবি ট্রুথ না ডেয়ার।

আশিশ ভেবে পাচ্ছে না কি নিবে। অনেক ভেবে চিন্তে বলল আশিশ।

আশিশঃ ডেয়ার‌ই দে ট্রুথ নিলে তুই যে মানুষ কি না কি জিজ্ঞেস করে বসিছ।

ধ্রুবঃ ওকেইই এখন একটা গান প্লে হবে আর তুই সেই গানে পারফর্ম করবি।

আশিশ চোখ ছোট ছোট করে তাকালো ধ্রুবর দিকে কারন ও জানে ধ্রুব কখনো এত সহজ ডেয়ার দিবে না কাউকে।

ধ্রুব শবনমকে ইশারা করতেই শবনম একটা গান প্লে করে দেয়।

গান প্লে হতেই আশিশের চেহারার রং পাল্টে যায়। তাও বাধ্য হয়ে এই গানেই নাচতে শুরু করে ও।

“স্টেটাস আমার সিঙ্গেল দেখে প্রেমের ছড়া ছড়ি”
“হায়রে কি যে করি হায়রে কি যে করি ”
“আমি ডানা কাঁটা পরী আমি ডানা কাঁটা পরী”?

আশিশের স্টেপ দেখে সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর বেচারা আশিশ তো লজ্জায় শেষ।

এবার বোতল এসে আয়রার সামনে থামলো। আয়রা ট্রুথ নিলো। আয়রাকে প্রশ্ন করা হলো ওর কলেজ ক্রাশ কে?

আয়রা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল।

আয়রাঃ ধ্রুব ( আমতা আমতা করে)

আয়রার কথায় আশিশ বেচারা একটু আহত হলো। ও ভেবেছিল আয়রা হয়তো ওর নাম নিবে। এবার বোতল ঘুরে এসে ধ্রুবর দিকে থামলো। আশিশ এবার শয়তানি হাসি দিয়ে বলল।

আশিশঃ এখন কোথায় যাবে বাচ্চু। ট্রুথ নেও নাকি ডেয়ার দুই দিক দিয়েই তুমি ফেসে গেছো।

ধ্রুব কিছুক্ষণ ভেবে তারপর বলল।

ধ্রুবঃ ডেয়ার।

আশিশঃ এখানের যে কোন মেয়েকে প্রপোজ কর।

ধ্রুবঃ কিহহ,,

আশিশঃ এটা ডেয়ার সো বাধ্যতামূলক করতেই হবে।

সব মেয়েরা অধির আগ্ৰহে তাকিয়ে আছে ধ্রুবর দিকে। ধ্রুব নিজের আশেপাশে তাকিয়ে হুট করে শবনমের সামনে হাটু গেড়ে বসে বলতে শুরু করল।

ধ্রুবঃ শবনম আই লাভ ইউ,,,, ( এক নিঃশ্বাসে)

শবনম সহ সবাই টাস্কি খেয়ে গেছে ধ্রুবর কাজে। শবনম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ধ্রুবর দিকে।

শবনমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ধ্রুব বলল।

ধ্রুবঃ it’s just a dare Shabnam don’t be serious.

ধ্রুবর কথায় শবনম প্রশান্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো। ধ্রুব উঠে আবার নিজের জায়গায় বসে পরলো।

ধ্রুবঃ ডেয়ার ডান।

সবাই হাসাহাসি করছে কিন্তু কেউ বুঝতে পারছে না এক জোড়া চোখ রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে ধ্রুবর দিকে। মনে হচ্ছে তার চোখ দিয়ে আগুন বের হবে এক্ষুনি। রাগে কপালের আর ঘারের রগ ফুলে গিয়েছে।

লোকটি আর কেউ নয় বরং আঁধার। আঁধার সবার আড়ালে থেকেও ওর নজর শবনমের উপর। যখন ধ্রুব শবনমকে আই লাভ ইউ বলল আঁধারের ইচ্ছে করছিল ধ্রুবকে সেই মুহুর্তে শেষ করে দিতে। অনেক কষ্টে নিজের রাগ কন্ট্রোল করে রেখেছে ও।

এবার বোতল এসে থামলো শবনমের দিকে। তনু এবার শয়তানি হাসি দিয়ে বলল।

তনুঃ আই থিঙ্ক শবনম ট্রুথ নিবে??

শবনমঃ নো ডেয়ার। দাও তোমার খুশি মতো ডেয়ার দাও।

তনুঃ তোমার ডেয়ার হচ্ছে তোমাকে একা জঙ্গলের ভিতরে গিয়ে আমরা যে গাছটার সামনে সকালে টিম এসাইনমেন্ট করেছি সেই গাছের একটা ফুল এনে দিতে হবে আমাকে।

সবাইঃ কিহহহ।

ধ্রুবঃ হোয়াট ননসেন্স এটা কেমন খেলা। এই গভীর জঙ্গলে শবনম একা যাবে তাও তোমার জন্য ফুল আনতে নেভার ( রেগে)

আশিশঃ হুম আর এরকম রিস্কি টাস্ক দেওয়া গেমের রুল্সের বাইরে। শবনম কোথাও যাবে না।

তনুঃ আমি জানতাম শবনম তুমি এই টাস্ক কমপ্লিট করতে….

শবনমঃ আমি যাবো।

শবনমের জবাবে সবাই অবাক চোখে ওর দিকে তাকালো।

আয়রাঃ তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস।

ধ্রুবঃ কোথাও যাবে না তুমি। সব খেলা বাদ সবাই যার যার টেন্টে চলো।

শবনমঃ চিল্ গাইজ কিছু হবে না আমি যাবো আর আসবো।

ধ্রুবঃ আর ইউ ম্যাড তুমি বুঝতে পারছো তুমি কি বলছো।

শবনমঃ হ্যাঁ আর এখন যদি আমি না যাই তাহলে এটা গেমের রুল্স ব্রেক করা হবে। আমাকে যেহেতু এই টাস্ক দেওয়া হয়েছে কমপ্লিট ও আমাকেই করতে হবে।

আর আমার আসতে যদি দেরি হয় তাহলে তোমরা তো আছোই আমাকে খোজার জন্য। যদি আমার আসতে দেরি হয় তোমরা সেখানে চলে এসো।

ধ্রুবঃ কিন্তু…..

শবনমঃ কিচ্ছু হবে না ধ্রুব।

শবনম সবাইকে বুজিয়ে সুঝিয়ে টর্চ নিয়ে জঙ্গলের ভিতর ঢুকে পরে। ভয় করছে একটু একটু তাও সেটা প্রকাশ করছে না ‌শবনম। চারো দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর এই অন্ধকারে শুধু পাতার খচখচ শব্দ শোনা যাচ্ছে।

শবনমঃ ভয়ের কিছু নেই শবনম। জঙ্গলেও তো প্রানিই থাকে আর এটা তো স্লিপিং টাইম জঙ্গলের পশু পাখিরাও ঘুমাচ্ছে।

কিচ্ছু হবে না ভয় পাস না,,,,( নিজেকে শান্তনা দিয়ে এগোতে এগোতে)

শবনম গাছটার অনেক কাছাকাছি চলে এসেছে তাই মনের ভেতর একটু সাহস জোগার হচ্ছে ওর।

হঠাৎ পেছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে ঘাবরে ঘুরে দাঁড়ালো ও। কেউ নেই পেছনে।

শবনমঃ ক ক‌ই কেউই তো নেই। সব মনের ভূল কেউ নেই ( ভয়ে ভয়ে)

শবনম সামনে এগোনোর জন‌্য কদম বাড়াতেই গর্তে পা চলে যায় আর শবনম নিচে পরে যায়।

শবনমঃ আআআআআআআ

শবনমের চিৎকারের শব্দ আসতেই ধ্রুব আর বাকিরা ভয় পেয়ে যায়।

ধ্রুবঃ উই হ্যাভ টু গো শবনমের নিশ্চই কোন বিপদ হয়েছে,,,,,

সবাই দৌড়ে জঙ্গলের ভিতরের দিকে ছুটে যায়।

একটা উঁচু করে গর্ত করা সেখানে শবনম পরে গিয়েছে । এই গর্ত গুলো সাধারনত জঙ্গলী পশু ধরার জন্য করা হয়। বড় করে গর্ত করে তার উপর পাতা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় যেন কোন প্রানী বুঝতে না পারে এটা জাল। আর সহজেই জালে পা দিয়ে গর্তে আটকে যাক। কিন্তু আজকে জঙ্গলী প্রানীদের বদলে শবনম আটকে পরেছে এই জালে। বেড়িয়ে আসার কোন স্কুপ নেই।

শবনম পা ধরে বসে আছে। বেচারি পরে গিয়ে পায়ে ব্যাথা পেয়েছে। কোন রকমে উঠে দাঁড়ায় ও।

শবনমঃ চোখ কি আকাশে নিয়ে ঘুরছিলি। তুই আসলেই স্টুপিড এতো বড় গর্ত চোখে পরেনি তোর। এখন বুঝ ঠ্যালা কিভাবে বের হবি এখান থেকে। ( রেগে নিজেই নিজেকে বকছে)

শবনম উপরের দিকে তাকিয়ে দেখে অনেক টা উঁচু। নিজে নিজে কখনোই এখান থেকে বের হতে পারবে না ও।

শবনমঃ হ্যালোওওওওওও কেউ আছে আমি পরে গিয়েছি আমাকে তুলোও প্লিজ। ধ্রুববব আশিশশশ??

শবনম ডাকছে তাও কারো সাড়াশব্দ পাচ্ছে না।

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here