#Revenge
#part_1
#sabiha_kh
বিল্ডিং টা ছিলো ১২ তালার পুরাটাই বয়েজ হোস্টেল।।।গভীর রাত বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে আকাশের বিকট গর্জন।। বোয়েজ হোস্টেলের সবাই তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন শুধু রহিত বাদে।।। রহিত নিজ বারান্দায় দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে মুখ চেপে ধরে অঝরে কান্না করছে।।। কারন গত কাল তার সাথে এমন কিছু হয়েছে যা সে কখনো ভাবেনি আর এই পেইন সে আর নিতে পারছে না। সে ভাবছে এই মুখ মানুষকে দেখাবে কি করে।।। কি করেই বা সে এমন কিছু নিয়ে বাচবে।
রহিত চোখ মুছে একপা দুপা করে রেলিঙের কাছে এগিয়ে গেল।। এবং দেওয়াল ধরে রেলিঙ এর উপর উঠলো।চারপাশ ঘুট ঘুটে অন্ধকার। বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে রহিত নিজের অস্তিত্ব দেখতে পাচ্ছিল।সে আকাশের দিকে মুখ করে কান্না করে আর বলে
রহিত- খুব মনে পরছে মা তোমাকে? কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমার পাশে যে আজ কেউ নেয়।আমি বড্ড একা মা। তোমাকে ছেড়ে আর ভাল লাগছে না।আমি একা একা আর লড়াই করতে পারছি না। সবার এই তীক্ষ্ণতা আমি নিজের বুকে বহন করতে পারছি না মা আমি আসছি তোমার কাছে।
রোহিতের চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পরতে লাগলো।। রোহিত চোখ বন্ধ করে ১০ তলা বিল্ডিং এর রেলিঙ থেকে ঝাপ দিলো,,,রোহিত বডি মাটিতে আছড়ে পরে এবং সাথে সাথে রক্তে চার পাশ মেখে গেলো।।।। রহিত একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেরে দিল।উড়ে গেল তার শরীর থেকে তার প্রান পাখিটা।পরে রইল রহিতের নিথর দেহ।
”
”
”
”
পরদিন সকালে,,, বৃষ্টি তখন থেমে গেছে প্রকৃতি নিয়েছে নতুন রুপ চারপাশ ভেজা ভেজা। সকালে ঝাড়ুদার আসে হোস্টেল পরিস্কার করতে,, ঢুকতেই চোখ যাই একটা দেহের দিকে।। রক্ত পানির সাথে মিশে বয়ে চলেছে,, ঝাড়ুদার ধীরে ধীরে একপা দুপা করে হেটে লাশের কাছে যাই। শরীর সাথ দিলেও মন সেদিকে টানছিল না। গলা সুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছিল।সন্দেহের বসে নিজেকে না থামিয়ে হেটে চলল।।
গিয়ে দেখে চেহারার এক পাশ থিতলে গেছে,, নাক মুখদিয়ে রক্ত জমাট বেধে কালো হয়ে গেছে হাত বাকা হয়ে আছে পা বাকা হয়ে আছে বুঝা যাচ্ছে ভেঙ্গে গেছে,, ঝাড়ুদার এমন দেখে আর শ্বাস নিতে পারছে না। সে কথাও বলতে পারছে না উপরে তাকিয়ে এক চিৎকার।
কয়েক মিনিটের ভিতর হোস্টেলের সবাই জোরো হয়ে গেল। রহিতকে যারা চিনে তারা বিশ্বাস করতে পারছিল না। ওয়াচম্যান পুলিশকে খবর দেয়। লাশটা পরে থাকে কেউ হাত দিয়েও ধরেনা। রোহিতের ফ্যামেলি সম্পর্কে কেউ তেমন কিছুই জানে না তাই সব পুলিশের উপর ছেড়ে দেয়া হয়।
পুলিশ এসে রোহিতের লাশটাকে মর্গে পাঠিয়ে দেয় ।এবং তদন্ত শুরু করে,, এদিকে রহিতের ফ্যামেলি কে খুজা হয় তারপরেই তারা রহিতের লাশ কাটা চিড়া করবে বলে ঠিক করে। পুলিশ রহিতের রুম টা ঠিক মত সার্চ করে কিছুই পাই না তেমন শুধু একটা ডাইরি পাই।আশে পাশে জিজ্ঞাসা করে জানা যাই।
রহিত ২ দিন হল রুম থেকে বের হয়নি। তার ফ্যামেলির কাউকে কেউ তেমন চিনে না।। বন্ধুরা বলে রহিতের বাবা মা সবাই মারা গেছে রোহিত এতিম খানাতে মানুষ হয়েছে যা রোহিত নিজে তাদের বলেছে।কারো সাথে তার কোনো শত্রুতা নাই সে খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে,,
অনেক জিজ্ঞাসা করে পুলিশ।। তদন্দ করে কিন্তু কিছুই পাই না,,,
– স্যার রোহিতের লাশ ফিজারে রাখা হয়েছে আর তার কোনো ফ্যামেলিকেও পাওয়া যাইনি। এখন কি করবো
ওসি- রহিতের ডাইরিটা কই??
– স্যার সেটা আপনার ক্যাবিনে রাখা হয়েছে,,স্যার রোহিতকে কাটাচিড়া করার আগে রহিতের শরীর টা ভাল দেখেছে যে ডাক্তার সে বলেছে রহিতের শরীরে কোনো অস্বাভাবিক ক্ষত বা চিহ্ন পাওয়া যাইনি। তবে তার পিঠে আচরের চিহ্ন দেখেছে,,আমার মনে হয় না এইটা কোনো মাডার,,
ওসি- এত সিউর হয়ে বলা যাবে না। ওর যখন ফ্যামেলিকে পাওয়াই যাইনি। ওর লাশ কাটতে বলো কালকের ভিতর আমার রিপোর্ট চাই।আর হ্যা ওর ডাইরি টা আমার বাসাই পাঠিয়ে দাও।এখন আমার যেতে হবে।আজ আমার বউ য়ের ডেলেভারি আছে।।
– জি স্যার আপনি যান আমি আজ কেই পাঠিয়ে দিব।
,
,
,
,
কন্সটেবল রাতে গাড়ি নিয়ে ওসির বাড়ির দিকে যাই রহিতের ডাইরি দিতে,, হঠাৎ খেয়াল করে রাস্তার লেম্পপোস্টের লাইট গুলো ব্লাস্ট হয়ে যাচ্ছে,, কন্সটেবল গাড়ি থামিয়ে দেয়। কয়েক সেকেন্ডের ভিতর পুরো রাস্তা অন্ধকার হয়ে যাই ঘুটঘুটে অন্ধকার,,ঝিঝি পোকার ডাক ছাড়া কিছুই শুনা যাচ্ছে না,, রাস্তা দিয়ে কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। কন্সটেবল ভাবে কি হচ্ছে বার বার ঢোক গিলছে। গাড়ির হেডলাইটের আলো যতদূর যাচ্ছে শুধু ততদূর দেখা যাচ্ছে,, হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠে।কন্সটেবল চমকে উঠে ফোন ধরতে যাবে আর ফোন অফ হয়ে যাই। সাহস নিয়ে গাড়ি থেকে বের হয় ধীর পায়ে হেটে যাই সামনে সুনশান-নিস্তব্ধ চারপাশ যেন নিজের নিশ্বাস নিজেই শুনতে পাচ্ছিল।
আরকটু হাটতে হেডলাইটের আলোতে কারো ছায়া দেখতে পাই। গাড়িতে সে নিজের রাইফেল টা রেখে নিচে নেমেছে সে পিছনে দেখার সাহস পাচ্ছে না হঠাৎ খেয়াল করে তার পিছনে যে দাঁড়িয়ে তার হাতে শর্ট গান। কন্সটেবলের পা যেন অসার হয়ে আসে,, সে পিছনে ঘুরে দেখতেই মাথায় জোড়ে করে কিছু দিয়ে আঘাত দেই সাথে সাথে সে মাটিতে পরে যাই।।
অন্যদিকে মর্গে রহিতের লাশ ফিজার থেকে বের করে ট্রচারে রাখে,,, লাশ টাকে সার্জারীক্যাল নাইফ দিয়ে কপালে ঠেকাতে লাশের উপে ঝুলন্ত লাইটটা বন্ধ হয়ে যাই।
ডোম – আরে এই লাইটের কি হল,,
ডাক্তার- এই দেখো লাইট অফ হয়ে গেল কি করে,,
ডোম বাইরে বের হতেই দূর থেকে শিয়ালের হুক্কিহুয়া,, ডাক ভেসে আসছে মর্গে থাকা ডাক্তার ও ট্রেনার চারপাশ তাকাই আর ডোমের ওয়েট করে,, হঠাৎ বাইরে খুব জোড়ে মেঘ গর্জন দিয়ে উঠে ডাক্তার চমকে উঠে,, ডোম গিয়ে দেখে মেইন লাইন কাটা আছে,, ডোম লাইট ধরে ঠিক করতে মনে হল ওর পিছনে কেউ দাঁড়িয়ে,
এদিকে ডাক্তার বলল- কি ব্যাপার গেছে তো গেছে আর আসছে না কেন এমন জাগাই থাকতে ভাল লাগে? এই যাও তুমি দেখে আসো,,
বলতে লাইট আসে ডাক্তার দেখে রহিতের লাশ পরে আছে,,
ডাক্তার- বাইরে মনে হয় বৃষ্টি আসছে, উফফ এই রিপোর্ট তাড়াতাড়ি করে যেতে পারলে বাচি,,
– স্যার আমার ভয় লাগছে, শুনেছি এইটা সুইসাইড করা লাশ,,
ডাক্তার- এত ভয় পেলে ডাক্তার হবে কি করে,,,ও এখনো আসেনি কেন যাও দেখে আসো
ছেলেটা বের হয়ে গেল,, সে বের হতেই লাইট ধপধপ করা শুরু করে ডাক্তার ভয়ে কাপে,, কি করবে বুঝে না। হঠাৎ দেখে লাশে পাশে একটা কালো ছায়ার মত সে লাশের পাশ থেকে সার্জারীক্যাল নাইফ তুলে নেয় হাতে ডাক্তার ভয়ে একপা করে পিছনে সরে। হঠাৎ ট্রেনার সে ছেলের এক চিৎকার ডাক্তার ভয়ে পিছন দিকে তাকাই। এবং সামনে ঘুরতে দেখে লাশ টা নাই ট্রেচার ফাকা পরে আছে।
ডাক্তার সেখানে বেহুশ হয়ে যাই।।
এদিকে ওসি কন্সটেলকে ফোনে না পেয়ে সে পুলিশ স্টেশন আসে আসার পথে দেখে কন্সটেবলের গাড়ি ওসি নেমে ভিতরে তাকাতে দেখে কন্সটেবল গাড়ির ভিতর বেহুশ হয়ে পরে আছে। তাকে জ্ঞান ফিরাতে সে সব কথা বলে ওসি তাকিয়ে দেখে ডাইরি টা নেয়,,
এদিকে ওসির ফোনে ফোন আসে,, ওসি রিসিভ করতে ট্রেনার বলে – স্যার আপনি এখনি মর্গে আসুন,,
ওসি তাড়াহুড়া করে কন্সটেবল কে সাথে নিয়ে গিয়ে দেখে ডাক্তার ও ডোম বেহুশ হয়ে পরে আছে। ওরা জ্ঞান ফিরাতে সব বলে এবং লাশ কাটা ঘরে গিয়ে দেখে সেখানে রহিতের লাশ নাই।
continue