?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?,20,21
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_20
আধার শবনমের পাশে গিয়ে বসে পরলো। অনেকক্ষণ ধরে শবনমের মায়াবী চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে আধার। অনেক দিন পর এতো কাছ থেকে দেখছে ওকে। চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে আধারের।
আধারঃ I’m sorry meri Jan. অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি তোমাকে। কিন্তু বিশ্বাস করো তার থেকে হাজার গুন বেশি কষ্ট আমি পেয়েছি। তোমাকে দেওয়া প্রত্যেক টা কষ্ট আমার আমার হৃদয়ে গিয়ে বিধতো।
অন্যের ভুলের জন্য আমি তোমাকে দোষারোপ করেছি। তোমাকে কালপ্রিট ভেবেছি। প্রথম আমি কিছুতেই এটা বিশ্বাস করি নি যে তোমার ভালোবাসা মিথ্যা তুমি আমাকে ধোকা দিয়েছো আমাকে মারার প্লান করেছো।
কিন্তু আমার সামনে মিথ্যা টাকে এমন ভাবে সাজানো হয়েছিলো যে আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছি। আ’ম রিয়েলি স্যরি শবনম।
বাট নাও আই প্রমিস সব কিছু আগের মতো ঠিক করে দিবো। I’ll fixed everything ( মনে মনে)
আধার শবনমের দিকে ঝুঁকে ওর কপালে গভীর ভাবে ঠোঁট ছোয়ালো।
কারো নিঃশ্বাস চেহারায় বারি খাওয়ায় ঘুম ভেঙে যায় শবনমের। মিট মিট করে চোখ খুলতেই দেখে কেউ ওর দিকে ঝুঁকে আছে। অন্ধকারে চেহারা দেখা যাচ্ছে না।
শবনম ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো,,,
শবনমঃ আম্মুউউ ভূতততততত ??
আধার সাথে সাথে শবনমের মুখ চেপে ধরলো,,
আধারঃ হুঁশ চিৎকার করছো কেন ভূত না আমি? তোমার ওয়ান এন্ড ওনলি বর।
শবনমঃ উমম উমম ( চোখ দিয়ে ইশারা করছে মুখ থেকে হাত সরাতে)
আধার বুঝতে পেরে শবনমের মুখ থেকে হাত সরিয়ে ফেলে।
শবনমঃ তুমি আমার রুমে কি করো। আর আমি তো রুম লক করেছিলাম তাহলে তুমি ভেতরে আসলে কি ভাবে??
আধারঃ ম্যাজিক ?
শবনমঃ রাখো তোমার ম্যাজিক তোমার কাছে আর বের হও আমার রুম থেকে। ( আধারকে সরিয়ে উঠে দাঁড়ালো)
আধার শবনমের সামনে দাঁড়িয়ে ওকে নিজের কাছে টেনে বলল,,,
আধারঃ কল রিসিভ করছিলে না কেন,,, আর আমি বলেছিলাম যে আমার জন্য ওয়েইট করতে কিন্তু তুমি সূর্যের সাথে চলে এসেছো Why( দাঁতে দাঁত চেপে বলল)
শবনম আধারকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিলো।
শবনমঃ This is my personal matter. এটা আমার লাইফ,,, তাই আমি কি করবো না করবো সে বিষয়ে আপনার না ভাবলেও চলবে। ( রেগে)
শবনমের কথায় আধার রেগে ওকে দেয়ালে চেপে ধরলো। রাগে যেন ওর চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে।
আধারঃ তোমার আর আমার বলতে কিছু নেই শবনম যা আছে আমাদের। প্রমিস করেছিলাম একে অপরকে,,, যে জীবনের সব কিছু একে অপরের সাথে শেয়ার করবো। আমাদের মাঝে পার্সোনাল বলতে কিচ্ছু থাকবে না। আমার সব কিছু তে তোমার অধিকার আর তোমার সব কিছুতে আমার,,, ভুলে গেছ??
শবনমঃ ভূলে তো তুমি গিয়েছিলে তাই সামান্য বিশ্বাস টুকু করতে পারো নি আমার উপর। (তাচ্ছিল্য হেসে)
শবনমের কথায় আধার ওকে ছেড়ে ওর থেকে একটু দূরে সরে দাঁড়ায়।
আধারঃ ভূল হয়ে গেছে আমার আর তার শাস্তিও পাচ্ছি। কিন্তু তুমি জানো আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি। তোমার থেকে দূরে প্রত্যেকটা মুহূর্ত তিলে তিলে মরেছি।
আর যখন জানতে পারলাম তুমি আমার বাড়ি আর বিজনেস সব নিলাম করে দিয়েছো তোমার প্রতি ঘৃনা আরো বেড়ে যায়।
আচ্ছা ঠিক আছে আমি না হয় ভূল করেছি কিন্তু তুমি!!! তুমি কিভাবে পারলে আমার বাবা মা এর শেষ স্মৃতি নিলাম করতে। বলো এন্সার দাও এখন,,,,
শবনম আধারের দিকে তাকিয়ে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,,,,
শবনমঃ তুমি আমাকে কখনো চিনতেই পারলে না আযান ওহ স্যরি স্যরি আধার রেজওয়ান।
শবনম নিজের কাবার্ড খুলে ওখান থেকে একটা পেপার্স বের করে আধারের সামনে এসে দাঁড়ালো।
আধার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
শবনম পেপারস গুলো আধারের মুখে ছুরে মারলো।
শবনমঃ তোমার বাড়ি, বিজনেস আর পাওয়ার অফ এট্রোনি এর সব কাগজ এখানে। তোমার যা ছিলো এখনো তোমারই আছে।
আধার কাগজ গুলো নিচে থেকে তুলে দেখলো। সত্যিই সব যেমন ছিল তেমনই আছে। আধার অবাক হয়ে শবনমের দিকে তাকিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করল,,,,
আধারঃ কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব আমি সেদিন নিজে দেখেছিলাম সব বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।
শবনমঃ হ্যাঁ বিক্রি হয়ে গিয়েছিল কিন্তু সেটা অন্য কেউ নয় আমিই কিনেছিলাম। তুমি কিভাবে ভাবলে যে আমি এই কাজটা করতে পারি,,,আমি নিজেও জানতাম না এই নিলামির কথা আম্মু মিথ্যা বলে আমার সাইন নিয়েছিলো।
শবনমের চোখ দিয়ে শুধু পানি পরছে। আধার নিজেকে আরো বেশী অপরাধী ভাবছে। কতটা ভূল ভেবেছে ও শবনমকে ভাবতেই নিজের প্রতি রাগটা আরো বেশী বেড়ে যাচ্ছে ওর।
আধারঃ স স্যরি ( চোখ নামিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে
বলল আধার)
শবনমঃ তোমার কাছ থেকে স্যরি শব্দটা ছাড়া আর কিছু এক্সপ্টেক্টও করা যায় না। ( মুখ ঘুরিয়ে)
আধার কাগজ গুলো রাগে মুঠো করে ফেলে তার পর শবনমের কাছে এসে বলে,,,,,
আধারঃ চব্বিশ ঘন্টা,,,, চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবো আমি। তোমার সব ভূল ভেঙ্গে সত্য সবার সামনে আনবো। যদি এই চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে দোষী কে সবার সামনে পেশ করতে না পারি কথা দিচ্ছি সবার থেকে দূরে চলে যাবো।
তোমাকে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি হিসেবে এই দুরত্বটা না হয় আমার পাওনা হয়ে থাকবে।
আধার রুমের দরজা খুলে হনহন করতে করতে নিচে নেমে গেলো।
হঠাৎ শবনমের মনে পরলো এতো রাতে আধার ওর রুম থেকে বেরিয়ে গেছে। কেউ দেখলে কেলেঙ্কারি ঘটে যাবে।
শবনম আধারের পিছনে দৌড়ে আসে। আধার ডান বাম না তাকিয়ে সোজা মেইন গেইট খুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো।
শবনমঃ এর কোন কমনসেন্স নেই এখন যদি কেউ ওকে বের হতে দেখে ফেলতো। বেঁচে গেছি কেউ কি দেখে নি?
শবনম হাফ ছেড়ে পিছনে ফিরে দেখে কামিনী দাঁড়িয়ে আছে ওর হাতে পানির বোতল। কামিনী আধারের যাওয়ার দিকে একবার তাকায় আর একবার শবনমের দিকে।
শবনম কামিনীর দিকে চোখ গরম করে তাকাতেই ও দৌড়ে নিজের রুমে ঢুকে যায়।
এইদিকে,,,,,
আধার ফুল স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছে। নিজের যত রাগ আছে সব ও গাড়ির উপর ঝাড়ছে।
আধারঃ অনেক হয়েছে সহ্য করার একটা সীমা থাকে। আর নিতে পারছি না তোমার ঘৃনা আর সহ্য করতে পারছি না তোমার চোখে নিজের জন্য এতো অপবাদ।
আধারের ফোনে একটা মেসেজ আসে। আধার ওটা ওপেন করে দেখে কারো এড্রেস।
আধারঃ একটা রাস্তা বন্ধ হলে আল্লাহ আরেকটা খুলে দেয় কথাটা সত্যিই। Started counting your day’s shurjo mere vai. ??
শবনমও নিজের রুমে চলে আসে। আধারের কথা মনে হতেই মন খারাপ হয়ে যায় শবনমের।
শবনমঃ শুধু একটা বার জিজ্ঞেস করতে,,, শবনম তুমি কি সত্যিই আমাকে ধোকা দিয়েছো?? একটু বিশ্বাস করে দেখতে। আমি কি এইটুকু বিশ্বাস এর যোগ্য ও না। আমার ভালোবাসা কি এতোই কমজোর যে এই টুকু ঝড়ে নরে গেছে। কার কথায় বিশ্বাস করে তুমি আমাকে অবিশ্বাস করলে আযান। ??
একটা ছোট্ট বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে আধার। বাড়ির কলিং বেল বাজতেই একজন দরজা খুলে দিলো। লোকটি আধারকে দেখে অনেক ভয় পেয়ে কয়েক কদম পিছিয়ে যায়।
লোকটিঃ আ আযান বাবা আ আপনি এ এখানে( ভয়ে কাঁপাকাপা গলায় বলল)
আধারঃ কেন রহিম চাচা ( ড্রাইভার) অন্য কাউকে আশা করেছিলেন। ( with devil smile)
রহিম ভয়ে ঘামতে শুরু করে আর পিছাতে থাকে।
রহিমঃ আ আমি কিছু করি নি আযান বাবা। আসিফ স্যার আমাকে দিয়ে সব করিয়েছে। শবনম মামনি সূর্য বাবাকে ভালোবাসে তাই আপনাকে রাস্তা থেকে সরানোর জন্য এসব করেছে। আ আমি নির্দোষ।
আধারঃ আর একটা কথা মিথ্যা বললে আমি আপনাকে কি করবো আমি নিজেও জানি না। যখন আমি বেঁচে ফিরে ছিলাম সত্য জানার জন্য সবার আগে আপনার কাছে এসেছিলাম। কারন আপনাকে আমি বিশ্বাস করতাম। আর আপনি সত্য লুকিয়ে আমাকে মিথ্যা দেখিয়ে দিয়েছেন।
কত টাকার বিনিময়ে নিজের ঈমান বেঁচেছেন। ( রেগে কড়া গলায়)
আধারের কথায় রহিম কান্না করতে করতে ওর পা জড়িয়ে ধরে,,,
রহিমঃ ক্ষমা করে দিও আমাকে আযান বাবা। টাকা আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল। আশরাফ স্যার বলেছিলেন যদি কখনো সত্যি প্রকাশ হয় তাহলে আসিফ স্যারের উপর দোষ ফেলতে।
আশরাফ স্যারই আপনার বাবা মাকে মেরেছে। আর আসিফ স্যার কেও আশরাফ আর সূর্য মেরেছে। আপনাকে মারার প্লান ও ওদেরই। সব সম্পত্তির লোভে করেছে তিনি। আর সূর্য শবনম মামনিকে পাওয়ার জন্য করেছে।
আধার রহিমকে পা থেকে তুলে দাড় করায়।
আধারঃ আপনার উপর আমার কোন অভিযোগ নেই। আপনাকে শুধু আমার একটা সাহায্য করা লাগবে। কালকে সবার সামনে ওদের এক্সপোস করতে আমার সাহায্য করতে হবে করবেন???
রহিমঃ আ আমি সব স্বীকার করবো সব,,,,
হঠাৎ একটা বুলেট এসে রহিমের কপাল ছুঁয়ে বের হয়ে যায় আর ও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
আধার পিছনে ঘুরে কাউকে দেখতে পেলো। আধার লোকটির পিছনে দৌড় দেয় কিন্তু পায় না। আধার আবার দৌড়ে বাড়িতে আসে।
আধার হন্তদন্ত করে উনাকে তুলল,,,,
আধারঃ চাচা আপনার কিছু হতে দিবো না আমি। আপনি ঠিক হয়ে যাবেন।
রহিমঃ এটা হয়তো আমার কর্মের ফল। ক্ষমা করে দিও আমাকে। আমি তোমার সাহায্য করতে পারলাম না।
রহিম আধারের সামনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো।
আধারঃ নো নো প্লিজ চাচা উঠেন। আমি কিভাবে প্রমান করবো সত্য। আপনি আমার শেষ আশা প্লিজ উঠেন। ( চিল্লিয়ে ডাকছে)
অনেক রাতে আধার বাসায় ফিরলো। রহিমের লাশ পুলিশের কাছে ইনভেস্ট করতে দিয়ে এসেছে ও।
হতাশা ছাড়া হাতে কিছুই এলো না। কিভাবে সূর্যের সত্য সামনে আনবে ভাবছে আধার। চব্বিশ ঘন্টা ফুরিয়ে যাচ্ছে অনেক দ্রুত।
হঠাৎ আধারের চোখ সোফায় যায়। সোফায় বসে থাকা লোকটি কে দেখে অবাক হয়ে যায় আধার।
আধারঃ তুমি এখানে,,,, এই সময়???
To be continued……..
?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_21
সকালে,,,
ডাইনিং টেবিলে বসে মায়া আর শবনম নাস্তা করছে।
মায়াঃ এখন কেমন লাগছে মামনি??
শবনমঃ Batter ( মুচকি হেসে )
মায়াঃ রাতে কি কেউ এসেছিলো। ( খাবার খেতে খেতে)
মায়ার কথা শুনে শবনমের গলায় খাবার আটকে যায় আর ও রাগী দৃষ্টিতে কামিনীর দিকে তাকায়।
কামিনী অসহায় ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর ইশারায় বলছে ”’ আমি কিছু বলি নি ”’।
মায়াঃ ওর দিকে তাকিয়ে লাভ নেই ও কিচ্ছু বলে নি।
কামিনী হাফ ছেড়ে বাচঁলো,,,
মায়াঃ আমি কালকে আযানের গাড়ি বাইরে পার্ক দেখেছিলাম। আমার আর বুঝতে বাকি রয়নি যে ও কার কাছে এসেছে।
শবনম মাথা নিচু করে আছে,,,
মায়াঃ আমি বলছি না যে তুমি আযানকে ক্ষমা করে দাও। আমি শুধু এটা বুঝাতে চাচ্ছি যে,,, ওকে নিজের দিকটা প্রকাশ করার একটা সুযোগ দাও। ও ভূল করেছে আমি মানি কিন্তু কেন করেছে সেটা কিন্তু আমাদের অজানা। ওর কথাটা শুনো ও কি বলতে চায় একটু বুঝো।
ওর জীবনে তোমার অস্তিত্ব কতটা জুড়ে এটা আমরা সবাই জানি। ওকে অবিশ্বাস করো কিন্তু ওর ভালোবাসাকে না।
শবনমঃ ও আমাকে অবিশ্বাস করেছে আমার ভালোবাসা কে অবিশ্বাস করেছে ওকে কিভাবে আমি ক্ষমা করবো আম্মু। ( কাঁদো কাঁদো ভাবে)
মায়াঃ একই ভুল কিন্তু তুমিও করছো।
হঠাৎ মায়ার ফোন বেজে উঠে,,
মায়াঃ হ্যালো,,,
>>>
মায়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমরা আসছি।
মায়া কল কেটে দিলো।
শবনমঃ কে ছিল আম্মু আর কোথায় যাওয়ার কথা বলছিলে।
মায়াঃ আযান কল করেছিলো আমাদের এখনই যেতে বলেছে ওর বাড়িতে,,, অনেক জরুরী বলছিলো।
শবনমঃ হঠাৎ এমন কি হলো যে আর্জেন্টলি যেতে বলল,,, ?
মায়াঃ গেলেই দেখতে পাবো চলো।
শবনমঃ হুম।
কিছুক্ষনের মধ্যেই শবনম আর মায়া আধারের বাড়িতে পৌঁছে যায়। ওরা বাড়িতে ঢুকতেই দেখে সূর্য , আশরাফ আর অনেকেই ড্রইংরুমে বসে আছে।
শবনমকে দেখে সূর্য ওর সামনে এসে দাঁড়ালো।
সূর্যঃ কেমন আছো শবনম।
শবনমঃ ভালো বাট আধার সবাইকে এখানে কেন ডেকেছে তুমি এই ব্যাপারে কিছু জানো??
সূর্যঃ জানি না ওর মাথায় কি চলছে। সকালে ফোন করে আর্জেন্টলি আসতে বলল।
শবনম খেয়াল করলো শহরের ডিসি অফিসার,
SP আর ওদের বিজনেস পার্টনার অনেকেই এখানে উপস্থিত। শবনমের মাথায় কিছুই আসছে না কি করতে যাচ্ছে আধার।
মায়া ডিসিদের সাথে কথা বলতে চলে যায়। শবনমের চোখ শুধু আধারকেই খুঁজছে। আর সূর্যের চোখ শুধু শবনমের উপর। অনেক বেশী ভালোবাসে ও শবনমকে তাই ওর জন্য জঘন্য থেকে জঘন্যতম অপরাধ করতেও পিছপা হয় না।
সবাই কথা বলছে এমন সময় আধার সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে আর বলতে শুরু করে।
আধারঃ Welcome everyone. আপনারা আমাকে তো চিনেনই আমি আযান খান উরফে আধার রেজওয়ান।
আধার একটু দূরে একটা মনিটরের সামনে দাঁড়ালো।
আধারঃ আপনারা সবাই হয়তো ভাবছেন আমি কেন আপনাদের ডেকেছি। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ট্রেজেডির সাথে তো আপনারা সবাই অব্যাহত।
আমার এক্সিডেন্ট হয়ে গিয়েছিল সবাই ভেবেছে আমি মরে গেছি কিন্তু দুই বছর পর আমি আযান খান থেকে আধার রেজওয়ান হয়ে সবার মাঝে আবার ফিরে এসেছি।
কেন এসেছি?? আর আসলেও কেন নিজের পরিচয় গোপন করে রেখেছি?? সবার মনে শুধু এই একটাই প্রশ্ন তাইনা?? ( শবনমের দিকে তাকিয়ে)
ডিসিঃ মি. খান আপনি ঠিক বলেছেন ইভেন আমার মনেও এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি অনেক ভালো করে তদন্ত করেছি কিন্তু কোন ক্লু খুঁজে পাই নি।
SP: আর হঠাৎ আমাদের এখানে ডাকার কারণ টাও বুঝতে পারছি না মি. খান।
আধারঃ আপনাদের সবার প্রশ্নের উত্তর দিতেই আপনাদের এখানে ডেকেছি। আসলে একজনকে প্রমিস করেছিলাম যে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তার ভূল ভাঙ্গাবো। ( শবনমকে উদ্দ্যেশ্য করে)
আপনারা সবাই জানেন যে আমার এক্সিডেন্ট হয়েছিলো। কিন্তু এটা সত্য না আমাকে প্লান করে মারার চেষ্টা করা হয়েছিলো It’s a pre plant murder. ( কড়া গলায়)
আধারের কথায় সবাই অবাক হয়ে যায় আর শবনম যেন আকাশ থেকে পড়ে। আশরাফ ভয়ে ঘামতে শুরু করে আর সূর্য বারবার শবনমের দিকে আর আধারের দিকে তাকাচ্ছে। ভয়ে ওর শরীর কাঁপছে।
ডিসিঃ Whatt pre plant murder??
আধারঃ হ্যাঁ। আমি অনেক বার প্রমান খোজার চেষ্টা করি কিন্তু ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই পাইনি। এই ব্যর্থতার জন্য আমি আমার আপন জনদের সন্দেহ করি ওদের কষ্ট দিয়ে ফেলি। (শবনমের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে )
শবনমও অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে আধারের দিকে ওর চোখ আজ কোন বাঁধা মানছে না।
আধারঃ কালকেও প্রমান পেয়ে তা হারিয়ে ফেলি। হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম ভেবেছিলাম সব শেষ হয়ে যাবে হারিয়ে ফেলবো নিজের আপন জনদের। কিন্তু বলে না,,, আল্লাহ একটা দরজা বন্ধ করলে আরেকটা খুলে দেয়। নিজে সাহায্য না করলেও তার কোন এক বান্দা দ্বারা সাহায্য পাঠিয়ে দেন,, তেমনি কালকে আল্লাহ আমার সাহায্যের জন্য ও কাওকে সঠিক সময়ে পাঠিয়ে দেন।
রাফি….
রাফি এসে আধারের সামনে দাঁড়ায়।
আধারঃ প্রুফটা সবাইকে দেখাও।
রাফি মাথা ঝাঁকালো।
রাফি একটা পেনড্রাইভ বের করে ওটা মনিটরে ফিট করে তারপর আশেপাশে সব অন্ধকার হয়ে যায় আর একটা ভিডিও অন হয়ে যায়।
আশরাফ আর সূর্যের ভিডিও যেটা কেউ দূর থেকে ক্যাপচার করেছিলো। লোকটা আর কেউ নয় রাফি ছিল।
( রাফি আধারের বাড়ির কাগজ গুলো শবনমকে দেখানোর জন্য সেদিন চৌধুরী বাড়ি তে এসেছিল। সূর্য আর ওর বাবার কথা শুনে রাফি ওদের ভিডিও করে ফেলে। জানের ভয়ে রাফি সরাসরি আধারকে কিছু না জানিয়ে ওর করা ভিডিও টা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু যখন জানতে পারে আধারের কাছে ভিডিও টা নেই কোন রাস্তা না পেয়ে ও আধারের কাছে চলে আসে। কারন ওর বিশ্বাস আধার থাকতে কেউ ওর কোন ক্ষতি করতে পারবে না।)
ভিডিও টা শেষ হতেই সবাই আশরাফের দিকে তাকায়। আশরাফ পালাতে নিলে আনাস ওকে ধরে ফেলে। মায়া কান্না শুরু করে দিয়েছে শুনে ওর স্বামীকে খুন করা হয়েছিল। আধার গিয়ে মায়াকে সামলানোর চেষ্টা করছে।
আধারঃ সব প্রমাণ আপনাদের সামনে আর বাকী গুলো আপনারা ওদের মুখ থেকে স্বীকার করিয়ে নিন। ( ডিসি আর এসপি কে উদ্দেশ্য করে)
হঠাৎ আনাস বলে উঠলো,,,
আনাসঃ স্যার শবনম ম্যাডাম আর সূর্য নেই এখানে!!
আনাসের কথায় আধার চারোদিকে খুঁজে দেখে কিন্তু কোথাও পায়না। আধার পাগলের মতো শবনমকে খুঁজছে আর কান্না করছে।
রাফিঃ স্যার সূর্য ম্যাডাম কে গাড়িতে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ( জানলার বাইরে তাকিয়ে)
আধার দ্রুত বাইরে তাকিয়ে দেখে সূর্য জোর করে শবনমকে গাড়িতে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মায়া আধারের সামনে এসে ওর হাত ধরে বলতে শুরু করে,,,
মায়াঃ আযান আমার মেয়েটাটে বাঁচাও প্লিজ। ওর কিছু হলে আমি মরে যাবো ??
আধারঃ ডোন্ট ওয়ারি মামনি আ আমি ওকে কিছু হতে দিবো না। প্রমিস করছি বি বিশ্বাস রাখো আমার উপর।
আধার দৌড়ে বেড়িয়ে গেল। আধারের পিছনে পিছনে ডিসি তার বাকী ফোর্স গুলো পাঠিয়ে দেয়।
সূর্যের গাড়ীর পিছনে ড্রাইভ করছে আধার। সূর্য দেখলো আধার ওর পিছনেই আসছে তাই ও স্পীড বাড়িয়ে গাড়ি একটা পাহারের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
শবনম অনেক চেষ্টা করছে চেঁচামেচি করছে কিন্তু সূর্য গাড়ি থামাচ্ছে না।
শবনমঃ কেন করলে এমন সূর্য?? আমি তোমাকে আমার বন্ধু ভেবেছিলাম আর তুমি আমার বাবাকে মেরে ফেললে। আযানকে এতো কষ্ট দিলে আমাদের সবার জীবন নরকে পরিনত করে দিলে। কেন করলে আই হেইট ইউ সূর্য আই হেইট ইউ ঘৃনা করি আমি তোমাকে। কেন করলে এমন উত্তর দাও কেন করলে?? ??
সূর্যঃ তোমার জন্য করেছি সব কিছু তোমার জন্য।
শবনমঃ আমার জন্য মানে??
সূর্যঃ ছোট বেলা থেকে ভালোবাসি তোমাকে কিন্তু আমার ভালোবাসা তোমার চোখে পরে নি। শুধু আযানের ভালোবাসা দেখেছো তুমি।
Do you have any idea আমার কত কষ্ট হতো যখন নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে অন্য কারো সাথে দেখতাম।সহ্য করতে পারতাম না তোমাকে ওর সাথে আমি। তাই তোমাকে পাওয়ার জন্য ওকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেই।
আমি কিচ্ছু ভুল করি নি যা করেছি নিজের ভালোবাসাকে নিজের কাছে রাখার জন্য করেছি।
আর প্রয়োজন পরলে আবার ও করবো। তোমার ভালবাসার পাগলামি আমার মাথায় এমন ভাবে ঝেকেছে যা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নামবে না,,
সেটা আমার হোক না তোমার।
শবনমঃ ভালোবাসি না আমি তোমাকে আর না কখনো বাসবো I only hate you I just hate you shurjo.
সূর্যঃ সমস্যা নেই আমার ভালবাসা আমাদের জন্য যথেষ্ট আর এই জনমে না হলেও সামনের জনমে তোমার ভালোবাসা পাওয়ার চেষ্টা করবো।
এই জনমে নাহয় তুমি আমাকে ঘৃনাই করো ( বলে শয়তানি হাসি দিলো)
শবনম সূর্যের কথায় ভয় পেয়ে যায়।
শবনমঃ ম মানে কি তোমার ক কথার??
সূর্য গাড়ি থামিয়ে শবনমের দিকে তাকিয়ে বলল,,
সূর্যঃ এক সাথে বাঁচতে না পারি মরতে তো পারবো। বলে শবনমের হাত ধরে গাড়ি থেকে নেমে যায়। শবনম তাকিয়ে দেখে ওরা একটা পাহারের উপরে আছে। শবনমের বুঝতে বাকি রয়নি যে সূর্য কি করতে চাচ্ছে।
সূর্যের গাড়ি থামতেই আধার নিজের গাড়ি থামিয়ে বেড়িয়ে আসে। সূর্য শবনমের হাত ধরে টেনে ওকে পাহারের কিনারায় নিয়ে আসে।
আধারঃ সূর্য প্লিজ ওকে ছেড়ে দে। তুই তো ওকে ভালোবাসিস আর কেউ তার ভালবাসার মানুষের সাথে এমন করতে পারে না।
আধারের চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে তার পরেও পানি পরা কমছে না।ভয়ে ওর শরীর ঠান্ডা হয়ে কাঁপছে। নিঃশ্বাস মনে হয় এখনি বন্ধ হয়ে যাবে।
সূর্যঃ সব ফসাদের জর তুই। তোকে এতো কষ্ট করে রাস্তা থেকে সরালাম কিন্তু তুই আবার ফিরে আসলি। তুই যদি না আসতি শবনম আমার হয়ে যেতো কিন্তু তুই তা হতে দিলি না।
শবনম আমার না হলে ও কারো হবে না। আমার ভালোবাসা পূর্ণতা না পেলে আমি তোর ভালোবাসা ও পূর্ণতা পেতে দিবো না।
সূর্য কথা গুলো বলছে আর শবনমকে নিয়ে পিছাচ্ছে। আধার একটু একটু করে এগোনোর চেষ্টা করছে।
শবনম এক ধ্যানে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো এটাই শেষ দেখা।
শবনমঃ আ’ম স্যরি আধার। তোমার কথা না শোনার জন্য। এটা হয়তো তারই শাস্তি। ভালোবাসি অনেক বেশী ভালোবাসি তোমাকে I love you I love very much Aadhar. (মনে মনে)
আধার অসহায় দৃষ্টিতে শবনমের দিকে তাকিয়ে আছে আর শবনমও শুধু আধারের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে এই চোখে আজ না আছে কোন ঘৃনা আর না আছে কোন অবহেলা আছে শুধু ভালোবাসা।
সূর্য পিছাতে পিছাতে হঠাৎ পা পিছলে যায়। শবনমের হাত ধরে রাখায় শবনম ও পিছলে পড়ে যায়।
শবনম একটা চিৎকার দেয়,,,
To be continued……