#The_Beauty_Of_Love,05,06
#Samayra_Mihu (Nafisa)
#Part_5
.
.
.
সকালে উঠে আমি নাস্তা করতে বসেছি,,আমাকে মামনি নাস্তা দিয়ে রুমে গেলো কি একটা কাজে,,,আমি মনের সুখে আলু পরোটা খাচ্ছি তখনি দেখলাম উনি এসে বসলো নাস্তা করতে,,, হঠাৎ দেখি উনি কফি তে কি যেনো মিশাচ্ছে,,ভালো করে তাকিয়ে দেখি নবল দিচ্ছে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ,,, কাল কি ঝাল কফি খেয়ে আজ লবণ কফি খেতে ইচ্ছা করেছে নাকি আজব লোক তো,, অনেক লবণ দিয়ে আমার দিকে তাকালো আমি ওনার থেকে চোখ সরিয়ে আবার খাওয়াই মন দিলাম,,, কিন্তু অ্যার চোঁখে তাকিয়ে দেখি উনি উঠে আমার দিকে এগিয়ে আসছে,, একি উনি আমার দিকে আসছে কেনো আমার কেনো জানি ভয় লাগছে উনি কফি টা নিয়ে আসছে কেনো আমার দিকে,,, এক কাজ করি আমি রুমে চলে যায়,,এই ভেবে উঠে যেতে নিবো তখনি উনি আমার হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো,,আমি ইনোসেন্ট ফেস করে ওনার দিকে তাকালাম,,উনি মুচকি হেসে বলে,,,
“খাও,,,
“মানে (অবাক হয়ে তাকিয়ে)
“বুঝো নি খাও এটা,,(ধমক দিয়ে)
“না আমি খাবো না (এই বলে আবার চলে যেতে নিলে আবার উনি আমার হাত ধরে বসিয়ে দেয় কিন্তু এবার হাত ধরেই থাকে ছারে না)
“খাও বলছি(রেগে)
“পাগল আপনি এতো লবণ দিয়ে কফি কে খায় হ্যাঁ,,(একটু রেগেই বললাম)
“কাল আমাকে ঝাল খাওয়ানোর সময় মনে ছিলো না?তুমি জানো কাল আমার কি অবস্থা হয়েছিল ,,তুমি এখন এই মুহূর্তে এটা খাবে নয় তো আমার থেকে খারাপ কেও হবে না,,(অনেক রেগে আমার হাত শক্ত করে ধরে অনেক বেথা পাচ্ছি)
আমি ভয় পেয়ে কফি টা নি যানি না খেলে ছাড়বে না,,তাই কফি টা মুখে ধরে খেতে নিচ্ছিলাম তখনি উনি একটু ঠেলে দেয় আর একটু বেশি ই মুখে ঢুকে যায়,,ছি আমি ওনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রুমে চলে গেলাম ওয়াশ রুমে গিয়ে বোমি করে দিলাম,,অনেক বাজে মনে হচ্ছে বিষ,,,,অনেক রাগ উঠছে ওনার ওপর ,,দেখে নিবো আপনাকে ,,
এই দিকে মাহির হেসে অফিসে চলে যায়,,,এমন করেই ১০-১২ দিন কেটে যায়,, তবে আমাদের ঝগড়া শেষ হয় না যখন যে সুযোগ পায় তার বারোটা বাজিয়ে দেয়,,,,আজ থেকে আমার কলেজ যাওয়া আবার শুরু হবে,,,মামনির সঙ্গে শপিং করতে গিয়ে আমার সব দরকারি জিনিস নিয়ে নিছি,, কলেজ ড্রেস, বই , আরো অনেক ড্রেস মামনি কিনে দেয় যদিও আমি নিতে চায়নি,,,,আজ আমি অনেক খুশি আবার কলেজ যাবো আমার ফ্রেন্ড দের দেখবো,, সকালে উঠে আমি একেবারে কলেজের জন্যে রেডি হয়ে নিচে এলাম,, দেখি উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি গিয়ে বসে পরলাম নাস্তা করতে,,,তখন মামনি ওনাকে বলে,,,
“মাহির তুই অফিসে যাওয়ার সময় মিহু কে কলেজে নামিয়ে দিবি,,
“আমি কেনো আমার দেরি হবে আম্মু,,আমি ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি নামিয়ে দিবে,,,(তখন আমি বলে উঠি)
“মামনি আমি চলে যেতে পারবো লাগবে না কাওকে,,,(ওনার সঙ্গে যাওয়ার থেকে আমার একা যাওয়া অনেক ভালো হুহহ)
“কোনো কথা না মাহির তুই নিয়ে যাবি ব্যাস আর কলেজ শেষে ড্রাইভার পাঠিয়ে দিবো তোর কাজ না থাকলে তুই নিয়ে আসবি,,,(মামনি করা গলায় বললো)
উনি আর আমি আর কিছুই বলতে পারলাম না উনি উঠে বাইরে যাওয়ার সময় বলে “আমি বাইরে আছি তাড়াতাড়ি আসো,,,,,আমিও আর দেরি না করে চলে গেলাম,,,গাড়ি তে উঠে যায় আমি উনি ও উঠে ড্রাইভ করতে লাগে কেও কাওকে কথা বলি না আর,,,উনি আমাকে কলেজের কাছে নামিয়ে দিলো আমি বাই না বলেই চলে গেলাম তখন দেখি কলেজের গেটের কাছে রোদ নিপু মাইশা আয়ান গল্প করছে আমি দৌড়ে গিয়ে রোদ কে জড়িয়ে ধরি,,,, এই দিকে মাহির,,,
“আজব মেয়ে তো কলেজে ড্রপ করে দিলাম তো থ্যাংক ইউ দূরে থাক বাই ও বললো না,,,(মিহুর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে,,তখনি দেখে মিহু একটা ছেলে কে জড়িয়ে ধরে,,,দেখে কেনো যানি মাহিরের ভালো লাগলো না,,,সেখান থেকে যোরে রাগী চালিয়ে চলে গেলো,,)
“কামন আছিস রোদ আর তোরা কামন আছিস ?
রোদ নিপু মাইশা আয়ন আমাকে দেখে ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে,,,
” কি হলো এমন করে তাকিয়ে আছিস কেনো যেনো আমি ভুত,,(রেগে)
“তুই এখানে কি করে ? তুই কি আবার তোর মামীর বাড়ি ফিরেছিস ? তোর মামী তোকে বাড়িতে ঢুকতে দিল? আবার কলেজে ও আসতে দিলো তোকে?(একনাগাড়ে এত্তো গুলা প্রশ্ন করে বসলো নিপু)
“আল্লাহ তুই এতো প্রশ্ন করিস কেমনে বলতো,,
“প্রশ্ন করা টা স্বাভাবিক নয় কি,,(মাইশা)
“সব বলবো তার আগে আমার মান্নু কই সেটা বল ওকে তোদের মাঝে দেখতে পাচ্ছি না কেনো,?
” ওকে এখানে পাবি তুই দেখ কোনো নিরিবিলি জায়গাই গল্পের বই নিয়ে বসে আছে নয়তো লাইব্রেরী তে বসে আছে,,,(রোদ )
“হ্যাঁ আগে তুই যোর করে ওকে আমাদের কাছে বসিয়ে রাখতি তবুও কম কথা বলতো কিন্তু তুই যাওয়ার পর আমাদের সঙ্গে তেমন কোথায় বলে না আর না আমাদের কাছে এসে বসে,,,(আয়ান)
“ওকে আমি এসে গেছি ওকে নিয়ে আসছি তোরা আমাদের বসার জায়গা তে মানে বড়ো গাছ টার নিচে বস আমি ওকে খুঁজে নিয়ে আসছি,,,
এই বলে আমি চলে গেলাম সোজা লাইব্রেরী তে,, কিন্তু লাইব্রেরী নেই,,,এখানে নেই তাহলে একটা জায়গাই ওকে পাবো,, ভেবেই দৌড়ে সেদিকে গেলাম ,,কলেজের পাশে একটা বাগান আছে অনেক ফুলের গাছ লাগানো এই দিকে কেও আসে না ,,কারণ বাগানের ভিতরে ঢুকা বারণ সবাই ফুল ছিড়ে নিবে তাই,,,কিন্তু মান্নু ঠিক ই আসে লুকিয়ে ওকে কেও আটকাতে পারে না ,,আর আটকাবেই কি করে ? ওকে তো কেও দেখতেই পায় না ,,আমি গিয়ে ওকে ডাকলাম,,
“মান্নু মান্নু!!!
আমার আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে,,,
“এসেছিস তুই,, তুই জানিস আমি কত্তো একা হয়ে গেছিলাম,,
“হুমম তাই তো এসেছি আয় ওরা সব বসে আছে আমার জন্যে,,
“হুম কিন্তু তুই কই ছিলি এতো দিন ,,
“সব বলবো চল আমার সঙ্গে,,
এই বলে ওকে টেনে নিয়ে যেতে লাগলাম,,,, এই টা হচ্ছে অধরা আমি মান্নু বলে ডাকি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড,, দেখতে শ্যামলা মায়াবী সব রকমের গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে “হুমায়ন আহমেদ” মান্নুর প্রিয় লেখক,,, আড্ডা দেওয়া বেশি কথা বলা বেশি হাসি মান্নুর মধ্যে নেই,, মান্নু একা থাকতে বেশি পছন্দ করে আর বউ পড়তে,, একমাত্র আমি ই যার সঙ্গে মান্নু একটু বেশি কথা বলে হাসে তবে সবার সামনে না যখন মান্নু আমি একা থাকি তখন,,,,,,,,,, রোদ ও আমার আরেক বেস্টু অনেক ভালো ছেলে দেখতেও মাশাআল্লাহ,, কাওকে কখনো ভয় পায় না কিন্তু রোদের দুর্বলতা একটাই আর সেটা হলো অধরা মানে আমার মান্নু,,,অনেক ভালোবাসে অধরা কে রোদ কিন্তু এখনও বলতে পারে নি রোদের ভয় হয় যদি অধরা রাগ করে ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট হয়ে দেয় এটাই,,,,,,,,,,,, মাইশা আয়ান এরা হচ্ছে কলেজের ললিপপ লাভার একে অপরের সঙ্গে সব সময় চিপকে থাকবে,,ওদের ভালোবাসা অনেক দুজনে অনেক ঝগরা করে কিন্তু আলাদা হয়ে যায় না,,,,,,,,,,,,,, নিপু হচ্ছে কলেজের লেডি ডন কেও ওকে প্রপোজ করলে এমন মাইর দেয় যে পরে আর কোনো ছেলে ওর কাছে আসে না,,,,,,
আমি অধরা ওদের কাছে গিয়ে বসলাম তখন মাইশা বলে,,
“এখন বল কি হয়েছে আর তুই তো রোহানের সঙ্গে পালিয়ে গেছিলিস ,,কিন্তু আমি দুই দিন আগে রোহান কে অন্য একটা মেয়ের সঙ্গে দেখলাম,,,,,
” মাইশা তুমি চুপ করো মিহু বলছে,,,( আয়ান)
আমি ওদের একে একে সব ঘটনা খুলে বললাম প্রথম দিন থেকে যা যা হয়েছে,,,,,আমার কথা শুনে হা তাকিয়ে আছে সবাই,,,আমি মাথা নিচু করে নিলাম,,,
“লাইক সেরিয়াসলী মিহু ওই মাহির চৌধূরী তোকে এক বছরের জন্যে বিয়ে করেছে তাও যোর করে,,,(নিপু)
“আর তুই এক বছর পর চলে যাবি ইউএসএ? ( অধরা মন খারাপ করে বললো)
“হুমম,, আমার এখানে কেও নেই আম্মু আব্বু তো ছোটো তেই ছেরে চলে গেছে আর একটা আপু ছিলো সেও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে ,, আর একজন কে ভালোবাসলাম সেও একটা কাপুরুষ,,, আর মামী আমাকে কখনো মেনে নিবে না আমার জন্যে মামা কে কথা শুনতে হোক এটা আমি চায় না তাই একটা যখন সুযোগ পেয়েছি আর হাত ছাড়া করতে চায় না ,,, তোরা তো জানিস আমার বাইরে পড়াশোনা করা র কতো ইচ্ছা,,,,,
আমার কথা শুনে ওরা বুঝে আমার অবস্থা,,,কিছুক্ষন পরে আমরা ক্লাসে চলে গেলাম,,,,
এইদিকে মাহির অফিসে এসে যেনো কাজে মন দিতে পারছে না তার মাথায় একটা কোথায় ঘুরছে আর সেটা হলো,,,
“মিহু তখন ওই ছেলে টাকে জড়িয়ে ধরলো কেনো? কে হয় ওই ছেলে মিহুর? রোহান কে তো আমি চিনি ওটা তো রোহান ছিলো না,,,,,,,উপস আমি কেনো ভাবছি ওই ফাজিল মেয়ের কথা ,,এক বছর পর এমনি তেই চলে যাবে যা করছে করুন আই ডোন্ট কেয়ার,,,,
নিজে নিজে এই বলে মাহির আবার নিজেকে বুঝিয়ে কাজে মন দেয়,,,,
সব ক্লাস করে বাইরে বের হলাম আমরা,, কলেজের বাইরে এসে রোদ কে বলি,,
“রোদ তুই মান্নু কে বাড়ি তে দিয়ে আয়,, তুই তো জানিস এই মেয়ে কতো টা আনমনা হয়ে চলে,,,কি এতো ভাবে কে যানে মনে হচ্ছে বাড়িতে চার পাঁচ টা বেবি আছে জামাই আছে তাদের নিয়ে ভাবছে,,,,,,
“আমি একা যেতে পারবো তুই টেনশন করিস না,,,(অধরা)
“রোদ তুই যা ওর সঙ্গে,,,
আমার কথা শুনে দুজনে চলে গেলো ,, আয়ান মাইশা ও আমাকে বাই বলে চলে গেলো আমি দাড়িয়ে আছি গাড়ির জন্য কারন মামনি বলে দিয়েছে ড্রাইভার নইতো চৌধুরী সাহেব এসে নিয়ে যাবে,,,একটু দাড়িয়ে থাকার পর একটা গাড়ি এসে আমার কাছে থামলো আমি তাকিয়ে দেখি এক বয়স্কো লোক এসে আমাকে বললেন,,
“ম্যাম চলুন স্যার গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে,,,,,
“আরে কাকা আমি আপনার মেয়ের মতো ম্যাম বলতে হবে না আর আপনি ও বলতে হবে না তুমি করে বলবেনা ,,আর ,,আমাকে মিহু নইতো মামনি বলে ডাকবেন,,,
“কিন্তু স্যার,,,(ওনাকে থামিয়ে)
“কেও কিছু বলবে না আমাকে মিহু বলেই ডাকবেন,,, ম্যাম ডাক আমার জন্য না,,, আচ্ছা চলুন যাওয়া যাক আমার অনেক খিদা লাগছে,,,
“ঠিক আছে মামনি চলো,,,,,,
তারপর বাড়ি তে চলে এলাম এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে মামনির সঙ্গে গল্পে মেতে উঠলাম,,,,অনেক ক্ষন গল্প করে মামনি নিজের রুমে চলে গেলো,,আমার একা একা ভালো লাগছিলো না তাই ওপরে চলে এলাম এসে দেখি বেডের পাশের টেবিলে একটা ল্যাপটপ আছে,,ওটা নিয়ে কার্টুন দেখতে লাগলাম,,, কিছু খন কার্টুন দেখে আর ভালো লাগছে না ,,,ভূতের মুভি দেখা যাক,,কিন্তু ভূতের মুভি দেখবো আর কিছু খাবো না টা কি করে হয়,,,দৌড়ে নীচে গিয়ে একটা আইস ক্রিম বক্স চকোলেট আর পপক্রণ তৈরি করে নিয়ে এলাম ,,, রুমের দরজা টা একটু চেপে লাইট অফ করে দিলাম এখন দেখবো,,,,,তারপর “1920 Evil returned” মুভি টা অন করে দেখতে লাগলাম,,, আইস ক্রিম খাচ্ছি আর দেখছি,,,একে একে আইস ক্রিম পপক্রন শেষ করে দিলাম ,,, এবার অনেক ভয় করছে শেষ দিক একটু ভয়ানক তবুও দেখতে ছারি না,,,,চকোলেট এর খোসা ছাড়িয়ে চকোলেট খেতে লাগলাম,,,,
এই দিকে মাহির অফিস শেষে বাড়ি এসে রুমে ঢুকে ,,রুমে ঢুকে তো অবাক পুরো রুম অন্ধকার,,, অন্ধকারে কিছু দেখাও যাচ্ছে না,, ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বেলে ,,রুমের লাইট এর সুইচ অন করে আর খুব দ্রুত কেও একজন এসে মাহির কে জড়িয়ে ধরে,,,,,,,মাহির তো অবাক তার থেকে বেশি অবাক রুমের অবস্থা দেখে পুরো রুমে চকোলেটের খোসা আইস ক্রিম বক্স পপক্রণে একদম নোংরা হয়ে আছে,,,,এটা দেখে মাহিরের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,,কারণ মাহির নোংরা মোটেও পছন্দ করে না,,,
আমি মুভি দেখছিলাম দেখছিলাম অনেক ভয় করছে তখন দরজা খোলার আওয়াজ পায় কলিজা কেপে উঠে,,,তখনি হঠাৎ হালকা আলো আসে আমি ভয়ে উঠে দাঁড়ায়,,,,,সত্যি সত্যি ভুত চলে এলো নাকি আল্লাহ বাঁচাও প্লিজ,,,,তখনি রুমের লাইট জ্বলে উঠে ,,আমি তাকিয়ে দেখি উনি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি ওনাকে,,,,,,,,,
চলবে?
#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_6
.
.
.
মাহির তো অবাক তার থেকে বেশি অবাক রুমের অবস্থা দেখে পুরো রুমে চকোলেটের খোসা আইস ক্রিম বক্স পপক্রণে একদম নোংরা হয়ে আছে,,,,এটা দেখে মাহিরের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,,কারণ মাহির নোংরা মোটেও পছন্দ করে না,,,
আমি মুভি দেখছিলাম দেখছিলাম অনেক ভয় করছে তখন দরজা খোলার আওয়াজ পায় কলিজা কেপে উঠে,,,তখনি হঠাৎ হালকা আলো আসে আমি ভয়ে উঠে দাঁড়ায়,,,,,সত্যি সত্যি ভুত চলে এলো নাকি আল্লাহ বাঁচাও প্লিজ,,,,তখনি রুমের লাইট জ্বলে উঠে ,,আমি তাকিয়ে দেখি উনি দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি ওনাকে,,,,,,,,,
মাহির আমাকে ছাড়িয়ে তার সামনে দার করায় আমি নিচু দিকে মুখ করে আছি,,, মাহির পুরো রুম টা দেখছে,, বেডের ওপরে ল্যাপটপে মুভি চলছে ,, পপক্রনে পুরো রুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ,,রেগে মাহির বলে উঠে,,,
“এইসব কি মিহু,,(রেগে )
আমিও দেখলাম ভালো করে সত্যি রুমের নাজেহাল,,আমি ভয়ে ভয়ে ওনার দিকে তাকালাম উনি আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে,,,
“আল্লাহ আজ তো আমি গেলাম এই ছেলে আমাকে মেরেই ফেলবে,,,(আস্তে আস্তে বললাম)
“কি বিড়বিড় করছো এসব কি করেছো বলো,,,
“আমার একা একা ভালো লাগছিলো না তাই ভূতের মুভি দেখছিলাম এমন টা কখন হলো আমি জানি না সত্যি আমি তো সব খেয়ে ফেলেছিলাম,,,,তাহলে এগুলা কি করে হলো ওহ আল্লাহ গো ভূতে করলো না তো,,আম্মু বাঁচাও,,,(নিজে নিজে এসব বলে ভয়ে ওনার হাত ধরে নিলাম শক্ত করে)
“শাট আপ মিহু! ভুত বলে কিছু হয় না আর এতোই যখন ভয় তো দেখলা কেনো স্টুপিড,,,,(রেগে)
আমি চুপ করে আছি আবার উনি বলে উঠে,,
“রুম পরিস্কার করো এখনি,,,
“ঠিক আছে আমি কাজের মেয়ে কে বলে দিচ্ছি পরিষ্কার করে দিবে,,,(এই বলে আমি চলে যেতে নিচ্ছিলাম তখনি উনি আমার হাত ধরে নেই,, আমি হাতের দিকে একবার তাকিয়ে ওনার দিকে প্রশ্ন সূচক চোখে তাকালাম)
“পরিষ্কার তুমি করবে মিসেস বকবক,,,
“মানে আমি কেনো করবো বাড়িতে এতো কাজের লোক রেখেছেন কি করতে তাহলে,,,,(অবাক হয়ে)
“নোংরা তুমি করেছো তাই পরিষ্কার ও তুমি করবে বুঝেছো,,
“আমি পারবো না এসব করতে হাহ,,
“করতে তোমাকে হবেই নয়তো এমন শাস্তি দিবো তুমি বুলতেও পারবে না,,,
“ক..কি ক…করবেন আপনি,,
মাহির আমাকে ধরে অনেক কাছে টেনে নিয়ে বলে,,
“দেখবে কি করবো,,(মুখ এগিয়ে)
আমি ভয় পেয়ে ওনাকে দূরে সরিয়ে বলি,,,
“আমি করবো এখনি করছি পরিষ্কার এই সব আমার বা হাতের খেল,, টুকুস করে,, করে দিবো হিহিহিহি,,,
“হ্যাঁ তো টুকুস করেই করে দাও যাও,,,
এই বলে উনি সোফায় বসে পরলো আমি আমার কাজে লেগে পরলাম ওরনা কোমরে বেঁধে,,, বাপরে এই খোচ্ছর এতো বজ্জাত কেন আমাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে আব্বে খচ্চর আমি তোর বউ লাগি বউ,, বউ কেও এমন করে কাজ করায়,,, আর করাবে না কেনো বিয়ে টা তো এক বছরের জন্য উনি তো আর আমাকে ভালোবাসে বিয়ে করে নি আর না বউ বলে মানে,,,তাতে আমার কি আমি তো একবছর পর চলে যাবো,,,যা ইচ্ছা করবে হাহ,,, অনেক ক্ষন ধরে সব পরিষ্কার করে নিলাম,,,তারপর ঝাড়ু টা নিয়ে ওনার সামনে গিয়ে পজ নিয়ে দাড়ালাম ঝাড়ু টা কাধে নিয়ে,,,
“কাজ হয়ে গেছে ,,
উনি ফোন টিপছিল আমার কথা শুনে আমার দিকে তাকালো,,অনেক ক্ষন ধরে তাকিয়ে থেকে ফোন টা নিয়ে একটা ছবি তুলে নিলো আমার,,,
“এটা কি হলো,,(অবাক হয়ে)
“তোমাকে একদম কাজের বেটি মনে হচ্ছে তাই ছবি তুলে নিলাম,,, হাহা কি লুক ,,(উনি হেসে উঠলো)
আমি ওনার হাসি দেখে মুগ্ধ কি সুন্দর হাসি,,এক ধ্যানে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি উনি সেটা বুঝতে পেরে হাসি থামিয়ে আবার গোমড়া মুখ করে নিলো,,,এটা করায় অনেক বিরক্ত লাগলো আমার,, একটু হাসলে কি এমন হবে চাল হাট ,,এসব ভেবে চলে গেলাম ওয়াশ রুমে,,ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে নিচে চলে এলাম মামনি রান্না করছে রাতের জন্যে আমিও ওনাকে সাহায্য করতে লাগলাম আর গল্প তো আছেই,,,আমরা এক মাত্র শাশুড়ি বউ গল্প ই শেষ হয় না ,,,,সব রান্না করে ডায়নিং টেবিলে সাজিয়ে রাখলাম আমি,,, ,,
“মিহু যা মাহির কে ডেকে আন,,, ও কিছু খায়নি এসে,,,
“ঠিক আছে মামনি,,,
এই বলে ওনাকে ডাকতে চলে গেলাম রুমে গিয়ে দেখি রুমে নেই উনি কই গেলো,,,বারান্দা থেকে কথা বলার আওয়াজ আসছে,, তাই ওই দিকে গেলাম,,,আমি দাড়িয়ে আছি উনি কথা বলছে তাই কিছু বলতে পারছি না কিন্তু কথার ধরন দেখে মনে হলো কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলছে তবে একটু রেগে কথা বলছে,,,,,হবে হইতো গার্ল ফ্রেন্ড টাল ফ্রেন্ড বড়ো লোকের ব্যাপার হাজার টা প্রেমিকা থাকতেই পারে বাপু আমার কি ,,,,, কথা শেষ হলে পিছনে ফিরে উনি আমাকে দেখে ব্রু কুচকে তাকিয়ে বললো,,
“তুমি এখানে কি করছো আর কারো কথা লুকিয়ে শুনা ব্যাড ম্যান্নারস যানো না,,, সন্দেহ করছো নাকি গোয়েন্দা গিরি করছো যে তোমার স্বামী কারো সঙ্গে প্রেম করছে কি না,, এমন টা ভুলেও করবে না আমার ওপর অধিকার খাটাতে আসবে না একদম,,,(এই বলে উনি চলে যেতে নিলো)
আমি তো অবাক কই থেকে কই নিয়ে গেলো উনি এটা আমি তো এসব কিছুই ভাবি নি ,,আমার অনেক রাগ উঠে গেলো তাই ওনাকে বলে উঠলাম,,,
“ওহ হেল্লো বেশি বুঝা বড়োলোক,,,
“হোয়াট কি বলতে,,,(ওনাকে থামিয়ে)
“আমার না আপনার ওপর কোনো অধিকার খাটানোর দরকার নেই আর না আমি আপনাকে সন্দেহ করছি,,, আপনার ওপর বউ এর অধিকার খাটাতে আমার বয়েই গেছে,,,,আপনি হাজার টা প্রেম করেন আমার কিছু যায় আসে না,,,আপনিও আমাকে স্বার্থের জন্যে বিয়ে করেছেন আর আমিও আমার স্বার্থের জন্যে এখানে পরে আছি আর কিছুই না,,, আর হ্যাঁ আমি আপনার কথা সুনার জন্য এখানে আসিনি মামনি খেতে ডেকেছে সেটাই বলতে এসেছিলাম ,, খায়ার ইচ্ছে থাকলে খাবেন আসুন,,, এই বলে আমি রুম থেকে বের হয়ে যায় তবে আর নিচে যায় নি খেতে ছাদে চলে যায়,,,, কেনো জানি ওনার কথা গুলা আমার অনেক খারাপ লাগছে ওনাকে বুঝতে না দিলেও ওনার প্রত্যেক টা কথা সুচের কতো বিধেছে মনে অনেক কান্না করতে ইচ্ছা করছে ,, কিন্তু না আমি কান্না করবো না আমাকে শক্ত হতেই হবে ,,,আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলাম ছাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে,,,,,
এই দিকে মাহির মিহুর সব কথা ভালো করে শুনে চুপ করে দাড়িয়ে আছে মাহিরের মনে হচ্ছে এতো টা কথা শুনানো ঠিক হয় নি তার কার রাগ কার ওপর দিলাম,,,মন টা খারাপ হয়ে যায় মাহিরের,, কিছু খন পর নিচে ডিনার করতে এসে আমাকে না দেখে মামনি কে আস্ক করে,,
“আম্মু মিহু কই?
” তোকেই তো ডাকতে পাঠালাম তোর সঙ্গে এলো না তো,,,
“ওহ আসবে হইতো কিছু খন পর তুমি খেয়ে নাও আম্মু,,,
এই বলে মামনি খেতে লাগে আর মাহির খাবার নিয়ে নাড়াচাড়া করছে বার বার সিড়ির দিকে তাকাচ্ছে ,,,,মাহিরের গলা দিয়ে যেনো খাবার নামছে না,,,
“মাহির মিহু কই এখনও আসছে না কেনো?
“আম্মু তুমি রুমে চলে যাও আমি দেখছি,,,, (মাহিরের কথা শুনে মামনি চলে যায়)
মাহির একটা প্লেটে খাবার নিয়ে ওপরে চলে যায়,,গিয়ে দেখে রুমে নেই মিহু খাবার টা রেখে ছাদে চলে আসে মাহির,,,এসে দেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আমি,,,,এসেই আমার পাশে দাড়িয়ে আস্ক করে,,,
“নিচে এলে না কেনো?(গম্ভীর গলায়)
আমি ওনার দিকে একবার তাকিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকালাম,,,
চলবে?