সত্যি ভালোবাসো,part_06
writer Fatema Khan
“বউ-ভাত শেষ হবার পর আমি,আরিশ,তনিমা আপু আর রাসেল ভাইয়া আমাদের বাসায় চলে আসছি।আমরা এখানে দুইদিন থাকব।তখন তাহসিন ভাইয়াকে দেখেই কেমন যেনো খারাপ লাগা কাজ করছিলো।”
ফ্ল্যাশব্যাক,
তাহিয়াঃতাহসিন ভাইয়া।
তাহসিনঃ হুম আমি,কেনো আশা করিস নি আমাকে।নাকি আমি এখানে এসেছি বলে তুই খুশি হসনি।
তাহিয়াঃ তা কেনো হবে ভাইয়া,অনেক দিন পর দেখলাম তোমায় তাই একটু অবাক হলাম।তা কেমন আছো?
তাহসিনঃ যেমন রেখেছিস।
তাহিয়াঃকি বললে বুঝলাম না।
তাহসিনঃনা কিছু না,বলছিলাম ভালো আছি।
বউ সেজে তোকে খুব সুন্দর লাগছে।
তাহিয়াঃ হুম।ভাইয়া তুমি কিছু খেয়েছ?নাকি না খেয়ে আছো এখনো?
তাহসিনঃআমার চিন্তা তোর করতে হবে না।তুই বরং নিজের বরের খেয়াল রাখ।
তাহিয়াঃভাইয়া তুমি আগে কিছু খেয়ে…..
তূর্যঃআরে তাহসিন যে,কখন এলি তুই?
তাহসিনঃএই তো ভাইয়া ত্রিশ মিনিটের মত হবে।তা কেমন আছো তুমি?
তূর্যঃভালো থাকি কিভাবে আমার কলিজার বোনগুলোর যে বিয়ে হয়ে গেলো।
তাহসিনঃসে একটু খারাপ তো লাগবেই।সব ঠিক হয়ে যাবে।
“তাহসিন ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলো।ভাইয়ার চোখ দেখে মনে হলো আমাকে কিছু বলতে চায়।চোখ দুটো কেমন ছলছল করছিলো।তা দেখে আমারও খারাপ লাগছিলো।এমন কি হলো যে তাহসিন ভাইয়ার কষ্ট হচ্ছে।ভাইয়া কোনরকম তূর্য ভাইয়ার সাথে কথা শেষ করে চলে গেলো।চলে গেলো বললে ভুল হবে পালিয়ে যাচ্ছিলো।”
(এতোক্ষণ যার সাথে তূর্য কথা বলছিলো সে তনিমার বন্ধু তাহসিন আহমেদ।তনিমার সাথেই অনার্স 2য় বর্ষে
পড়ে।মা মারা গেছেন অনেক আগেই।এখন বাবা আবির আহমেদের সাথে থাকে ও লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার বিজনেসও দেখে)
বর্তমান,
দরজা খোলার আওয়াজে ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলাম।দেখি আরিশ ভাইয়া এসেছে।
_______________________________
“রাসেল রুমে ডুকে দেখে তনিমা ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে চুল ঠিক করছে।তার পরনে লাল রঙের শাড়ি।রাসেল তনিমার দিকে এগিয়ে গিয়ে তনিমার চুলে মুখ গুজে দিলো আর চুলের ঘ্রান নিতে লাগলো। ”
রাসেলঃআমাকে কি বিনা আঘাতে তুমি মেরে ফেলতে চাও।এভাবে লাল শাড়ি পরে খোলা চুলে আমার সামনে আসলে আমি নিজেকে সামলাবো কিভাবে বলতো।
তনিমাঃছাড়ো আমাকে ঘুমাবো আমি।
(বলেই চলে আসতে নিলে রাসেল তনিমার হাত ধরে ফেলে বলে।রাসেল যেন এক ঘোরের মধ্যে আছে)
রাসেলঃআমি আমার কথা রেখেছি এবার তোমার পালা।সবাই আমাদের মেনে নিয়েছে এবার তো আমায় কাছে আসতে দিবে।
তনিমাঃ হুম।
(তনিমার শরীর কাপছে ভয়ে আর গাল গুলো লাল হয়ে আছে লজ্জায়)
রাসেলঃআমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।তুমিও কি আমাকে #সত্যি_ভালোবাসো।
তনিমাঃ সত্যি অনেক ভালবাসি।
“রাসেল তনিমার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।প্রায় অনেকক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে তনিমার গলায় মুখ ডুবালো।তনিমাকে কোলে তুলে নিলো রাসেল,তারপর খাটে শুইয়ে দিলো” (বাকিটুকু নিজ দায়িত্বে বুঝে নিবেন?)
_______________________________
“আরিশ ভাইয়া রুমে আসলে আমি দাঁড়িয়ে উঠলাম।হঠাৎ দরজা খোলায় ভয় পেয়ে দাঁড়িয়ে উঠলাম।অন্য দিকে মন থাকলে যা হয় আর কি।”
আরিশঃকি হলো ভয় পেলে নাকি?এভাবে দাঁড়িয়ে গেলা যে।
তাহিয়াঃঅই একটু অন্যদিকে মন ছিলো তাই হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে ভয় পেয়ে গেছি।
আরিশঃতা কি ভাবছিলো আমার ষ্টুপিড বউটা?
তাহিয়াঃতেমন কিছু না।আমি ফ্রেশ হয়ে আসি অনেক ক্লান্ত লাগছে।
আরিশঃওকে যাও কিন্তু…
তাহিয়াঃকিন্তু কি?
আরিশঃএই শাড়িটা পরে আসো।
তাহিয়াঃআমার জন্য। অনেক ধন্যবাদ।
“গোল্ডেন পারের নীল রঙের শাড়ি দিয়েছে আরিশ তাহিয়াকে।তাহিয়া শাড়ি পরে বের হয়ে আসলো।”
তাহিয়াঃকেমন লাগছে আমাকে আরিশ ভাইয়া?
আরিশঃঅপরুপ।
তাহিয়াঃতাই?।
আরিশঃআচ্ছা শোনো,তুমি আমাকে ভাইয়া বলে ডাকো কেন,আমি কি তোমার ভাইয়া হই?
তাহিয়াঃআগে থেকেই তো ভাইয়া ডাকি।তাহলে এখন নতুন করে কি হলো?
আরিশঃএখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।তাই আজ থেকে তুমি আমাকে শুধু আরিশ বলে ডাকবা আর তুমি করে বলবা।মনে থাকবে
তাহিয়াঃ হুম মনে থাকবে।
আরিশঃএকটা কথা জানো
তাহিয়াঃকি কথা?
আরিশঃআমি তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি।বলতে পারি নাই তুমি যদি আমাকে মেনে না নেও তাই।পরে তনিমার সাথে বাবা বিয়ে ঠিক করেছে বলে আর বলা হলো না।
তাহিয়াঃঅহ,তাহলে বিয়ের পর আমার সাথে এমন করলে কেনো?আমি রাতে কত কান্না করেছি যানো।
আরিশঃজানি তো।তাই তো তুমি ঘুমিয়ে যাবার পর তোমাকে আমার কাছে এনে জড়িয়ে ধরে ঘুমাইছি।
তাহিয়াঃতার মানে তুমি আমায় খাটে নিয়ে আসছো আর আমি ভাবছি আমি হয়তো ঘুমের মধ্যে তোমার কাছে এসে গেছি।
“আরিশ তাহিয়ার হাত ধরে কাছে এনে জড়িয়ে ধরে। তাহিয়া হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনায় অবাক।পরে তাহিয়াও আরিশকে জড়িয়ে ধরে।”
তাহিয়াঃআমি আজ খুব খুশি তোমাকে পেয়ে।তুমি আমাকে #সত্যি_ভালোবাসো আমি কখনো কল্পনাতেও আনি নাই।
“আরিশ তাহিয়ার কপালে একটি ভালোবাসার পরশ একে দেয়।”
আরিশঃহুম সত্যি অনেক ভালবাসি তোমায়।অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমিয়ে পরো কাল আবার তোমাকে কলেজে নিয়ে যেতে হবে।
(তারপর তারা দুজনেই ঘুমিয়ে গেলো)
______________________________
(অন্ধকার রুমে খাটের সাথে হেলান দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে তাহসিন।পুরো রুমের অবস্থা করুন।ড্রেসিং টেবিলের আয়নাটা ভেংগে নিচে গ্লাসের টুকরো পরে আছে,রুমের সবকিছু ভেঙে ফেলেছে তাহসিন)
তাহসিনঃকেনো এমন হলো আমার সাথে,কেনো সেদিন বলে যেতে পারিনি মনের কথা,কেনো আজ তাকে হারিয়ে ফেললাম।একবছরের জন্য তোমায় ছেড়ে গিয়েছি বাবার বিজনেস এর ব্যাপারে আর এর মাঝেই তোমাকে হারিয়ে ফেলবো ভাবতেই কত কষ্ট হচ্ছে তুমি কি দেখতে পাচ্ছো তাহিয়া?আমার যে বুকে খুব ব্যাথা হচ্ছে তা কি তুমি বুঝতে পারো নি আজ?
(কান্না করতে করতে একসময় তাহসিন ঘুমিয়ে পরলো)
___________________________
(সকালে ঘুম থেকে উঠেই তাহিয়া ফ্রেশ হয়ে তৈরি হয়ে নিলো।আজ কলেজের প্রথম দিন,তাই অনেক এক্সাইটেড সে।)
তাহিয়াঃমা আমি কলেজ যাচ্ছি। আরিশ আমাকে দিয়ে আসবে
আফসানাঃভালো কিন্তু কিছু খেয়ে যা।
তাহিয়াঃদেরি হয়ে যাবে তো আরিশের আবার অফিসে কি মিটিং আছে।
(তাহসিন দরজা দিয়ে ডুকতে ডুকতে বলে কার মিটিং)
আফসানাঃআরে তাহসিন বাবা তুই এত সকালে?এসেছিস যখন বস নাস্তা করে নে।
তাহসিনঃআরে আজ অনেকদিন পর কলেজ যাবো।এতোদিন তো ছিলাম না মাঝখানে একবার এসে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছিলাম।আর তনিমা আর তাহিয়া বাসায় আসছে তাই ওদের আর ওদের বরের সাথেও দেখা করতে এলাম।
তনিমাঃতাহিয়াও আমাদের কলেজে এডমিশন নিছে।
তাহসিনঃঅহ।তা রাসেল ভাইয়া কোথায়?
তনিমাঃসে তো সকালেই চলে গেছে অফিসে কাজের চাপ আছে এইকয়েকদিন তো অফিস যেতে পারেনি।
আরিশঃতাহলে তো ভালোই হলো আমি বরং অফিস চলে যাই।তাহসিন তুমি তাহিয়া আর তনিমাকে তোমার সাথে কলেজ নিয়ে যেও।
তনিমাঃসেই ভালো হবে।
(তারপর আরিশ বের হয়ে গেলো)
_____________________________
(তাহসিন আর তনিমা সামনের সিটে বসে আর তাহিয়া পিছিনের সিটে বসে।তাহসিন তাহিয়াকে বারবার আয়নার মধ্যে দেখতে থাকে।তনিমা তাহসিন কথা বলতে বলতে কলেজে আসে।তাহিয়া পুরো রাস্তা চুপ করে ছিলো।তার ইচ্ছে ছিলো আরিশের সাথে কলেজ আসার।)
তাহিয়াঃআপু তাহলে তোমারা নিজেদের ক্লাসে যাও,আমিও যাই।
তনিমাঃঠিক আছে যা।কিছু দরকার হলে আমাকে আর তাহসিনকে বলবি।
তাহিয়াঃঠিক আছে আপু।
(তাহিয়ার যাবার দিকে তাহসিন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে যতক্ষণ না তাহিয়া ক্লাসে ডুকে।)
তনিমাঃহইছে দেখা, বিয়ের আগে তো বলতে পারলি না তাই এখন দেখে লাভ নাই।
(তাহসিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
তাহসিনঃ হুম চল।
_______________________________
“তাহিয়ার আজ কিছুই ভালো লাগছে না। বারবার আরিশের কথা মনে পড়ছে।”
তাহিয়াঃদূর ভালো লাগে না যদি আরিশ থাকতো আমরা ঘুরতে যেতাম কত মজা হতো।যাই ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে আসলে ভালো লাগবে।
তাহিয়া ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আবার ক্লাসে আসার সময় কে যেনো ওর হাত ধরে টান দিয়ে একটি রুমে নিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।তাহিয়া লোকটির দিকে তাকিয়ে বলে-
তাহিয়াঃতুমি
চলবে…….