“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ৬
(নূর নাফিসা)
.
.
নাহিদার পরীক্ষা সামনে থাকায় তার স্টুডেন্টদের নাফিসা পড়াচ্ছে আর নাহিদা নিজে পড়ছে। নাফিসা প্রাইভেট পড়াচ্ছে নাকি প্রাইমারি স্কুলের ১ম শ্রেণির বাচ্চাদের সামলে নিচ্ছে সে-ই জানে! চেচামেচি মারামারি আর ভাষণ! স্টুডেন্টরাও নাফিসাকে পেয়ে গল্পসল্প, দুষ্টুমিতে মেতে উঠেছে!
তাদের যন্ত্রণায় নাহিদা এ রুম থেকে অন্য রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে পড়তে লাগলো। কিছুক্ষণ পরেই নিয়াজ উদ্দিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরলেন। তিনি হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এলে রুমানা বেগম খাবার দিলেন। খেতে বসার আগে নাহিদা নাফিসাকে বললো,
– মেঝ মা, ছোট মা? খেতে বসেছি আমি। চলে এসো।
নাফিসা জবাব দিলো,
– খেয়েছি আমি। তুমি খাও।
– মেঝ মা কোথায়?
– ওই রুমে পড়ে। আপু… বাবা ডাকে।
নাফিসার ডাকে নাহিদা রুম থেকে বেরিয়ে এলো। বাবাকে বলে গেলো সে-ও খেয়েছে। এখন আর খাবে না। তাদের বাবার এই এক অভ্যাস, মেয়েরা খেয়েছে জানলেও নিজে খাওয়ার সময় ডাকে। এতে মেয়েরা বিরক্ত হয় না কখনো, বরং বাবার প্রত্যক্ষ ভালোবাসা অনুভব করে আনন্দিত হয়। নাজিয়ার বিয়ের পর থেকে মাঝে মাঝে নাজিয়াকেও কল করে জানায় তিনি খেতে বসেছেন! আর নাজিয়া তখন বলে দেয় শেষের লোকমাটা যেন তার নামে গিলে নেয়! এতে নাজিয়ার পেট ভরে যাবে।
নাহিদা আবার পড়ার জন্য চলে গেলে রুমানাকে পাশে বসতে বললো নিয়াজ উদ্দিন। রুমানা এসে বসলে তিনি বলতে লাগলেন,
– তৃ-তনয়ার আম্মা, নাহিদার বিয়ের জন্য এক সমন্ধ এসেছে। অফিসের স্যার নাকি মেয়েকে দেখেছে কোথাও। উনি আজ আমার কাছে মেয়েকে চাইছে উনার ছেলের জন্য। আমি বলেছি মেয়ের অনার্স শেষ করে তারপর বিয়ে নিয়ে ভাববো। কিন্তু তিনি এখনই চাইছেন। অনুরোধ পর্যন্ত করছে যেন মেয়েকে এখন বিয়ে দেই উনার ছেলের কাছে। পড়াশোনা উনারা করাবেন। আমার তো ইচ্ছে, সব মেয়েকে অন্তত অনার্স শেষ করিয়ে তারপর বিয়ে দিবো। এখন তুমি কি বলো, ঠিক হবে এখন বিয়ে দেওয়া?
– বিয়ে তো আল্লাহর হুকুমে হয়। পড়াশোনা যদি করাতে চায় তাহলে বিয়ে দিলে সমস্যা নেই। কিন্তু ছেলে কেমন, কি করে?
– ছেলে দেখতে ভালোই। ছবি দেখিয়েছিলেন স্যার। গতবছর মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে। স্যার কোম্পানির কাজকর্ম দেখে নিতে বলছে কিন্তু সে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরাঘুরি করে। বিয়ে করলে ছেলের সংসারের প্রতি টান পড়বে। তাহলে ব্যবসা বানিজ্যে হাত লাগাবে এটা স্যারের বিশ্বাস। ছেলের উপর কোম্পানির দায়ভার তুলে দেওয়ার জন্যই স্যার এখন বিয়ে করাতে চাইছেন। যাতে ঘুরাঘুরি বাদ দিয়ে সংসারে মনযোগী হয়।
– উনারা তো অনেক ধনী লোক! নাজিয়ার বিয়েতে না দাওয়াত করলেন, তখনই তো আসেনি। এখন কি আমাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবে?
– আরে! নাজিয়ার বিয়েতে আসেনি কারন উনাদের অন্যত্র দাওয়াত ছিলো। এমনিতে খুব ভালো মানুষ তিনি। সবার সাথে মিশে ভালো। আমার সাথেও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে। ধনী পরিবার তো আমারও তেমন পছন্দ না। কিন্তু স্যার যে অনুরোধ পর্যন্ত করে ফেললেন!
– খোঁজ খবর নিয়ে দেখুন, যদি ভালো হয় তাহলে আর আপত্তি কিসের।
– হুম।
রাতে আবার নিয়াজ উদ্দিন সাহেবের অফিসের বস জহিরুল ইসলাম ফোন করলেন। নাহিদার বাবা মায়ের সাথে জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মেহেরুন ইসলাম কথা বললেন বিয়ের ব্যাপারে। উনাদের আচার-আচরণ নাহিদার মায়ের কাছেও ভালোই লেগেছে। উনারা নাহিদাকে সরাসরি দেখতে চাইলে পরশু বাসায় আসতে বললেন নিয়াজ উদ্দিন।
.
সন্ধ্যায় ডাকাডাকি শুনে আরাফ ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। নাজিয়া আর আয়েশা বেগম রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলেন অন্যদিকে আয়াত আর আশিক তাদের রুম থেকে বেরিয়ে এলো। বাইরে এসে দেখলো আলফাজ সাহেবের সাথে এলাকার কিছু লোক এসেছে। আলফাজ সাহেবের হাতে, মাথায় বেন্ডেজ! আরাফ আশিক দৌড়ে গেলো তার বাবার কাছে! আরাফ বললো,
– এসব কি করে হলো বাবা?
আলফাজ সাহেবের মুখ গম্ভীর ও চেহারাও কেমন যেন ফোলা ফোলা! লোকজনের মধ্যে একজন বললো,
– কইবো না! কইবো না! বছর ধইরা ঋণ কইরা খাইবো আর আজকার পর থেইকা মাইর খাইয়া বাড়ি ফিরবো! দুইদিন পর জেলের ঘানি টানবো!
আয়েশা বেগম কান্না ভঙ্গিতে বলতে লাগলো,
– কইছিলাম আমি, ব্যবসা ছাইড়া দেও! লোকসান হয় যেহেতু সেই ব্যবসা করার কি দরকার! কিস্তি উঠাইয়া, ধার নিয়া আর ক’দিন চলা যাইবো!
আরাফ ও তার পরিবারের বাকি সদস্যরা কিছুই বুঝতে পারছে না এসব কথপোকথন! পরে আরাফের জিজ্ঞাসায় লোকজন জানালো তাদের কাছে থেকে গত তিন-চার বছর ধরে ধার নিয়ে ব্যবসা সামলাচ্ছে, ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করছে, একজনের কাছে থেকে ধার নিয়ে অন্যজনকে পরিশোধ করছে। এখন সবমিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা ঋণ আছে। দিবে দিবে বলছে কিন্তু দিচ্ছে না! অবশেষে আজ ভণ্ডামির ফলে লোকজন গায়ে হাত তুলেছে। আবার তারাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে ব্যান্ডেজ করিয়ে এনেছে! বাড়িতে এসে তারা নানান কথা শুনিয়ে গেলো আজ এবং এ সপ্তাহের মধ্যে যদি টাকা পরিশোধ না করে তাহলে তারা আইনের আশ্রয় নিবে সেই হুমকি দিয়ে গেলো!
বাবার কর্মকান্ডের কথা শুনে যেন আরাফের মাথায় বাজ পড়লো! সে তো ভেবেছিলো মোটামুটি সচ্ছলতায় কাটছে তার পরিবার! কিন্তু আজ এসব কি শুনলো! এতো বছরের ব্যাপার তাকে কিছুই জানানো হলো না! সংসারের জন্য এতো পরিশ্রম করে আর তার বাবা এই ঋণের হাল ধরে! ঋণ করে কি করলো এতো টাকা! ব্যবসায় এতো বছর ধরে অকেজো থাকলে কেন এখনো সেখানে লেগে আছে! এখন লোকজনের এতো টাকা দিবেই বা কোথা থেকে! যা বেতন পায় তা তো সংসারেই ঢেলে দেয়! এসব কাজ না করলেই কি হতো না তার বাবার! তার মা জানতো, তবুও তাকে জানালো না! আগে জানলে তো কখনো ঋণের সম্মুখে যেতে দিতো না সে!
সন্ধ্যা থেকে বাড়িতে যেন এক শোক নেমে এলো! আলফাজ সাহেব গম্ভীর হয়ে বসে আছে তার রুমে। পাশে বসেই কান্না করছে আয়েশা বেগম! ছেলেমেয়ে সবাই বিষন্ন হয়ে আছে! বাবার প্রতি বিশ্বাস ভেঙে গেছে সবার। এতো বড় ঘটনা কাউকেই জানায়নি তিনি! আর আজ লোকজনের হাত মাইর খেয়ে বাড়ি ফিরে! নাজিয়া নিরবে রান্নাঘরের কাজকর্ম সামলে নিলো! সমস্ত কাজকর্ম সেড়ে রুমে এসে দেখলো আরাফ গম্ভীর হয়ে খাটে বসে আছে। নাজিয়া যে ঘরে এসেছে সেই খেয়ালও নেই তার! নাজিয়া পাশে এসে বসে আরাফের কাধে হাত রেখে বললো,
– আযান দিয়েছে তো, নামাজ পড়বে না?
আরাফের ধ্যান ভাঙলে জবাব দিলো,
– হুম।
– দুশ্চিন্তা করছো কেন! আল্লাহ সব ঠিক করে দিবেন। সমস্যা সমাধানের জন্য সঠিক পথ ঠিকই বের করে দিবেন। ভরসা রাখো আল্লাহর উপর।
আরাফ বসা থেকে উঠে দাড়ালো এবং বললো,
– যাও নামাজ পড়ো গিয়ে। আমি মসজিদে যাই।
– আচ্ছা।
ইশার নামাজ পড়ে এলে নাজিয়া খাওয়ার জন্য ডাকলো কিন্তু আরাফ বললো সে খাবে না। শুধু আয়াত খেয়ে নিলো। আর কাউকেই রাজি করাতে পারলো না খাওয়ার জন্য! আয়েশা বেগমকে বললে তো তিনি ঝাড়ি মেরে তাড়িয়ে দিলেন! নাজিয়া প্লেটে অল্প খাবার নিয়েছিলো, কিন্তু তারও গলা দিয়ে খাবার নামছে না! দু লোকমা কোনোমতে গিলে রেখে দিলো। রুমে এসে দেখলো আরাফ লম্বভাবে শুয়ে এক হাতের পিট কপালে তুলে রেখেছে! নাজিয়া মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
– এভাবে শুয়ে আছো কেন! মাথা ব্যথা করছে?
– না, ঘুমিয়ে পড়ো।
নাজিয়া হাতে অল্প তেল নিয়ে আরাফের মাথায় মেসাজ করে দিলো। কিছুক্ষণ চুলে আঙুলগুলো নাড়িয়ে দিতেই আরাফ তাকে শুয়িয়ে দিলো। নাজিয়া আরাফের বুকের উপর হাত রেখে চোখ বুজে রইলো। তার চোখেও যেন ঘুম নেই। বেশ কিছুক্ষণ পর আরাফ তার হাত আস্তে আস্তে সরিয়ে দিয়ে উঠে বসলো। নাজিয়া চোখ খুলে তাকাতেই দেখলো আরাফ বিছানা ছেড়ে নামছে। একহাতে আরাফকে চোখ মুছতে দেখে নাজিয়ার ভেতরটা ধুক করে উঠলো! সে সাথে সাথে উঠে বসে বললো,
– কোথায় যাচ্ছো তুমি?
আরাফ তার দিকে তাকালো এবং দ্রুত চোখ সরিয়ে দরজার দিক যেতে যেতে বললো,
– ঘুমাও নি কেন এখনো! ঘুমিয়ে পড়ো। আমি বাড়িতেই আছি।
আরাফ দরজা চাপিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো। আরাফের চোখ লাল হয়ে আছে যেটা নাজিয়ার চোখ এড়ায়নি। নাজিয়া বসে আছে বিছানায়! দু এক মিনিট পাড় হতেই সে বিছানা ছেড়ে নেমে দরজা ফাক করে বাইরে উঁকি দিলো। এবং দেখলো আরাফ উঠুনে পায়চারি করছে আর নিজ মাথায় হাত বুলাচ্ছে। দরজা ফাক করায় উঠুনে অতিরিক্ত লাইটের আলো পড়তেই আরাফ এদিকে তাকিয়ে নাজিয়াকে দেখতে পেল। তারপর সে বাথরুমের দিকে গেলো। চোখেমুখে পানি দিয়ে যথাসম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো। নাজিয়া এখনো দরজার পাশে দাড়িয়ে আছে। আরাফ ঘরে এসে দরজা লাগাতে লাগাতে বললো,
– তোমাকে না বললাম ঘুমাতে! এখানে কি করছো! চলো।
দুজনেই এসে শুয়ে পড়লো। নাজিয়া আরাফের বুকের উপর মাথা রেখে বললো,
– শুধু শুধু এতো টেনশন নিচ্ছো কেন তুমি! এভাবে টেনশনে থাকলে কি সমস্যার সমাধান হবে! উল্টো নিজে অসুস্থ হয়ে পড়বে, আর তখন কিছুই করতে পারবে না! পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে! মাথা ঠান্ডা করে ঘুমাও এখন। আগে নিজে সুস্থ থাকার চেষ্টা করো পরে কিভাবে সমস্যার সমাধান হবে সেটা ঠান্ডা মাথায় ভেবে নিও।
আরাফ নাজিয়াকে দু’হাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
– বাবা-মা এমন কেন, নাজিয়া! আমি তো না খেয়ে থাকলেও ঋণ করতে যেতাম না! আর উনারা সমস্যায় জড়িয়েও আমাকে কিছু জানালো না কেন! আমি কি এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে দিতাম! ওনারা কি সন্তান ভাবে না আমাকে! আমার কোনো মর্যাদা নেই উনাদের কাছে! কি করে পারলো লুকিয়ে রাখতে! দিনের পর দিন লুকিয়ে এখন যে ঘটনা এতো জটিল করে ফেলেছে, এখন আমি কি করবো! কিভাবে বাবাকে উদ্ধার করবো এমন জটিল অবস্থা থেকে! জানো নিজেকে আজ কুলাঙ্গার মনে হচ্ছে! লোকে কি বলবে না, ঘরে এতো বড় ছেলে থাকতেও বাবাকে ঋণ করে সংসার চালাতে হয়! আমার সকল পারিশ্রমিক তো আমি সংসারের পেছনেই খরচ করে যাচ্ছি! সব দিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করছি! তাহলে বাবা ঋণ কেন করতে গেলো! ব্যবসায়ে যেহেতু ঢাল ছিলো, কি দরকার ছিলো সেটার পেছনে লেগে থাকার! আমার এই বেতন দ্বারা কি সংসার কোনোমতে চলতো না! একত্রে এতোগুলো টাকা আমি এখন কোথায় পাবো!
নাজিয়ার সাথে কষ্ট ভাগ করতে করতে আরাফের বুকের ভেতর জমা কষ্ট কঠিন পাথর ফেটে অশ্রু হয়ে বেরিয়ে আসছে! আরাফ কথা বলতে বলতে যে কাদছে সেটা নাজিয়া খুব ভালো বুঝতে পারছে। তার গলার স্বর স্পষ্ট প্রকাশ করছে। সে মাথা তুলে আরাফের দিকে তাকালো। আরাফ এক হাতে দ্রুত চোখ মুছে নিলো। নাজিয়ার চোখেও পানি এসে গেছে। সে নিজ হাতে আরাফের চোখের চারিধার মুছে বললো,
– তুমি এতো ভেঙে পড়লে কিভাবে হবে, হুম? পরিবারের বড় ছেলে তুমি। কতো দায়িত্ব তোমার উপর। এভাবে টেনশনের উপর হাল ছেড়ে দিলে কি চলবে! একটা না একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। আগে মনটাকে শক্ত করো। ভেতরের স্তম্ভটা পাকাপোক্তভাবে গড়ে সুচিন্তাশীল হও। বেতন ভাতাদী জমিয়ে হয়ে যাবে অনেকটা। জীবন যেহেতু আছে দুঃখ আসবেই। দুনিয়াটাই তো পরীক্ষা ক্ষেত্র। সুখ, দুঃখ দিয়ে আল্লাহ আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেন। একবার সুখে রাঙাবে আবার দুঃখের সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। ঝড় এলেই কি ভয়ে ভয়ে ঝড়ের অনুকূলে ছুটতে হবে! নাকি প্রতিকূলে শক্ত খুটি আকড়ে ধরে বাচতে চেষ্টা করবে! দুশ্চিন্তা করে করে নিজে পাগল হয়ে যেয়ো না। ভুলে যাচ্ছো কেন, একজন শিক্ষক তুমি! নিজেই ধৈর্য লঙ্ঘন করে এভাবে ভেঙ্গে পড়ছো তাহলে শিক্ষার্থীদের কি শিক্ষা দিবে! এখন একটু ঘুমাও, কাল সকালে ভেবে দেখো কোনো উপায় আছে কি-না। আপাতত সব চিন্তা একদিকে ফেলে দাও।
আরাফ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে শুনছিলো নাজিয়ার কথা! সে কিসের শিক্ষক! বরাবর তো নাজিয়াই তার শিক্ষক হয়ে দাড়িয়েছে! বিবাহের পর অতিবাহিত দিনগুলোতে ঘরে বাইরের বিষয়াদি নিয়ে সবসময় পাশে থেকেছে আর সঠিক দিকটারই পরামর্শ দিয়ে গেছে! জীবনসঙ্গী হলে তার মতোই হওয়া উচিত! বংশ বৃদ্ধির জন্য নয়! বরং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সঠিক দিকনির্দেশনা দানের জন্যই জীবনসঙ্গীর সৃষ্টি! আজ সেটা প্রমাণিত হলো আরাফের কাছে।
আরাফ নাজিয়ার মাথাটা টেনে কপালে চুমু দিলো। নাজিয়ার ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। সেও এগিয়ে এসে আরাফের কপালে আলতো কোমল ছোয়া দিলো। আরাফের ঠোঁটের কোনেও হাসি ফুটে উঠেছে। নাজিয়া তার হাসিতে লজ্জা পেয়ে আবার আরাফের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।