Ex_বেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥ #পর্ব_১২(শেষ)

0
3650

#Ex_বেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥
#পর্ব_১২(শেষ)
#লেখক_Ananta Sanny

কিহহ আমাকে ভয় পাওয়ার কি আছে আমি তো উল্টো তোমাকে ভয় পাই
-নাহহ তোমার আমার অনেক রাগ
-আরে তোমার উপর তো রাগ নেই
-কখনো তো রেগে আমাকে মারবে না (তিথি বাচ্চা দের মতো কান্না করে বলল)
-হা হা হা আরে না পাগলি(অনন্ত এক হাত দিয়ে তিথি কে কাছে টেনে নিলো)
,,
,,
অনন্ত বুকে তিথি মাথা রেখে বলল
-আজকেই বিয়ে করবা??(তিথি)
-হুমম আজকেই করবো (অনন্ত)
-আমার না ভয় করছে
-কেনো??
-যদি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও
-কই যাবো??
-ও যদি তোমাকে নিয়ে যায়??
-কে নিয়ে যাবে?
-অনন্যা
-ধুরর পাগলি, ওকে তে বিদায় ই দিলাম, আর হ্যা টেনশন করো না তো, বাবা আর মাকে ফোন করে আসতে বলো।
-হুমম
-আর হ্যা চলো শপিং করতে যাই, উনারা আসার আগেই শপিং করে বাসায় ফিরবো
-না শপিং করতে হবে না,
-কেনো
-বিয়ের শপিং আগেই করে রেখেছি
-বাব্বাহ,,, ভালই করছো, আমার টা তো করতে হবে
-তোমারও করা লাগবে না, আমি তোমার টাও করেছি, এর আমার দেওয়া জিনিস পড়েই বিয়ে হবে
-আচ্ছা ঠিক আছে…
,,
,,
তারপর দুজন চুপচাপ বসে আছে, অনন্তর মন খারাপ কি যেন ভাবছে..তিথি সেটা বুঝতে পারলো…
-এই তোমার মন খারাপ??(তিথি)
-কই না তো (অনন্ত)
-তোমার মন খারাপ থাকলে কিন্তু আমি কান্না করবো
-ওরে পাগলি আমার,মন খারাপ না এমনি চুপ ছিলাম
,,
,,
অনন্ত তিথি কে একটু জড়িয়ে ধরে, আর তিথি সেই সুযোগ পেয়ে অনেক জোড়ে জড়িয়ে ধরে…। তিথি অনন্তকে বুঝায় তাকে পাওয়ার জন্য সে কতটা আগ্রহি, আর কতটা ভালবাসে সে।
,,
,,
সেদিন বিকেলে…
তিথির বাবা মা আসে, সাথে অনন্যা আর তার বাবা মা ও আসে।
অনন্যা কি জন্য আসছে সেটা অনন্ত বুঝতে পারছে না।
সন্ধ্যার পর পর বিয়ে হয়ে গেলো। বিয়ে শেষ হওয়ার পর অনন্যা বলল…
,,
,,
-আমার কিছু কথা আছে, সবাই কিছু না মনে করলে, আমি কি কিছু বলতে পারি???(অনন্যা)
-…(.সবাই সম্মতি দিলো)
-আমি যা করছি, তার জন্য আমি আবার ক্ষমা চাচ্ছি, আসলে আমি না বুঝেই….
-চুপপপপপপ বের হ এখান থেকে (অনন্যার বাবা)
-……(অনন্যার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে)
-আমি তোমাকে আগেই বলছিলাম, এই সময় ওকে নিয়ে আসবো না, শুধু তোমার কথা মতো নিয়ে আসলাম (অনন্যার বাবা অনন্যার মাকে বলল)
-আচ্ছা সরি, আমি আপনাদের সবার থেকে বিদায় নিচ্ছি, ভুল যখন করেছি, শাস্তি তো পেতেই হবে, হাহ ভালো থাকেন সবাই, আমি আমার পৃথিবী টা আলাদা করে নিয়ে চলে যাচ্ছি…
,,
,,
অনন্যা বাইরে বেড়িয়ে হাটতে লাগলো, একসময় অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো…
অনন্যার মা অনন্যাকে আটকানোর জন্য যাবে তখনই অনন্যার বাবা মানা করে আর বলে…
-ওকে আটকালে তোমার ভালো হবে না,
(কথাটা শুনে অনন্যার মা দাড়িয়ে যায়)
-ওমন মেয়ে থাকার থেকে না থাকা ভালো…(অনন্যার বাবা)
,,
,,
সবাই কিছুক্ষণ নিরব, কেউ কোনো কথা বলছে না… অনন্ত ও চুপচাপ। অনন্যা চলে যাওয়া দেখে তার মনটা কেমন যানি করে উঠেছে কয়েকবার, হয়তো পূর্বের ভালোবাসার টান…
,,
,,
�রাত তখন ১ টা…
অনন্ত খাটের উপর বসে আছে, আর তিথি অনন্তর উরুর উপরে মাথা রেখে শুয়ে আছে..
-আচ্ছা ও কোথায় গেলো??(অনন্ত) অনন্ত মুখে এমন কথা শুনে তিথি একটু অবাক ই হয়।
-আরে ও হয়তো বাসায় গেছে (তিথি)
-হুমমম
-তুমি ওর কথা ভাবছো তাই না (তিথি রাগ করে বলল)
-আরে না এমনি
-না আমি জানি তুমি ওর কথা ভাবছো
-আরে না গো
-হ্যা তা না গলে এতক্ষণ চুপচাপ থাকতে??
-এমনি চুপ হয়ে আছি
-ওকে গুড নাইট
-কেনো??
-ওহহ তুমি চুপ হয়ে থাকবে, আর আমি এমনি জেগে থাকবো তাই না??
-না
-তাহলে
-আসো গল্প করি
-কিসের গল্প
-চাঁদ এর বুড়ির গল্প
-ওই কুত্তা ওই, আমাকে তোর বাচ্চা মনে হয়??
-না
-তাহলে এইসব বুড়ি টুরির গল্প আমি শুনতে পারবো না
-তাহলে??
-তাহলে কি চাই দেখবি??(তিথি উঠে অনন্তর উপর উঠলো)
-এই কি করছো??
-তোকে চাই আমি
-আমি তো তোমারই
-আরও
-আরও কি??
-ওকে দেখাচ্ছি….
,,
,,
,,
পরদিন সকাল বেলা…
অনন্তকে শক্ত করে ধরে শুয়ে আছে তিথি। সকালে তিথি আগে জেগে উঠে। তিথি অনেক্ষণ অনন্তর দেকে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ কি যেন ভেবে অনন্ত নাকে জোড়ে একটা কামড় দিয়ে….
-আআআআআআআআ৷ (অনন্ত)
-হি হি হি হি (তিথি একটু হাসলো)
-এভাবে কামড় দিলে কেনো??(ঘুম ঘুম অবস্থায়)
-বরের এই নাক দেখে লোভ সামলাতে পারি নি, তাই কামড় দিয়েছি
-উমমমম(অনন্ত কথা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেছে)
,,
,,
তিথি অনন্তকে কামড় দিতে যাবে তখনই অনন্ত চোখ খুলে…
-আর পারবে না, এবার আমি দিবো
(অনন্ত তিথির নাকে একটা কামড় দেয়)
-আআআআআআ এ্যা হ্যা হ্যা এ্যাহহ(তিথি)
-এখন কান্না করো কেন??
-আমি খুব ব্যাথা পাইছি
-সরি বাবু
-তোর সরি লাগবে না, আমার নাক তুই লাল করে দিছিস
-এহহহহ আমার টা তুই আগে এমন করে দিছিস
-….(তিথি কিছু বলে না। রাগ করে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয়)
,,
অনন্ত বুঝতে পারলো অনেক রাগ করছে। তাই অনন্ত টান দিয়ে তিথির মুখ ঘুরিয়ে একটা কিস করে…
তাও তিথির রাগ কমে না…
,,,
,,,
-গত রাত এ অফিসের মেয়ে কলিগ মেয়ে ফোন দিছিলো, আজ নাকি আমার সাথে সে কফি খাবে, সে একটু সময় চাইছে, যাই রেডি হয়ে বের হই।(অনন্ত বিছানা থেকে উঠতে উঠতে বলল)
,,
,,
তিথি লাফ দিয়ে উঠলো…
-কোন কুত্তি ফোন দিয়েছে তোকে??? আমি ওকে মেরে ফেলবো??(তিথি)
-তা তো বলব না (অনন্ত)
-ওই সত্যিই তোমাকে ফোন করেছিলো??
-হুমমম
-তুমি যাবে??
-হুমমম
-…..(তিথি কান্না করে দিছে)
,,
,,
অনন্ত ভাবলো আর কিছু বললে কি যে করবে…অনন্ত গিয়ে জড়িয়ে ধরলো তিথি কে…
-ওই গাধি আমি এমনি বললাম (অনন্ত)
-না তুমি সত্যি বলছো (তিথি)
-আরে না আমাকে আর কে ফোন করবে, তুমি রাগ করেছিলে তাই একটু এইরকম করলাম
-শোনো একটা কথা বলি
-হুমম বলো
-যাই করো তাই করো, আমি ছাড়া দ্বিতীয় কাউকে চিন্তাও করবা না
-জ্বি ম্যাডাম (দুজন দুজনকে ধরে দাড়িয়ে আছে)
,,
,,
-আচ্ছা যাও এখন গোসল টা সেড়ে নাও(অনন্ত)
-হুমমম(তিথি)
-যাও তাহলে
-এই শোনো না
-হ্যা বলো
-আমাকে কোলে করে নিয়ে রেখে আসো তো
-কেন তোমার পা নেই??
-আছে, তুমি নাও না গো
-পারবো না
-আমি যাবো না
-ওকে নিচ্ছি…
,,
,,
অনন্ত তিথি কে কোলে তুলে নিয়ে বলল
-এভাবে খাটানোর মানে কি??(অনন্ত)
-তোমাকে একদিন একটা কথা বলেছিলাম মনে আছে??
-কি??
-বিয়ের পর তোমাকে বুঝাবো হয়রানি আর ফুটবল খেলা কাকে বলে
-না মনে নেই (অনন্ত মিথ্যা বলল)
-চালাকি করে লাভ হবে না, তোমার ভাল করেই মনে আছে
-ওকে ওকে খাটিয়ো
-হুমম আমার বর যা ইচ্ছা তাই করবো লাভ ইউ উম্মাহহহহহহহহ
,,
,,
,,
সেদিন দুপুরের দিকে তিথি চিৎকার দিয়ে উঠে বলে…
-অনন্ত অনন্ত অনন্ত… (তিথি)
অনন্ত ঘুমিয়ে ছিলো লাফ দিয়ে উঠে পড়লো
-এই কি হইছে… (অনন্ত)
-ও আর নেই
-ও নেই মানে?? কে নেই??
-অ অ অনন্যা আর নেই
-কিহহহ কি বলো(অনন্তর বুকের মধ্যে ধুক ধুক করে উঠে)
,,
,,
অনন্যা আত্মহত্যা করেছে… অনন্ত আর তিথি অনন্যার বাসায় যায়। অনন্যার মুখটা দেখার পর অনন্ত ঠিক থাকতে পারে না, অনন্তর চোখ বেয়ে পানি পরে। অনন্ত বার বার পানি মুছে, কিন্তু কাজ হয় না পানি পড়তেই থাকে…
,,
,,
হঠাৎ অনন্ত দেখতে পায়, অনন্যার হাত মুষ্টি বদ্ধ। অনন্ত মুষ্টি খুলে দেখে একটা কাগজ। কাগজ টা তাড়াতাড়ি খুলল। কাগজটিতে লেখা ছিলো

(সরি অনন্ত……)

কাগজটিতে শুধু এটুকুই ছিলো আর শেষে ছিলো ডট ডট, তার মানে অনন্যা আরও কিছু লিখতো কিন্তু লিখে নাই।
অনন্ত সেই লেখাটা দেখাটা দেখে আবার সেই প্রথম ভালবাসার কষ্ট টা অনুভব করতে পারছে, হয়তো অনন্যা ভুল করেছে, কিন্তু অনন্ত যে তাকে সত্যি ভালবাসে। এই ভালবাসা টা ভুলবে কিভাবে???
,,
,,
অনন্যার দাফন শেষে অনন্ত বাসায় ফিরে আসে। অনন্ত ছাদে গিয়ে বসে আছে..তিথি বুঝতে পারছে, অনন্ত খুব কষ্ট পাচ্ছে…
,,
,,
তিথি অনন্তর কাছে যায়। অনন্তর পাশেই সে বসে…আর কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলে…
-তোমার তো ওটা প্রথম ভালবাসা ছিলো আর বউ, আর আমার যে ওটা কি ছিলে তোমাকে তো বুঝাতে পারবো না, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাও আমি কিছু বলছি না, আর তুমি কান্না করছো তাই না??? (তিথি)
-কই না, এমনি একটু খারাপ লাগছে.. (অনন্ত)
-কেনো খারাপ লাগছে??
-….(অনন্ত কোনো কথা না বলে অনন্যার লেখা ওই কাগজ টা বের করে তিথি কে দেয়)
-এটা তো ও লিখেছে তাই না??
-হুমমম আর ওই যে ডট ডট দিয়েছে ওখানে হয়তো ও কিছু লিখতো আমি বুঝতে পেরেছি…
,,
,,
তিথি কাগজ টা নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবে…হঠাৎ বলে…
-তুমি বসো আমি আসছি…
,,
,,
তিথি রুমে যায়। কিছুসময় পর আবার ফিরে আসে…এসে অনন্তর হাতে কাগজ টা দিয়ে তিথি অনন্তর থেকে একটু দূরে এসে দাড়ায় আর ধীরে ধীরে কান্না করে…
,,
,,
অনন্ত কাগজ টা খুলে দেখে ওই ডট ডট জায়গায় লেখা…
-আই লাভ ইউ
,,
লেখা টা দেখে অনন্ত চমকে যায়..। অনন্ত বসা থেকে উঠে তিথির সামনা সামনি যায়, গিয়ে দেখে তিথির চোখে পানি…
-এই তুমি কান্না করছো কেনো??(অনন্ত)
-এমনিহহ(তিথি)
-আর এটা কি লিখেছো??
-ও যেটা লিখেতে চাইছিলে সেটাই লিখেছি
,,
,,
কথাটা শুনার পর অনন্ত সহ্য করতে না পেরে তিথি কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে..
-এই পাগল এই কি হলো আবার (তিথি)
-…..(অনন্ত কান্না করেই যাচ্ছে)
-এই পাগল কান্না করছো কেনো??
-এত ভালোবাসো, আর আমাকে খুব বুঝতে পারো তাই,
-এহহ আমি না বুঝলে কে বুঝবে??
-হুমমম
-গাধা একটা
,,
,,
অনন্ত তিথির মুখ খানা সামনে নিয়ে এসে অনেক্ষন তাকিয়ে দেখে। তিথি বলে
-কি দেখো??(তিথি)
-একটা ভালবাসার সমুদ্র দেখছি (অনন্ত)
-আমি কি অতো ভালবাসতে জানি??
-হুমমম জানোই তো
-আচ্ছা একটা কথা বলি??
-বলো
-আমার হাতটা ধরো
-ধরলাম
-প্রমিস করো কখনো ছেড়ে যাবে না
-না যাবো না
-আরেকটা প্রমিস আছে
-কি??
-চল আজকে সিগারেট খাবো
-কেন খাবি??
-আরে দোস্ত তুই জানিস না দুঃখ ভোলার জন্য সিগারেট খেতে হয়
-আরে নাহহ কি যা তা বলিস
-সত্যি বলছি রে গাধা
-আমি খাবো না
-তো কি খাবি
-তোর ঠোঁট দুইটা তো আছে, সব ভুলিয়ে দিবে ওইটা…
,,
,,
তিথি এবার অনন্ত কে হ্যাচকা টান দিয়ে কাছে এনে বলল
-আমার পাগল বর একটা…(তিথি মুচকি হাসলো)

END

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here