#Ex_বেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥
#পর্ব_৯
#লেখক_Ananta Sanny
এই যে ম্যাডাম
-এ্যাহহহ
-কি হইছে?? এভাবে পড়ে আছেন যে
-এই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ছিলাম
-শরীর খারাপ??
-জানি না হঠাৎ করেই এমন হলো
,,,
,,
তিথি উঠতে যাবে তখন আবার পড়ে যায়, এবার অনন্ত কেনো রকমে ধরে ফেলে, তিথি আবার জ্ঞান হারায়…
,,
অনন্ত তিথি কে বিছানায় শুয়ে দেয়। আর বাকি সহযোগী দের ফোন করে।
সবাই চলে আসে। সবাই আসার পর ডাক্তার আনা হয়…ডাক্তার আসার পর….
-উনি তো শারীরিক ভাবে খুবই দূর্বল হয়ে পড়েছেন। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করেন না, খুব অল্প সময়ই ঘুামন, টেনশন অনেক বেশি করেন। (ডাক্তার)
-ম্যাডাম এর এই অবস্থা হলো কিভাবে??(সবাই বলা বলি করছে)
-আচ্ছা আমি ঔষধ লিখে দিচ্ছি, সময় মতো খাইয়ে দিয়েন আর হ্যা উনাকে বিশ্রাম নিতে হবে কয়েকদিন। (ডাক্তার সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেলো)
,,,
,,,
-তাহলে আমরা এখন কি করবো??(একজন বলল)
-আমাদের যেতে তো হবেই(আরেকজন)
-সেখানে গেলাম, প্রেজেন্টেশন তো ম্যাডাম ছাড়া কেউ দিতে পারবে না
-হ্যা আর ম্যাডাম এর কাছে একজন কে রেখেই যেতে হবে
,,
সবাই নানান কথা বলা বলি করছিলো। হঠাৎ অনন্ত বলল,
-আচ্ছা আমি প্রেজেন্টেশন দিবো, কেউ একজন এখানে থাকো…(অনন্ত)
-না আমি বলি কি, অনন্ত সাহেব আপনি থাকেন, আর আমরা সবাই চলে যাই, ব্যবস্থা একটা হবেই (একজন বলল)
-আরে না, আমি এখানে
-আপনার সাথে ম্যাম এর ভালো মিল আছে আপনিই থাকেন,
,,
অনন্ত কে জোড়াজুড়ি করে রেখে সবাই অফিসে যায়।
,,
তিথি ঘুম থেকে উঠার আগেই, অনন্ত ডাক্তার এর লেখা ঔষধ গুলো নিয়ে আসে। দুপুর এর পর পর তিথি জেগে উঠে, অনন্ত তখন তিথির পাশেই দাড়িয়ে কি যেন ভাবছিলো…
তিথি উঠেই বলে..
-সরি সরি আমি কেন জানি ঘুমাই গেছিলাম, লেট হয়ে গেলো সরি (তিথি)
-এখন দুপুর দুটো বাজে,
-কিহহহহ,!!! তোমরা কেউ অফিসে যাও নি,
-সবাই গিয়েছে, আর আমাকে রেখে গেছে আপনার দেখাশুনা করার জন্য
-নাহহ ঠিক আছে, তুমি গেলেও পাড়তে আমার কিছু হয় নি
-খাওয়া দাওয়া করেন না, সময়মত ঘুমান না, আর বলছেন আপনি ঠিক আছেন?? সমস্যা কি এরকম করেন কেনো??
-এমনি কিছু না
,,
তিথি উঠতে যাবে, অনন্ত তাকে থামিয়ে বলল
-না আপনি উঠবেন না, কি লাগবে বলেন দিচ্ছি(অনন্ত)
-না কিছু লাগবে না(তিথি)
-তাহলে উঠছেন কেনো??
-ওয়াশরুমে যাবো…নাকি রুম যাদু করে এখানে উপস্থিত করবেন??
-নাহহ যান
-হুমমম
,,
,,
তিথি ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে বলল
-যান আপনি এখন, এখন ভালই লাগছে আমার (তিথি)
-আচ্ছা এই যে ঔষধ গুলা রাখা আছে সময়মত খেয়ে নিয়েন, না খেলে আবার শরীর খারাপ করবে,
-হুমম খাবো,
-দুপুরের খাবার এর অর্ডার করে যাবো??
-না খাবো না
-সেটা বললে তো হবে না, খেতে হবে, আমি অর্ডার করে যাচ্ছি
,,
,,
তিথি আর কিছু বলল না…
,,,
সেদিন রাতে অনন্ত শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ছিলো হঠাৎ তিথি ফোন করে বলল
-হ্যালো(কান্না ভেজা আওয়াজ তিথির)
-ম্যাডাম কান্না করছেন কেনো??(অনন্ত)
-আমার রুমে একটু আসবে??
-দাড়ান আসছি আমি
,,
,,
অনন্ত দৌড়ে তিথির রুমে গেলো..
অনন্ত গিয়ে দেখে তিথি কাপছে..অনন্ত কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করলো,,,
-ম্যাডাম কি হইছে??(অনন্ত)
-আমি জ্বর সহ্য করতে পারছি না (তিথি)
অনন্ত মাথায় হাত দিয়ে দেখলো সত্যি তো অনেক জ্বর। অনন্ত দেড়ি না করে জলপট্টি করে দিলো, আর জ্বরের ঔষধ খাইয়ে দিলো।
,,
,,
-ম্যাডাম রাত তো ১ টা বাজে, এবার আমি যাই,,,, (অনন্ত)
-না এখানেই থাকো(তিথি)
তিথি কথাটা চোখ বন্ধ করেই বলল, জ্বর তখনও কমে নি, অনন্ত বুঝতে পারছে জ্বরের কারনে আবল তাবল বলছে
-ম্যাডাম যেতে হবে এখন (অনন্ত)
-বললাম তো এখানে থাকো, কথা কানে যায়না তোমার??(তিথি)
-আমি তো,,,
-শোনো তুমি অনন্ত কে ধরে মাইর দিবা ছেলেটা আমার কথা একদম শুনে না
-কিহহহহ
-হ্যা, আর কথা বলো না, এসে আমার পাশে ঘুমাও, আমার মাথা টা টিপ দাও। আমার ভালো লাগছে না…(এটা বলতে বলতে তিথি ঘুমিয়ে গেলো)
,,
অনন্ত কিছুক্ষন ভেবে তিথি পাশে গিয়ে বসলো, আর তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
তিথির মাথায় হাত দেওয়ার সাথে সাথে অনন্তর চোখে পানি, আবার তার অনন্যার কথা মনে পড়ছে…।
,,
,,
কিছুক্ষণ মাথা টা টিপ দিলো অনন্ত, অনন্তর ঘুম পাচ্ছে, কিন্তু তিথির পাশে শোয়ার সাহস পাচ্ছে না। বসে থেকেই ঝিমুচ্ছে, আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে…। তিথিই ঘুমের মধ্যেই বলল
-অনেক হইছে এবার ঘুমাও তো.. (তিথি)
আবর তাই করলো, সে তিথির পাশেই, কিন্তু কাথার বাইরে শুয়ে পড়লো.। তিথির তো জ্বর তাই সে কাথা মুরে শুয়ে আছে। অনন্ত শোয়ার পর তিথি অনন্তর দিকে এগিয়ে যায়, আর অনন্তর উপর কাথা দিয়ে অনন্তকে জড়িয়ে ধরে…
,,
,,
তিথির শরীর তো জ্বরের কারনে অনেক গরম, তার মধ্যে আবার কাথা উপরে দেওয়ায় অনন্ত ঘামতে শুরু করলো। অনন্ত একটুও নড়াচড়া করতে পারছে না। তিথি অনন্তর উপর দিয়ে পা তুলে দেয় আর আরও জোড়ে জাপটে ধরে, আর আবল তাবল কথা বলে…
,,
,,
অনন্ত ভাবছে
-নাহহ শোয়া টা ঠিক হলো না, দাড়িয়ে থাকলে বা বসে থাকলে ভালো হতো,(ভাবতে ভাবতে অনন্তও ঘুমিয়ে যায়)
,,
,,
সকাল যখন হয় তখন তিথিই আগে ঘুম থেকে জেগে উঠে,,, উঠে দেখে সে অনন্তকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। তার এক পা অনন্তর উপর, আর অনন্ত অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে ঘুমিয়ে আছে…
,,
,,
তিথি আস্তে আস্তে উঠলো, উঠে অনন্তর মুখের দিকে তাকালো। আর তিথি অনন্তকে দেখে অনন্তর গালে একটা কিস করতে চাইলো। গালের খুব কাছে গিয়েও তিথি কি যেন ভেবে মুখ ফিরিয়ে আনে…
,,
,,
তিথি উঠে ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে, তখনও অনন্ত শুয়ে আছে,, তার ঘুমই ভাঙছে না। তিথি ভাবলো গত রাতে মনে হয় অনেক জেগেছে, এটা ভেবে তিথি ডাকলো না।
,,
,,
অফিসের টাইম হয়ে গেলো..সবাই রেডি হয়ে বাইরে আসছে তিথিও আসলো..
-চলো সবাই (তিথি)
-ম্যাম অনন্ত আসে নি (একজন বলল)
-ওর আসতে একটু লেট হবে, ঘুমাচ্ছে ও
-ম্যাম ও কি নবাবজাদা যে ঘুম থেকে উঠেই না
-এই চুপপপ আমি ওকে ছুটি দিয়েছি ঘুমের জন্য কারও কেনো সমস্যা??
…(সবাই মাথা নাড়িয়ে না বলল)
-হুমম চলো..(সবাই অফিসে চলে গেলো)
,,
,,
এদিকে কিছুক্ষণ অনন্ত উঠে দেখে পাশে তিথি নেই, মোবাইল এর দিকে তাকিয়ে দেখে ১০ টা বেজে গেছে..
অনন্ত তো ভাবছে তার অফিসে যেতে হবে সবাই রেখে গেলো নাকি…!!
,,
,,
এটা ভেবে বিছানা থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে যাবে তখনই চোখ যায় একটা টেবিল এর উপরে…
সেখানে একটা শক্ত কাগজে বড় বড় করে লেখা,
(স্যার গুড মর্নিং, টেবিলের উপরে প্লেট টাতে আপনার খাবার রাখা আছে, আপনি খেয়ে তাড়াতাড়ি অফিসে চলে আসুন। আর হ্যা তুমি আমার পাশে শুয়েছিলে কেনো?? তুমি আসো আজ অফিসে তোমার খবর আছে)
,,
,,
অনন্ত শেষের লেখাটা পড়ে ভয় পেয়ে যায়। ম্যাডাম রাগ করে নি তো…
নানান কথা ভাবতে ভাবতে অনন্ত মনের মধ্যে ভয় নিয়ে অফিসে যায়।
চলবে
?কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না?