ভালবাসার এপিঠ ওপিঠ পর্বঃ ০৪
লেখকঃ আবির খান
নিহানে পরনে শুধু একটা প্যান্ট আর হাতে তোয়ালে। যেটা দিয়ে ও মাথা মুছতে ছিল। কিন্তু হঠাৎই সামিরা ওর রুমে চলে আসায় ও প্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়ে যায়৷ অন্যদিকে নিহানকে এভাবে খালি গায়ে দেখে সামিরা হা করে তাকিয়ে আছে৷ যেন ও প্রথম কোন পুরুষ মানুষকে এভাবে দেখছে৷ অবশ্য এটা ওর প্রথমই। এদিকে নিহান কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। হঠাৎই নিহানের রুমে কে যেন নক করে। সামিরা মুহূর্তেই কেঁপে ওঠে। ও ভয় পেয়ে যায়। কি করবে? কোথায় যাবে ও ভেবে পাচ্ছে না৷ কারণ কেউ যদি ওকে দেখে ফেলে তাহলে ও শেষ। তাও আবার এমন একটা পরিস্থিতিতে৷ নিহান একমুহূর্ত সময় নষ্ট না করে সামিরার কাছে এসে ওকে দরজার পাশে দাঁড় করিয়ে তোয়ালে দিয়ে গা ঢেকে দরজা খুলে দেখে ওরই বডিগার্ড। নিহানকে দেখে বডিগার্ড বলে উঠে,
– স্যার আপনার ব্রেকফাস্ট রেডি। সবাই অপেক্ষা করছে। আর সামিরা ম্যামকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ বড়ো স্যার চিন্তা করছেন।
– আচ্ছা তুমি যাও। আমি আসছি। আর সামিরা ম্যামের ব্যাপারটা আমি দেখছি। সবাইকে চিন্তা করতে না করো।
– ওকে স্যার।
বডিগার্ড দ্রুত চলে যায়৷ নিহান দরজা ভিড়িয়ে ওর বেডের উপর থেকে টি-শার্টটা নিয়ে সেকেন্ডের ভিতর পরে ফেলে। সামিরা অবাক পানে তাকিয়ে ছিল। টি-শার্ট পরে নিহান সামিরার দিকে ঘুরে তাকায়। নিহানের সাথে সামিরার চোখাচোখি হতেই ও অসম্ভব লজ্জা পায়। লজ্জায় ওর পুরো মুখ লাল হয়ে যায়৷ নিহান আস্তে আস্তে সামিরার কাছে এসে বলে,
– ম্যাম আমাদের নিচে যেতে হবে৷ আমি বের হচ্ছি আপনি আমার পরে বের হবেন।
~ আচ্ছা। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)
নিহান দ্রুত ওর রুম ত্যাগ করে। সামিরা লজ্জায় ওর মুখ চেপে ধরে। বারবার নিহানে সিক্স প্যাক বডিটা ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে। কিন্তু এখন আর দেরী করা যাবে না। সামিরাও সাবধানে নিহানের রুম ত্যাগ করে নিচে চলে আসে। সামিরাকে দেখে রায়হান সাহেব বলে উঠেন,
– মা, কোথায় ছিলি তুই? তোকে তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিলো না।
সামিরার মুখখানা লজ্জায় লাল হয়ে আছে। ও সেভাবেই তাসনিনের পাশে বসতে বসতে বলে,
~ বাড়িটা ঘুরে দেখছিলাম বাবা।
– ওহ। আচ্ছা নে এবার নাস্তা কর।
– এই আমাদের প্রিন্সেসদের নাস্তা বেরে দেও সুন্দর করে।
~ ওকে স্যার।
রায়হান সাহেব এবং তার দুই মেয়ে, হাসান এবং তার ছেলে নিহান সবাই একসাথে বসে নাস্তা খাচ্ছে৷ ডাইনিং রুমটা যেমন বিশাল বড়ো ঠিক তেমনি ডাইনিং টেবিলটাও অনেক বড়ো। সবসময়ের মতো রায়হান সাহেব সবার মাঝ বরাবর বসেছেন৷ আজ তার ডান পাশে তার দুই মেয়ে আর বাম পাশে নিহান আর হাসান বসেছে। সবাই এটা ওটা কথা বলে নাস্তা খাচ্ছে। রায়হান সাহেব তার মেয়েদের পেয়ে অনেক খুশী। কিন্তু এদিকে তাসনিন খুব বিচক্ষণ দৃষ্টিতে নিহান আর সামিরার দিকে তাকিয়ে আছে। তাসনিন সামিরার সাথে সেই ছোট কাল থেকে আছে। ওর সব কিছুই তাসনিনের জানা। সামিরা যে লজ্জায় লাল হয়ে আছে তা তাসনিনের ধরতে দেরী হয় নি। ও নাস্তা খেতে খেতে ডিটেকটিভদের মতো ভাবছে।
~ এই শয়তান ব্যাটা আসার পর সামিরা চলে এসেছে। ওর চোখে মুখে ভিষণ লজ্জার ছাপ। আর উনিও তেমন একটা সামিরার দিকে তাকাচ্ছে না। তাহলে কি ওদের মাঝে উপরে কিছু হয়েছে? নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে। আমি গাড়িতেই খেয়াল করেছি সামিরা উনার সাথে ভাব করতে চাচ্ছিলো। তাহলে কি এমন হলো ওদের মাঝে? কিছু তো একটা হয়েছে? আমাকে জানতেই হবে৷
তাসনিন খেতে খেতে নিহানের দিকে সন্দেহভাজন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ নিহান কথা বলার মাঝে একবার তাসনিনের চোখে চোখ রাখে৷ ওমনি তাসনিন থতমত খেয়ে যায়। ও দ্রুত নিচে তাকিয়ে খাওয়ায় মন দেয়। অন্যদিকে সামিরা সবার সাথে হেসেখেলে কথা বলছে৷ ও যে একটু মিশুক স্বভাবের তা নিহান বুঝতে পেরেছে। সামিরা কথার মাঝে মাঝে নিহানের দিকে তাকাচ্ছে। আবার লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে ফিরে তাকাচ্ছে। যেটা আবার তাসনিনের চোখ থেকে এড়িয়ে যায় নি। রায়হান সাহেব বলছেন,
– মামনীরা তোমাদেরকে ঢাকার সবচেয়ে বড়ো এবং রিচ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি। তোমার এখন থেকে শেখানে পড়াশোনা করবে।
~ থ্যাঙ্কিউ আব্বু। (সামিরা)
~ বাবা আমাকে শপিং এ যেতে হবে। ব্যবস্থা করে দিও। (তাসনিন)
– কখন যাবি মা?
~ উমম, বিকেলে।
~ আপু আমিও যাবো।
~ আচ্ছা৷
– হাসান তুমি তাহলে ওদেরকে নিয়ে বিকেলে বের হইয়ো।
– স্যার আমার চেয়ে নিহান গেলে ভালো হবে৷ কারণ প্রিন্সেসদের সেইফটির একটা বিষয় আছে।
– নিহান তুমি কি পারবে?
– জি আঙ্কেল অবশ্যই। এটাই তো আমার আসল দায়িত্ব।
– তা ঠিক বলেছো। আমাদের সবার ভরসা এখন তুমি। তোমার জন্যই আমি নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমাতে পারি।
– আঙ্কেল প্লিজ এগুলা বলবেন না৷
– হাহা৷ আচ্ছা আচ্ছা৷
তাসনিন মনে মনে নিহানের দিকে তাকিয়ে বলছে,
~ শয়তান ব্যাটাটা বাবাকে কি যাদুটাই না করেছে৷ একদম অন্ধের মতো বিশ্বাস করে বাবা উনাকে। একদিন ঠিকই পল্টি মারবে এই বজ্জাত ফালতু লোকটা৷ তখন বাবা বুঝবে৷ হুহ৷ ডিজগাস্টিং একটা।
সামিরা খুব খুশী হয়ে বলে,
~ তাহলে বিকেলে আমরা তিনজন শপিং এ যাচ্ছি। ইয়েএএ।
– হ্যাঁ। তবে সাবধান মামনীরা৷ নিহানের কাছ থেকে দূরে কোথাও যাবে না৷
~ আচ্ছা আব্বু৷ (নিহানের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে)
তাসনিন দ্রুত খাওয়া শেষ করে উপরে ওর রুমে চলে যায়৷ এরপর সবার খাওয়া শেষ হলে যে যার রুমে চলে যায়৷ সামিরার মিটমিট করে হাসতে হাসতে রুমে প্রবেশ করে৷ তাসনিন বেডে হেলান দিয়ে বসে ফোন চালাচ্ছিলো। সামিরাকে দেখে তাসনিন কড়া গলায় ওকে ডাক দেয়।
~ সামিরায়ায়া…
তাসনিনের ডাকে সামিরা ভাবনার জগৎ থেকে বের হয় আর আঁতকে ওঠে। ও আস্তে করে বলে,
~ জি আপু?
~ এখানে আমার সামনে বস।
সামিরা ভয়ে ভয়ে বসে। তাসনিন ওর চেয়ে এক বছরের বড়ো। বলতে গেলে ওদের বয়স অনেক কাছাকাছিই। কিন্তু তাসনিন সবসময় এমন আচরণ করে যেন সামিরার চেয়ে ও অনেক বড়ো। অবশ্য এর একটা কারণ আছে৷ আর সেটা হলো, সামিরাকে প্রোটেক্ট করা। ওর মধ্যে বাচ্চা স্বভাবটা তাসনিনকে বেশী চিন্তা দেয়৷ তাসনিন সামিরার কাছে এসে গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
~ এখন সত্যি করে বল তুই নাস্তা খাওয়ার আগে কোথায় ছিলি?
সামিরা ভয় পাচ্ছে খুব৷ ও কোন ভাবেই সত্যিটা বলতে পারবে না৷ তাহলে আজ আর ওর রক্ষা নেই৷ ও আমতা আমতা করে বলে,
~ কই আবার, বললাম না বাড়িটা ঘুরে দেখতে ছিলাম।
~ মিথ্যা। একদম মিথ্যা মিথ্যা। তুই বাড়ি ঘুরে দেখতে গিয়ে লজ্জা কেন পেলি তাহলে?
সামিরা এবার ভিষণ আশ্চর্য হয়ে তাসনিনের দিকে তাকায়। আবার দ্রুত মাথা নিচু করে এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। সামিরা এবার আর কিছু বলছে না। ও ধরা খেয়ে গেছে৷ তাসনিন বুঝতে পারছে সামিরা বলতে চাচ্ছে না৷ তাই ও আর জোর না করে সামিরার হাত দুটো ধরে। সামিরা ভয় পেয়ে আঁতকে ওঠে তাসনিনের দিকে তাকায়। তবে এখন আর তাসনিনের মুখ গম্ভীর না নরমাল মন হচ্ছে। তাসনিন বলে,
~ আমি জানি তুই সাম হাউ ওনার সাথে ছিলি তাইনা? দেখ আমি তোকে সাবধান করছি তুই ওনার কাছ থেকে দূরে থাকবি। উনি কখনোই আমাদের আপন না। হয়তো এখন বাবা আছে বলে আমাদের সাথে এমন করছে। আমার কাছে ওনাকে সন্দেহজনক মনে হয়৷ এই বিশাল সম্পত্তি শুধু তোর আর আমার। উনি আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তোর ক্ষতি করতে পারে সামিরা। (জোর দিয়ে বলল)
~ আপু আপু শান্ত হও। উনি এমন না। তুমি একটু বেশীই ভাবছো। ওনার ক্ষমতা দেখো নি? বাবার সব কিছুই তো উনি সামলাচ্ছে। চাইলেই তো উলটা পালটা করতে পারে। কিন্তু করে নি। কারণ উনি ভালো। আর হাসান আঙ্কেল আছে না। তুমি শুধু শুধু ওনাকে নিয়ে খারাপ ভাবছো। আমার মন বলে উনি অনেক ভালো। ইসস! কি হ্যান্ডসাম উনি। সিক্স প্যাক বডি। উফফ! কি সু…(সামিরা ওর মুখ চেপে ধরে)
তাসনিন ভ্রুকুচকে সামিরার দিকে তাকিয়ে বলে,
~ ওনার সিক্স প্যাক বডি তুই কিভাবে জানলি?
সামিরা একলাফে বেড ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে বলে,
~ উফফ! রাখো তো উনার কথা। চলো বাসাটা ঘুরে দেখি।
~ হুম।
সামিরা তাসনিনকে নিয়ে বাসাটা ঘুরে দেখতে বের হয়। তাসনিন মনে মনে বলে,
~ তুই যতই বলিস উনি ভালো না৷ ডিজগাস্টিং একটা লোক উনি। তোকেও যাদু করে ফেলেছে।
৯.
বিকেল ৪ টা বাজে৷ নিহান অফিসের কাজ আগেই শেষ করে বাসায় চলে এসেছে। হাসানের সাথে বসে ও কথা বলছে।
– বাবা নিহান যেহেতু প্রিন্সেসরা চলে এসেছে, সেহেতু এখন থেকে ফুলটাইম তুই তাদের সাথেই থাক। অফিস আমি আর স্যার সামলাতে পারবো।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
– শোন একটা কথা আছে।
– হুম বলো।
– তোকে দুইজনের সাথে ভালো একটা বন্ধুত্ব করতে হবে৷ তা না হলে সমস্যা হবে৷
– ছোটটার সাথে হয়তো হয়ে যাবে৷ কিন্তু বড়ো জনের সাথে পসিবল কিনা জানি না।
– দেখ চেষ্টা কর। তারা যদি তোর উপর বিশ্বাস না রাখতে পারে তাহলে জানিসই তো।
– চিন্তা করো না৷ আমি আছি তো কিছু হবে না।
– সেটাই তো আমাদের ভরসা। আচ্ছা তুই রেডি হ তাহলে। আমি দেখি প্রিন্সেসরা রেডি হয়েছে কিনা।
– হুম।
হাসান চলে গেলে নিহান কিছুক্ষণ বসে ভাবে৷ তারপর কাকে যেন কল দিয়ে কথা বলে। কথা শেষ হলে ও ফ্রেশ হয়ে তাসনিন আর সামিরার সাথে শপিংয়ে যাওয়ার জন্য রেডি হয়। নিহান হোয়াইট কালারের একটা টি-শার্ট আর তার উপর দিয়ে গ্রে কালারের ব্লেজার পরেছে। আর ডেনিম এর প্যান্টের সাথে স্পোর্ট সু। নিহান পার্ফিউমটা মেরে চোখে কালো সানগ্লাস পরে নেয়। মানে একদম হিরোদের মতো লাগছে ওকে। হাতে রোলেক্সের ঘড়িটা পরে ফোন দুটো পকেটে নিয়ে ওর রুম ত্যাগ করে। রুমের বাইরে আসতেই নিহানের পার্সোনাল বডিগার্ড রকির সাথে দেখা হয়। সে নিহানকে দেখে বলে,
– স্যার আপনাকে বরাবরের মতো অনেক বেশী হ্যান্ডসাম লাগছে।
– হুম। পাম দিলে কাজ হবে না। এখন আর কোন ছুটি দেওয়া পসিবল না৷
– না না স্যারের কি যে বলেন। সত্যি বলছি আপনাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে।
– আচ্ছা থ্যাঙ্কিউ। বাই দ্যা ওয়ে যা বলেছি করেছো তো?
– জি স্যার। আমাদের ফুল ইউনিট ওখানে আছে।
– ওকে।
নিহান রকির সাথে কথা বলতে বলতে বাড়ির বাইরে চলে আসে। তাসনিন আর সামিরা ওর গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। নিহানকে দেখে ওরা পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়৷ সামিরাতো হা করে তাকিয়ে আছে৷ এমন হ্যান্ডসাম ছেলে ও আগে দেখে নি৷ নিহান কাছে আসতেই সামিরা সবার আগে এগিয়ে যায় ওর কাছে৷ নিহানকে ভালো করে দেখে বলে,
~ আপনার ড্রেসিং সেন্স এত ভালো কিভাবে? একদম বাইরের দেশের ছেলেদের মতো লাগছে৷ তবে তারা আপনার চেয়ে এত হ্যান্ডসাম না। হিহি।
– থ্যাঙ্কিউ ম্যাম। আপনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে। (হাসি দিয়ে)
~ সামিরা গাড়িতে উঠ। দেরী হচ্ছে। (তাসনিন রাগী ভাবে বলল)
সামিরা নিহানের দিকে তাকিয়ে ইশারা করে। নিহান বুঝে যায়৷ নিহান তাসনিনের সামনে এসে বলে,
– ম্যাম আপনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে৷
তাসনিনের গাল দুটো মুহূর্তেই লাল হয়ে যায়। ও অবাক হয়ে নিহানের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। কিন্তু পরক্ষণেই আবার রাগী ভাব নিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে। বরাবরের মতোই সামিরা নিহানের পাশে বসে। নিহান কিছু না বলে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাতে শুরু করে। ওর সাথে আরো দুইটা গাড়ি যাচ্ছে৷ ও সবার শেষে চালাচ্ছে৷ সামিরা মন ভরে নিহানকে দেখছে আর মিটমিট করে হাসছে৷ এদিকে পিছনে বসা তাসনিন রাগে ফুলছে। ও মনে মনে বলছে,
~ এহ! আসছে আমার প্রশংসা করতে৷ এভাবে উনি যাদু করে তাই না? মুখুশধারী উনি। সামিরাটাকে যে কিভাবে বুঝাই৷
সামিরা হঠাৎই নিহানের সানগ্লাসটা খুলে হাতে নিয়ে নেয়৷ নিহান কিছুটা অবাক হয়৷ সামিরা বলে,
~ গাড়িতে কেউ সানগ্লাস পরে নাকি! আর সানগ্লাস পরলে আপনার চোখটা দেখা যায়৷ বলা তো যায় না আবার কোনদিকে তাকিয়ে থাকেন। হিহি।
নিহান চুপ করে আছে। ও খুব মনোযোগ দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। বলতে গেলে সামিরার কথায় কোন পাত্তা কিংবা রিয়েক্ট নিহান করে নি। সামিরা লজ্জা পায় নিহানের এমন করায়। ও মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে। তাসনিন এই অবস্থা দেখে মজা পায়৷ মনে মনে বলে, একদম ঠিক আছে। আধা ঘণ্টা পর ওদের গাড়ি থামে৷ নিহানের বডিগার্ডরা এসে গাড়ির দরজা খুলে দেয়। সামিরা আর তাসনিন গাড়ি থেকে নেমে দেখে এটা কোন বিশাল বড়ো মার্কেট না। এটা একটা বড়ো দোকান। লেডিস রয়েল ফ্যাশন হাউস। নিহান বলে,
– ম্যাম ভিতরে চলুন।
~ আপনি আমাদের শপিং মলে না নিয়ে এখানে আনলেন কেন?
– আগে ভিতরে চলুন তারপর বলছি।
~ আপু চলো তো।
সামিরা আর তাসনিন ভিতরে ঢুকে অবাক। পুরো শপ জুড়ে মেয়েদের ড্রেসের কালেকশন। সব দামী দামী ড্রেস। ইন্ডিয়ান, ইতালিয়ান, পাঞ্জাবের আর আমাদের দেশের। বিভিন্ন দেশের কালেকশন। নিহান বলে উঠে,
– আজ পুরো দোকানটা আপনাদের জন্য৷ মন ভরে শপিং করুন। আর বড়ো শপিংমলে যাই নি কারণ আপনাদের সমস্যা হতে পারে তাই।
~ ওও। খুব ভালো করেছেন। আমার তো খুব ভালো লাগছে। আপু চলো শপিং শুরু করি।
~ হুম।
~ ম্যাম আমি হেল্প করছি আপনাদের। আমাদের সাথে আসুন৷
সামিরা নিহানের দিকে তাকায়। নিহান হাসি দিয়ে বলে,
– ওনার সাথে যান। আমি এখানেই আছি।
সামিরা হাসি দিয়ে তাসনিনকে নিয়ে ভিতরে চলে যায়৷ নিহান ওয়াকিটকিতে আশেপাশের খবর রাখছে। অন্যদিকে সামিরা আর তাসনিন অনেকক্ষণ যাবত অনেক কিছু পছন্দ করছে৷ সামিরার একটা ড্রেস অনেক বেশী পছন্দ হয়৷ ও সেটা ট্রাইল দিয়ে নিহানকে দেখাতে আসে। কিন্তু এসে ও যা দেখে তার জন্য ও প্রস্তুত ছিল না। সামিরা দেখে নিহান একটা অসম্ভব সুন্দরী মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে৷ সামিরার চোখমুখে মুহূর্তেই অন্ধকার নেমে আসে। ও আস্তে আস্তে করে নিহানের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,
~ উনি কে?
চলবে..?
সবার ভালো সাড়া চাই। আর কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকবেন সবসময়।
আগের এবং পরবর্তী পর্বের লিংক কমেন্টে দেওয়া হবে৷