The_Vampire_King ♠️,35,36

0
1420

♠️ #The_Vampire_King ♠️,35,36
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_35
.
.
.
.
♠️ In Vampire Kingdom ♠️

ইয়ানঃ আবারো তারা আমাদের উপর হামলা করেছে কিং। আমরা যতই তাদের ছাড় দিচ্ছি তারা ততই আমাদের মাথায় চরে বসছে। জাস্ট অর্ডার মি কিং আজকেই পুরো ওয়্যারওল্ফ কিংডম ধ্বংস করে দিব আমি। ( রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)

আঁধারঃ নিজের রাগে নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করো ইয়ান। তোমার একটা ভুলের জন্য আমাদের শত বছরের চেষ্টা বৃথা যেতে দিতে পারব‌ না আমি।

তুমি জানো আমি যুদ্ধ না মৈত্রী চাই। হাজারো বছরের যুদ্ধ শেষ করে ভ্যাম্পায়ার আর ওয়্যারওল্ফ দের‌ মধ্যে শত্রুতা শেষ করতে চাই। এতে‌ ভ্যাম্পায়ার ওয়্যারওল্ফ আর‌ মানুষ তিনও সম্প্রদায়ের হীত লুকিয়ে আছে।

ইয়ানঃ আর কেউ মানুক বা না মানুক কাইফ কখনো ভ্যাম্পায়ার দের সাথে মৈত্রী করবে না।

আঁধারঃ কাইফ না করুক ধ্রুব তো আছে,,,(বাঁকা হেসে) ভবিষ্যত‌ ওয়্যারওল্ফ কিং ও‌।‌ কাইফের জীবনের শেষ মুহূর্ত ঘনিয়ে আসছে সেটা আমরা সবাই জানি। ওর পরে ধ্রবই তো ওর উত্তরাধিকার সূত্রে কিং হবে। আর আমি যতটুকু ধ্রুবকে চিনি ও কখনো আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে না।

ইয়ানঃ ধ্রুব কোয়েলকে ভালোবাসে আর এটা কখনো সম্ভব না। কোয়েল আমার বোন আর আমি আমার শত্রুর ছেলের সাথে ওকে কখনো সহ্য করতে পারব না।

আঁধারঃ ধ্রুবর ভালোবাসা কোয়েলের জন্য ততটাই পিউর যতটা মিমের প্রতি তোমার ভালোবাসা। তাই বলছি ইয়ান কোয়েল যদি সব জেনেও ধ্রুবকে মেনে নেয় তুমি ওর পথে বাঁধা হবে না।

ইয়ান চুপ করে আছে। সত্যিই তো বলছে আঁধার ও যদি মিমকে ভালোবাসতে পারে তাহলে ধ্রুব কেন কোয়েলকে ভালোবাসতে পারবে না।

♠️♠️♠️

ওয়েডিং স্টুডিও তে সবাই পৌঁছে গেছে। আসিফ আরিফ মায়া মেহমানদের সাথে কুশল বিনিময় করছে। মিম স্টেজে বসে আছে। হলুদ শাড়ি আর ফুলের গয়না দিয়ে সাজানো হয়েছে ওকে আজ।

মিমের পাশেই কোয়েল‌ আর আয়রা বসে আছে। ওরাও থিম অনুযায়ী হলুদ রঙের শাড়ি পরেছে আর ফুলের গয়না। শবনম ক্যামেরা হাতে পুরো হল ভিডিও করছে। শবনম লেহেঙ্গা পরেছে কারন ওর শাড়ি পছন্দ না তাছাড়া ও শাড়ি পরতেও পারে না আর সামলাতেও পারে না। মায়া অনেক চেষ্টা করেও শবনমকে শাড়ি পরতে রাজি করতে পারে নি।

আঁধার ইয়ান আর বাকিরা এখনো পৌঁছে নেই। ধ্রুব হলুদ আর সাদা কম্বিনেশনের পাঞ্জাবি পরেছে।‌ অন্য সাইডে ফুলের ডেকোরেশন করাচ্ছে ও।

শবনম সবার ভিডিও করতে করতে হঠাৎ পা বেজে পরে যেতে নেয় সাথে সাথে কেউ ওকে ধরে ফেলে। শবনম ভয় পেয়ে যায়। চোখ খুলে তাকেই দেখে রনিত ওকে ধরে আছে। রনিতের এক হাত ওর পিঠে আরেক হাত দিয়ে হাত ধরে আছে। শবনম তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে যায় সোজা হয়ে।

রনিতঃ আর ইউ ওকে শবনম?

শবনমঃ হ হ্যাঁ,,থ্যাংক ইউ স্যার,,

রনিতঃ ডোন্ট প্যানিক শবনম আমিতো আছি সবসময় তোমার হেল্পের জন্য।( অদ্ভুত ভাবে বলল )

শবনম মুখে হাসি টানার চেষ্টা করে সামনে‌ তাকাতেই দেখলো ‌আঁধার ওর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝড়বে ওর এখন। শবনম বুঝতে পারছে না হঠাৎ রাখার কারনটা। পরক্ষনে শবনম খেয়াল করে ওর পিঠে রনিতের হাত শবনম এক ঝটকায় সরে দাঁড়ায় ওর থেকে।

শবনমঃ আ আমি আসছি ( বলে দৌড়)

শবনম দৌড়ে যেতে নিলেই কেউ ওর হাত ধরে হ্যাঁচকা টান ওকে সবার আড়ালে নিয়ে যায়। সামনের মানুষটিকে দেখে ভয়ে ওর কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে।

আঁধারঃ বলেছিলাম না রনিতের থেকে দূরে থাকতে?(‌ দাঁতে দাঁত চেপে)

শবনমঃ আ আমিতো দূরেই ছিলাম,,( আমতা আমতা করে)

আঁধারঃ ও রিয়েলি তাহলে কি আমার চোখ ভুল‌ দেখেছে ?

শবনমঃ আমি কি ইচ্ছে করে ওনার কাছে গিয়েছি নাকি। আমি পরে যেতে নিয়েছিলাম উনি তো আমার হেল্প করেছেন,,

আঁধারঃ হেল্প করেছে না কি করেছে সেটা আমি ভালো বুঝি ইউ ডাফফর,,,( মনে মনে)

শবনমঃ ও হ্যালো মি. বাদামী চোখ কোথায় হারিয়ে গেলেন?( সামনে তুড়ি বাজিয়ে)

আঁধারঃ তুমি সামনে থাকলে অন্য কোথাও হারাতে পারি মেরি জাননন?( রোমান্টিক হেসে)

শবনমঃ ওইই আপনি আমাকে মেরি জান ডাকেন কেন এখন? আগে তো নাম ধরে ডাকতেন।

আঁধারঃ এটা ভালোবাসার ডাক ওকে তাই এখন এই নামে ডাকি।

শবনম এতক্ষন আঁধারকে খেয়াল করে নি কিন্তু এখন ওর দিকে তাকাতেই হা হয়ে গেছে,,, সাদা রঙের ফুল সেট পাঞ্জাবি পরেছে ও। একদম নরমাল ড্রেসেও অসম্ভব সুন্দর লাগছে ওকে।

শবনমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আঁধার ওর আরেকটু কাছে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলল,,,

আঁধারঃ তুমি যে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো তোমার চোখের গভীরে ডুবে আমি কিন্তু আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে যাবো পরে বলো না আমি ক্যারেক্টারলেস,,,( চোখ মেরে‌ অদ্ভুত হাসি দিয়ে)

আঁধারের হাঁসি সুবিধার মনে‌ হচ্ছে না শবনমের কাছে। তাই ও আস্তে আস্তে সাইড কেটে দৌড় দেয় আর‌ যেতে যেতে বলে,,,

শবনমঃ আপনি দেখতে যেমন মারাত্মক সুন্দর তেমনি আপনার ক্যারেক্টার ও দিন দিন মারাত্মক খারাপ হয়ে যাচ্ছে,,,

আঁধার শবনমের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসছে,,, ও ইচ্ছে করে এমন করেছে কারন শবনমের ভিতু ফেস অনেক ইন্জয় করে আঁধার।

আঁধারঃ যেখানেই যাও না কেন ফিরে তো আমার কাজেই আসতে হবে মেরি জাননন।( জোরে বলল যেন শুনতে পায় )

দূর থেকে দাঁড়িয়ে ওদের দেখছিলো রনিত। আঁধারের ঠোঁটের হাসি ওর কাছে এসিডের মত লাগছে। সহ্য করতে পারছে না ও আঁধারের হাঁসি।

রনিতঃ এই হাসি দিয়েই মেয়েদের পাগল করো তুমি তাইনা? আই হেইট ইউর স্মাইল,, এই হাসি দিয়েই আমার বোনকে ভুলিয়েছিলে তুমি। তোমার কারনে আমি আমার বোনকে হারিয়েছি আঁধার,,, তোমার জীবনে খুশি আমি আসতে দিব না। তোমার জন্য শুধু অন্ধকার বরাদ্দ ভালোবাসার আলো না। আমি তোমাকে কখনো এই অন্ধকার থেকে বেরোতে দিব না। আমার বোন যেমন সেই কফিনের অন্ধকারে হারিয়ে আছে তেমনি তোমাকেও আবার ওই কফিনের অন্ধকারে ফিরে যেতে হবে।

আমি তোমার জীবনে ভালোবাসা স্থায়ী থাকতে দিব না। দূর করে দিব তাকে তোমার থেকে। জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ,,,( রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)

ইয়ান আর মিমকে পাশাপাশি বসিয়ে সবাই হলুদ লাগাচ্ছে। শবনম একটু দূরে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছে,,, আঁধার শবনমের বাচ্চামো দেখছে আর হাসছে। কোয়েল হলুদ লাগাতে যেতে নিলেই ধ্রুব এসে সবার আড়ালে ওর গালে হলুদ লাগিয়ে দেয়।

কোয়েল চোখ বড় বড় করে তাকায় ওর দিকে। ধ্রুব ঠোঁটে দুষ্টু হাসি টেনে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,,

ধ্রুবঃ আমি শুনেছি বউয়ের হলুদ যার গায়ে আগে লাগে তারও দ্রুত বিয়ে হয়ে যায়। এজন্য লাগালাম দেখো আমাদের বিয়েও তাড়াতাড়ি হবে।( হেসে দিয়ে)
[ সিরিয়াসলি নাকি ধ্রুব? আমি বিয়ে না দিলে সারাজীবন কুমারী থুক্কু কুমারা থাকবি তুই ডাফফর,,?]

দূর থেকে আঁধার দাঁড়িয়ে শুনছিল ওদের কথা। আঁধার সবার আড়ালে একটু হলুদ নিয়ে শবনমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। হঠাৎ ক্যামেরার সামনে আঁধারকে দেখে শবনম একটু রেগে যায়।

শবনমঃ উফফ আপনি আর যায়গা পান না দাঁড়ানোর।‌দেখছেন না ফটোগ্রাফার শবনম ফাংশনের ভিডিও করছে,,,

আঁধার হেসে দেয় শবনমের কথায়,,, শবনম ওর হাঁসি দেখে আরো রেগে যায়।

আঁধারঃ সিরিয়াসলি ফটোগ্রাফার তাও তুমি সো কিউটটট,,,( শবনমের গালে হলুদ লাগিয়ে)

আঁধার চলে যেতেই শবনম নিজের গালে হাত দিয়ে দেখে হলুদ,,

শবনমঃ ছিঃহহহ ইয়াকক হলুদদ ডিসগাস্টিং,,আই হেইট দিসস ( ওড়না‌ গাল মুছতে মুছতে)

হলুদ শেষ হতেই মিম আর ইয়ানকে ফ্রেশ হতে পাঠানো হয়। ওরা ড্রেস চেঞ্জ নেয়। মিম মেহেদী রঙের শাড়ি পরেছে আর ইয়ান মেহেদী রঙের পাঞ্জাবি।

ইয়ান সব বড়দের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে,, মিম কোয়েল আয়রা বাড়ির সব মেয়েরা মেহেদী লাগাচ্ছে। শবনম সোফায় বসে মুড অফ করে বড়দের বোরিং কথা শুনছে‌ আর আর জুস খাচ্ছে।

আঁধারঃ তুমি এখানে না বসে থেকে সবার সাথে বসে মেহেদী লাগাও।

আসিফঃ আমার মেয়ের এলার্জি মেহেদীতে,,,( আঁধারকে কড়া গলায় বলল )

আঁধার শবনমের সামনে‌ আসিফকে কিছু বলল না। শুধু নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করল।

আসিফঃ প্রিন্সেস তোমার খারাপ লাগলে বলো আমি তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে বলবো ড্রাইভার কে। বাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে পরো।

শবনমঃ আমি যাব না,, ( বলেই উঠে গেল )

আসিফ বুঝতে পারছে যে শবনম হয়তো সেদিনের জন্য অভিমান করে আছে। আসিফ‌ ওর পিছনে যেতে নিলেই আঁধার দাঁড়িয়ে বলে উঠে,,,

আঁধারঃ আপনি আড়ামে বসেন মি. আসিফ চৌধুরী আমি ওকে দেখছি,,( বাঁকা হেসে)

আসিফ মেহমানদের সামনে কিছু বলতে পারল না। নিজের রাগ দমিয়ে ওখানেই বসে রইল।

শবনম হাঁটছিল হঠাৎ কেউ ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। শবনম তাকিয়ে দেখে এটা আঁধার।

শবনমঃ আরেহহ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

আঁধারঃ চুপচাপ চলো নো মোর ওয়ার্ড,,

আঁধার‌ শবনমকে ছাদে নিয়ে আসে। ছাদে কেউ নেই। কালারফুল লাইট দিয়ে পুরো ছাদ জ্বল জ্বল করছে।

শবনমঃ আমরা এখানে কেন আসলাম?( অবাক হয়ে)

আঁধার শবনমকে সামনে থাকা দোলনায় ইশারা করে বলল বসতে,,, শবনম বসতেই আঁধার ওর সামনে হাঁটুতে ভর দিয়ে বসে পরে তারপর একটা মেহেদী কোন বের করে। শবনম চোখ বড় বড় করে নিজের হাত পেছনে নিয়ে বলে,,,

শবনমঃ আরেহহ আমার এলার্জি মেহেদীতে।‌ আব্বি বললো তখন আপনি শুনতে পাননি?

আঁধারঃ অবভিয়াসলি শুনেছি,, অ্যান্ড ডোন্ট ওয়ারি এই মেহেদী তে কোন হার্ম করবে না। দাও হাত দাও আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।

শবনম নিজের হাত না বাড়িয়ে মাথা নাড়িয়ে না বলল।

আঁধারঃ ডু ইউ ট্রাস্ট মি মেরি জান?( মায়াবী চোখে)

শবনমঃ নো ( মজা করে)

আঁধারঃ ওকে ট্রাস্ট করা লাগবে না হাত দাও,,,( হাত টেনে সামনে আনলো‌)

আঁধার খুব যত্ন সহকারে শবনমের হাতে মেহেদী পরিয়ে দিচ্ছে। শবনম অবাক হয়ে দেখছে আঁধারকে। এতো দিন শুধু আঁধারের রাগ আর জেদ দেখেছিল ও কিন্তু ওই রাগি আঁধারের আড়ালে যে এমন একজন কেয়ারিং আঁধার লুকিয়ে আছে সেটা ও বুঝে নি।

আসিফ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। শবনমের প্রতি আঁধারের এমন কেয়ার দেখে সত্যি মুগ্ধ হচ্ছে ও। যেদিন শবনমের হাতে বিষাক্ত গাছের আচর লেগেছিল সেদিনই শবনমের প্রতি ওর পাগলামো বুঝতে পেরেছিল আসিফ।

আসিফ দরজা হালকা চাপিয়ে দিয়ে নিচে নেমে আসে।

কোয়েলের মেহেদী লাগানো শেষ হতেই ও নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে হা হয়ে যায়। ওর হাতের তালুর ঠিক মাঝে খুব সুন্দর করে ধ্রুব নাম লিখা। কোয়েল ধ্রুবর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকতেই ধ্রুব ঠোঁট পাউট করে দেখায়। মেহেদী আর্টিস্ট দেখে হাসছে ওকে।‌ কোয়েলের লজ্জা লাগছে ইচ্ছে করছে মেহেদী দিয়ে ধ্রুবর মুখ লাল করে দিতে।

মিমের মেহেদী লাগানো শেষ হতেই মিম নিজের দু হাত তুলে ইয়ানের দিকে তাকায়। ইয়ান নিজের হাত দিয়ে ইশারা করে বলে অনেক সুন্দর হয়েছে। মিম লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয়।

শবনমকে মেহেদী পরিয়ে দিয়ে আঁধার ওর পাশে উঠে বসে পরল। শবনম হা হয়ে নিজের হাত‌ ঘুরিয়ে দেখছে। দু হাত একসাথে মিলালে একটা লাভ শেপ হয় আর আঁধার শবনম লিখা বুঝা যায়।

শবনমঃ মারাত্মক সুন্দর হয়েছে। ইউ নো হোয়াট আমি আজকে প্রথম মেহেদী লাগালাম বাট হাতে কোন রিয়েকশন হচ্ছে না কেন?( অবাক হয়ে)

আঁধারঃ সেটা তুমি বুজবে না। ( ওর গাল টেনে)

শবনমঃ বুঝিয়ে দিলে ঠিকই বুঝবো,,( গাল ফুলিয়ে)

শবনম নিজের হাত একবার সোজা করছে আরেকবার বাঁকা করছে দেখে আঁধার বলে উঠে।

আঁধারঃ আরেহ এমন করলে নষ্ট হয়ে যাবে তো মেহেদী।হাত সোজা রাখো।

শবনমঃ হাত ব্যাথা করছে ধুয়ে ফেলি,,,( অসহায় ভাবে)

আঁধারঃ না রং হয়নি এখনো,,,

আঁধার শবনমের দু হাত সাবধানে ধরে রাখলো যেন ব্যথা না হয়।

শবনমঃ আমার বোরিং লাগছে এখানে,,( আঁধারের কাঁধে মাথা রেখে)

আঁধারঃ তোমার বোরিংনেস দূর করার জন্য কি করা যায় বলো?

শবনম হুট করেই আঁধারের কাঁধ থেকে মাথা সরিয়ে বলে,,,

শবনমঃ আরমান মালিকের একটা চমৎকার গান শোনান,, আপনি তো সব কাজেই পারফেক্ট তাই না? দেখি আপনার গান পারফেক্ট হয় কিনা,,

আঁধারঃ তুমি আমাকে চ্যালেঞ্জ করছো?( ভ্রু কুঁচকে)

শবনমঃ কিছুটা তেমনি ভেবে নিন।( ভাব নিয়ে)

আঁধারঃ ওকে চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেড… বাট আই হ্যাভ আ কন্ডিশন,,

শবনমঃ কি?( কপাল কুঁচকে)

আঁধারঃ আমার গান ভালো হলে তুমি কখনো আরমান মালিকের নাম নিবে না। রাজি??

শবনমঃ কিহ। ওকে ওকে এক্সেপ্টেড,,, আই নো আপনি আর যাই করেন আরমান মালিককে বিট করতে পারবেন না। ( ভাব নিয়ে)

শবনম আঁধারের কাঁধে আবার মাথা রেখে দিল। আঁধার বাঁকা হেঁসে বলতে শুরু করল,,,

“ তু আতি হ্যায় সিনেমে
যাভ যাভ সাসে ভারতা হু
তেরে দিলকি গালিও সে
ম্যায় হার রোজ গুজারতা হু
হাওয়া কি য্যায়সে চালতি হ্যায় তু
ম্যায় রেথ্ য্যায়সে উড়তা হু
কন তুঝে ইউ পেয়ার কারেগা
য্যায়সে ম্যায় কারতা হু…..

হোওও ও হাআআ হোওও ওহাআআ,,,

আঁধার শবনমের হাত একটু উঁচু করে তুলে ওদের নামের দিকে তাকায়।

তুজো মুঝে আ মিলা
সাপনে হুয়ে সারফিরে
হাথো মে আতে নেহি
উড়তে হ্যায় লামহে মেরে
মেরি হাসি তুঝসে মেরি খুশি তুঝসে
তুঝে খাবার ক্যায়া বে কাদার,,,

জিস দিন তুঝকো না দেখু
পাগাল পাগাল ফিরতা হু
কন তুঝে ইউ পেয়ার কারেগা
য্যায়সে ম্যায় কারতা হু,,,

আঁধার গান অফ করে শবনমের দিকে তাকিয়ে দেখে ও ঘুমিয়ে গেছে। আঁধার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওকে কোলে তুলে নেয়। মেহেদী শুকিয়ে গেছে এতক্ষণে তাই নষ্ট হয়নি।

শবনম ঘুমায়নি এক্টিং করছে কারন ও আজও আঁধারের কাছে বাজী হেরে গেছে। আর কথা মত ওকে আরমান মালিকের নাম নিতেও বারন করেছে আঁধার। কিন্তু যেখানে ও আরমান মালিকের গান না শুনে ঘুমায় না সেখানে নাকি ওর গান শুনতে পারবে না এটা কেমন কথা।

হঠাৎ শবনমের অনুভব হচ্ছে ও বাতাসের বেগে যাচ্ছে তাও শবনম চোখ খুলে নি আঁধারের ভয়ে। আঁধার শবনমকে ওর রুমে এনে ওর বেডে শুইয়ে দেয়। ও জানে শবনম ঘুমায়নি কিন্তু তখন ও কিছু বলেনি কারন ওকে তখন জাগালে এভাবে নিজের শক্তি প্রয়োগ করে বাড়িতে আসতে পারত না ও।

আঁধারঃ শবনম তুমি কি ঘুমিয়ে গেছো?( ওর দিকে ঝুঁকে)

শবনমঃ হ্যাঁ দেখতে পারছেন না আমি ঘুমিয়ে গেছি কানা নাকি?( চোখ বন্ধ রেখে)

আঁধারঃ রিয়েলি? ঘুমিয়ে গেলেও মানুষ কথা শুনতে এবং বলতে পারে সেটা তো আমার জানাই ছিল না,,( বলেই হেসে দিল)

শবনমঃ আমি আসলেই স্টুপিডডড,,( জিভে কামড় দিয়ে উঠে বসে)

আঁধারঃ তোমার প্লান তো ফ্লপ হয়ে গেল,,,

শবনমঃ দেখেন আপনার গান যতই সুন্দর হোক আমি আরমান মালিকের গান শুনা অফফ করবো না মানে না,,,

আঁধারঃ আই নো দ্যাট,, তখন জাস্ট মজা করছিলাম,,,( শবনমের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে)

শবনমঃ এএএ আপনি এখানে শুচ্ছেন কেন? উঠেননন,,

আঁধারঃ তোমার ফ্যামিলি বাড়িতে আসলে চলে যাব কারন আমি তোমাকে একা ফেলে যেতে পারবো না। এখন চুপচাপ আমার চুলে হাত বুলিয়ে দাও তো।

শবনমঃ পারব নাআআ,,

আঁধারঃ তুমি কি চাও আমি কিছু উল্টাপাল্টা করি?

শবনমঃ মানে?

আঁধারঃ হাম তুম এক কামড়ে মে বান্ধ হো করে চাবি খো জায়ে ( গুন গুন করে)

শবনম ভয়ে ভয়ে আঁধারের চুলে হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করলো,,, আঁধার মুচকি হেসে চোখ বন্ধ করে আছে।

আঁধারঃ কাকে কিভাবে কি নিয়ে জব্দ করতে হয় তা আঁধার ভালো করেই জানে মেরি জান ( মনে মনে)

To be continued…

♠️ #The_Vampire_King ♠️
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_36
[ Wedding Special Part ]
.
.
.
[ আগেই বলে দেই এসব বিয়ে নিয়ে আমি কখনো লিখি নি। আর না বিয়ের নিয়ম সম্পর্কে বেশি কিছু জানি। ]
.
.
একটা মেয়ে শুয়ে আছে কফিনে। পরনে তার সাদা গাউন ফর্সা শরীরে গাউনটা একদম ফুটে আছে। মাথায় নেটের সাদা উড়না। দেখেই মনে হচ্ছে কোন ব্রাইড।

কিন্তু মেয়েটির বুকের ঠিক বা পাশে একটা নাইফ ঢুকানো। আশেপাশে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ পরে আছে।

শবনম এগিয়ে যাচ্ছে তার দিকে। শবনম কফিনটির কাছে গিয়ে মেয়েটির দিকে ঝুঁকে তার চেহারা বুঝার চেষ্টা করতেই হঠাৎ মেয়েটি চোখ খুলে ফেলে,,, সাথে সাথে শবনম একটা চিৎকার দিয়ে দূরে সরে দাঁড়ায়। মেয়েটির চোখ দিয়ে যেন রক্ত বের হবে এক্ষুনি এতোটা লাল হয়ে আছে।

মেয়েটি বাতাসের বেগে ছুটে এসে শবনমের গলা চেপে ওকে একটা দেয়ালে চেপে ধরে। শবনম ছোটার চেষ্টা করছে কিন্তু ‌পারছে না। হঠাৎ মেয়েটির সুন্দর চেহারা ভয়ঙ্করভাবে হতে শুরু করে। দু’টো বড় চোয়াল দাঁত বের হয়ে আসে তার।

শবনমের ভয়ে আত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে। মেয়েটি আচমকা শবনমের ঘাড়ে নিজের দাঁত বসিয়ে দেয়।

শবনম জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে বসে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে ও। ঘেমে একদম গোসল হয়ে গেছে পুরো শরীর। ভীতু চোখে নিজের আশপাশের জায়গা দেখছে ও। নাহ ওতো নিজের রুমেই আছে। তাহলে কি স্বপ্ন ছিল? হ্যাঁ স্বপ্ন দেখছিল ও।

একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল শবনম। হঠাৎ নিজের ঘাড়ে রগ টানা ব্যাথা অনুভব করল ও। শবনম ভয় পেয়ে নিজের ঘাড়ে হাত দিয়ে ধরফরিয়ে উঠে আয়নার সামনে চলে আসে। ঘাড়ের চুল গুলো সরিয়ে নিতেই দেখলো ওর জন্ম চিহ্নটা বাদে আর কোন দাগ নেই। চিহ্ন টা কালচে হয়ে গেছে আর টাটানো ব্যাথা করছে।

শবনমঃ আমিতো ভাবলাম সত্যিই ওই লেডি ভ্যাম্পায়ার আমার ঘাড়ে কামড় দিয়ে দিয়েছে কিন্তু এটাতো দাগটা। কিন্তু এই দাগটায় ব্যথা হচ্ছে কেন?( ভয়ে ঘাড় ঘষে)

শবনম নিজের বেডে বসে পরে আবার। এই ধরনের স্বপ্ন দেখার মানে বুঝতে পারছে না ও।

শবনমঃ আমিতো কয়েকদিন ধরে কোন হরর মুভিও দেখি না আর না বই পড়ি তাহলে এসব ভয়ঙ্কর স্বপ্ন আসছে কেন?( কনফিউজড হয়ে)

ভাবনার মাঝেই শবনমের চোখ যায় পাশের টেবিলের উপর। একটা স্টারগেজার ফুল আর তার উপর একটা চিরকুট।

শবনম তড়িঘড়ি করে ফুলটা হাতে নেয় তারপর চিরকুট টা খুলে পড়তে শুরু করে,,,

“ For my sleeping princess”
Morning Gift

Your #Unknown_Lover ?

চিটটা পড়ে শবনম মাথায় হাত দিয়ে বসল।

শবনমঃ আবারো এই আননোন লাভার। এতো দিন বন্ধ ছিল এর জ্বালাতন আবারো শুরু হয়ে গেল। কে এই লোক কি চায় ? আই’ম সিউর‌ এটা সেই লোকটাই যাকে আমি সেদিন কফিনে দেখিছিলাম তারপর জঙ্গলে। যত বার বিপদে পড়েছি কোথা থেকে যেন উদয় হয়ে যেত।( অবাক হয়ে)

কেন খেলছে এমন লুকোচুরি খেলা এই লোকটা সামনে আসে না কেন? এ এই লোকটা কি মানুষ নাকি…ভ ভ্য ভ্যাম্পায়ার?( ভয়ে ভয়ে)

নো নো এসব কিছু না বেশি বেশি ভাবছি আমি। এই লোকটা কে খুঁজতে হবে আমায় তাহলেই সব প্রশ্ন উত্তর পাব আমি।

শবনম চিটটা ড্রয়ারে রেখে ফ্রেশ হতে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর রেডি হয়ে বেরিয়ে আসে ও।

বাইরে অনেক শব্দ হচ্ছে। শবনম গিয়ে জানালার সামনে দাঁড়ালো। আজকে বিয়ে তাই সবাই কাজে ব্যস্ত। গানের আওয়াজে মাথা যেন ধরে যাচ্ছে ওর। মিমের কাজিনরা বাইরে হৈচৈ করছে।

হঠাৎ আঁধারের কথা মনে পড়ে যায় ওর। আঁধারের কথা মনে আসতেই আনমনে হেসে দেয়। আঁধারের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ও নিজেই আঁধারের বুকে ঘুমিয়ে পরেছিল। সবাই আসার সাথে সাথেই আঁধার চলে গিয়েছিল রাতে।

শবনমের মাথা থেকে সব চিন্তা যেন গায়ের হয়ে গেল। এখন শুধু আঁধারের চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

দরজা খোলার শব্দে শবনমের ধ্যান ভাঙে। মায়া খাবারের ট্রে নিয়ে রুমে ঢুকছে।

মায়াঃ তাহলে ঘুম ভাঙলো আমার আম্মুর,,,

শবনমঃ হুম গুড মর্নিং আম্মি,,( মায়াকে জড়িয়ে ধরে) রাতে কখন ফিরেছিলে তোমরা ক্লাব থেকে?

মায়াঃ তিনটায়,, এসেই তোমার আব্বি সোজা তোমাকে দেখতে আসে আর দেখে তুমি ঘুম।

শবনমঃ আব্বি কি নিচে?

মায়াঃ হুম বাড়ির সার্ভেন্ট দের সব কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছে। তুমি ব্রেকফাস্ট সেরে নিচে চলে আসো। দেখো বাইরে সবাই ইন্জয় করছে আর তুমি রুমে বসে আছে।

শবনমঃ ওকে আসছি,,,

মায়া চলে যেতেই শবনম ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে আসে। ফুল এবং লাইটিং করে পুরো বাড়ি সাজানো হয়েছে। সব আশেপাশে দেখতে দেখতে সিঁড়ি বেয়ে নামছে।

নিচে ওদের কাজিনরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। শবনম গিয়ে ওদের পাশে বসে পরল।

সারাদিন সবার সাথে কেটে যায় ওদের। পার্লারের স্টাফরা চলে আসে মিমকে সাজাতে। লাল রঙের লেহেঙ্গা আর ভারি গোল্ড জুয়েলারি দিয়ে সাজানো হয়েছে ওকে।

শবনম রেডি হয়ে মিমের রুমে আসে। [ শবনম আকাশি রঙের লেহেঙ্গা আর সাদা রঙের নেটের উড়না সেট পরেছে। সাদা ক্রিস্টাল এর জুয়েলারি আর চুল গুলো কার্ল করে এক পাশে আনা ]

শবনম মিমের রুমে এসে দেখে মিম আয়নায় নিজেকে দেখছে।

শবনমঃ এতো দেখলে নিজের নজর নিজেরই‌ লেগে যাবে মিসেস মিম। ( মজার করে)

শবনমের কথা শুনে সবাই হেসে দেয় আর মিম কিছুটা লজ্জা পেয়ে বসে পরে।

মিমঃ যত লেগ পুল করার করে নে আজকে তোর দিন কিন্তু ভুলিস না আমারো দিন আসবে। ( ভেংচি কেটে)

শবনমঃ দেখা যাবে,,,

বাইরে শোরগোল শোনা যাচ্ছে। হয়তো বরযাত্রী চলে এসেছে। শবনম আর বাকি সবাই দৌড়ে জানালার সামনে দাঁড়ায়। তিনটা ফুলে সাজানো গাড়ি প্রবেশ করছে ওদের বাড়িতে।

সবাই বেরিয়ে যায় রুম থেকে দেখার জন্য। শবনম মিমের পাশেই বসে আছে।

শবনমঃ আপিইই,

মিমঃ কিই

শবনমঃ ফিলিং নার্ভাস?

মিমঃ একটু ( অসহায় ভাবে)

শবনমঃ আরেহ নার্ভাস হওয়ার কি আছে আমিতো আছি তাইনা। যৌতুক হিসেবে আমি তোমার সাথে তোমার শশুর বাড়ী যাব চিল মারো। দুই বোন মিলে রেজওয়ানদের অবস্থা টাইট করে দিব।( কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো)

মিমঃ তুই পারিসও,,, ( হেসে)

মায়া ইয়ানকে বরন করে নিচ্ছে। [ ইয়ান লাল রঙের পাঞ্জাবি আর মাথায় পাগড়ি পরেছে। ]

আঁধার কোয়েল আর জোসেফ পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। আঁধারের চোখ বারবার আশেপাশে শবনমকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না।

ধ্রুব মায়ার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে আর অপলক ভাবে কোয়েলকে দেখছে। [ গোলাপী রঙের লেহেঙ্গার সেট আর ম্যাচিং জুয়েলারি পরেছে ও। চুল স্ট্রেইট করে খোঁপা করা আর খোঁপায় সুন্দর করে ফুল আটকানো।‌ ধ্রুব সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরেছে]

কোয়েল নিজের চোখ নামিয়ে আছে। মিমের একটা কাজিন বারবার ধ্রুবর গা ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছে। ধ্রুব যথাসম্ভব দূরত্ব রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু একটু ভির হওয়ায় পারছে না। কোয়েল বিষয়টা খেয়াল করে রাগে ফুঁসছে।

সব ফর্মালিটি শেষ করে ওদের ভিতরে প্রবেশ করানো‌ হয়। ইয়ানকে স্টেজে বসিয়ে সবাই নিজেদের স্থানে বসে পরে।

মায়া শবনম আর আয়রা মিমকে নিয়ে আসছে। মিমকে এনে ইয়ানের পাশে বসানো হয়। শবনম আয়রা মিমের পাশে দাঁড়িয়ে আছে আর কোয়েল ধ্রুব ইয়ানের।

হঠাৎ শবনমের চোখ যায় পাশে আঁধারের দিকে। আঁধার এক ধ্যানে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর ওর ঠোঁটের কোণে সেই মায়াবী হাসি। শবনম ভ্রু নাড়িয়ে আঁধারকে জিজ্ঞেস করে কি,, আঁধার মাথা হালকা নাড়িয়ে উত্তর দেয় কিছু না।

আঁধার ধূসর রঙের পাঞ্জাবি পরেছে। পাঞ্জাবি টা পুরো ফুটে আছে ওর গায়ে। শবনম আনমনে হেসে দেয় আঁধারকে দেখে। মিম আর ইয়ানের মালা বদল শেষ করিয়ে ওদের বসানো হয়। ওদের পাশেই কাজি সাহেব বসে আছেন।

সব নিয়ম শেষ করে ওদের কবুল বলতে বলা হয়। কবুল বলা শেষ হলেই সবাই ওদের দোয়া করে মুখে মিষ্টি তুলে দেয়। সবার জোরাজুরি তে ইয়ানের মুখে মিষ্টি দেওয়া হয় কিন্তু সবার আড়ালে ও সেটা থুথু দিয়ে ফেলে দেয়।

এখন বিদায়ের পালা। মিম কান্না করছে সবাইকে জড়িয়ে ধরে।

শবনমঃ উফফো দি এমন ভাবে কান্না করছো যেন আমরা তোমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছি। যদি তোমার যেতে ইচ্ছে না হয় তাহলে আমরা ইয়ান জিজ কে এখানেই ঘরজামাই করে রেখে দেই কি বলো? ইয়ান জিজ আপনি মিম আপির জন্য ঘরজামাই হতে রাজি তো?( ইয়ানকে উদ্দেশ্য করে)

ইয়ান হচকিয়ে যায় শবনমের কথায় আর বাকি সবাই হেসে দেয়। মিমের কান্না মাখা ফেসেও হাসি ফুটে উঠে।

আঁধারঃ ইয়ানকে ঘরজামাই না করে তুমি চাইলে এখনি তোমাকে ঘরের বধু করে নিয়ে যেতে পারি সিট কিন্তু এখনো খালি আছে। ( শবনমের কানে মুখ নিয়ে)

শবনম চোখ বড় বড় করে তাকায় আঁধারের দিকে। আঁধার বাঁকা হেসে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।

ইয়ান মিমকে নিয়ে গাড়িতে উঠে পরে । আঁধার কোয়েল আর জোসেফ অন্য গাড়িতে উঠে যায়।

শবনমের কান্না আসছে কিন্তু ও সেটা কাউকে বুঝতে দেয় নি। যতদূর গাড়ি দেখা যায় সেটার দিকে তাকিয়ে ছিল ও।

♠️♠️♠️

কোয়েল মিমকে ইয়ানের রুমে রেখে চলে যায়। রুমটা কোয়েল সাজিয়েছে। গোলাপ ফুল আর অর্কিড দিয়ে পুরো রুম সাজানো।

রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে ও। হঠাৎ পেছন থেকে ইয়ান ওকে জড়িয়ে ধরে। মিমকে ঘুরিয়ে ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বলতে শুরু করে ও।

ইয়ানঃ কালকে তো ওরা আসবেই মিম তাহলে কান্না করছো কেন? ওয়েট ওয়েট; তুমি কি কান্না করে শবনমকে বোঝাতে চাচ্ছিলে যে আমি তোমার উপর টর্চার করব যার জন্য তুমি আসতে চাচ্ছিলে না।( ভ্রু কুঁচকে)

মিমঃ মানে কি একদমি না,,,

ইয়ানঃ যাই হোক টর্চার তো করবই কিন্তু সেটা হবে আমার লাভ টর্চার। ( মিমের কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে)আই লাভ ইউ মিম,,,

মিমঃ আই লাভ ইউ টু ইয়ান,,(মিম ইয়ানকে জড়িয়ে ধরল)।

♠️♠️♠️

জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আঁধার। ওর হাতে একটা পোট্রেট ফ্রেম। একজন অসম্ভব সুন্দর মহিলা তারপাশে একজন লোক দাঁড়ানো। লোকটির পাশে একটি ছয় বছরের ছেলে দাড়ানো আর মহিলাটির কোলে একটি ছোট বাচ্চা। পোট্রেটা যেই এঁকেছে মনের রং তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে তাদের ছবি। পোট্রেট টা দেখেই বোঝা যাচ্ছে একজন হ্যাপি ফ্যামিলি।

আঁধার পোট্রেটটা বুকে জড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর চোখের কোণে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমে গেছে।

আঁধার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে,,,

আঁধারঃ আই মিস ইউ মম ড্যাড,,,( অস্ফুট কন্ঠে)

To be continued…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here