?#The_Hate_Story? ?#Madness_Love?,22,23 last

1
2993

?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?,22,23 last
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_22

সূর্য পা পিছলে নিচে পরে যায় শবনমের হাত ধরে রাখায় শবনমও নিচে পরে যেতে নেয়। শবনম চিৎকার দিয়ে উঠলো……

শবনম পরে যেতে নিলেই আধার ওর হাত ধরে টান দেয়। শবনম সোজা আধারের বুকে গিয়ে পরে আর আধার ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আধারের পুরো শরীর কাঁপছে… ভয়ে যেন ওর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

শবনমেরও একই অবস্থা। শবনম আধারকে ‌শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখে।

আধার শবনমকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে ওর গালে হাত রেখে বলল,,

আধারঃ ত তুমি ঠিক আছো শবনম?? (কাঁপা গলায়)

শবনম মাথা ঝাঁকালো। সূর্যের কথা মনে পরতেই আধার শবনমকে সরিয়ে পাহারের কিনারে গিয়ে তাকায়।

সূর্য একটা পাথর ধরে ঝুলে আছে আর উঠার চেষ্টা করছে। যতবারই উঠার চেষ্টা করে হাত ছুটে যায়।

আধার ঝুঁকে সূর্যের দিকে এক হাত বাড়িয়ে দেয়। সূর্য অবাক হয়ে আধারের দিকে একবার আর ওর এগিয়ে দেওয়া হাতের দিকে একবার তাকায়।

আধারঃ সূর্য ভয় পাশ না আমার হাত ধর। দেখ আমি তোকে কিচ্ছু হতে দিবো না তুই শুধু হাতটা ধর।

সূর্য আধারের কাজে অবাক হয়ে যাচ্ছে। যাকে এতো কষ্ট দিলো মারার চেষ্টা করলো আজকে সেই ওকে বাঁচানোর জন্য নিজের হাত বারিয়ে দিচ্ছে।

সূর্যঃ তোর তো খুশি হওয়া উচিৎ যে আমি মরে যাচ্ছি। আর তুই কি না আমাকে বাঁচানোর জন্য নিজের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছিস। আমি তোর সাথে কত অন্যায় করেছি তোর তো আমাকে শাস্তি দেওয়া দরকার।( চোখ দিয়ে পানি পরছে সূর্যের)

আধারঃ ভাই দেখ এসব কথা পরে হবে এখন তুই আমার হাত ধর।

সূর্যের হাত স্লিপ করে ও পরে যেতে নিলেই আধার ওর হাত ধরে ফেলে। সূর্যের হাত ধরে ওকে টেনে উপরে তুললো আধার।

সূর্য মূর্তির মতো শুধু তাকিয়ে আছে আধারের দিকে।

আধারঃ ভাই তুই ঠিক আছিস??? ( সূর্যের কাধে হাত রেখে)

সূর্যঃ কেন বাচাঁলি আমায়??

আধারঃ তুই হয়তো কখনো আমাকে নিজের ভাই মনে করিস নি কিন্তু আমি তোকে সবসময় নিজের বড় ভাই মনে করেছি। আর নিজের চোখের সামনে নিজের ভাইকে মরতে আমি কিভাবে দেখবো বল??

সূর্যঃ আমি তোর ভাই হওয়ার যোগ্য না আযান। ক্ষমা করে দে আমাকে। আমি তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি। তোকে মারার চেষ্টা পর্যন্ত করেছি প্লিজ ফর গিভ মি ভাই। ??

সূর্য আধারকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। আধারও সূর্যকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে,,,,

আধারঃ তোর প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই ভাই। আমি সবসময় তোকে আর মামাকে নিজের পরিবার মনে করেছি। যখন জানতে পারি যে তোরাই আমাকে মারার জন্য এতো কিছু করেছিস,,, মামা আমার বাবা মাকে খুন করেছে বিশ্বাস কর নিজেকে খুব একা মনে হয়েছে। অস্তিত্বহীন মনে হয়েছে ইচ্ছে করছিলো নিজেকে শেষ করে দেই। পরের দেওয়া কষ্ট সহ্য করা যায় কিন্তু আপনজনদের দেওয়া কষ্ট সোজা এখানে লাগে ( বুকে হাত রেখে)।( কাঁদতে কাঁদতে )

পুলিশ ফোর্স এসে সূর্যের সামনে দাঁড়ায় (as usual last moment এ পুলিশের এন্ট্রি ??)

ইন্সপেক্টরঃ You are under arrest Mr Shurjo ( কমন ডায়লগ ??)

সূর্য শবনমের দিকে তাকিয়ে দেখে ও ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। সূর্য শবনমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।

সূর্যঃ তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি পারলে ক্ষমা করে দিও (হাত জোড় করে)

শবনম নিজের মুখ ঘুরিয়ে ফেলে।

সূর্য নিজের জবাব পেয়ে যায়। সূর্য আধারের সামনে এসে শবনমের দিকে তাকিয়ে বলল,,,

সূর্যঃ খেয়াল রাখিস ( কান্না জড়িত কন্ঠে)

আধার মাথা ঝাঁকালো। সূর্য পুলিশদের সাথে ওদের জিপে চড়ে চলে যায়। আধার সূর্যের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে আর শবনম আধারের দিকে।

সূর্য চলে যেতেই আধার শবনমের কাছে এসে ওকে বলল,,,

আধারঃ ওকে কি ক্ষমা করা যায় না???

শবনমঃ আমার মন আপনার মতো এতো বড় না। আর না আমি এতো দয়ালু।

শবনম কথা গুলো বলে গাড়িতে উঠে বসে পরে। আধার কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িতে উঠে ড্রাইভ করতে শুরু করে। সারা রাস্তায় কেউ কারও
সাথে কোন কথা বলে নি।

বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই শবনম নেমে ভিতরে চলে যায়। আধারও ওর পিছনে পিছনে ভিতরে চলে আসে।

মায়া শবনমকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে। শবনমও মায়াকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।

মায়াঃ শবনম তুমি ঠিক আছো তো। ( শবনমের চেহারা আর হাত চেক করতে করতে)

শবনমঃ হ্যাঁ আম্মু আমি একদম ঠিক আছি।

মায়া শবনমকে জড়িয়ে ধরে আধারকে ইশারায় আসতে বলে,,, আধারও মায়াকে এক সাইড দিয়ে জড়িয়ে ধরে।

মায়াঃ আল্লাহর হাজার গুন শুকরিয়া তোমরা দুজনেই ঠিক আছো।

শবনম মায়াকে ছেড়ে বলল,,,,

শবনমঃ আম্মু আমি একটু একা থাকতে চাই। (বলে ওর রুমে চলে গেলো)

মায়া আধারের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো। আধার সব মায়াকে খুলে বলল যে ও সূর্যকে ক্ষমা করে দিয়েছে। মায়া শবনমের রাগের কারন বুঝে যায়।

মায়াঃ তুমি চিন্তা করো না আমি ওকে বুঝাবো।

আধারঃ হুম।

কিছুক্ষণ পর মায়া শবনমের রুমে যায়। শবনম বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে হয়তো কান্না করছে।

মায়া গিয়ে শবনমের কাধে হাত রাখে। শবনম নিজের চোখ মুছে পিছনে তাকাতেই দেখে মায়া।

শবনমঃ আম্মু তুমি?

মায়াঃ আধারের প্রতি রাগ লাগছে??

শবনম মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বলল।

মায়া শবনমকে পাশের চেয়ারে বসিয়ে ওর পাশে বসে পরলো।

মায়াঃ ভুল কিন্তু একা সূর্য করে নি। আমি করেছি তুমি করেছো আধার করেছে। আমরা সবাই একে অপরকে ক্ষমা করে দিয়েছি তাহলে সূর্য কেন ক্ষমা পাবে না।

ও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। আর সেই ভূল শুধরানোর জন্য প্রায়শ্চিত্ত ও করছে। আমাদের উচিত ওকে ক্ষমা করে আরেকটা সুযোগ দেওয়ার। ওর সামনে ওর সারা জীবন পরে আছে। আর ও সবচেয়ে বেশি অন্যায় আযানের সাথে করেছে,,, আযান ওকে ক্ষমা করতে পারলে আমরা কেন পারবো না।

আমার কথাটা ভেবে দেখো,,,, মায়া শবনমের মাথায় হাত বুলিয়ে চলে যায়। শবনম ঠাই একই ভাবে বসে আছে। মায়ার কথা গুলো বুঝার চেষ্টা করছে ও।

রাতে,,,

ঘুমিয়ে আছে শবনম। হঠাৎ কিছু একটার আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় ওর। চমকে উঠে বসে যায় শবনম আশেপাশে তাকিয়েও কাওকে দেখতে পেলো না। পাশে তাকাতেই একটা নীল রঙের প্যাকেট দেখতে পেলো ও। প্যাকেটের উপরে একটা কাগজ।

শবনম এগিয়ে গিয়ে কাগজটি হাতে নিলো,,,

>>> আমাদের সিক্রেট জায়গায় অপেক্ষা করছি রেডি হয়ে তারাতারি চলে এসো।

মুচকি হেসে প্যাকেটটি খুলে দেখলো শবনম। একটা অফ হোয়াইট গাউন। সাথে ম্যাচিং ক্রিস্টাল জুয়েলারী।

রেডি হয়ে আয়নায় নিজেকে ভালো ভাবে দেখে নিলো শবনম। অফ হোয়াইট গাউন সাথে মেচিং ক্রিস্টাল জুয়েলারী , চুলগুলো ফেয়রি স্টাইল করে এক সাইডে করা ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। সব মিলিয়ে একদম পরীর মতো লাগছে ওকে।

শবনম রেডি হয়ে কলেজের পিছনের জায়গায় চলে আসে। এখানেই আযান ওকে প্রপোজ করেছিলো তখন থেকেই এটা ওদের স্পেশাল জায়গা।

জায়গাটা পুরো অন্ধকার। শবনম একটু এগোতেই চারো দিকে লাইট জ্বলে উঠে। পায়ের নিচে নরম অনুভব হওয়ায় নিচে তাকালো শবনম। গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে রাস্তা বানানো। শবনম রাস্তা অনুযায়ী সামনে এগোয়।

এগিয়ে আসতেই সামনে একটা মনিটর দেখতে পেলো ও। আবার সব লাইট অফ হয়ে অন্ধকার হয়ে যায়। মনিটরে শবনম আর আযানের ছবি গুলো স্লাইড শো হচ্ছে। পিছন থেকে কেউ গিটার বাজিয়ে ওর সামনে আসছে। শবনম পিছনে ফিরে দেখে আধার গিটার বাজিয়ে গান গাইতে গাইতে ওর দিকে আসছে,,,,

আধার অফ হোয়াইট শার্ট তার উপর কোট, হোয়াইট পেন্ট চুল গুলো স্পাইক করা। শবনমের সাথে ম্যাচিং করে ড্রেস আপ করা। আধারকে পুরো প্রিন্স লাগছে।

আধারঃ

চোখের পলকে আছে বলো কে….
চোখের পলকে আছে বলো কে….
আমার পৃথিবী টাই তুমিইই….
প্রেমী ও প্রেমী,,, প্রেমী ও প্রেমী….
প্রেমী ও প্রেমী,,,প্রেমী ও প্রেমী….

??????

আধার শবনমের চারপাশে ঘুরে গান গাইছে,,,,

এক পাশে রাত এক পাশে দিন….
হয়েছি ভাবনায় বিলীন….
হো ও ইচ্ছে সাজাও মন ছুয়ে যাও….
হয়েছি স্বপ্নে রঙীন….

শবনমের গালে হাত রেখে,,,,

তুমি এলে তাই…. জীবন খুঁজে পাই….
হো তুমি এলে তাই জীবন খুঁজে পাই….
তোমার প্রেমে বাঁচি আমিইই…..
প্রেমী ও প্রেমী প্রেমী ও প্রেমী….
প্রেমী ও প্রেমী প্রেমী ও প্রেমী।

আধার গিটারটা রেখে শবনমের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। শবনম মুচকি হেসে আধারের হাতে হাত রাখলো।

আধার শবনমের কোমরে এক হাত রেখে ওকে বুকে জড়িয়ে আবার গাইত শুরু করে,,,

ভাল্লাগেনা না দেখে আর….
থাকো না সামনে আমার….
হো ও এক জীবনে চাই তোমাকে….
জীবন তো হয়না দু বার….

তুমি ছাড়া কে… বোঝে আমাকে…
হো তুমি ছাড়া কে বোঝে আমাকে…
হৃদয় জুড়ে তোমার নামিইইই…

প্রেমী ও প্রেমী প্রেমী ও প্রেমী….
প্রেমী ও প্রেমী প্রেমী ও প্রেমী…
প্রেমী ও প্রেমী প্রেমী ও প্রেমী।

শবনম আধারের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে।

আধারঃ শবনম!!!

শবনম মাথা তুলে আধারের দিকে তাকালো। আধার শবনমের এক হাত ধরে হাটু গেড়ে ওর সামনে বসে পরে।

আধারঃ ছোট বেলা থেকে ভালোবাসি তোমাকে। বাকী জীবনটাও কি তোমায় ভালোবাসার সুযোগ দিবে??? এতো বছর বন্ধু হয়ে পাশে ছিলে,,, বাকী জীবন টুকু কি আমার সোল মেট হয়ে আমার পাশে থাকবে??? সব ভূল সব অপরাধ ক্ষমা করে নিজের নতুন করে জীবন শুরু করার একটা সুযোগ করে দিবে??? প্রতি রাতে তোমাকে বুকে নিয়ে ঘুমাবো আর প্রত্যেক সকালে তোমার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে তোমার ঘুম ভাঙাতে চাই,,, এই অধিকার টুকু দিবে??? I really love you Shabnam থাকবে সারা জীবন আমার পাশে আমার হয়ে???

আধার আশা ভরা চোখে শবনমের দিকে তাকিয়ে আছে।

শবনমঃ হুম কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে (গম্ভীর হয়ে)

আধারঃ সব শর্তে রাজি আমি। কথা দিচ্ছি যা বলবে তাই করবো,,, যা চাইবে তাই এনে দেবো,,, আমার জীবন চাইলে সেটাও তোমার কদমে রেখে দেবো প্রমিস।

শবনমঃ এসব কিছু আমার চাইনা,,, আমার শুধু একটা প্রমিস চাই।

কখনো একা ফেলে চলে যাবে না আমাকে!!!

আধারঃ কথা দিচ্ছি আল্লাহর দেওয়া মৃত্যু বাদে কেউ আমাকে তোমার থেকে আলাদা করতে পারবে না।

শবনমঃ I love you Azaan I love you very much. (আধারকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।)

আধারও শবনমকে নিজের সাথে মিশিয়ে জড়িয়ে ধরে।

আধারঃ I’m sorry for everything Shabnam. I love you,,,

শবনমঃ I love you too.

আধার শবনমের হাত ধরে আরেকটু সামনে নিয়ে গেল। একটা টেবিলে পাইনাপেল পেস্ট্রি কেক রাখা। আধার শবনমকে সামনে দাড় করিয়ে ওর হাতে একটা ছুরি দিয়ে হাতে হাত রেখে কেক কাটলো। আধার শবনমকে কেক খাইয়ে দিলো পিসটার বাকি টুকু শবনম আধারকে খাইয়ে দিলো।

আধার শবনমকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর কাধে থুতনি ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে বলতে শুরু করল,,,,

আধারঃ মামুনি বলেছে কালকে আবার আমাদের এঙ্গেজমেন্ট হবে। We will start our life together with our #Madness_Love.(শবনমের কাধে ঠোঁট ছুঁইয়ে)

আধারের প্রত্যেকটা ছোঁয়ায় শবনম কেঁপে উঠছে।

আধারঃ অনেক রাত হয়ে গেছে চলো মামনি টেনশন করবে।

শবনমঃ হুম।

আধার ড্রাইভ করছে আর শবনম আধারের কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে। আধারের এক হাত স্টেরিংয়ে আরেক হাত শবনমের কোমর জড়িয়ে ধরে আছে। একটু পর পর শবনমের কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিচ্ছে আধার। শবনম মুচকি হাসছে আর আধারের ছোয়া গুলো অনুভব করছে।

সকালে,,,

আধারঃ মামনি শবনম কোথায়???

মায়াঃ কোথায় আবার নিজের রুমে হবে।

আধারঃ আমি এখন দেখে আসলাম ও নেই রুমে। ( টেনশনে)

হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো। কামিনী দরজা খুলে দিলো শবনম এসেছে। শবনমের পাশের লোকটিকে দেখে সবাই 440 ভোল্টের শক্ড খায়।

To be continued…..

?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_23_Last_Part

শবনমের সাথে লোকটিকে দেখে সবাই 440 ভোল্টের শক্ড খায়।

লোকটি আর কেউ নয় বরং সূর্য। শবনম আর সূর্য ভিতরে আসলো। সূর্য মাথা নিচু করে আছে। আধার আর মায়া শবনমের সামনে এসে দাঁড়ালো।

আধারঃ শবনম!! সূর্য তোমার সাথে ওতো পুলিশ স্টেশন ছিলো??

শবনমঃ আমি কেস উইথড্র করে ফেলেছি। তাই ওনারা সূর্যকে বেল দিয়ে দিয়েছে।

মায়াঃ হঠাৎ আমাদের না জানিয়ে তুমি সূর্য কে ছাড়াতে গিয়েছিলে?? কাল তো তুমি অনেক রেগে ছিলে ওর উপর তাহলে!!

শবনম মায়ার সামনে গিয়ে বলল,,,

শবনমঃ তুমিই তো বলছিলে,, সবাইকে নিজের ভূল শুধরানোর একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। আমি তাই করেছি। আর ও যা করেছে তাতে ওর কোন দোষ নেই,,, আঙ্কেল ছোট বেলা থেকেই ওর মনে আযানের জন্য বিষ দিচ্ছিলেন। তাই ও ভূল পথে চলে গেছে।

কিন্তু এখন ও নিজের ভূল বুঝতে পেরেছে তাই ওকে শাস্তি দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। আর যে নিজের ভূলের অনুতপ্ত হয় তাকে আল্লাহ ও ক্ষমা করে দেয় এটাই বলেছিলে না তুমি।

মায়াঃ I’m proud of you ( শবনমকে জড়িয়ে ধরে)

আধার গিয়ে সূর্যকে জড়িয়ে ধরে,,,

আধারঃ Welcome back vai.

সূর্য মায়ার সামনে গিয়ে মাথা নিচু করে ওর থেকে ক্ষমা চাইলো।

সূর্যঃ আ’ম স্যরি আন্টি স্যরি ফর এভরিথিং।

মায়াঃ It’s okay shurjo যা হয়েছে ভূলে যাও। Start a new life.আর হ্যাঁ আজকে শবনম আর
আযানের এঙ্গেজমেন্ট সো সব দায়িত্ব কিন্তু তোমার।

সূর্যঃ ইয়েস আন্টি ডোন্ট ওয়ারি আ’ল টেক কেয়ার অফ এভরিথিং। নিজের হাতে সব আয়োজন করবো। ?

সূর্য রাতের পার্টির জন্য সব আয়োজন করছে। কোন ত্রুটি রাখছে না। ওকে দেখে কেউ বলবে না যে ওর মনে কখনো আধারের জন্য ঘৃণা ছিলো। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে সূর্য যে শবনম শুধু ওর ভালো বন্ধু হতে পারবে সোল মেট না।

পুরো বাড়ি সুন্দর করে সাজিয়েছে সূর্য।

সূর্য অনেক গুলো গিফ্ট বক্স নিয়ে রুমে রাখতে যাচ্ছিলো। বক্স অনেক গুলো থাকায় ওর চেহারা ঢেকে গেছে সামনে কিছুই ভালো মতো দেখতে পারছিলো না।

হঠাৎ ধাম করে কারো সাথে ধাক্কা লেগে ও পরে যায়। সূর্য নিচে আর ওর উপরে একজন মেয়ে। মেয়েটির চুল দিয়ে সূর্যের চেহারা ঢেকে গেছে। সূর্য চুল গুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দেখে একটি মেয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে আছে। অনেক বেশি মায়াবী লাগছে মেয়েটাকে একদম নিষ্পাপ। চশমার আড়ালে মেয়েটির চোখ আরো সুন্দর লাগছে। মেয়েটি দেখতে অসম্ভব সুন্দর।

মেয়েটি মিট মিট করে চোখ খুলতেই সূর্যের চোখে ওর চোখ পরে যায়। একে অপরের দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে ওরা আশেপাশে কি হচ্ছে ওদের কোন খেয়ালী নেই।

>>> উহুম উহুম

কারো গলা পরিষ্কার করার আওয়াজে ধ্যান ভাঙ্গলো ওদের।

হন্তদন্ত করে মেয়েটি সূর্যের উপর থেকে উঠে যায় সূর্য উঠে নিজের মাথা চুলকাতে থাকে।

শবনম আর আধার মুচকি মুচকি হাসছে ওদের কান্ড দেখে।

ছায়া!!! শবনম মেয়েটাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।

( ছায়া শবনমের ছোট চাচার মেয়ে। ওর মা নেই তাই ছোট বেলায় ও শবনমের সাথেই থাকতো। সূর্যকে অনেক পছন্দ করতো ছায়া কিন্তু এটা কখনো সূর্যের চোখে পরে নি। সূর্য ছায়াকে ছোট বেলা থেকেই অনেক রাগাতো ছোটি চাশমিশ বলতো ওকে কারন ও চশমা পরতো। ছায়ার বাবা USA চলে গেলে ছায়াও ওনার সাথে চলে যায়।
এর পর থেকে সূর্য ছায়ার কোন খোঁজ নেয় নি হয়তো শবনমের প্রতি মিথ্যা ভালোবাসার আড়ালে ছায়ার সত্য ভালোবাসা ওর চোখে পরে নি।)

শবনমঃ কেমন আছিস আর এতো দিন পর আমাদের কথা মনে পরলো।

ছায়াঃ না শবনম দি তোমাদের কথা তো সব সময় মনে পরে। কাকিমা ফোন করে বলল তোমার আর আযান ভাইয়ার এঙ্গেজমেন্ট তাই দেরী না করে চলে এলাম।

সূর্য অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ছায়ার দিকে।

সূর্যঃ ও ছায়া!!!

শবনমঃ হ্যাঁ ও ছায়া। আর ছায়া ও হলো সূর্য ?(সূর্যকে দেখিয়ে দিয়ে)

সূর্যর নাম শুনে ছায়া একটা ঢোক গিলে ভয়ে ভয়ে সূর্যের দিকে তাকালো।

ছায়াঃ হ হায় স সূর্য ভাইয়া ?

সূর্যঃ হায় ছোটি চাশমিশ ?

সূর্যের কথায় ছায়া নাক ফুলিয়ে রেগে শবনমকে বলল,,,

ছায়াঃ দি আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। যত্তসব আজাইরা পাবলিক হুহ্ ?ছায়া চলে যায়।

সূর্য ছায়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আনমনে বলে ফেলল।

সূর্যঃ ছোটি চাশমিশ একটুও বদলায় নি জাস্ট একটু সুন্দর হয়ে গেছে।

সূর্য কথাটি বলে বোকা বনে গেল আড়চোখে তাকিয়ে দেখে আধার আর শবনম মুচকি মুচকি হাসছে।

সূর্যঃ আ আমি আসছি ( বলে কেটে পরে)

আধারঃ ছায়া আসলেই অনেক সুন্দর হয়ে গেছে তাই না।আর চশমায় ওকে আরো বেশি কিউট দেখাচ্ছে।

কথা টা বলে আধার শবনমের দিকে তাকিয়ে দেখে ও রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।

আধারঃ আব আমি তো সূর্যের জন্য বলছিলাম আর কি? (আমতা আমতা করে)

শবনমঃ বুঝি বুঝি আমি সব বুঝি?।শবনম হন হন করে ওখান থেকে চলে গেল।

আধারঃ আরে জান শোন তো আমার কথা।

আধার শবনমের পিছু পিছু চলে গেল।

রাতে,,,,

সব গেস্টরা চলে এসেছে। মায়া মেহমানদের স্বাগত জানাচ্ছে। আধার আর সূর্য এক কোনায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আধারের চোখ শুধু সিঁড়ির দিকে কখন ওর মায়াবিনী ওর সামনে আসবে।

(আধার নেভি ব্লু কালারের কোট হোয়াইট শার্ট আর হোয়াইট পেন্ট পরেছে। হাতে ব্যান্ডেজ ঘড়ি চুল গুলো স্পাইক করা সব মিলিয়ে কিলার লুক)

(সূর্য হোয়াইট কোট পিঙ্ক শার্ট হোয়াইট পেন্ট পরেছে হাতে ব্রেন্ডেড ঘড়ি চুল গুলো জেল দিয়ে স্টাইল করে পিছনে নেওয়া। আধারের থেকে কম না)

সূর্যের চোখ ও আশেপাশে শুধু ছায়াকে খুঁজছে কেন খুঁজছে এর উত্তর ওর অজানা।

হঠাৎ সিঁড়িতে তাকাতেই চোখ আটকে যায় আধারের সাথে সূর্যেরও।

(শবনম নেভি ব্লু কালারের গাউন চুল গুলো স্ট্রেইট করে পিঠে ছেড়ে দেওয়া চুলের এক সাইডে স্টার ক্রিস্টাল ক্লিপ লাগানো, হালকা মেকআপ। সাথে মেচিং জুয়েলারী )

(ছায়া পিঙ্ক কালারের গাউন চুল গুলো কার্ল করে এক সাইডে আনা, হালকা মেকআপ সাথে মেচিং জুয়েলারী।)

ছায়া আর শবনম এক সাথে নিচে নামছে। আধার এক হাত বুকে রেখে শবনমকে ইশারায় বলে,,,

আধারঃ প্রিন্সেস ?

শবনম ভেঙ্গচি কেটে এটিটিউট ভাব নিয়ে ছায়ার হাত ধরে মায়ার কাছে চলে যায়।

আধার হালকা হেসে সূর্যের দিকে তাকিয়ে দেখে ও এক ধ্যানে ছায়ার দিকে তাকিয়ে আছে, আর ছায়াও বারবার আড়চোখে সূর্যের দিকে তাকাচ্ছে।

আধার দুষ্টু হেসে সুর্যের কানে ফিসফিসিয়ে বলে,,,

আধারঃ ছায়াকে পুরো পরী লাগছে তাই না।

সূর্যঃ হুম (আনমনে)

আধারঃ আর তোকে পুরো জ্বিন লাগছে তাই না ?
সূর্যঃ হুম (আনমনে)

সূর্যের খেয়াল হলো ও কি বলেছে তাই আধারের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আধারকে বলল,,,

সূর্যঃ এটা আবার কেমন কথা জ্বিনের মতো লাগছে মানে। আমাকে কি তোর কাছে জ্বিন বলে মনে হয়। ?

আধারঃ লজিক ভাই লজিক? আমি প্রিন্স তাই শবনম আমার প্রিন্সেস তাহলে ছায়া পরী আর তুই ওর জ্বীন। ?

সূর্যঃ কথা কম বল নাহলে পাবলিকের সামনে উড়াধুড়া মাইর খাবি।

আধারঃ স্যরি স্যরি ?

আধার শবনমের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু শবনম ওকে রাগ দেখিয়ে এভয়েড করছে।

আধারঃ তোমাকে কিভাবে মানাতে হয় আমার জানা আছে মেরি জান।

হঠাৎ লাইট অফ হয়ে যায় আর স্টেজের লাইট জলে উঠে। আধার উল্টো পিঠে স্টেজে দাঁড়িয়ে আছে। শবনম বুঝার চেষ্টা করছে যে আধার কি করতে চাচ্ছে।

A sun shinse you…
You don’t me never shinese…
As their propose you…
I late you does the sky….
Oh baby come to me…
You’re only night…
Oh baby shinse love me…
And believe I….

আধার ঘুরে শবনমের কাছে আসে তারপর হাটু ভাজ করে একটা রিং এগিয়ে দিয়ে বলে,,,

আধারঃ দুই বছর আগে যে কাজটি অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছিলো আজকে তা সম্পূর্ণ করতে চাই। সো মিস শবনম চৌধুরী Will you marry me…..

শবনম মুচকি হেসে নিজের বাম হাত এগিয়ে দেয়,,,

শবনমঃ I will…

আধার শবনমের হাতে রিংটা পড়িয়ে দেয় তারপর ওর হাতে আলতো করে চুমু দেয়। সবাই হাততালি দিচ্ছে আর ওদের Congrats করছে।

সূর্য ছায়ার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে যায়। ছায়া সরে যেতে নিলে সূর্য ওর হাত শক্ত করে ধরে ফেলে। ছায়া চোখ বড় বড় করে সূর্যের দিকে তাকায় আর সুর্য ওকে চোখ মারে। ছায়া ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদোকাঁদো ফেস করে তাকায় সূর্যের দিকে।

ছায়াঃ স সূর্য ভাইয়া আ আমি….

ছায়াকে থামিয়ে দিয়ে সূর্য ওকে বলল,,,

সূর্যঃ Don’t call me vaiya ? আমি তোর কোন জনমের ভাই হই হুম। আর হ্যাঁ ছোটি চাশমিশ তোকে চশমায় অনেক কিউট লাগে কিন্তু ( চশমা খুলে নিয়ে) চশমা ছাড়া অনেক হট ?

ছায়াঃ ??( আগে তো দেখতে পারতো না আর এখন কি পাগলামো করছে)

সূর্যঃ একটা কথা সত্যি করে বলবি???

ছায়াঃ কি??

সূর্যঃ Do you still love me Chaya (কাঁপাকাপা কন্ঠে)

ছায়া সূর্যের কথায় ওর দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে চলে যেতে নেয় আর সূর্য ওর হাত ধরে আটকে নেয়।

সূর্যঃ Will you be my Shadow.হবি এই সূর্যের ছায়া? প্রমিস করছি কখনো কষ্ট দিবো না I need you I need your love.

ছায়াঃ পারবেন অতীত ভুলে আমাকে ভালবাসতে? নতুন করে আমার সাথে জীবন শুরু করতে??

সূর্যঃ বেশ পারবো শুধু তুই আমার পাশে থাকিস।

ছায়াঃ I love you ?( সূর্যকে জড়িয়ে ধরে)

সূর্যঃ I love you too ( ছায়াকে বুকে জড়িয়ে)

আধার শবনমের হাত ধরে স্টেজে যায় আর গান প্লে হয়ে যায়। আধার শবনমকে নিজের কাছে টেনে গানের সাথে লিপসিং করতে শুরু করে,,,

কি করে বলি বল আমার সাথে চল,,,
এ বুকের সুরে আরো বেশি করে তুই,,,,
আরো আরো টানে যে কথা এ মনে,,,
চুপি চুপি তোকে বলা অনেক কিছুই,,,
ও পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে,,,
ও পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে,,,
(just love the song ??)

শবনম আধারের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ফেলে।

কাছা কাছি এলে পরে,,,
কি যে হয় এ মনে বলা যায় না,,,,
আলতো করে খুব গভীরে,,,
রেখে দিতে চাই তোকে যেতে দিবো না,,,,

ও পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে,,,
পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে,,,,

সূর্য ছায়াকে নিজের কাছে এনে ওর কোমরে হাত রেখে গাইতে শুরু করলো।

তোকে ছাড়া ভাল্লাগে না,,,
কিছু আবেগের পরে তোকেই মেলে,,,
শুন্য এ মন তুই যখন,,,
সব ফেলে চলে এলি আমার কোলে,,,

ও পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে,,,
ও পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে,,,,

A sun shinse you…
You don’t me never shinese…
As their propose you….
I late you does the sky…
Oh baby come to me….
You’re only night….
Oh baby shinse love me….
And believe I…….

এখান থেকেই নতুন করে শুরু হয়,,,,

আধার❤শবনম আর সূর্য❤ছায়া এর #Madness_Love।

The End……..

Thank you for supporting me friends❤

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here