#Mr_Devil
#Part_32,33
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
Part_32
.
ইয়াশ– শুধু মন নয় সব ব্যাপারেই জিতে যায়,,কয়েকবার তো আমাকেও টেক্কা দিয়েছিল জিতেও গিয়েছিল
অনিমা বেগম– তাই নাকি
ইয়াশ– হুম,,,কিন্তু অবশ্য শেষে বিজয়টা আমারই লাভ হয়, তাই না মিস রশ্নি এনায়াত খান? (বাঁকা হেসে)
রশ্নি বুঝতে পারলো ইয়াশ ওর কথার শেষ লাইন দ্বারা কি বুঝিয়েছে
রশ্নি কিছু বললো না শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো
…
.
অনিমা– আচ্ছা মেইন পইন্টে আসি, যেটা বলতে এসেছিলাম
ইয়াশ– হুম বলো
অনিমা– আমি তোমার আর রশ্নির বিয়ের উপলক্ষে একটা পার্টি রাখতে চাই
ইয়াশ– পার্টি?
— হুম আর সেটা কালকের মধ্যেই
ইয়াশ– কালকের মধ্যেই মানে? মম তুমি জানো আমার অফিসে কত কাজ থাকে সো আমার পক্ষে পসিবল না কালকে পরশুর মধ্যে কোনো পার্টি এটেন্ড করা
— ওহ প্লিজ,,ইয়াশের আহমেদএর জন্য পসিবল না এমন কিছু নেই
রশ্নি– যাক এর মাও এর ব্যাপারে একটু হইলেও কিচ্ছা জানে? (মনে মনে)
ইয়াশ– বাট মম,,,,,,
অনিমা– আমি কিছু শুনছি না,,আর হ্যা আজ তোমরা শপিং এ যাচ্ছ,,,নাও বায়
রশ্নি ইয়াশের পিছন দিয়ে এসে বললো– আপনার আম্মু তো দেখছি আপনার থেকেও দুই কদম এগিয়ে?
রশ্নির কথায় ইয়াশ চোখ রাঙিয়ে ওর দিকে তাকালো
রশ্নিকে আর পায় কে? এক সেকেন্ডেই ফুরুত,,,
.
? ? ?
Tu aise juda hua
Main raat, tu subah hua
Tujh pe main marta raha
Tujhe yaad main karta raha
Bhula ke gaya ishq tera
Rula ke gaya ishq tera
Rula ke gaya ishq tera
Rula ke gaya ishq tera
Kaise chup main karaun ve
? ? ?
নেহা নিজের রুমে বসে গান শুনছিলো আর বারবার নাক মুছে টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলছিল তখনই সেখানে নিশা আসে আর এসেই গানটা বন্ধ করে দেয়
নিশা– কি হয়েছে তোর? কে মরেছে যে এসব ছেঁকাখুড়ি গান শুনছিস
নেহা– আমার মনটা মরে গেছেড়ে আপি?
নিশা– মানে? ?
নেহা– আপি প্লিজ এমন বিহেভ করিস না যেন তুই কিছুই জানিস না,,
আমার ইশু আমাকে না জানিয়ে কিভাবে বিয়ে করে ফেললো?
এখন তো বাসার সকলেও তাদের মেনে নিল,,দেখলি না কাল তাদের বিয়ের জন্য পার্টি রাখলো আন্টি?
নিশা– আরেহ কিছু হবে না,,তোর ইয়াশ তোর কাছেই থাকবে, হি ইজ স্টিল ইওরস
নেহা– মানে??
নিশা– মানে দেখতে থাকে আগে আগে হয় কি,,
নেহা– তুই কি করবি আপি?
নিশা– হুহ,এবার তুই আমার গেইম দেখবি,,
এই,,আগে তুই তোর এই কান্না থামা জাস্ট অসহ্য লাগছে,,
নেহা তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে নিলো
তারপর নিশা ওকে ওর পুরো প্ল্যানটা বললো
প্ল্যান শুনে খুশি হয়ে নেহা গিয়ে নিশাকে জড়িয়ে ধরলো
— তুই সত্যিই আমার ইশুকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিবি?
নিশা– হ্যা দিব এবার ছাড় আমাকে
নেহা নিশাকে ছেড়ে দিয়ে আয়নার কাছে চলে গেল ওর মেকআপ ঠিক করতে যেটা কান্না করার কারনে নষ্ট হয়েছিল
নিশা নেহাকে একবার দেখে নিলো তারপর তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে
বললো– আহারে আমার বেচারি ভোলা ভালা বোনটা,,ভাবছে আমি ওকে ওর ইশু না টিশু ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এতকিছু করবো,,তুই তো আর জানিস না যে এগুলো আমি শুধু এই বাড়ির সম্পত্তি হাসিল করার জন্য করছি
কজ, ইয়াশের সাথে বিয়ে হলে এই বাড়ির পুরো সম্পত্তি তুই পাবি আর তারপরে তোর থেকে সেটা কিভাবে ছিনিয়ে নিতে হয়ে সেটা আমার খুব ভালো ভাবেই জানা আছে (মনে মনে)
এগুলো ভেবে নিশা বাঁকা হেসে সেখান থেকে চলে গেল
.
★—— বিকাল ——★
রশ্নি আর ইয়াশ শপিং করতে বেরিয়েছে
রশ্নির ও অনেক জিনিষ পত্র লাগবে কজ ইয়াশ ওকে তুলে নিয়ে এনে বিয়ে করেছে তাই ওই বাড়ি থেকে কোনো জামা কাপড় আনা হয়নি
আর ইয়াশ ওই বাড়ির কিছু রশ্নিকে আনতেও দিবে না
…
এদিকে রশ্নির মেজাজ প্রচুর খারাপ হয়ে আছে কারন শপিং মলের এমন কোনো মেয়ে নেই যে ইয়াশের দিকে না তাকিয়ে আছে
ও রাগ কেন করছে তা ওর জানা নেই কিন্তু প্রচুর ইরিটেশন বোধ করছে
ইয়াশের ঐ সবে খেয়াল নেই ও শপিং এই ব্যাস্ত
ইয়াশ– রশ্নি ওই শপটা তে চলো তো
রশ্নি একটা মেয়েকে পাঞ্চ দেখাচ্ছিল তখনই ইয়াশ ওকে টেনে একটা দোকানে নিয়ে যায় আর রশ্নিও মেয়েটাকে ভেংচি কেটে চলে যায়
ঘন্টা খানেক পর ওরা শপিং করে মল থেকে বের হলো কিন্তু সেখানে ঘটলো আরেক বিপত্তি
কারন মলের গেইট থেকে বের হয়ে ওরা যখন হাটছিল তখন একটা মেয়ে এসে ইচ্ছা করে ইয়াশের সাথে ধাক্কা খায়
ইয়াশ সরি বলে চলে আসতে নেয় কিন্তু মেয়েটা নেকামী করে বলে– ইটস ওকে হ্যান্ডসাম (চোখ মেরে)
তারপর মেয়েটা সেখান থেকে চলে যায়
এটা দেখে ইয়াশ রশ্নির দিকে তাকায়
বুঝতে পারলো রশ্নি সাংঘাতিক লেভেলের রেগে আছে
তাই ওকে আরেকটু রাগিয়ে দেওয়ার জন্য বললো–
ইয়াশ– রশ্নি,,,মেয়েটা কিন্তু অনেক জোস ছিল তাই না?
রশ্নি– আমার মাথা ব্যথা করছে বাসায় চলুন,,,
বলেই রশ্নি চলে যাচ্ছিল তখনই ইয়াশ গিয়ে রশ্নির সামনে দাঁড়ালো
ইয়াশ– কি গো সুইটহার্ট? জ্বলছো নাকি?
রশ্নি– লাইক সিরিয়াসলি? শুনুন একটা মানুষ তাকে নিয়েই জ্বলে যাকে সে ভালোবাসে আর সেখানে আপনাকে নিয়ে জলাটা হাস্যকর
ভুলে যাবেন না যে আপনি আমাকে তুলে এনে বিয়ে করেছেন
ইয়াশ– রশ্নি কথাকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?
রশ্নি– যা সত্যি তাই বলেছি,,আপনি একজন চরিত্রহীন লোক ছাড়া আর কিছু না
— রশ্নি (চিৎকার করে)
ইয়াশ থাপ্পড় মারার জন্য হাত উঠিয়েছিলো
কিন্তু রশ্নি ভয় না পেয়ে উল্টো একবার ইয়াশের হাতের দিকে তাকিয়ে তারপর ওর চোখে চোখ রেখে দাঁড়ালো
ইয়াশ হাত নামিয়ে নিলো
ইয়াশ– চোখ নীচে (শান্ত ভাবে)
রশ্নি এখনো ওভাবেই তাকিয়ে আছে
ইয়াশ– সত্যিই তোমার তারিফের প্রশংসা না করলেই নয়
ইয়াশের কথা শুনে রশ্নি স্মিথ হাসলো যা ইয়াশের কাছে তাচ্ছিল্য করা মনে হলো
রশ্নি ইয়াশের একদম কাছে গিয়ে দাঁড়ালো
রশ্নি ইয়াশের কিছুটা শর্ট হওয়াতে নিজের পা একটু উঁচু করে ইয়াশের ঘাড় পেঁচিয়ে ধরে দাঁড়ালো
তারপর ওর তর্জনী আঙ্গুলের নখ দিয়ে ইয়াশের মুখে কপাল থেকে থুতনি পর্যন্ত স্লাইড করতে করতে
বললো–
ইয়াশ আহমেদের বউ হয়ে সাহসী না হলে চলবে নাকি? (ফিসফিসিয়ে)
ইয়াশ– রশ্নি পাবলিক প্লেসে এসব কি করছো? ছাড়ো আমাকে
রশ্নি– ও মাহ,,এই আমি কি দেখছি,,সব সময় আমাকে জোর করে কাছে নিয়ে আসা ইয়াশ আহমেদ আজ নিজেই আমার থেকে ছাড়া পেতে চাইছে
ইয়াশ– বেশি করে ফেলছ কিন্তু,,
রশ্নি পরক্ষনেই ইয়াশকে ধাক্কা দিয়ে সরে দাঁড়ালো
— তো আপনি কম কি করেছেন?
— চুপচাপ গিয়ে গাড়িতে বস
রশ্নি– আমি আপনার সাথে যাবো না (দুইহাত ভাঁজ করে)
ইয়াশ– দেখো আমাকে রাগিয়ে দিও না,,ভালো ভাবে বলছি গিয়ে গাড়িতে বসো
রশ্নি– বললাম তো আমি আপনার সাথে যাবো না,,
ইয়াশ– ঠিক আছে, থাক তুই,,আমি গেলাম
বলেই ইয়াশ গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে গেল
রশ্নি– যাহ এইতো চলে গেল! কিন্তু আমি এখন কিভাবে যাবো? আমার পার্সটাও তো ওই শপিং ব্যাগ গুলোর সাথে গাড়িতে রয়ে গিয়েছে,, তাহলে এখন কিভাবে যাবো?
ধুর রাগের মাথায় নিজের উপর কন্ট্রোলও থাকে না,,কি থেকে কি বলে ফেললাম,,
রশ্নি কিছুক্ষন ভেবে ডিসিশন নিলো
— একটা কাজ করি,,হাটা শুরু করে দেই
হেটে হেটে বাড়ি ফিরে গিনিস বুকে নিজের নাম লিখবো
ভেবেই রশ্নি হাটা শুরু করলো
বেশ কিছুটা পথ যাওয়ার পর রশ্নি একটা ব্রিজে এসে থামলো
তারপর ডিসাইড করলো
ওখানে একটু রেস্ট নিয়ে আবার হাটা শুরু করবে
কিছুক্ষন পর রশ্নি আবার উঠে দাঁড়ালো হাঁটার জন্য
কিন্তু একটু আগানোর পরই বুঝতে পারলো ওর পিছনে কেও দাঁড়িয়ে আছে, তাই ও থেমে গেলো
তারপর পিছনে ফিরে দেখলো
এখানে একজন নয় কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে
ওদের দেখা মাত্রই রশ্নি ওদের চিনে গেল
এরা ওই লোক গুলোই যারা ওইদিন অফিস থেকে ফেরার সময় রশ্নিকে টিস করেছিল
কিন্তু আজ ওদেরকে দেখে আর রশ্নির মুখে ভয় নয় বরং বাঁকা হাসি ফুটে উঠলো
ওদের লিডারটা বলে উঠলো
— কি গো সুন্দরী একা একা যাচ্ছ? সঙ্গী লাগবে নাকি?
রশ্নি কিছু বলছে না শুধু মাথা নিচু করে ওদের কথা গুলো শুনছে
ছেলেটা একটা বিকট হাসি দিয়ে বললো
— হুহ,,ওইদিন তো তোর হিরো এসে তোকে বাচিয়েছিলো কিন্তু আজ আমাদের হাত থেকে তোকে কে বাঁচাবে?
বলেই সবাই বিশ্রী ভাবে হাসতে লাগবো
রশ্নির এবার সত্যি সত্যি রাগ উঠে গেল
ও মাথা উঠিয়ে বললো
— হুহ,,ওইদিন ওই লোকটা ছিল বলেই তোরা বেঁচে গিয়েছিলি বাট আজ…? কিছুক্ষন থেমে বললো
*নো চান্স*
— মানে (ভ্রূ কুঁচকে)
— উমম
রশ্নি ওর দুই হাত একসাথে করে ঘারের পিছনে নিয়ে অলসতা ভেঙে বললো
— মানে,,,ভেবেছিলাম আজ শুধু তোদের উপর হাতটা পরিষ্কার করে নিব কিন্তু না তা তোদের পছন্দ হলো না
,,,,,,আচ্ছা যাই হোক,,আমি এবার যাই
বলেই রশ্নি চলে যাচ্ছিল
যা দেখে ওরা হেবলার মতো তাকিয়ে রইলো
তখনই ওদের মধ্যে থেকে একজন সামনে এসে রশ্নিকে ধরতে নেয়
কিন্তু তার আগেই রশ্নি ঘুরে ছেলেটার হাত মুচড়ে ধরে
যার ফলে হাতটা থেকে বিকট একটা আওয়াজ হয়ে
আর ছেলেটা চিৎকার করে উঠে
— গেল রে গেল আমার হাতটা ভাইঙ্গা গেল
তারপর রশ্নি ছেলেটাকে বুক বরাবর লাথি দিয়ে ফেলে দিলো
আর ছেলেটা ওখানেই পরে পরে হাত ধরে কাঁদতে লাগলো
এটা দেখে তাদের গ্রূপের আরেকটা ছেলে হুঙ্কার দিয়ে উঠে
— এ্যায়য়য়ইইইইই,,,,,,,,,,,,
রশ্নি– হেল,,ডোন্ট শাউট,,আমায় চিল্লাচিল্লি একদমই পছন্দ না
রশ্নির কথায় ছেলেটার রাগ উঠে যায়
ছেলেটা গিয়ে রশ্নিকে মারতে নেয় কিন্তু তার আগেই রশ্নি ওই ছেলেটার চুলের মুঠি ধরে ফেলে
আর ছেলেটাকে টেনে নিয়ে গিয়ে ব্রিজের সাইডের একটা পিলারের সাথে সর্ব শক্তি দিয়ে বাড়ি মারে
আর ছেলেটা ওখানেই বেহুশ
রশ্নি– হুহ,, হাইটে তো আমার থেকেও ছোট কিন্তু চুল আমার থেকে বড় নিয়ে ঘুরস,,?
এবার ওদের লিডারটা
পিছন থেকে গিয়ে রশ্নির হাতটা খপ করে ধরে ফেলল
যা রশ্নি বুঝতে পেরে অন্য হাত দিয়ে ছেলেটার চোখ বরাবর হাতের শক্ত জায়গাটা দিয়ে জোরে বাড়ি দিলো
যার ফলে ছেলেটা ওর চোখ সামলাতেই ব্যাস্ত হয়ে পড়লো আর ওর মাইন্ডও অন্য কিছু ভাবতে পাড়ার পরিস্থিতিতে ছিল না
যার সুযোটাই রশ্নি নেয়
আর ওর পা দিয়ে ছেলেটার পায় ল্যাং মেরে ফেলে দেয়
তারপর ওর শক্ত স্নিকার্স(sneakers) দিয়ে ছেলেটার গাল জোরে চেপে ধরে
কিন্তু কত্ব বড় সাহস এগুলো দেখেও আরেকটা ছেলে এগিয়ে আসে
রশ্নি– উম,,নাও, আই এ্যাম বিকম সো টায়ার্ড
তাই তোকে আর মারার মুড নেই
তাই যদি নিজের ভালো চাস,, তাহলে চলে যা
কিন্তু ছেলেটা পিছু পা হলো না
উল্টো আরো দৌড়ে রশ্নির কাছে যেতে চাইল
কারন ও মনে করেছে যেহেতু রশ্নি একজনকে পা দিয়ে ধরেই রেখেছে
আর ছেলেটা যেন উঠতে না পারে তার জন্য রশ্নি সেখান থেকে নড়বে না
কিন্তু ছেলেটা রশ্নির একটু কাছে আসার সাথে সাথেই রশ্নি একটা
বরফ এর গোলা(এক ধরণের আইস ক্রিম)
ওয়ালার দোকান থেকে একটা রঙের বোতল উঠিয়ে নিয়ে ছেলেটার মাথায় মেরে দেয়
আর সাথে সাথে ছেলেটা মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে
এবার রশ্নি আরেকটা ছেলের দিকে তাকায়
ওটাই ওদের গ্রূপের লাস্ট সুস্থ থাকা ছেলে
রশ্নি ওর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসে
যা দেখেই ছেলেটা “আম্মু” বলে চিৎকার করে দৌড় দেয়
— ???
রশ্নি নিজের হাসি থামিয়ে বললো
— তোরা সবাই কান খুলে শুনে রাখ
স্পেশালি তুই (লিডারটাকে উদ্দেশ্য করে বললো যাকে ও পা দিয়ে আটকে রেখেছিল)
ছেলেটাকে আরো জোরে চেপে ধরে বলল
— আমি কোনো সিনেমার অবলা নায়িকা নই যে আমাকে বাঁচানোর জন্য আমার হিরো এসে গুন্ডাদের সাথে ফাইট করবে
[[কজ, আমার জামাই তো নিজেই একখান ভিলেন (বিড়বিড় করে)]]
রশ্নি আবার বলা শুরু করলো,,,,,,
রশ্নির কোনো হিরোর প্রয়োজন নেই ও একাই একশ
,,,,,,,,,,,,,,,এই কথাটা মাইন্ডে ফিট করে রাখ
বলে রশ্নি ছেলেটার মুখে আরেকটা লাথি দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে চাইল
কিন্তু সামনের দিকে তাকিয়ে দেখল
সেখানের সবাই ওর এসব কান্ড দেখছিল
আর ওর কথার শেষ লাইনটা শুনে সবাই হাত তালি দিয়ে উঠলো
অনেকে তো শীষও বাজাচ্ছে
হঠাৎ রশ্নির চোখে পড়লো সবার মধ্যে তার পূর্ব পরিচিত একটা মুখও আছে যে সবার সাথে দাঁড়িয়ে রশ্নির জন্য তালি বাজাচ্ছিলো
আর সেই লোকটা হলো ইয়াশ
ইয়াশ গিয়ে রশ্নির সামনে দাঁড়ালো
— দ্যাটস লাইক মাই শেরনি,,,(রশ্নির গালে হাত রেখে বললো)
রশ্নি ইয়াশের হাতটা সরিয়ে দিল
— হুহ শেরনি?,,,,বাট নট ইওরস
রশ্নি– আচ্ছা শুনুন,,
ইয়াশ– বাহ বাহ হঠাৎ এত মিষ্টি কথা,,
রশ্নি– কিছু না,,জাস্ট ওনার(আইসক্রিম বিক্রেতাটাকে দেখিয়ে)” বোতলের টাকা টা দিয়ে দিন
ওই ছেলেটাকে মারতে গিয়ে আমি ওনার বোতলটা ভেঙে ফেলেছি ?
দোকানদার– আরেহ আফা,, আপনার সাহসিকতা দেইখাই আমার মন জুরাই গেসে,
কয়ডা মাইয়া পারে এমন নিজের লাইগা লড়তে,,
এই বোতলের টাকা আপনার আর দিতে হইবো না
লোকটা ওদের আইসক্রিমও অফার করেছিল কিন্তু ইয়াশ খেতে দেয়নি
রশ্নির কোল্ড এলার্জি আছে বলে
রশ্নি– আপনি জানলেন কিভাবে যে আমার কোল্ড এলার্জি আছে?
ইয়াশ– এইটুকু ইনফরমেশন জোগাড় করা আমার জন্য কোনো ব্যপারই নয়
রশ্নি– ?
ইয়াশ– আপনার বাহুবালি গিরি করা হয়ে থাকলে এবার গিয়ে গাড়িতে বসুন প্লিজ,,
রশ্নি– আমি বলেছি না আপনার সাথে যাবো না (অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে)
ইয়াশ– এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো
রশ্নি– ওয়েট আ মিনিট,,,আপনি তো আমাকে রেখে চলে গিয়েছিলেন তাহলে আবার এখানে প্রকট হলেন কিভাবে?
ইয়াশ– ফার্স্ট অফ অল আমি তোমাকে রেখে না বরং তুমি আমার সাথে যেতে চাওনি তাই আমি গিয়েছিলাম
আর দ্বিতীয়ত আমি তোমাকে রেখে সেখান থেকে চলে যাবো তুমি ভাবলেই বা কি করে? আমি তোমার পিছনেই ছিলাম
রশ্নি– বাহ বাহবাহ বাহ ??
মানে আপনি দেখলেন যে আমাকে কয়েকজন ছেলে রাস্তায় টিস করছে তা দেখেও আপনি কিছু বললেন না
বরংচ চুপচাপ দেখে মজা নিলেন?
ইয়াশ– আমি কিছু করার আগেই তো তুমি ওদের সাবান ছাড়া ধুয়ে দিলে
রশ্নি– ?
ইয়াশ– অনেক হয়েছে এবার চলো
রশ্নি– আমি আপনার সাথে যাবো না?
ইয়াশ– হুহ,,এই কয়েকজনকে মেরে ভেবো না যে আমার সাথেও পেরে উঠবে,,তাই ভদ্র মেয়ের মতো চলো
— ??
ইয়াশ গিয়ে রশ্নিকে কাঁধে উঠিয়ে নিলো
যা দেখে সবাই আবার শীষ তালি দিয়ে উঠলো
ইয়াশ রশ্নিকে নিয়ে গিয়ে কারে বসিয়ে দিল
তারপর নিজেও বসে পড়লো
.
গাড়ি আপন গতিতে চলছে
আর রশ্নি জানালার দিকে তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে
এটা দেখে ইয়াশ রশ্নিকে আরেকটু ক্ষেপিয়ে দিতে চাইলো
— জানো তো রশ্নি একটা হিসেব কিছুতেই মিলাতে পারছি না
আমার বউ এত্তো ভালো ফাইট করতে পারার তাহলে আমার সামনে শেরনি থেকে ভিজে বিড়াল কিভাবে হয়ে যায় ?
রশ্নি কিছু বললো না
ইয়াশের কথার উত্তর ওর কাছে নেই
সত্যিই তো ইয়াশের সাথে কেন পেরে উঠতে পারে না
ইয়াশ– আচ্ছা ছাড়ো এইসব কিন্তু একটা কথা তো সত্যিই
যে একটা মেয়ে কখনোই একটা ছেলের শক্তির সাথে পেরে উঠে না
সেখানে তুমি এত্তো গুলো ছেলেকে এক ধুয়ে দিলে
কিভাবে পসিবল?
রশ্নি– নরমাল মেয়েদের কথা জানি না তবে একজন কারাটে চ্যাম্পিয়নের পক্ষে এইসব কোনো ব্যপারই না
ইয়াশ– রিয়েলি? তুমি কারাটে চ্যাম্পিয়ন?
ইয়াশের কথার উত্তরে রশ্নি একটা বাঁকা হাসি দিল
ইয়াশ– বেচারি যদি জানতো যে ওর জামাই কারাটে তে গোল্ড মেডেলিস্ট (মনে মনে)
ভেবেই ইয়াশ একবার রশ্নির দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো
.
ইয়াশ এইগুলো ভাবছিল আর ড্রাইভিং করছিল তখনই রশ্নি চিৎকার করে উঠে
— স্যার স্যার স্যার,, গাড়ি থামান
— কেন?
— আমি ভেল পুরী খাবো
ইয়াশ– নো,, আমি কোনো ধরনের স্ট্রিট ফুড এলাও করছি না
রশ্নি– না আপনি আমার সাথে এমন করতে পারেন না,,আমি খাবো মানে খাবোই?
আমি আজ পর্যন্ত রাস্তায় যতবার ভেল পুরী দেখেছি আমি খেয়েছি
তাই আজ কোনোভাবেই আমি আমার রেকর্ড ব্রেক করবো না??
ইয়াশ– রশ্নি প্লিজ জেদ করো না
রশ্নি এবার চিৎকার করে কান্না শুরু করে দিলো
আর ইয়াশের কাছে মনে হচ্ছে এই আওয়াজে যেন ওর কম গুলোর সাথে সেখানে উপস্থিত থাকা প্রতিটা মিরর গ্লাস কাঁপছে যেন এখনই ভেঙে যাবে
ইয়াশ– আজব যন্ত্রনা তো,,,আচ্ছা চলো খাওয়াচ্ছি
বলেই ইয়াশ রশ্নিকে নিয়ে ভেল পুরীর দোকানে গেল
রশ্নি– শুনুন মামা,,আপনার দোকানে যত মরিচ,গুঁড়া মরিচ আছে
তা সব আমার ভেল পুরিতে ঢেলে দিন
ইয়াশ– এত্তো ঝাল খেতে পারবে?
রশ্নি– আমি আপনার মতো ভীতু নই যে এইটুকু ঝাল খেতে পারবো না
ইয়াশ– ভীতু কাকে বলছো?
রশ্নি– আপনাকে?
রশ্নির কথায় রেগে গিয়ে ইয়াশ
ভেলপুরীওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে
রশ্নির পুরী থেকেও ডাবল ঝাল দিয়ে এক প্লেইট ভেল পুরী বানিয়ে দিতে বললো
.
ভাবে এসে নিয়ে তো নিয়েছে ডাবল ঝাল দিয়ে
কিন্তু এখন একটা কামড় দেওয়ার সাথে সাথেই ইয়াশের পুরো মুখ লাল হয়ে গিয়েছে
কিন্তু রশ্নি তো তা ফুল ইনজয় করছে
রশ্নি– আহারে বেচারা
সাদা মুখটা লাল বানাই ফেলছে আমারে টেক্কা দিতে যাইয়া??
দেখি তো একটু খায়া?
রশ্নি ইয়াশের প্লেট থেকে নিয়ে একটা পুরো পুরী খেয়ে নিলো
সত্যিই খুল ঝাল কিন্তু রশ্নি খেতে পারবে বাট ইয়াশের যে সামান্য ঝালও সহ্য হয়ে না সেখানে ও ডাবল ঝাল দিয়ে নিয়েছে
ইয়াশ একটা কোনো রকম ভাবে খেয়েছে
কিন্তু প্রচুর হাপাচ্ছে
চোখ,গাল, নাক তো সেই লেভেলের লাল হয়েছেই কিন্তু ঠোঁট গুলো একদম রক্ত লাল হয়ে আছে
যেন টোকা দিলেই রক্ত ঝরবে
রশ্নির ইয়াশের জন্য এবার একটু খারাপ লাগছে
রশ্নির খাওয়া অনেক আগেই শেষ
রশ্নি ইয়াশের হাত থেকে ওর প্লেইটটা নিয়ে
ইয়াশের গুলো নিজে খাওয়া শুরু করলো
রশ্নি– এহ, ঢং,,,একটুও ঝাল হয়নি
এইটুকু ঝাল খেয়েই এই অবস্থা
এমনে করে রশ্নি সব গুলো খেয়ে নিল
আর ইয়াশ দুই হাত গুঁজে ওকে দেখছে
–আমি জানি তোমারও ঝাল লাগছে
কিন্তু আমার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তুমি আমার গুলো খাচ্ছ (মনে মনে)
খাওয়া শেষে ওর বিল দিয়ে চলে আসলো
ইয়াশ গাড়ি ড্রাইভ করছে কোনো রকম
এত পানি খাওয়ার পরও ওর ঝাল এখনো একটুও কমেনি
রশ্নি– একদম ভালো হয়েছে বেশি বাড়াবাড়ি করার ফল
একটা খেয়েই বেহুশ আবার আসছিল আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ডাবল স্পাইসি প্লেইট খেতে হুহ ঢং (ব্যাঙ্গ করে)
ইয়াশ এবার জোরে গাড়ি ব্রেক করলো
রশ্নি– আরেহ বাচ্চেকি জান লোগে কেয়া ??
ইয়াশ ওর সিট বেল্ট খুলে
গিয়ে রশ্নির উপর বসলো
রশ্নি– আরেহ আরেহ আপনি কি করছেন?
এই হাতির মতো শরীর নিয়ে আমার মতো একটা বাচ্ছা মেয়ের উপর বসছেন,,
ইয়াশ রশ্নির উপর ভর দেয়নি
কিন্তু তবুও রশ্নি ভয় এসব বলে যাচ্ছে
কিন্তু ইয়াশ ওর কোনো কথায় কান না দিয়ে ডাইরেক্ট ওর দুই গালে হাত দিয়ে মুখটা সামনে নিয়ে আসলো
তারপর টুপ করে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বসিয়ে দিল
রশ্নি বাধা দিতে পারছে না নাকি চাইছে না সেটা বুঝে উঠার অবস্থায় ও এখন নেই
রশ্নি কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে শান্ত হয়ে বসে রইল
প্রায় একঘন্টা পর ইয়াশ ওর কাছ থেকে সরে এলো
তারপর নিজের সিটে বসে আবার ড্রাইভিং শুরু করলো
এতক্ষনে ওর ঝাল টা মিটেছে
তাই এখন শান্তি সহিত ড্রাইভ করতে পারছে
এদিকে রশ্নি লজ্জায় বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে
যা বুঝতে পেরে ইয়াশ রশ্নিকে আর চোখে দেখে মুচকি হাসছে
।
।
।
চলবে,
#Mr_Devil
#Part_33
#Writer_Aruhi_Khan (ছদ্দনাম)
।
।
।
আজ ইয়াশ আর রশ্নি বিয়ের উপলক্ষ্যে বাসায় পার্টি রাখা হয়েছে
সেখানে যে যার মত ইনজয় করছে কিন্তু ইয়াশের চোখ রশ্নি দিকেই আটকে আছে
কালো সিল্কের শাড়ি যার চিকন পারটাও কালো কিন্তু অনেক শাইনি
সাথে হাই নেক & ফুল স্লিভস ওয়ালা ব্লাউজ
হালকা পার্টি মেকআপ ?
কানে ব্ল্যাক স্টোনের লং ইয়ারিংস
আর গলায় জাস্ট নরমাল একটা পেন্ডেন্ট যা সবসময় রশ্নির গলায় থাকে
আর কোমর পর্যন্ত স্ট্রেইট চুল গুলো সাইডে শিথি দিয়ে ছেড়ে রাখা
এই সিম্পল লুকেও ইয়াশের কাছে রশ্নিকে অপ্সরী লাগছে?
কিন্তু ইয়াশকেও আজ অনেক সুন্দর লাগছে
ফুল ব্ল্যাক সুট, হাতে ব্র্যান্ডেড ঘড়ি, চুল গুলো স্পাইক করা আর কানে একটা ব্লুটুথ
(এইটা কেন লাগাই রাখছে হেইয়া মুই জানি নট?)
আর বেশরম ছেমরি গুলা মাসুম ইয়াশটারে চোখ দিয়ে গিল্লা খাইতাছে?
কিছুক্ষন পর সেখানে উপস্থিত হলো
নিশা আর নেহা
ওরা দুইজন দেখতে এমনিও অনেক সুন্দর কিন্তু আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে
রাফি তো ওকে হা করে দেখছে
নেহা সেই কখন থেকে ইয়াশকে নিজের দিকে আকর্ষিত করতে চাচ্ছে কিন্তু ইয়াশ রশ্নিকে দেখতে ব্যাস্ত
ইয়াশ গিয়ে রশ্নির পাশে দাঁড়ালো
রশ্নি ওকে দেখেও ইগনোর করলো
যা দেখে ইয়াশ রেগে যায়
আর পিছন থেকে রশ্নির কোমরে হাত দিয়ে চেপে ধরে
রশ্নি– কি করছেন আপনি?
ইয়াশ– এবার বুঝবে আমাকে ইগনোর করার ফল
রশ্নি– প্লিজ আপনার হাতটা বের করুন, সবাই দেখছে
ইয়াশ– আমাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করো না,,কেউ দেখছে না
রশ্নি– আপনি,,,,,,,,
তখনই সেখানে নেহা আর নেহার কিছু ফ্রেন্ডস এসে উপস্থিত হয়ে
নেহা– হে গাইজ,,,,
ইয়াশ– তোমার কি কোনো ইম্পরট্যান্ট কথা আছে?
নেহা– এত রুডলী বিহেভ করার কি আছে মিস্টার চার্ম?
রশ্নি– মিস্টার চার্ম না মিস্টার ডেভিল (বিড়বিড় করে)
কিন্তু ইয়াশ রশ্নির কথা স্পষ্ট শুনতে পেল
তাই ওকে চোখ রাঙিয়ে চুপ থাকতে বললো
ইয়াশ– তো নেহা কি বলছিলে যেন তুমি?
নেহা– হ্যা,,সো মিট মাই ফ্রেন্ডস রেবেকা,লিনা আর রনিত
লিনা রশ্নির দিকে হাত বাড়ালো শেক করার জন্য
রশ্নিও হাত মিলিয়ে নিলো
কিন্তু রেবেকা নেহার পাশে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
রশ্নিও ওর দিকে তাকালো না
এবার রনিতও শেক করার জন্য রশ্নির দিকে হাত বাড়ালো
কিন্তু রশ্নি ওর হাত ধরার আগেই ইয়াশ রনিত এর হাতটা ধরে নেয়
ইয়াশ– নাইস টু মিট ইউ (মিথ্যে হাসি দিয়ে)
রনিত– নাইস টু মিট ইউ টু
ইয়াশের হাত ধরায় রনিত ক্ষেপে যায় কিন্তু তারপরও নিজের মুখে ডামি স্মাইল বজায় রাখে
ওদের সাথে কিছুক্ষন কথা বলে ইয়াশ রশ্নিকে নিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়
রশ্নি আর ইয়াশ দাঁড়িয়ে ছিল তখনই ইয়াশের চোখ যায় নেহার দিকে
ঐও শাড়ি পড়েছে
রেড কালার
চিকন স্লিভের গোল্ডের ব্লাউজ
আর শাড়িটা একদম পাতলা হওয়াতে ওর পুরো পেট প্রায় দেখা যাচ্ছে
ওকে দেখেই ইয়াশ মুখ ছিটকে নিলো
নেহাকে ও ছোট থেকেই পছন্দ করে না
তারপর রশ্নির দিকে তাকিয়েও দেখলো
রশ্নিও পাতলা সিল্কের শাড়ি পড়েছে কিন্তু সেফটিপিন দিয়ে নিজেকে পুরো প্যাক করে রেখেছে
তার উপর কোমর পর্যন্ত,ফুল হাতা ওয়ালা ব্লাউজ তো আছেই
— এর জন্যই তোমাকে নিজের ওয়াইফ হিসেবে চুস করেছি (মনে মনে)
ইয়াশ এসব ভাবছিল তখনই ওকে একজন লোক ডাক দিলো
ইয়াশ– সুইটহার্ট আমি এখনই আসছি,,সে পর্যন্ত তুমি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে
রশ্নি– আমি আবার কই যামু?(মনে মনে)
— হুম
ইয়াশ ওই লোকটার কাছে গেল
আর রশ্নি এদিকে একা একা দাঁড়িয়ে ছিল
তখনই ওখানে রনিত আসে
— এখানে একা দাঁড়িয়ে কি করছো?
রশ্নি– আমার নানীর বিয়া লাগছে তাই নাচতাছি আয় তুইও জইন কর? (বিড়বিড় করে)
রনিত– কিছু বললে?
রশ্নি– না না কিছু না
বেশ কিছুক্ষণ হলো
রনিত রশ্নির সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে, কিন্তু রশ্নির ওর মতলব একদমই ভালো ঠেকছে না
রশ্নি বুঝতে পারছে যে রনিত একটা সুযোগ খুঁজছে ওকে টাচ করার জন্য
রশ্নির এবার ভয় হচ্ছে,,না রনিতের জন্য নয়,,
বরংচ নিজের জন্য
কজ, কখন জানি ও রনিতকে মেরেই বসে
শুধু পার্টিটা নষ্ট হয়ে যাবে বলে কিছু বলতে পারছে না
রনিত এখন রশ্নির দিকে এগোতে শুরু করেছে
রশ্নির খুব আনইজি ফিল হচ্ছে
রনিত আস্তে আস্তে রশ্নির কোমরের দিকে হাত বাড়াতে শুরু করলো
এদিকে রশ্নি ঘামতেই শুরু করে দিয়েছে
রশ্নি– দেদেখুন,রনিত পিছে সরুন
রনিত যেই না রশ্নিকে ধরতে যাবে তার আগেই ইয়াশ সেখানে এসে পড়ে
আর রনিতকে রশ্নির এতটা কাছে দেখে ও
প্রচন্ড রেগে যায়
কারন ইয়াশ স্পষ্ট বুঝতে পারছে যে রনিত রশ্নির সাথে অসভ্যতামি করছে যার জন্য এমন ভাবে খিচে দাঁড়িয়ে আছে
ইয়াশ আর বেশি এদিক ওদিক না ভেবে ডাইরেক্ট গিয়ে রনিত এর গালে ঠাস করে থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়
হঠাৎ এমন কিছু ঘটে যাবে তা যেন কারো জন্যই কাম্য ছিল না
ইয়াশ রাগে থরথর করে কাঁপছে
ইয়াশ রনিত এর কলার ধরে ঝাকিয়ে বললো
— অনেক্ষন ধরেই লক্ষ করছি আমার বউয়ের পিছন পিছন ঘুর ঘুর করছিস
আমাদের এখানে গেস্ট হিসেবে এসেছিস তাই চুপ করে ছিলাম
কিন্তু এবার তো লিমিটই ক্রস করে ফেলেছিস
কত্ত বড় সাহস আমার বউয়ের গায় হাত দিস
তোকে তো…………..
বলেই ইয়াশ রনিতকে মারতে শুরু করে
এটা দেখে রাফি তাড়াতাড়ি গিয়ে ইয়াশকে কোনো রকম আটকালো
আর নেহা গিয়ে রনিতকে উঠলো
রাফি– ভাই প্লিজ মাথা ঠান্ডা করো
রনিত– নেহা তুমি কি আমাকে এখানে ইনসাল্ট করার জন্য নিয়ে এসেছিলে?
রনিতএর কথা শুনে ইয়াশ আরো খেপে গেল
ও আবার রনিতকে মারতে গেল কিন্তু তার আগেই
সবাইকে অবাক করে দিয়ে নেহাই উল্টো রনিতকে থাপ্পড় মেরে বসলো
নেহা– তুমি নিশ্চই এমন কিছু করেছ যার জন্য ইয়াশ তোমাকে মেরেছে,,ও তো আর পাগল না যে শুধু শুধু তোমাকে মারবে?
রনিত– নেহা…?
নেহা– আমার তোমার সাথে কথা বলার আর কোনো ইচ্ছে নেই,,এখনই এখান থেকে বেরিয়ে যাও
রনিত– কিন্তু,,,,
নেহা– আই সেইড গেট আউট (চেচিয়ে)
রনিত আর এক সেকেন্ডও সেখানে দাঁড়ালো না,,,,,
এবার ইয়াশ রশ্নির দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো
রশ্নি কিছু বুঝে উঠার আগেই ইয়াশ ওর হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে গেল
তারপই ভিতর থেকে দরজা টা লক করে দিলো
রশ্নি– কি করছেন এসব,,,হাত ছারুন,আমার লাগছে
ইয়াশ– লাগুক,,
রাস্তায় তো একসাথে ৪-৫ টা ছেলেকে মারতে পারো তাহলে আজ কি হলো? নাকি ওকে ভালো লেগেছিল?
ইয়াশের কথা শুনে রশ্নি আর চুপ থাকতে পারলো না
রশ্নি ইয়াশকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দিল
তারপর একটা তাচ্ছিল্যের সুরে বললো
— হুহ,,,দেখো তো কথা গুলো বলছে কে?
আপনি কাকে কি বলছেন হ্যা? আপনি তো নিজেই একজন ধর্ষক
সো আপনার মুখে না এসব কথা মানায় না
রশ্নির কথায় ইয়াশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে
রশ্নি– কি হলো অবাক হচ্ছেন কেন? ভুল কিছু তো বলিনি
কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার নামই তো ধর্ষণ
আর ওইদিন সেহের ভাই এর পার্টিতে যদি আমার আগের থেকে সবটা জানা না থাকতো তাহলে তো আজ আমি ধর্ষিতাই থাকতাম
ইয়াশ– দেখো তুমি শুধু সেই টুকুই দেখছো যতটুকু তোমাকে দেখানো হয়েছে
যেটা তোমার দেখা উচিত সেটা কিন্তু তুমি দেখছো না
রশ্নি– সেটাই তো,,আপনি আমাকে যতটুকু দেখতে চেয়েছিলেন আমি ঠিক ততটুকুই দেখেছিলাম
কিন্তু যা এক্সেকলি দেখা উচিত ছিল সেটা দেখিনি
ইয়াশ– সব কিছু না জেনে কথা বলো না
রশ্নি– আমার আর জানার কিছু বাকি নেই
আমি শুধু এটুকুই জানি যে আপনি আমার বিশ্বাস নিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন,,আমার অনুভূতি গুলোকে নিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন
আর কি যেন বললেন
রনিতকে মারার কথা তাই তো?
বলেই রশ্নি হুঙ্কার দিয়ে হেসে উঠলো
রশ্নি ওর হাসি থামিয়ে বললো
— প্লিজ আর হাসাবেন না,,
কি দাম এই সেল্ফ প্রটেক্টিভ হওয়ার?
যেখানে আমি আপনার হাত থেকেই নিজেকে বাঁচাতে পারলাম না
ইয়াশ– দেখো রশ্নি আমি আবারো বলছি,,,তুমি সবটা জানো না,,জানলে আজ এই কথাগুলো বলতে না
রশ্নি– আর কিছু জানতেও চাই না,কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন
আমি আপনাকে কখনোই ক্ষমা করবে না…!
।
।
।
চলবে,
ইয়াশ যা করেছে তার জন্য ও শাস্তি পাবে
খুব ভয়ানক শাস্তি পাবে ?