#Ex_বেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥
#পর্ব_১১
#লেখক_Ananta Sanny
অনন্তর চোখ বড় বড় হয়ে গেছে..
অনন্ত তিথি কে ছাড়িয়ে বলে
-এটা ক্যান করছিস?? (অনন্ত)
-তুই কিন্তু বলছিস গিফ্ট নিবি না করবি না (তিথি)
-হ্যা তাই বলে এই….(আর কথা বলতে পারলো না অনন্ত)
,,
,,
কিছুসময় পর তিথি ছেড়ে দেয় অনন্ত কে। তিথি বলে…
-আমাকে একটা গিফ্ট দিবি??(তিথি)
-কি??(অনন্ত)
-আগে বল দিবি
-না, তুই যা চাইবি সেটা নাও দিতে পারি
-ওকে থাক দিতে হবে না
-হুমম ঘুমা এখন, আমি যাই
-কই যাস??
-বাসায় যেতে হবে না?? আবার কাল অফিস আছে
-আচ্ছা শোন আগে
-আবার কি??
-গিফ্ট টা হলো তুই, আর তোর ভালবাসা, সারাজীবন এর জন্য আমার হবি
-পারবো না, সম্ভব না, গুড নাইট (অনন্ত বারান্দায় চলে গেলো পেছন দিক দিয়ে নামার জন্য)
,,
,,
আর তিথি ফ্লোরে বসা অবস্থায় কান্না শুরু করলো…
-আমি মনে হয় কখনো তোমাকে পাবো না এমন কপাল আমার হয় নি। আমি মনে হয় শেষ মুহূর্তে এসে হেরে গেলাম (তিথি ধীরে ধীরে কথা গুলো বলে কান্না করছে)
,,
হঠাৎ
-সারাজীবন এর জন্য হবো তবে শর্ত আছে (অনন্ত হঠাৎ করে ফিরে এসে বলল)
তিথি চমকে গেলো, আর বলল
-কি শর্ত বল??(তিথি)
-অনন্যার মতো ওভাবে ফেলে চলে যাবি না কখনো
,,
,,
কথাটা শোনার পর তিথি উঠে অনন্ত কে জড়িয়ে ধরে…আর বলে
-আমি ছেড়ে যাবো কেন হ্যা?? তুমি তো যানো আমি তোমাকে কত্ত ভালবাসি, আমার ভাল লাগার মানুষ রেখে আমি কোথায় যাবো??
-হুমম ঠিক আছে তবুও আমার ভয় হয়
-না কোনো ভয় নেই…আমি সবসময় তোমাকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবো
-হুমম ছাড় এখন অনেক রাত হলো, বাসায় যেতে হবে
-না একটু পর যা
-কেনো??
-এত দিন আড়াল থেকে প্রান ভরে দেখছি, আজকে একটু সামনে থেকে নির্ভয়ে তোকে দেখি
-হুহহহ এত ভালবাসিস কেন???
-জানি না চুপপ,, আগে দেখে নেই
,,
,,
তিথি অনন্তর দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক ফেলছেই না।
-এই (অনন্ত)
-হুমমম(তিথি)
-এখন যাই
-ভোরের দিকে যাবে, অনেক রাত হয়ে গেছে
-না যেতে হবে, ভোরে কেউ দেখলে আবার কি না কি বলবে
-কেউ কিচ্ছু বলবে না
-আংকেল আন্টি যদি জানতে পারে!”
-উনারা যানে যে আমি তোকে ভালবাসি
-কিহহহ তুই বলছিস??
-হুমম সেই জন্য তুই বাসায় আসলে তোকে আদর যত্ন একটু বেশি করে
-আংকেল সব জেনে মেনে নিলো??
-আরে গাধা, সব বুঝিয়ে বলছি, না মেনে নেওয়ার কি আছে
-হুমমম
-তোর আম্মুও জানে, আমি তোকে ভালবাসি
-তুই আম্মুকেও বলছিস!!
-হ্যা, আমি কাঁচা কাজ করি না, শুধু তোকে পটানোর অপেক্ষায় ছিলাম, যাক শেষ পর্যন্ত পটে গেছিস
-হুহহহহ পটেছি
-হুমম আমার অনেক পরিশ্রম হয়েছে, সুদে আসলে সব তুলে নিবো
-তাই??
-হুমমম
-আচ্ছা এখন ঘুম পাচ্ছে, কোথায় ঘুমাবো??
-আমার বিছানায়
-নাহহহহ
-ভয় কিসের??
-না, আমি নিচে ঘুমাই, তুই উপরে
-জ্বি না, একসাথেই ঘুমাবো
-না
-আর একবার না বললে আমি কিন্তু চিল্লাবো
-ওকে ওকে
,,
,,
দুইজন বিছানায় গিয়ে দুই পাশে শুয়ে পড়লো…
তিথি দুষ্টামি করে অনন্তর পায়ে একটা লাত্থি দিলো
-এ ঘুমের ডিস্টার্ব করবি না (অনন্ত)
-কি করছি আমি??(তিথি)
-ল্যাত্থ্যা লাত্থি করবি না
-ওকে
-হুমম ঘুমা
,,
,,
কিছুক্ষণ তিথি চুপ থাকে। অনন্ত উপর হয়ে শুয়ে ছিলো, তিথি অনন্তর পিঠের উপর গিয়ে চিত হয়ে শুয়ে পড়ে…
,,
,,
অনন্ত একটু ঘুমের ভান ধরলো কিছু বলল না। তিথি মনে মনে ভাবছে অনন্ত মনে হয় ঘুমিয়ে গেছে তাই অনন্তর পিঠের উপর আবার চিত হয়ে শুয়ে পড়লো আর অনন্তর গালে একটা কিস করলো…
-কি ম্যাডাম ঘুমাতে দিবেন না?? (অনন্ত)
-আচ্ছা এভাবে যদি ঘুমাই, তোমার কি সমস্যা হবে??(তিথি)
-এভাবে ঘুমাবে??
-হুমমম
-আচ্ছা তোমার যেটা ইচ্ছা ঘুমাও এভাবে
,,
,,
তিথি অনন্ত দুজনই ঘুমিয়ে গেলো…
সকাল বেলা…
তিথি উঠে দেখে অনন্ত বিছানায় নেই, তার মানে চলে গেছে…তিথি শুয়ে রাতের দৃশ্য গুলো মনে করলো আর মুচকি মুচকি হাসলো।
,,
,,
দেখতে দেখতে একটা মাস চলে যায়, অনন্ত আর তিথির মধ্যে এখন কয়েকটা সম্পর্ক, প্রেম, বন্ধুত্ব, ঝগড়ার সময় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, অফিসের বস, কিন্তু এখন বর বউ হওয়া বাকি আছে…..
,,
,,
তো একদিন অফিস শেষে…দুইজন একসাথে বাসায় ফিরছিলো..
-জানিস আজ রাতে ২টায় Argentina এর খেলা আছে, কিউট মেসি আজকে দুই তিনটা গোল অনায়াসে দিবে(তিথি)
-হে হে হে ও তো বুড়ো ভাম একটা, ও দিবে গোল। সকাল ৬ টায় ব্রাজিল এর খেলা আছে দেখি নেইমার গোল দিবে (অনন্ত)
-তুই ওকে বুড়ো বললি কেন??
-বুড়ো কে তো বুড়োই বলব
-তুই যেন কাকে সাপোর্ট করিস, ওই যে চামাড় নাকি নেইমার… ও হ্যা নেইমার, ও তো একটা শুটকি মাছ, ও তো বল ই রিসিভ করতে পারে না
-ওদের কথা বাদ দে, তুই কেমন পারিস সেটা বল
-তোর থেকে ভালো পারি এটা শিউর
-আমি তোর থেকে ভালো পারি, তুই তো ফুটবলই চিনিস না, তুই খেলবি ফুটবল!!!
,,
,,
ঝগড়ার এক পর্যায়ে…
-বিয়ে টা হোক, তোরে আমি বুঝামু চান্দু ফুটবল খেলা কাকে বলে(তিথি)
-আরে যা যা তুই কি করতে পারবি, সেটা আমার জানা আছে (অনন্ত)
,,
,,
তিথি অনন্তর কলার ধরলো আর বলল
-কাজ আর হয়রানি কাকে বলে তুই দেখবি(তিথি)
-তোর মাথায় সমস্যা হইছে, বাসায় গিয়ে পানি ঠাল যাহহ (অনন্ত এটা বলে তার বাসার সামনে নেমে গেলো)
,,
,,
তিথি রেগেমেগেই তার বাসায় গেলো। রাগের কারনে তিথি অনন্ত কে আর ফোন দেয়া না… অনন্তও দেয় না…
,,
,,
পরদিন সকাল বেলা…
অনন্ত অফিস যাওয়ার জন্য রেডি হইছে… এখন বের হবে। তখনই একজন চলে আসে…
-আপনি!!! আপনি এখানে কেনো??(অনন্ত)
-সরি আমাকে মাফ করে দাও (অনন্যা ফিরে আসছে, এসেই অনন্তর পায়ে ধরলো)
-আরে উঠেন উঠেন আপনি দোষ করেন নি আপনি মাফ চাইছেন কেনো??
-আমার ভুল হয়ে গেছে
-আরে আপনি কে?? আর আপনাকে চিনি না এসে মাফ চাইছেন আমার কাছে, আপনি তো দোষ ই করেন নি..
,,
,,
অনন্তর বাসায় অনন্যা আসছে, সবাই অবাক হয়ে দেখছে, কতজন ফিস ফিস করে কথা বলছে…
কথা বলতে বলতে তিথি আসে অনন্তর রাগ ভাঙানোর জন্য, এসে দেখে অনন্যা চলে আসছে। অনন্যা কে দেখে তিথির একটু ভয়ই লাগে…
,,
,,
-আপনি চলে যান (অনন্ত)
-তোমার সাথে আমার এখনো বৈবাহিক সম্পর্ক আছে (অনন্যা)
-কিচ্ছু নেই, আপনি যান
-আইন এর কাছে তুমি হেরে যাবে, আমার আর তোমার ডিভোর্স হয় নি
-তাই??
-হ্যা
-ওইতো তিথি এসে গেছে, ওই এদিকে আয়
,,
,,
তিথি কে দেখে অনন্যা অবাক হয়
-তিথি তুই?? (অনন্যা)
-…..(তিথি কোনো কথা বলে না, নিচের দিক তাকিয়ে আছে)
-তিথির আর আমার বিয়ে, আর বিয়ে টা আজকেই হবে (অনন্ত)
,,
-আমি হতে দিবো না (অনন্যা)
-তুই যা তো সেদিন যে কাজি অফিসে গিয়ে কাগজ টা আনলাম সেটা নিয়ে আয় (অনন্ত তিথি কে বলল)
তিথি গেলো কাগজ আনতে
-কিসের কাগজ??(অনন্যা)
-দেখলেই বুঝতে পারবেন (অনন্ত)
,,
,,
কিছুক্ষণ পর তিথি কাগজ টা এনে অনন্তর হাতে দেয়…
-এই যে এটা ডিভোর্স পেপার,, আমি এখনই সাইন করে দিচ্ছি (অনন্ত একটা কলম নিয়ে সাইন করে দিলো, আর কাগজ টা অনন্যার মুখে ছুড়ে মারলো, তারপর সেখান থেকে অনন্ত তার রুমে চলে গেলো)
,,
,,
বাসার সবাই যার যার কাজে গেলো, অনন্যা ও সাইন করে কাগজ টা খাবার টেবিলের উপর রেখে গেলো, তার চোখে পানি…. কিন্তু আজ সেটার কেনো মূল্য নেই…
,,
এদিকে অনন্তর রুমে..
তিথি একপাশে দাড়িয়ে আছে আর অনন্ত বিছানায় বসে আছে, অনন্তর রাগ দেখে তিথি ভয়ে চুপসে গেছে। অনন্ত তিথির দিকে তাকায়…
-এদিকে আয় (অনন্ত)
তিথি এসে অনন্তর পাশে বসলো..
-সকাল সকাল এখানে কেনো??(অনন্ত)
-রাগ ভাঙাগাতে আসছিলাম (তিথি)
-আমি রাগ করি নি,
-হুমমম
-আজ বিয়ে করবো, তুই রাজি
-হ্যা রাজি,
-আর আন্টি আংকেল??
-ফোন করলেই চলে আসবে
-হুমম তোর গলার আওয়াজ এত কম কেনো আজকে??
-ভয় পেয়েছি
-কাকে??
-তোমাকে
-কিহহ আমাকে ভয় পাওয়ার কি আছে আমি তো উল্টো তোমাকে ভয় পাই
-নাহহ তোমার আমার অনেক রাগ
-আরে তোমার উপর তো রাগ নেই
-কখনো তো রেগে আমাকে মারবে না (তিথি বাচ্চা দের মতো কান্না করে বলল)
-হা হা হা আরে না পাগলি(অনন্ত এক হাত দিয়ে তিথি কে কাছে টেনে নিলো)
চলবে…