#The_Magic_Of_Love
#পর্বঃ০৪,০৫
#writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
০৪
নীরব নগরী হয়ে উঠছে ব্যস্ততাপূর্ণ। আকাশ পানে দেখা দিয়েছে সূর্য। প্রাপ্তি আনমনে হাঁটছে দোকানের উদ্দেশ্যে। আর দেখছে এই শহরের কোলাহলকে। একদম প্রাপ্তিম মতো একটা কমবয়সী মেয়ে তার কোলের বাচ্চাটাকে একটা রুটি কিনে দেওয়ার জন্য হাত পেতেছে মানুষের দ্বারে কিন্তু কেউ যেনো পাত্তাই দিচ্ছেনা।
রিত্তিক আজ দোকানের সামনে অনেক আগে থেকেই দাড়িয়ে আছে। শুধুমাত্র প্রাপ্তির সাথে একটু আলাদা কথা বলার জন্য। রিত্তিক এর পাশে হৃদ দাড়িয়ে ফোন টিপছে। আজ আয়মানকে বলে দিয়েছে যেনো ড্রাইভারের সাথেই চলে যায় কলেজ পর্যন্ত।
প্রাপ্তি চমকে উঠে আজ। কারণ আজ সেই ছেলেটি একদম তার দোকানের সামনে দাড়িয়ে আছে৷ কি চায় ছেলেটি? এইভাবে তার পিছু নিয়েছে কেনো? না..এইবার ছেলেটির সাথে সামনাসামনি কথা বলতেই হবে..এইসব ভেবে প্রাপ্তি এগিয়ে যায় তার দোকান পানে।
রিত্তিক এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছে প্রাপ্তিকে দেখতে পাচ্ছেনা। হৃদ প্রাপ্তিকে দেখতেই কাঁধ দিয়ে রিত্তিক কে ধাক্কা দিচ্ছে। রিত্তিক বিরক্ত হয়ে বললো, কি হয়েছে ধাক্কা দিচ্ছিস কেনো? রিত্তিক দেখলো হৃদ হা করে সামনে তাকিয়ে আছে। রিত্তিক সেইটা অনুশীলন করে সামনে তাকালো আর দেখলো তার হুর পরী।
অগ্নি চোখে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি। সামনে দাড়িয়ে আছে রিত্তিক। হৃদ একটু দূরে দাঁড়িয়ে নিরব দর্শক। রিত্তিক এইবার বললো, দেখুন হুর পরী আপনাকে আমি ভালোবাসি। রিত্তিকের মুখে”হুর পরী নামটা শুনে এক অজানা ভালো লাগা কাজ করছে প্রাপ্তির কাছে। তবুও, প্রাপ্তি নিজেকে শক্ত করে হাতের মুঠো শক্ত করে ধরে। রিত্তিক আবার বললো, আপনি বললে, আমি আমার ফ্যামিলিকে পাঠাবো আপনার বাড়ি। দেখেন আপনি হয়তো আমাকে খারাপ ভাবতেই পারেন কিন্তু আমিতো “আই লাভ ইউ বলিনি” I Want Marry You My Dear Fairy.
প্রাপ্তি এইবার রেগে বলে, ভালোবাসা! এইটা আমার জন্য নয়। ছেড়ে দিন আমার পিছু। আর বিয়ে! এইটা আমার কাছে ফুল ঝড়ানো ছাড়া আর কিছুইনা। দেখুন,আপনি এইভাবে আমাকে বিরক্ত করতে পারেন না। রিত্তিক কিছু বলতে যাবে তার আগেই প্রাপ্তি বললো, আর একটা কথাও আপনার মুখ থেকে আমি শুনতে চায়না। সরুন আমাকে দোকান খুলতে দিন..এইটা বলেই দোকান খুলতে বসলো প্রাপ্তি।
রিত্তিক গাড়ি ড্রাইভ করছে আর মনে মনে বলছে,মিস নীল পরী, রিত্তিক খান্না যেইটা চায় সেইটাই তার। সো তুমিও আমার শুধুই আমার। কিন্তু কিসের এতো অনিহা তোমার ভালোবাসার প্রতি!
বাংলাদেশে পা রেখেছে ওলফা৷ হাতের ঠিকানাটা ড্রাইভারকে দিতেই নিয়ে যাচ্ছে ড্রাইভার।
আজ খান্না বাড়ির ছোট ছেলে আসছে বাড়িতে। সেই খুশির আমেজে মিসেস ইয়াসমিনি খান্না যেনো আত্মহারা৷ ছোটবেলায় নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রভাব যেনো সন্তানদের উপর না পড়ে সে জন্য তাদেরকে পাঠিয়ে দিয়েছিলো দেশের বাইরে। শুধু আয়মান বাদে। কারণ আয়মান তখন খুব ছোট ছিলো এইসব ভাবতেই এই খুশির দিনেও চোখে পানি চলে এসেছে ইয়ামিনি খান্নার।
আয়মানের সাথে এ কয়দিনে বেশ ভাব জ্বমেছে নম্রতার। আচ্ছা নম্রতা তুমি কাউকে ভালোবাসো? আয়মানের কন্ঠে জানার তীব্র ইচ্ছে। নম্রতা মনের কথা মনেই রেখে দিয়ে বললো না। আয়মান এখন যেনো আরো বেশি খুশি হয়ে গেছে। কারণ তার মতে তো, রিত্তিক নম্রতাকে পছন্দ করে।
প্রাপ্তি বেলকনিতে দাঁড়াতেই হঠাৎ মনে পড়ে গেলো সেইদিনের গোলাপের তুড়া আর নীল খামের কথা৷ প্রাপ্তি না চাইতেও তার মন বার বার চাইছে খামটায় কি আছে তা দেখার। প্রাপ্তি অবশেষে সেই খামটা নিলো৷ খামটা হাতে নিতেই যেনো প্রাপ্তি শিহরীতো হয়ে যাচ্ছে। কাঁপছে তার হাতজোড়া৷ প্রাপ্তি খামটা খুলেই দেখলো খুব সুন্দর হাতের কিছু লিখা। যে কেউ হয়তো এই হাতের লেখার প্রেমে পড়ে যাবে। প্রাপ্তিও হয়তো পড়েছে। লেখাগুলো পড়তে লাগলো সে।
প্রিয় হুর পরী,
ভালোবাসা নিও। আমার জীবনে এই প্রথম কোনো মেয়ে আমাকে তার নিকটে আকর্ষিত করছে। তোমার ওই হাসি রাতে আমার ঘুম কেড়ে নেয়৷ তোমার দুই মায়াবী হরিণী চোখ আমাকে নেশাক্ত করেছে। জানিনা আমার কি হয়েছে এর আগে আমার এমন হয়নি। আপনার অসুখে ভোগান্তি হয় আমি প্রতি সেকেন্ডে। আপনি কি হবেন আমার সারা জীবনের সঙ্গী? হবেন কি আমার চাঁদ দেখার সাথী? হবেন কি?আঁধারের মাঝে চাঁদের আলোড়ন? আমি আপনাকে প্রেম নয় বিয়ে করতে চায়। ভালোবাসি আপনাকে আমি সত্যি অনেক ভালোবাসি আপনাকে।
ইতি আপনার
অপ্রিয়।
প্রাপ্তি এই চিঠিটা নিয়ে কান্না করে ফেলে…কান্না করতে করতে বলে, যেই অতীত আমার সামনে আনতে চায়না সেই অতীত কেনো বার বার আমাকে তার কাছে টানছে খোদা। কেনো এইসব ভালোবাসা আমার কাছে ধরা দিচ্ছে? কেনো কেনো কেনো?
নম্রতা আজ ভীষণ হ্যাপি। আজ রওনক আসছে দেশে। রওনক কল করে বলেছে এসেই তার সাথে মিট করবে। নম্রতা এইসব ভাবতেই লজ্জায় নুয়ে যায় যায় অবস্থা।
রিত্তিককে জড়িয়ে ধরে আছে রওনক খান্না৷ ইয়ামিনি খান্না ছোট ছেলেকে দেখেই কেঁদে ফেলেন। রওনক রিত্তিককে ছেড়ে মায়ের কাছে যায়। ইয়ামিনি খান্না জড়িয়ে ধরে তাকে। রওনকের চোখের কোনেও বৃষ্টি। রওনক বলছে, কিগো মা কাঁদলে হবে? খেতে দাও ক্ষুদা পেয়েছে। ইয়ামিনি কান্না চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন,তুই যা ফ্রেশ হো আমি খাবার দিচ্ছি। রওনক রিত্তিকের দিকে তাকিয়ে বললো,ভাইয়া আয়মান আর হৃদ ভাই কোথায়? রিত্তিক হেসে বললো,যা আগে গিয়ে আয়মানের রাগ ভাঙ্গা। বেচারি রাগে বোম হয়ে আছে। আর হৃদ একটু একটা কাজে বাইরে গেছে একটুপরই চলে আসবে।
আয়মান মুখ ফুলিয়ে বসে আছে বালিশের উপর দুই হাত তার গালে রেখে। রওনক আস্তে আস্তে ডুকে বোনের রুমে। আয়মানকে কেউ জানায়নি যে আজ তার ছোট ভাইয়া রওনক আসবে। রওনক ও ফোনে কিছু বলেনি তাই রেগে আছে সে। রওনক গিয়ে জড়িয়ে ধরে তার বোনকে আর বলে,আমাদের আয়না রাণী রাগ করেছে বুঝি? [ রওনক আয়মানকে রাগানোর জন্য আয়না বলে ] আয়মান এখন গম্ভীর ভাবে বলে উঠলো, আমি আয়মান আয়না নয়। রওনক গালে একহাত রেখে ভাবলেশভাবে বললো,ওহ তাই বুঝি? আচ্ছা তা কি করলে আমাদের মহারানীর রাগ কমবে শুনি? ৫০০ বার কানে ধরে উঠবস কর…এই কথা শুনেই আয়মান আর রওনক দরজায় তাকায় রিত্তিক কথাটা বলেছে। রওনক আড়চোখে আয়মানের দিকে তাকিয়ে বললো ঠিক আছে তবে তাই হোক। রওনক যেইনা কানে ধরে উঠবস করতে যাবে সেইসময় আয়মান গিয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে। আর রিত্তিক মুচকি হাসে। রিত্তিক বললো,রওনক কে পেয়ে আমাকে ভুলে গেলি! রওনক আর আয়মান দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে রিত্তিককে। আর রিত্তিক দুই ভাই বোনকে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
নম্রতার ফোনে টুংটাং আওয়াজ আসতেই ফোনটা হাতে নেয় সে। আননোন নাম্বার। আননোন নাম্বার দেখে প্রথমে ধরলোনা সে। বারংবার কল বাজতেই একরাশ বিরক্তি নিয়ে কলটা রিসিভ করে বললো,কে? বার বার কল দিচ্ছেন কেনো? অপরপ্রান্ত থেকে কেউ একজন বলে উঠলো তোমার ফিউচার আমি। নম্রতা যেনো রেগে গেলো বললো, ভাই কোথা থেকে আসেন বলুনতো আপনারা? পাগল -ছাগল। এতো পাগল হওয়ার শখ থাকলে পাবনা গেলেইতো পারেন এইটা বলেই কেটে দিলো নম্রতা। আবার কল বাজছে। নম্রতা এইবার পণ করেছে বকা টকা দিয়ে ব্লকে ফেলে দিবে। কল ধরতেই অপরপ্রান্ত থেকে বলে উঠলো, মিস মহারাণী ভিক্টোরিয়া আমি রওনক। রওনক নামটা শুনতেই নম্রতা জ্বিব কাটে দাঁত দিয়ে। এতোক্ষণ পাগল-ছাগল সব রওনককে বললো! নম্রতা আমতা আমতা করে বললো,ত তু তুমি আমাকে আগে বলবেনা যে তুমি রওনক?
রওনকঃ পরিচয় দিলে জানতাম কি করে মিস যে আপনার এতো রাগ।
নম্রতাঃ ইশ চুপ থাকোতো। কোথায় তুৃমি?
রওনকঃ এইতো বাসায় রুমে শুয়ে শুয়ে তোমার সাথে কথা বলছি। আজ বিকেলে কফি শপে মিট করবো শাড়ী পড়ে আসবে কিন্তু…
নম্রতাঃ আমিতো শাড়ী পড়তেই পারিনা মিস্টার।
রওনকঃ আমি কিছু জানিনা শাড়ী তোমাকে পড়তেই হবে।
নম্রতাঃ আচ্ছা বাবা ট্রাই করবো এখনতো কলটা কাটো নয়তো শাড়ী পড়া শিখবো কি করে?
রওনক মুচকি হেসে কলটা কেটে দিলো। আর ওইদিকে নম্রতা লজ্জায় লজ্জাবতী।
বার বার বাসার কলিংবেল বাজতেই দরজা খুলে দেয় আয়মান। সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সে।
চলবে….
#The_Magic_Of_Love
#পর্বঃ০৫
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
আয়মান হা হয়ে তাকিয়ে আছে সামনে থাকা মেয়েটির দিকে। শর্ট স্কার্ট আর কুটি সিস্টেমের গেন্জি। যা সচরাচর বাংলাদেশে কেউ পড়েনা। আয়মানকে এমন হা হয়ে থাকতে দেখে মিসেস ইয়াসমিনি রান্না ঘর থেকে আসতে আসতে বললো,এমনভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস কেনো? সরতো দেখি কে এসেছে..এইটা বলেই তিনি সামনে থাকা মেয়েটির দিকে তাকালেন। মুচকি হেসে বললেন,কে তুমি মা? মেয়েটি মুচকি হেসে বললো,আমি ওলফা শেখ। রিত্তিকের ফ্রেন্ড। লন্ডন থেকে এসেছি। মিসেস ইয়ামিনি হেসে বললেন,ওহ এসো এসো ভেতরে এসো বাইরে কেনো! আয়মানকে বললো,এই যাতো রিত্তিককে ডেকে নিয়ে আয়। আয়মান মায়ের কথা শুনে দৌড়ে উপরতলায় গেলো ভাইকে ডাকতে।
নীল শাড়ী পরিহিত মেয়েটিকে বার বার ঘুটিয়ে দেখছে রওনক। নম্রতা বার বার লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলছে। রওনক নম্রতার দিকে একমনে তাকিয়ে বললো,লজ্জা পেলে মেয়েদের সৌন্দর্য কয়েকগুন বেড়ে যায়। এইটা বলেই রওনক উঠে দাঁড়ালো। রওনক এর আচন উঠে দাঁড়ানো দেখে নম্রতা প্রশ্নাত্মক চোখে তাকালো রওনকের দিকে। রওনক হাঁটু গেড়ে বসে নম্রতার হাতে একটা রিং পড়িয়ে বললো,
“ভালোবাসা কি তা হয়তো জানিনা তবে,এতটুকু জানি তুমীহিনা আমি নিরুপায়। তুমি আমার ভালো থাকার উৎস। এক শিশির শান্তি ঠাঁই। ভালোবাসি তোমায় আমি বড্ড ভালোবাসি। ” I Love You… I Love You so Much” Do You Love me? কথাটা বলেই উত্তরের আশায় নম্রতার দিকে তাকিয়ে আছে রওনক। নম্রতার চোখে বিস্ময়। দুই হাত মুখে নিয়ে অবাকের ভঙ্গিমাতে হেসে বলে, Yes I Love You.I Love You so Much”
এইটা বলতেই উপর থেকে গোলাপ ফুলের পাপড়ি পড়তে থাকে। আর শপের সব মানুষরা হাত তালি দিচ্ছে।
রিত্তিক,হৃদ অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। রিত্তিক অবাক হয়ে বললো,ওলফা তুমি এইখানে! আলফা রিত্তিককে জড়িয়ে ধরে বলে Yes Babyz. মিসেস ইয়ামিনি এদিক ওদিক তাকাচ্ছে এইসব কান্ড দেখে। আয়মানেরতো রাগ উঠে যাচ্ছে আর হৃদ হা হয়ে সব দেখছে। রিত্তিক হৃদের দিকে তাকিয়ে দাতঁ কেলিয়ে হেসে দাঁতে দাঁত চেপে ওলফার কানে ফিসফিস করে বললো, ” এইটা বাংলাদেশ ওলফা নট লন্ডন।
আমি এইসব মেয়েকে আমার বাড়ির বউ করবোনা..কাটকাট কন্ঠ কথাটা বললেন মিসেস ইয়ামিনি খান্না। রিত্তিক অবাক হয়ে বলছে মা আমি না বলতেই তুমি কি অদ্ভুত ভাবনা ভাবছো? ওলফা আমার কলেজ ফ্রেন্ড নাথিং ইলস। আর আমিতো জানতামি না যে ওহ বাংলাদেশে আসবে। মিসেস ইয়ামিনি পিঁয়াজ গুলো তেলে ছেড়ে খুন্তি নিয়ে নাড়তে নাড়তে বললেন, সে যেই হোকনা কেনো এই মেয়েকে বলে দিস এইটা ওর ওই ইংলিশ ক্ষেত নয় এইটা বাঙালিদের দেশ। এইখানে কামিজ সালোয়ার এইসব চলে ছোট ছোট জামা কাপড় নয়।
আয়মান বসে বসে হৃদকে বলছে, হৃদ ভাই মেয়েটাকে তুমি চিনো? হৃদ বললো,আরে রিত্তিকের মুখে শুনেছিলাম ওর কথা ওহ নাকি রিত্তিকের ফ্রেন্ড। আয়মান নাক বেংচি কেটে বললো, ফ্রেন্ড না ছাই দেখলেনা? ভাইয়াকে কিভাবে জড়িয়ে ধরলো আমাদের সামনে অসভ্য মেয়ে একটা। হৃদ বললো, যাই বলিসনা কোনো মেয়েটা কিন্তু জোস।
মেঘ অভিমান করে বসে আছে হৃদের প্রতি। হৃদ একটা কল ও দেয়নি! এইটা ভাবতেই মেঘের রাগ আকাশ ছোঁয় ছোঁয়। তাই রেগে মেঘ নিজেই কল দিলো।
কিউটিপাইয়ের কল পেয়ে হৃদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। কি বলবে এখন সে! অভিমান কিভাবে ভাঙাবে? হৃদ এইসব ভাবতে না ভাবতেই আবার কল এলো। হৃদ ধরলোনা। না ধরে রিত্তিককের কাছে গেলো দৌড়ে।
আমি মরছি আমার জ্বালায় আর তুই মরছিস তোর বেষ্টু নিয়া? কথাটা বলেই রিত্তিক হাফঁ ছাড়ে। হৃদ অসহায় ফেইস নিয়ে বিছানায় বসে বললো,ভাই একটা আইডিয়া দেনা প্লিজ জানিসইতো মেঘের রাগ অধিক। রিত্তিক এরপর এমন আইডিয়া দিলো যার ফলে রিত্তিকের অসহায় চোখ খুশিতে লাফিয়ে উঠেছে।
ভাইয়া..আজ না? নম্রতার বার্থডে আমাকে একটু ওইখানে দিয়ে আসবে? হঠাৎ কথাটা শুনে লাফিয়ে উঠে রিত্তিক। আর বললো, কিই বললি? আজ নম্রতার বার্থডে? আয়মান বললো,হুম তুমি দিয়ে আসবে কিনা তাই বলো নয়তো… আর কিছু বলার আগেই রিত্তিক দিয়ে আসবো দিয়ে আসবো বলে লাফিয়ে উঠলো।
এতোদিন পর এই বাড়িতে এসে মনটা পরক্ষণেই ভালো হয়ে যায় প্রাপ্তির। প্রাপ্তি আলেয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরেন৷ কতোদিন দেখেনা তিনি প্রাপ্তিকে।
ওফ রিত্তিক তুমি কোথায় যাচ্ছো? আমিও যাবো.. কথাটা বলেই রিত্তিকের হাত ধরলো ওলফা। আয়মান বিরক্তি নিয়ে বললো, “আমরা যাচ্ছি একটা এরেন্জম্যান্টে আর সেইটা আমার ফ্রেন্ড এর তোমাকে নিয়ে যাবো কেনো আজিব! ওলফা এক পলক আয়মানের দিকে তাকিয়ে রিত্তিককে বললো নিয়ে যাওনা রিত্তিক। রিত্তিক বললো, ওলফা ওইখানে তোমাকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তুমি বরংচ হৃদের সাথে ইনজয় করো..হৃদের দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে হেসে চলে গেছে যায় রিত্তিক।
মিষ্টি একটা মেয়ের পাশে রিত্তিককে দেখে অবাক এর চরম সীমানায় প্রাপ্তি৷ black ব্লেজারে পুরুষটার রুপ যেনো তিনগুণ বেড়ে যাচ্ছে। নম্রতার ডাকে প্রাপ্তি নম্রতার কাছে যায়।
ব্লু কালারের লেহেঙ্গাতে প্রাপ্তিকে পুরো পরী লাগছে। এই বুঝি কারো নজর লেগে যাবে। আয়মানকে দেখে জড়িয়ে ধরে নম্রতা। ধীরে ধীরে পরিচয় করিয়ে দেয় সবার সাথে। রিত্তিককে দেখিয়ে বললো, আপু ওনি হচ্ছে রিত্তিক ভাইয়া। আয়মানের বড় ভাই। রিত্তিক হাত বাড়িয়ে দেয় হ্যান্ডশ্যাক করার জন্য প্রাপ্তি বোনের সামনে কি করবে ভেবে না পেয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো। নম্রতা..ফাতেমা বেগম আর আলেয়া বেগমকে ডেকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। আলেয়া বেগমের দিকে হাত দিয়ে বললো..এইটা হচ্ছে আমার মা। আর ফাতেমা বেগমের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো..এইটা বলো আমাদের আরেক মা মানে আপুর শাশুড়ী। এক সেকেন্ডের জন্য থমকে যায় রিত্তিক। রিত্তিক না বুঝতে পেরে প্রাপ্তির দিকে একপলক তাকিয়ে নম্রতাকে প্রশ্ন করলো, শাশুড়ী মানে?
চলবে……