#Ex_বেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥
#পর্ব_১
#লেখক_Ananta Sanny
-কই মেয়েকে নিয়ে আসুন(ছেলের বাবা)
(ছেলেটার নাম অনন্ত। বয়স ২৮ হবে হয়তো। বাবা মা তাকে জোড় করেই বিয়ে করাতে চাইছে। তার অনিচ্ছা থাকা সত্বেও মেয়ে দেখতে আসছে। অনন্তর সাথে আছে তার বাবা মা আর বড় বোন)
,,
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর। মেয়ের মা মেয়েকে নিয়ে আসলো। অনন্ত মাথা নিচু করে আছে। মেয়েটাও মাথা নিচু করে আছে…
,,
অনন্তর মা অনন্তর হাতে একটা চিমটি কেটে চোখের ইশারায় বলল
(মেয়ে দেখ)
,,
অনন্ত মাথা উপরের দিকে তুলতেই সেই রকম একটা শকড খাইছে…একি এটা সে কাকে দেখছে!!! মেয়েটার চোখের মনি গুলো বড় বড় হয়ে গেছে। হয়তো সেও অনন্ত কে দেখে চিনতে পারছে…..
,,
-মেয়ের চেহারা কিন্তু মাশআল্লাহ খুবই ভালো (অনন্তর মা)
-এই অনন্ত তুই কি বলিস (অনন্তর মা অনন্তর কানে কানে বলল)
-হুমমমম
-তুই যে কি না
-ভাই সাহেব ছেলেকে আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে (মেয়ের বাবা)
-তাহলে ওদের ডিসিশন টা আমরা আগে শুনি(অনন্তর বাবা)
-হ্যা তা ঠিকি বলছেন।
-অনন্যা তুই ওকে নিয়ে তোর রুমে গিয়ে কথা বল (মেয়েটির নাম অনন্যা বাবার কথা মতো অনন্ত কে নিয়ে তার রুমে গেলো)
,,
রুমে যাওয়ার পর দুজনই চুপচাপ…কারন দুজনই দুজন কে আগে থেকেই চেনে। আর তাদের খুব ভাল একটা বন্ধুত্ব ছিলো…
(আসুন একটু ফ্লাশব্যাক এ যাই)
,,
-অনন্তর বাচ্চা অনন্ত আমার ফোন দে বলছি (অনন্যা চিল্লাতে চিল্লাতে অনন্তর পেছনে ছুটছে)
-আজ আর পাবি না তুই কার সাথে কথা বলিস সেটা আগে দেখব তারপর ফোন দিবো (অনন্ত)
-আমি যার সাথে মনে হয় তার সাথে কথা বলব তাতে তোর কি??
-আমার অনেক কিছু কারন আমি তোকে ভালবাসি
-আমি তোকে ভালবাসি না,,, তুই কেউ না আমার… (কথাটা শুনে অনন্ত দাড়িয়ে যায়)
,,
অনন্যা দৌড়ে এসে অনন্তর হাত থেকে ফোন টা নিয়ে নেয়…
-নেক্সট টাইম এরকম ব্যবহার করলে বন্ধুত্ব টাও শেষ হয়ে যাবে বলে দিলাম (অনন্যা)
,,
অনন্তর এসব বকুনি ঝাকুনি খাওয়ার অভ্যাস আছে। অনন্যার কাছ থেকে সে অনেক বকাও খেয়েছে…
অনন্তর অনন্যার কথায় কান না দিয়ে বাসায় আসে….
,,
রাত তখন ১১ টা বাজে অনন্ত অনন্যার ফোনে ফোন করে। কিন্তু অনন্যার নাম্বার ব্যাস্ত.. অনন্তর মন অনেক খারাপ হয়ে যায়। আর ভাবে (এই অনন্যা যে কার সাথে কথা বলে)
অনন্ত অনেক বার কল করলো তাও সেই বিজি দেখাচ্ছে..১২ টার কিছুক্ষণ পর কল ঠুকলো..ওপাশ থেকে ফোন ধরতেই…
-কি বলবি বল,, আর এত রাতে ফোন দিয়েছিস কেনো??(অনন্যা)
-তোকে ফোন না দিয়ে কখনো ঘুমাইছি আমি??(অনন্ত)
-তো আমি কি করব??
-নাহ কিছু না। কার সাথে কথা বললি??
-আমার এক ফ্রেন্ড এর সাথে
-ছেলে নাকি মেয়ে??
-সেটা জেনে তুই কি করবি??
-বল না
-ছেলে
-এত কি কথা??
-সেটা কি তোকে বলতে হবে??
-নাহহ। তাহলে সকাল সকাল কলেজে আসিস
-ধ্যাতত(এটা বলা অনন্যা ফোনটা কেটে।দিলো)
,,
আর এদিকে অনন্তর চোখে পানি। ছেলেটা তাকে বড্ড বেশি ভালবাসে।
সারা রাত তার কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেও জানে না….
,,
পরদিন সকালে উঠে অনন্ত কলেজে যায়। গিয়ে অনন্যার সাথে আবার ফাজলামো শুরু করে। কিন্তু অনন্যার এগুলো একদম পছন্দ না….
-এই শোন তোকে একটা কথা বলি (অনন্যা)
-হ্যা বল(অনন্ত)
-তোকে প্রথম প্রথম ভাল লাগতো। এখন তোকে আমার সহ্য হয় না, আর এসব ফাজলামো আরও সহ্য হয় না। আর তোকে আমি ভালবাসতে পারব না, আমার একজনের সাথে রিলেশন আছে…
,,
(অনন্ত কথাটা শুনে মুখটা ঘুরিয়ে নেয়। কারন তার চোখে পানি চলে আসছে সেটা যাতে অনন্যা না দেখে)
-আরে সমস্যা নেই। একটা জিনিস দেখতে দেখতে সবারই একসময় খারাপ লাগে। ব্যাপার না আমি তোর সামনে না আসলেই হলো। ভাল থাকিস আর সাবধানে চলিস হারামী(অনন্ত অনন্যার সামনে একটু হেসেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো। আর চোখ মুছতে মুছতে বাসায় চলে এলো। তার পর অনন্ত একটা কারন দেখিয়ে সেই কলেজ ত্যাগ করে…আর কখনো দেখা হয় নি তাদের। আজ এভাবে দেখা হবে ভাবতে পারে নি দুজনের কেউ ই)
-কিছু বলছেন না যে (অনন্যা অনন্ত কে বলল)
-হ্যা বলেন (অনন্ত)
-সবাই তো আমাদের এখানে পাঠালো কথা বলার জন্য, তো কিছু বলেন
-হুমম কেমন আছেন??
-জ্বি ভালো আপনি??
-হুমম ভালো
,,
আবার দুজনই চুপ
-আর কিছু জানার নেই?? (অনন্যা)
-না (অনন্ত)
-তাহলে পছন্দের ব্যাপারে তাদের কি বলবেন??
-দেখি কি বলা যায় আসি…
,,
অনন্ত রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। পিছু পিছু অনন্যা গেলো। অনন্ত গিয়ে বলল
-বাবা,, মা,, তোমাদের পছন্দই আমার পছন্দ, আর আমি একটু আসি আমার কাজ আছে ,, আসসালামু আলাইকুম (এটা বলেঅনন্ত চলে গেলো)
,,
অনন্যা ও তার বাবা মাকে ডেকে বলল
-তোমাদের পছন্দই আমার পছন্দ। নতুম করে আমি কিছু বলতে চাই না (অনন্যা তার রুমে চলে গেলো)
,,
-বাহহহজ ভালই তো কেউ সিদ্ধান্ত নেয় নি। তাহলে আমাদেরই নিতে হবে ভাইসাহেব??(অনন্তর বাবা)
-ওরা যখন আমাদের উপর ছেড়ে দিয়েছে, আমার কোনো আপত্তি নেই, না কি বলো অনন্যার মা
-হ্যা সেটাই আমাদের কোনো আপত্তি নেই (অনন্যার মা)
-বেয়াই সাহেব তাহলে হা করেন (অনন্তর বাবা)
-কেনো??(অনন্যার বাবা)
-আরে মিষ্টি মুখ করেন
-হা হা হা হা হা (সবাই মিলে হো হো করে হেসে উঠলো)
-বেয়াই তাহলে বিয়ের ডেট টা এখনই পাকা করবো???(অনন্তর বাবা)
-হ্যা করেন শুভ কাজো দেড়ি করতে নেই….
,,
কয়েকদিন পর,,,,,,
কিছুক্ষণ আগে ধুমধাম করে অনন্ত আর অনন্যার বিয়ে হলো। দুজনের কেউ ই বিয়েতে অমত ছিলো না আবার কেউ কারও সাথে তেমন কথা বলে নি…
,,
আর বিয়ে শেষ হবার পর বউ বাসায় নিয়ে আসে…
বাসর ঘরে…অনন্যা খাটের উপর বসে আছে আর অনন্তল একটা টেবিল এর সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে….দুজনের কেউ কাউকে কিছু বলছে না… রাত অনেক হওয়ার পর
অনন্ত বলল
-আমার ঘুম পাচ্ছে আপনি এক পাশ হয়ে শুয়ে পড়েন। আমি ঘুমাবো (অনন্ত)
-হুমমম ঠিক আছে..(অনন্যা)
,,
অনন্তর কথা মতো অনন্যা পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে। অনন্তও গিয়ে শুয়ে পরে। দুজন দুইদিকে মুখ করে শুয়ে পরে।
হঠাৎ অনন্যা বলল
-এত ভাল হইছেন কবে থেকে??(অনন্যা)
-খারাপ ছিলাম কবে??(অনন্ত)
-নাহহ কথা বলছেন না তো তাই বললাম
-আমার ইচ্ছা করছে না কথা বলতে
-তাহলে বিয়ে করলেন কেনো??
-বাবা মা পছন্দ করছে তাই
-বাহ বাহ বাহ (অনন্যা উঠে রাগে উঠে পড়লো)
-কি? এখন কি এই নিয়ে বক বক শুরু করবেন??
-তো কি করবো?? বউ এর সাথে কেউ এমন ব্যাবহার করে??
-বিয়ে করেছি এই পর্যন্তই তবে বউ না
-কি বললেন??
-যা বলছি নিশ্চয় শুনতে পাইছেন, এখন ঘুমান
-আচ্ছা বউ না তাহলে আমি আপনার কি??
-ফ্রেন্ড
-কিহহহহহহ, বিয়ে করে ফ্রেন্ড!!!
চলবে