♠️ #The_Vampire_King ♠️,37,38
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_37
.
.
.
.
জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আঁধার। ওর হাতে একটা পোট্রেট ফ্রেম। একজন অসম্ভব সুন্দর মহিলা তারপাশে একজন লোক দাঁড়ানো। লোকটির পাশে একটি ছয় বছরের ছেলে দাড়ানো আর মহিলাটির কোলে একটি ছোট বাচ্চা। পোট্রেটা যেই এঁকেছে মনের রং তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে তাদের ছবি। পোট্রেট টা দেখেই বোঝা যাচ্ছে একজন হ্যাপি ফ্যামিলি।
আঁধার পোট্রেটটা বুকে জড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর চোখের কোণে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমে গেছে।
আঁধার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে,,,
আঁধারঃ আই মিস ইউ মম ড্যাড,,,( অস্ফুট কন্ঠে)
♠️ Next Day ♠️
মায়া আর শবনম এসেছে রেজওয়ান মেনশনে মিম আর ইয়ানকে নিয়ে যেতে। শবনম মিম ইয়ান আর মায়া সোফায় বসে আছে। সবাই কথা বলতে ব্যস্ত কিন্তু শবনমের চোখ আঁধারকে খুঁজতে।
মিমঃ তুই কাকে খুঁজছিস শবনম?
শবনমঃ আব কোয়েলকে,,, ( হচকিয়ে) কোয়েল কোথায়?
মায়াঃ হ্যাঁ কোয়েল কোথায় আর আঁধারকেও তো দেখছি না।
মিমঃ কোয়েল ওর ফ্রেন্ডদের বাসায় গিয়েছে। আর আঁধার ভাইয়া সকালে বেরিয়েছে বলে যায় নি।
শবনমঃ ওহ্।( মন খারাপ করে)
ইয়ানঃ আমার একটা জরুরী কাজ আছে ছোট আম্মু নাহলে আমিও যেতাম। আপনি মিমকে নিয়ে যান আমি বিকেলে গিয়ে ওকে নিয়ে আসবো।
মায়াঃ আচ্ছা তাহলে তোমার যখন প্রবলেম তাহলে আমি ফোর্স করবো না। চলো মিম শবনম।
মায়া মিম আর শবনম কে নিয়ে চলে যায়। বাসায় এসে মন খারাপ করে বসে আছে শবনম। ও গিয়েছিল আঁধারকে দেখতে কিন্তু সেটাই হলো না।
মিম শবনমের রুমে বসেই গিফ্ট এর প্যাকেট গুলো আনফোল্ড করছে আর শবনমকে দেখাচ্ছে।
মিমঃ লুক শবনম এটা কত প্রিটি। ( একটা নেকলেস দেখিয়ে)
শবনমঃ এটা সুন্দর? কেমন পুরনো পুরনো দেখা যায়। ( চোখ কুঁচকে)
মিমঃ আরেহ স্টুপিড এটা পুরোনো না এটাকে,,,
শবনমঃ জানি আমি খানদানি গয়না বলে। ( হেসে দিয়ে)
সেদিন আম্মি এতো বড় লেকচার দিয়েছে এই জুয়েলারি গুলো নিয়ে হয়তো আমি কোমায় চলে গেলেও এই জুয়েলারির নাম ভুলব না। ( চোখ বাঁকিয়ে)
মিম হেসে দেয় শবনমের কথায়। ইয়ানের ফোন আসতেই মিম উঠে ওর রুমে চলে যায়। শবনম মন খারাপ করে টিভি অন করে শুয়ে পরে। হঠাৎ ওর ফোনের রিং টোন বাজতেই শবনম ধরফরিয়ে উঠে ফোন হাতে নেয়। যেটা ভেবেছিল সেটাই। আঁধার কল করেছে। শবনম ফোন রিসিভ করতে গিয়েও করলো না। কিছুটা অভিমান লাগছে আঁধারের উপর।
শবনমঃ ধরবো না ফোন হুহ।
ফোন বেজেই চলেছে। শবনমের ইচ্ছে করছে ফোন ধরতে কিন্তু ফোনের দিকে হাত বাড়িয়েও আবার পিছিয়ে নেয়।
শবনমঃ না থাক ফোন ধরবো কিন্তু কথা বলবো না এটা হবে পানিশমেন্ট আঁধার রেজওয়ান এর।
শবনম ফোন রিসিভ করে কানে ধরে আছে কোন কথা বলছে না।
আঁধারঃ আই নো আপনি ভাবছেন আপনি কথা না বলে আমাকে পানিশমেন্ট দিবেন কিন্তু মিস শবনম আমাকে পানিশমেন্ট দিতে গিয়ে নিজেকে কেন পানিশ করছেন। ( হেসে)
শবনম পুরো থ হয়ে গেছে আঁধারের কথায়।
শবনমঃ আপনি বুঝলেন কিভাবে আমার মনের কথা?(অবাক হয়ে)
আঁধারঃ যে মনে আমি থাকি তার খবর আমি জানবো না তো কে জানবে মেরি জান। ( বাঁকা হেসে)
শবনমঃ আমি রেগে আছি আপনার উপর।( গাল ফুলিয়ে)
আঁধারঃ একদিন দেখা করিনি বলে রাগ? এতো মিস করো না মেরি জান পরে দূরে চলে গেলে নিজেকে সামলে রাখতে পারবে না। ( ভারি কন্ঠে)
আঁধারের কথায় শবনমের মনে দাগ কেটে দেয়। আঁধারকে হারানোর ভয়টা আবারো জেগে উঠে।
শবনমঃ ক কোথায় চলে যাবেন আপনি?( কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)
আঁধারঃ বলা তো যায়না যদি এ দুনিয়া থেকে চলে যাই তখন কি করবে?( মজা করে)
আঁধারের কথায় শবনমের অনেক রাগ লাগছে।
শবনমঃ আপনি অনেক পঁচা একটুও ভালোবাসেন না আমাকে। যদি বাসতেন এসব কথা কখনো বলতেন না। কথা বলবো না আপনার সাথে আমি। সব সময় শুধু আমাকে ফেলে চলে যাওয়ার কথা বলেন। একদিন আমিই চলে যাবো দেখে নিয়েন তখন হাজার খুঁজেও পাবেন না।
শবনম কথা গুলো বলেই ফোন কেটে দেয়। ওর চোখ দিয়ে অটোমেটিক্যালি পানি গড়িয়ে পড়ছে। আঁধারের মুখে চলে যাওয়ার কথাটা ও সহ্য করতে পারে না কিন্তু আঁধার বার বার এই একটা কথা বলেই ওকে কষ্ট দেয়।
ফোনের ওপাশে আঁধার টাস্কি খেয়ে আছে। শবনম এভাবে রিয়েক্ট করবে বুঝতে পারে নি ও। ওতো জাস্ট একটু মজা করতে চেয়েছিল।
শবনম রেগে ফোনটা বেডে আছাড় মেরে বালিশে মুখ গুঁজে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে।
আঁধার অনেক বার কল করেছে কিন্তু শবনম ধরেনি। অনেক রাগ জমে আছে আঁধারের প্রতি।
প্রতিবার এমন উদ্ভট কথা বলে কষ্ট দেয়। আজকে একদম ক্ষমা করবে না ওই বাদামী চোখ ওয়ালা শয়তান রেজওয়ান কে।
সন্ধ্যায় শবনমের ঘুম ভাঙে। কান্না করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল টের পায়নি ও। শবনম ফ্রেশ হয়ে মিমকে খুঁজতে শুরু করে। রুম ছাদ সহ পুরো বাড়ি খুঁজেও মিমকে পেলো না ও।
শবনমঃ মিম আপি কোথাও গিয়েছে কামিনী?
কামিনীঃ ইয়ান ভাইয়া এসেছিল একটু আগে। আপনি ঘুমিয়েছিলেন তাই আপনাকে ডাকে নি। ইয়ান ভাইয়া মিম আপা আর আপনার বড় ম্যাডাম উপরে তাদের রুমে অনেক চেঁচামেচি করেছে শবনম আপু। ইয়ান ভাইয়া তো মন খারাপ করে মিম আপাকে নিয়ে গেছে।
শবনমঃ ঝগড়া হয়েছে কিন্তু কেন?( অবাক হয়ে)
কামিনীঃ জানি না। বড় ম্যাডামের চিল্লাচিল্লি আওয়াজ শুনছি আর আসিফ স্যারও আছে।
শবনম কামিনীর কথা কিছুই বুঝতে পারছে না। হঠাৎ ঝগড়া কেন হবে তাও ইয়ান জিজুর সাথে। শবনম দৌড়ে উপরে মায়া আর আসিফের রুমে চলে যায়। আসলেই রুম থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ আসছে।
শবনম দরজার সামনে দাঁড়াতেই মায়ার কথা গুলো শুনে থেকে যায়। মায়া কান্না করতে করতে আসিফকে বলছে,,,
মায়াঃ আমি কিছু শুনতে চাই না আসিফ। আমার মেয়েকে আমার ফেরৎ চাই মানে চাই। তুমি এতো বড় কথা আমার কাছ থেকে কি করে লুকালে হ্যাঁ। ও আমার মেয়ে; আমি এতো বছর যাকে খুঁজে এসেছি সে আমার সামনে ছিল কিন্তু আমি চিনতে পারি নি। আমার মেয়েকে আমার চাই। ( কান্না করতে করতে)
আসিফঃ আস্তে মায়া যদি শবনম শুনে ফেলে কি হবে তুমি বুঝতে পারছো?
মায়াঃ শুনে ফেললে ফেলুক। ওর ও জানার অধিকার আছে যে ও আমাদের মেয়ে না। ওর জন্য আমরা আমাদের মেয়েকে হারিয়েছি তাও ওকে কখনো বুঝতে দেই নি। সব কষ্ট ভুলে ওকে নিজের মমতা দিয়ে বড় করেছি। এসব ওর ও জানতে হবে।
শবনমের পা পিছিয়ে গেল মায়ার কথা শুনে। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না ও। নিঃশ্বাস ও যেন আটকে আসছে।
আসিফঃ ওকে এসব জানতে দেওয়া যাবে না মায়া ও কষ্ট পাবে তুমি বুঝার চেষ্টা করো। ও ও ওতো আমাদের মেয়ে বলো; ওকে আমরা কতটা আদর দিয়ে বড় করেছি তুমি চাও ও কষ্ট পাক।
মায়াঃ আর আমরা যে এতো বছর ধরে কষ্ট পাচ্ছি তার কি আসিফ? ওর একজনের জন্য আমাদের পরিবারটা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে। আমি এই মুহূর্তে কারো কথা ভাবতে চাই না। I just want my daughter backkk
শবনম আর শুনতে পারছে না। কান্না আটকিয়ে রাখতে পারছে না ও। বারবার হিচকি তুলছে। এক কদম দু কদম করে পিছিয়ে যায় শবনম।
দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় শবনম কান্না করতে করতে।
রাস্তার পাশে একটা বেঞ্চে বসে হাত দিয়ে মুখ গুঁজে কান্না করছে ও।
শবনমঃ আমি আম্মি আব্বির মেয়ে না? দে আর নট মাই প্যারেন্টস। কেন বললো আম্মি এমন? আম্মি আমাকেও চায় না। ( কান্না করতে করতে)
হঠাৎ শবনম নিজের সামনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মাথা তুলল,,, সামনের মানুষটির মুখে শয়তানি হাসি দেখা যাচ্ছে।
শবনমঃ রনিত স্যার আপনি?? ( চোখ মুছে বলল)
রনিত বাঁকা হেসে শবনমের দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলতে শুরু করে,,
রনিতঃ ভালো হয়েছে কিছুটা সত্য তুমি নিজ থেকে জেনে গেলে। বাকিটা নাহয় আমি তোমাকে জানাবো।
শবনমঃ ম মানে?
হঠাৎ রনিতের চোখের চোখের রং বদলে যায়। শবনম চোখ বড় বড় করে চিৎকার দিতে নিলেই রনিত শবনমের মাথায় হাত রেখে ওকে অজ্ঞান করে নেয়।
রনিতঃ তোমার দূর্বলতা এখন আমার হাতে কিং। দেখা যাক #Vampire_King তার ভালোবাসাকে বাঁচাতে কি কি করতে পারে।
কথাটা বলেই রনিত হাওয়ার বেগে শবনমকে নিয়ে চলে যায় ওখান থেকে।
আজকে দুইদিন শবনম গায়েব। মায়া আর আসিফ জানে শবনম সব সত্য জেনে গেছে। সেদিন শবনমকে দৌড়ে বেরোতে দেখেছিল কামিনী। ওর কথার প্রেক্ষিতে সবাই বুঝতে পারে শবনম সত্যটা জানতে পেরেছে।
আঁধার নিজের সর্বস্ব চেষ্টা করছে শবনমকে খোঁজার কিন্তু ওর সব চেষ্টা ব্যর্থ যাচ্ছে। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে এখন আঁধারের কাছে।
আঁধারঃ মেরি জান কোথায় তুমি। প্লিজ আমার সাথে কানেক্ট করার চেষ্টা করো।( ভাঙা কন্ঠে) আমি সব ঠিক করে দিব প্লিজ কাম ব্যাক।
To be continued…..
♠️ #The_Vampire_King ♠️
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_38
.
.
.
.
একটা অন্ধকার জায়গায় বন্দি শবনব। চারোদিকে উঁচু দেয়াল উপরের ছোট সুরং দিয়ে সুক্ষ্ম আলো প্রবেশ করছে। একটা লোহার বড় দরজা ছাড়া বের হবার কোন পথ নেই। দুই হাঁটু ভাঁজ করে বসে আছে শবনম। প্রচুর ভয় পেয়ে আছে ও।
শবনমঃ র রনিত স্যার মানুষ না ভ্যাম্পায়ার। উনি আমাকে মেরে ফেলবেন। ( নাক টানতে টানতে)। আব্বি ঠিক বলতো ভ্যাম্পায়ার রা ভালো না দে আর ব্যাড।
আচ্ছা আব্বি আম্মি কি আমাকে মিস করছে? না মিস করবে কেন উনারা হয়তো খুশি হয়েছে আমাকে না পেয়ে। আমার জন্য এতো সাফার করেছে তারা আমি আর কখনো ফিরে যাবো না তাদের কাছে কখনো না। এখান থেকে মুক্ত হলে দূরে চলে যাবো অনেক দূরে। কিন্তু আমি কি এখান থেকে মুক্ত হতে পারব?
রনিত স্যার কি সত্যিই আমাকে মেরে ফেলার জন্য এনেছেন? আমি কি করেছি যে উনি আমাকে মারতে চান?( ভাবছে ও)
হঠাৎ শবনম নিজের গলার লকেটটায় হাত দেয় যেটা আঁধার দিয়েছিল। লকেটটা ধরতেই আঁধারের কথা মনে পড়ে গেল ওর। শবনম লকেট টা খুলে হাতে নিয়ে নেয় তারপর ওটাতে ঠোঁট ছুঁইয়ে কান্না করতে করতে বলে।
শবনমঃ আঁধার আপনি কোথায় আমার ভয় করছে এখানে। প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু স্টে হেয়ার প্লিজ।
লকেটটায় অদ্ভুত নীল রংয়ের আলো জ্বলতে শুরু করে কিন্তু শবনম আলোটা বুঝতে পারছে না কজ এটা ইনভিজিবল লাইট যা শুধু এর মালিকই দেখতে পারবে। আর এই লকেটের মালিক হচ্ছে ভ্যাম্পায়ার কিং অর্থাৎ আঁধার।
♠️♠️♠️
আঁধারঃ মেরি জান কোথায় তুমি। প্লিজ আমার সাথে কানেক্ট করার চেষ্টা করো।( ভাঙা কন্ঠে) আমি সব ঠিক করে দিব প্লিজ কাম ব্যাক।
আঁধার রাস্তায় একটা বেঞ্চে বসে আছে। দুই দিন ধরে খোঁজার চেষ্টা করছে ও শবনমকে কিন্তু কোন এক শক্তির কারনে সফল হতে পারছে না।
হঠাৎ আঁধার জঙ্গলের দিকে একটা নীল রশ্মি দেখতে পায়।
আঁধারঃ এটাতো ওই লকেটের রশ্মি যেটা আমি শবনমকে দিয়েছিলাম যেন ওকে সবসময় ট্র্যাক করতে পারি। ( বিস্ময় নিয়ে)
পেয়ে গিয়েছি তোমাকে মেরি জান। আ আমি আসছি,,,
আঁধার রশ্মিটার পেছনে ছুট দেয়।
♠️♠️♠️
মায়া কান্না করছে পাশেই আসিফ ইয়ান মিম আর কোয়েল বসে আছে।
আসিফঃ এখন কান্না করছো কেন তুমি তো এটাই চেয়েছিলে তাইনা? একটা কথা মনে রেখো মায়া আমার প্রিন্সেস এর কোন ক্ষতি হলে আমি তোমাকে কখনো ক্ষমা করবো না কখনো না।
মায়াঃ আমি এমনটা চাইনি আসিফ। আমি সেদিন নিজের মাঝে ছিলাম না তাই মুখে যা এসেছিল বলে ফেলেছি বুঝতে পারিনি ও কথা গুলো শুনছে। আমার মেয়েকে আমি কতটা ভালোবাসি তা তুমি জানো। প্লিজ ওকে ফিরিয়ে এনে দাও ও কখনো আমাকে ছাড়া এক রাত ও থাকে নি সেখানে দুই দিন ধরে নিখোঁজ ও।
ইয়ানঃ আপনারা প্লিজ চুপ করবেন একটু। ( আসিফ আর মায়াকে বলল )। মেইন কথা হচ্ছে আপনারা এটাই চেয়েছিলেন। এখন আপনাদের ইচ্ছা পুরন হয়ে গেছে তাই এসব ড্রামা করে কোন লাভ নেই।
মিমঃ কি বলছো ইয়ান আমার বড় আম্মু আব্বু মোটেও ড্রামা করছে না। আমি জানি উনারা শবনমকে কতটা ভালোবাসেন। তাই উনাদের ফিলিং কে এভাবে হার্ট করবে না।
ইয়ানঃ তুমি কি অস্বীকার করবে যে এসব কিছুর জন্য এনারা দায়ী নয়?
মিমঃ আমি সেটা বলছি না ক,,,
ইয়ানঃ দ্যান শাট আপ। যেটা বুঝবে না সেটা নিয়ে কথা বলবে না। ( কিছুটা রেগে)
ইয়ানের রাগ দেখে মিম চুপ করে গেল। ও জানে ইয়ান ভূল বলছে না।
ইয়ান কোয়েলের সামনে গিয়ে ওর গালে হাত রেখে নরম স্বরে বলতে শুরু করে।
ইয়ানঃ সবসময় তুই তোর আব্বু আম্মুর কথা জানতে চাইতি তাইনা? এই দেখ তোর পুরো ফেমিলি পেয়ে গেলি।
কোয়েল ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ইয়ানের দিকে। ইয়ানের চোখেও পানি।
ইয়ানঃ আমি দোয়া করবো আমি যতটা আদর ভালোবাসা দিয়েছি তোকে এরা তার থেকেও বেশি দিবে। স্টে হ্যাপি কোয়েল।
কথাটা বলেই কোয়েলকে ছেড়ে মিমের হাত ধরে বেরিয়ে গেল ইয়ান। কোয়েল ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ইয়ানের যাওয়ার দিকে।
কোয়েলঃ ইয়ান ভাইয়া,,
♠️♠️♠️
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে শবনম দাঁড়িয়ে যায়। রনিত ভিতরে প্রবেশ করে শবনমকে দেখে একটা হাসি দিয়ে ওর দিকে এগিয়ে আসলো।
শবনম ভয়ে পিছিয়ে যায়। রনিত শবনমকে ভয় পেতে দেখে থেমে যায়।
রনিতঃ ভয় পাচ্ছো কেন শবনম? ডোন্ট ওয়ারি আমি এখন তোমাকে কিছু করবো না। ( অদ্ভুত রহস্যময় হাসি দিয়ে)
শবনমঃ এ এখন কিছু করবেন না মানে?
রনিতঃ তোমাকে বাঁচিয়ে রাখার পেছনে আমার যে উদ্দেশ্যে সেটা তো সফল হোক তারপর নাহয় তোমাকে শেষ করবো।
শবনমঃ আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি রনিত স্যার আমাকে প্লিজ যেতে দিন। আপনি কেন আমাকে আঁটকে রেখেছেন?( ভয়ে ভয়ে)
রনিত শবনমের কথায় রেগে ওর হাত শক্ত করে ধরে বলতে শুরু করে।
রনিতঃ ক্ষতি তুমি করো নি তোমার ওই আঁধার করেছে আর ওর করা অপরাধের মাসুল এখন তুমি দিবে। তোমার জীবন দিয়ে আমি আমার বোনকে জীবিত করবো।
শবনম অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রনিতের দিকে। রনিতের কথার কিছুই ওর মাথায় ঢুকছে না। আর আঁধারের নাম কেন নিল ও? আঁধার কিভাবে ওদের ক্ষতি করতে পারে ওরা তো ভ্যাম্পায়ার।
শবনমের আকাশ কুসুম ভাবনার মাঝেই রনিত ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া শুরু করে।
শবনমঃ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে। আমার হাত ছাড়েন ( হাত ছাড়াতে ছাড়াতে)
রনিত শবনমকে একটা রুমে নিয়ে আসলো। রুমটাতে শুধু মোম জ্বলছে। মোমের আলোতেই পুরো রুম আলোকিত।
সামনেই একটা কফিন রাখা। রনিত শবনমকে কফিনটার সামনে দাঁড় করালো।
শবনমঃ এ এটা কার কফিন?
রনিতঃ আমার বোনের,,,
রনিত কফিনের উপরের ঢাকনা তুলে দেয়। ভিতরের মানুষটিকে দেখতেই শবনম চিৎকার দিয়ে কয়েক কদম পিছিয়ে যায়।
সেই মেয়েটিই এটা যাকে ও স্বপ্নে দেখেছিল। শবনম চোখ বড় বড় মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ বলবে না এটা একটা মৃত মানুষ। দেখতে বুঝা যাচ্ছে মেয়েটি মৃত না ঘুমিয়ে আছে।
শবনমঃ এ এই মেয়েটির কি হয়েছে?
রনিতঃ তোমার আঁধার করেছে আমার বোনের এ অবস্থা। ( জোরে চিৎকার করে)
শবনম দু হাত দিয়ে নিজের কান চেপে ধরে। কতটা ভয়ঙ্কর গর্জন রনিতের।
রনিতঃ আজকে তোমার জীবন দিয়ে আমি আমার বোনকে আবারও জীবিত করবো। তোমার মৃত্যু আমার বোনের পুনঃ জনম। ( হেসে)
শবনম এক কদম দু কদম করে পিছিয়ে যেতে নিলেই রনিত ওর হাত ধরে ফেলে।
রনিতঃ পালানোর চেষ্টা করে লাভ নেই শবনম কারন এখন আর পালানোর সুযোগ আমি তোমাকে দিব না।
রনিত শবনমের হাত শক্ত করে ধরে কফিনটার সামনে দাঁড় করায়। মেয়েটির বুকে ছুরি ঢুকানো।
রনিত ছুরিটা তুলে নিয়ে শবনমের সামনে ধরে। ছুরিটি জ্বল জ্বল করছে।
রনিতঃ এই ছুরিটা কোন সাধারণ ছুরি নয় শবনম। এটাকে ক্রিস্টাল নাইফ বলে। সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র আমাদের। আজকে এই ক্রিস্টাল নাইফ দিয়ে তোমাকে শেষ করবো আমি তারপর সে রক্ত দিয়ে আমার বোন কে আবারো জীবিত করবো।
শবনম হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে আর কান্না করছে। রনিত ক্রিস্টাল নাইফ দিয়ে শবনমের ডান হাতের রগে টান দেয় সাথে সাথে হাতের রক্ত দিয়ে ফ্লোর ভেসে যেতে শুরু করলো। শবনমের ঘাড়ের চিহ্ন টা এবার পুরো কালচে হয়ে গেল আর নাইফটার রং বদলে লাল হয়ে গেল।
রনিত এবার নাইফটা শবনমের গলার সামনে ধরলো। ছুরিটি টান দেওয়ার আগেই কেউ ঝড়ের গতিতে এসে রনিতকে লাথি দিয়ে দূরে ছিটকে ফালায়। শবনম পরে যেতে নিলেই সে ধরে ফেলে ওকে।
শবনম ঝাঁপসা ঝাঁপসা চোখে দেখে আঁধার ওকে ধরে আছে। শবনমের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল। আঁধার শবনমকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে আর রনিতের দিকে হিংস্র চোখে তাকায়।
শবনমঃ আঁধার রনিত স্যার ভ্যাম্পায়ার আপনি জানেন? আর উনি আজেবাজে কথা বলছে আপনার নামে। আপনি নাকি উনার বোনকে মেরেছেন। উনি অনেক খারাপ আমার হাতে ব্যাথা দিয়েছে। ( কান্না করতে করতে)
আঁধার শবনমের হাতের দিকে তাকিয়ে দ্রুত নিজের রুমাল বের করে বেধে দেয়। শবনমের চোখের পানি মুছে ওকে বলে আঁধার।
আঁধারঃ আমি এসে পরেছি মেরি জান তোমার কিছু হবে না দেখো। ওই রনিতকে এমন ভয়ঙ্কর শাস্তি দিব যা ও কখনো ভুলবে না কখনো না।
( রনিতের দিকে হিংস্র চোখে তাকিয়ে)
শবনম আঁধারের চোখে হিংস্রতা দেখতে পাচ্ছে। ওর নিজেরই ভয় লাগছে।
রনিতঃ কার কাছে সুরক্ষা চাইছো শবনম? তোমার আঁধার নিজেই একটা ভ্যাম্পায়ার।
শবনম অবাক চোখে রনিতের দিকে তাকায় তারপর আঁধারের দিকে।
রনিতঃ ভালো হয়েছে তুই নিজে থেকে মরতে চলে আসলি আজকে সবার আগে তোকে শেষ করবো তারপর তোর লাইফলাইন কে।
আঁধার শবনমকে ছেড়ে রনিতের দিকে তেড়ে যায় আর ওর গলা চেপে ধরে। রনিত আঁধারের হাতে ক্রিস্টাল নাইফ দিয়ে আঘাত করে দেয় সাথে সাথে আঁধার দূরে সরে যায়।
আঁধার এবার নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে নিজের ভ্যাম্পায়ার রুপে চলে আসে। রনিতও নিজের ভ্যাম্পায়ার রুপে এসে আঁধারকে হিট করার চেষ্টা করছে।
শবনম নির্বাক চোখে ওদের দেখছে শুধু। আজকে সত্যিই নিজের জীবনকে সবচেয়ে রহস্যময় লাগছে ওর কাছে। আর কত রহস্য জানার বাকি আছে ওর? ভাবছে শবনম।
আঁধার আর রনিতের হাতাপাই এর মাঝে রনিতের হাত থেকে ক্রিস্টাল নাইফ পরে যায়। রনিত ওটা তুলতে নিলেই আঁধার তুলে ওটা রনিতের বুকের ঢুকিয়ে দেয়। সাথে সাথে রনিত নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
আঁধার রনিতকে মেরেই শবনমের দিকে তাকায়। শবনম এখনো অবাক চোখে দেখছে তাকে। আঁধার শবনমের দিকে এগিয়ে আসতেই শবনম পিছিয়ে যায়।
আঁধারঃ মেরি জান তুমি আমাকে ভয় পাচ্ছো কেন? ( অসহায় ভাবে)
শবনম কিছু বলতে পারল না তার আগেই ওর চোখ ঝাপসা হয়ে গেল। আঁধার দ্রুত শবনমকে ধরে ফেলে। শবনমের হাতের দিকে তাকাতেই দেখলো হাত নীলচে হয়ে গেছে। আঁধার কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। ওর দুনিয়াটা যেন থমকে যাচ্ছে।
To be continued…..