#The_Beauty_Of_Love,15,16
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_15
.
“ভালোবাসি কি যানি না আমি তবে তোমাকে ছাড়তে আমি কখনো পারবো না,,,তুমি শুধু আমার আর আমার কাছেই থাকবে মিহু,, কাল থেকে তুমি আমার নতুন রূপ দেখবে,,,তুমি না চায়লেও এই মাহির কে তোমাকে সহ্য করতে হবে,,,,, তুমি শুধু আমার জান পাখি,,,,, (জান পাখি নাম টা অজান্তেই বেরিয়ে এলো মাহিরের মুখ থেকে,,, মাহির ভেবে দেখলো সে কি বললো,, ) জান পাখি মন্দ না তো হ্যাঁ মিহু তুমি শুধু আমার জান পাখি,,(মুচকি হেসে রুমে চলে যায় মাহির)
।।
আমি অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠে গেলাম কারণ মামী দেরি করে উঠা লাইক করে না,, একদিন একটু দেরি হয়ে ছিলো বলে অনেক বকা দিয়েছিল,, তাই তাড়াতাড়ি উঠে রান্না ঘরে চলে গেলাম নাস্তা রেডি করতে,,, দুই দিন আছি তবুও আমি ই করি মামী তো রোজ করেই,,, আমি নাস্তা রেডি করতে লাগলাম,, নাস্তা রেডি হয়ে গেছে প্রায় তখন মামী আসে রান্না ঘরে,,,
“একি তুই রান্না ঘরে কেনো আমি ই করে নিতাম সব,,,,,
“আরে মামী আমার এই সব অভ্যাস আছে আর নাস্তা করা প্রায় শেষ তুমি বরণ মামা কে দেখো আমি সব খাবার টেবিলে রাখছি,,,,
আমার বলায় মামী চলে গেল,,,আমি আবার সব কিছু ঠিক করে নিলাম,,, তারপর খাবার টেবিলে রেখে দিলাম,,,,,,, হঠাৎ ওনার কথা মনে পড়লো উনি কি এখনও ঘুমাচ্ছে নাকি উঠে পড়েছে,, মনে হয় উঠে পড়েছে উনি তো দেরি করে উঠে না,,,,,,
।।
এই দিকে মাহির এখনও পরে পরে ঘুমাচ্ছে,,কাল একদম ঘুম হয় নি তার ভোরের দিকে ঘুমিয়েছে,,তাই এখনও ঘুমাচ্ছে,,,,রাতে ঘুম কি করে হবে কাল যে তার জান পাখি টা তার বুকে ছিলো না,, অনেক মিস করেছে কাল মিহু কে মাহির,, আর এটাও বুঝেছে মিহু কে ছাড়া ও থাকতে পারবে না,,,,ভালোবাসে কি না সেটা মাহির বুঝেনি কিন্তু এটা খুব ভালো করে বুঝেছে মিহু শুধু ওর আর কারো না,,,,,,,,,
মামনি নাস্তা করে বসে ছিলো,, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১০ টা বাজে,, এতো বেলা হয়ে গেছে আর মাহির এখনও নিচে আসে নি এটা নিয়েই চিন্তাই আছে উনি,,,আর না পেরে ওপরে চলে যায় মাহিরের রুমে,, দরজা চাপা থাকায় ভিতরে ঢুকতে অসুবিধা হলো না,,, ভিতরে গিয়ে দেখে মাহির এখনও ঘুমাচ্ছে,,একটু অবাক হলো মামনি তার ছেলে আজ এতো বেলা করে ঘুমাচ্ছে এখনও উঠার নাম নেই,,, তাই মাহির কে উঠাতে লাগে মামনি,,,
“মাহির মাহির আর কতো ঘুমাবি তুই তো এতো ঘুমাস না কখনো আজ কি হলো,, রাতে ঘুমাস নি?(মাথায় হাত বুলিয়ে বললো)
মাহির মাথা টা তুলে দেখে তার আম্মু বসে আছে,, আম্মু কে দেখে মুচকি হাসি দিয়ে আম্মুর কোলে মাথা রেখে আবার শুয়ে পড়ে মাহির,,,,,আর বলে,,
“কাল ঘুম আসে নি আম্মু তাই,,
“আমার বউমা কে ছেরে ঘুম আসেনি তাই তো,,,
মাহির তার আম্মুর কথা শুনে উঠে বসে আর বলে,,
“কি যে বলো আম্মু ওই পেত্নী নেই বলেই এতো ভালো ঘুম হয়েছে,,,(একটু লজ্জা পেয়ে বললো)
” ওহ আমার ছেলে দেখি লজ্জাও পায়,,, মিহুর কথা শুনতেই মুখ টা কেমন লাল টমেটো হয়ে গেছে দেখো দেখো,,(মজা করে)
“আম্মু তুমি যাও আমি আসছি,,,
“হ্যাঁ হ্যাঁ এখন তো আম্মু কে দূরে যেতেই বলবা,,, মাহির একটা কথা বলি,,, হাতের পাঁচটা আঙ্গুল যেমন সমান না,, তেমন সব মেয়েও এক না,,, মিহু একটা হীরার টুকরা মেয়ে,, এখন যদি এই হীরার দাম না বুঝিস তাহলে পরে হারিয়ে গেলে তুই খুঁজেও পাবি না,,,,আমি যানি বুঝি তুই মিহু কে ভালোবাসিস সময় থাকতে এখনি বলে দে নয়তো ও একবার ইউএসএ চলে গেলে আর পাবি না সারাজীবন কষ্ট পাবি,,সময় থাকতে ভালো কিছু জিনিসের মূল্য দে,,,,,,আজ আছে কে যানে কাল ও সেই জিনিস টা থাকবে কি না,,,,(এই বলে চলে গেলেন মাহিরের আম্মু)
মাহির তার আম্মুর বলা প্রতি টা কথা মন দিয়ে শুনেছে,,, বুঝতেও পেরেছে কি বুঝাতে চেয়েছেন আম্মু,,,,অনেক কিছু চিন্তা করে মাহির ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসে চলে যায়,,,,,মাহির ভেবে নিয়েছে আজ ই ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসবে মিহু কে এক রাতে মাহিরের অবস্থা খারাপ আর একটা রাত সে থাকতে পারবে না,,, তাই অফিস শেষে সোজা মিহুর মামার বাড়ি তেই যাবে ভেবে রাখে,,,,কিন্তু মাহিরের মন টা এতো আনচান কেনো করছে আজ ,,মাহিরের মনে হচ্ছে তার সব থেকে কাছের কেও দূরে চলে যাবে,,,,, মাহির এইসব খারাপ চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে কাজে মন বসায়,,,
।।
মামার একটা ওষুধ কেনা হয় নি কাল ওটা দরকার এখন,, তাই আমি বেরিয়ে পরলাম ওষুধ কিনতে,,,এখন ১২ টা বাজে ওষুধের দোকান খোলা পাবো তো এই ভাবছি,, সকালে একদম দেখিনি এই ওষুধ টা নেওয়া হয় নি কাল,,,দেখলে তো সকালেই যেতাম,,,,আমি তাড়াতাড়ি হেঁটে বাজারে গেলাম মামার বাড়ি থেকে ১০ মিনিটের রাস্তা বাজার আসতে,,, বাজারে অনেক দোকান একটা খোলা থাকলেই হবে,, একটু যেতেই পেয়েও গেলাম ,,, ওষুধ কিনে আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরলাম,,,মেইন রাস্তার থেকে একটা গলি পরে ওই গলি দিয়ে গেলেই আমাদের বাড়ি ,,,, আমি ওই গলির মধ্যে হেঁটে যাচ্ছিলাম তখনি আমার সামনে দুই টা ছেলে দাড়ালো,,,আমি তাকিয়ে দেখে তো ভয়ে শেষ এটা তো সেই ছেলে হাবিব যার সঙ্গে মামী আমার বিয়ে ঠিক করে ছিলো,, এর আগেও অনেক জ্বালিয়েছে,,,আমি কিছু না বলেই পাস কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম কিন্তু আমার হাত ধরে ফেলে হাবিব,,,
“কি হচ্ছে এটা অভদ্রের মতো কাজ করছেন কেনো ছাড়ুন আমার হাত,,,(রেগে বললাম)
“ওমা খুকির মুখে দেখি খই ফুটছে,, পালিয়ে বিয়ে করে কি তেজ বেড়ে গেছে নাকি,,,,(হাত ধরেই শয়তানি হাসি দিয়ে)
“ছাড়ুন আমার হাত নয়তো চিৎকার করে লোক ডাকবো আমি,,,
“ওহ তাই বুঝি কর দেখি চিৎকার এই সময় কে আসে আমিও দেখছি,,,
ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম কেও নেই এই ভরদুপুরে কে থাকবে,, ভয়ে আমি গামছি,,তবুও বুঝতে দিলে হবে না,,,তখন হাবিবের সঙ্গে থাকা ছেলে টা বলে উঠে,,,
“হাবিব ভাই তুমি একে এখানে ধরে আছো কেনো তুলে নিয়ে চলো আমাদের আড্ডাখানা ই ,,বিয়ের আসর থেকে কি ভাবে পালিয়ে তোমাকে অপমান করেছিল ভুলে গেলে,,,
“কিছু ভুলিনি আমি আমাকে বিয়ে না করে চলে যাওয়ার শাস্তি তো পেতেই হবে ,,,
এই বলে হাবিব আমাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগে,,, কি করবো বুঝতে পারছি না কিন্তু ভেঙে পড়লেও চলবে না ,, আমি দাড়িয়ে যায় আর হাবিব আমার দিকে রাগী চোখে তাকায় তখনি তার মেইন যায় গায় সজোরে একটা লাত্থি দিয়ে দি,, ব্যাথায় আমাকে ছেড়ে বসে পরে আর ওই ছেলে টা হাবিব কে ধরতে নিলে আমি সেই সুযোগে সেখান থেকে দৌড়ে চলে আসি,,,,,,,,
“ভাই তুমি ঠিক আছো লাগে নি তো,,(ছেলেটা হাবিব কে উঠাতে উঠাতে বলে)
“ওই মেয়েকে আমি ছাড়বো না,,, আমাকে মারার ফল ও পাবেই,,,,,,(এই বলে রেগে চলে যায় সেখান থেকে,,,,)
বাড়িতে এসে তাড়াতাড়ি দরজা লাগিয়ে দিলাম,,আল্লাহ খুব যোর বেঁচে গেছি আজ নয়তো কি যে হতো,,,,এখানে থাকা আমার জন্য সেভ না আমি কাল ই চলে যাবো ওই বাড়িতে,,,,,এই ভেবে ভিতরে চলে যায় মামা কে ওষুধ খাইয়ে দি ,,,,,,,
।
বিকেল বেলায় মাহির আসে মিহুকে নিতে,,,এসে দরজায় নক দেয়,, এখন ৪ টা বাজে এই সময় দরজা নক পড়ায় আমার একটু ভয় লাগতে শুরু করে হাবিব নয়তো আবার,,, ভয়ে ভয়ে দরজা খুলে দেখি উনি ওনাকে দেখে শাস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেললাম,,,আর ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম,,,আমার এমন করে জড়িয়ে ধরা দেখে একটু অবাক হয় মাহির পরে মাহির ও জড়িয়ে ধরে বলে,,
“একদিনে আমাকে অনেক মিস করছিলে বুঝি,,,
আমি ওনাকে ছেরে,,
“একদম না কিন্তু আপনি এই সময় এখানে,,,
“আগে ভিতরে তো যেতে দাও,,,
“আসেন আসেন ,,,
ওনার হাতে থাকা পেকেট গুলা আমাকে দিল মামার জন্য কিছু ফল মিষ্টি আরো কতো কি,,, মামী মামা কে নিয়ে বাইরে এসে ওনাকে দেখে মুচকি হেসে কথা বলতে লাগে,,, আমি রান্না ঘরে চা বানাতে চলে গেলাম,, চা নিয়ে এসে ওনাকে দিলাম,,উনি চা খেতে খেতে বললেন,,,
“মামা মামী আমি মিহু কে নিতে এসেছি,, ওখানে আম্মু একা আছে তো তাই,,আমি তো কাজের জন্য বাইরে থাকি সব সময়,,,(আম্মুর নাম দিয়ে নিয়ে যাবে কি মিথ্যুক)
ওনার কথা শুনে মামা আর না করতে পারেনি,,আর আমিও থাকবো বলিনি,,আজ দুপুরে যা হইছে তারপর এখানে আর থাকা যাবে না,,,কিছু খন গল্প করে আমরা মামা মামী কে বিদায় দিয়ে চলে গেলাম,,, একটু হেটে গাড়ির কাছে গেলাম,,,তারপর গাড়িতে বসে উনি গাড়ি চালাতে লাগে,,,,,,,,কিছুক্ষন যাওয়ার পরে উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলে,,
“মিহু সিট বেল্ট লাগাও নি কেনো,,
আমি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি তো আমি শিট বেল্ট লাগায় নি,,,
“ভুলে গেছি এখনি লাগাচ্ছি,,,(এই বলে লাগাতে লাগলাম)
অনেক চেষ্টা করেও পারছি না লাগাতে হচ্ছে না কেনো অন্য দিন তো ঠিক ই লাগিয়ে নিতে পারি আজ কেনো হচ্ছে না আজব,,,আমি ওনার দিকে তাকালাম,,,
“পারছি না তো,,
“ওয়েট আমি গাড়ি সাইডে করে লাগিয়ে দিচ্ছি ,, তোমার দ্বারায় কিছু হবে না,,, সামান্য সিট বেল্ট টা লাগাতে পারে না,,,(একটু রেগে)
মাহির গাড়ি সাইডে গাড়ি থামাতে লাগে কিন্তু একি ব্রেক ধরছে না কেনো? মাহির অনেক বার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না,,, মাহির চিন্তার সুরে বললো,,
“মিহু প্লিজ যে করেই হোক সিট বেল্ট টা লাগাও,,,
ওনার কথা শুনে আমি অনেক বার চেষ্টা করছি লাগানোর কিন্তু পারছি না,, ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওনার মুখে চিন্তা ভয় বুঝা যাচ্ছে,,, আর অনেক যোরে গাড়ি চলছে আমি ওনাকে বললাম,,,
“কি হয়েছে এমন করে গাড়ি কেনো চালাচ্ছেন আমার ভয় করছে,,,,,
আমার কোথায় মাহিরের চোঁখ থেকে এক ফোঁটা পানি পরলো,, ওনার চোখে পানি দেখে আমার প্রাণ টাই উরে গেছে কি হয়েছে উনি এমন কেনো করছে,,,
উনি আমার হাত টা ধরে ওনার বুকে নিয়ে আসে,,আর বলে,,
“জান পাখি তুমি ভয় পাবে না কিছু হবে না তোমার আমি সব ঠিক করে দিবো তুমি আমাকে ধরে রাখো,,,
ওনার কোথায় অবাক হয়ে,,
“এমন কেনো বলছেন আপনি কি হয়েছে বলুন না,,,আমার সত্যি এবার অনেক ভয় করছে গাড়ি থামান,,,
“গাড়ি থামানো যাচ্ছে না মিহু,, ব্রেক ফেল হয়ে গেছে,,(যোরে বলে উঠে )
ওনার কথা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়লাম,,,কি বলছেন উনি ব্রেক ফেল মানে তাহলে কি আমরা,,, না না কি ভাবছি কিছু হবে না,,আমি ওনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম,,,
“মাহির আমি মরতে চায় না আমি আপনার সঙ্গে বাঁচতে চায় প্লিজ আপনি কিছু করুন,,,,,আপনার সঙ্গে বাঁচতে চায় আমি,,,,, ভালোবাসি আপনাকে খুব ভালোবাসি,,, প্লিজ কিছু করুন,,,(কান্না করে কি বলছি নিজেই বুঝতে পারছি না)
(কিছুক্ষন আগের কথা,,,,,,,,, মাহির যখন মিহু কে নিতে মিহুর মামার বাড়ি তে আসে তখন হাবিব দেখে মাহির কে ,, প্রথমে মাহির কে চিনতে না পারলেও কিছু লোকের কাছে শুনে এটা মিহুর বর,,, এটা শুনেই মাথা গরম হয়ে যায় হাবিবের,,, মাহির যখন বাড়ি তে ঢুকে যায়,,সেই সুযোগে হাবিব মাহিরের গাড়ির ব্রেক ফেল করে দেয়,,, হাবিবের ধারণা মাহির কে রাস্তা থেকে সরালে মিহু তার হবে,,,তাই মাহিরের অ্যাকসিডেন্ট করানোর জন্য গাড়ির ব্রেক ফেল করে দেয়,,, তবে হাবিব ভাবতেও পারে নি মাহিরের সঙ্গে মিহু ও যাবে,,,, আড়াল থেকে যখন মাহির মিহু কে গাড়ি তে উঠতে দেখে তখন হাবিব ভয় পেয়ে যায় আর আটকাতে আসে মিহু কে গাড়ি তে উঠার আগে,,,কিন্তু হাবিবের সঙ্গে থাকা ছেলে টা হাবিব কে আটকায় আর বলে,,,,”ভাই তুমি এখন গেলে ওরা জেনে যাবে আর তোমাকে পুলিশে দিবে,,,তার চেয়ে দুই জনেই মরুক,, মিহু এমনিতেও তোমার হবে না”,,,,,,,,,,,এই কথা শুনে হাবিব আর যায় নি আটকাতে,,,মাহির মিহু চলে যায়,,,,,,,)
বর্তমানে,,,,
মাহির চেষ্টা করেও কিছু করতে পারছে না ,,এই দিকে আমি কান্না করেই যাচ্ছি ওনাকে জড়িয়ে ধরে,,, হঠাৎ করে গাড়ি কিসে যেনো বাড়ি খেলো আর আমি ওনার বুক থেকে ছিটকে দূরে গিয়ে পরলাম,,,গাড়ির দরজা ভেঙে আমি বাইরে পরে যায় আর অনেক যোরে মাথায় কিছুর সঙ্গে আঘাত পায়,,,মুখ থেকে একবার শুধু মাহির নাম তাই বের হয়েছে,,আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ হয়ে যায় আমার,,,,,,,,,,,
মাহির গাড়ি চালাতে চালাতে দেখতে পায় রাস্তার পাশেই একটা বড়ো গাছ,,,এই গাছে গাড়ি ধাক্কা লাগলে গাড়ি থামার সম্ভবনা বেশি,,মাহির তাই করে কিন্তু এতো যোরে ধাক্কা লাগবে বুঝতেও পারেনি মাহির,,,ধাক্কা লাগায় মিহু তার থেকে ছিটকে বাইরে চলে যায়,,,মাহিরের মাথা গাড়ি স্টেয়ারিং এ বাড়ি গেলে অজ্ঞান হয়ে যায়,,,,,,,,,,,,,,,,,
চলবে?
#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_16
.
.
.
মাহির আমি মরতে চায় না আমি আপনার সঙ্গে বাঁচতে চায় প্লিজ আপনি কিছু করুন,,,,,আপনার সঙ্গে বাঁচতে চায় আমি,,,,, ভালোবাসি আপনাকে খুব ভালোবাসি,,, প্লিজ কিছু করুন,,,,,,,,(মাহির অজ্ঞান অবস্থায় মিহুর এই কথা গুলা মনে করে)
“মিহুইইইইইইইইই,,(মিহুর নাম নিয়ে অনেক যোরে চিৎকার করে উঠলো মাহির,,,মাহিরের মাথায় মিহুর বলা শেষের কথা গুলায় ঘুরছে,,,,মাহির আমি বাঁচতে,,ভালোবাসি আপনাকে,,আপনার সঙ্গে বাঁচতে চায় আমি,,,এই কথা গুলা ঘুরছে,,,,)
মাহিরের জ্ঞান ফিরেছে বলে নার্স ডক্টর কে ডেকে আনে কিন্তু মাহির কে আটকানো যাচ্ছে না,,,সে মিহু মিহু বলে চিৎকার করেই যাচ্ছে,,,,,,ডক্টর এসে কেবিনে এসে বলে,,,
“মিস্টার মাহির কুল এতো হায়পার হবেন না প্লিজ আমার মাথায় অনেক আঘাত লেগেছে,,,,
“মিহু কোথায় আমি মিহুর কাছে যাবো,, মিহু ঠিক আছে তো কথায় মিহু ওকে এনে দিন আমার কাছে,,,,,(যোরে চিৎকার করে হাতের সেলাইন খুলে ফেলে দিচ্ছে,,পাগলের মতো করছে মাহির)
“নার্স মাহির চৌধুরীর মা কে ডেকে আনুন ফাস্ট,,,(ডক্টর নার্স কে বলে)
নার্স গিয়ে তাড়াতাড়ি মাহিরের আম্মু কে খবর দিকে মাহিরের আম্মু ছুটে আসে মাহিরের কাছে,,,এসেই জড়িয়ে ধরে কেদে উঠে,,
“তুই ঠিক আছিস বাবা এখন কেমন লাগছে,,,
“আম্মু মিহু কই? মিহু কে এনে দাও মিহু কেমন আছে?
মাহিরের কোথায় আম্মু অনেক অবাক হলো,, অবাক হয়ে বললো ,,
“মিহু কই মানে সেতো তার মামার বাড়ি তেই আছে,,, আমি ওর মামার বাড়ির ঠিকানা যানি না আর মিহুর ফোন ও বন্ধ বলছে তাই খবর দিতে পারিনি,,,,
তার আম্মুর কথা শুনে আকাশ ভেঙে পড়লো মাথায় মাহিরের,,,
“কি বলছো আম্মু আমি আর মিহু একি গাড়ি তে ছিলাম,,, মিহু ও আমার সঙ্গে ছিলো আমি ওকে নিয়েই বাড়ি ফিরছিলাম আম্মু,,,
“কি বলছিস কি মাহির,, তুই গতো তিন দিন ধরে হসপিটালে ভর্তি আছিস,,, তোকে কিছু লোক গাড়ি থেকে অজ্ঞান অবস্থায় হসপিটালে নিয়ে এসেছিল,, তোর সঙ্গে মিহু ছিলো না,,,,,,,
মাহির আরো বেশি অবাক তিন দিন ধরে আছে ও এখানে তাহলে ওর মিহু ওর জান পাখি কোথায়,,, মাহির আর কিছু না ভেবে দৌড়ে বাইরে চলে আসে,,,মাহিরের আম্মু অনেক ডাকে কিন্তু শুনে না ,, ,,বাইরে এসে মাহিরের ড্রাইভার কে দেখতে পায় তার কাছ থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে,,, অনেক জোরে গাড়ি চালিয়ে সেই যায় গায় যায় যেখানে তাদের অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল,,,,, মাহির ওখানে গাড়ি থামিয়ে,,, এদিক সেদিক পাগলের মতো চিৎকার করে খুঁজে মিহু কে কিন্তু পায় না,,,,,,
“মিহু কই তুমি ফিরে এসো না আমার কাছে,,,তুমি না বলেছিলে আমার সঙ্গে থাকতে চাও,, আমার সঙ্গে বাঁচতে চাও ,, তাহলে আমাকে এখানে রেখে কেনো লুকোচুরি খেলছো,,অনেক হয়েছে তোমার লুকোচুরি এখন তো বের হয়ে আসনা,,,দেখো তোমার চৌধূরী সাহেব ভয় পাচ্ছে কান্না করছে শুনতে পারছো না তুমি আমার কথা,,,,,জান পাখি ,,(অনেক জোরে চিৎকার করে কান্না করে বলে কথা গুলা মাহির,,,)
মাহির ওখানেই হাঁটু গেড়ে বসে কান্না করেই যাচ্ছে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়,,,মসুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে,,,,,মাহিরের কষ্টে কান্নায় যে আজ প্রকৃতি ও কষ্ট পাচ্ছে কান্না করছে,,,,মাহিরের চোঁখের পানির সঙ্গে বৃষ্টি ও যে তান মেলাচ্ছে,,,,,,,,তবে কি মাহির মিহু কে হারিয়ে ফেললো,? আর পাবে না খুঁজে মিহু কে,,,, মাহির যে তার জান পাখি কে ভালোবাসে এটা কি মিহু শুনবে না কখনো? মাহিরের ভালোবাসা কি শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেলো?,,,,,,
।।
তিন মাস পর??
“আম্মু আমি অফিসে গেলাম,, নিজের খেয়াল রেখো,,,,
“দাঁড়াও নাস্তা না করে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না তোমার,,,,
(মাহির অফিসের জন্য বের হচ্ছিল তখনি পিছন থেকে জেরিন বলে খেয়ে যেতে,,,,,,,,,,)
“জেরিন আমি খাবো না তুমি বরণ আম্মুর দিকে বেশি খেয়াল রাখো,,,,(এই বলেই হন হনিয়ে চলে গেলো মাহির)
জেরিন এক নজরে মাহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“আর কতো দিন মাহির চৌধূরী আর কতো দিন আমার থেকে দূরে থাকবে,,,বাড়ি তে তো তোমার বিশ্বাস নিয়ে একবার ঢুকেছি,,তোমাকে হাত করতেও আমার সময় লাগবে না,,, কিন্তু তোমার মাথায় ওই মিহু র ভুত এখনও নামে নি,,, মরেও শান্তি দিলো না আমাকে,,, বেঁচে থাকতে মাহির কে আমার কাছ থেকে কেরে নিয়েছে,,, এখন মরে গিয়েও মাহিরের কাছে যেতে দিচ্ছে না,,,,আর এক দিকে এই বুড়ি মহিলার দেখা সোনা করতে হচ্ছে,,, একবার শুধু মাহির আমাকে আপন করে নিক,, এই বুড়ি কে আগে বের করবো বাড়ি থেকে,,,,,(রেগে কথা গুলা বলে রান্না ঘরে চলে গেলো জেরিন)
(বুঝছেন না তো জেরিন চৌধূরী বাড়িতে। কি করে ওকে আমি বুঝায়)
সেদিন রাস্তায় মাহির কান্না করতে করতে সেখানেই অজ্ঞান হয়ে যায়,,, মাহির কে হসপিটালে ভর্তি করানো হয়,,,,,তিন চার দিন পরে মাহির সুস্থ হয়ে উঠে,,,কিন্তু মিহুর জন্যে পাগলামি কমে না,,, মাহিরের এই হাল দেখে মাহিরের আম্মু হার্ট অ্যাটাক হয়,,,, মাহির বুঝতে পারে তার জন্যেই তার আম্মুর এই অবস্থা ,,, তাই মাহির নিজেকে সামলে নেই তবে মিহু কে খুঁজতে পুলিশ লোক লাগিয়ে দেয়,,,,, মিহু কে খুঁজতে এক মাস চলে যায়,,, মাহিরের আম্মু ও নিজেকে ঘর বন্দী করে রাখে তেমন কারো সঙ্গে কথা বলে না,,,,এই সুযোগে জেরিন আসে মাহিরের কাছে,,, জেরিন অনেক কথা মাহিরের আম্মুর যত্ন নিবে আরো কতো কি বলে মাহিরের বিশ্বাস অর্জন করে,,, কিন্তু তার আসল উদ্দেশ্য কি টা নিজেরাই শুনলেন,,,,,,,,,,,,,মাহির এখন অনেক টা স্বাভাবিক তবে তার জান পাখি কে রোজ খুঁজে,,, আগের থেকে মাহির বেশি রাগী হয়ে গেছে নিজের তেমন যত্ন নেই না,,,,,দিনে সব সময় কাজে লেগে থাকে আর রাতে নেশায়,,, মদের নেশায়,,,,,, মাহিরের এই নেশা করার সুযোগ জেরিন অনেক নিতে ছেয়েছে কিন্তু পারে নি,,, মাহির কখনো জেরিন কে তার কাছে আসতে দেই নি,,,,,,,,,,,,,,,
।।
ইন আহমেদ হাউস,,,,,,,,,
“ডক্টর আর কতো দিন এমন থাকবে,, আর কতো দিন ঘুমিয়ে থাকবে আমার প্রেয়সি আপনি কিছু করছেন না কেনো,,,(রেগে বলে উঠে নয়ন ডক্টর কে)
“এতে আমরা কিছু করতে মারবো না মিস্টার আহমেদ,,, পেসেন্ট কমায় মধ্যে আছে,,, এটা থেকে বার কখন হবে ঠিক নেই,,, ১ বছর হতে পারে,, ২বছর হতে পারে,, আবার এখনি হতে পারে,,আবার না হতেও……(ডক্টর কে থামিয়ে দিয়ে বললো নয়ন)
“ওকে ঠিক হতেই হবে, কারো জন্য না হলেও আমার জন্য ঠিক হতেই হবে,,,আপনি এখন আস্তে পারেন ডক্টর,,,,,,
ডক্টর নয়নের কথা শুনে ,, মনে মনে সাইকো একটা বলে চলে গেলেন,,,, নয়ন বেডে বসে বলতে লাগে,,,
“কে তুমি প্রেয়সী? কি তোমার পরিচয়,,? এমন ভাবে আমার জিবনে জড়িয়ে পড়বে তুমি আমি ভাবি ই নি,,,তোমার এই রূপে মুগ্ধ আমি,, একদম ঘুম পরি একটা,,, তুমি কথা বললে আরো কতো সুন্দর লাগবে তোমাকে? তুমি হাঁটলে আরো বেশি সুন্দর লাগবে তোমাকে,,,,,,তাড়াতাড়ি উঠে পরো না,,প্রিয়সি,,, তুমি যেই হও না কেনো,,তুমি শুধু আমার,,এই নয়ন আহমেদ এর চোখে তুমি পড়েছো,,,তোমাকে ঠিক হতেই হবে আমার জন্য,,, তুমি শুধু আমার প্রেয়সী আমার,,,,,,,,,,,,,
ঘুমন্ত একটা মেয়ের হাত ধরে বলছে নয়ণ আহমেদ,,,,,, ইন্ডিয়ার অন্য তমো টপ বিজনেস ম্যান আরিফ আহমেদ এর ছেলে নয়ন আহমেদ,,,, দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম কিউট,,,অনেক মেয়ের ক্রাশ,,,,একটু সাইকো টাইপ,,,,,,তবে নয়ন আহমেদ কোনো মেয়েকে পাত্তা দেই না,,,, আজ পর্যন্ত কোনো মেয়েই তার চোখে ভালো লাগে নি,,,,,কিন্তু এই ঘুমিয়ে থাকা মেয়েটার মধ্যে কি এমন দেখেছে কে যানে,,, সব সময় এই মেয়েকেই নিয়ে স্বপ্ন দেখে,,,নাম ঠিকানা কিছু জানা নেই নয়নের,,, গত তিন মাস থেকে দেখে এসেছে একি মুখ,,,,, আজ কাল মেয়েরা মেক আপ করে সুন্দরী হয়,, কিন্তু নয়নের ঘুম পরি,, বিনা মেক আপে পরির মতো লাগছে ,,,,,, নয়ন এই তিন মাসে প্রতিটা মুহূর্ত অপেক্ষা করছে কখন তার ঘুম পরির ঘুম ভাঙ্গবে আর কথা বলবে,,,,নিজের করে নিবে তার ঘুম পরি কে,,,,,,,,,
“স্যার আপনাকে বড়ো স্যার ডাকছেন,,,,,(পিছন থেকে কাজের মেয়ে বলে উঠলো নয়ন কে)
“তুমি যাও আমি আসছি,,,,,,,,(এই বলে নয়ন তার ঘুমিয়ে থাকা প্রেয়সির কপালে চুমু দিয়ে তার আব্বুর রুমে চলে গেল)
নয়ন তার আব্বুর রুমে গিয়ে বলে,,,
“ডাকছিলে আব্বু,,,,
“হ্যাঁ নয়ন,,, আমি তোমার জন্যে একটা মেয়ে দেখেছি আজ রেডি থেকো আমরা যাবো,,,,
“আমি কোথাও যাবো না আব্বু,,(রেগে)
“আর কতো দিন নয়ন আর কতো দিন বিয়ে না করে থাকবে,,, বয়শ হচ্ছে তোমার,, এই বংশে আমার উত্তরাধিকারী চায়,,তোমাকে বিয়ে করতেই হবে,,,(আরিফ আহমেদ ও রেগে বললেন)
“আমি প্রিয়সি কে ছাড়া কাওকে বিয়ে করবো না,,,ওর জন্যে আমাকে সারাজীবন অপেক্ষা করতে হলে তাই করবো,,,
“ওই মেয়ে কে কি তার পরিচয় কোন বংশের মেয়ে কিছুই জানি না ,,, তিন মাস আগে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছিলে তুমি,,, আর এখন বিয়ে করতে চায়ছো,,, রাস্তার মেয়েকে রাস্তায় ফেলে আসা ভালো রাজ্যের রানী নয়,,,,,
“ব্যাস আব্বু যা বলেছো বলেছো আমি আমার প্রেয়সীর ব্যাপারে আর কিছুই শুনতে চায় না,,, আমি বিয়ে করবো না তুমি না করে দাও,,,আর বেশি যোর করলে আমি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হবো,,আমি আমার প্রেয়সিকে নিয়ে চলে যাবো তোমার এই রাজ প্রাসাদ থেকে,,,,,,(এই বলে নয়ন চলে যাচ্ছিলো তখনি তার আব্বুর একটা কথা শুনে থেমে যায়)
“যদি তোমার প্রেয়সি বিবাহিত হয় তো? কি করবে তুমি?
নয়ন কিছুক্ষন ভেবে একটা বড়ো একটা নিঃশ্বাস ছেরে বললো,,,,,
“তখন তুমি যা বলবে তাই করবো,,,,,(এই বলে হনহনিয়ে চলে যায় সেখান থেকে নয়ন,)
চলবে?