সাজু_ভাই! পর্বঃ- ০২ | কাছে আসার গল্প

0
2049

সাজু_ভাই!
পর্বঃ- ০২

আমি ভয়ে থরথর করে কাঁপছি, বাবা নাকি বলে দিয়েছে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। কিন্তু এমন কেন হচ্ছে সকলের সঙ্গে? পরপর দুই রাতে দুজন বান্ধবী খুন হয়ে গেল।

ছোট ফুফু সারাক্ষণ আমার সঙ্গে আছে, বাবা মনে হচ্ছে খুব টেনশনে আছে। আমি রুম থেকে বাহিরে একবারও গেলাম না, মা এসে বললো ” মোবাইল নিয়ে বসে থাক তবুও বাহিরে বের হোস না। ”

এই প্রথম মা আমাকে মোবাইল হাতে নিয়ে বসে থাকতে বলেছে, বিপদে পরলে মানুষ কতকিছু ভুলে যায়। সবই স্বার্থ, যখন যেটা মানুষের দরকার হবে সেটাই তারা করবে। আজকে যেটা সমস্যার সম্মুখীন মনে হবে, কাল সেটা কাজে লাগলে আদর করে টেনে নেবে। শীতকালে রোদের তাপে আরাম পেতে সবাই সূর্য ওঠার অপেক্ষা করে, আর গরম কালে সেই সূর্যকে আড়াল করতে সারাক্ষণ মেঘের কামনা করে।

অনলাইনে ছিলাম, এগারোটার দিকে সাজু ভাইর বন্ধু সজীব সাহেব মেসেজ দিল।

– সে লিখেছেন, আসসালামু আলাইকুম।

– ওয়া আলাইকুম আসসালাম, বেশি ভালো নেই। আমরা সবাই খুব টেনশনে আছি আর সারাক্ষণ ঘরবন্দী হয়ে থাকছি।

– কেন কেন?

– গতকাল রাতে আমার বান্ধবী খুন হয়েছে সেটা তো জানেন? কিন্তু আজ রাতে আবার আরেকটা বান্ধবী খুন হয়েছে, আর দুটো লাশের পাশে ছোট্ট একটা চিরকুট থাকে।

– বলেন কি? কি লেখা থাকে?

– গতকাল লেখা ছিল ” প্রথম শিকার ” আর আজ লেখা ছিল ” দ্বিতীয় শিকার, তৈরী থেকো সকল বান্ধবীরা “।

– সাংঘাতিক ব্যাপার।

– হ্যাঁ, আমরা সবাই খুব টেনশনে, বাবা আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করেছে।

– আপাতত সেটাই ভালো হবে, কিন্তু পুলিশ কেন কিছু করছে না?

– জানি না, আর পুলিশ কিছু করে কিনা সেটা তো বাড়িতে বসে জানা সম্ভব না। হয়তো বাজারে বা ওদের বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করার চেষ্টা করছে।

– কিন্তু মারা যাবার পরে আর কি হবে? যা করার আগে করে না কেন? কে এই খুনি?

– জানি না, আচ্ছা বাদ দেন। আপনি কি করেন? আপনার অফিস নেই?

– হাহাহা আর অফিস, ছোটখাট একটা কোম্পানি তাই ওতো চাপ নেই।

– কাজ কখনো ছোট হয় নাকি?

– হয় না?

– না হয় না।

– আচ্ছা ঠিক আছে মেনে নিলাম।

– আপনার সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে, মাঝে মাঝে নক করলে বিরক্ত হবেন?

– না না সমস্যা নেই, আমিও কিন্তু আপনাকে নক করেছি আগে তাই বিরক্ত হলে বলবেন প্লিজ।

– না না বিরক্ত নই, আসলে সকাল থেকে ঘরবন্দী হয়ে আছি তো তাই অনলাইনে।

– সাজুর সঙ্গে কি আর কথা হয়েছে?

– না, সাজু ভাই তো অনলাইনে নেই, আমি একটু আগেই চেক করলাম।

– ও তো সবসময় এক্টিভিটি বন্ধ করে রাখে তাই বোঝা যায় না, তুমি নক দিয়ে দেখো ঠিকই চোরের মতো ঘাপটি মেরে বসে আছে।

– হিহিহি, আপনার বন্ধুকে বলে দেবো যে আপনি তাকে চোর বলেছেন। আরেকটা কথা?

– হাহাহা, আমি কি ভয় পাই নাকি? আচ্ছা কি বলতে চান?

– একটু আগের মেসেজে তুমি করে লিখেছেন তা কিন্তু ভালোই লেগেছে। যেহেতু আমি আপনার ও সাজু ভাইয়ের অনেক ছোট তাই আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারেন।

– ঠিক আছে চেষ্টা করবো।

– সাজু ভাই কিন্তু প্রথম সাক্ষাতেই তুমি করে কথা বলেছে, মেলা মেলা ভালো লেগেছে।

– সাজু সবসময় সিনিয়র জুনিয়র সবাইকে তুমি করে বলে।

– ওহ্ আচ্ছা।

– হুম। আচ্ছা রাখি তাহলে?

– কেন বিজি নাকি?

– হুম একটু।

– আচ্ছা আল্লাহ হাফিজ।

—–

বারোটার দিকে আমাদের বাড়িতে পুলিশ এসেছে এবং সঙ্গে বাবাও আছে। পুলিশ এসে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেন কারণ তাদের কিছু জিজ্ঞেসাবাদ করার আছে। আমি দারোগা সাহেবের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।

– দারোগা বললেন, তোমাকে কিছু প্রশ্ন করি তুমি ভেবে জবাব দেবে।

– জ্বি স্যার।

– আগে বলো তোমাদের ব্যাচের মধ্যে কতজন বান্ধবী ছিলে তোমরা?

– স্যার আমরা একসাথে এগারোটা মেয়ে ছিলাম আর সতেরোজন ছেলে।

– যারা দুজন খুন হয়েছে তাদের সঙ্গে তোমাদের ব্যাচের কারো কোন শত্রুতার কিছু মনে পরে কি তোমার? মানে দেখা গেল এসএসসি পরীক্ষার আগের কোন মনকষাকষি ঘটনা।

– না স্যার তেমন কিছু মনে পরে না, তাছাড়া যখন একসাথে পড়াশোনা করেছি তখন মাঝে মাঝে দু একজনের সঙ্গে তো রাগারাগি হতেই পারে। আর সেই সমস্যার সমাধান তো তখনই মিটে যেতো, তাই বলে সেগুলো নিয়ে খুনাখুনি হবে?

– তোমার যতটুকু বুদ্ধি তুমি ততটুকু কথা বলছো, কিন্তু আমাদের চিন্তা অন্যরকম। খুব ছোট ছোট বিষয় গুলোও একদিন অনেক বড় হয়ে যায় তাই সবকিছু জানতে হবে।

বাবা পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি বললেন,

– স্যার মানলাম কারো সঙ্গে কিছু একটা নিয়ে ক্লাসে ঝামেলা হয়েছে বা কারো জন্য কেউ শিক্ষক এর হাতে মার খেয়েছে। কিন্তু তাই বলে এতদিন পরে সেই কারণে খুন করবে কেন? আে তাছাড়া সকল বান্ধবীদের হুমকি?

– দেখুন, একটা বাংলা সিনেমার মধ্যে দেখছিলাম যে, ভিলেন একটা লোককে গুলি করার সময় বলছেন ” মাখন লাল, কুড়ি বছর আগে তুই একটা থাপ্পড় মরেছিলি কিন্তু সেদিন তোকে কিছু করতে পারি নাই। আজ কুড়ি বছর পরে সেই থাপ্পড় পরিশোধ করতে চাই, কিন্তু কুড়ি বছরে সেই থাপ্পড় সুদেআসলে একটা বন্দুকের গুলি সমান হয়ে গেছে। তাই তোকে গুলি করবো। ”

দারোগার কথা শুনে বাবা চুপ হয়ে গেল, তার মুখ দিয়ে আর কিছু বেরচ্ছে না। কিন্তু দারোগা সাহেব এমন একটা সিনেমার ঘটনা বলে নিজেকে সবার সামনে উপস্থাপন করে চারিদিকে তাকাচ্ছে। আর তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললোঃ-

– তোমাদের স্কুলের হেডমাস্টারের কাছে জানতে পেরেছি যে তুমি সবচেয়ে ভালো ছাত্রী। তাই তুমিই সবকিছু মনে করতে পারবে, আমরা এখন চলে যাচ্ছি। তুমি একা একা বিছানায় শুয়ে শুয়ে ঠান্ডা মাথায় কল্পনা করো, খুঁজে বের করো কে এমন থাকতে পারে? যে তোমাদের উপর প্রতিশোধ নিতে এতটা মরিয়া হয়ে গেছে?

– ঠিক আছে স্যার।

– আর খবরদার তুমি বাড়ি থেকে বের হবে না, কারণ তোমাদের রাস্তার পাশে বাড়ি যদি খুনি এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গুলি করে দেয় তাহলে তো ওদের আরেকটা মিশন কমপ্লিট হয়ে যাবে।

– বাবা বললো, স্যার প্লিজ এভাবে বলবেন না।

– আচ্ছা সরি, কিন্তু রুহি, তোমাকে যা বলছি তুমি তাই করবে, আমি আবার আসবো।

– ঠিক আছে স্যার।

– বাবা বললো, কিন্তু স্যার আপনারা কীভাবে শিওর হচ্ছেন যে খুনি ওদের ব্যাচের কেউ? এমন তো হতে পারে এটা আলাদা কোন চক্রান্ত! কিন্তু সেই দিকে না গিয়ে আপনারা মিছামিছি পরে আছেন।

– দেখুন, যেহেতু আমরা কোনকিছু দিয়ে শুরু করতে পারি নাই তাই এটা দিয়ে আরম্ভ করি। আর পথে নামলেই পথ চেনা যায়, ঘরে বসে অচেনা পথের ভয়ে কেন ভীতু হবো?

– তাও ঠিক।

– জ্বি, দেখা গেল এটা দিয়ে আরম্ভ করেছি ঠিকই কিন্তু আসল ঘটনার সূত্র এটা দিয়ে আবিষ্কার হয়ে যেতে পারে।

– জ্বি স্যার।

– তাহলে আমরা উঠি?

– আচ্ছা।

– আর রুহি, তোমার মোবাইল নাম্বারটা দাও, যদি দরকার হয় যেকোনো সময় সঙ্গে সঙ্গে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে নেবো। আর ভয় পাবার কিছু নেই, তোমাদের মধ্যে আর কেউ খুন হবার আগেই আমি চেষ্টা করবো খুনিকে ধরে ফেলতে। তুমিসহ সকল বান্ধবীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে তাই আশা করি শীঘ্রই ধরা হবে।

দারোগা সাহেব আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে বের হয়ে গেল, আমি আবারও নিজের রুমে ঢুকে সত্যি সত্যি ভাবতে বসলাম। কিন্তু মাথার মধ্যে তেমন কিছু খুঁজে বের করতে পারি না কারণ তেমন কোন ঘটনা মনে পরে না। ভাবতে ভাবতে মাথার মধ্যে ব্যথা শুরু হয়ে গেল কিন্তু তবুও কিছু বলার মতো খুঁজে বের করতে পারি নাই। দারোগা সাহেব যদি কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে তাহলে কি বলবো?

সারাটি বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা এলো, সন্ধ্যা থেকে মা আমাদের সকল জানালা দরজা বন্ধ করেই আমাকে নিয়ে রুমের মধ্যে বসে আছে। সন্তানের জন্য মা-বাবার এতো চিন্তা? সত্যি আমাকে যে তারা কতটা ভালবাসে তা আরেকবার প্রমাণিত।

সাজু ভাইকে নক দিছিলাম কিন্তু অনলাইনে নেই মনে হয় কারণ মেসেজ সেন্ট হয়নি। এদিকে তার বন্ধু সজীব সাহেব সেই দুপুর থেকে আনএক্টিভ, মেসেজ দিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সে নেই। মেজাজ খারাপ লাগছে।

রাতের খাবার খেয়ে মা আমার সঙ্গে ঘুমালেন, অনেক বছর পরে আজ মায়ের সঙ্গে বিছানায় ঘুমালাম। মায়ের সঙ্গে গল্প করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি বুঝতে পারিনি। রাতে ঘুমানোর আগে প্রার্থনা করেছিলাম, আল্লাহ সকাল বেলা যেন আর কারো মৃত্যুর খবর শুনতে নাহয়।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বুকটা ধুকপুক শুরু করেছে, না জানি কখন কি খবর আসে? বাবার কাছে জিজ্ঞেস করে জানলাম যে সবাই নাকি সুস্থ আছে। মনটা শান্ত হলো, তাহলে একটা রাত আমরা বাঁচতে পারছি। কিন্তু খুনি ধরা না পরলে এভাবে কতদিন?

নাস্তা করছিলাম তখন দারোগা সাহেবের কল এসেছে, রিসিভ করে সালাম দিলাম।

– আসসালামু আলাইকুম স্যার।

– ওয়া আলাইকুম আসসালাম, কেমন আছো?

– জ্বি স্যার ভালো।

– তোমাদের সবার বাড়িতে কল দিয়ে খবর নিয়ে নিলাম, সবাই সুস্থ আছে।

– আলহামদুলিল্লাহ।

– আচ্ছা তোমাকে যা বলেছিলাম সেটা কি কিছু বের করতে পেরেছো?

– স্যার আমাদের সঙ্গে একটা ছেলে পরতো, সে দ্বিতীয় শিকার হওয়া ববিতাকে পছন্দ করতো।

– গুড, তারপর?

– ববিতা রাজি হয়নি আর খুব অপমান করেছিল সেই ছেলেকে।

– ওই ছেলের নাম কি?

– প্রশান্ত কুমার, কিন্তু ও এখন ভারতে আছে।

– কেন?

– সেখানে গিয়ে ভর্তি হয়েছে শুনলাম কারন ওর মামা থাকে কলকাতা শহরে।

– তুমি ভালো একটা বিষয় মনে করেছো, হতে পারে সেই প্রশান্ত কুমার বাংলাদেশে এসেছে এবং গা ঢাকা দিয়ে কাজগুলো করছে।

– কিন্তু স্যার সে খুব নম্রভদ্র, তার দ্বারা এমন কাজ অসম্ভব মনে হচ্ছে।

– যারা খুব মিনমিনে তারা মনের মধ্যে অনেক বেশি অভিমান পুষে রাখে। এবং সেই অভিমান যখন বিস্ফোরিত হয় তখন সেটা মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পরে।

– ঠিক আছে স্যার আপনারা তদন্ত করুন।

– আচ্ছা ঠিক আছে।

বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে দারোগা সাহেবের কল দেখে অবাক হলাম, তার সঙ্গে কথা বলতে গেলেই মনটা ভয়ে কুঁকড়ে যায়।

– হ্যালো স্যার।

– রুহি তুমি কোথায়? সর্বনাশ হয়ে গেছে। ( স্যার এর কণ্ঠ অস্বাভাবিক)

– কি হয়েছে স্যার? আমি তো বাসায়।

– সামিয়া নামের তোমাদের কোন বান্ধবী ছিল?

– হ্যাঁ ছিল, কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার আগেই ও ঢাকা চলে গেছে। ক্লাস টেনে উঠে কিছুদিন ক্লাস করে চলে গেছে ঢাকা শহরে, তারপর থেকে তো সেখানেই থাকে। ওর মা-বাবার সঙ্গে মিরপুরে বাস করে, আমার সঙ্গে ফেসবুকে কথা হয় মাঝে মাঝে।

– সামিয়া গতকাল রাতে খুন হয়েছে?

– কি বললেন স্যার?

– হ্যাঁ, ওর লাশের পাশে লেখা ছিল ” তৃতীয় শিকার “। একটু আগেই থানায় খবরটা এসেছে। আচ্ছা রাখি আমি, তুমি বাড়ি থেকে বের হয়ে কোথাও যাবে না।

আমি মোবাইল কেটে দিয়ে ভয়ে কষ্টে কান্না করে দিলাম, এটা কি হচ্ছে? আমরা কি করেছি?

মা রান্না করা বন্ধ রেখে আমার কাছে বসে রইল কিছুক্ষণ তারপর দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলে গেল রান্না করতে।

দুপুর একটা বাজার খানিকটা আগে দারোগা কল দিল আবারও, কল ধরতে ইচ্ছে করছে না কারণ যদি খারাপ কিছু শোনা লাগে?

– তবুও শেষবারে রিসিভ করে সালাম দিলাম।

– রুহি তুমি কি বাসায়?

– হ্যাঁ স্যার।

– সাজু ভাই নামে কাউকে চেনো? ফেসবুকে নাকি গল্প লেখালেখি করে, চেনো তাকে?

আমার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো, সাজু ভাইর কথা দারোগা জানলো কীভাবে? আর তার কথা তিনি জিজ্ঞেস করলো কেন?

– দারোগা বললেন, চুপ করে আছো কেন? বলো তুমি তাকে চেনো নাকি?

– জ্বি স্যার, সামান্য কথাবার্তা হয়েছে।

– তাহলে তুমি বাসায় থাকো, আমি এক্ষুনি তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসছি।

– কিন্তু কেন স্যার? সাজু ভাইয়ের কখা জিজ্ঞেস করলেন কেন?

– আমি এসে সবকিছু বলবো, মনে হয় এবার খুনির কাছে পৌঁছে যাবো।

,
,
,

চলবে…?

জীবনের প্রথম রহস্যময় গল্প লিখতে আরম্ভ করেছি তাই কেমন হচ্ছে জানি না। আপনাদের সকলের মতামত জানালে মেলা মেলা খুশি হবো।

,

লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here