#The_Beauty_Of_Love,22,23
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_22
.
.
“হুমম আমি আজি নিউ অ্যাডমিশন হলাম,,আমি মিহু অনার্স প্রথম বর্ষে,,,,,(মুচকি হেসে)
“ওহ তাহলে তো আমরা ফ্রেন্ড হতে পারি আচ্ছা আমরা তুই করে বলবো ওকে,,,
“ওকে,, কিন্তু তুমি থুক্কু তুই সুইসাইড কেনো করতে চায় ছিশ?
“সে অনেক কাহিনী আয় তোকে বলি,,আমি আজ ক্লাস করতে যাইনি ভালো লাগছে না,,,চল কোথাও গিয়ে বসে বলি,,,,
এই বলে তিথি মিহুর হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো,,,অনেক মিশুক তিথি সবার সঙ্গে একটু তেই পরিচিত হয়ে যায় আপন করে নেই,,,আর মিহু ও তাই,,,, মিহুর মন ভালো নেই তাই এতো চুপ চাপ,,,,,,
মিহু তিথি ভার্সিটির মাঠে ঘাসে বসে পড়ে,,,,দুই জনে ভালো করে পরিচিত হলে মিহু আবার আস্ক করলো,,,
“এখন বল তুই সুইসাইড করতে কেনো চায়ছিস,, সমস্যা টা কি?
“কি বলবো আর দুঃখের কথা,,(নাটকের ভঙ্গি তে বললো তিথি)
“ঢং করিস না বল তো,,(তিথির হাতে আস্তে করে এক থাপ্পর মেরে)
“হিহিহিহি,,আচ্ছা বলছি,,, আব্বু আম্মু আমার বিয়ে দিতে চায়ছে,,কিন্তু এখন আমি বিয়ে করতে চায় না,,তুই বল আমি তো মাত্র ভার্সিটি লাইফে পা রাখলাম আর এখনি বিয়ে করে নিবো,,আমি কখনো বিয়ে করবো না দরকার হলে মরে যাবো,,তবুও করবো না,,,,
“তুই আন্টি আংকেল কে বুঝা যে তুই বিয়ে করতে পারবি না এখন,,,
“আরে বলে না গরীবের নুন আনতে পান্তা ফুরায়,,,ঠিক তেমন ই মিডিল ক্লাস ফ্যামিলি র মেয়ে আমি আমার আম্মুর ধারণা মেয়েদের 18-20 বয়সেই বিয়ে করা উচিত,,পরে আর কেও বিয়ে করবে না আর আমার আব্বু আম্মুর এতো টাকা ও নেই যে পরে ভালো দেখে বিয়ে দিবে,,এখন নাকি ভালো ঘরে একটা সমন্ধ এসেছে,,ওরা কিছু নিবেও না,, তাই আমার আব্বু আম্মু ক্ষেপেছে আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য,,,তাই আর কি সুইসাইড করছিলাম,,,,(মন খারাপ করে বললো কথা গুলা তিথি কিন্তু মুখে একটু হাসি লেগেই আছে)
“ওহ বুঝেছি আচ্ছা আমাকে তোর আব্বু আম্মুর সঙ্গে দেখা করাবি?
“আচ্ছা করাবো, কিন্তু কেনো?
“গেলেই দেখবি,,,,
তিথি মিহু আরো কথা বলে,,ক্লাস ও শেষ হয়ে গেছে,,ক্লাস থেকে সবাই বের হচ্ছে দেখলাম,,এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখে রোদ অধরা মাইশা আয়ান ও আসছে কিন্তু নিপু কে দেখলাম না নিপু কই?,, মিহু দৌড়ে ওদের সামনে গেলো,, মিহু কে দেখে ওরা আরেক দফা অবাক হলো কারণ ওরা ভেবেছিল মিহু ইউএসএ চলে গেছে,,তিন মাস খবর পায়নি মিহুর,,মাহির কাওকে জানাই নি মিহুর অ্যাকসিডেন্ট এর কথা,,,অধরা আবির কে দিয়ে মাহির কে আস্ক করায় ছিলো আবির সব জানতো মিহুর সঙ্গে কি হয়েছে কিন্তু অধরা কে বলেনি,,, অধরা কে বলেছে মিহু চলে গেছে,,তাই অধরা ভেবেছে ইউএসএ চলে গেছে মিহু,,,,,অধরা মিহু কে দেখে জড়িয়ে ধরে কেডেই দিলো,,,,, মিহু অনেক কষ্টে ওদের সব বুঝালো,,, অ্যাকসিডেন্ট এর খবর টাও দিলো,,,,গত তিন মাসে যা যা হয়েছে সব,,,সব টা শুনে রোদ অধরা মাইশা আয়ান অবাক,,,তারা ভাবতেও পারেনি মিহুর সঙ্গে এমন টা হবে,,,,,এতো খন তিথি দূরেই দাড়িয়ে ছিলো,,,, মিহু ওদের সঙ্গে কথা শেষ করে তিথির কাছে নিয়ে যাই সবাই কে,,,তারপর পরিচয় করিয়ে দেই,, বাকি দের সঙ্গেও অনেক ভালো ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যাই তিথির,,,,কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে সবাই নিজের নিজের বাড়িতে চলে যায়,,, মিহু ও হেঁটে যাচ্ছিলো,, হঠাৎ ই তার সামনে একটা গাড়ি থামলো,, মিহু তো ভয় পেয়ে গেছে প্রথমে,,,,গাড়ির লোক টা কাচ নামিয়ে দেই এর ফলে মিহু দেখে এটা মাহির,,,মাহির কে দেখে মিহু পাস কাটিয়ে চলে যেতে চায় ছিলো তার আগেই মাহির গাড়ি থেকে নেমে মিহুর হাত ধরে ফেলে,,, মিহু রেগে বলে,,
“সমস্যা কি আপনার লজ্জা করে না একটা অচেনা মেয়ের হাত ধরেন তাও পাবলিক প্লেস এ,,,হাত ছাড়ুন নইতো আমি চিৎকার করে লোক যোরো করবো,,,,,,(হাত চুরানোর চেষ্টা করে)
“ভুলে কেনো যাও জান পাখি তুমি আমার বউ হও এখনও ডিভোর্স হইনি আমাদের,,,,
“সে টা আপনি জানেন আর আমি জানি পাবলিক তো আর জানে না,,,(মুচকি হেসে বললো মিহু)
“হ্যাঁ জানি আমার বউ টা অনেক চালাক তাই তো আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপার সঙ্গে নিয়ে ঘুরছি,,,,
মাহিরের কোথায় চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো মিহু,, পাগল এই লোক,, হ্যাঁ পাগল ই তো পাগল না হলে এমন কাজ করতো না,,,, মিহু রেগে বললো..
“কি দরকার বলুন আমাকে বাড়িতে যেতে হবে,,,
“আম্মু তোমায় দেখতে চায়ছে,, তাই তুমি এখন আমার সঙ্গে যাবে আম্মুর সঙ্গে দেখা করতে,,,যদিও আমি বলেছিলাম কি দরকার বাড়ি তে ডাকার জার ইচ্ছা হবে আসবে না হলে নাই,,,(ভাব নিয়ে বললো মাহির)
মাহিরের কথা শুনে মিহুর রাগ যেনো আরো বেড়ে গেলো,,,, মিহু নিজে নিজে বলে,,
” শেষের কথা গুলার মানে কি? কি বলতে চায় ছে উনি,,, উনি আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে চায় না মামনি বলেছেন তাই বাধ্য হয়ে নিয়ে যাচ্ছে,,,,,যাবো না তোর বাড়ি তে কি করবি,,,ওহহ হো কিছুই তো করবি না তুই,,আমি গেলেই কি আর না গেলেই কি তোর তো কোনো কিছু যাই আসে না,,,জেরিন আছে যে তোর থাক তুই জেরিন কে নিয়ে,,আমি যাবো না,,কিন্তু মামনি কেও তো অনেক দিন দেখিনি,,না না যাই একবার মামনির সঙ্গে দেখা করে চলে আসবো,,,(মনে মনে ভাবল মিহু)
“ওহ ভাবনার রানী কি এতো ভাবছো,, যাবে কি যাবে না বলো আমার অনেক কাজ আছে,,
মিহু মাহিরের কোথায় কোনো উত্তর দিলো না হাত ঝাকি মেরে ছাড়িয়ে নিয়ে,, গাড়ি তে বসে পরলো,,,মাহির কিল্লার একটা হাসি দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাতে লাগলো,,,,,গাড়ি চলছে তার আপন মনে,,, মিহু সেই অ্যাকসিডেন্ট এর পর আজ আবার মাহিরের গাড়ি তে উঠলো,,সেই ভয় টা এখনও রয়ে গেছে মিহুর মনে,,গাড়ি যতো এগোচ্ছে ভয় যেনো মিহু কে জেকে ধরছে,,,,মাহির একটু যোরে গাড়ি চালাতে লাগে এতে মিহু আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়,,ভয়ে পুরো শরীর কাপছে গামছে মিহু,,,মাহিরের হাত শক্ত করে ধরে বলে,,,
“প্লিজ আস্তে গাড়ি চালান আমার খুব ভয় করছে,,,,
মাহির মিহুর দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি মিহু ভয়ে অবস্থা খারাপ,,গাড়ি টা পাসে দার করিয়ে,, মিহু কে পানি দেই মাহির,, মিহু পানি পেয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নেই,,,মাহির কিছু কে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
“এখনও ভয় পাও,,,(জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন)
মিহু কিছু বললো না কিছুক্ষন পরে ঠিক হলে বুঝতে পারে মিহু মাহিরের বুকে মাথা রেখে আছে,,তাই তাড়াতাড়ি সরিয়ে নিয়ে ভালো করে বসে,,,মাহির ও আর কিছু বলে না গাড়ি চালাতে লাগে,,,,কিছু ক্ষণের মধ্যে মাহিরের বাড়ি চলে আসে ওরা,,,, মিহু গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে ভিতরে চলে যায় মামনির রুমে,,,মামনি রুমে কি করছিলো তখনি মিহু গিয়ে পিছন থেকে হাত দিয়ে চোঁখ ঢেকে ফেলে,,,কিন্তু মামনি চিনে ফেলে এটা মিহু,, মিহুর হাত ছাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে কান্নায় করে মামনি,,, মিহু ও কান্না করছে,,,মাহির মামনি কে সব কিছু খুলে বলেছে,,তাই মামনি আর মিহু কে কোনো প্রশ্ন করে না,, শুধু মিহুর মুখ টা হাত দিয়ে বার বার নারে দেখছে আর কান্না করছে ,,এবার মিহু বললো,,,
“আমার মামনি এমন ভাবে কান্না করবে নাকি আমার সঙ্গে কথা বলবে না,,
“না কথা বলবো না দেখতে দে আগে প্রাণ ভরে তুই এত দিন ছিলী না জানিস আমার কি অবস্থা হইছিলো,,,,
“কি হইছিলো আবার ছেলের নতুন বিয়ে দিয়ে ভালোই ছিলে,,(অভিমানী সুরে)
“কে বললো তোকে আমার ছেলে বিয়ে করেছে,,
“আমি দেখেছি নিজের চোখে,,ওই জেরিন কে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে তোমার ছেলে কে,,,
“বোকা মেয়ে মাহির কাওকে বিয়ে করেনি না তোর জাইগা তে কাওকে বসাতে পেরেছে,,জেরিন তো আমার দেখা সোনা করার জন্য এসেছিল,,যদিও তার উদ্দেশ্য কি আমি বুঝে ছিলাম কিন্তু সেই সময় আমি একদম ভেঙে পড়েছিলাম কোনো কিছু তাকিয়ে দেখিনি,,বাড়ি তে কি চলছে না চলছে,,,,,
“ওহ কিন্তু উনি তোমার দেখা সোনা করার জন্য কোনো নার্স পায়নি নাকি টাকার অভাব পড়ছিল,,,যে ওকে আনতে হইছে,,
“আমি যতো টুকু জানি জেরিন মাহির কে বলেছিল আমার দেখা সোনা করবে ,,মাহির না রাজি হইনি কিন্তু জেরিন ইমোশন ব্ল্যাকমেইল করে এসেছে,,তবে যেদিন তোর সামনে,, মাহিরের কাছে আসার চেষ্টা করেছিল মাহির বর বলেছিল সেদিনই মাহির জেরিন কে বাড়ি থেকে বের করে দেই,,,
“ওহ তার মানে আমি ওনাকে ভুল বুঝলাম ছি ছি এটা কেমনে করলাম আমি,,,কিন্তু তোমার ছেলে তো আমাকে ভালোবাসে না,,
“কে বললো আমার ছেলে তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে,,
“তাহলে উনি আমাকে এই বাড়ি তে নিয়ে আসছে না কেনো,,,?
“মাহির চায় তুই নিজে ফিরে আসবি এই বাড়িতে মাহিরের কাছে,,ভুল বুঝে তুই গেছিস এখন তুই ই ফিরে আসবি,,,
“ওহ বুঝেছি,,,আমি কাল ই এই বাড়ি তে চলে আসবো,,কিন্তু মামনি তুমি যে আমাকে প্ল্যান B এর কথা বলেছিলে “ইগনোর” সেটা শুরু করবো,,, ওনার কাছে থেকে ওনাকে ইগনোর করবো,,আরো বুঝাবো ভালোবাসার মানুষ থেকে দূরে থাকলে কি হয়,,,,
“বাহ বাহ এই না হলো মিসেস মাহিরা চৌধূরী র বউমা,,,ওকে তাহলে কাল ই চলে এসো,,,,,
“মামনি এখন তাহলে আসি আমি মামা মামী চিন্তা করবে,,,
“ঠিক আছে যাও আমি মাহির কে বলে দিচ্ছি দিয়ে আসবে,,,
“না আমি একায় যাই ওনাকে কাল বুঝাবো,,,
এই বলে মিহু বেরিয়ে পরে,,মাহিরের বাড়ি থেকে বের হয়ে একটা সিএনজি নিয়ে বাড়ি তে চলে গেলো,,,মেইন রাস্তার মোড়ে সিএনজি থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে হাঁটা শুরু করলো মিহু,,, মিহু হেঁটে যাচ্ছে কিছুক্ষন যেতেই মিহুর মনে হতে লাগলো কেও তাকে ফলো করছে,,তাই ওখানেই দাড়িয়ে গেলো পিছনে তাকিয়ে দেখলো হাবিব দাড়িয়ে আছে,,,,
“এভাবে পিছু পিছু আসছেন কেনো,,?
“কি করবো তুমি তো তোমার সঙ্গে যাওয়ার সুযোগ ই দাও না,,
“এমন কেনো করছেন ভুলে যাবেন না আমি এখন অন্য কারো বউ,,
“তুমি আমার বউ হতে যদি না বিয়ের আসর থেকে না পালিয়ে না যেতে,,,আমি তোমাকে ভালোবাসি,,আর অন্য কারো সঙ্গে দেখতে পারবো না আমি তোমাকে,,দরকার চলে ওই মাহির চৌধূরী কে মেরে ফেলবো,,,
এটা বলতেই মিহু হাবিবের লাগে থাপ্পর বসিয়ে দেয়,, মিহুর সামনে তার মাহিরের ক্ষতি করার কথা বলবে আর এটা মুখ বুজে সহ্য করবে এটা কি করে হই,,,,হাবিব গালে হাত দিয়ে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে মিহুর দিকে,,, মিহু কে কিছু বলতে যাবে তখনি কিছু লোক এসে যাই সেই রাস্তাই আর হাবিব কিছু করতে পারে না এই সুযোগে মিহু ও চলে যায়,,, কিন্তু এই সব কিছু আড়াল থেকে মাহিরের রাখা ছেলেটা দেখে নিয়েছে মাহির কে সব বলাও হয়ে গেছে,,,,,,,
এখন রাত ১২ টা,,,, হাবিব চোখ দুটো আস্তে আস্তে খুলে দেখে একটা চেয়ারে বাধা অবস্থায় বসে আছে ,,,২ঘণ্টা আগেই হাবিব বন্ধু দের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলো,,, হঠাৎ অনেক গুলো ছেলে হাবিব কে ধরে এনে অনেক মারে,, মার খেতে খেতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে হাবিব,,,, হাবিবকে এখানে কে নিয়ে এলো আর কে মারলো কিছুই জানে না হাবিব,, তার মাথা তেই আসছে না এতো বড়ো শত্রু কবে হলো তার,,,সে তো তার পাড়ার ছোটো খাটো মাস্তান একটা এতো বরো গুন্ডাও না যে এমন শত্রু হবে,,,তাহলে কে নিয়ে এসে এমন করে মারলো হাবিব কে,,,?,,,
।।
মিহু শুয়ে আছে তার মনে একটাই প্রশ্ন আজ কি মাহির আসবে তার কাছে নাকি আসবে না,,কাল তো ঠিক ই এসেছিল,,,, মিহুর কিছু তে ঘুম আসছে না আজ,,, মিহু যে চায় ছে তার চৌধূরী সাহেব তার কাছে আসুক,, কিন্তু আসছে না তো এটাই হচ্ছে প্রবলেম,,,অনেক ক্ষন অপেক্ষা করে থাকলো মিহু কিন্তু মাহির এলো না,, এক সময় ঘুমিয়ে পরলো মিহু,,,,,মাহির আজ আর এলো না তার কাছে আর ফোন ও করেনি একটা,,মাহিরের বাড়ি থেকে যে একা চলে এলো,,তো খোজ ও নিলো না মিহু ভালো ব্যাবস্থায় বাড়ি ফিরে এসেছে কি,,,,,,কিন্তু আদৌ কি তাই মাহির তার জান পাখি র খবর নেই নি? মাহির ঠিক ই নিয়েছে,,এটা তো মিহু কে জাস্ট একটা শাস্তি দিলো শুধু মাহির কে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে আসার জন্য,,,,,
চলবে?
(??????)
#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_23
.
.
.
মিহু শুয়ে আছে তার মনে একটাই প্রশ্ন আজ কি মাহির আসবে তার কাছে নাকি আসবে না,,কাল তো ঠিক ই এসেছিল,,,, মিহুর কিছু তে ঘুম আসছে না আজ,,, মিহু যে চায় ছে তার চৌধূরী সাহেব তার কাছে আসুক,, কিন্তু আসছে না তো এটাই হচ্ছে প্রবলেম,,,অনেক ক্ষন অপেক্ষা করে থাকলো মিহু কিন্তু মাহির এলো না,, এক সময় ঘুমিয়ে পরলো মিহু,,,,,মাহির আজ আর এলো না তার কাছে আর ফোন ও করেনি একটা,,মাহিরের বাড়ি থেকে যে একা চলে এলো,,তো খোজ ও নিলো না মিহু ভালো ব্যাবস্থায় বাড়ি ফিরে এসেছে কি,,,,,,কিন্তু আদৌ কি তাই মাহির তার জান পাখি র খবর নেই নি? মাহির ঠিক ই নিয়েছে,,এটা তো মিহু কে জাস্ট একটা শাস্তি দিলো শুধু মাহির কে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে আসার জন্য,,,,,
সকালে উঠে নাস্তা করে একে বারে বেরিয়ে পরে মিহু মামা মামী কে বিদায় দিয়ে,,, ভার্সিটি থেকে আর এই দিকে আসবে না সোজা মাহিরের বাড়ি তে যাবে ,,, ভার্সিটি তে গিয়ে দেখে তেমন কেও আসে নি মিহু একটু জলদিই চলে এসেছে,,, কি করবে এখন ভেবে পায়না,,তাই একটা গাছের নিচে বসে একটা গল্পের বই পড়তে লাগে,,,,,,
।।
অধরা রেডি হয়ে ভার্সিটির জন্য বেরিয়ে পরে আবির বলেছিল বাইক করে দিয়ে আসবে কিন্তু অধরা সে একা যেতে পারবে বলে বেরিয়ে পরে,,, হাঁটতে হাঁটতে কিছু খন যাওয়ার পর রোদ কে দেখতে পায় অধরা,,,রোদ কে দেখেই অধরার বুকের ভিতর টা কেমন করে উঠে,,, কিছু দিন থেকেই এমন হচ্ছে অধরার,,,কিন্তু রোদ অধরা কে ইগনোর করছে কেনো তা অধরা বুঝতে পারছে না,, আগে তো সব সময় অধরার আগে পিছে ঘুরতো কিন্তু এখন কেনো এমন করছে রোদ তাই ভাবছে অধরা,,,ভাবতে ভাবতে অধরা রোদ এর কাছে চলে আসে,,,অধরা হালকা একটু হেসে বলে,,,
“কি রে কি করছিস যাবি না ভার্সিটি,,
“তুই যা আমি একটু পরে আসছি আমার একটা কাজ আছে,,,
অধরা রোদের এমন কোথায় একটু কষ্ট পায়,,,আগে তো রোদ এমন করতো না,,অধরা না বলতেই রোদ ওকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতো কিন্তু এখন অধরা নিজে বলেও রোদ শুনে না,,,মনে এক রাশ রাগ অভিমান নিয়ে ভার্সিটির দিকে চলে গেলো অধরা,,,,
।।
তিথি মনের সুখে নাচতে নাচতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে ভার্সিটি আসছে আজ স্কুটি নেইনি তিথি হেঁটেই যাচ্ছে,,,সে যেমন করে রাস্তা দিয়ে আসছে দেখে যে কেও বলবে এটা পাগল নইতো পিচ্ছি,,,তিথি এমন ই কোনো কাজ তার ঠিক ভাবে করা লাগে না,, সেটা বেঁকিয়ে তারপর করে,,,,তিথি যেতে যেতে হটাৎ কারো একটা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে,,,ধাক্কা লেগেই তিথি চোখ বন্ধ করে নেই,,,,তিথি ভাবে সে হইতো মরেই গেছে,,কিছুক্ষন পরে চোখ খুলে দেখে সে মরে নি,,কিন্তু গাড়ির মালিকের ওপর সেই লেভেলের রাগ উঠে যায়,,,,তেড়ে গাড়ির মালিকের কাছে গিয়ে বলে,,
“ওরে কে রে তুই চোখ কি হাতে নিয়ে গাড়ি চালাস,,গাড়ি যখন চালাতে পারিস না তখন রাস্তা তে নামিস কেন বেটা খচ্চর,,,আজ যদি আমি মরে যেতাম তো আমার দশ টা বাচ্চার কি হতো তারা তো অকালেই অনাথ হয়ে যেতো,,বের হ গাড়ি থেকে বের হো দেখি তোর চাঁদ পানা মুখ খানা,,,,
তিথি সে নিজের মতো বক বক করে যাচ্ছে গাড়ি থেকে যে লোক টা বের হয় এসে তিথির পিছনে দাড়িয়ে আছে তার দিকে ক্ষেয়াল নেই তিথির,,,পেছনে দাড়িয়ে থাকা লোক টা বার বার তিথি কে তার দিকে ঘুরার জন্যে কাধে হাত দিচ্ছে আর তিথি সরিয়ে দিচ্ছে,, লোক টা আবার এমন করে,,তিথি এবার বিরক্ত হয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে আর বলে,,,
“আরে কে তুই দেখেছিস না ঝগরা করছি আর তুই বিরক্ত করছিস আমায়,,,(এই বলে লোক তার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় আর ভয় ও পায় সেদিনের কথা ভেবে,,এটা তো নয়ন সেদিন যে হাত কামড়ে দিয়েছিল আজ নিশ্চিত শাস্তি দিবে,,)
“আমি গাড়ি চালাতে পারি না? আমি খচ্চর?(তিথির দিকে এগিয়ে এসে)
“না না আপনি তো অনেক ভালো খচ্চর কে বললো আর আপনি তো অনেক সুন্দর গাড়ি চালান,,,(ভয়ে বলে তিথি)
“তোমার দশ টা বাচ্চা কে রেখে তুমি রাস্তায় নেমেছ কেনো এখন যদি তোমার কিছু হয়ে যায় তাহলে তোমার দশ টা বাচ্চা কে দেখবে?(মজা করে বললো নয়ন কারণ নয়ন ভালো করে জানে এই মেয়ে মিথ্যা বলছে)
“ওদের আমি দেখে নিবো আচ্ছা আমি আসি আমার ভার্সিটির জন্য দেরি হচ্ছে টাটা,,(এই বলে তিথি যেতে নেই আর নয়ন হ্যাঁচকা টান দিয়ে কাছে নিয়ে আসে)
“শাস্তি তো নিয়ে যাও,,
“ক…কিসের সা….শাস্তি?
“আগের দিন আমার হাত কামড়িয়ে দেওয়ার শাস্তি আজ বাজে কথা বলার শাস্তি,,(এই বলে নয়ন আরো কাছে যায় তিথির)
তিথি ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে নেই,, নয়ন তিথির কাধ থেকে চুল গুলো সরিয়ে দেয়,,,এতে করে তিথির কাধের কিছু অংশ দেখা যায় সেখানে সজোরে একটা কামর বসিয়ে দেই নয়ন,,তিথি ব্যাথায় নয়ন কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেই,,আসে পাসে তাকিয়ে দেখে কেও নেই,,সামনে নয়ন মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে,,,তিথি দৌড়ে কিছুটা দূরে গিয়ে আবার থেমে বলে,,
“শুধু খচ্চর না আপনি একটা রাক্ষস মানুষ খেকো রাক্ষস,,,(এই বলে চলে যায় তিথি)
নয়ন তিথির কান্ড দেখে যোরে হেসে দেই,,তারপর সেও চলে যায় ,,,,,,,,তিথি ভার্সিটি এসে দেখে সবাই বসে আছে মিহু অধরা মাইশা আয়ান শুধু রোদ নেই,,,তিথি ও তাদের সঙ্গে যোগ দেই,,,,সবাই আড্ডা দিচ্ছিল তখনি অধরা দেখে রোদ একটা মেয়ের হাত ধরে তাদের দিকেই আসছে,,,অধরার মুখ টা কালো হয়ে যায়,,, মিহু অধরার মুখ দেখে কেমন জানি লাগে,, মিহু ও সামনে তাকিয়ে দেখে রোদ একটা মেয়ে কে নিয়ে আসছে,,,রোদ এসেই বলে,,
“হেই মিট মাই কাজিন দিশা,,,
সবাই পরিচিত হয়ে নিলো,,অধরা চুপ করে বসে আছে কেনো যানি তার ভালো লাগছে না দিশা মেয়েটা কি সুন্দর রোদের হাত ধরে বসে আছে বার বার অধরা শুধু রোদের হাতের দিকে তাকাচ্ছে,,, মিহু বুঝতে পারে অধরার মনের অবস্থা,, মিহু আর থাকতে না পেরে রোদ কে বলে,,
“রোদ একটু এদিকে আয় তো কথা আছে,,(এই বলে উঠে চলে যায় মিহু ,, মিহুর পিছন পিছন রোদ ও যায়,,)
“বল কি বলবি আর এখানে ডাকলি কেনো?
“রোদ তুই কি করছিস তুই জানিস?
“আমি আবার কি করলাম,,
“দিশার সঙ্গে কি তোর এতো ক্লোজ হয়ে আছিস কেনো তোরা তাও অধরার সামনে,, অধরার এটা ভালো লাগে নি ,,তুই না অধরা কে লাভ করিস ওর জন্য সব করতে পারবি তাহলে এসব কি?
“অধরা তো আর আমাকে লাভ করে না তাই আমি অধরার থেকে দূরেই থাকবো ভেবেছি,,
“প্রপোজ করেছিলি কখনো অধরা কে?
“না (মাথা নিচু করে)
“তাহলে বলছিস কি করে অধরা তোকে লাভ করে না,, আমি অধরার চোখে তোর জন্য ভালোবাসা দেখেছি,, তুই যখন দিশার হাত ধরে আসলি তখন অধরার কি অবস্থা হয়েছিল তার মুখ দেখেই বুঝেছি,,, প্রপোজ না করে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়া বোকামি আগে তুই প্রপোজ করে তো দেখ অধরা কি বলে সেটা দেখ,,না করে দিলে তুই হাজার টা প্রেম করিস কিন্তু না বলে এমন ভুল করিস না এখনও সময় আছে ভেবে দেখ,,(এই বলে মিহু চলে গেল)
রোদ ভাবতে লাগলো সে কি করবে,, মিহু যা বললো তাও তো একদম ঠিক,,,,,ক্লাস সময় হয়ে গেছে মিহু মাইশা অধরা তিথি সবাই ক্লাস এর কি দিকে যাচ্ছিলো রোদ ও একটু দূরে হেঁটে যাচ্ছিলো,,, হঠাৎ ই রোদ যোরে অধরার নাম ধরে ডাকে,,,,
“অধরা!!!!!!!(অধরা সহ ভার্সিটির অনেকে রোদের দিকে তাকায় অবাক হয়ে,,রোদ অধরা থেকে একটু দূরেই থেকেই বলে উঠে)
“আই লাভ ইউ অধরা,,,তোর মনে আমাকে একটু যায় গা দিবি? তোর নীরবতার পিছনে যে চঞ্চল অধরা লুকিয়ে আছে টা দেখার সুযোগ দিবি,,আমার আম্মুর বউমা হবি? জানি না তুই আমাকে ভালোবাসিস কি না কিন্তু সেই ক্লাস সেভেন থেকে তোকে আমার ভালো লাগে,,আর ভালো লাগা টা এখন ভালোবাসায় পরিবর্তন হয়েছে,,,,অনেক ভালোবাসি তোকে,, আই লাভ ইউ অধরা,,,,,,,,,,,,।।।(অনেক জোরে কথা গুলা বললো রোদ অধরা তো বিশ্বাস করতে পারছে না রোদ তাকে এমন করে প্রপোজ করবে,,খুশি তে কান্না করে দেই অধরা,, দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে রোদ কে আর বলে)
“আই লাভ ইউ টু রোদ,,। আমিও ভালোবাসি তোকে অনেক বেশি ভালোবাসি,,,,,,,
ওদের ভালোবাসা দেখে সবাই হাত তালি দিতে থাকে,,, মিহু অনেক খুশি এতো দিন পর রোদ বলতে পারলো তার মনের কথা,,আর মিহুর মান্নুর ও একটা ভালোবাসার মানুষ হলো,,,,,,,সত্যি ভালোবাসা অনেক সুন্দর,,,,,,তারপর ক্লাস করে সবাই নিজের নিজের বাড়িতে চলে যায়,,,, মিহু একটা সিএনজি নিয়ে মাহিরের বাড়ি চলে যায়,,,বাড়িতে গিয়ে মামনির সঙ্গে অনেক আড্ডা দেই,,মাহির এখনও আসে নি,,,,,মামনির সঙ্গে আড্ডা দিয়ে ওপরে নিজের রুমে চলে যায় মিহু,,,রুমে ঢুকে অবাক,,,এখনও আগের মতো আছে রুম টা শুধু বেডের ওপরে মাহির আর মিহু একটা বড়ো ছবি টাঙানো আছে,,,এটা একদিন ঘুরতে গিয়ে তুলেছ,,যদিও মাহির রাজি ছিলো না ছবি তুলতে কিন্তু মিহু যোর করে তুলেছিল,,,,,অনেক দিন পর আবার এই রুমে ঢুকে মিহু সব কিছু ভালো করে দেখছে,,তার পর ফ্রেশ হয়ে আবার নিচে চলে যায়,,,এখনও মাহির আসে নি মনে হয় রাত হবে আস্তে,,,,,
মিহু খাওয়া দাওয়া করে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে বেডে,,,অনেক রাতে মাহির আসে বাড়িতে আজ একটু কাজ বেশি থাকায় অনেক দেরি হয়ে গেছে,,,বাড়িতে এসে আর খেলো না ফ্রেশ হয়ে ধপাস করে বেডে শুয়ে পরলো,,, মিহু যে বেডে শুয়ে আছে এটা মাহির খেয়াল ই করে নি আর করবেই বা কি করে মিহু এমন করে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে যে দেখে যে কেও বলবে এটা কোলবালিশ,,,,,বেডে শুয়ে চোখ বন্ধ করে নেই মাহির,,,পাসে মিহু কে কোলবালিশ মনে করে জড়িয়ে ধরে,,,,,মাহির ভাবে,,
“কোলবালিশ টা এমন কেনো লাগছে আজ আগে তো এমন লাগে নি,,,
মাহির উঠে কোলবালিশের মতো মিহু দেখেই যাচ্ছে,, মিহু ঘুমের ঘোরে একটু নড়ে উঠে,,এতে মাহির ভয় পেয়ে যায়,,ভাবে কোলবালিশ এমন ভাবে নড়ছে কেনো,,,মাহির আস্তে আস্তে হাত দিয়ে দেখে এটা কোলবালিশ না,, রুমের লাইট অফ হালকা আলোই একটু বুঝা যাচ্ছে,,,মাহির এবার কম্বল টা টেনে সরিয়ে দেয়,,,আর মিহু দেখে এক চিৎকার দেই,,,
“আআআআআআআআআআ,,,!!!!(মাহিরের এমন চিৎকারে মিহু ও ধরফড়িয়ে উঠে সেও ও এক চিৎকার দেই)
“আআআআআআআ!!!!!(মাহির বুঝতে পারে এটা মিহু তাই তাড়াতাড়ি মিহুর চোখ ছেমে ধরে)
চলবে