#Ex_বেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ
#পর্ব_৪
#লেখক_Ananta Sanny
অনন্যা আগে ভেতরে গেলো…
অনন্ত ভেতরে ঢুকতে যাবে তখনই তিথি হাত টেনে ধরলো, অনন্ত আর ভেতরে যেতে পারলো না…
-কি হয়েছে এভাবে টানছেন কেনো?? কেউ দেখে ফেলবে তো..(আবির)
,,,
,,
তিথি কান্না করে বলল
-ভালবাসি…
-আরে হাত ছাড়েন, আর কি বলেন এগুলা??(অনন্ত)
-আমি তো তোমাকে আগেই বলছি, তুমি আমাকে কেনো বললে না, তোমার বিয়ে??
-এমম মানে….
-ভালো তো বাসো না, কেন ই বা বলবে??
-ম্যাডাম এখানে এই সব কথা বইলেন না, আর আমাদের মধ্যে তো তেমন কোনো সম্পর্ক নেই…আর আমি আপনাকে ভালও বাসি না
-হ্যা সেটাই তো, ভালোবাসো না (তিথি চোখের পানি মুছলো)
,,
,,
,,
-আচ্ছা ভেতরে চলেন (অনন্ত)
-তুমি যাও, (তিথি)
-হুমমম
,,
,,
অনন্ত ভেতরে এসে তার শ্বশুর আর শাশুড়ির সাথে কথা বলল…তারপর রাত্রির রুমে গিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লো..
অনন্ত ভাবছে…
-এমনিতে আমি অনন্যার সাথে অভিমান করে তেমন কথা বলছি না, ও আমার অভিমান ভাঙানোর চেষ্টা করছে, এখন যদি ম্যাডাম এর এই কথা জানতে পারে তো সব শেষ,
(কথা গুলো ভাবছিলো)
,,
,,
,,
হঠাৎ রুমে অনন্যা এলো, তাও আবার তিথি কে সাথে নিয়ে…
-কি স্যার শুয়ে শুয়ে কি ভাবছেন??(অনন্যা)
-কই কিছু না তো(অনন্ত শোয়া থেকে উঠে বসলো)
-হুমমম কিছু তো ভাবছিলে, আচ্ছা শোনো, তিথি কিন্তু আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড
-হুমমম
-কি হুমমম??
-সুন্দর দেখতে তোমার বেষ্টু কে
-হুমম দেখতে হবে তো বেষ্টু টা কার
-এই কুত্তা তুই এখন কিছু বলিস না কেন??(অনন্যা তিথি কে বলল)
-এহহ হ্যা শুনছি তো (তিথি)
-গাধি, আমি তোকে কিছু বলতে বলেছি
-হুমমম
-আগে তো বলতি, আমার বরের সাথে অনেক মজা করবি হেন তেন, কই এখন কিছুই করছিস না
-হুমমম (তিথি ভালো ভাবে কথাও বলতে পারছে না। এমনিতে অনন্ত সামনে থাকলে তিথির হাত পা কাঁপে। এর এখন তো সে অন্যের, এটা ভাবতে পারছেনা তিথি)
,,
,,
,,
হঠাৎ অনন্যার মা অনন্যাকে ডাকলো…
-এই মা ডাকছে, তিথি তুই কথা বল, আমি আসছি (এটা বলে অনন্যা চলে গেলো)
,,
,,
অনন্ত আর তিথি দুজনই চুপচাপ বসে আছে…কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। কি বলবে কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না…
শেষমেশ অনন্ত ই বলল
-ম্যাডাম, (আবির)
-হুমম বলো (তিথি)
-আপনি একাই আসছেন??
-হুমমম, আচ্ছা শোনো ওর সামনে আমাকে নাম ধরে ডাকবে, ম্যাডাম বলে ডাকবে না
-কেনো??
-এমনি ভালো শোনায় না তাই,
-আচ্ছা ঠিক আছে..
,,
,,
,,
আবারও দুজনই চুপ…
তিথির চোখ দিয়ে আবার টপ টপ করে পানি পড়ছে..অনন্ত দেখে ভাবলো, মেয়েটা যে কি পাগলামি শুরু করছে…ধুরর একে বুঝাতে হবে..
-আচ্ছা ম্যাডাম একটা কথা বলি (অনন্ত}
-হুমমম
-আপনি আমার জন্য কান্না করেন কেনো?? আপনি দেখতে অনেক সুন্দর, আপনার সেইরকম একটা ছেলের সাথে বিয়ে হবে,
-আমার সেইরকম লাগবে না, তোমাকে লাগবে
-আমিইইই কেনো??
-কারন আমি তোমাকে সেই প্রথম দিন থেকেই ভালো বাসি, আর এ কথা তুমি যানো
-হ্যা আপনার কথা মানলাম, এখন তো আমার বিয়ে হইছে, এখনও কি??
-হ্যা এখনও ভালবাসি, আর ভালবাসবো
-হায় আল্লাহ, আপনি কি পাগল হইছেন??
-হ্যা তোমার জন্য
-কি এমন আছে আমার ভেতরে??
-জানি না, তবে আমার তোমাকেই লাগবে
-আমি তো আপনাকে ভালবাসি না, আর আপনাকে লাগবেও না,
-আমি তো ভালোবাসতে বলি নি, আমি ভালবেসে যাবো, কি আর করা পোড়া কপাল আমার… (এটা বলে তিথি দৌড়ে চলে গেলো)
-নিশ্চয় এখন মেয়েটা কান্না করবে, ধুরর এই রকম কেউ কারও জন্য পাগল হয়?? (অনন্ত মনে মনে ভাবলো)
,,
,,
,,
রাতে খাওয়ার সময়..
সবাই এক টেবিলে খেতে বসছে..অনন্যা অনন্ত সামনা সামনি বসেছে..
চোখ মুছতে মুছতে তিথি এলো, এসে অনন্যার পাশে বসতে যাবে তখন অনন্যা বলল
-এখানে না, তুই তোর দুলাভাই এর কাছে বস (অনন্যা)
-না ঠিক আছে(তিথি)
-এই যানো কি হইছে??(অনন্যা অনন্ত কে বলল)
-কি??
-আচ্ছা আগে বাবা মা যাক, তারপর বলছি..
,,
,,
কিছুক্ষণ পর অনন্যার বাবা মা খাওয়া শেষ করে উঠে গেলো…
-এই শোনো যেটা বলতে চাইছিলাম, তিথি একজনকে ভালবাসে(অনন্যা)
-এমম মানে (অনন্ত তো ভয়ে শেষ,অনন্ত ভাবছে তিথি সব বলে দিছে)
-মানে আমার বেষ্টু টা শুধু কান্না করে, আজ ওর কাছে অনেক কষ্টে জানতে পেড়েছি, ও একজনকে ভালবাসে
-ওহহ কাকে??
-আরে নাম টা বললই না, এ কুত্তা নাম টা বল না
-উহুমমম (তিথি)
-হুহহ দেখছো ওর ঘার তেরামী..
-আচ্ছা এইটা আপনি খান (তিথি একটা মাছ অনন্তর প্লেটে দিলো)
-আমার তো আছেই (অনন্ত)
-এটা খেলে কি সমস্যা হবে??(তিথি)
-এই ও দিয়েছে, খাও তুমি
-আচ্ছা
,,
,,
,,
হঠাৎ অনন্তর পায়ের উপর আরেকটা পা অনুভব করলো.. অনন্ত বুঝতে পারলো এটা তিথির পা.. কারন অনন্যা অনন্তর সামনা সামনি বসছে, কিন্তু টেবিল বড় হওয়ার অনন্তর পায়ের নাগাল অনন্যা পাবে না….
,,
,,
অনন্ত পা দিয়ে তিথির পা সড়িয়ে দেয়…তিথি আবার কান্না করে, তবে কান্নার আওয়াজ হয় না, শুধু পানি পড়ছে অনবরত। আর পানি গুলো তার প্লেট এ পড়ছে…এই অবস্থা দেখে.. অনন্ত তার পা তিথির পায়ের উপর দেয়…যাতে কান্না টা একটু থামে..
,,
,,
,,
সেটাই হলো, তিথি চোখের পানি মুছে খাওয়া শুরু করলো, এমন ভাবে খাচ্ছে, মনে হচ্ছে বাচ্চা একটা মেয়ে প্লেট এর ভাত গুলো এলো মেলো করে খাচ্ছে…তার চোখে মুখ দেখে মনে হচ্ছে, অনেক খুশি হয়েছে।
,,
,,
খাওয়া শেষে…
অনন্ত কে নিয়ে অনন্যা তার রুমে যায়..আর তিথি তার রুমে…
-আচ্ছা স্যার, আপনার কি অভিমান কমেছে??(অনন্যা)
-হুমমম কমেছে(অনন্ত)
-এখন তো ভালভাবে কথা বলো
-বলছি তো
-তাহলে আমার আই লাভ ইউ এর উত্তর টা দিবে না??
-হুমম সেটাও দিবো..
,,
,,
অনন্ত আর অনন্যা কথা বলছিলো আর তিথি এসে তাদের দরজার সামনে দাড়ায়, তার ঘুম হচ্ছিলো না…
আর এসে দাড়িয়ে থেকে কথা গুলো শুনতে পায় তিথি…
-আচ্ছা কাছে আসো (অনন্ত)
-কেনো??(অনন্যা)
-উত্তর শুনবা না??
-হুমমম, উত্তর শুনতে কাছে যেতে হবে??
-হ্যা অবশ্যই..
-হুমম আসলাম
,,
,,
অনন্যা কাছে আসতেই, অনন্ত অনন্যাকে কে কোলে তুলে বলল
-আই লাভ ইউ টু(অনন্ত)
-হুমম আচ্ছা শোনো তুমি কিন্তু আমাকে অনেক কষ্ট দিছো (অভিমানী শুরে)
-সরি গো, আর কষ্ট দিবো না
-প্রমিস করো
-প্রমিস
-হুমম এখন আমার ভালবাসা টা আমাকে দাও
-হুমম দিচ্ছি…
,,,
,,,
তিথি দরজা থেকে উঠে তার রুমে গেলো..ধীরে ধীরে বিছানার কাছে গিয়ে শুয়ে পড়লো….
আর
একটা বালিস মাথার নিচে দিলো, আর একটা বালিস তার পাশে রেখে তার উপর হাত। রেখে বলল
-ও অনন্ত, অনন্ত, আমার লক্ষ্মী দুষ্টু সোনা টা, তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো যাবে না, প্রমিস করো,
,,
,,
,,
বালিস তো আর উত্তর দিতে পারে না, তাই তিথি বলল
-ওই আমাকে প্রমিস করবে না তাই না?? ওকে তো ঠিকিই প্রমিস করলে..যাও তোমার সাথে আড়ি তোমার সাথে কথা নেই…(রাত যত বাড়তে থাকে, তিথির পাগলামিও বাড়তে থাকে)
,,
একসময় পাগলামি করতে করতে বালিস টা জড়িয়ে ধরে রেখে অনন্ত
অনন্ত করতে করতে, তিথি ঘুমিয়ে যায়………….
চলবে