বেদনার_রঙ_নীল আটচল্লিশতম পর্ব

0
187

#বেদনার_রঙ_নীল
আটচল্লিশতম পর্ব
লিখা- Sidratul Muntaz

বিলাশবহুল উচুঁতলা ভবনের পঞ্চম সভাতলে আজ বেশ রমরমে আয়োজন। সর্বাংশে, ভবনের প্রতিটি কোণায় কোণায় জমে উঠেছে ক্ষুদ্র আলোর জ্যাতিযুক্ত সমাবেশ। যেন নক্ষত্রপুঞ্জ! অজস্র মানুষের ঠাসাঠাসি ভীড়ে আর অবাধ হৈ হুল্লোড়ের ধাক্কায় যে কেউ আন্দাজ করতে পারবে এটি নেহায়েৎ একটি বিয়ে বাড়ির দৃশ্য।

মুখে গাঢ় মেকাপের প্রলেপ আর গায়ে ভারী লেহেঙ্গা জড়িয়ে স্টেজে বসে আছে রাইফা। চারদিক থেকে উজ্জ্বল আলোর বিকিরণে তার মাথা ধরে যাচ্ছে। হঠাৎ কেউ কাঁধে হাত রাখল। রাইফা মাথা তুলে তাকাতেই ফিসফিস করে বলল তুলি,” তোকে দেখতে যে কি অস্থির লাগছে রাইফা! রিসব ভাইয়া মনে হয় স্টেজে ওঠার আগেই ফিট খেয়ে পড়ে যাবে।”

রাইফা লজ্জিত হাসল। তুলি গানের সুরে বলল,” হায় দুলহান কিউ শারমায়ে..সাজন জি ঘর আয়ে!”

রাইফা আঁড়চোখে চেয়ে বলল,” তুই এতো খুশি কেন আজকে? আমার দেবরের সাথে সব ঠিক হয়ে গেছে বুঝি?”

তুলির হাস্যজ্বল চেহারাটা মলিম হয়ে গেল এই কথা শুনে। রাইফা ভ্রু কুচকে বলল,” তার মানে এখনও কিছু ঠিক হয়নি?”

তুলি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল,” বুঝতে পারছি না। সে আমার কাছে প্রতিদিন একবার করে ক্ষমা চায়। কিন্তু.. ”

” এবার অন্তত মাফ করে দে বেচারাকে। শুধু শুধুই সন্দেহ নিয়ে বসে আছিস। আরে প্রণয়কে আমি রগে রগে চিনি। সে কোনো উল্টা-পাল্টা করবে না। সবই প্রিয়ন্তীর ষড়যন্ত্র। ওই মেয়ে কেমন সেটা কি তুই জানিস না?”

তুলি ঠোঁট উল্টে বলল,” জানি তো। কিন্তু আমি কি করবো? ওই দিনের ঘটনা ভুলতেই পারছি না।”

” ভুলতে হবে। অনেক হয়েছে শাস্তি দেওয়া। এবার আমি যে শাড়িটা কিনেছিলাম, সেটা দিয়েই শুরু কর।”

তুলি এই কথা শুনে মুখ টিপে হাসতে লাগল। রাইফা হাসির কারণ জানতে চাইলেই সে বলল,” ওই শাড়িটা তো আমি র‍্যাপিং পেপারে মুড়িয়ে তোর বিয়েতে গিফট করে দিয়েছি। তুই এবার এটা হানিমুনে গিয়ে পরবি।”

রাইফা চোখ বড় করে বলল,” শালী, এটা কি করলি তুই?”

” শালী না। বল জা। এখন থেকে আমি তোর জা, তুইও আমার জা। আচ্ছা রাইফা তোর মনে আছে? কলেজে থাকতে আমি বলেছিলাম আমরা যদি বিয়ে করি তাহলে দুইভাই দেখে বিয়ে করবো! দেখলি আমার স্বপ্ন সত্যি হয়ে গেছে!”

” আসলেই তো!”

হঠাৎ খুব হৈচৈ শুরু হলো। বর এসে গেছে।রাইফার ঝলমল দৃষ্টিতে লজ্জার আভা প্রকাশ পেল। তুলি হাসতে হাসতে লেহেঙ্গার ভাঁজ তুলে দৌড়ে ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেল। রাইফা মঞ্চে বসে রইল ঠিক একটি পুতুলের মতো। কখনও চিন্তাও করেনি এতো অল্প সময়ের ব্যবধানে তার জীবনে চূড়ান্ত পরিবর্তন আসবে। এইতো কয়েকদিন আগের কথা, রিসবের থেকে প্রত্যাখ্যান পেয়ে সে কাঁদতো। কত যন্ত্রণা, কত অপেক্ষা, কত ধৈর্য্য! সবকিছুর শেষে আজকের এই প্রতীক্ষা অবসানের দিন। সে বধূবেশে বসে আছে। আজ তার রিসবের সাথে বিয়ে। জীবনটা স্বপ্নের মতো লাগছে। সেদিন রাতে রিসব সূচির কাছে ধরা খাওয়ার পর সূচি ঠিক করলেন পুলিশে খবর দেবেন। রাইফা তো মায়ের পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করেছিল। পরে অবশ্য বোঝা গেছে যে তিনি মজা করেছেন। কিন্তু রিসবও যে নাছোড়বান্দা! সে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিল। রাইফাকে সে বিয়ে করতে চায়। মায়ের সামনে বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় কান লাল হয়ে যায় রাইফার। সূচি গম্ভীরমুখে বললেন,” সত্যিই আমার মেয়েকে বিয়ে করবে তুমি? ভেবে বলছো?”

” ভাবার কিছু নেই। আমি প্রচন্ড সিরিয়াস।”

সূচি সময় চাইলেন। বলেছিলেন ভেবে জানাবেন। তারপর রিসবকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। রাইফা তো খুবু ভয়ে ছিল। সূচি তুলি আর প্রণয়কে খুব পছন্দ করতেন। তাই পর্যায়ক্রমে প্রণয় আর তুলিকেও পাঠানো হলো সূচিকে বিয়েতে কনভিন্স করার জন্য। কিন্তু সূচি অবশ্য কারো কথাই আমলে নিলেন না। রাইফা হাল ছেড়েই দিয়েছিল। রিসবের সাথে পাহাড়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সব ঠিক করে ফেলেছিল। তারপর হঠাৎ করেই একদিন সূচি এসে মতামত জানালেন।তাদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেল।

কমবয়সীদের হৈ চৈ বিরাট আকার ধারণ করেছে। রাইফা মাথা তুলে উঁকি দিল। বর কি তবে দলবল নিয়ে চলে এসেছে? ভালো করে দেখতেই পারছে না রাইফা। সামনে আলোর ঝলকানি ফুটে উঠছে কয়েক মিনিট অন্তর অন্তর। ক্যামেরাম্যান প্রতিটি বাচন ভঙ্গি ক্যামেরা নামক ওই বাক্সে আবদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। অসীম ভীড়ে ছেঁয়ে আছে মঞ্চের সামনের দিকটা। প্রতিটি মানুষের দৃষ্টি রাইফার দিকে স্থির। এটাও অন্যরকম বিরক্তির কারণ। শান ভীড় ঠেলে তুলির সামনে এসে দাঁড়ালো। প্রণয়রা এদিকটায় আসেনি। রিসবকে বিপরীত মঞ্চে বসানো হয়েছে। যথাসময় বর-বউকে একসাথে করা হবে। বিয়েবাড়িতে ঢুকেই শানের প্রধান দায়িত্ব হল তুলির সাথে দেখা করা। শান নিজের দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করেছে। তুলি মুচকি হেসে শানকে জিজ্ঞেস করল,”তোমার রেডলাইট কোথায়?

তুলির প্রশ্ন শুনে শান মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,” এখনি ডেকে আনছি। ”

তুলি শানের হাত টেনে ধরেই বিরক্ত নিয়ে বলল,”আরে কোথায় যাচ্ছো? থামো। আমি কি ডেকে আনতে বলেছি নাকি? আমি শুধু জিজ্ঞেস করেছি কোথায় সে?”

শান নির্বিকার ভাবে বলল, “রেডলাইট তো সেকেন্ড স্টেজে বসেছে। আমি এতোবার করে বললাম মিস কিউটিপাইয়ের সাথে বস। তোকে মিস করছে সে। কিন্তু শুনলই না। ”

তুলি বিষম খেল। সরু চোখে শানের দিকে চেয়ে বলল,” আমি কখন তোমার ভাইয়াকে মিস করলাম আবার?”

শান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল, “মিস করোনি? তাহলে আমাকে বারবার ফোন করে রেডলাইটের কথা জিজ্ঞেস করছিলে কেনো? আমি তো ভাবলাম তুমি রেডলাইটকে হেব্বি মিস করছো।”

তুলি কপালে হাত ঠেঁকাল। মনে মনে উচ্চারণ করল, “প্রি হিটলার বলে কি?”

শান ভ্রু কুচকাল,” কি?”

তুলি হাসি হাসি ভাব করে বলল,” কিছু না। তোমাকে কিন্তু আজ সেইরকম দেখতে লাগছে। এই কালো রঙের শেরয়ানিতে কিউটের ডিব্বা মনে হচ্ছে। ”

শান চোখ-মুখ কুচকে সামান্য ক্ষীপ্ত গলায় বলল,” আমি কি মোটা বাচ্চা যে আমাকে কিউটের ডিব্বা লাগবে?”

” না, না, তুমি তো খুব ফীট। খুব হ্যান্ডসাম।”

শান একপ্রকার দায়সারা ভাব নিয়ে বলল, ” ইয়াহ! আই নো। গেইটের সামনে মেয়েরাও বলছিল। বাট আমি এসব তেল লাগানো কথা গায়ে মাখি না। আমি জানি আমাকে কেমন লাগছে। যাস্ট পারফেক্ট!”

তুলি হতবাক হয়ে তাকালো। এই ছেলেকে কিচ্ছু বলে শান্তি পাওয়া যায়না। সবকিছুর জবাব তৈরী করে রাখে। অত্যাধিক পাকনা এই ছেলে। পাকতে পাকতে একদম পঁচে যাচ্ছে। ঠিক বড়ভাইটার মতো। কিন্তু একে তো কিছুতেই প্রণয়ের মতো হতে দেওয়া যাবে না। তুলি শানের বাহু টেনে ধরে বলল,” শোনো সাইক্লোন, এজ আ টিচার আমি তোমাকে একটা সাজেশন দেই। জীবনে কখনও মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করবে না। বিয়ে করলে একজনকেই করবে। লাইফে মেয়ে থাকবে শুধু একজন। কোনো জাস্টফ্রেন্ড কিংবা বেস্টফ্রেন্ড রাখা যাবে না। সে যতই মেয়েরা তোমাকে হ্যান্ডসাম আর ড্যাশিং বলুক। তুমি কিন্তু কখনও কাউকে পাত্তা দিবে না। মনে থাকবে?”

শান মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনল। তুলি বলল,” বুঝেছো?” শান মাথা নাড়ল। তুলি জিজ্ঞেস করল,” কি বুঝলে বলোতো?”

” মেয়ে বেস্টফ্রেন্ডের কথা গার্লফ্রেন্ডকে জানানো যাবে না৷ এটাই বুঝেছি।”

তুলি রাগী গলায় বলল,” কঁচু বুঝেছো তুমি।”

রাইফার সাথে ফটোশ্যুটের সময় হঠাৎ প্রণয় স্টেজে উঠে এলো। তুলির ঠিক বিপরীত পাশেই বসল সে। প্রণয়কে দেখে তুলি একটু সরে বসল। কথা তো বললই না, মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখল। প্রণয় আচমকা তুলির হাত ধরে ফেলল। ছবি তোলার বাহানায় হাত ধরা৷ এই অবস্থায় তো হাত ছাড়ানো যায় না। তবুও তুলি চেষ্টা করছে। হাসি হাসি মুখে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা। প্রণয় হঠাৎ জোরালোভাবে তার কোমর চেপে ধরল। তুলি এবার রেগে বলল,” ঘুঁষি মেরে দাঁত ভেঙে ফেলবো কিন্তু। হাত সরান বলছি।”

প্রণয়ের ক্যামেরার দিকে দৃষ্টি রেখেই বলল,”যদি সত্যি তোমার ঘুষিতে আবার দাঁত ভাঙে তাহলে এখনি নগদে এক হাজার টাকা পুরষ্কার পাবে।”

রাইফা খিলখিল করে হাসতে লাগল তাদের কথা শুনে। তুলি বলল,আচ্ছা তাই? দাঁত ভাঙানোর এতো শখ?”

“আমার দাঁত ভাঙার শখ নেই। কিন্তু এই পাতলা হাতের ঘুষিতে কারো দাঁত ভাঙবে না। বিশ্বাস না হলে ট্রাই করে দেখো। দেখো না, দেখো! আরে দেখো, দেখো!”

তুলি রেগে ধাক্কা মেরে প্রণয়কে সরিয়ে চলে এলো সেখান থেকে। ওয়াশরুমে ঢুকল সে। এখান থেকে ওয়াশরুমটা অনেক দূরে। আর কিছুটা নিরিবিলি। তুলির গা ছমছম করছে। তবুও সিদ্ধান্ত নিল কিছুক্ষণ এখানেই বসে থাকবে। প্রণয়কে সহ্য করার চেয়ে ওয়াশরুমে বসে থাকাই ভালো। কিন্তু বাঁধ সাধল লোডশেডিং। সহসা অন্ধকারে তলিয়ে গেল বিয়ে বাড়ি। তুলি ছুটে বের হতে নিতেই সামনে দেখতে পেল প্রণয়কে। তুলি পা পিছলে প্রায় পড়েই যাচ্ছিল। প্রণয় তাকে ধরে ফেলল। তারপর সহাস্যে বলল,” গ্রীনলাইট বলল, তুমি নাকি আমাকে মিস করছো?”

তুলি চোখ কপালে তুলে বলল,” অসম্ভব।”

” মিথ্যা বোলো না৷ তোমার চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তুমি অবশ্যই আমাকে মিস করেছো।”

তুলি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,” আমার এখনও এতো খারাপ দিন আসেনি।”

” থামো, কোথায় যাচ্ছো?”

” সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল কেন হঠাৎ? আমি দেখতে চাইছি কি হয়েছে!”

প্রণয় তুলিকে একটানে কাছে এনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলল,” জানি না কি হয়েছে। কিন্তু যা হয় ভালোর জন্যই হয়।”

এই বলে সে টুপ করে চুমু দিয়ে ফেলল তুলির গালে। তুলি ছটফটিয়ে উঠলো। হৈহৈ করে বলল,” খুব খারাপ হচ্ছে কিন্তু। সুযোগ পেয়েই শুরু করেছেন তাই না? আপনার মতো সুযোগ সন্ধানী মানুষের তো ফাঁসি হওয়া উচিৎ। ”

প্রণয় ডাকাতের মতো হু-হা করে হেসে উঠল। তুলি বিড়বিড় করে বলল,” এবার কিন্তু সত্যি দাঁত ভেঙে দিবো। পাতলা হাতের ঘুষি কি বুঝবেন।”

আলো জ্বলে উঠল। তুলি প্রণয়কে ছেড়েই দৌড়ে পালিয়ে এলো। স্টেজে রাইফা আর রিসবকে একসঙ্গে বসানো হয়েছে। তাদেরকে একসাথে এতো সুন্দর দেখাচ্ছে! তুলি মুগ্ধ কণ্ঠে বলল,” মাশআল্লাহ।”

রিসব আশেপাশে চেয়ে হঠাৎ বলল,” আচ্ছা, প্রিয়ন্তী কি বিয়েতে আসেনি? তাকে কোথাও দেখলামই না।”

রাইফা ক্রুদ্ধ স্বরে বলল,” প্রিয়ন্তীর নাম আমার সামনে উচ্চারণ করবেন না।”

” কেন?”

” জানি না। আমার ওর কথা শুনলেই বিরক্ত লাগে। জানেন, ওর জন্যই প্রণয় আর তুলি মধ্যে ঝামেলা চলছে।”

লোডশেডিং আবারও হলো। সবাই এখন প্রচন্ড বিপন্নবোধ করছে। হঠাৎ কি হয়ে গেল? বার-বার কারেন্ট চলে যাওয়া যথেষ্ট ভোগান্তির লক্ষণ৷ তুলি প্রণয়কে কোথাও দেখতে পাচ্ছিল না। বলা যায় না আবার যদি হুট করে এসে জড়িয়ে ধরে! ওয়াশরুমের সামনে একটা লম্বা অবয়ব দেখা যাচ্ছে। তুলি সেদিকে পা বাড়াতে বাড়াতে বলল,” কি করছেন? আবার প্রিয়ন্তীর কথা চিন্তা করছেন না তো?”

অবয়বটি সহসা তুলিকে কাছে টেনে বলল,” তুমি ছাড়া আমি আর কখনও কারো কথা চিন্তা করি না, তুলি!”

তুলি সবিস্ময়ে লক্ষ্য করল, এই কণ্ঠ প্রণয়ের নয়। আর মানুষটিও প্রণয় নয়। সশব্দে চিৎকার করতে নিতেই তার মুখ চেপে ধরা হলো।তুলি সর্বোচ্চ শক্তিতে ছটফটানি শুরু করল। কিন্তু শক্তিতে পারা যাচ্ছে না৷ তারপর আচানক একটি গান এসে তার পিঠে ঠেঁকল। আজমীর বলল,” একদম নড়াচড়া কোরো না প্লিজ। আমি তোমাকে শ্যুট করতে চাই না। কিন্তু তুমি কথা না শুনলে এই কাজটি আমাকে করতেই হবে।”

তুলি স্তব্ধ হয়ে গেল। শীতল প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে শরীর বেয়ে। কাঁপতে লাগল পায়ের পাতা। আলো জ্বলে উঠল আবারও। চারদিক ঝলমল করছে। তুলি এই ঝলমলে আলোয় পরিষ্কার দেখতে পেল আজমীরের মুখ। বীভৎস হাসি। সে টলমল দৃষ্টিতে বলল,” আপনি এমন কেন করছেন আজমীর ভাই? প্লিজ যেতে দিন।”

কারো পায়ের শব্দ শোনা গেল। আজমীর তুলিকে নিয়ে এক ধাক্কায় ওয়াশরুমের ভেতরে ঢুকে গেল। গানটি তখনও তুলির মাথায় তাক করা। তুলি কোনো শব্দ করতে পারছে না। সামনের বড় আয়নায় প্রণয়কে আসতে দেখা যাচ্ছে। তুলি শব্দ করে প্রণয়কে ডাকতে পারল না। শুধু মনে-প্রাণে প্রার্থনা করতে লাগল যাতে প্রণয় একবার এদিকে আসে। অন্তত একবার যেন তাকায়। কিন্তু সে তাকালো না। অন্যদিকে ঘুরে চলে গেল। সম্ভবত সে তুলিকেই খুঁজছিল। তুলির বাম চোখ থেকে গড়ালো উত্তপ্ত অশ্রু। আজমীর হেসে উঠল।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here